28-12-2020, 08:54 PM
আমার দিকে তাকিয়ে থাকে শুভ্র, ও মনে হয় বুঝতে পারে আমার মনের অবস্থা। আমার কাঁধে ও নিজের কোট টা জড়িয়ে দেয়। আমার বাঁ কাঁধটা আলতো করে হাত বুলিয়ে আমায় আশস্ত করে।
---"কিছু হবেনা। আমি আছি ত।"
---"হ্যাঁ তুই আছিস সেটাই আমার কাছে সব থেকে বড় পাওনা।"
আমার মুখের দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে শুভ্র, ওর তাকান দেখে আমার মনের ভেতরটা কেমন যেন করে ওঠে, আমি ওর গা ঘেঁসে ওর উষ্ণতা নেবার জন্য জড়সড় হয়ে বসি। ও আমাকে নিজের বাম বাহুপাশে আলিঙ্গন করে। আমি ওর বাম কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্দ করি। ওর বাঁ হাতের তালু আমার বাঁ কাধের গোলায় আস্তে আস্তে ঘুরতে থাকে। ওর আলতো পরশে আমার মন প্রান একটা উষ্ণ প্রসবনের ন্যায় উন্মিলিত হতে থাকে। আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলার পর্যায় পৌঁছে যাই। আস্তে আস্তে আমার ঘুম পায় আমি চোখ বন্ধ করে ওর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরি।
অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম জানি না, ওর আলতো ঠেলায় আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে তখনও ঝড় জল বয়ে চলেছে।
আমি ওকে জিজ্ঞেস করি---"কটা বাজে? কোথায় এলাম আমরা।"
---"উলটোডাঙা আসবে। অনেক রাত হয়ে গেছে রে অহনা। কি করবি।"
আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখি, ঘুম জড়ানো চোখে একটা মিষ্টি হাসি ওর দিকে---"আজ দিনটা আমার চির দিন মনে থাকবে।"
হেসে ওঠে ও---"আমারও মনে থাকবে, কেন জানিনা তবে আমার মনে থাকবে।"
বাস থেকে নেমে দেখি, চারদিকে জল। অনেক রাত হয়ে গেছে। এই সময় বাসবির বাড়ি যাওয়াটা ও একটা বড় দুঃসহ ব্যাপার। ওর মা কি ভাববে।
আমি শুভ্রকে জিজ্ঞেস করি---"হ্যা রে, এই রাতে যদি বাসবির বাড়ি যাই তাহলেত ওর মা আমায় অনেক কিছু জিজ্ঞেস করবে রে। কি করি বলতো?"
বুক ভরা একটা নিঃশ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে---"একটা উপায় আছে, যদি তুই কিছু মনে না করিস তাহলে বলতে পারি।"
---"কি?"
---"আমার বাড়ি চল।"
আমি সেই রকম কিছু আশা করছিলাম ওর কাছ থেকে। তাও একটা অবাক এবং মৃদু রাগ দেখান চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলি---"দুষ্টুমি হচ্ছে হ্যাঁ। আমি যাবো কেন তোর বাড়ি।"
---"আমায় বিশ্বাস নেই তোর।"
"হায় রে পড়া কপাল আমার, কাকে যে বিশ্বাস করবো ওকে না আমাকে সেটাই ত জানিনা।" আমি হেসে বলি চল তাহলে "কিন্তু কোন দুষ্টুমি নয়।"
হেসে প্রায় লুটিয়ে পরে রাস্তায় "আরে না না আমার যদি কিছু করার থাকতো তাহলে অনেক আগে...।"
"কি কি অনেক আগে কি" আমার হাসি আর ধরে না।
যেহেতু আমরা কোন ছাতা আনিনি সুতরাং আমরা দুই জনে একটু ভিজে গেছিলাম বৃষ্টি তে। শুভ্রর বাড়ি জাখন পৌঁছলাম তাখন অনেক রাত হয়ে গেছে, রাত প্রায় সারে ন’টা বাজে তখন।
সেই প্রথম বার আমি ওর বাড়ি ঢুকি। ওর আগে ও আমায় কোন দিন ওর বাড়িতে ডাকেনি আর আমিও যাইনি। বাড়িটা একতলা, দুটো শোবার ঘর, একটা বসার ঘর। একটা ঘরে একটাই বিছানা পাতা। আর একটা ঘরে ওর পড়ার সরঞ্জাম আর খাবার টেবিল। বসার ঘরটা ছোটো, দুটি সোফা পাতা আর একটা টিভি আছে। বেশ ছিমছাম, কোন আড়ম্বর হীন, দেখে মনে হয়না যে ও এতো আড়ম্বর হীন জীবন যাপন করে। আমি চারদিকে তাকিয়ে দেখতে থাকি। ও আমাকে বলে বাসবি কে ফোন করে জানিয়ে দিতে।
আমি বাসবিকে ফোন করাতেই আমাকে বলে ওঠে বাসবি---"কি করছিস তুই? ওর বাড়িতে থাকবি? জানিসত ওর কেউ নেই, ও একা থাকে। কিছু করে যদি।"
আমি হেসে বলি---"কি করবে তা ত জানিনা। তবে যদি কিছু করে তখন দেখা যাবে খানে। যাই হোক মা যদি ফোন টোন করে তাহলে একটু সামলে নিশ প্লিস।"
হেসে বলে বাসবি---"সেটা আর বলতে, তবে অহনা ...।"
সত্যি কি প্রেম ছিল (#18)
আমি একটু খুশি খুশি ভাব নিয়ে ওকে বলি---"কিছু না, রাখ ফোন। আজ যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি আমার জীবনের সব থেকে বড় পাওনা পেয়ে যাবো।"
এমনিতেই আমি এবং ও দুই জনে বৃষ্টিতে একটু একটু ভিজে গেছিলাম। ও যেহেতু নিজের কোটটা আমার ওপরে চাপিয়ে দিয়েছিল তাই আমার ঊর্ধ্বভাগ ভেজেনি, মাথাটা ভিজেছিল। শুভ্র একটু ভিজেই গেছিলো। আমাকে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে বলে---"তুই ড্রেসটা চেঞ্জ করেনে।"
আমি হেসে জিজ্ঞেস করি---"ওরে পাগল আমি কি কোন ড্রেস এনেছি নাকি যে চেঞ্জ করবো। আমি কি পরবো চেঞ্জ করে?"
আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, চোখে একরাশ উষ্ণতার লেশ মাখা। ওর চোখ চাহনি দেখে আমার বুক টা ছলাত করে ওঠে, আমার কান গরম হয়ে যায়। ও এক দৃষ্টে আমার মুখ ও বক্ষ যুগলের দিকে তাকিয়ে। আমার গাল গুলো লাল হয়ে ওঠে। বুকের পাঁজরের অলিগলিতে শ্রাবনের তাণ্ডব শুরু হয়।
আমি মৃদু স্বরে বলে উঠি---"আমার দিকে ঐ রকম ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন রে? আমি একটু চান করবো, জল গরম করে দিবি?"
আলমারি খুলে আমাকে একটা পাঞ্জাবি আর পায়জামা দিয়ে বলে---"আমার বাড়িতে তো কোন মেয়ে থাকে না তাই কোন মেয়েদের জামা কাপড় নেই। তোকে এটা পড়তে হবে। তুই বাথরুমে ঢোক, গিজার আছে।"
আমি ওর হাত থেকে পাঞ্জাবি নেবার জন্য হাতটা বাড়াই। দুজনার আঙ্গুলের ছোঁয়া লাগে। এক বিদ্যতু তরঙ্গ খেলে যায় আমার হাতের ওপর দিয়ে। সারা অঙ্গে ফুটে ওঠে মিহিদানা, রোমকূপ গুলো উন্মিলিত হয়ে ওঠে। আমার হাতটা শিথিল হয়ে আসে। আমার আঙ্গুল যেন ছাড়তে চায়না ও, এমন ভাবে ধরে আঁকড়ে থাকে আমার হাতটা। এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে আমার মুখের দিকে। উন্নত নাশিকা, চওরা কাঁধ, প্রসস্থ বুক। আমি নিজেকে ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাই।
আলতো করে আমি নিজের হাতে মোচর দিয়ে বলি---"কি রে হাত টা ছাড়, না হলে আমি যাবো কি করে।"
আমার আওয়াজে যেন ও নিজের সম্বিৎ ফিরে পায়। একটা ঝাকানি দিয়ে ওঠে ও, যেন এক নিবিড় ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল এতক্ষণ। হটাত করে হাতটা ছেড়ে দিয়ে মাথা ঝাঁকা দেয়।
---"হ্যাঁ হ্যাঁ যা যা। আমিও চেঞ্জ করে নেই ততক্ষণে।"
আমি কোন রকমে, ওর হাত থেকে কাপড় গুলো নিয়ে বাথরুমে ঢুকি। দরজা বন্ধ করার আগে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে এক মনে তাকিয়ে আছে আর অল্প অল্প করে মাথা নাড়ছে।
আমি একটা মিষ্টি হাসি হেসে বলি---"ঐ রকম ভাবে তাকিয়ে থাকিস না।"
মাথা চুলকোয় শুভ্র, যেন একটা চুরি করতে গিয়ে ধরা ওরে গেছে। আমি বাথরুমে ঢুকে, দরজা বন্ধ করে নিজেকে আয়নায় দেখতে থাকি। আমার অজান্তে আমার দুই হাত আমার গালের কাছে চলে আসে। ওর হাতের পরশটা নিজের গালের মেখে অনুবভ করতে চেষ্টা করি। মনের কোন এক কোনা হতে এক মিষ্টি সুর ভেসে আসে। নিজের প্রতিফলন দেখে নিজেই কেমন যেন লজ্জা পেয়ে যাই আমি। গিজার টা চালিয়ে দেই জল গরম করার জন্য। এক এক করে নিজের পরনের বস্ত্র গুলো খুলতে থাকি। শাড়ীটা নেমে এল আমার দেহ পল্লব থেকে। বাকি যে টুকু ছিল, সেটাও খুলে ফেলে, প্রথম বার নিজেকে এক অন্য চোখে দেখতে চেষ্টা করি। আমার তন্বী গঠন, পাতলা শরীর, সুডৌল কুঁচ যুগল, মসৃণ ত্বক, সব যেন এক অনাবিল আনন্দের হাতছানি তে ঝলসে যাচ্ছে। নিজেকে দেখতে দেখতে, নিজেরই কেমন জানো লাগলো। হেসে ফেললাম আনমনে।
তারপরে চান সেরে বেরিয়ে দেখি, শুভ্র কাপড় চেঞ্জ করে নিয়েছে। শীতকাল বলে একটা ট্রাকসুট পরেছে। আমি ওর পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে জড়সড় হয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে ওর দিকে তাকাই। পাঞ্জাবির নিচে আমার পরনে আমার অন্তরবাস। আমি ঠাণ্ডায় একটু কেঁপে উঠি। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে শুভ্র। আমি ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি যে পাঞ্জাবির বোতাম গুলো খোলা। ওর ফাঁক থেকে আমার কুঁচ যুগলের দিকে ওর নজর। আমার গাল দুটো লাল হয়ে ওঠে, বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে, কে যেন আগুন লাগিয়ে চলে যায় আমার দুটো কুঁচে। আমি ওর দিকে তাকাতে পারিনা। আমার লজ্জা দেখে ও নড়ে ওঠে। আমি নিজেকে সামলে নিয়ে খোলা পাঞ্জাবিটা নিজের মুঠোয় নিয়ে ফেলি।
---"কিছু হবেনা। আমি আছি ত।"
---"হ্যাঁ তুই আছিস সেটাই আমার কাছে সব থেকে বড় পাওনা।"
আমার মুখের দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে শুভ্র, ওর তাকান দেখে আমার মনের ভেতরটা কেমন যেন করে ওঠে, আমি ওর গা ঘেঁসে ওর উষ্ণতা নেবার জন্য জড়সড় হয়ে বসি। ও আমাকে নিজের বাম বাহুপাশে আলিঙ্গন করে। আমি ওর বাম কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্দ করি। ওর বাঁ হাতের তালু আমার বাঁ কাধের গোলায় আস্তে আস্তে ঘুরতে থাকে। ওর আলতো পরশে আমার মন প্রান একটা উষ্ণ প্রসবনের ন্যায় উন্মিলিত হতে থাকে। আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলার পর্যায় পৌঁছে যাই। আস্তে আস্তে আমার ঘুম পায় আমি চোখ বন্ধ করে ওর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরি।
অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম জানি না, ওর আলতো ঠেলায় আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে তখনও ঝড় জল বয়ে চলেছে।
আমি ওকে জিজ্ঞেস করি---"কটা বাজে? কোথায় এলাম আমরা।"
---"উলটোডাঙা আসবে। অনেক রাত হয়ে গেছে রে অহনা। কি করবি।"
আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখি, ঘুম জড়ানো চোখে একটা মিষ্টি হাসি ওর দিকে---"আজ দিনটা আমার চির দিন মনে থাকবে।"
হেসে ওঠে ও---"আমারও মনে থাকবে, কেন জানিনা তবে আমার মনে থাকবে।"
বাস থেকে নেমে দেখি, চারদিকে জল। অনেক রাত হয়ে গেছে। এই সময় বাসবির বাড়ি যাওয়াটা ও একটা বড় দুঃসহ ব্যাপার। ওর মা কি ভাববে।
আমি শুভ্রকে জিজ্ঞেস করি---"হ্যা রে, এই রাতে যদি বাসবির বাড়ি যাই তাহলেত ওর মা আমায় অনেক কিছু জিজ্ঞেস করবে রে। কি করি বলতো?"
বুক ভরা একটা নিঃশ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে---"একটা উপায় আছে, যদি তুই কিছু মনে না করিস তাহলে বলতে পারি।"
---"কি?"
---"আমার বাড়ি চল।"
আমি সেই রকম কিছু আশা করছিলাম ওর কাছ থেকে। তাও একটা অবাক এবং মৃদু রাগ দেখান চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলি---"দুষ্টুমি হচ্ছে হ্যাঁ। আমি যাবো কেন তোর বাড়ি।"
---"আমায় বিশ্বাস নেই তোর।"
"হায় রে পড়া কপাল আমার, কাকে যে বিশ্বাস করবো ওকে না আমাকে সেটাই ত জানিনা।" আমি হেসে বলি চল তাহলে "কিন্তু কোন দুষ্টুমি নয়।"
হেসে প্রায় লুটিয়ে পরে রাস্তায় "আরে না না আমার যদি কিছু করার থাকতো তাহলে অনেক আগে...।"
"কি কি অনেক আগে কি" আমার হাসি আর ধরে না।
যেহেতু আমরা কোন ছাতা আনিনি সুতরাং আমরা দুই জনে একটু ভিজে গেছিলাম বৃষ্টি তে। শুভ্রর বাড়ি জাখন পৌঁছলাম তাখন অনেক রাত হয়ে গেছে, রাত প্রায় সারে ন’টা বাজে তখন।
সেই প্রথম বার আমি ওর বাড়ি ঢুকি। ওর আগে ও আমায় কোন দিন ওর বাড়িতে ডাকেনি আর আমিও যাইনি। বাড়িটা একতলা, দুটো শোবার ঘর, একটা বসার ঘর। একটা ঘরে একটাই বিছানা পাতা। আর একটা ঘরে ওর পড়ার সরঞ্জাম আর খাবার টেবিল। বসার ঘরটা ছোটো, দুটি সোফা পাতা আর একটা টিভি আছে। বেশ ছিমছাম, কোন আড়ম্বর হীন, দেখে মনে হয়না যে ও এতো আড়ম্বর হীন জীবন যাপন করে। আমি চারদিকে তাকিয়ে দেখতে থাকি। ও আমাকে বলে বাসবি কে ফোন করে জানিয়ে দিতে।
আমি বাসবিকে ফোন করাতেই আমাকে বলে ওঠে বাসবি---"কি করছিস তুই? ওর বাড়িতে থাকবি? জানিসত ওর কেউ নেই, ও একা থাকে। কিছু করে যদি।"
আমি হেসে বলি---"কি করবে তা ত জানিনা। তবে যদি কিছু করে তখন দেখা যাবে খানে। যাই হোক মা যদি ফোন টোন করে তাহলে একটু সামলে নিশ প্লিস।"
হেসে বলে বাসবি---"সেটা আর বলতে, তবে অহনা ...।"
সত্যি কি প্রেম ছিল (#18)
আমি একটু খুশি খুশি ভাব নিয়ে ওকে বলি---"কিছু না, রাখ ফোন। আজ যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি আমার জীবনের সব থেকে বড় পাওনা পেয়ে যাবো।"
এমনিতেই আমি এবং ও দুই জনে বৃষ্টিতে একটু একটু ভিজে গেছিলাম। ও যেহেতু নিজের কোটটা আমার ওপরে চাপিয়ে দিয়েছিল তাই আমার ঊর্ধ্বভাগ ভেজেনি, মাথাটা ভিজেছিল। শুভ্র একটু ভিজেই গেছিলো। আমাকে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে বলে---"তুই ড্রেসটা চেঞ্জ করেনে।"
আমি হেসে জিজ্ঞেস করি---"ওরে পাগল আমি কি কোন ড্রেস এনেছি নাকি যে চেঞ্জ করবো। আমি কি পরবো চেঞ্জ করে?"
আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, চোখে একরাশ উষ্ণতার লেশ মাখা। ওর চোখ চাহনি দেখে আমার বুক টা ছলাত করে ওঠে, আমার কান গরম হয়ে যায়। ও এক দৃষ্টে আমার মুখ ও বক্ষ যুগলের দিকে তাকিয়ে। আমার গাল গুলো লাল হয়ে ওঠে। বুকের পাঁজরের অলিগলিতে শ্রাবনের তাণ্ডব শুরু হয়।
আমি মৃদু স্বরে বলে উঠি---"আমার দিকে ঐ রকম ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন রে? আমি একটু চান করবো, জল গরম করে দিবি?"
আলমারি খুলে আমাকে একটা পাঞ্জাবি আর পায়জামা দিয়ে বলে---"আমার বাড়িতে তো কোন মেয়ে থাকে না তাই কোন মেয়েদের জামা কাপড় নেই। তোকে এটা পড়তে হবে। তুই বাথরুমে ঢোক, গিজার আছে।"
আমি ওর হাত থেকে পাঞ্জাবি নেবার জন্য হাতটা বাড়াই। দুজনার আঙ্গুলের ছোঁয়া লাগে। এক বিদ্যতু তরঙ্গ খেলে যায় আমার হাতের ওপর দিয়ে। সারা অঙ্গে ফুটে ওঠে মিহিদানা, রোমকূপ গুলো উন্মিলিত হয়ে ওঠে। আমার হাতটা শিথিল হয়ে আসে। আমার আঙ্গুল যেন ছাড়তে চায়না ও, এমন ভাবে ধরে আঁকড়ে থাকে আমার হাতটা। এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে আমার মুখের দিকে। উন্নত নাশিকা, চওরা কাঁধ, প্রসস্থ বুক। আমি নিজেকে ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাই।
আলতো করে আমি নিজের হাতে মোচর দিয়ে বলি---"কি রে হাত টা ছাড়, না হলে আমি যাবো কি করে।"
আমার আওয়াজে যেন ও নিজের সম্বিৎ ফিরে পায়। একটা ঝাকানি দিয়ে ওঠে ও, যেন এক নিবিড় ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল এতক্ষণ। হটাত করে হাতটা ছেড়ে দিয়ে মাথা ঝাঁকা দেয়।
---"হ্যাঁ হ্যাঁ যা যা। আমিও চেঞ্জ করে নেই ততক্ষণে।"
আমি কোন রকমে, ওর হাত থেকে কাপড় গুলো নিয়ে বাথরুমে ঢুকি। দরজা বন্ধ করার আগে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে এক মনে তাকিয়ে আছে আর অল্প অল্প করে মাথা নাড়ছে।
আমি একটা মিষ্টি হাসি হেসে বলি---"ঐ রকম ভাবে তাকিয়ে থাকিস না।"
মাথা চুলকোয় শুভ্র, যেন একটা চুরি করতে গিয়ে ধরা ওরে গেছে। আমি বাথরুমে ঢুকে, দরজা বন্ধ করে নিজেকে আয়নায় দেখতে থাকি। আমার অজান্তে আমার দুই হাত আমার গালের কাছে চলে আসে। ওর হাতের পরশটা নিজের গালের মেখে অনুবভ করতে চেষ্টা করি। মনের কোন এক কোনা হতে এক মিষ্টি সুর ভেসে আসে। নিজের প্রতিফলন দেখে নিজেই কেমন যেন লজ্জা পেয়ে যাই আমি। গিজার টা চালিয়ে দেই জল গরম করার জন্য। এক এক করে নিজের পরনের বস্ত্র গুলো খুলতে থাকি। শাড়ীটা নেমে এল আমার দেহ পল্লব থেকে। বাকি যে টুকু ছিল, সেটাও খুলে ফেলে, প্রথম বার নিজেকে এক অন্য চোখে দেখতে চেষ্টা করি। আমার তন্বী গঠন, পাতলা শরীর, সুডৌল কুঁচ যুগল, মসৃণ ত্বক, সব যেন এক অনাবিল আনন্দের হাতছানি তে ঝলসে যাচ্ছে। নিজেকে দেখতে দেখতে, নিজেরই কেমন জানো লাগলো। হেসে ফেললাম আনমনে।
তারপরে চান সেরে বেরিয়ে দেখি, শুভ্র কাপড় চেঞ্জ করে নিয়েছে। শীতকাল বলে একটা ট্রাকসুট পরেছে। আমি ওর পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে জড়সড় হয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে ওর দিকে তাকাই। পাঞ্জাবির নিচে আমার পরনে আমার অন্তরবাস। আমি ঠাণ্ডায় একটু কেঁপে উঠি। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে শুভ্র। আমি ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি যে পাঞ্জাবির বোতাম গুলো খোলা। ওর ফাঁক থেকে আমার কুঁচ যুগলের দিকে ওর নজর। আমার গাল দুটো লাল হয়ে ওঠে, বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে, কে যেন আগুন লাগিয়ে চলে যায় আমার দুটো কুঁচে। আমি ওর দিকে তাকাতে পারিনা। আমার লজ্জা দেখে ও নড়ে ওঠে। আমি নিজেকে সামলে নিয়ে খোলা পাঞ্জাবিটা নিজের মুঠোয় নিয়ে ফেলি।