01-01-2021, 04:45 PM
আমি দেশে এসেছিলাম অন্য একটা কাজে , আমার প্রথম স্ত্রী আর আমার একমাত্র মেয়ে অনিলা কে দেখতে । অনেকদিন দেখা হয় না, মেয়ের বয়স যখন ৪ বছর তখন মেয়েকে নিয়ে ওর মা দেশে চলে আসে এর পর আর দেখা হয়নি । ভিডিও কলে কথা হয় মাঝে মাঝে , কিন্তু সেটাকে কি ঠিক দেখা বলে যায় কিনা আমি বুঝতে পারি না । হঠাত একদিন মেয়েটি বলল ও আমার সাথে দেখা করতে চায় । কেঁদে ফেলেছিলো অনিলা , আমি তো হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম মেয়ের আচরনে । আগে কখনো এমন করতে দেখিনি ওকে । বিচলিত হয়ে পরেছিলাম খুব , অন্য সব কিছুর মতো আমি আমার মেয়ের প্রতিও তেমন কোন দায়িত্ব পালন করেনি । সেই যে ডিভোর্স এর পর চলে এলো মায়ের সাথে এর পর আমার একবারো মনে হয়নি একবার গিয়ে দেখা আশা দরকার । হ্যাঁ খারাপ লেগেছিলো খুব , অনেক নির্ঘুম রাত গিয়েছে মেয়ের কষ্টে । মেয়েটা আমার খুব নেওটা ছিলো যে , এই পসচিমা কালচারের কেন্দ্র ভুমিতে থেকেও বাবার সাথে ঘুমানর মতো দেশি বায়না সে ধরত ।
অনিলাকে মিস করতাম কিন্তু দেশে এসে মেয়েকে বছরে একবার দেখে যাওয়া সেই বুদ্ধি আমার হয়নি । তাই যখন মেয়ে কেঁদে পরলো তখন টনক নড়ল । চিন্তা করলাম মেয়ের ১৬ তম জন্মদিনের দিক মেয়েকে সারপ্রাইজড করবো । যেই ভাবা সেই কাজ কাউকে না জানিয়ে চলে এলাম । আর এসে নিজের বোকামির জন্য নিজেই বিপদে পড়লাম । মেয়ে তার মা আর সৎ বাবার সাথে ইউরপ ভ্রমনে গিয়েছে । আমি তো আর বলে কয়ে আসিনি দোষ আমারি। ভেবে দেখলাম কি দারকার মেয়ের ইউরোপ ভ্রমন নষ্ট করার ।
দেশে এসেছিলাম ১০ দিনের ছুটিতে । কি করবো কি করবো ভাবছিলাম , একবার মনে হলো থাইল্যান্ডের টিকেট কেটে চলে যাই সপ্তা খানেক আরামে কাটিয়ে আসি । থাই মেয়েগুলি দারুন হয় সেই সাথে একটা রুচির পরিবর্তন হবে।সাদা চামড়া ছেড়ে একটু ব্রাউন চামড়ার স্বাদ পাওয়া যাবে । কিন্তু সে চিন্তা বাদ দিয়ে হঠাত করে এই কিম্ভূত চিন্তা মাথায় এলো , গ্রাম থেকে একবার ঘুরে এলে কেমন হয় । দালান মেরামত করার জন্য কিছু টাকাও পাঠিয়েছিলাম , নিশ্চয়ই এতদিনে মেরামত হয়ে গেছে ।
যেই ভাবা সেই কাজ চলে এলাম বাড়িতে । আর এসে দেখলাম বাড়ি আর বাড়ি নেই জঙ্গলে পরিনত হয়েছে । মোটে তিনটে লোকের বাস এক সময়ের গমগমে মিয়াঁ বাড়িতে । তার মাঝে একজন জেল খাঁটা প্রাক্তন চেয়ারমেন , একজন অপুষ্টিতে ভোগা পেটে ক্রিমি ভরা বাচ্চা ছেলে আর , রাবুর মেয়ে । হ্যাঁ এই একমাত্র একটি মানুষ আজ দুই দিন হলো আমাকে আটকে রেখছে । হ্যাঁ আজকে নিয়ে তিনদিন হচ্ছে আমার মিয়াঁ বাড়ির ভাঙ্গা দালানে । প্রথম রাতেই ভেবেছিলাম পরদিন উঠে চলে যাবো , কিন্তু যেতে পারিনি ঝুমা মেয়েটা প্রথম দিন অমন রুক্ষ আচরন করলেও পরদিন সকালে একদম ভিন্ন আচরন শুরু করে । দারুন খেয়াল রাখছে মেয়টি আমার । সারাদিন বাড়ির কাজ কর্মে ব্যাস্ত সময় কাটালেও জখনি সময় পায় আমার সাথে এসে গল্প করে । একটা গ্রাম্য মেয়ের সাথে গল্প করে যে আমি মজে যাবো সেটা আমি ভাবতে পারিনি ।
এছাড়াও মেয়েটির প্রতি একটা কেমন জানি টান অনুভব করছি আমি , একে তো রাবুর মেয়ে তার উপর দেখতে অনেকটাই রাবুর মতো । প্রথম দিন যেমন মনে হয়েছিলো যদিও ততোটা মিল নেই তবে অনেকটাই আছে । রাবুর চেয়ে একটু মোটা ঝুমা , হ্যাঁ বয়স হয়েছে তার উপর এক সন্তানের মা হয়েছে । তবুও শরীরের গঠন এক নয় । আমি যে রাবু কে চিনতাম সে ছিলো ১৯ এর ঝলমলে কিশোরী আর ঝুমা ৩০ এর মধ্যবয়স্ক বাঙালি নারী । তবে ঝুমার কথা বলার সময় হাত নাড়া হাঁসি এ সব অবিকল রাবুর মতো ।
“ ছোট মিয়াঁ মামা , আপনে কি খালি ঘরে বইসা থাকন আর জঙ্গলে হাইটা বেড়ানোর লইগা বাড়ি আইসেন ? একটু বাইরে ঘুরা ঘুরি করেন “
হঠাত ঝুমার ডাকে ধ্যান ভাংলো । কি কিম্ভূত নামেই না ডাকে ঝুমা আমাকে “ ছোট মিয়াঁ মামা “ ।
“ ঝুমা আমি তোমাকে একশো বার বলেছি সুধু মামা ডাকবে , আমি আর তোমার মা বন….. ভাই বোনের মতো ছিলাম বুঝেছ “ আমি ঝুমার দিকে তাকিয়ে বললাম ।
“ বুঝলাম , কিন্তু নানাজান তো হুজুর ডাকতে কয় আপনেরে “
“ খবরদার একদম ঐ দিকে যাবে না হুজুর যেদিন ডাকবে সেদিন আমি চলে যাবো “ আমি হাসতে হাসতে বললাম
“ ঠিক আছে হুজুর ডাকুম না , তয় ছোট মিয়াঁ মামা ডাকতে আমার মজা লাগে “ ঝুমাও হাসতে হসাতে বলল তারপর বলল “ আপনের কি পুরান বন্ধু বান্ধব কেউ নাই এই গেরেমে , হেগো লগেও তো দেখা করতে পারেন “
“ আছে তো লাভ্লু , করিম , নাল্টু , আরও অনেকে ছিলো “ আমি একটা গভির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললাম । ভেবে অবাক হলাম ছোট বেলার অনেক সাথীদের আমি নাম মনে করতে পারছি না ।
“ ওরে আল্লা করিম মামায় আপনের বন্ধু !!!!!!” অবাক হয়ে বলল ঝুমা
“হ্যাঁ , কিন্তু তুমি এমন অবাক হলে কেনো ঝুমা , ও তো আমারি বয়সি “
“ হেয় তো অহন আমাগো চেরমেন , নানাজানেরে জেলে তো হেয় পাঠাইসে । আপনে জানেন না “ চোখ দুটো বড় বড় করে বলল ঝুমা ।
আমি থমকে তাকিয়ে রইলাম , ঝুমার দিকে একদম রাবুর মতো । যেদিন আমি প্রথম ওকে হাত ধরে টেনে গুদাম ঘরে নিয়ে গিয়ে বলেছিলাম । নাল্টুর সাথে আর কথা বলবি না সেদিন রাবু আমার দিকে এমন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিলো । এখন ঝুমা তাকিয়ে আছে, ঝুমার মুখের প্রতিটি কোষ এখন যে অবস্থায় আছে মনে হচ্ছে সেদিন রাবুর ও তাই ছিলো ।
“ আপনে কিন্তু হের লগে দেহা কইরেন না , মিয়াঁ বাড়ির কাউরে হেয় দেখতে পারে না , শেষে কি থাইকা কি কইরা ফালায় “
আমি হেঁসে ফেললাম “ আরে নাহ করিম আর আমি ছোট বেলার বন্ধু , আমারা যেমন ভালো বন্ধু ছিলাম তেমন মারামারি ও করতাম “ তারপর আবার জিজ্ঞাস করলাম “ আচ্ছা লাভ্লু আর নাল্টুর কথা কিছু জানো তুমি ?”
“ লাভ্লূ মামায় তো গেরামে থাকে না অনেক খারপ একটা ঘটনা ঘটসে হের লগে হের পর থাইকা হেয় গেরাম ছাইরা গেসে গা । আর নাল্টু কে ? হের আসল নাম কি নকিব “
মেয়ে
“ হ্যাঁ হতে পারে আমার মনে নেই , ওরা বেশ বড়োলোক ছিলো ওর বাবার নৌকা ছিলো অনেক “ নাল্টুর আসল নাম আমার মনে নেই তাই কিছু হিন্টস দিলাম ঝুমা কে ।
“ হ হ বুঝছি ওনার নাম ই নকিব আলি , হেয় এহনো এই গেরামেই থাকে , নৌকার কারবার করে মেলা নৌকা ওনার , হেয় আর করিম মামায় মিল্লা ই তো নানাজান রে জেলে পাঠাইসে । আপনের দুই বন্ধ ই তো মিয়াঁ বাড়ির শত্রু “ এই বলে হি হি করে হেঁসে ফেলল ঝুমা । তারপর বলল “ আচ্ছা আমি অহন যাই কাম আসে অনেক বইয়া বইয়া আপনের লগে গপ মারলে কি আমার হইবো “
কিন্তু আমার ঝুমার সাথে গল্প করতে অনেক ভালো লাগছিলো , ঝুমা আসেপাশে থাকলে ভালো লাগে । হয়ত রাবুর অনেক কিছু আছে ওর মাঝে তাই ওকে ভালো লাগে । এছাড়া আর কোন কারন আমি আর দেখি না । মেয়েটা গ্রাম্য বুদ্ধিশুদ্ধি ও কম ওর মায়ের মতো দেখতে হলেও ওর মায়ের বিশেষত্ব ওর মাঝে বিশেষ কিছু নেই তাও ওকে পাশে বসিয়ে গল্প করতে ভালো লাগে । তাই গল্প বাড়ানোর জন্য বল্লান
“ আচ্ছা সারাদিন তুমি এতো কাজ করো কেনো ? তোমার নানা কে বলে একটা মানুষ রেখে নিলেই পারো “
“ ও আল্লা আপনে তো আমার নানারে চিনেন ই না” এই বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো, তারপর আবার বলল “এই যে আমারে আর আমার পোলারে খাওয়াইতাসে হেইটা উসুল করতে হইব না ? হের লাইগা সারাদিন বান্দির মতন খাটায় ”
“ ধুর কি বলো তুমি তোমার নানা হয় উনি , তোমাকে লালন পালন করবে তার জন্য কাজ করিয়ে নেবেন কেনো ?”
মুখটা কালো হয়ে গেলো ঝুমার । বিড়বিড় করে বল্লো “ তাও যদি ঠিক মতন রাখতো আমাগো , পোলাটার সইল ভালো না একটা ভালা ডাক্তার পর্যন্ত দেখায় না “ তারপর ঝটফট বলল “ অহন আমি গেলাম “ এই বলে ঝুমা আর দাঁড়ালো না গট গট করে চলে গেলো ।
অনিলাকে মিস করতাম কিন্তু দেশে এসে মেয়েকে বছরে একবার দেখে যাওয়া সেই বুদ্ধি আমার হয়নি । তাই যখন মেয়ে কেঁদে পরলো তখন টনক নড়ল । চিন্তা করলাম মেয়ের ১৬ তম জন্মদিনের দিক মেয়েকে সারপ্রাইজড করবো । যেই ভাবা সেই কাজ কাউকে না জানিয়ে চলে এলাম । আর এসে নিজের বোকামির জন্য নিজেই বিপদে পড়লাম । মেয়ে তার মা আর সৎ বাবার সাথে ইউরপ ভ্রমনে গিয়েছে । আমি তো আর বলে কয়ে আসিনি দোষ আমারি। ভেবে দেখলাম কি দারকার মেয়ের ইউরোপ ভ্রমন নষ্ট করার ।
দেশে এসেছিলাম ১০ দিনের ছুটিতে । কি করবো কি করবো ভাবছিলাম , একবার মনে হলো থাইল্যান্ডের টিকেট কেটে চলে যাই সপ্তা খানেক আরামে কাটিয়ে আসি । থাই মেয়েগুলি দারুন হয় সেই সাথে একটা রুচির পরিবর্তন হবে।সাদা চামড়া ছেড়ে একটু ব্রাউন চামড়ার স্বাদ পাওয়া যাবে । কিন্তু সে চিন্তা বাদ দিয়ে হঠাত করে এই কিম্ভূত চিন্তা মাথায় এলো , গ্রাম থেকে একবার ঘুরে এলে কেমন হয় । দালান মেরামত করার জন্য কিছু টাকাও পাঠিয়েছিলাম , নিশ্চয়ই এতদিনে মেরামত হয়ে গেছে ।
যেই ভাবা সেই কাজ চলে এলাম বাড়িতে । আর এসে দেখলাম বাড়ি আর বাড়ি নেই জঙ্গলে পরিনত হয়েছে । মোটে তিনটে লোকের বাস এক সময়ের গমগমে মিয়াঁ বাড়িতে । তার মাঝে একজন জেল খাঁটা প্রাক্তন চেয়ারমেন , একজন অপুষ্টিতে ভোগা পেটে ক্রিমি ভরা বাচ্চা ছেলে আর , রাবুর মেয়ে । হ্যাঁ এই একমাত্র একটি মানুষ আজ দুই দিন হলো আমাকে আটকে রেখছে । হ্যাঁ আজকে নিয়ে তিনদিন হচ্ছে আমার মিয়াঁ বাড়ির ভাঙ্গা দালানে । প্রথম রাতেই ভেবেছিলাম পরদিন উঠে চলে যাবো , কিন্তু যেতে পারিনি ঝুমা মেয়েটা প্রথম দিন অমন রুক্ষ আচরন করলেও পরদিন সকালে একদম ভিন্ন আচরন শুরু করে । দারুন খেয়াল রাখছে মেয়টি আমার । সারাদিন বাড়ির কাজ কর্মে ব্যাস্ত সময় কাটালেও জখনি সময় পায় আমার সাথে এসে গল্প করে । একটা গ্রাম্য মেয়ের সাথে গল্প করে যে আমি মজে যাবো সেটা আমি ভাবতে পারিনি ।
এছাড়াও মেয়েটির প্রতি একটা কেমন জানি টান অনুভব করছি আমি , একে তো রাবুর মেয়ে তার উপর দেখতে অনেকটাই রাবুর মতো । প্রথম দিন যেমন মনে হয়েছিলো যদিও ততোটা মিল নেই তবে অনেকটাই আছে । রাবুর চেয়ে একটু মোটা ঝুমা , হ্যাঁ বয়স হয়েছে তার উপর এক সন্তানের মা হয়েছে । তবুও শরীরের গঠন এক নয় । আমি যে রাবু কে চিনতাম সে ছিলো ১৯ এর ঝলমলে কিশোরী আর ঝুমা ৩০ এর মধ্যবয়স্ক বাঙালি নারী । তবে ঝুমার কথা বলার সময় হাত নাড়া হাঁসি এ সব অবিকল রাবুর মতো ।
“ ছোট মিয়াঁ মামা , আপনে কি খালি ঘরে বইসা থাকন আর জঙ্গলে হাইটা বেড়ানোর লইগা বাড়ি আইসেন ? একটু বাইরে ঘুরা ঘুরি করেন “
হঠাত ঝুমার ডাকে ধ্যান ভাংলো । কি কিম্ভূত নামেই না ডাকে ঝুমা আমাকে “ ছোট মিয়াঁ মামা “ ।
“ ঝুমা আমি তোমাকে একশো বার বলেছি সুধু মামা ডাকবে , আমি আর তোমার মা বন….. ভাই বোনের মতো ছিলাম বুঝেছ “ আমি ঝুমার দিকে তাকিয়ে বললাম ।
“ বুঝলাম , কিন্তু নানাজান তো হুজুর ডাকতে কয় আপনেরে “
“ খবরদার একদম ঐ দিকে যাবে না হুজুর যেদিন ডাকবে সেদিন আমি চলে যাবো “ আমি হাসতে হাসতে বললাম
“ ঠিক আছে হুজুর ডাকুম না , তয় ছোট মিয়াঁ মামা ডাকতে আমার মজা লাগে “ ঝুমাও হাসতে হসাতে বলল তারপর বলল “ আপনের কি পুরান বন্ধু বান্ধব কেউ নাই এই গেরেমে , হেগো লগেও তো দেখা করতে পারেন “
“ আছে তো লাভ্লু , করিম , নাল্টু , আরও অনেকে ছিলো “ আমি একটা গভির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললাম । ভেবে অবাক হলাম ছোট বেলার অনেক সাথীদের আমি নাম মনে করতে পারছি না ।
“ ওরে আল্লা করিম মামায় আপনের বন্ধু !!!!!!” অবাক হয়ে বলল ঝুমা
“হ্যাঁ , কিন্তু তুমি এমন অবাক হলে কেনো ঝুমা , ও তো আমারি বয়সি “
“ হেয় তো অহন আমাগো চেরমেন , নানাজানেরে জেলে তো হেয় পাঠাইসে । আপনে জানেন না “ চোখ দুটো বড় বড় করে বলল ঝুমা ।
আমি থমকে তাকিয়ে রইলাম , ঝুমার দিকে একদম রাবুর মতো । যেদিন আমি প্রথম ওকে হাত ধরে টেনে গুদাম ঘরে নিয়ে গিয়ে বলেছিলাম । নাল্টুর সাথে আর কথা বলবি না সেদিন রাবু আমার দিকে এমন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিলো । এখন ঝুমা তাকিয়ে আছে, ঝুমার মুখের প্রতিটি কোষ এখন যে অবস্থায় আছে মনে হচ্ছে সেদিন রাবুর ও তাই ছিলো ।
“ আপনে কিন্তু হের লগে দেহা কইরেন না , মিয়াঁ বাড়ির কাউরে হেয় দেখতে পারে না , শেষে কি থাইকা কি কইরা ফালায় “
আমি হেঁসে ফেললাম “ আরে নাহ করিম আর আমি ছোট বেলার বন্ধু , আমারা যেমন ভালো বন্ধু ছিলাম তেমন মারামারি ও করতাম “ তারপর আবার জিজ্ঞাস করলাম “ আচ্ছা লাভ্লু আর নাল্টুর কথা কিছু জানো তুমি ?”
“ লাভ্লূ মামায় তো গেরামে থাকে না অনেক খারপ একটা ঘটনা ঘটসে হের লগে হের পর থাইকা হেয় গেরাম ছাইরা গেসে গা । আর নাল্টু কে ? হের আসল নাম কি নকিব “
মেয়ে
“ হ্যাঁ হতে পারে আমার মনে নেই , ওরা বেশ বড়োলোক ছিলো ওর বাবার নৌকা ছিলো অনেক “ নাল্টুর আসল নাম আমার মনে নেই তাই কিছু হিন্টস দিলাম ঝুমা কে ।
“ হ হ বুঝছি ওনার নাম ই নকিব আলি , হেয় এহনো এই গেরামেই থাকে , নৌকার কারবার করে মেলা নৌকা ওনার , হেয় আর করিম মামায় মিল্লা ই তো নানাজান রে জেলে পাঠাইসে । আপনের দুই বন্ধ ই তো মিয়াঁ বাড়ির শত্রু “ এই বলে হি হি করে হেঁসে ফেলল ঝুমা । তারপর বলল “ আচ্ছা আমি অহন যাই কাম আসে অনেক বইয়া বইয়া আপনের লগে গপ মারলে কি আমার হইবো “
কিন্তু আমার ঝুমার সাথে গল্প করতে অনেক ভালো লাগছিলো , ঝুমা আসেপাশে থাকলে ভালো লাগে । হয়ত রাবুর অনেক কিছু আছে ওর মাঝে তাই ওকে ভালো লাগে । এছাড়া আর কোন কারন আমি আর দেখি না । মেয়েটা গ্রাম্য বুদ্ধিশুদ্ধি ও কম ওর মায়ের মতো দেখতে হলেও ওর মায়ের বিশেষত্ব ওর মাঝে বিশেষ কিছু নেই তাও ওকে পাশে বসিয়ে গল্প করতে ভালো লাগে । তাই গল্প বাড়ানোর জন্য বল্লান
“ আচ্ছা সারাদিন তুমি এতো কাজ করো কেনো ? তোমার নানা কে বলে একটা মানুষ রেখে নিলেই পারো “
“ ও আল্লা আপনে তো আমার নানারে চিনেন ই না” এই বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো, তারপর আবার বলল “এই যে আমারে আর আমার পোলারে খাওয়াইতাসে হেইটা উসুল করতে হইব না ? হের লাইগা সারাদিন বান্দির মতন খাটায় ”
“ ধুর কি বলো তুমি তোমার নানা হয় উনি , তোমাকে লালন পালন করবে তার জন্য কাজ করিয়ে নেবেন কেনো ?”
মুখটা কালো হয়ে গেলো ঝুমার । বিড়বিড় করে বল্লো “ তাও যদি ঠিক মতন রাখতো আমাগো , পোলাটার সইল ভালো না একটা ভালা ডাক্তার পর্যন্ত দেখায় না “ তারপর ঝটফট বলল “ অহন আমি গেলাম “ এই বলে ঝুমা আর দাঁড়ালো না গট গট করে চলে গেলো ।