27-12-2020, 06:14 PM
সত্যি কি প্রেম ছিল (#03)
আমি নামতে যাব, পেছন থেকে শুভ্র বলে উঠল "অহনা, তোর ফোন নাম্বার তা দিলি না ত?"
আমি নিজেকে আর সামলাতে না পেরে, একটু মুচকি হেসে বললাম "তুই না একটা পাগল," আর কিছু না বলে বাস থেকে নেমে গেলাম।
বাসাবি হেসে আমায় জিজ্ঞেস করল "কিরে কেমন মনে হল?"
আমি ঠোঁট উলটে বললাম "কি আবার, আরে পাঁচটার মতন হ্যাংলা ছেলে, প্রথম দিনেই আমার কাছে ফোন নাম্বার চায়।"
বাস থেকে নেমে পড়ে বাসটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম, মনটা বলছিল যে শুভ্র হয়ত বাস থেকে নেমে আসবে, কিন্তু বাসটা ছেড়ে দিল। আমি তাকিয়ে থাকি, চলে যাওয়া বাসটার দিকে, যতক্ষণ না বাসটা ঐ ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল। একটু সময়ের জন্য মনটা খারাপ লেগেছিল কিন্তু নিজেকে বুঝালাম "তুই নিজে ত পাকামো করে দিলি না আবার মন খারা করছিস কেন রে?"
তার পর নিয়মিত হয়ে গেল গল্প করা। ক্লাসে আমার দেখাদেখি আরও মেয়ে গুলো বেশ শুরু করল ওর সাথে কথা বলা। এমনিতে শুভ্র বেশ হাসি খুশি ছেলে ছিল না তবে যেই রকম ভাবে কথাবার্তা বলত মনে হত জীবনে অনেক কিছু দেখেছে। মাঝে মাঝে মুখ টা দেখে খুব খারাপ লাগতো, কারুন চোখে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতো। খুব ইচ্ছে হতো জিজ্ঞেস করি "তোর কিসে কষ্ট রে?"
ক্লাসে দেখলাম যে ওর বেশ ভাল বন্ধু হয়েছে পরাশর আর অর্ণব। পরাশর টা একদম ফাজিল ছিল। তার দেখা দেখি শুভ্র দেখলাম বেশ ফাজিল হয়ে উঠল।
একদিন মজা করে বললাম "কি বাছাধন কলকাতার জল পেটে পরেছে? বেশ তো চনমনে লাগছে রে তোকে?"
আমাকে হটাত করে চোখ মেরে বলে "জন্ম তো কলকাতা এই কিছু দিনের জন্য বাইরে ছিলাম এই আর কি?"
ক্লাসে দুটো মেয়ে বেশ সুন্দরী দেখতে ছিল, এক সুপর্ণা আর পারমিতা। সুপর্ণার নাকটা একটু উঁচু ছিল তাই ও আমার সাথে কোন দিন বিশেষ কথা বলত না। নিজেকে যেন বিশ্ব সুন্দরী বলে ধারনা করত। আরে ছেলে গুলো তো ওর আশপাশে মউমাছির মতন ভন ভন করত। পারমিতা ভাল মেয়ে ছিল, ও আমার সাথে কথা ও বলত আর মাঝে মাঝে টিফিনও শেয়ার করতাম আমরা।
এক দিন লাস্ট পিরিওড টা খালি ছিল, আমরা মেয়েরা ক্লাসেই বসে ছিলাম। ছেলে গুলো সব বাইরে মাঠে বসে তাস খেলছিল।
পারমিতে আমাকে জিজ্ঞেস করল "এই অহনা একটা কথা বলবি?"
আমি জিজ্ঞেস করলাম "কি রে?"
---"তোর কোনো বয়ফ্রেনড নেই?"
আমি আমার হাসি চেপে রাখতে পারলাম না---"ধুর কি যে বলিস? আমার কেন বয়ফ্রেন্ড থাকতে যাবেরে?"
আই উলটে পারমিতে কে জিজ্ঞেস করলাম---"তোর নেই?"
একটু হেসে, পারমিতা আমাকে বলল---"না রে আমার কোন বয় ফ্রেন্ড নেই।তবে একটা কথা জিজ্ঞেস করার আছে, শুভ্র কেমন ছেলে রে?"
---"কেন বলত তুই কি কিছু মানে মানে ...?"
এক গাল হেসে উত্তর দিল---"কি যে বলিস না, ও আমার টাইপ এর ছেলেই নয়।"
আমি ভালভাবে ওর দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি পারমিতা কি শুভ্রর পেছনে পরেছে?
আমার তাকান দেখে পারমিতা নিজের হাসি সামলাতে পারল না---"আরে কিছু না, তুই ঐ রকম ভাবে দেখছিশ কেন? আমি এমনি জিজ্ঞেস করলাম, তুই তো বেশ কথা বলিশ ওর সাথে তাই।"
আমি কিছু গন্ধ পেলাম তাই মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলাম---"তুমি তো সোনা এমনি এমনি কিছু জিজ্ঞেস করনা সত্যি করে বলত কি ঘটনা?"
---"আমি আমার জন্য জিজ্ঞেস করছি না রে। আমাকে পরাশর বলল যে শুভ্র নাকি সুপর্ণার পেছনে পাগল, তাই জিজ্ঞেস করা"
আমি কিছু উত্তর না দিয়ে একটু ব্যাঙ্গ হেসে ওকে বলি---"নিজেই জেনে নিস না কেন ওর কাছ থেকে, আমার সার্টিফিকেটের কি দরকার।" আমার সে দিন একটু রাগ হয়ে ছিল "বলে কি না আমার বন্ধু আর আমাকে একবারও জানাল না?"
কিছু দিন আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না ওকে, ও আমাকে কিছু বলল না। বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতাম হয়তো শুভ্র আসবে। বাসাবি বেশ বুঝতে পারত আমি কার জন্য অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে। মনটা কে মানিয়ে নিলাম, শুধু মাত্র কলেজের সহপাঠী ত, আমার বন্ধু ত নয়, আমি কেন অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকব? বাস আসত আমিও উঠে পরতাম আর বাড়ি চলে যেতাম।
দিন দিন, শুভ্র দেখলাম সুপর্ণার সাথে বেশ মিশে গেছিল। আমি মিটি মিটি করে তাকিয়ে দেখে হাসতাম আরে মনে মনে বলতাম "অহনা ভালই হল একটা হ্যাংলা ছেলের থেকে বেঁচে গেলি।"
লাস্ট বেঞ্চ থেকে শুভ্র আগে এসে সুপর্ণার পেছনে বসা শুরু করে দিল। টিফিন টাইমে আগে আগে ও আমাদের সাথে টিফিন করত, আস্তে আস্তে সেটা কমে গেল। আমি যে হেতু বিশেষ কারুর সাথে কথা বলতাম না তাই আমি আর বাসাবি একটু একটু করে আলাদা হয়ে গেলাম।
প্রথমে একদিন দুদিন কিছু বলিনি, তার পর এক দিন না থাকতে পেরে জিজ্ঞেস করি "কি রে কি চলছে?"
আমার দিকে ভ্রূকুটি করে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল "কি চলছে? কিছু নাতো।"
আমি একটা মুচকি হেসে ওকে রাগানর জন্য জিজ্ঞেস করলাম "ন্যাকা সেজ না আমার কাছে, আমি বেশ ভাল করে বুঝি। তুই তো আজ কাল দেখছি সুপর্ণার পেছনে বেশ লেগে আছিস?"
শুভ্র এমন একটা মুখ করল যেন ও ধরা পড়ে গেছে খুব বড় একটা চুরি করতে গিয়ে। আমার দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে আমতা আমতা করে বলল "না রে ও সব কিছু না।"
আমি আগ বাড়িয়ে বেশি কিছু আর জিজ্ঞেস করলামনা ওকে। যখন মন করবে বলতে হলে বলবে না হলে বলবে না। দিন দিন আমাদের মেলা মেশা একদম কমে গেল। একই ক্লাসে বসে, দুটো বেঞ্ছ পরে বসে থেকে ও আমাদের মধ্যে কথা বার্তা কমে গেছিল। প্রথম প্রথম একটু খারাপ লেগেছিল তার পরর মনটা কে মানিয়ে নিয়ে ছিলাম "বয়ে গেছে তোর সাথে কথা বলতে আমার।"
ঐ দিনটা শুভ্রর জন্মদিন ছিল। বাবা, মা, মামার বাড়িতে বেড়াতে গেছিল, তাই আমাকে নিজেই নিজের টিফিনটা বানাতে হয়ে ছিল। আমি সেই দিন একটু সুজি বানিয়ে ছিলাম।
টিফিনের সময় আমি শুভ্র কে ডেকে বলি---"এই আমি তোর জন্য টিফিন এনেছি খেয়ে যাস।"
ও দিকে ওর বন্ধুরা এবং সুপর্ণা ওকে ডাক দিতে ও আমার দিকে একটা হাসি ছেড়ে আমাকে বলল---"আজ নয়, অহনা অন্য দিন আমি তোর টিফিন খাবো।"
আমি বলতে যাচ্ছিলাম---"আমি তোর জন্য সুজি বানিয়ে এনেছি একটু তো খেয়ে যারে।"
আমার কথা ওর কানে গেলনা, তার আগেই ও দরজা দিয়ে দউরে বেরিয়ে গেল। টিফিন টা সুজি টা আমার চোখে বিষাক্ত হয়ে উটলো "ধুর তোর সুজি, আমি কোন দিন তোর সাথে আর কথা বলব না"
ব্যাস সেই দিন থেকে মনে মনে ভেবেনিলাম যে আমি কোন দিন আর শুভ্রর সাথে কথাই বলব না।
দিন দিন দেখতে থাকলাম যে শুভ্রকে, সুপর্ণা বেশ লেজে খেলাছে। শুভ্র যেন, সব কিছু দিয়ে দেবে এই রকম ভাবসাব দেখাচ্যে।
আমি এক দিন পারমিতা কে জিজ্ঞেস করলাম---"কি রে, সুপর্ণা আর শুভ্রর মধ্যে কি কিছু চলছে?"
পারমিতা হেসে উত্তর দিল---"জানিনা বাবা ওদের কথা। সুপর্ণা তো এমনি তে নাক উঁচু মেয়ে, ও কি আরে শুভ্র কে পাত্তা দেবে? আমি জানি ও লেজে খেলিয়ে ছেড়ে দেবে একদিন। অনেক তো দেখলাম ওকে।"
---"মানে?"
---"মানে আর কি, সুপর্ণা হছ্যে দশ ঘাটের জল খাওয়া মাগি। ওকি আর একটা তে সন্তুষ্ট থাকেরে। কলেজ কাউ কে চাই যে ওকে তোয়াজ করবে, যে ওর পেছনে পয়সা খরচ করবে। তাই এখন শুভ্র কে ওর ভাল লাগছে, আর কি। দেখিস একদিন শুভ্র হুমড়ি খেয়ে পরবে, বড় বেশি উরছে তো।"
আমি মনে মনে সেই দিন খুব শান্তি পেয়েছিলাম "বেশ হয়েছে, ধম্ম হয়েছে। যে যেই রকম সে সেই রকম পেয়েছে।"
আমি নামতে যাব, পেছন থেকে শুভ্র বলে উঠল "অহনা, তোর ফোন নাম্বার তা দিলি না ত?"
আমি নিজেকে আর সামলাতে না পেরে, একটু মুচকি হেসে বললাম "তুই না একটা পাগল," আর কিছু না বলে বাস থেকে নেমে গেলাম।
বাসাবি হেসে আমায় জিজ্ঞেস করল "কিরে কেমন মনে হল?"
আমি ঠোঁট উলটে বললাম "কি আবার, আরে পাঁচটার মতন হ্যাংলা ছেলে, প্রথম দিনেই আমার কাছে ফোন নাম্বার চায়।"
বাস থেকে নেমে পড়ে বাসটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম, মনটা বলছিল যে শুভ্র হয়ত বাস থেকে নেমে আসবে, কিন্তু বাসটা ছেড়ে দিল। আমি তাকিয়ে থাকি, চলে যাওয়া বাসটার দিকে, যতক্ষণ না বাসটা ঐ ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল। একটু সময়ের জন্য মনটা খারাপ লেগেছিল কিন্তু নিজেকে বুঝালাম "তুই নিজে ত পাকামো করে দিলি না আবার মন খারা করছিস কেন রে?"
তার পর নিয়মিত হয়ে গেল গল্প করা। ক্লাসে আমার দেখাদেখি আরও মেয়ে গুলো বেশ শুরু করল ওর সাথে কথা বলা। এমনিতে শুভ্র বেশ হাসি খুশি ছেলে ছিল না তবে যেই রকম ভাবে কথাবার্তা বলত মনে হত জীবনে অনেক কিছু দেখেছে। মাঝে মাঝে মুখ টা দেখে খুব খারাপ লাগতো, কারুন চোখে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতো। খুব ইচ্ছে হতো জিজ্ঞেস করি "তোর কিসে কষ্ট রে?"
ক্লাসে দেখলাম যে ওর বেশ ভাল বন্ধু হয়েছে পরাশর আর অর্ণব। পরাশর টা একদম ফাজিল ছিল। তার দেখা দেখি শুভ্র দেখলাম বেশ ফাজিল হয়ে উঠল।
একদিন মজা করে বললাম "কি বাছাধন কলকাতার জল পেটে পরেছে? বেশ তো চনমনে লাগছে রে তোকে?"
আমাকে হটাত করে চোখ মেরে বলে "জন্ম তো কলকাতা এই কিছু দিনের জন্য বাইরে ছিলাম এই আর কি?"
ক্লাসে দুটো মেয়ে বেশ সুন্দরী দেখতে ছিল, এক সুপর্ণা আর পারমিতা। সুপর্ণার নাকটা একটু উঁচু ছিল তাই ও আমার সাথে কোন দিন বিশেষ কথা বলত না। নিজেকে যেন বিশ্ব সুন্দরী বলে ধারনা করত। আরে ছেলে গুলো তো ওর আশপাশে মউমাছির মতন ভন ভন করত। পারমিতা ভাল মেয়ে ছিল, ও আমার সাথে কথা ও বলত আর মাঝে মাঝে টিফিনও শেয়ার করতাম আমরা।
এক দিন লাস্ট পিরিওড টা খালি ছিল, আমরা মেয়েরা ক্লাসেই বসে ছিলাম। ছেলে গুলো সব বাইরে মাঠে বসে তাস খেলছিল।
পারমিতে আমাকে জিজ্ঞেস করল "এই অহনা একটা কথা বলবি?"
আমি জিজ্ঞেস করলাম "কি রে?"
---"তোর কোনো বয়ফ্রেনড নেই?"
আমি আমার হাসি চেপে রাখতে পারলাম না---"ধুর কি যে বলিস? আমার কেন বয়ফ্রেন্ড থাকতে যাবেরে?"
আই উলটে পারমিতে কে জিজ্ঞেস করলাম---"তোর নেই?"
একটু হেসে, পারমিতা আমাকে বলল---"না রে আমার কোন বয় ফ্রেন্ড নেই।তবে একটা কথা জিজ্ঞেস করার আছে, শুভ্র কেমন ছেলে রে?"
---"কেন বলত তুই কি কিছু মানে মানে ...?"
এক গাল হেসে উত্তর দিল---"কি যে বলিস না, ও আমার টাইপ এর ছেলেই নয়।"
আমি ভালভাবে ওর দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি পারমিতা কি শুভ্রর পেছনে পরেছে?
আমার তাকান দেখে পারমিতা নিজের হাসি সামলাতে পারল না---"আরে কিছু না, তুই ঐ রকম ভাবে দেখছিশ কেন? আমি এমনি জিজ্ঞেস করলাম, তুই তো বেশ কথা বলিশ ওর সাথে তাই।"
আমি কিছু গন্ধ পেলাম তাই মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলাম---"তুমি তো সোনা এমনি এমনি কিছু জিজ্ঞেস করনা সত্যি করে বলত কি ঘটনা?"
---"আমি আমার জন্য জিজ্ঞেস করছি না রে। আমাকে পরাশর বলল যে শুভ্র নাকি সুপর্ণার পেছনে পাগল, তাই জিজ্ঞেস করা"
আমি কিছু উত্তর না দিয়ে একটু ব্যাঙ্গ হেসে ওকে বলি---"নিজেই জেনে নিস না কেন ওর কাছ থেকে, আমার সার্টিফিকেটের কি দরকার।" আমার সে দিন একটু রাগ হয়ে ছিল "বলে কি না আমার বন্ধু আর আমাকে একবারও জানাল না?"
কিছু দিন আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না ওকে, ও আমাকে কিছু বলল না। বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতাম হয়তো শুভ্র আসবে। বাসাবি বেশ বুঝতে পারত আমি কার জন্য অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে। মনটা কে মানিয়ে নিলাম, শুধু মাত্র কলেজের সহপাঠী ত, আমার বন্ধু ত নয়, আমি কেন অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকব? বাস আসত আমিও উঠে পরতাম আর বাড়ি চলে যেতাম।
দিন দিন, শুভ্র দেখলাম সুপর্ণার সাথে বেশ মিশে গেছিল। আমি মিটি মিটি করে তাকিয়ে দেখে হাসতাম আরে মনে মনে বলতাম "অহনা ভালই হল একটা হ্যাংলা ছেলের থেকে বেঁচে গেলি।"
লাস্ট বেঞ্চ থেকে শুভ্র আগে এসে সুপর্ণার পেছনে বসা শুরু করে দিল। টিফিন টাইমে আগে আগে ও আমাদের সাথে টিফিন করত, আস্তে আস্তে সেটা কমে গেল। আমি যে হেতু বিশেষ কারুর সাথে কথা বলতাম না তাই আমি আর বাসাবি একটু একটু করে আলাদা হয়ে গেলাম।
প্রথমে একদিন দুদিন কিছু বলিনি, তার পর এক দিন না থাকতে পেরে জিজ্ঞেস করি "কি রে কি চলছে?"
আমার দিকে ভ্রূকুটি করে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল "কি চলছে? কিছু নাতো।"
আমি একটা মুচকি হেসে ওকে রাগানর জন্য জিজ্ঞেস করলাম "ন্যাকা সেজ না আমার কাছে, আমি বেশ ভাল করে বুঝি। তুই তো আজ কাল দেখছি সুপর্ণার পেছনে বেশ লেগে আছিস?"
শুভ্র এমন একটা মুখ করল যেন ও ধরা পড়ে গেছে খুব বড় একটা চুরি করতে গিয়ে। আমার দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে আমতা আমতা করে বলল "না রে ও সব কিছু না।"
আমি আগ বাড়িয়ে বেশি কিছু আর জিজ্ঞেস করলামনা ওকে। যখন মন করবে বলতে হলে বলবে না হলে বলবে না। দিন দিন আমাদের মেলা মেশা একদম কমে গেল। একই ক্লাসে বসে, দুটো বেঞ্ছ পরে বসে থেকে ও আমাদের মধ্যে কথা বার্তা কমে গেছিল। প্রথম প্রথম একটু খারাপ লেগেছিল তার পরর মনটা কে মানিয়ে নিয়ে ছিলাম "বয়ে গেছে তোর সাথে কথা বলতে আমার।"
ঐ দিনটা শুভ্রর জন্মদিন ছিল। বাবা, মা, মামার বাড়িতে বেড়াতে গেছিল, তাই আমাকে নিজেই নিজের টিফিনটা বানাতে হয়ে ছিল। আমি সেই দিন একটু সুজি বানিয়ে ছিলাম।
টিফিনের সময় আমি শুভ্র কে ডেকে বলি---"এই আমি তোর জন্য টিফিন এনেছি খেয়ে যাস।"
ও দিকে ওর বন্ধুরা এবং সুপর্ণা ওকে ডাক দিতে ও আমার দিকে একটা হাসি ছেড়ে আমাকে বলল---"আজ নয়, অহনা অন্য দিন আমি তোর টিফিন খাবো।"
আমি বলতে যাচ্ছিলাম---"আমি তোর জন্য সুজি বানিয়ে এনেছি একটু তো খেয়ে যারে।"
আমার কথা ওর কানে গেলনা, তার আগেই ও দরজা দিয়ে দউরে বেরিয়ে গেল। টিফিন টা সুজি টা আমার চোখে বিষাক্ত হয়ে উটলো "ধুর তোর সুজি, আমি কোন দিন তোর সাথে আর কথা বলব না"
ব্যাস সেই দিন থেকে মনে মনে ভেবেনিলাম যে আমি কোন দিন আর শুভ্রর সাথে কথাই বলব না।
দিন দিন দেখতে থাকলাম যে শুভ্রকে, সুপর্ণা বেশ লেজে খেলাছে। শুভ্র যেন, সব কিছু দিয়ে দেবে এই রকম ভাবসাব দেখাচ্যে।
আমি এক দিন পারমিতা কে জিজ্ঞেস করলাম---"কি রে, সুপর্ণা আর শুভ্রর মধ্যে কি কিছু চলছে?"
পারমিতা হেসে উত্তর দিল---"জানিনা বাবা ওদের কথা। সুপর্ণা তো এমনি তে নাক উঁচু মেয়ে, ও কি আরে শুভ্র কে পাত্তা দেবে? আমি জানি ও লেজে খেলিয়ে ছেড়ে দেবে একদিন। অনেক তো দেখলাম ওকে।"
---"মানে?"
---"মানে আর কি, সুপর্ণা হছ্যে দশ ঘাটের জল খাওয়া মাগি। ওকি আর একটা তে সন্তুষ্ট থাকেরে। কলেজ কাউ কে চাই যে ওকে তোয়াজ করবে, যে ওর পেছনে পয়সা খরচ করবে। তাই এখন শুভ্র কে ওর ভাল লাগছে, আর কি। দেখিস একদিন শুভ্র হুমড়ি খেয়ে পরবে, বড় বেশি উরছে তো।"
আমি মনে মনে সেই দিন খুব শান্তি পেয়েছিলাম "বেশ হয়েছে, ধম্ম হয়েছে। যে যেই রকম সে সেই রকম পেয়েছে।"