30-12-2020, 07:56 PM
বড়ই অদ্ভুত আমার জীবন ~হাস্পাতাল থেকে ফিরে এলাম ! বাড়ির মালিকের করা নজরে আমার খাবারের পরিমান একটু বাড়ল ! কিন্তু সব সময় তিনি বাড়িতে থাকতেন না ! কাজে যেতেন তখন শুরু হতো মালকিনের আমার উপর অত্যাচার ! কোন কাজের একটু যদি দেরি হতো তাহলে আমকে ধরে ধরে মারতেন ! অনেক অত্যাচার মুখ বুজে সয়েছি ! বাবা প্রতিমাসেই আসতেন !টাকা নিতেন চলে যেতেন ! কোনোদিন আমার খবর নেননি ! এই ভাবেই সেখানে কেটে গেলো দুবছর ! এই দুবছরে আমার শরীর একটুও বারেনি ! কিন্তু আমার শরীরে দুর্বলতা চলে এসেছে অনেক ! হটাত একদিন বাবা আমকে নিয়ে চলে এলেন ! দুদিন বাড়িতে রেখে তৃতীয় দিন আমাকে একটা বিরাট বড় বাড়িতে দিয়ে এলেন ! বাড়িটা অনেক পুরানো ! তখন কি আর জানতাম যে এটা কোন কালের কোন এক জমিদার বাড়ি ছিল ! পরে জেনেছিলাম ! গোল বাগানের জমিদার বাড়ি এটা ! পুরো বাড়িতে শরিকে ভর্তি ! কেউ কারুর সাথে ঠিক মতো কথা বলেনা ! সবার ব্যবহারে ঔদ্ধতার মাত্রা বিশাল ! বাড়ির একটা ঘড়ে সেই বাড়ির ছোট ছেলে থাকত ! ছেলেটি সম্পূর্ণ একা ! আমি এসেছিলাম ওনারই বড় ভাইএর বউয়ের সহকারি হিসাবে কাজ করতে ! যদিও এখানে কেউ কোন অত্যাচার করত না ! শুধু হুকুম দিয়েই খালাস ! আমি ছারাও আরও দশ বারোজন পরিচারিকা ছিল সেই বাড়িতে ! তার মধ্যে রাধুনি, কাপর কাচার লোক ঝাঁট দেবার লোক ! বাড়িতে আসল লোক বলতে মাত্র তের জন ! যৌথ পরিবার হলেও কারুর সাথে কারুর ভালকরে কথা বার্তা নেই ! আমার ডিউটি পড়লো ! বড় বউয়ের খিদ্মত করা আর বাড়ির ছোট ছেলের ঘরদোর পরিস্কার করা ! বড় বউ তার স্বামি আর তার একটা বছর চোদ্দ বছরের ছেলে ! বাকি সবারই দুটো করে ছেলে মেয়ে ! কিন্তু সবাই নিজের নিজের মতোই থাকে ! নেহাত বাড়ির আসল মালিক তাদের বৃদ্ধ বাবা এখনও বেঁচে আছেন তাই হয়ত সংসার এখনও যৌথ আছে ! খাবারের ঘর টা বিরাট ! সেখানে একটা বিরাট ডাইনিং টেবিল ! এক সাথে সেখানে প্রায় ৩০ জন বসে খাবার খেতে পারবে ! বুড়োর একটাই হুকুম সারাদিনে যে যেরকম খুশি কাটাও ! রাতের বেলায় সবাইকে এক সাথে বসে খেতে হবে ! প্রতি রাতে ওনারা খেতে বসতেন আমরা মানে সমস্ত পরিচারকেরা পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতাম ! কখন কি চেয়ে বসেন ! ওনাদের খাওয়া হলে তবেই আমাদের খাওয়া হতো ! খাবার দাবার খুব ভালো ! পেট ভরে মাছ মাংস ডিম সবই খেতে পেতাম ! কোন কষ্ট ছিলোনা ! ছতবাবুর ঘর পরিস্কার করতে যেতাম রোজ সকালে ! উনি কোন দিকেই তাকাতেন না ! নিজের লেখা আর গান শোনা নিয়েই ব্যাস্ত থাকতেন ! ওনার ঘর সাফ করে আমি চুপচাপ বেড়িয়ে পরতাম !
একদিন ওনার ঘর পরিস্কার করতে গিয়ে দেখি যে উনি খুব টেনশনে ঘরের মধ্যেই পাইচারি করছেন ! আমাকে দেখেই বলে উঠলেন " এই তুই কে রে ? আমার ঘরে কেন ঢুকেছিস? "
- আজ্ঞে আমি ঝর্না ! আপনার ঘর পরিস্কার করতে এসেছি !
- না না দরকার নেই ঘর পরিস্কার করার ! তুই যা ! উফফ কোথায় যে গেলো ! তুই কোন পাণ্ডুলিপি দেখেছিস ?
পাণ্ডুলিপি কি জিনিস সেটা আমি কি করে জানবো ! বাপের কালেও এইরকম নাম শুনিনি ! জিজ্ঞাসু চোখমুখ নিয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম !
-ওরে গাধি তুই বুঝবি না ! বোঝার জন্য পেটে বিদ্যা থাকা চাই ! বেশ জোড়েই চিৎকার করে উনি বললেন ! আমি ভয় পেয়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেলাম ! মোক্ষদা দির কাছে গিয়ে বললাম "ছোটবাবুর মাথা খারাপ হয়ে গেছে ! কি সব বলছে ! পাণ্ডুলিপি না গান্ডুলিপি কিছুই বুঝতে পারলাম না !" মোক্ষদা দি আমার হাতে কাগজের একটা বান্ডিল ধরিয়ে দিয়ে বলল " যা দিয়ে আয় ! সিঁড়ির উপর পরে ছিল !"
আমি হাতে করে সেই কাগজের বান্ডিল নিয়ে ওনার ঘড়ে ঢুকতেই আমার হাত থেকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে বললেন " এটাই তো কখন থেকে খুঁজছি ! তুই কথা থেকে পেলি ?"
- আজ্ঞে মোক্ষদা দিদি কুরিয়ে পেয়েছেন সিরি থেকে !
- হুম্মম ! কাল রাতে নেশার ঘড়ে পরে গেছে সিঁড়িতে ! এই শোন ! কি নাম তোর ?তোকে তো আগে কোনোদিন দেখিনি ?
- আজ্ঞে আমি ঝর্না ! আপনার ঘর পরিস্কার করি আপনার জামা কাপর কাচি ! আর বড় বউদির দেখাশোনা করি !
- আগে তো তোকে কোনোদিন দেখিনি ? আলো ছিল সে কোথায় ?
- আমি চিনি না ! আমি মাত্র সাতদিন এই বাড়িতে কাজে এসেছি ! বলেই আমি বেড়িয়ে পড়তে চাইলাম !
- যাচ্ছিস কোথায়? আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে ! আলো কোথায় গেলো ?
- আমি সত্যিই জানিনা বাবু !
- ঠিক আছে ! বউদির কাছ থেকে জেনে নিবি আলো কোথায় ! আর শোন তুই পড়তে পারিস?
- না বাবু ! আমি লেখা পড়া কিছুই শিখিনি !
- সে কি ! এই যুগের মেয়ে হয়ে পড়তে লিখতে পারিস না ?
খুব কষ্ট হোল ওনার কথা শুনে !
- ঠিক আছে তুই যা ! পরে তোর সাথে কথা বলবো !
লোকটার ব্যবহার দেখে কেমন যেন পাগল পাগল মনে হোল ! রান্না ঘড়ে ফিরে গিয়ে দেখলাম মোক্ষদা দি রান্না করছেন ! উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন "কি রে পাগল টাকে ওর কাগজের বান্ডিল দিয়ে এলি ?" মি ঘার নেরে বললাম " আলো কে গো ? উনি বার বার আলোর কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন "
একদিন ওনার ঘর পরিস্কার করতে গিয়ে দেখি যে উনি খুব টেনশনে ঘরের মধ্যেই পাইচারি করছেন ! আমাকে দেখেই বলে উঠলেন " এই তুই কে রে ? আমার ঘরে কেন ঢুকেছিস? "
- আজ্ঞে আমি ঝর্না ! আপনার ঘর পরিস্কার করতে এসেছি !
- না না দরকার নেই ঘর পরিস্কার করার ! তুই যা ! উফফ কোথায় যে গেলো ! তুই কোন পাণ্ডুলিপি দেখেছিস ?
পাণ্ডুলিপি কি জিনিস সেটা আমি কি করে জানবো ! বাপের কালেও এইরকম নাম শুনিনি ! জিজ্ঞাসু চোখমুখ নিয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম !
-ওরে গাধি তুই বুঝবি না ! বোঝার জন্য পেটে বিদ্যা থাকা চাই ! বেশ জোড়েই চিৎকার করে উনি বললেন ! আমি ভয় পেয়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেলাম ! মোক্ষদা দির কাছে গিয়ে বললাম "ছোটবাবুর মাথা খারাপ হয়ে গেছে ! কি সব বলছে ! পাণ্ডুলিপি না গান্ডুলিপি কিছুই বুঝতে পারলাম না !" মোক্ষদা দি আমার হাতে কাগজের একটা বান্ডিল ধরিয়ে দিয়ে বলল " যা দিয়ে আয় ! সিঁড়ির উপর পরে ছিল !"
আমি হাতে করে সেই কাগজের বান্ডিল নিয়ে ওনার ঘড়ে ঢুকতেই আমার হাত থেকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে বললেন " এটাই তো কখন থেকে খুঁজছি ! তুই কথা থেকে পেলি ?"
- আজ্ঞে মোক্ষদা দিদি কুরিয়ে পেয়েছেন সিরি থেকে !
- হুম্মম ! কাল রাতে নেশার ঘড়ে পরে গেছে সিঁড়িতে ! এই শোন ! কি নাম তোর ?তোকে তো আগে কোনোদিন দেখিনি ?
- আজ্ঞে আমি ঝর্না ! আপনার ঘর পরিস্কার করি আপনার জামা কাপর কাচি ! আর বড় বউদির দেখাশোনা করি !
- আগে তো তোকে কোনোদিন দেখিনি ? আলো ছিল সে কোথায় ?
- আমি চিনি না ! আমি মাত্র সাতদিন এই বাড়িতে কাজে এসেছি ! বলেই আমি বেড়িয়ে পড়তে চাইলাম !
- যাচ্ছিস কোথায়? আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে ! আলো কোথায় গেলো ?
- আমি সত্যিই জানিনা বাবু !
- ঠিক আছে ! বউদির কাছ থেকে জেনে নিবি আলো কোথায় ! আর শোন তুই পড়তে পারিস?
- না বাবু ! আমি লেখা পড়া কিছুই শিখিনি !
- সে কি ! এই যুগের মেয়ে হয়ে পড়তে লিখতে পারিস না ?
খুব কষ্ট হোল ওনার কথা শুনে !
- ঠিক আছে তুই যা ! পরে তোর সাথে কথা বলবো !
লোকটার ব্যবহার দেখে কেমন যেন পাগল পাগল মনে হোল ! রান্না ঘড়ে ফিরে গিয়ে দেখলাম মোক্ষদা দি রান্না করছেন ! উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন "কি রে পাগল টাকে ওর কাগজের বান্ডিল দিয়ে এলি ?" মি ঘার নেরে বললাম " আলো কে গো ? উনি বার বার আলোর কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন "