05-01-2021, 11:07 PM
অস্ফুট স্বরে মনীষা বলে ওঠে, আমাকে তুমি শরীরে নেবে সুনীল? যদি চাও?
সুনীল বলে, আমিও আর পারছি না মনীষা। আমাকে আজ তুমি যে কি করে দিলে?
সঙ্গমেচ্ছু আকাঙ্খা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। মনীষার দূর্দান্ত শরীরটা যেন এই মূহূর্তে অবহেলা করার মতন নয়। ভালবাসা যেন কত গাঢ় হয়ে উঠেছে, প্রবল আকাঙ্খাকে মিশিয়ে ফেলে একাকার করে দিতে ইচ্ছে করছে মূহূর্তটাকে।
চোখের চাহনিটা অস্পষ্ট করে মনীষা শরীরটা পুরোটাই সঁপে দেয় সুনীলের কাছে। ঠোঁট থেকে সুনীলের মুখ নেমে আসে মনীষার গলায়, বুকে। ব্লাউজের ওপর পাগলের মতন মুখ ঘসতে থাকে সুনীল। সহবাসের এটাই যেন উপযুক্ত সময়।
মনীষা সুনীলকে বলে, আর দেরী কোরো না সুনীল। এসো, চলো, আমরা বিছানায় যাই। তোমাকে আবার ফিরতে হবে বাড়ীতে, মা একা রয়েছেন, এই টুকু সময়, তুমি যতপারো আমাকে আরও নিজের করে নাও।
দুজনের তপ্ত অমৃতধারা গলে গলে পড়ে, কামনার জারকরসের শেষ বিন্দু ঝরে না পড়া পর্যন্ত থামবে না। মিলন সুখের প্রথম হাতছানি। রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে মনীষার প্রবল সন্মতিতে আত্মহারা হয়ে সুনীল টগবগ করে ফুটতে থাকে। প্রিয়তমা এই মূহূর্তে ওকে কামনা করছে।
হাত লাগিয়ে সুনীলের জামার বোতামগুলো খুলতে শুরু করে মনীষা। নিজেকেও উন্মুক্ত করতে চাইছে সুনীলের সামনেই। সুনীলের জামা খুলে একটু দূরে সরে যায় মনীষা। এবার নিজের শাড়ী খুলে ব্লাউজটাকেও উন্মুক্ত করতে থাকে আসতে আসতে। শরীরের আবরণ ঘুচিয়ে মনীষার তখন মন-মোহনী রূপ। নগ্ন শরীরটার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে সুনীল। মনীষা দুটো হাত বাড়িয়ে ওকে বলে, নাও আমাকে নাও। নেবে না আমাকে?
এক মধুর অঙ্গের মধুর হাতছানি। কি অপরূপ সৌন্দর্যময় মনীষার দেহ। উন্মুক্ত স্তনযুগল মুগ্ধ চোখে, মনভরে, প্রাণভরে দেখছে সুনীল। ভরাট বুক, স্তনবৃন্তদ্বয় যেন মধুশালার আগ্নেয়গিরি। পুরুষের আসন্ন স্পর্ষসুখ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব ও রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা।
শেষ মূহূর্তে আর অপেক্ষা করতে পারে না মনীষা। কাতর গলায় সুনীলকে বলে ওঠে, আমি জীবনে, এই প্রথম কাউকে ভালবেসেছি সুনীল। আমার সবকিছু আজ উজাড় করে দিতে চাইছি তোমাকে। এসো, আর দেরী কোর না। প্লীজ। আমাকে করতে শুরু করো।
বিহ্বল সুনীল নগ্ন মনীষার শরীরটা এবার পাঁজা কোলা করে বিছানায় শুইয়ে দেয়। নগ্ন ওকেও হতে হবে। বীরপুরুষের মতন পুরুষদন্ডটাকে ঢুকিয়ে দিতে হবে মনীষার যৌন গহ্বরে। মধুভান্ড নিয়ে মনীষা অপেক্ষা করছে কাতর ভাবে।
প্যান্ট খুলে মনীষার শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে সুনীল। প্রবিষ্ট হতে চেয়ে ও মনীষাকে বলে, একটু তোমার পা টা ফাঁক করো মনীষা, এটা আমি ঢোকাই।
লিঙ্গটা হাতে নিয়ে দুবার নেড়েচেড়ে এবার ফাটলে ঢোকানোর চেষ্টা করতে থাকে সুনীল। মনীষা ওকে দেখছে আর আসন্ন সুখের আনন্দে মাতছে এখন থেকেই। সুনীলের লিঙ্গমুখ মনীষার ত্রিভুজের মুখ স্পর্ষ করেছে। থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মনীষা এবার সুনীলকে বুকে টেনে নেয়। ওর ঠোঁটে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বলে, আজ আমার নারী জীবন সার্থক হচ্ছে। এবার করতে শুরু করো সুনীল। আমার আঘাতের ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রেখো না। সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ করো। আমি তোমাকে জায়গায় ঠিক সাজিয়ে নেব।
কাল বিলম্ব না করে সুনীল এবার প্রবিষ্ট হয় মনীষার মধ্যে। কিন্তু একি? ওর পুরুষাঙ্গ তো সেভাবে দামাল হয়ে উঠছে না। সেই আকৃতি কোথায়? যা না হলে নারীর প্রকৃত সুখ হয় না। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে নিজের পুরুষত্বকে প্রমাণ করার। কিন্তু সবই যেন বিফলে যাচ্ছে। ছোট্ট দন্ডটি কি করে ওই গুহার মধ্যে সুখের ঝড় তুলবে ও নিজেও বুঝে পারছে না।
দু-তিনবার পেরেক পোঁতার আপ্রাণ চেষ্টা করে বিফল হয় সুনীল। মনীষার মুখটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে। সেই উৎসাহ,উদ্দীপনাটা হারিয়ে ফেলেছে। এ কাকে ভালবাসল ও? যার কিনা এত সুপুরুষ চেহারা, সে তার প্রিয়তমাকে মিলনের সুখটাই দিতে পারল না। এ কেমন হল? যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন? ভালবাসা কি টিকিয়ে রাখা যায়?
মুখটা একটু করুন মত করে মনীষা বলে, তোমার কি কোন অসুবিধে হচ্ছে সুনীল? তাহলে আজ ছাড়ো। আমরা বরং অন্য কোনদিন।
নিজের প্রতি হতাশায়, মনীষার নগ্ন শরীরটাকে ছেড়ে উঠে পড়ে সুনীল। প্যান্ট, জামা গলিয়ে নেয়। মনীষাও তাড়াতাড়ি শরীরটা ঢেকে নেয় শাড়ী দিয়ে। দেখে সুনীল ওর দিকে তাকাতে পারছে না লজ্জ্বায়। হঠাৎই মেয়েমানুষের কাছে ধরা পড়ে গেছে শরীরি খুঁতে। স্বপ্ন, আকাঙ্খা সব ভেঙে চূড়ে ধুলিস্যাত হবার অপেক্ষায়। এই প্রথম জীবনে কোন এক পরীক্ষা দিতে গিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে সুনীল। কি করে মুখটা দেখাবে মনীষাকে, ও ভেবে পাচ্ছে না।
তাড়াতাড়ি শাড়ীটা পড়ে নিয়ে মনীষা সুনীলকে বলে, দোষটা আমার। বড্ড বেশী তাড়াহূড়ো করতে গেলাম। আসলে তুমি মনটা বসাতে পারো নি। প্রথম প্রথম এরকম হয় সুনীল। আমি কিচ্ছু মনে করিনি। তুমি নিজেকে খারাপ ভেবো না।
সুনীলকে উপহার দেবার জন্য একটা দামী ঘড়ি কিনেছে মনীষা। ওটা সুনীলের হাতে দেয়। সুনীল এখনও তাকাতে পারছে না মনীষার দিক। মনীষা বলে, তুমি কি খুবই আপসেট সুনীল? আর একবার চেষ্টা করে দেখবে? কেন এত মন খারাপ করছ? এমন তো হতেই পারে।
নিজের প্রতি একটা ধিক্কার এসে যাচ্ছে। মনীষাকে নিজের পুরুষত্বটা দেখাতে পারেনি বলে, কেমন যেন নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে গেছে।
সুনীল ঘড়িটা মনীষার হাত থেকে নিয়ে আর দাঁড়ায় না। বলে, মনীষা আজ আমি যাই। কাল অফিসে আবার দেখা হবে।
পাশের ঘর থেকে কুকুরটা আবার চলে এসেছে। সুনীলকে দেখে ল্যাজ নাড়ছে। মনীষা সুনীলকে নিজের ফোন নম্বরটা দেয়। বলে, রাত্রে আমাকে ফোন কোরো। ওকে বিদায় জানিয়ে সুনীল বেরিয়ে পড়ে ওর দমদমের ফ্ল্যাট থেকে। বিষন্ন মনীষার মুখ। প্রথম মিলনটা হতে হতেও যেন হল না শেষ পর্যন্ত।
বাড়ী ফিরে মায়ের সাথেও ভাল করে কথা বলে না সুনীল। রাতে বিছনায় শুয়ে দুশ্চিন্তা, জ্বালা, যন্ত্রনায় মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে ও। ঘুম আজকেও আসতে চাইছে না। ভালবাসার মূল্য কি শেষ পর্যন্ত চোকাতে পারবে ও? এই একদিনেই সব যেন ঝড়ের মত ওলোট পালোট হয়ে গেছে ওর জীবনে। কি যে হবে শেষ পর্যন্ত কে জানে?
পরের দিন সকালে অফিসে গিয়েই মনীষার সাথে চোখাচোখি হয় সুনীলের। মনীষা ওর সাথে কথা বলতে চাইছে, অথচ সুনীল বলছে না। নিজেকে ভীষন অপরাধী বলে মনে হচ্ছে। পাশ কাটিয়ে, এড়িয়ে, মনীষার সাথে কথা না বলেই সুনীল অফিস ছুটীর আগেই বেরিয়ে আসে অফিস থেকে। নিজের সেল ফোন থেকে ফোন করে, ছোটবেলার এক বন্ধুকে। বলে, তোর সাথে একটু ধর্মতলায় মিট করতে চাই। আসতে পারবি?
ছোটবেলার বন্ধু জীতেন এক কথায় রাজী হয়। বলে, আসছি আমি এক ঘন্টার মধ্যে। তুই মেট্রো সিনেমা হলের সামনে আমার জন্য ওয়েট কর।
সুনীল জীতেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ঠিক একঘন্টার মধ্যেই জীতেন এসে হাজির হয়। দুজনে একটা রেস্তোরায় ঢোকে। খাবারের অর্ডার দিয়ে সুনীল খুলে বলে ওর অসুবিধার কথাটা। মিলন ঘটাতে গিয়ে একটা ফাঁক বেরিয়ে পড়েছে শরীর থেকে। এখন বন্ধু যদি কোন উপায় ওকে বাতলে দিতে পারে।
প্রাণের বন্ধু জীতেন সব শুনে একটাই সুরাহা দেয় সুনীলকে। এ সমস্যায় এখন ভুগছে অনেকেই। যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন কখনও সুখের হয় না। আমার মনে হয় তুই কোন ভাল ডাক্তারের কাছে গেলেই এই সমাধানের পথ খুঁজে পাবি। তোর মনীষা যদি সত্যি তোকে ভালবেসে থাকে, তাহলে তোকে ছেড়ে যাবে না। তবে সে সম্ভাবনা কম। পৃথিবীতে বিচ্ছেদের হার যেভাবে বাড়ছে, বিবাহিত জীবনে অনেকে সুখী নয় বলেই।
সুনীল সব শুনে বলে, কিন্তু মনীষা তো এখনও আমাকে চাইছে। ওতো অফিসেও আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে অনেকবার। আমিই কথা বলিনি।
রীতিমতন তাজ্জব হয় জীতেন, বলে সেকিরে? তুই কথা বলিস নি? কেন? মেয়েটা তো তাহলে ভাল বলতে হবে। ব্যাপারটাকে তুচ্ছ মনে করে সেন্টিমেন্টে নেয় নি। তোর এখুনি উচিত মনীষার সাথে কথা বলা।
নিজের ভুলটাকে বুঝতে পেরে সুনীল ফোনে ধরার চেষ্টা করে মনীষাকে। অফিসে ওকে দেখতে না পেয়ে মনীষা এতক্ষনে হয়তো রওনা দিয়ে দিয়েছে বাড়ীর দিকে।
দুতিনবার বাজতেই ফোনটা রিসিভ করে মনীষা। সুনীলকে বলে, কি হল? তুমি আজকে তোমার মায়ের কাছে আমাকে নিয়ে গেলে না? আমি তোমাকে দেখতে না পেয়ে অফিস থেকে চলে এলাম। কোথায় চলে গেলে তুমি?
বুকের ভেতর থেকে আবেগটা বেরিয়ে এসে কন্ঠরোধ করে দিয়েছে। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে সুনীল বলে, মনীষা এরপরেও তুমি?
ও প্রান্ত থেকে মনীষা বলে, কেন কি হয়েছে?
সুনীল বলে, মানে কাল রাতে তোমাকে আমি আপসেট করেছি, তাই কেমন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মনীষা আমি খুব ডিস্টার্ব হয়ে আছি।
একটা ভালবাসার কিস ফোনের মধ্যেই ছুঁড়ে দিয়ে মনীষা বলে, আজ যদি তোমার বদলে আমার কোন সমস্যা হত? তুমি কি আমাকে ছেড়ে যেতে? আমাকে তুমি এতটাই খারাপ ভাবলে?
অবাক হয় সুনীল। মনীষার কথার জবাব দিতে পারে না। ফোনে মনীষাই স্মরণ করায় ওকে। জানো আজকের দিনটা কি?
সুনীল বলে, কি?
মনীষা বলে আজকে হল ভ্যালেনটাইন ডে। প্রেমিক প্রমিকারা কখনও বিষন্ন মনে থাকে না আজকে। এসো আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য ধর্মতলার মেট্রোতে। আজই যাব আমি তোমার মায়ের কাছে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে সুনীল। জীতেনকে বলে, মনীষা এখন ধর্মতলাতেই আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যাই ওকে মায়ের সাথে দেখা করিয়ে নিয়ে আসি।
জীতেনকে বিদায় জানিয়ে সুনীল চলে আসে মেট্রো স্টেশনের কাছে। মনীষা হাসি মুখে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। সুনীল ওকে দেখে ভীষন খুশি হয়। জীবনে এমন আনন্দ পায়েনি কখনও আগে।
ট্যাক্সি করে মনীষাকে পাশে বসিয়ে সুনীল নিয়ে আসে নিজের বাড়ীতে। অসুস্থ মাকে বিছানা থেকে উঠতে না দিয়ে মনীষা প্রথমে ওনাকে একটা প্রনাম করে। তারপর জড়িয়ে ধরে সুনীলের মাকে। হবু শ্বাশুড়িও মনের মতন বউমা পেয়ে খুশীতে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
এর ঠিক মাস খানেকের মধ্যেই সুনীল মনীষার বিয়ে হয়। মনীষা ওর দমদমের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেয়। সাধের কুকুর টমিও চলে আসে সুনীলের বাড়ীতে। বিবাহিত জীবন খুব সুখের সাথেই কাটতে থাকে।
ডাক্তারের কাছে মনীষাকে সাথে নিয়েই গিয়েছিল সুনীল। উনি সব শুনে বলেন, আপনার যেটা সমস্যা, সেটা খুবই সামান্য। যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অ্যাডযাস্টমেন্ট ঠিক থাকে,এই সমস্যা গুলো সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু দূঃখের ব্যাপার, সেক্স সন্মন্ধীয় ভাল নলেজ না থাকার জন্য অনেক দম্পতিই একে অপরকে ঠিক মতন বুঝতে না পেরে ডিভোর্সের রাস্তাটাই বেছে নেন। সেদিক থেকে আপনি লাকি। সত্যিই একজন বোঝার মতন স্ত্রী আপনি পেয়েছেন।
প্রিয়তমা মনীষা সুনীলের জন্য যেটা করেছিল, সেটা কোন স্বার্থত্যাগ নয়। একপ্রকার সহযোগীতা। যেটা অনেকেই করেন না, বা বোঝেন না। কিছু যৌনসন্মন্ধীয় ডাক্তারি সিডি নতুন দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন সেই ডাক্তার। কিভাবে রমনী একজন পুরুষকে বা একজন স্ত্রী তার স্বামীকে, সোহাগ, আদর ও রমনের মাধ্যমে শরীরি ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করছেন এবং তার যৌনশক্তিকে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারছেন খুব অনায়াসেই।
মনীষার সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন আজও সুনীলকে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অনেক ভাগ্য করেই ও যেন এই প্রিয়তমাকে ওর জীবনে পেয়েছিল।।
। । সমাপ্ত। ।
খুব কাছ থেকে শোনা একজনের ভালবাসাকে ফিরে পাবার জীবন কাহিনী।
সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।
সুনীল বলে, আমিও আর পারছি না মনীষা। আমাকে আজ তুমি যে কি করে দিলে?
সঙ্গমেচ্ছু আকাঙ্খা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। মনীষার দূর্দান্ত শরীরটা যেন এই মূহূর্তে অবহেলা করার মতন নয়। ভালবাসা যেন কত গাঢ় হয়ে উঠেছে, প্রবল আকাঙ্খাকে মিশিয়ে ফেলে একাকার করে দিতে ইচ্ছে করছে মূহূর্তটাকে।
চোখের চাহনিটা অস্পষ্ট করে মনীষা শরীরটা পুরোটাই সঁপে দেয় সুনীলের কাছে। ঠোঁট থেকে সুনীলের মুখ নেমে আসে মনীষার গলায়, বুকে। ব্লাউজের ওপর পাগলের মতন মুখ ঘসতে থাকে সুনীল। সহবাসের এটাই যেন উপযুক্ত সময়।
মনীষা সুনীলকে বলে, আর দেরী কোরো না সুনীল। এসো, চলো, আমরা বিছানায় যাই। তোমাকে আবার ফিরতে হবে বাড়ীতে, মা একা রয়েছেন, এই টুকু সময়, তুমি যতপারো আমাকে আরও নিজের করে নাও।
দুজনের তপ্ত অমৃতধারা গলে গলে পড়ে, কামনার জারকরসের শেষ বিন্দু ঝরে না পড়া পর্যন্ত থামবে না। মিলন সুখের প্রথম হাতছানি। রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে মনীষার প্রবল সন্মতিতে আত্মহারা হয়ে সুনীল টগবগ করে ফুটতে থাকে। প্রিয়তমা এই মূহূর্তে ওকে কামনা করছে।
হাত লাগিয়ে সুনীলের জামার বোতামগুলো খুলতে শুরু করে মনীষা। নিজেকেও উন্মুক্ত করতে চাইছে সুনীলের সামনেই। সুনীলের জামা খুলে একটু দূরে সরে যায় মনীষা। এবার নিজের শাড়ী খুলে ব্লাউজটাকেও উন্মুক্ত করতে থাকে আসতে আসতে। শরীরের আবরণ ঘুচিয়ে মনীষার তখন মন-মোহনী রূপ। নগ্ন শরীরটার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে সুনীল। মনীষা দুটো হাত বাড়িয়ে ওকে বলে, নাও আমাকে নাও। নেবে না আমাকে?
এক মধুর অঙ্গের মধুর হাতছানি। কি অপরূপ সৌন্দর্যময় মনীষার দেহ। উন্মুক্ত স্তনযুগল মুগ্ধ চোখে, মনভরে, প্রাণভরে দেখছে সুনীল। ভরাট বুক, স্তনবৃন্তদ্বয় যেন মধুশালার আগ্নেয়গিরি। পুরুষের আসন্ন স্পর্ষসুখ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব ও রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা।
শেষ মূহূর্তে আর অপেক্ষা করতে পারে না মনীষা। কাতর গলায় সুনীলকে বলে ওঠে, আমি জীবনে, এই প্রথম কাউকে ভালবেসেছি সুনীল। আমার সবকিছু আজ উজাড় করে দিতে চাইছি তোমাকে। এসো, আর দেরী কোর না। প্লীজ। আমাকে করতে শুরু করো।
বিহ্বল সুনীল নগ্ন মনীষার শরীরটা এবার পাঁজা কোলা করে বিছানায় শুইয়ে দেয়। নগ্ন ওকেও হতে হবে। বীরপুরুষের মতন পুরুষদন্ডটাকে ঢুকিয়ে দিতে হবে মনীষার যৌন গহ্বরে। মধুভান্ড নিয়ে মনীষা অপেক্ষা করছে কাতর ভাবে।
প্যান্ট খুলে মনীষার শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে সুনীল। প্রবিষ্ট হতে চেয়ে ও মনীষাকে বলে, একটু তোমার পা টা ফাঁক করো মনীষা, এটা আমি ঢোকাই।
লিঙ্গটা হাতে নিয়ে দুবার নেড়েচেড়ে এবার ফাটলে ঢোকানোর চেষ্টা করতে থাকে সুনীল। মনীষা ওকে দেখছে আর আসন্ন সুখের আনন্দে মাতছে এখন থেকেই। সুনীলের লিঙ্গমুখ মনীষার ত্রিভুজের মুখ স্পর্ষ করেছে। থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মনীষা এবার সুনীলকে বুকে টেনে নেয়। ওর ঠোঁটে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বলে, আজ আমার নারী জীবন সার্থক হচ্ছে। এবার করতে শুরু করো সুনীল। আমার আঘাতের ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রেখো না। সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ করো। আমি তোমাকে জায়গায় ঠিক সাজিয়ে নেব।
কাল বিলম্ব না করে সুনীল এবার প্রবিষ্ট হয় মনীষার মধ্যে। কিন্তু একি? ওর পুরুষাঙ্গ তো সেভাবে দামাল হয়ে উঠছে না। সেই আকৃতি কোথায়? যা না হলে নারীর প্রকৃত সুখ হয় না। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে নিজের পুরুষত্বকে প্রমাণ করার। কিন্তু সবই যেন বিফলে যাচ্ছে। ছোট্ট দন্ডটি কি করে ওই গুহার মধ্যে সুখের ঝড় তুলবে ও নিজেও বুঝে পারছে না।
দু-তিনবার পেরেক পোঁতার আপ্রাণ চেষ্টা করে বিফল হয় সুনীল। মনীষার মুখটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে। সেই উৎসাহ,উদ্দীপনাটা হারিয়ে ফেলেছে। এ কাকে ভালবাসল ও? যার কিনা এত সুপুরুষ চেহারা, সে তার প্রিয়তমাকে মিলনের সুখটাই দিতে পারল না। এ কেমন হল? যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন? ভালবাসা কি টিকিয়ে রাখা যায়?
মুখটা একটু করুন মত করে মনীষা বলে, তোমার কি কোন অসুবিধে হচ্ছে সুনীল? তাহলে আজ ছাড়ো। আমরা বরং অন্য কোনদিন।
নিজের প্রতি হতাশায়, মনীষার নগ্ন শরীরটাকে ছেড়ে উঠে পড়ে সুনীল। প্যান্ট, জামা গলিয়ে নেয়। মনীষাও তাড়াতাড়ি শরীরটা ঢেকে নেয় শাড়ী দিয়ে। দেখে সুনীল ওর দিকে তাকাতে পারছে না লজ্জ্বায়। হঠাৎই মেয়েমানুষের কাছে ধরা পড়ে গেছে শরীরি খুঁতে। স্বপ্ন, আকাঙ্খা সব ভেঙে চূড়ে ধুলিস্যাত হবার অপেক্ষায়। এই প্রথম জীবনে কোন এক পরীক্ষা দিতে গিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে সুনীল। কি করে মুখটা দেখাবে মনীষাকে, ও ভেবে পাচ্ছে না।
তাড়াতাড়ি শাড়ীটা পড়ে নিয়ে মনীষা সুনীলকে বলে, দোষটা আমার। বড্ড বেশী তাড়াহূড়ো করতে গেলাম। আসলে তুমি মনটা বসাতে পারো নি। প্রথম প্রথম এরকম হয় সুনীল। আমি কিচ্ছু মনে করিনি। তুমি নিজেকে খারাপ ভেবো না।
সুনীলকে উপহার দেবার জন্য একটা দামী ঘড়ি কিনেছে মনীষা। ওটা সুনীলের হাতে দেয়। সুনীল এখনও তাকাতে পারছে না মনীষার দিক। মনীষা বলে, তুমি কি খুবই আপসেট সুনীল? আর একবার চেষ্টা করে দেখবে? কেন এত মন খারাপ করছ? এমন তো হতেই পারে।
নিজের প্রতি একটা ধিক্কার এসে যাচ্ছে। মনীষাকে নিজের পুরুষত্বটা দেখাতে পারেনি বলে, কেমন যেন নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে গেছে।
সুনীল ঘড়িটা মনীষার হাত থেকে নিয়ে আর দাঁড়ায় না। বলে, মনীষা আজ আমি যাই। কাল অফিসে আবার দেখা হবে।
পাশের ঘর থেকে কুকুরটা আবার চলে এসেছে। সুনীলকে দেখে ল্যাজ নাড়ছে। মনীষা সুনীলকে নিজের ফোন নম্বরটা দেয়। বলে, রাত্রে আমাকে ফোন কোরো। ওকে বিদায় জানিয়ে সুনীল বেরিয়ে পড়ে ওর দমদমের ফ্ল্যাট থেকে। বিষন্ন মনীষার মুখ। প্রথম মিলনটা হতে হতেও যেন হল না শেষ পর্যন্ত।
বাড়ী ফিরে মায়ের সাথেও ভাল করে কথা বলে না সুনীল। রাতে বিছনায় শুয়ে দুশ্চিন্তা, জ্বালা, যন্ত্রনায় মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে ও। ঘুম আজকেও আসতে চাইছে না। ভালবাসার মূল্য কি শেষ পর্যন্ত চোকাতে পারবে ও? এই একদিনেই সব যেন ঝড়ের মত ওলোট পালোট হয়ে গেছে ওর জীবনে। কি যে হবে শেষ পর্যন্ত কে জানে?
পরের দিন সকালে অফিসে গিয়েই মনীষার সাথে চোখাচোখি হয় সুনীলের। মনীষা ওর সাথে কথা বলতে চাইছে, অথচ সুনীল বলছে না। নিজেকে ভীষন অপরাধী বলে মনে হচ্ছে। পাশ কাটিয়ে, এড়িয়ে, মনীষার সাথে কথা না বলেই সুনীল অফিস ছুটীর আগেই বেরিয়ে আসে অফিস থেকে। নিজের সেল ফোন থেকে ফোন করে, ছোটবেলার এক বন্ধুকে। বলে, তোর সাথে একটু ধর্মতলায় মিট করতে চাই। আসতে পারবি?
ছোটবেলার বন্ধু জীতেন এক কথায় রাজী হয়। বলে, আসছি আমি এক ঘন্টার মধ্যে। তুই মেট্রো সিনেমা হলের সামনে আমার জন্য ওয়েট কর।
সুনীল জীতেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ঠিক একঘন্টার মধ্যেই জীতেন এসে হাজির হয়। দুজনে একটা রেস্তোরায় ঢোকে। খাবারের অর্ডার দিয়ে সুনীল খুলে বলে ওর অসুবিধার কথাটা। মিলন ঘটাতে গিয়ে একটা ফাঁক বেরিয়ে পড়েছে শরীর থেকে। এখন বন্ধু যদি কোন উপায় ওকে বাতলে দিতে পারে।
প্রাণের বন্ধু জীতেন সব শুনে একটাই সুরাহা দেয় সুনীলকে। এ সমস্যায় এখন ভুগছে অনেকেই। যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন কখনও সুখের হয় না। আমার মনে হয় তুই কোন ভাল ডাক্তারের কাছে গেলেই এই সমাধানের পথ খুঁজে পাবি। তোর মনীষা যদি সত্যি তোকে ভালবেসে থাকে, তাহলে তোকে ছেড়ে যাবে না। তবে সে সম্ভাবনা কম। পৃথিবীতে বিচ্ছেদের হার যেভাবে বাড়ছে, বিবাহিত জীবনে অনেকে সুখী নয় বলেই।
সুনীল সব শুনে বলে, কিন্তু মনীষা তো এখনও আমাকে চাইছে। ওতো অফিসেও আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে অনেকবার। আমিই কথা বলিনি।
রীতিমতন তাজ্জব হয় জীতেন, বলে সেকিরে? তুই কথা বলিস নি? কেন? মেয়েটা তো তাহলে ভাল বলতে হবে। ব্যাপারটাকে তুচ্ছ মনে করে সেন্টিমেন্টে নেয় নি। তোর এখুনি উচিত মনীষার সাথে কথা বলা।
নিজের ভুলটাকে বুঝতে পেরে সুনীল ফোনে ধরার চেষ্টা করে মনীষাকে। অফিসে ওকে দেখতে না পেয়ে মনীষা এতক্ষনে হয়তো রওনা দিয়ে দিয়েছে বাড়ীর দিকে।
দুতিনবার বাজতেই ফোনটা রিসিভ করে মনীষা। সুনীলকে বলে, কি হল? তুমি আজকে তোমার মায়ের কাছে আমাকে নিয়ে গেলে না? আমি তোমাকে দেখতে না পেয়ে অফিস থেকে চলে এলাম। কোথায় চলে গেলে তুমি?
বুকের ভেতর থেকে আবেগটা বেরিয়ে এসে কন্ঠরোধ করে দিয়েছে। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে সুনীল বলে, মনীষা এরপরেও তুমি?
ও প্রান্ত থেকে মনীষা বলে, কেন কি হয়েছে?
সুনীল বলে, মানে কাল রাতে তোমাকে আমি আপসেট করেছি, তাই কেমন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মনীষা আমি খুব ডিস্টার্ব হয়ে আছি।
একটা ভালবাসার কিস ফোনের মধ্যেই ছুঁড়ে দিয়ে মনীষা বলে, আজ যদি তোমার বদলে আমার কোন সমস্যা হত? তুমি কি আমাকে ছেড়ে যেতে? আমাকে তুমি এতটাই খারাপ ভাবলে?
অবাক হয় সুনীল। মনীষার কথার জবাব দিতে পারে না। ফোনে মনীষাই স্মরণ করায় ওকে। জানো আজকের দিনটা কি?
সুনীল বলে, কি?
মনীষা বলে আজকে হল ভ্যালেনটাইন ডে। প্রেমিক প্রমিকারা কখনও বিষন্ন মনে থাকে না আজকে। এসো আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য ধর্মতলার মেট্রোতে। আজই যাব আমি তোমার মায়ের কাছে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে সুনীল। জীতেনকে বলে, মনীষা এখন ধর্মতলাতেই আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যাই ওকে মায়ের সাথে দেখা করিয়ে নিয়ে আসি।
জীতেনকে বিদায় জানিয়ে সুনীল চলে আসে মেট্রো স্টেশনের কাছে। মনীষা হাসি মুখে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। সুনীল ওকে দেখে ভীষন খুশি হয়। জীবনে এমন আনন্দ পায়েনি কখনও আগে।
ট্যাক্সি করে মনীষাকে পাশে বসিয়ে সুনীল নিয়ে আসে নিজের বাড়ীতে। অসুস্থ মাকে বিছানা থেকে উঠতে না দিয়ে মনীষা প্রথমে ওনাকে একটা প্রনাম করে। তারপর জড়িয়ে ধরে সুনীলের মাকে। হবু শ্বাশুড়িও মনের মতন বউমা পেয়ে খুশীতে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
এর ঠিক মাস খানেকের মধ্যেই সুনীল মনীষার বিয়ে হয়। মনীষা ওর দমদমের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেয়। সাধের কুকুর টমিও চলে আসে সুনীলের বাড়ীতে। বিবাহিত জীবন খুব সুখের সাথেই কাটতে থাকে।
ডাক্তারের কাছে মনীষাকে সাথে নিয়েই গিয়েছিল সুনীল। উনি সব শুনে বলেন, আপনার যেটা সমস্যা, সেটা খুবই সামান্য। যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অ্যাডযাস্টমেন্ট ঠিক থাকে,এই সমস্যা গুলো সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু দূঃখের ব্যাপার, সেক্স সন্মন্ধীয় ভাল নলেজ না থাকার জন্য অনেক দম্পতিই একে অপরকে ঠিক মতন বুঝতে না পেরে ডিভোর্সের রাস্তাটাই বেছে নেন। সেদিক থেকে আপনি লাকি। সত্যিই একজন বোঝার মতন স্ত্রী আপনি পেয়েছেন।
প্রিয়তমা মনীষা সুনীলের জন্য যেটা করেছিল, সেটা কোন স্বার্থত্যাগ নয়। একপ্রকার সহযোগীতা। যেটা অনেকেই করেন না, বা বোঝেন না। কিছু যৌনসন্মন্ধীয় ডাক্তারি সিডি নতুন দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন সেই ডাক্তার। কিভাবে রমনী একজন পুরুষকে বা একজন স্ত্রী তার স্বামীকে, সোহাগ, আদর ও রমনের মাধ্যমে শরীরি ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করছেন এবং তার যৌনশক্তিকে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারছেন খুব অনায়াসেই।
মনীষার সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন আজও সুনীলকে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অনেক ভাগ্য করেই ও যেন এই প্রিয়তমাকে ওর জীবনে পেয়েছিল।।
। । সমাপ্ত। ।
খুব কাছ থেকে শোনা একজনের ভালবাসাকে ফিরে পাবার জীবন কাহিনী।
সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।