02-01-2021, 09:33 PM
একই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কখন যে তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে বুঝতে পারেনি ইন্দ্র। হটাত দূরে সেই পরিবারের লোকজনদের মধ্যে একটু চঞ্চলতা লক্ষ্য করে সেই দিকে কয়েক পা এগিয়ে গেল ইন্দ্র। একটু একটু করে নাকি জ্ঞ্যান ফিরছে উত্তম বাবুর। ততক্ষনে ওনাকে অপারেশান থিয়েটার থেকে বের করে পোস্ট অপারেশান ওয়ার্ডে দেওয়া হয়েছে। সেটাও অপারেশান থিয়েটারের লাগোয়া একটা ছোট্ট ওয়ার্ড। প্রথমেই দুজন ঢুকলেন ওয়ার্ডে , মানিক বাবু আর সাথে ওই মাঝবয়সী ভদ্রমহিলা। একটু পরেই সেই মানিক বাবু হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে এসে অভিজিত সিংহের দিকে ইশারাতে কিছু বললেন।
“ইন্দ্র এইদিকে আয়, ভেতরে চল তোর কাকু আমাদের ডাকছেন”। বাবার গুরুগম্ভীর আওয়াজ টা কানে আসতেই থতমত খেয়ে এগিয়ে যায় ইন্দ্র। ওয়ার্ড টা ছোট, প্রায় পনেরোটা বেড পাতা আছে। প্রতিটা বেডের সাথে লাইফ সাপোর্ট মেশিন, অক্সিজেন সব লাগানো আছে। ইন্দ্রজিত তার বাবার পেছনে পেছনে এগোতে থাকে। প্রত্যেক টা বেডেই পেশেনট আছে। কেমন একটা নিস্তব্ধতা চারিদিকে, মাঝে মাঝে শুধু মেশিনের মৃদু আওয়াজ ভেসে আসছে। একটা ঘোরের মধ্যে হাঁটতে থাকে ইন্দ্রজিত কিছুটা দম দেওয়া পুতুলের মতন। ওই তো সেই অভিজাত মহিলাটি দাঁড়িয়ে রয়েছেন একটা বেডের পাশে। ফর্সা গাল বেয়ে চোখের জলের ধারা নেমে আসছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন আর এক ভাবে বিছানায় শায়িত মানুষটার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
বেডে শায়িত মানুষটার দিকে ঝুকে পড়ে জিজ্ঞেস করে অভিজিত সিংহ, “বল উত্তম, কি বলতে চাইছিস বল আমাকে, আমরা তো আছি, কিছু হবে না তোর। একদম ভেঙ্গে পড়বি না তুই। আমি আছি তো। একবার তাকিয়ে দেখ, আজকে আমার সাথে আমার ছেলেও এসেছে তোর কাছে”। বলতে বলতে অভিজিত সিংহের গলা ধরে আসে। বিছানায় শায়িত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর একটা হাত শক্ত করে ধরে থাকে। বেডের আরেক পাশে দাঁড়িয়ে আছে ইন্দ্র। বাবার সাথে এই ভদ্রলোকটি এত ঘনিষ্ঠ সেটা আগে কোনোদিন জানতে পারেনি। জানবেই বা কেমন করে, চার বছর সে পুনে তে ছিল, তারপর এসে চাকরী। বাবার সাথে সেই অর্থে তেমন ভাবে গল্প কোনদিনও করেনি ইন্দ্র। তার যত গল্প হতো সে তো মায়ের সাথে। কিন্তু মা ও কোনোদিন এদের কথা বলেননি ওকে।
“তুই আমার একটা কাজ করে দে অভি। আমি জানিনা আমি আর কতক্ষন বেঁচে আছি। আমার একমাত্র মেয়ে রইলো আর ওর মা রইলো, ভাই মানিক রইলো, তুই দেখিস ওদের। তোর ছেলে আর আমার মেয়ের বিয়েটা হয়তো আমি দেখে যেতে পারবোনা। তুই একাই ব্যাবস্থা করে নিস। এটা বহুদিনের স্বপ্ন আমাদের দুজনের, তাই না"? বলতে বলতে উত্তম বাবুর কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে আসে। মাথাটা একদিকে হেলে পড়ে। অভিজিত সিংহ তখনও বলে চলেছেন, “আমি তো আছি, সব ব্যাবস্থা করে দেব। তুই এমন বলিস না উত্তম”। কথার মাঝেই মনিটরের দিকে চোখ চলে যায় অভিজিতের সিংহের। একটা যান্ত্রিক শব্দের সাথে একটা সোজা লাইন মনিটরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাচ্ছে।
এতক্ষন বাকরুদ্ধ হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে ছিল ইন্দ্র। বাবা যে কথাগুলো তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বলছিলেন, তার মানে টা তার কাছে বেশ কিছুটা পরিষ্কার হয়ে আসে। এই জন্যই ওই মানিক বাবু তাদের দুজনকে ভেতরে ঢুকতে বলেছিলেন। তার মানে খুব তাড়াতাড়ি তার বিয়ে হবে। কথাটা ভাবতেই মুখটা থমথমে হয়ে যায় ইন্দ্রর। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে, সে যে প্রতিবাদ করবে, সে উপায় নেই। ফ্যাল ফ্যাল করে হতাশা মাখা চোখ নিয়ে চেয়ে থাকে বিছানায় শোয়া মানুষটার দিকে। মানিক বাবু ইতিমধ্যে দৌড়ে গিয়ে ওয়ার্ডের ডাক্তার কে ডেকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু বিধির বিধান কে কেও খণ্ডাতে পারেনা। চলে গেলেন বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু উত্তম দত্ত।
“ইন্দ্র এইদিকে আয়, ভেতরে চল তোর কাকু আমাদের ডাকছেন”। বাবার গুরুগম্ভীর আওয়াজ টা কানে আসতেই থতমত খেয়ে এগিয়ে যায় ইন্দ্র। ওয়ার্ড টা ছোট, প্রায় পনেরোটা বেড পাতা আছে। প্রতিটা বেডের সাথে লাইফ সাপোর্ট মেশিন, অক্সিজেন সব লাগানো আছে। ইন্দ্রজিত তার বাবার পেছনে পেছনে এগোতে থাকে। প্রত্যেক টা বেডেই পেশেনট আছে। কেমন একটা নিস্তব্ধতা চারিদিকে, মাঝে মাঝে শুধু মেশিনের মৃদু আওয়াজ ভেসে আসছে। একটা ঘোরের মধ্যে হাঁটতে থাকে ইন্দ্রজিত কিছুটা দম দেওয়া পুতুলের মতন। ওই তো সেই অভিজাত মহিলাটি দাঁড়িয়ে রয়েছেন একটা বেডের পাশে। ফর্সা গাল বেয়ে চোখের জলের ধারা নেমে আসছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন আর এক ভাবে বিছানায় শায়িত মানুষটার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
বেডে শায়িত মানুষটার দিকে ঝুকে পড়ে জিজ্ঞেস করে অভিজিত সিংহ, “বল উত্তম, কি বলতে চাইছিস বল আমাকে, আমরা তো আছি, কিছু হবে না তোর। একদম ভেঙ্গে পড়বি না তুই। আমি আছি তো। একবার তাকিয়ে দেখ, আজকে আমার সাথে আমার ছেলেও এসেছে তোর কাছে”। বলতে বলতে অভিজিত সিংহের গলা ধরে আসে। বিছানায় শায়িত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর একটা হাত শক্ত করে ধরে থাকে। বেডের আরেক পাশে দাঁড়িয়ে আছে ইন্দ্র। বাবার সাথে এই ভদ্রলোকটি এত ঘনিষ্ঠ সেটা আগে কোনোদিন জানতে পারেনি। জানবেই বা কেমন করে, চার বছর সে পুনে তে ছিল, তারপর এসে চাকরী। বাবার সাথে সেই অর্থে তেমন ভাবে গল্প কোনদিনও করেনি ইন্দ্র। তার যত গল্প হতো সে তো মায়ের সাথে। কিন্তু মা ও কোনোদিন এদের কথা বলেননি ওকে।
“তুই আমার একটা কাজ করে দে অভি। আমি জানিনা আমি আর কতক্ষন বেঁচে আছি। আমার একমাত্র মেয়ে রইলো আর ওর মা রইলো, ভাই মানিক রইলো, তুই দেখিস ওদের। তোর ছেলে আর আমার মেয়ের বিয়েটা হয়তো আমি দেখে যেতে পারবোনা। তুই একাই ব্যাবস্থা করে নিস। এটা বহুদিনের স্বপ্ন আমাদের দুজনের, তাই না"? বলতে বলতে উত্তম বাবুর কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে আসে। মাথাটা একদিকে হেলে পড়ে। অভিজিত সিংহ তখনও বলে চলেছেন, “আমি তো আছি, সব ব্যাবস্থা করে দেব। তুই এমন বলিস না উত্তম”। কথার মাঝেই মনিটরের দিকে চোখ চলে যায় অভিজিতের সিংহের। একটা যান্ত্রিক শব্দের সাথে একটা সোজা লাইন মনিটরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাচ্ছে।
এতক্ষন বাকরুদ্ধ হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে ছিল ইন্দ্র। বাবা যে কথাগুলো তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বলছিলেন, তার মানে টা তার কাছে বেশ কিছুটা পরিষ্কার হয়ে আসে। এই জন্যই ওই মানিক বাবু তাদের দুজনকে ভেতরে ঢুকতে বলেছিলেন। তার মানে খুব তাড়াতাড়ি তার বিয়ে হবে। কথাটা ভাবতেই মুখটা থমথমে হয়ে যায় ইন্দ্রর। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে, সে যে প্রতিবাদ করবে, সে উপায় নেই। ফ্যাল ফ্যাল করে হতাশা মাখা চোখ নিয়ে চেয়ে থাকে বিছানায় শোয়া মানুষটার দিকে। মানিক বাবু ইতিমধ্যে দৌড়ে গিয়ে ওয়ার্ডের ডাক্তার কে ডেকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু বিধির বিধান কে কেও খণ্ডাতে পারেনা। চলে গেলেন বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু উত্তম দত্ত।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই