08-01-2021, 08:03 PM
ঝুমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি , মিশ্র একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে আমার মাঝে এখন । গ্রাম্য এই মেয়ের নধর পেছন আমার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিচ্ছে !!! হ্যাঁ একটু অবাক হওয়ার ই ব্যাপার , এতো বছর দেশের বাইরে আছি অসংখ্য স্মার্ট এবং সুন্দরী নারীর সাথে আমার পরিচয় এবং অনেকের সাথে সেই পরিচয় পরিণয় পর্যন্ত গড়িয়েছে । এছাড়া লিজা আর সুজান এর মতো সেক্সি নারী আমার জীবন সঙ্গিনি ছিলো বেশ অনেকটা সময় ধরে । তারপর ও এই গ্রাম্য মেয়ে আমার মনে শরীরে সুরসুরি কেন তুলছে কে জানে ? হয়ত আমি একজন পারভারট । কে জানে হতেও পারি ।
আর একটা অনুভুতি হচ্ছে সেটা একটু দুঃখী টাইপ , মেয়েটা নিজের ছেলের ভালো চিকিৎসা করাতে পারছে না । আমি চাইলেই করে দিতে পারি কিন্তু ঝুমা কি নেবে আমার সাহায্য সেটাই বুঝতে পারছি না । হয়ত নেবে না , কারন রাবুর রক্ত আছে ঝুমার শরীরে । রাবু কারো সাহায্য নিতো না , কক্ষনো না । ওহ রাবুর কথা মনে হতে আর একটা ব্যাপার মাথায় এলো । আমি কেন ঝুমা কে বলতে পারলাম না আমি আর ওর মা বন্ধুর মতো ছিলাম ? বন্ধু বলতে গিয়েও ভাই বোন বলে দিলাম , কি যে ভাই বোন ছিলাম সেটা তো আমি জানি ।
যাই হোক ঝুমা একটা ভালো কথা মনে করিয়ে দিয়েছে আমি চাইলে পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারি । সিদ্ধান্ত নিলাম গোসলের পর খেয়েদেয়ে দেখা করবো এবং এও সিদ্ধান্ত নিলাম আজ আর ঝুমা মেয়েটিকে দিয়ে পানি তোলাবো না নিজে গিয়ে টিউব ওয়েল এর সামনে গোসল করবো । সবচেয়ে ভালো হতো পুকুর দুটো ভালো থাকতে অনেকদিন পর পুকুরে গোসল করা যেত , পুল আর পুকুর এ দুটোর মাঝে বিস্তর তফাৎ , পুকুরে গোসল করে যে মজা পুলে করে সেই মজা পাওয়া যায়না অন্তত আমি কোনদিন পাইনি । ইজি চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিলাম , গোসল এর সময় হতে এখনো অনেক বাকি ।
যদিও ভেবেছিলাম ঝুমা কে কষ্ট দেবো না , কিন্তু ঝুমার সাহায্য ছাড়া হলোও না । চাপ কলে দুটো চাপ দিয়েই বুঝলাম এ আমার কম্ম নয় । কাউকে না কাউকে ডাকতে হবে কল চেপে পানি তোলার জন্য । আর এ বাড়িতে এই কাজ করার মতো ঝুমা ছাড়া আর কেউ নেই । অগত্যা ঝুমাকেই ডাকতে হলো । হাঁসি মুখে এসে হাজিরও হলো ঝুমা “ মিয়াঁ সাহেবের হাত ফোস্কা পরলো নাকি “ এই বলে কোমরে আচল গুজে ধমা ধম কল চাপতে লাগলো । কি আশ্চর্য শক্তি মেয়েটার আর পারেও বটে , কল চাপার সময় মুখে হাঁসি লেগেই আছে , এই যে একটা বাড়তি কাজ এসে জুটল এতে একটুও মন খারাপ হলো না দিব্বি কল চেপে যাচ্ছে । অবশ্য আমার দৃষ্টি বেসিক্ষন ঝুমার মুখের দিকে থাকলো না ধিরে ধিরে নেমে এলো ওর বুকের দিকে । আঁচলটা বেশ কষে বুকের সাথে পেচিয়ে কোমরে গুজে রাখায় ওটা এখন বুক ঢাকার চেয়ে মেলে ধরার কাজ করছে বেশি । ঝুমার বাকি শরীরের সাথে বুক দুটো ও বেশ দুলছিলো , আমি সেদিকেই তাকিয়ে রইলাম ।
“ পানি ঢালেন , বালতি তো ভইরা গেসে , খালি খালি কত্ত গুলা চাপ দিলাম “ কলা চাপা ছেড়ে সোজা হয়ে দারিয়েছে ঝুমা , এক হাতে এখনো কলের হাতল ধরা অন্য হাত দিয়ে কপালে চলে আসা কিছু চুল কানের পেছনে দিলো । আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম , কে জানে ঝুমা কি দেখে ফেলেছে কিনা আমাকে ওর বুকের দিকে তাকিয়ে থাকতে । তারাতারি গোসল সেরে ফেললাম ।
অনেকদিন পর লুঙ্গি পড়লাম , এই দুইদিন শর্টস পড়ে ছিলাম । আজমল চাচা আজ সকালে লুঙ্গি কিনে এনে দিয়েছে । সেই লুঙ্গি পড়ে শরীরে তয়ালে জড়িয়ে ভেজা চপ্পল পায়ে চপত চপত শব্দ করে উঠান পেরিয়ে দালান ঘরের বারান্দায় এসে উঠলাম , আহহহ অনেক দিন পর এই অভিজ্ঞতা হলো । মনেই হচ্ছে না গত ত্রিশ বছর আমি এসব থেকে বহু দূর ছিলাম ।
“ এই মেয়ে হাসছ কেন ?” ঝুমা কে আমার দিকে হাঁসি মুখে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাস করলাম
“ আপনের গায়ের রং আর একটু ময়লা হইলে আপনেরে পুরা গেরামের মানুষ এর মতন লাগতো “
“ কেন তুমি গ্রামের না তুমিও তো ফর্সা “ আমি বললাম
“ হ তয় পোলা মানুষ এতো সাদা হয় না রইদের মইদ্দে কাম করে তো “
“ তাহলে একটু কালি এনে দাও শরীরে মাখি “ আমি হাসতে হাসতে বললাম
“ হের আর কাম নাই আপনে দুই দিনের অথিতি দুইদিন পর আবার চইলা জাইবেন , গেরামের মানুষ হয়ন লাগবো না আপনের “
শেষের বাক্যটি বলার সময় ঝুমার ঠোঁটে আর হাঁসি ছিলো না সেখানটা দখল করেছে কালো একটা ছায়া । আমি কিছু একটা বলতে যাবো , কিন্তু বলতে পারলাম না ঝুমা চলে গেলো আমার ভেজা কাপড় নিয়ে । আমিও আর বারান্দায় দারালাম না , সোজা রুমে চলে গেলাম । খালি শরীরে আমি থাকতে পারি না বেসিক্ষন গোসলের পর মনে হয় এই বুঝি রাজ্যের ধুলা এসে লাগছে শরীরে । তাই একটা টি শার্ট পড়ে নিলাম । লুঙ্গির সাথে টি শার্ট খুব বেমানান লাগছে এম্নিতেই বেশ খানিকটা ভুরি আছে আমার তার উপর লুঙ্গির গিঁট অনেক উচু হয়ে আছে । একটা পাঞ্জাবি থাকলে মনে হয় ভালো হতো ।
দুপুরের খাবার নিয়ে ঝুমাই এলো , ঝুমার হাতের রান্না খুবি ভালো । এই একটা ব্যাপারে আমি ওর সাথে ওর মায়ের তুলনা করতে পারি না । কারন রাবু কখনো রান্না করতো না । এর জন্য রাবু নিজের মায়ের কাছে প্রচুর বকুনি খেয়েছে । কিন্তু ঝুমা অসাধারণ রান্না করে মা মারা যাওয়ার পর এরকম রান্না আমার আর খাওয়া হয়নি । লিজা মাঝে মাঝে বাঙালী খাবার রান্নার চেষ্টা করতো কিন্তু কখনোই তেমন সুস্বাদু হতো না । প্রথম দিন একটু অসুবিধা হয়েছি প্রচুর ঝাল দেয় ঝুমা । এখন অবশ্য ঝুমা ঝাল একটু কমিয়ে দিয়েছে ।
“ খেয়ে করিমের কাছে যাবো “ মুখের ভাত শেষ করে বললাম আমি
“ বিকালে যাইয়েন এহন কাউরে পাইবেন না সবাই খাইয়া লইয়া ঘুম দেয় , ভাত ঘুম “
“ উফ এই জিনিসটা খুব বিরক্তি কর , গ্রামে আসার পর এই একটি ব্যাপার আমাকে খুব বিরক্ত করেছে , দুপুরে যেন পুরো গ্রাম মৃত্যু পুরি হয়ে যায় কাউকে পাওয়া যায় না “
“ আপনেও চাইলে ঘুমাইতে পারেন “ ঝুমা হেঁসে বলল
“ নাহ ঐ অভ্যাস নেই , আমি যেখানে থাকি দুপুরে কেউ ঘুমায় না , ওটা কাজের সময় । আচ্ছা তুমি কি করো দুপুরে , তুমিও কি ঘুমাও “ আমি জিজ্ঞাস করলাম
“ নাহ আমি ঘুমাই না , আমার ঘুম আসে না “ ঝুমা উত্তর দিলো
“ আহা এটা আগে বলবে না , তোমার সাথে গল্প করা যেত “
“ আমার কাম আসে , আমি খেতা সিলাই দুপুরে “
“ তাই নাকি ? তুমি তো দেখি দারুন টেলেন্টেড সব কাজ পারো । এতো কাথা দিয়ে কি করো “
“ কই এতো সিলাই তে পারি , একটা সিলাইতে ২-৩ মাস লাইগা যায় । দুই তিন মাস পর পর একটা খেতা ২০০-২৫০ টেকায় বেচতে পারি “ ঝুমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছারলো নানায় আমারে খাওয়ান টা খালি দেয় বাকি খরচ আমার নিজেরই চালাইতে হয় ।
মনটা আমার খারাপ হয়ে গেলো । আমি চুপ হয়ে গেলাম , মেয়েটা সারাদিন কাজ করে দুপুরে রেস্ট নেয়ার সময় কাথা বুনে মাত্র ২০০- ২৫০ টাকা পায় ।
“ আপনে এইসব নিয়া মন খারাপ কইরেন না , আইসেন বেড়াইতে , এইসব মনে নিলে বেড়ান ভালো হইব না “ ঝুমার বলার মাঝে এমন একটা টোন ছিলো যে আমি ওর দিকে তাকালাম । চোখ দুটো ছল ছল করছে ঝুমার । একটা অস্বস্তি আমাকে ঘিরে ধরলো এই মেয়ে এমন করছে কেন ভেবে পেলাম না । কি বলবো বুঝতে পারলাম না ।
“ তারা তারি খাইয়া নেন , আপনের খাওয়া হইলে আমি খেতা সিলামু “ ঝুমা নিজের মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলল । হয়ত ওর ভেজা চোখ আমাকে দেখাতে চায় না ।
কোন রকমে আমি বাকি খাওয়া শেষ করলাম । ঝুমার অদ্ভুত আচরন আমাকে ভাবিয়ে তুলছে । সেই প্রথম দিনের চাঁছাছোলা আচরনের পর যত দিন যাচ্ছে ঝুমার আমার প্রতি ঝুমার আচরন পরিবর্তন হচ্ছে । এখন তো মনে হচ্ছে মেয়টার আমার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে । এ তো ভীষণ পাগলাটে ব্যাপার । হ্যাঁ এই গ্রাম্য যুবতীর উপর আমারও মায়া হয় কিন্তু সেতো রাবুর মেয়ে বলে । এছাড়া হাল্কা সারিরক টান ও অনুভব করি আমি কিন্তু সেটা সুধু মাত্র খনিকের মোহ । কিন্তু ঝুমা যেমন আচরন করছে সেটা একেবারে অকল্পনীয় । না জানি কি ফ্যাসাদে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি , গ্রাম সম্পর্কে এমন অনেক কথা শুনেছি । না জানি নারী ঘটিত কোন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যাই । আচ্ছা এমন ও হতে পারে আজমল চাচা জেনে বুঝে ঝুমা কে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে । আমার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য ।
আর একটা অনুভুতি হচ্ছে সেটা একটু দুঃখী টাইপ , মেয়েটা নিজের ছেলের ভালো চিকিৎসা করাতে পারছে না । আমি চাইলেই করে দিতে পারি কিন্তু ঝুমা কি নেবে আমার সাহায্য সেটাই বুঝতে পারছি না । হয়ত নেবে না , কারন রাবুর রক্ত আছে ঝুমার শরীরে । রাবু কারো সাহায্য নিতো না , কক্ষনো না । ওহ রাবুর কথা মনে হতে আর একটা ব্যাপার মাথায় এলো । আমি কেন ঝুমা কে বলতে পারলাম না আমি আর ওর মা বন্ধুর মতো ছিলাম ? বন্ধু বলতে গিয়েও ভাই বোন বলে দিলাম , কি যে ভাই বোন ছিলাম সেটা তো আমি জানি ।
যাই হোক ঝুমা একটা ভালো কথা মনে করিয়ে দিয়েছে আমি চাইলে পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারি । সিদ্ধান্ত নিলাম গোসলের পর খেয়েদেয়ে দেখা করবো এবং এও সিদ্ধান্ত নিলাম আজ আর ঝুমা মেয়েটিকে দিয়ে পানি তোলাবো না নিজে গিয়ে টিউব ওয়েল এর সামনে গোসল করবো । সবচেয়ে ভালো হতো পুকুর দুটো ভালো থাকতে অনেকদিন পর পুকুরে গোসল করা যেত , পুল আর পুকুর এ দুটোর মাঝে বিস্তর তফাৎ , পুকুরে গোসল করে যে মজা পুলে করে সেই মজা পাওয়া যায়না অন্তত আমি কোনদিন পাইনি । ইজি চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিলাম , গোসল এর সময় হতে এখনো অনেক বাকি ।
যদিও ভেবেছিলাম ঝুমা কে কষ্ট দেবো না , কিন্তু ঝুমার সাহায্য ছাড়া হলোও না । চাপ কলে দুটো চাপ দিয়েই বুঝলাম এ আমার কম্ম নয় । কাউকে না কাউকে ডাকতে হবে কল চেপে পানি তোলার জন্য । আর এ বাড়িতে এই কাজ করার মতো ঝুমা ছাড়া আর কেউ নেই । অগত্যা ঝুমাকেই ডাকতে হলো । হাঁসি মুখে এসে হাজিরও হলো ঝুমা “ মিয়াঁ সাহেবের হাত ফোস্কা পরলো নাকি “ এই বলে কোমরে আচল গুজে ধমা ধম কল চাপতে লাগলো । কি আশ্চর্য শক্তি মেয়েটার আর পারেও বটে , কল চাপার সময় মুখে হাঁসি লেগেই আছে , এই যে একটা বাড়তি কাজ এসে জুটল এতে একটুও মন খারাপ হলো না দিব্বি কল চেপে যাচ্ছে । অবশ্য আমার দৃষ্টি বেসিক্ষন ঝুমার মুখের দিকে থাকলো না ধিরে ধিরে নেমে এলো ওর বুকের দিকে । আঁচলটা বেশ কষে বুকের সাথে পেচিয়ে কোমরে গুজে রাখায় ওটা এখন বুক ঢাকার চেয়ে মেলে ধরার কাজ করছে বেশি । ঝুমার বাকি শরীরের সাথে বুক দুটো ও বেশ দুলছিলো , আমি সেদিকেই তাকিয়ে রইলাম ।
“ পানি ঢালেন , বালতি তো ভইরা গেসে , খালি খালি কত্ত গুলা চাপ দিলাম “ কলা চাপা ছেড়ে সোজা হয়ে দারিয়েছে ঝুমা , এক হাতে এখনো কলের হাতল ধরা অন্য হাত দিয়ে কপালে চলে আসা কিছু চুল কানের পেছনে দিলো । আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম , কে জানে ঝুমা কি দেখে ফেলেছে কিনা আমাকে ওর বুকের দিকে তাকিয়ে থাকতে । তারাতারি গোসল সেরে ফেললাম ।
অনেকদিন পর লুঙ্গি পড়লাম , এই দুইদিন শর্টস পড়ে ছিলাম । আজমল চাচা আজ সকালে লুঙ্গি কিনে এনে দিয়েছে । সেই লুঙ্গি পড়ে শরীরে তয়ালে জড়িয়ে ভেজা চপ্পল পায়ে চপত চপত শব্দ করে উঠান পেরিয়ে দালান ঘরের বারান্দায় এসে উঠলাম , আহহহ অনেক দিন পর এই অভিজ্ঞতা হলো । মনেই হচ্ছে না গত ত্রিশ বছর আমি এসব থেকে বহু দূর ছিলাম ।
“ এই মেয়ে হাসছ কেন ?” ঝুমা কে আমার দিকে হাঁসি মুখে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাস করলাম
“ আপনের গায়ের রং আর একটু ময়লা হইলে আপনেরে পুরা গেরামের মানুষ এর মতন লাগতো “
“ কেন তুমি গ্রামের না তুমিও তো ফর্সা “ আমি বললাম
“ হ তয় পোলা মানুষ এতো সাদা হয় না রইদের মইদ্দে কাম করে তো “
“ তাহলে একটু কালি এনে দাও শরীরে মাখি “ আমি হাসতে হাসতে বললাম
“ হের আর কাম নাই আপনে দুই দিনের অথিতি দুইদিন পর আবার চইলা জাইবেন , গেরামের মানুষ হয়ন লাগবো না আপনের “
শেষের বাক্যটি বলার সময় ঝুমার ঠোঁটে আর হাঁসি ছিলো না সেখানটা দখল করেছে কালো একটা ছায়া । আমি কিছু একটা বলতে যাবো , কিন্তু বলতে পারলাম না ঝুমা চলে গেলো আমার ভেজা কাপড় নিয়ে । আমিও আর বারান্দায় দারালাম না , সোজা রুমে চলে গেলাম । খালি শরীরে আমি থাকতে পারি না বেসিক্ষন গোসলের পর মনে হয় এই বুঝি রাজ্যের ধুলা এসে লাগছে শরীরে । তাই একটা টি শার্ট পড়ে নিলাম । লুঙ্গির সাথে টি শার্ট খুব বেমানান লাগছে এম্নিতেই বেশ খানিকটা ভুরি আছে আমার তার উপর লুঙ্গির গিঁট অনেক উচু হয়ে আছে । একটা পাঞ্জাবি থাকলে মনে হয় ভালো হতো ।
দুপুরের খাবার নিয়ে ঝুমাই এলো , ঝুমার হাতের রান্না খুবি ভালো । এই একটা ব্যাপারে আমি ওর সাথে ওর মায়ের তুলনা করতে পারি না । কারন রাবু কখনো রান্না করতো না । এর জন্য রাবু নিজের মায়ের কাছে প্রচুর বকুনি খেয়েছে । কিন্তু ঝুমা অসাধারণ রান্না করে মা মারা যাওয়ার পর এরকম রান্না আমার আর খাওয়া হয়নি । লিজা মাঝে মাঝে বাঙালী খাবার রান্নার চেষ্টা করতো কিন্তু কখনোই তেমন সুস্বাদু হতো না । প্রথম দিন একটু অসুবিধা হয়েছি প্রচুর ঝাল দেয় ঝুমা । এখন অবশ্য ঝুমা ঝাল একটু কমিয়ে দিয়েছে ।
“ খেয়ে করিমের কাছে যাবো “ মুখের ভাত শেষ করে বললাম আমি
“ বিকালে যাইয়েন এহন কাউরে পাইবেন না সবাই খাইয়া লইয়া ঘুম দেয় , ভাত ঘুম “
“ উফ এই জিনিসটা খুব বিরক্তি কর , গ্রামে আসার পর এই একটি ব্যাপার আমাকে খুব বিরক্ত করেছে , দুপুরে যেন পুরো গ্রাম মৃত্যু পুরি হয়ে যায় কাউকে পাওয়া যায় না “
“ আপনেও চাইলে ঘুমাইতে পারেন “ ঝুমা হেঁসে বলল
“ নাহ ঐ অভ্যাস নেই , আমি যেখানে থাকি দুপুরে কেউ ঘুমায় না , ওটা কাজের সময় । আচ্ছা তুমি কি করো দুপুরে , তুমিও কি ঘুমাও “ আমি জিজ্ঞাস করলাম
“ নাহ আমি ঘুমাই না , আমার ঘুম আসে না “ ঝুমা উত্তর দিলো
“ আহা এটা আগে বলবে না , তোমার সাথে গল্প করা যেত “
“ আমার কাম আসে , আমি খেতা সিলাই দুপুরে “
“ তাই নাকি ? তুমি তো দেখি দারুন টেলেন্টেড সব কাজ পারো । এতো কাথা দিয়ে কি করো “
“ কই এতো সিলাই তে পারি , একটা সিলাইতে ২-৩ মাস লাইগা যায় । দুই তিন মাস পর পর একটা খেতা ২০০-২৫০ টেকায় বেচতে পারি “ ঝুমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছারলো নানায় আমারে খাওয়ান টা খালি দেয় বাকি খরচ আমার নিজেরই চালাইতে হয় ।
মনটা আমার খারাপ হয়ে গেলো । আমি চুপ হয়ে গেলাম , মেয়েটা সারাদিন কাজ করে দুপুরে রেস্ট নেয়ার সময় কাথা বুনে মাত্র ২০০- ২৫০ টাকা পায় ।
“ আপনে এইসব নিয়া মন খারাপ কইরেন না , আইসেন বেড়াইতে , এইসব মনে নিলে বেড়ান ভালো হইব না “ ঝুমার বলার মাঝে এমন একটা টোন ছিলো যে আমি ওর দিকে তাকালাম । চোখ দুটো ছল ছল করছে ঝুমার । একটা অস্বস্তি আমাকে ঘিরে ধরলো এই মেয়ে এমন করছে কেন ভেবে পেলাম না । কি বলবো বুঝতে পারলাম না ।
“ তারা তারি খাইয়া নেন , আপনের খাওয়া হইলে আমি খেতা সিলামু “ ঝুমা নিজের মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলল । হয়ত ওর ভেজা চোখ আমাকে দেখাতে চায় না ।
কোন রকমে আমি বাকি খাওয়া শেষ করলাম । ঝুমার অদ্ভুত আচরন আমাকে ভাবিয়ে তুলছে । সেই প্রথম দিনের চাঁছাছোলা আচরনের পর যত দিন যাচ্ছে ঝুমার আমার প্রতি ঝুমার আচরন পরিবর্তন হচ্ছে । এখন তো মনে হচ্ছে মেয়টার আমার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে । এ তো ভীষণ পাগলাটে ব্যাপার । হ্যাঁ এই গ্রাম্য যুবতীর উপর আমারও মায়া হয় কিন্তু সেতো রাবুর মেয়ে বলে । এছাড়া হাল্কা সারিরক টান ও অনুভব করি আমি কিন্তু সেটা সুধু মাত্র খনিকের মোহ । কিন্তু ঝুমা যেমন আচরন করছে সেটা একেবারে অকল্পনীয় । না জানি কি ফ্যাসাদে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি , গ্রাম সম্পর্কে এমন অনেক কথা শুনেছি । না জানি নারী ঘটিত কোন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যাই । আচ্ছা এমন ও হতে পারে আজমল চাচা জেনে বুঝে ঝুমা কে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে । আমার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য ।