02-01-2021, 10:01 PM
ঝুকে পরে প্রবাল ইন্দ্রর টেবিলের ওপর। তারপর একবার মাথা ঘুরিয়ে চারিদিক টা দেখে নিচু স্বরে বলতে থাকে, “আরে ধুর বোকা। কাক পক্ষীতেও জানতে পারবে না যদি না তুই নিজের থেকে কাউকে বলেছিস। তেমন কিছুই করতে হবে না ভাই। অনলাইন চ্যাট রে ভাই। সবথেকে প্রথমে তোকে রেডিফ ডট কম এ নিজস্ব আইডি তৈরি করতে হবে। সেটা কেমন করে করে করতে হবে, আশা করি সেটা তোকে বলে দিতে হবে না। তুই আগে একটা আইডি তৈরি কর নিজের। তারপর আমি আগামিকাল আসবো এখানে, নিজেকে সেই সময় একটু ফ্রি রাখিস, তোকে আমি একবার বুঝিয়ে দেব, তারপর দেখবি তুই ব্যাপারটা ছাড়তে পারছিস না। ভালো লাগবে, সময় ও কাটবে। এখন আমাকে উঠতে দে, একটা কাজ আছে। আগামিকাল আসছি, একটু অপেক্ষা করো সোনা”। বলে উঠে দাড়ায় প্রবাল। কাঁচের দরজা টা ঠেলে বেড়িয়ে যায় প্রবাল। এতক্ষন মন দিয়ে প্রবালের কথা গুলো শুনছিল ইন্দ্র। শুনছিল বললে ভুল হবে, হয়তো কথা গুলো গিলছিল ইন্দ্র। প্রবাল বেড়িয়ে যেতেই, তাঁর যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকে ইন্দ্র।
অনলাইন ফ্রেন্ডশিপ ব্যাপারটা কয়েক জনের মুখে শুনেছিল ইন্দ্র। কিন্তু সেটা নিয়ে কোনোদিন চিন্তা করেনি সে। অনলাইনে আবার বন্ধুত্ব হয় নাকি? চোখে দেখা যাবে না, কথা বলা যাবে না। শুধু লিখে লিখে কি বন্ধুত্ব হয়? কে জানে? যদিও বা বন্ধুত্ব হয়, সে কেমন হবে? কি বলবে তাকে? নাহ……আর ভাবতে পারছে না সে। মনে মনে স্থির করে নেয়, দেখাই যাক না। তেমন যদি হয়, যদি না ভালো লাগে তাহলে আর এইসব না করলেই হল। অফিসের ফোন নাম্বার তো আর কাউকে দিচ্ছে না সে। মনের মধ্যে কেমন একটা অজানা উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে ইন্দ্রর। অফিসের কাজে আর মন বসাতে পারে না। সন্ধ্যেও হয়ে গেছে ভালই। ঘরে যাওয়ার সময় আবার বাবার জন্য কয়েকটা অসুধ কিনে নিয়ে যেতে হবে। অফিস বন্ধ করে বেড়িয়ে পড়ে ইন্দ্র। আবার ঘরে ফিরতে হবে, ব্যাপারটা ভাবতেই মনটা বিরক্তি তে ভরে যায় ইন্দ্রর। ভালই বুঝতে পারে, তাদের এই দাম্পত্য কলহ ধীরে ধীরে তাঁর সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। একটা সিগারেট ধরায় ইন্দ্র। নিজেকে নিজে বোঝাতে শুরু করে ইন্দ্র। মনে মনে ঠিক করে নেয়, এখন থেকে সে আর বেশী কথা বলবে না ঘরে। যতটা সম্ভব চুপ করে থাকবে। তাতে যদি মতবিরোধ কিছুটা হলেও কম হয়। রাস্তায় বাবার জন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনে ঘরে ফিরে আসে ইন্দ্র।
কার টা গ্যারাজে ঢুকিয়ে ঘরের ভেতরে আসতেই, ঘরের ভেতরের থমথমে আবহাওয়া দেখেই ইন্দ্র বুঝতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে। ওষুধ টা বাবার রুমে রেখে বেড়িয়ে আসার সময় বাবার ডাক শুনে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। “বেটা, এদিকে এসে একটু আমার কাছে বস। অফিস কেমন চলছে বেটা? সব ঠিকঠাক আছে তো”? বাবার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বাবার পালঙ্কের এক ধারে চুপ করে বসে থাকে ইন্দ্র। বুঝতে পারে, বাবা নিশ্চয় কিছু বলার জন্যই তাকে বসতে বললেন। “বেটা অফিস তো ঠিক আছে, এবারে একটু বাড়ির প্রতি মন দে। বাড়িতে কিন্তু সব কিছু ঠিক ঠাক চলছে না। তোর বুদ্ধি আছে বেটা, তুই চাইলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমি জানি বেটা আমি তোর কাছে অনেক বড় দোষী। তাও তুই একটু মানিয়ে চলতে চেষ্টা কর। বাচ্চা ছেলেটার কথা চিন্তা কর। ওর কি দোষ? ও যদি এত ছোট বয়স থেকে বাবা মায়ের ঝগড়া দেখে, তাহলে ওর মনে খারাপ চিন্তা ধারা বাসা বাঁধতে শুরু করবে। বৌমা কে একটু বুঝিয়ে বল, তুই যদি একটু বুঝিয়ে বলিস, দেখবি বৌমা ঠিক তোর কথা শুনবে”। বাবার কথাগুলো শুনে, মুখ তুলে বাবার দিকে তাকায় ইন্দ্র। ভালো করে বাবার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে, বাবার চোখের কোল চিকচিক করছে। কোনও কারনে দুঃখ পেয়েছে মানুষটা। বাবাকে কি বলে সান্ত্বনা দেবে বুঝতে পারে না। বাবার কথা রাখতেই সে বিয়েতে সন্মতি দিয়েছিল, সেই বাবাই আজকে মনঃকষ্টে ভুগছে। মনটা ভার হয়ে আসে ইন্দ্রর। ঘরের জানালা দিয়ে বাইরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। “তুমি দোষ নিও না বাবা। পুরোটাই আমার কপালের দোষ। দেখছি কি করা যায়”, বলে উঠে পড়ে ইন্দ্রজিত।
নিজের রুমের দিকে পা বাড়াতেই, বন্ধ দরজার ভেতর থেকে সুমিত্রার হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। কারও সাথে ফোনে কথা বলছে সুমিত্রা। দরজার বাইরেই থমকে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। কান পেতে শোনার চেষ্টা করে, সুমিত্রা কার সাথে কথা বলছে। ঠিক সে যা ভেবেছিল তাই, সুমিত্রা নিজের মায়ের সাথে কথা বলছে। ইন্দ্রর মাথাটা আরও গরম হয়ে যায়। এই ভদ্রমহিলাটির রোজ অন্তত দুবার তাঁর মেয়ের সাথে কথা বলা চাই। রোজ রোজ কি যে এত কথা থাকতে পারে, বুঝতে পারে না ইন্দ্র। তবে এটা সে এতদিনে বুঝে গেছে, সুমিত্রাকে যাবতীয় কুউপদেশ, কুপরামর্শ তাঁর মাই প্রদান করেন।
ইন্দ্র নিজের রুমে ঢুকতেই ফোন রেখে দেয় সুমিত্রা। মুখ ঝামটা দিয়ে ইন্দ্রকে বলে ওঠে সুমিত্রা, “কি হল? বাইরে থেকে এসেছ, সব কি বলে দিতে হবে নাকি তোমাকে? আগে জামা কাপড় চেঞ্জ করে তারপর এই রুমের কোনও জিনিষে হাত দেবে। বাচ্চা নাকি তুমি যে সব কিছু বলে দিতে হবে? কি জানি কার সাথে মিশে এখানে আসছ? তোমাদের বাড়ির কোনও আচার বিচার আছে নাকি? যাও যাও আগে বাথরুমে গিয়ে হাত পা ধুয়ে, ড্রেস চেঞ্জ করে তারপর এই রুমে ঢুকবে”। ইন্দ্র বুঝতে পারে না সে তাঁর নিজস্ব ঘরে ঢুকেছে না কোনও মন্দিরে। সারাদিন পরে বাড়িতে এসেছে সে, কোথায় তাঁর স্ত্রী তাঁর জন্য একটু চা করে এনে দেবে, এক গ্লাস জল দেবে………আর ভাবতে পারে না ইন্দ্র, মাথাটা দপ দপ করে ওঠে। বুঝে উঠতে পারেনা, সে তার বিয়ে করা স্ত্রী কে কেমন করে বোঝাবে? একদিকে স্ত্রীর খারাপ ব্যবহার, আরেক দিকে তার বাবা মা কে শান্তি তে রাখা......কি করবে সে? চুপ করে মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড়িয়ে মা কে খুজতে থাকে। সুনন্দা দেবী রান্না ঘরে ছিলেন। ইন্দ্রকে সেই দিকে আসতে দেখে, এগিয়ে এসে বলেন, “শরীর ঠিক আছে তো বাবা”? শাড়ির আঁচল দিয়ে ইন্দ্রর কপালে বিন্দু বিন্দু জমে ওঠা ঘাম পরম যত্নে মুছিয়ে দিতে দিতে বলেন, “জল খাবি? তুই ডাইনিং টেবিলে চেয়ার নিয়ে বস, আমি চা করে নিয়ে আসছি তোর জন্য”।
অনলাইন ফ্রেন্ডশিপ ব্যাপারটা কয়েক জনের মুখে শুনেছিল ইন্দ্র। কিন্তু সেটা নিয়ে কোনোদিন চিন্তা করেনি সে। অনলাইনে আবার বন্ধুত্ব হয় নাকি? চোখে দেখা যাবে না, কথা বলা যাবে না। শুধু লিখে লিখে কি বন্ধুত্ব হয়? কে জানে? যদিও বা বন্ধুত্ব হয়, সে কেমন হবে? কি বলবে তাকে? নাহ……আর ভাবতে পারছে না সে। মনে মনে স্থির করে নেয়, দেখাই যাক না। তেমন যদি হয়, যদি না ভালো লাগে তাহলে আর এইসব না করলেই হল। অফিসের ফোন নাম্বার তো আর কাউকে দিচ্ছে না সে। মনের মধ্যে কেমন একটা অজানা উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে ইন্দ্রর। অফিসের কাজে আর মন বসাতে পারে না। সন্ধ্যেও হয়ে গেছে ভালই। ঘরে যাওয়ার সময় আবার বাবার জন্য কয়েকটা অসুধ কিনে নিয়ে যেতে হবে। অফিস বন্ধ করে বেড়িয়ে পড়ে ইন্দ্র। আবার ঘরে ফিরতে হবে, ব্যাপারটা ভাবতেই মনটা বিরক্তি তে ভরে যায় ইন্দ্রর। ভালই বুঝতে পারে, তাদের এই দাম্পত্য কলহ ধীরে ধীরে তাঁর সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। একটা সিগারেট ধরায় ইন্দ্র। নিজেকে নিজে বোঝাতে শুরু করে ইন্দ্র। মনে মনে ঠিক করে নেয়, এখন থেকে সে আর বেশী কথা বলবে না ঘরে। যতটা সম্ভব চুপ করে থাকবে। তাতে যদি মতবিরোধ কিছুটা হলেও কম হয়। রাস্তায় বাবার জন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনে ঘরে ফিরে আসে ইন্দ্র।
কার টা গ্যারাজে ঢুকিয়ে ঘরের ভেতরে আসতেই, ঘরের ভেতরের থমথমে আবহাওয়া দেখেই ইন্দ্র বুঝতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে। ওষুধ টা বাবার রুমে রেখে বেড়িয়ে আসার সময় বাবার ডাক শুনে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। “বেটা, এদিকে এসে একটু আমার কাছে বস। অফিস কেমন চলছে বেটা? সব ঠিকঠাক আছে তো”? বাবার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বাবার পালঙ্কের এক ধারে চুপ করে বসে থাকে ইন্দ্র। বুঝতে পারে, বাবা নিশ্চয় কিছু বলার জন্যই তাকে বসতে বললেন। “বেটা অফিস তো ঠিক আছে, এবারে একটু বাড়ির প্রতি মন দে। বাড়িতে কিন্তু সব কিছু ঠিক ঠাক চলছে না। তোর বুদ্ধি আছে বেটা, তুই চাইলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমি জানি বেটা আমি তোর কাছে অনেক বড় দোষী। তাও তুই একটু মানিয়ে চলতে চেষ্টা কর। বাচ্চা ছেলেটার কথা চিন্তা কর। ওর কি দোষ? ও যদি এত ছোট বয়স থেকে বাবা মায়ের ঝগড়া দেখে, তাহলে ওর মনে খারাপ চিন্তা ধারা বাসা বাঁধতে শুরু করবে। বৌমা কে একটু বুঝিয়ে বল, তুই যদি একটু বুঝিয়ে বলিস, দেখবি বৌমা ঠিক তোর কথা শুনবে”। বাবার কথাগুলো শুনে, মুখ তুলে বাবার দিকে তাকায় ইন্দ্র। ভালো করে বাবার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে, বাবার চোখের কোল চিকচিক করছে। কোনও কারনে দুঃখ পেয়েছে মানুষটা। বাবাকে কি বলে সান্ত্বনা দেবে বুঝতে পারে না। বাবার কথা রাখতেই সে বিয়েতে সন্মতি দিয়েছিল, সেই বাবাই আজকে মনঃকষ্টে ভুগছে। মনটা ভার হয়ে আসে ইন্দ্রর। ঘরের জানালা দিয়ে বাইরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। “তুমি দোষ নিও না বাবা। পুরোটাই আমার কপালের দোষ। দেখছি কি করা যায়”, বলে উঠে পড়ে ইন্দ্রজিত।
নিজের রুমের দিকে পা বাড়াতেই, বন্ধ দরজার ভেতর থেকে সুমিত্রার হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। কারও সাথে ফোনে কথা বলছে সুমিত্রা। দরজার বাইরেই থমকে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। কান পেতে শোনার চেষ্টা করে, সুমিত্রা কার সাথে কথা বলছে। ঠিক সে যা ভেবেছিল তাই, সুমিত্রা নিজের মায়ের সাথে কথা বলছে। ইন্দ্রর মাথাটা আরও গরম হয়ে যায়। এই ভদ্রমহিলাটির রোজ অন্তত দুবার তাঁর মেয়ের সাথে কথা বলা চাই। রোজ রোজ কি যে এত কথা থাকতে পারে, বুঝতে পারে না ইন্দ্র। তবে এটা সে এতদিনে বুঝে গেছে, সুমিত্রাকে যাবতীয় কুউপদেশ, কুপরামর্শ তাঁর মাই প্রদান করেন।
ইন্দ্র নিজের রুমে ঢুকতেই ফোন রেখে দেয় সুমিত্রা। মুখ ঝামটা দিয়ে ইন্দ্রকে বলে ওঠে সুমিত্রা, “কি হল? বাইরে থেকে এসেছ, সব কি বলে দিতে হবে নাকি তোমাকে? আগে জামা কাপড় চেঞ্জ করে তারপর এই রুমের কোনও জিনিষে হাত দেবে। বাচ্চা নাকি তুমি যে সব কিছু বলে দিতে হবে? কি জানি কার সাথে মিশে এখানে আসছ? তোমাদের বাড়ির কোনও আচার বিচার আছে নাকি? যাও যাও আগে বাথরুমে গিয়ে হাত পা ধুয়ে, ড্রেস চেঞ্জ করে তারপর এই রুমে ঢুকবে”। ইন্দ্র বুঝতে পারে না সে তাঁর নিজস্ব ঘরে ঢুকেছে না কোনও মন্দিরে। সারাদিন পরে বাড়িতে এসেছে সে, কোথায় তাঁর স্ত্রী তাঁর জন্য একটু চা করে এনে দেবে, এক গ্লাস জল দেবে………আর ভাবতে পারে না ইন্দ্র, মাথাটা দপ দপ করে ওঠে। বুঝে উঠতে পারেনা, সে তার বিয়ে করা স্ত্রী কে কেমন করে বোঝাবে? একদিকে স্ত্রীর খারাপ ব্যবহার, আরেক দিকে তার বাবা মা কে শান্তি তে রাখা......কি করবে সে? চুপ করে মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড়িয়ে মা কে খুজতে থাকে। সুনন্দা দেবী রান্না ঘরে ছিলেন। ইন্দ্রকে সেই দিকে আসতে দেখে, এগিয়ে এসে বলেন, “শরীর ঠিক আছে তো বাবা”? শাড়ির আঁচল দিয়ে ইন্দ্রর কপালে বিন্দু বিন্দু জমে ওঠা ঘাম পরম যত্নে মুছিয়ে দিতে দিতে বলেন, “জল খাবি? তুই ডাইনিং টেবিলে চেয়ার নিয়ে বস, আমি চা করে নিয়ে আসছি তোর জন্য”।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই