27-12-2020, 12:18 PM
** সত্যি কি প্রেম ছিল **
লেখায় - আরুষি
ভূমিকাঃ
আমি লিখতে জানি না, একটু চেষ্টা করছি। গল্পটা কিছু দিনের মধ্যে শুরু করব। আপনাদের আশির্বাদ পেলে নিজেকে খুব ধন্য মনে করব। গল্পে কোন ভুল হলে মাফ করে দেবেন।
এই গল্পটা একটি মেয়ের যে তার বান্ধুকে ভালবাসত কিন্তু দুই জনের মধ্যে কেউই কাউকে শেষ পর্যন্ত বলে উঠতে পারলো না।
সত্যি কি প্রেম ছিল (#01)
শীতকাল, আর কলকাতার শীত আসতে একটু সময় নেয়। সকালের রোদটা বেশ মিষ্টি লাগে। ঘুম থেকে উঠে কারুর কি আর কলেজ যেতে ভাল লাগে তাও যেতে হয়। কুড়িটা শিত কাটিয়ে এই তো সবে কলেজ এ পা রেখেছিলাম সেইদিন। ছোটবেলা থেকে শুধু পড়াশুনা পড়াশুনা করে কাটিয়ে গেলাম। অনেক কিছু তো করতে পারিনি বা করতে মন চায়নি। চারদিকে মেয়েদের দেখে মনে হত ওরা কত চনমনে উছহল। যেন সবাই একটা বাঁধনহারা নদী। আমি বরাবর শান্তশিসটি মেয়ে ছিলাম। থাকার মধ্যে এক প্রানের বান্ধবি, বাসবি, ছাড়া আমার বিশেষ কেউ বন্ধু বান্ধবী ছিলনা। কোনদিন তো জিন্স ও পরিনি তাই তো ছেলেরাও কেমন কেমন করে তাকিয়ে দেখত আর হইত পেছনে হাসতও হবে। আমার মনে হত মাঝয়ে মাঝয়ে ডানা মেলে উড়ে যেতে যেথাই দু চখ যায়। মনে হত কেউ যদি আমার কাছে আমাকে চায় তো আমি কি বলব তাই তো আর কোন দিন কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলতেই পারলাম না। এই ভাবে কেটে যাই দু মাস, শুধু পড়াশুনা।
হাঁ নভেম্বর এর প্রথমে ও কলেজ জইন করে। আমাদের চেয়ে একটু দেরিতে জইন করে। কারন তো র সেইদিন জানতাম না। লাস্ট বেঞ্চে বসে গুরু গম্ভির গলায় স্যার এর প্রশ্নর উত্তর দেই। আমি ফার্স্ট বেঞ্চয় এ বসে পেছনে তাকিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করি কে এই রকম ভারি গলায় উত্তর দেই। চারদিকে এত ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রথম দিন ওকে দেখতে পাইনি। তারপরে টিফিন টাইমএ দেখলাম একটা মঝারি গড়ন রোগা পটকা ছেলে, চখে চশমা, আমাদের চেয়ে বড় হবে বয়সে। বিশেষ কারুর সাথয়ে কথা বার্তা বলে না, ছুপছাপ নিজের টিফিন খেয়ে বেরিয়ে গেল ক্লাস থেকে।
দেখে মনে হয়েছিল "কি রে বাবা কেমন যেন ভুত। নাক উঁচু ছেলে নাকি যে কারুর সাথে কথা বলেনা?" লাস্ট বেঞ্চে বসে একা একা নিজের মনে নোটস লিখয়ে যায় আর ক্লাস এর পরে চুপচাপ কারুর সাথে কথা না বলে চলে যায়।
সত্যি কি প্রেম ছিল (#02)
তারপর একদিন দেখা বাস স্ট্যান্ডে, আমি আর বাসাবি দাঁড়িয়ে আছি বাসএর জন্য দেখি শুভ্র এক কোনে দাড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছয়ে। আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি করে হাসল, আমিও কি করি কি করি একটু হাসতে হয় তাই দন্ত বিকশিত করে একটা হাসি দিলাম। একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি "কিরে কলেজএ এতো চুপ চাপ থাকিস কেন?" তার পরে ভাবলাম "আমার বয়ে গেছে জিজ্ঞেস করতে ও আমার কন তের দিনিয়া যে আমি জিজ্ঞেস করবো?"
আমি বাসাবি কি জিজ্ঞেস করলাম "কিরে কেমন যেন ছেলেটা তাইই না? কেমন যেন কথাবার্তা দেখে তো বাঙালি মনে হয় কিন্তু কথা বার্তা শুনে তো বাঙালি বলে মনে হয় না রে"
বাসাবি বলল "আমি জানি না রে বাবা, তবে তুই এত কেন জিজ্ঞেস করছিস ওর ব্যাপারে বলত?"
মুচকি হেসে বললাম "নারে কিছু না, কিন্তু একটা আস্ত গান্দু ছেলে মাইরি। দেখেছিশ শিল্পির দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল। এইই যেন খেয়ে ফেলবে।"
বাসাবি বলল "কই আমি তো দেখিনি"
---"তুমি তো সোনা নেকু পুশুমুনু, তুমি বই ছাড়া কি কিছু দেখো?"
---"ধ্যাত তুই কবে থেকে দেখতে শুরু করলি রে? তোর তো কোনদিন নোলা শোঁক-শোঁক করেনি ছেলে দেখে?"
---"কোন দিন করেনি বলে কি করতে নেই এইই কি মহাভারতে লেখা আছে নাকি। যাই হক চল বাস এসে গেছে।"
বাসটা বড় ভিড়, দাঁড়াবার জায়গা পাওয়া মুশকিল আর কলকাতার বাস তো, মেয়েদের দাঁড়াবার জায়গা আলাদা থাকে। সেইখানেও ছেলে বুড় সব মিলে দাঁড়িয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে যেন কুকুর গুলো কোন দিন মেয়ে দেখেনি। তার পরে পিঠে হাত লাগানো তো আছেই সেই সব বাঁচিয়ে কোন রকমে বাসে উঠলাম।
বাসাবি বলল "এইই বাস টা ছেড়ে দিলে হতোনা?"
আমি বললাম "বাড়ি কি হেঁটে যাবি নাকি না তোর শ্বশুর আমাদের জন্য গারি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছয়ে রে?"
আমি বেশ ভুঝতে পারছিলাম যে কেউ আমার পিঠে হাত রেখেছে মাথাটায় রক্ত চরে গেল কিন্তু কি করা যাবে এক হাতে ব্যাগ আর এক হাত দিয়ে ওপরের রড টা ধরে নিজেকে কোনোরকম সামলে সাম্নের দিকে আরও ঝুঁকে পরি যাতে পেছনের কুত্তাটার হাত না লাগে। তার পরে দেখি এতো বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে লোকটা মধ্যবয়স্খ তাও দেখি ঠেলে এসেছে আমার পিছনে।
আমি ঝাঁজিয়ে উঠলাম "কি কাকু একটু সোজা হয়ে দাঁড়াননা"
এক দাগা পান খাওয়া দাঁত বার করে একটা নোংরা হেসে বলে "খুকুমনি বাসে অনেক ভিড় কোথাই যাই বলতো"
---"কেন ছেলেদের দিকে তো অনেক জাইগা আছে, ওদিকে গিয়ে দাঁড়াননা।"
এমন সময়ই দেখি ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসে শুভ্র, আমার দিকে তাকিয়ে দেখে এক বার বুড়োটার দিকে কটমট করে তাকায়।
---"কি মশাই মেয়ে দেখন্নি নাকি, ওতো আপনার নাত্নির বয়সের হবে আর আপনি তো এক পা কবরে দিয়ে বসে আছেন তাও সাধ মেটেনা?"
এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল বুড়ো টাকে আর আমার পেছনে এসে আমাকে গার্ড করে দাঁড়াল। আমি এক বেচারা বেচারা হাসি হাসলাম, কি করবো কৃতজ্ঞতা বলেও তো পৃথিবীতে কিছু আছে।
আমার হাসি দেখে বাসাবি আমাকে জিজ্ঞেস করল "দেখলি তো ছেলেটা ভাল"
নাক কুঁচকে ওঁকে বললাম "হাঁ আর বলতে, লাইন মারছে শালা"
---"তোকে লাইন মারবে তাহলে হয়েছে।"
---"কেন আমি দেখতে খারাপ নাকি?"
---"নিজেকে একবার আয়নায় দেখিসতো, কোনদিন কি ঠিকঠাক ভাবে ড্রেস করে কলেজে এসেছিশ?"
আমি পিছন ঘুরে দেখতে চেষ্টা করলাম যে শুভ্র কি আমাদের কথা শুনছে কিনা। ওমা দেখি ও আমার দিকে মিটিমিটি করে হাসছে।
হাসি দেখে রাগ হল প্রথমে "কি রে ঐ রকম দাঁত বার করে হাসছিস কেন?"
আমার দিকে একটু ঝুঁকে কানেকানে বলল "তোদের কথা শুনে হাসি পেল তাই হাসছি। যাই হক তুই কোথাই থাকিস?"
আমি হেসে বলি---"কেন বলব, তুই কি আমার বাড়ি যাবি?"
---"না আমি কেন তোর বাড়ি যাব, আমি কি তোকে লাইন মারি নাকি যে তুই আমাকে তোর বাড়ি ডাকবি?"
আমি আর হাসি চাপতে পারলাম না "আমাদের কথা শুনশিলিশ কেন? মেয়েদের কথা শুনতে নেই"
---"কথা তো আমাকে নিয়ে করছিলিশ তাই তো আর মন টা ধরে রাখা গেলনা, যাই হক আমি দমদম নামবো তুই কোথাই নামবি বল টিকিটটা কেটে নেই"
---"তুই কেন আমার টিকিট কাটবি?"
---"বাহ রে প্রথম বার দেখা হল তো একটা কারসি বলে কিছু আছে তো রে বাবা। যাই হক আমি না হই না কাটলাম তুই আমার টা কেটে দে।"
আমি মিছকি হেসে জবাব দেইই "আমার বয়ে গেছয়ে তোর টিকিট কাটতে।"
আমার হাসি দেখয়ে আমার কানের কাছয়ে মুখ নিয়ে এসে বলে "ক্লাসে মাঝয়ে মাঝয়ে হাসিস না হলে সবাই তোকে রাম গারুরে ছানা বলবে।"
---"কেন তুই ও তো হাসিস না।"
---"আমি তো কলকাতায় নতুন, কাউকে চিনিনা জানিনা তাই তো কথা বলা বা হাসার লোক ও পাই না।"
আমি ওকে জিজ্ঞেস করি "তুই নতুন মানে? তুই কলকাতার ছেলে নস?"
আমার দিকে হেসে বলে "প্রথম দিনে কি পুলিশএর মত জেরা করবি নাকি? বাড়ি ডেকে চা তো খাওয়াবিনা তো আমি বলব কেন?"
আমি আর হাসি চাপতে না পেরে বললাম "ঠিক আছে তবে আজ নই আজ বাড়ি তে কেউ নেই, পরে একদিন ডেকে চা খাইয়ে দেবো।"
আমার দিকে তাকিয়ে বলল "আমি তোর বাড়ি গেলে তোকে নিশ্চয়ই খেয়ে ফেলতাম না"
ঠোঁট উলটে হেসে বললাম---"কি জানি বাবা, বাড়ি গিয়ে দেখলাম তোর অন্য মূর্তি তাহলে কি করবো?"
---"আছা বাবা অন্য দিন হবে।"
আমি বললাম "আমি ও দমদম থাকি"।
লেখায় - আরুষি
ভূমিকাঃ
আমি লিখতে জানি না, একটু চেষ্টা করছি। গল্পটা কিছু দিনের মধ্যে শুরু করব। আপনাদের আশির্বাদ পেলে নিজেকে খুব ধন্য মনে করব। গল্পে কোন ভুল হলে মাফ করে দেবেন।
এই গল্পটা একটি মেয়ের যে তার বান্ধুকে ভালবাসত কিন্তু দুই জনের মধ্যে কেউই কাউকে শেষ পর্যন্ত বলে উঠতে পারলো না।
সত্যি কি প্রেম ছিল (#01)
শীতকাল, আর কলকাতার শীত আসতে একটু সময় নেয়। সকালের রোদটা বেশ মিষ্টি লাগে। ঘুম থেকে উঠে কারুর কি আর কলেজ যেতে ভাল লাগে তাও যেতে হয়। কুড়িটা শিত কাটিয়ে এই তো সবে কলেজ এ পা রেখেছিলাম সেইদিন। ছোটবেলা থেকে শুধু পড়াশুনা পড়াশুনা করে কাটিয়ে গেলাম। অনেক কিছু তো করতে পারিনি বা করতে মন চায়নি। চারদিকে মেয়েদের দেখে মনে হত ওরা কত চনমনে উছহল। যেন সবাই একটা বাঁধনহারা নদী। আমি বরাবর শান্তশিসটি মেয়ে ছিলাম। থাকার মধ্যে এক প্রানের বান্ধবি, বাসবি, ছাড়া আমার বিশেষ কেউ বন্ধু বান্ধবী ছিলনা। কোনদিন তো জিন্স ও পরিনি তাই তো ছেলেরাও কেমন কেমন করে তাকিয়ে দেখত আর হইত পেছনে হাসতও হবে। আমার মনে হত মাঝয়ে মাঝয়ে ডানা মেলে উড়ে যেতে যেথাই দু চখ যায়। মনে হত কেউ যদি আমার কাছে আমাকে চায় তো আমি কি বলব তাই তো আর কোন দিন কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলতেই পারলাম না। এই ভাবে কেটে যাই দু মাস, শুধু পড়াশুনা।
হাঁ নভেম্বর এর প্রথমে ও কলেজ জইন করে। আমাদের চেয়ে একটু দেরিতে জইন করে। কারন তো র সেইদিন জানতাম না। লাস্ট বেঞ্চে বসে গুরু গম্ভির গলায় স্যার এর প্রশ্নর উত্তর দেই। আমি ফার্স্ট বেঞ্চয় এ বসে পেছনে তাকিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করি কে এই রকম ভারি গলায় উত্তর দেই। চারদিকে এত ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রথম দিন ওকে দেখতে পাইনি। তারপরে টিফিন টাইমএ দেখলাম একটা মঝারি গড়ন রোগা পটকা ছেলে, চখে চশমা, আমাদের চেয়ে বড় হবে বয়সে। বিশেষ কারুর সাথয়ে কথা বার্তা বলে না, ছুপছাপ নিজের টিফিন খেয়ে বেরিয়ে গেল ক্লাস থেকে।
দেখে মনে হয়েছিল "কি রে বাবা কেমন যেন ভুত। নাক উঁচু ছেলে নাকি যে কারুর সাথে কথা বলেনা?" লাস্ট বেঞ্চে বসে একা একা নিজের মনে নোটস লিখয়ে যায় আর ক্লাস এর পরে চুপচাপ কারুর সাথে কথা না বলে চলে যায়।
সত্যি কি প্রেম ছিল (#02)
তারপর একদিন দেখা বাস স্ট্যান্ডে, আমি আর বাসাবি দাঁড়িয়ে আছি বাসএর জন্য দেখি শুভ্র এক কোনে দাড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছয়ে। আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি করে হাসল, আমিও কি করি কি করি একটু হাসতে হয় তাই দন্ত বিকশিত করে একটা হাসি দিলাম। একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি "কিরে কলেজএ এতো চুপ চাপ থাকিস কেন?" তার পরে ভাবলাম "আমার বয়ে গেছে জিজ্ঞেস করতে ও আমার কন তের দিনিয়া যে আমি জিজ্ঞেস করবো?"
আমি বাসাবি কি জিজ্ঞেস করলাম "কিরে কেমন যেন ছেলেটা তাইই না? কেমন যেন কথাবার্তা দেখে তো বাঙালি মনে হয় কিন্তু কথা বার্তা শুনে তো বাঙালি বলে মনে হয় না রে"
বাসাবি বলল "আমি জানি না রে বাবা, তবে তুই এত কেন জিজ্ঞেস করছিস ওর ব্যাপারে বলত?"
মুচকি হেসে বললাম "নারে কিছু না, কিন্তু একটা আস্ত গান্দু ছেলে মাইরি। দেখেছিশ শিল্পির দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল। এইই যেন খেয়ে ফেলবে।"
বাসাবি বলল "কই আমি তো দেখিনি"
---"তুমি তো সোনা নেকু পুশুমুনু, তুমি বই ছাড়া কি কিছু দেখো?"
---"ধ্যাত তুই কবে থেকে দেখতে শুরু করলি রে? তোর তো কোনদিন নোলা শোঁক-শোঁক করেনি ছেলে দেখে?"
---"কোন দিন করেনি বলে কি করতে নেই এইই কি মহাভারতে লেখা আছে নাকি। যাই হক চল বাস এসে গেছে।"
বাসটা বড় ভিড়, দাঁড়াবার জায়গা পাওয়া মুশকিল আর কলকাতার বাস তো, মেয়েদের দাঁড়াবার জায়গা আলাদা থাকে। সেইখানেও ছেলে বুড় সব মিলে দাঁড়িয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে যেন কুকুর গুলো কোন দিন মেয়ে দেখেনি। তার পরে পিঠে হাত লাগানো তো আছেই সেই সব বাঁচিয়ে কোন রকমে বাসে উঠলাম।
বাসাবি বলল "এইই বাস টা ছেড়ে দিলে হতোনা?"
আমি বললাম "বাড়ি কি হেঁটে যাবি নাকি না তোর শ্বশুর আমাদের জন্য গারি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছয়ে রে?"
আমি বেশ ভুঝতে পারছিলাম যে কেউ আমার পিঠে হাত রেখেছে মাথাটায় রক্ত চরে গেল কিন্তু কি করা যাবে এক হাতে ব্যাগ আর এক হাত দিয়ে ওপরের রড টা ধরে নিজেকে কোনোরকম সামলে সাম্নের দিকে আরও ঝুঁকে পরি যাতে পেছনের কুত্তাটার হাত না লাগে। তার পরে দেখি এতো বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে লোকটা মধ্যবয়স্খ তাও দেখি ঠেলে এসেছে আমার পিছনে।
আমি ঝাঁজিয়ে উঠলাম "কি কাকু একটু সোজা হয়ে দাঁড়াননা"
এক দাগা পান খাওয়া দাঁত বার করে একটা নোংরা হেসে বলে "খুকুমনি বাসে অনেক ভিড় কোথাই যাই বলতো"
---"কেন ছেলেদের দিকে তো অনেক জাইগা আছে, ওদিকে গিয়ে দাঁড়াননা।"
এমন সময়ই দেখি ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসে শুভ্র, আমার দিকে তাকিয়ে দেখে এক বার বুড়োটার দিকে কটমট করে তাকায়।
---"কি মশাই মেয়ে দেখন্নি নাকি, ওতো আপনার নাত্নির বয়সের হবে আর আপনি তো এক পা কবরে দিয়ে বসে আছেন তাও সাধ মেটেনা?"
এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল বুড়ো টাকে আর আমার পেছনে এসে আমাকে গার্ড করে দাঁড়াল। আমি এক বেচারা বেচারা হাসি হাসলাম, কি করবো কৃতজ্ঞতা বলেও তো পৃথিবীতে কিছু আছে।
আমার হাসি দেখে বাসাবি আমাকে জিজ্ঞেস করল "দেখলি তো ছেলেটা ভাল"
নাক কুঁচকে ওঁকে বললাম "হাঁ আর বলতে, লাইন মারছে শালা"
---"তোকে লাইন মারবে তাহলে হয়েছে।"
---"কেন আমি দেখতে খারাপ নাকি?"
---"নিজেকে একবার আয়নায় দেখিসতো, কোনদিন কি ঠিকঠাক ভাবে ড্রেস করে কলেজে এসেছিশ?"
আমি পিছন ঘুরে দেখতে চেষ্টা করলাম যে শুভ্র কি আমাদের কথা শুনছে কিনা। ওমা দেখি ও আমার দিকে মিটিমিটি করে হাসছে।
হাসি দেখে রাগ হল প্রথমে "কি রে ঐ রকম দাঁত বার করে হাসছিস কেন?"
আমার দিকে একটু ঝুঁকে কানেকানে বলল "তোদের কথা শুনে হাসি পেল তাই হাসছি। যাই হক তুই কোথাই থাকিস?"
আমি হেসে বলি---"কেন বলব, তুই কি আমার বাড়ি যাবি?"
---"না আমি কেন তোর বাড়ি যাব, আমি কি তোকে লাইন মারি নাকি যে তুই আমাকে তোর বাড়ি ডাকবি?"
আমি আর হাসি চাপতে পারলাম না "আমাদের কথা শুনশিলিশ কেন? মেয়েদের কথা শুনতে নেই"
---"কথা তো আমাকে নিয়ে করছিলিশ তাই তো আর মন টা ধরে রাখা গেলনা, যাই হক আমি দমদম নামবো তুই কোথাই নামবি বল টিকিটটা কেটে নেই"
---"তুই কেন আমার টিকিট কাটবি?"
---"বাহ রে প্রথম বার দেখা হল তো একটা কারসি বলে কিছু আছে তো রে বাবা। যাই হক আমি না হই না কাটলাম তুই আমার টা কেটে দে।"
আমি মিছকি হেসে জবাব দেইই "আমার বয়ে গেছয়ে তোর টিকিট কাটতে।"
আমার হাসি দেখয়ে আমার কানের কাছয়ে মুখ নিয়ে এসে বলে "ক্লাসে মাঝয়ে মাঝয়ে হাসিস না হলে সবাই তোকে রাম গারুরে ছানা বলবে।"
---"কেন তুই ও তো হাসিস না।"
---"আমি তো কলকাতায় নতুন, কাউকে চিনিনা জানিনা তাই তো কথা বলা বা হাসার লোক ও পাই না।"
আমি ওকে জিজ্ঞেস করি "তুই নতুন মানে? তুই কলকাতার ছেলে নস?"
আমার দিকে হেসে বলে "প্রথম দিনে কি পুলিশএর মত জেরা করবি নাকি? বাড়ি ডেকে চা তো খাওয়াবিনা তো আমি বলব কেন?"
আমি আর হাসি চাপতে না পেরে বললাম "ঠিক আছে তবে আজ নই আজ বাড়ি তে কেউ নেই, পরে একদিন ডেকে চা খাইয়ে দেবো।"
আমার দিকে তাকিয়ে বলল "আমি তোর বাড়ি গেলে তোকে নিশ্চয়ই খেয়ে ফেলতাম না"
ঠোঁট উলটে হেসে বললাম---"কি জানি বাবা, বাড়ি গিয়ে দেখলাম তোর অন্য মূর্তি তাহলে কি করবো?"
---"আছা বাবা অন্য দিন হবে।"
আমি বললাম "আমি ও দমদম থাকি"।