30-12-2020, 08:12 PM
বাড়িটা অস্বাভাবিক রকম কম দামে পেয়ে গেল রামচরন হালদার। মোটে খরচ পড়লো ১২,০০০ টাকা! অবশ্য সময়টা ১৯৬৮ সাল। তবুও সে সময়ের চলতি বাজার দরের নিরিখেও টাকার পরিমাণটা অনেকটাই কম। বাড়ির মালিক নিরুপদবাবু তার সংসার নিয়ে মুঙ্গেরে চলে যাচ্ছেন তার শ্যালকের বাড়ির কাছে বাড়ি কিনে, তাই এই চুঁচুড়ার বসতবাটি আর ধরে রাখা ঠিক মনে করলেন না, যা দাম পেলেন তাতেই তড়িঘড়ি বেচলেন, আর তাই রামচরনের বরাত খুললো। মা-বাপ মরা রামচরন কাজ করে আয়কর বিভাগে, বাঁ হাত, ডান হাত মিলিয়ে উপায় তার মন্দ হয়না। তার উপর মা আর বাবা আজীবন ভাড়ার বাড়িতে বাস করলেও বেশ কিছু টাকাকড়ি তারা তাদের একমাত্র ছেলের জন্যে রেখে যেতে পেরেছিলেন কাশীতে তীর্থ যাওয়ার আগে। সেই তীর্থই যে শেষ তীর্থ হবে তা আর কে জানতো?! গঙ্গা স্নানে গিয়ে সেই যে ডুব দিলেন তারা একসাথে, আর তাদেরকে কেউ ভেসে উঠতে দেখেননি!
তবে রামচরন হলো ২৪ বছরের যুবক, সে সময়ের যা চল, সেই অনুযায়ী রামচরন স্বপাক রাধতে শেখেনি! তাই সহসা এই মাতৃ-পিতৃ বিয়োগে সে মানসিক ভাবে ভেঙে তো পড়লোই, সেই সাথে খাবারের ব্যাপারে চিন্তায় পড়লো। নিত্যদিন হাওড়া স্টেশনের কাছে পাইস হোটেলের খাবার খেয়ে তার পেটে চড়া পড়ার উপক্রম। তার উপর রাত্তিরেতে খাওয়ার কোনো সুব্যবস্থা করে উঠতে সে পারেনি/ চুঁচুড়া স্টেশন থেকে প্রায় ২২ কিমি দূরে তার নতুন বাড়ি। একটু যে ঘরে বসে আয়েস করে খাবে, স্টেশন থেকে খাবার প্যাক করিয়ে নিয়ে যেতে যেতে সে খাবার ঠান্ডা, মুখে রোচে না। সে সময়ের চুঁচুড়া আর আজকের চুঁচুড়ার মধ্যে বিস্তর তফাৎ। সে সময়ে রাত্তিরে শেয়াল, ভাম, বুনো বেড়ালের ছড়াছড়ি। রামচরনের নতুন বাড়িটা অনেকটা জায়গা নিয়ে, পুরোটাই সারে সাত ফুট ইয়া মোটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। বাড়িটার সামনে পাঁচ কাটা জমিতে বাহারি ফুলের বাগিচা,অযত্নে মলিন। বাড়ির পিছনে প্রায় ১৪ বিঘি জমি নিয়ে পেল্লায় বাগান, বাঁ জঙ্গলও বলা চলে। বাড়িটা দোতলা, উপ-নীচ মিলিয়ে প্রায় খান বারো ঘর, এ ছাড়া বাড়ির লাগোয়া কলতলা, রান্নাঘর, পাইখানা, বাথরুম! পিছনের বাগানে শান বাঁধানো পুকুরটাই প্রায় আড়াই বিঘের, দিনে দুপুরে সেখানে পেল্লায় রুই, কাতলা ঘাই মারে! পারার মানুষজনের কৌতুহল ছিল জানার, কে এই নবাগত তরুন? এত্ত বড় সম্পত্তি একা কিনে এমন নির্বান্ধব থাকার দুঃসাহস কার? তারপর তারা রামচরনকে দেখে এটুকু বুঝেছে যে এ লোক বেশ হাট্টাখোট্টা, সহজে ডরার নয়। দুই-একজন আগ বাড়িয়ে গপ্প করতে এসেছিল, খানিক আড্ডাও দিয়েছিল, তারপর তারা বুঝেছিল যে রামচরন এমনিতে মিষ্টভাষী হলেও স্বল্পবাক।
অবশ্য রামচরনের এই স্বল্পবাক স্বভাবের পিছনে এক কালো ইতিহাস লুকিয়ে আছে, যার কথা তার মা-বাবাও জানতোনা। ছেলের স্বভাব খুব হাসিখুশি থেকে ১৪ বছর বয়েসের পরে আচমকা মুখচোরা হওয়ার কারন তাদের কাছে খুব রহস্যময়ই থেকে গেছে। সে ইতিহাসের স্বাক্ষী শুধুই রামচরন আর তাদের দূর সম্পর্কের এক কাকা আর কাকি। আজ আমরা ইন্টারনেটের দৌলতে, মিডিয়ার কল্যানে মানুষের ঢেকে রাখা কুৎসিত দিকটা যেভাবে জানতে পারছি অনায়াসে, আজ থেকে ৬০ বছর আগে তা জানার উপায় ছিলনা বললেই চলে। তা বলে সে সময় যে যৌন কদর্যতা ছিলনা, এমনটা ভাবার সত্যিই কারন নেই। রামচরনের এই পাড়াতুতো কাকার সেই সময়ে বেশ খাতির ছিল/ আর হবে নাই বা কেন? সেই সময়ের বিলেতফেরত এফ আর সি এস মানুষ, ওনার স্ত্রী ছিলেন সেই সময়ের ডাবল এম এ! অর্থ আর প্রতিপত্তির দারুন মেলবন্ধন! আপাত দৃষ্টিতে এই দম্পতি কিশোর রামচরনকে অত্যন্ত স্নেহ করতো! কিন্ত সেই স্নেহের আড়ালেই যে নোংরা পার্ভাশান প্রতিপালিত হয়েছিল, তা ভাবলে আজকের দিনের মানুষও শিউরে উঠবে! শ্রীযুক্ত বরুন স্যানাল আর শ্রীমতি রেবতী স্যানালের কোনো ছেলেপুলে ছিল না, কিশোর রামচরন সেই ফাঁকটাই হয়তো পূরন করছে, এই সরল বিশ্বাসে রামচরনের মা-বাবা প্রায় প্রতিদিনই ইকলেজের পরে সন্ধ্যেবেলায় এই দম্পতির বাড়িতে ছেলেকে পাঠাতে দ্বিধা করতো না, বরঞ্চ তাদের স্বার্থও ছিল। রামচরন পড়াশোনায় এমনিতে খুব ভালো ছিল না। কিন্তু এঁদের বাড়ি যাওয়ার পর থেকে ছেলে পরীক্ষায় অভাবনীয় ফল পেতে থাকে। তাই রামচরনের বাবা-মা বুঝেছিল যে রামচরনকে এই দম্পতি পড়াশোনাতে সাহায্য করছে।
আক্ষরিক অর্থে রামচরনের বাবা-মার এই বিশ্বাস পুরোপুরি অমূলক ছিলনা। সত্যি সত্যিই রামচরনকে স্যানাল দম্পতি পড়াচ্ছিলেন, কিন্তু গুরুদক্ষিণাটাও সুদে-আসলে আদায় করছিলেন। লণ্ডনে থাকাকালীন বরুনবাবুর রেবতীর সাথে আলাপ। তদ্দিনে একাধিকবার রেবতী অন্তস্বত্তা হয়ে একাধিকবার গর্ভপাত করিয়ে তার হাল এমন করেছিলেন যে তিনি মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন। দুজনেই ছিলেন মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছৃঙ্খল, অস্বাভাবিক কামসক্ত আর তুলনাহীন বিকৃতকাম। রাজ যোটক হলো দুজনার। এক দিকে বরুনবাবু, যিনি এক উভকামী কাকোল্ড আর অন্যদিকে রেবতীদেবী, যিনি লিঙ্গ পেলেই ন্যায়-অন্যায় বোধ হারান। লন্ডনে তাদের কেচ্ছা কেলেঙ্কারি শেষে এমন পর্যায়ে পৌছালো যে তৎকালীন ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধেও তা লন্ডনের উচ্চসমাজে নিন্দনীয় হয়ে উঠলো। স্যানাল্ল দম্পতি গতিক সুবিধের নয় বুঝে ভারতে ফেরত এলেন। আর এসে পড়কেন অথৈ জলে। ওখানের স্বেচ্ছাচার এখানে করলে যে ওদের ভদ্রতার মুখোশ খুলে যেতে পারে আর তার কারনে ওনারা যে হাঁই সোসাইটিতে ব্রাত্য হতে পারেন, এমন আন্দাজ করে ওরা আপাতত ওদের উচ্ছৃণখলতায় রাশ টানলেন। কিন্তু মন কি আর মানে? এ যে সময়ের কথা সেই সময় বরুনবাবু আর রেবতি দেবীর বয়েস যথাক্রমে ৪৮ আর ৩৯ বছর! পাঁকের পূজারীরা আর কদ্দিন ফুল-বেলপাতা নিয়ে কাজ চালাবে? এমন সময়েই যেন ওনারা হাতে চাঁদ পেলেন। এক নিষ্পাপ বলশালী বৃহৎ লিঙ্গধারী কিশোরকে ওরা খুঁজে পেলেন। সীমাহীন অবদমিত বিকৃতি তার মুক্তির রাস্তা খুঁজে পেল!
তবে রামচরন হলো ২৪ বছরের যুবক, সে সময়ের যা চল, সেই অনুযায়ী রামচরন স্বপাক রাধতে শেখেনি! তাই সহসা এই মাতৃ-পিতৃ বিয়োগে সে মানসিক ভাবে ভেঙে তো পড়লোই, সেই সাথে খাবারের ব্যাপারে চিন্তায় পড়লো। নিত্যদিন হাওড়া স্টেশনের কাছে পাইস হোটেলের খাবার খেয়ে তার পেটে চড়া পড়ার উপক্রম। তার উপর রাত্তিরেতে খাওয়ার কোনো সুব্যবস্থা করে উঠতে সে পারেনি/ চুঁচুড়া স্টেশন থেকে প্রায় ২২ কিমি দূরে তার নতুন বাড়ি। একটু যে ঘরে বসে আয়েস করে খাবে, স্টেশন থেকে খাবার প্যাক করিয়ে নিয়ে যেতে যেতে সে খাবার ঠান্ডা, মুখে রোচে না। সে সময়ের চুঁচুড়া আর আজকের চুঁচুড়ার মধ্যে বিস্তর তফাৎ। সে সময়ে রাত্তিরে শেয়াল, ভাম, বুনো বেড়ালের ছড়াছড়ি। রামচরনের নতুন বাড়িটা অনেকটা জায়গা নিয়ে, পুরোটাই সারে সাত ফুট ইয়া মোটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। বাড়িটার সামনে পাঁচ কাটা জমিতে বাহারি ফুলের বাগিচা,অযত্নে মলিন। বাড়ির পিছনে প্রায় ১৪ বিঘি জমি নিয়ে পেল্লায় বাগান, বাঁ জঙ্গলও বলা চলে। বাড়িটা দোতলা, উপ-নীচ মিলিয়ে প্রায় খান বারো ঘর, এ ছাড়া বাড়ির লাগোয়া কলতলা, রান্নাঘর, পাইখানা, বাথরুম! পিছনের বাগানে শান বাঁধানো পুকুরটাই প্রায় আড়াই বিঘের, দিনে দুপুরে সেখানে পেল্লায় রুই, কাতলা ঘাই মারে! পারার মানুষজনের কৌতুহল ছিল জানার, কে এই নবাগত তরুন? এত্ত বড় সম্পত্তি একা কিনে এমন নির্বান্ধব থাকার দুঃসাহস কার? তারপর তারা রামচরনকে দেখে এটুকু বুঝেছে যে এ লোক বেশ হাট্টাখোট্টা, সহজে ডরার নয়। দুই-একজন আগ বাড়িয়ে গপ্প করতে এসেছিল, খানিক আড্ডাও দিয়েছিল, তারপর তারা বুঝেছিল যে রামচরন এমনিতে মিষ্টভাষী হলেও স্বল্পবাক।
অবশ্য রামচরনের এই স্বল্পবাক স্বভাবের পিছনে এক কালো ইতিহাস লুকিয়ে আছে, যার কথা তার মা-বাবাও জানতোনা। ছেলের স্বভাব খুব হাসিখুশি থেকে ১৪ বছর বয়েসের পরে আচমকা মুখচোরা হওয়ার কারন তাদের কাছে খুব রহস্যময়ই থেকে গেছে। সে ইতিহাসের স্বাক্ষী শুধুই রামচরন আর তাদের দূর সম্পর্কের এক কাকা আর কাকি। আজ আমরা ইন্টারনেটের দৌলতে, মিডিয়ার কল্যানে মানুষের ঢেকে রাখা কুৎসিত দিকটা যেভাবে জানতে পারছি অনায়াসে, আজ থেকে ৬০ বছর আগে তা জানার উপায় ছিলনা বললেই চলে। তা বলে সে সময় যে যৌন কদর্যতা ছিলনা, এমনটা ভাবার সত্যিই কারন নেই। রামচরনের এই পাড়াতুতো কাকার সেই সময়ে বেশ খাতির ছিল/ আর হবে নাই বা কেন? সেই সময়ের বিলেতফেরত এফ আর সি এস মানুষ, ওনার স্ত্রী ছিলেন সেই সময়ের ডাবল এম এ! অর্থ আর প্রতিপত্তির দারুন মেলবন্ধন! আপাত দৃষ্টিতে এই দম্পতি কিশোর রামচরনকে অত্যন্ত স্নেহ করতো! কিন্ত সেই স্নেহের আড়ালেই যে নোংরা পার্ভাশান প্রতিপালিত হয়েছিল, তা ভাবলে আজকের দিনের মানুষও শিউরে উঠবে! শ্রীযুক্ত বরুন স্যানাল আর শ্রীমতি রেবতী স্যানালের কোনো ছেলেপুলে ছিল না, কিশোর রামচরন সেই ফাঁকটাই হয়তো পূরন করছে, এই সরল বিশ্বাসে রামচরনের মা-বাবা প্রায় প্রতিদিনই ইকলেজের পরে সন্ধ্যেবেলায় এই দম্পতির বাড়িতে ছেলেকে পাঠাতে দ্বিধা করতো না, বরঞ্চ তাদের স্বার্থও ছিল। রামচরন পড়াশোনায় এমনিতে খুব ভালো ছিল না। কিন্তু এঁদের বাড়ি যাওয়ার পর থেকে ছেলে পরীক্ষায় অভাবনীয় ফল পেতে থাকে। তাই রামচরনের বাবা-মা বুঝেছিল যে রামচরনকে এই দম্পতি পড়াশোনাতে সাহায্য করছে।
আক্ষরিক অর্থে রামচরনের বাবা-মার এই বিশ্বাস পুরোপুরি অমূলক ছিলনা। সত্যি সত্যিই রামচরনকে স্যানাল দম্পতি পড়াচ্ছিলেন, কিন্তু গুরুদক্ষিণাটাও সুদে-আসলে আদায় করছিলেন। লণ্ডনে থাকাকালীন বরুনবাবুর রেবতীর সাথে আলাপ। তদ্দিনে একাধিকবার রেবতী অন্তস্বত্তা হয়ে একাধিকবার গর্ভপাত করিয়ে তার হাল এমন করেছিলেন যে তিনি মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন। দুজনেই ছিলেন মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছৃঙ্খল, অস্বাভাবিক কামসক্ত আর তুলনাহীন বিকৃতকাম। রাজ যোটক হলো দুজনার। এক দিকে বরুনবাবু, যিনি এক উভকামী কাকোল্ড আর অন্যদিকে রেবতীদেবী, যিনি লিঙ্গ পেলেই ন্যায়-অন্যায় বোধ হারান। লন্ডনে তাদের কেচ্ছা কেলেঙ্কারি শেষে এমন পর্যায়ে পৌছালো যে তৎকালীন ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধেও তা লন্ডনের উচ্চসমাজে নিন্দনীয় হয়ে উঠলো। স্যানাল্ল দম্পতি গতিক সুবিধের নয় বুঝে ভারতে ফেরত এলেন। আর এসে পড়কেন অথৈ জলে। ওখানের স্বেচ্ছাচার এখানে করলে যে ওদের ভদ্রতার মুখোশ খুলে যেতে পারে আর তার কারনে ওনারা যে হাঁই সোসাইটিতে ব্রাত্য হতে পারেন, এমন আন্দাজ করে ওরা আপাতত ওদের উচ্ছৃণখলতায় রাশ টানলেন। কিন্তু মন কি আর মানে? এ যে সময়ের কথা সেই সময় বরুনবাবু আর রেবতি দেবীর বয়েস যথাক্রমে ৪৮ আর ৩৯ বছর! পাঁকের পূজারীরা আর কদ্দিন ফুল-বেলপাতা নিয়ে কাজ চালাবে? এমন সময়েই যেন ওনারা হাতে চাঁদ পেলেন। এক নিষ্পাপ বলশালী বৃহৎ লিঙ্গধারী কিশোরকে ওরা খুঁজে পেলেন। সীমাহীন অবদমিত বিকৃতি তার মুক্তির রাস্তা খুঁজে পেল!