Thread Rating:
  • 18 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica আমার স্বপ্ন তুমি
(10-12-2020, 09:40 PM)Mr Fantastic Wrote: পরদিন সকাল সকাল উঠে পড়লাম। অনেক কাজ আছে আজ। কাল সন্ধ্যে থেকে একের পর এক যা ঘটে চলেছে মনে হচ্ছে স্বপ্নের মধ্যে আছি। দেবিকাকে ট্যাক্সিতে উঠিয়ে দিলাম, ও মেসে গিয়ে ওর দরকারি লাগেজ যা আছে সব গুছিয়ে নিয়ে ট্যাক্সিতে উঠে সোজা ঠনঠনিয়া চলে আসবে মায়ের মন্দিরে। আমি ওখানেই অপেক্ষা করবো ওর জন্য, তারপর সেখানে প্রথা মেনে বিয়ে সম্পন্ন হলে রেজিস্ট্রি অফিসে চলে যাবো দেবিকাকে নিয়ে। আইনত বিয়েটাও সেরে নেবো আজকেই। 

বুড়ো সুখবিন্দরকে ফোন করে ডেকে নিলাম। চেনাজানা বিস্বস্ত ট্যাক্সিওয়ালা, আজকে বড়ো উপকারে আসবে। দেবিকার চোখে-মুখে একটা স্মিত হাসি লেগেই আছে। ট্যাক্সি ছাড়ার আগে অবধি আমার হাত ধরে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ও। চোখের কোণে একটু জল, না জল নয়, ওটা আনন্দের বারিধারা। 
দেবিকা বেরিয়ে গেলে আমিও একটু পরেই বাইক নিয়ে রওনা দিলাম। সুমনের বাইকটা ভালো কাজে এসেছে কাল থেকে।
 সাড়ে ন'টার মধ্যেই ঠনঠনিয়া পৌঁছে গেলাম। পুরুত মশাইয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাশের দোকান থেকে কিনে নিলাম। দশটার সময় দেবিকার আসার কথা। 
সাড়ে দশটা বেজে গেল এখনও আসছে না। আমি মন্দির চত্বরে ইতস্তত পায়চারি করতে লাগলাম। এগারোটা বাজার পর ফোন করলাম। ফোন বেজে বেজে থেমে গেল, হয়তো কাছাকাছি এসে গেছে তাই তুলল না ফোন। 
কব্জি উল্টে ঘড়ি দেখলাম, বারোটা বাজে। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। এবার ফোন করলে রিংও হচ্ছে না, নট রিচেবল বলছে। 
সুখবিন্দরকে ফোন করে উত্তেজিত স্বরে জিজ্ঞেস করলাম, কি হল এতক্ষণে তো এখানে এসে যাবার কথা তোমাদের ? 
-হাঁ দাদা লেকিন ম্যাডামজী বললেন কি, উনার কিছু দরকারি কাম আছে তাই আমাকে চলে যেতে বললেন।
 আমি অবাক হয়ে গেলাম, এখন আবার কিসের দরকারি কাজ ? তাহলে কি ও আইনত বিয়েটা আগে সেরে নিতে চায় ? কিন্তু জানালো না কেন ! আবার দেবিকাকে ফোন লাগালাম, এবারও কোনো সাড়া এলো না। 
একটু ভেবে বাইক স্টার্ট দিয়ে বাগবাজারের রেজিস্ট্রি অফিসের দিকে রওনা দিলাম, যদি দেবিকা ওখানে যায়। ওখানে গিয়ে দারোয়ান আর উকিলের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম নাহ এখানে কোনো অল্পবয়সী মহিলা একা আসে নি সকাল থেকে। এবার আমার নিজেকে অসহায় লাগল। অস্বস্তি হতে লাগল। ইতিমধ্যে সকাল থেকে আধ প্যাকেট সিগারেট শেষ হয়ে গেছে। কপালের ঘাম মুছে দেবিকার মেসের দিকে বাইক ছোটালাম। 
কাঁকুড়গাছির একটা ছোট গলিতে ওর মেস। একতলার কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞেস করে ওর ঘর কোনটা জেনে নিলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠে ডানদিকের ঘরটাই দেবিকার। কিন্তু দরজায় তালা দেওয়া। আবারও হতাশ হলাম। নীচে নেমে কেয়াটেকারকে জিজ্ঞেস করতে বললো, দিদিমনি ঘন্টা দেড়েক আগে বেরিয়ে গেছে। 
চরম হতাশায়-দুশ্চিন্তায় ক্লান্ত বিধ্বস্ত আমি বাড়ি ফিরে এলাম সর্বস্বান্তের মতো। রাগও হচ্ছে প্রবল দেবিকার ওপর। এভাবে ঠকালো ! আমার ভালোবাসার এই প্রতিদান ! 
চুপচাপ সোফায় বসে আছি মাথায় হাত দিয়ে এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজ। বড়ো আশা নিয়ে তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখি শ্যামলী মাসি। 
আমার দিকে ওর হাতে ধরা একটা ভাঁজ করা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললো, একটি মেয়ে এসে চিঠিটা দিয়ে গেছিল একঘন্টা আগে, বলেছিল স্যারকে দিয়ে দিতে। 
চিরকুটটা নিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘরের মাঝে এলাম। সাদা চিরকুটটা ভাঁজ খুলে পড়তে শুরু করলাম -----

প্রিয়, 

খুব  রাগ করে আছো না ? জানি খুব রেগে  আছো  আমার উপরে।  এই রাগটুকু  সারাজীবন  আমার  কথা  তোমাকে  মনে  করিয়ে  দেবে।  কাল  সারারাত  ঘুমোতে  পারিনি জানো ? তোমার ঘুমন্ত  সৌম্য  মুখের  দিকে  তাকিয়ে  অনেক কিছু  ভেবেছি।  আমি  তো  একটা  নষ্টা  নারী  তাই  না ?  অপর দিকে  তুমি  একজন  সম্মানীয় অধ্যাপক, তোমার  একটা  সামাজিক  স্টেটাস  আছে।  সবাইকে  কি  বলে  পরিচয়  করাবে, আমার  স্ত্রী  বলে ? যদি কেউ আমার  পূর্ব  পরিচয়ের  কথা  জেনে  যায়  তাহলে ? আমি  কিছুতেই  তোমার  অসম্মানে  মাথা  কাটা  যাক  চাই  না।  তোমার  মা-বাবাও  মেনে  নেবেন  না  আমাকে।আর  ওই  সুরজও  যদি  দলবল  নিয়ে  এসে  যায়  পড়ে আমার  খোঁজে, তখন ?  তোমার  কোনো  ক্ষতি  হয়ে  গেলে  যে  আমি  সইতে  পারবো  না  উজান। তাই  ক্ষমা  করে  দাও  আমাকে  প্রিয়তম, আমি  এই  শহর  ছেড়ে  চলে  যাচ্ছি।  কালকে এই  কথা  শত  চেষ্টা  করেও  মুখ  ফুটে  বলতে  পারিনি, বেদনায়  বুক  ফেটে  যাচ্ছিলো, এখনও  লিখতে  গিয়ে  কষ্টগুলো  গলার  কাছে  দলা  পাকিয়ে  উঠছে।  কিন্তু  তোমার  কথার  অমর্যাদা  আমি  করবো  না,  নতুন  জায়গায়  গিয়ে  মানুষের  সেবার  কাজে  নিয়োজিত  হবো  ঠিক  করেছি,  ছোট  ছোট  অনাথ  শিশুদের  জন্য  কিছু  করবো।  ওই  নরকের  পথে  ভুলেও  পা  মাড়াবো  না  আর।  এ  ক্লেদাক্ত  গ্লানিময়  জীবন  বহন  করে  মৃত্যু  পর্যন্ত  নিয়ে  যেতে  হলে  একটা  স্বপ্ন  চাই, তোমাকে  স্বপ্ন  করে  নিলাম।  চিরজীবন  আমার  বুকের  বাঁদিকে  তোমার  স্থান  থাকবে। 
                   কি  জানাবো  তোমায় ? ভালোবাসা, প্রণাম, শুভেচ্ছা  সবটাই  উজাড়  করে  দিলাম।  
                ভালো  থেকো উজান। আমি  আসি।  


চিঠিটা পড়তে পড়তে আমার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছিলো। চিঠিটা দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিতে পারতাম, কিন্তু পারলাম না। এটা আরও অনেকবার পড়তে হবে আমাকে - গভীর রাতে, শীতে বা বৃষ্টিতে, দুঃখে বা আনন্দে - একটা মানুষ যে কতো সাবলীল ভাবে চিঠি হয়ে যায়। 
পিনুদার কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী গল্পের কথা স্মরণে আসলো। অবশ্য সে গল্পটার পরিণতি আরো নিষ্ঠুর ছিল।
[+] 1 user Likes Suntzu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: এসকর্ট সার্ভিস - by Suntzu - 01-01-2021, 01:15 AM



Users browsing this thread: 18 Guest(s)