Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ভালোবাসা না ঘৃণা ? -- Lekhak
#2
মিনিটেই বদলে গেলেন অশোক ব্যানার্জি ৷ ঘরে ঢুকে বসার ঘরে বসতেই সোনার প্রতিমার মত সুন্দর একজন অল্প বয়সী রমণী সামনে এসে নমস্কার জানালেন ৷ আমি না বুঝেই মুখ হা করে নমস্কার জানালাম ৷ 
"আমি চা করে আনি" কথা গুলোয় যেন বীণার ঝংকারের মত ছড়িয়ে পড়ল ঘরের মেঝেতে ৷
 "হেমা আমার ওয়াইফ !" হেমা এ হল আমার ট্রায়ো মেট এর দ্বিতীয় জন ৷ সূর্য ! আজ এখানেই খাবে রাতে"৷ 
-"ওহ আপনার কথা অনেক শুনেছি অশোকের কাছে! আমি আসছি " চলে যেতেই অশোকদা হামলে পড়ল আমার উপর " শালা হা করে দাদার বৌকে দেখতে লজ্জা করে না ইতর !" 
ভীষণ লজ্জা লাগলো আমার ৷ 
-"চল ব্যালকনিতে বসে আরাম করে গল্প করা যাবে !" অশোকদা আমায় দোতলার ব্যালকনিতে নিয়ে গেলেন ৷


চা খাচ্ছি অশোকদা শুরু করলেন এক এক করে কলেজের ছেলেদের কথা ৷ কে কোথায় ছিটকে গেছে কেউই জানি না ৷ নিজের এতগুলো দিনের এক এক করে কথা বলতে বলতে জানতে পারলাম মানসদা বিয়ে করেছে এক ছেলে, আসানসোলে থাকে রেল এ চাকরি করে ৷ প্রায়ই আমার কথা বলে ৷ মন টা উদাস হয়ে গেল ৷ চা শেষ করে সিগারেটে আগুন দিয়ে সিগারেট খেতে দিয়ে বললেন দাঁড়া আসছি ৷ দেখলাম ব্যালকনির দরজার ঘরের ভিতরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে এলেন ৷ আমি বুঝলাম উনি বিশেষ কিছু জিনিস আমার সাথে শেয়ার করতে চান ৷ 
-"দু বছর আগের কথা, বিয়ের গন্ধ গা থেকে কাটে নি, হেমা কে পেয়ে আমি খুব খুশি, মনে হল যেন জীবন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে ৷ মাঝে মাঝেই হেমাঙ্গিনীর মাথায় ব্যথা হত ! আমি পরোয়া করতাম না ৷ ভাবতাম নতুন জায়গায় এসে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে ৷ ডাক্তার দেখালাম ৷ ডাক্তার কিছু পেল না ৷ সব ঠিক ঠাক থাকে, দশ পনরো দিন পর পর আমার সাথে তুমুল ঝগড়া করে যেকোনো বিষয় নিয়ে ৷ প্রথম প্রথম মনে হত হেমা আমার জন্য সঠিক মেয়ে নয় ৷ তার পর একবার সাইক্রিয়াটিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করলাম গোপনে ৷ ওকে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে ৷ সব চেক করার পর বলল " এটা বিরল একটা ডিজঅর্ডার, চিকিৎসার জন্য কোনো ওষুধ নেই কিন্তু নিজেকে সংযত রেখে চলতে হবে, হেমাকে উত্তেজিত করা চলবে না ৷" এর পর আরো অনেক জায়গায় ঘুরেছি কিন্তু কোনো ফল হয় নি ৷ " 
কথা শেষ করে লম্বা শ্বাস ফেলে বললেন "এখানেই শেষ নয় ৷ দু একবার আমার সাথে মারা মারি পর্যন্ত হয়ে গেছে জানিস ! মাঝে মাঝে মনে হয় নিখোঁজ হয়ে যাই ৷ আর কথায় কথায় সন্দেহ !
আমি কথা কেটে প্রশ্ন করলাম " সন্দেহ কেন ?"
-"তুই জানিস তো নারী সঙ্গে আমার আসক্তি আছে, দু একবার অফিসের দু একজনকে পটিয়েছিলাম তারা বাড়িতে ফোনে করে, আর তাতেই বিপত্তি ৷ এখন তো মোবাইল এ সব চলে৷" 
-"তুমি বৌদি কে ভালোবাসো না ?" আমি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ৷ 
-"প্রথম প্রথম বাসতাম কিন্তু এখন শুধু অভিনয় করি !" আবার সিগারেট ধরালো ৷ দেখলাম অশোকদা টেনশন নিচ্ছে৷
- "কি এমন হয় যে তুমি যাকে ভালবাসছিলে তাকে আর ভালবাসতে পারো না ?" আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম ! 
-"সে কথা পরে হবে ! উঠে জামা কাপড় ছেড়ে আমার জামা কাপড় পর দেখি।এর পর তাস খেলব !" 
আমি আবার অবাক হয়ে বললাম কোথায় ? অশোকদা বলল ঐ যে সামনে ক্লাব দেখছিস! দরজা ধাক্কা দেবার আওয়াজ হল ৷ 
বৌদি হাঁসি মুখে জিজ্ঞাসা করলো " কি ব্যাপার এতদিন পর প্রাইভেট কথা হচ্ছে বুঝি !"
- "এত দিন পর দেখা, বৌদি আপনি আমার জন্য বিশেষ কিছু করবেন না কিন্তু রাত্রে, আপনারা যা খান তাই খাব !" আমি বললাম ৷ 
অশোকদা বলল "ওই তুই থাম !" "সূর্য তুমি কোথায় থাক ?" 
"আমি তো বৌদি ১ সপ্তার জন্য কলকাতায় এসেছি অফিসের কাজে, থাকি গুয়াহাটিতে, তবে ভাগ্য ভালো হলে সামনের মাসেই ট্রান্সফার হচ্ছি কলকাতায় ৷" -"তাহলে তুমি হোটেলে থাকবে নাকি ?" 
-না বৌদি একদম ব্যস্ত হবেন না, অফিসের এলাহি গেস্ট হাউস আছে সব বন্দোবস্ত আছে ! কোনো চিন্তা নেই " 
-"আজ যেতে দিচ্ছি না চুটিয়ে গল্প করা যাবে কি বল !" 
অশোকদা বৌদিকে সায় দিয়ে বলল " সে তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও, তুমি রান্নার কাজে হাত দাও আমি ওকে আশেপাশে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি !"

বৌদির রূপে এক কথায় মুগ্ধ হয়ে গেলাম আমি ৷ এত রূপ আগে দেখি নি ৷ মনে কোনো জড়তা নেই স্বাভাবিক সাবলীল শরীর ৷ কিন্তু উনি মানসিক ভাবে অসুস্থ জেনে কষ্ট হল ৷তাস খেলে বাড়ি ফিরতে প্রায় সাড়ে ৯ টা বেজে গেল ৷ বৌদি রান্না করে বসে আছেন ৷হেমা বৌদির শরীরে বিদ্যুতের মত আলোড়ন চলে ৷ হাত পা যেন কথা বলে ৷ চোখ সপ্রতিভ, তীক্ষ্ণ নাক, টানা কার্তিকের ধনুকের মত ভ্রু, ঠোট টা যেন আপেলের মত টুকটুকে লাল ৷ চিবুকের নিচে একটা কালো তিল সব মিলিয়ে রূপের উন্মাদনায় ঢেলে সাজিয়ে দিয়েছে ভগবান ৷ এর পরেও অন্য মেয়েদের কি ভাবে চায় অশোকদা তাও ভগবানই জানেন ৷ অনেক কথার পর রাত বারোটা বাজে বৌদি আবার এক মাস পর আমাকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন ৷ আর কলকাতায় আসলে অশোকদাদের এলাকায় আমায় থাকতে হবে আর রোজ বিকেলে এসে চা খেয়ে যেতে হবে ৷ এটাই নাকি তার আবদার ৷ যাই হোক সেই যাত্রায় অশোকদার বাড়ি থেকে ফিরে গুয়াহাটি চলে আসলাম ৷ মাসি একটাই, উনি কিছু মেয়ের ছবি দিয়ে একটা চিঠি পাঠিয়েছেন ৷ আমার বিয়ের ব্যাপারে উনি উতলা ৷ আর উতলা হওয়ার মত আমার কেউই ছিল না ৷ 

ক্যালেন্ডার থেকে ৪ টে মাস পেরিয়ে গেছে ৷ শীতের সময় ৷ দীব্রুগড়ে চরম ঠাণ্ডা ৷ মেয়ের ফটো গুলো যেমন ছিল তেমনি রাখা আছে ৷ রাত ১২ টা ৪০। সময় আমার এখনো মনে আছে ৷ একটা ফোনে কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷ মাসি গত হয়েছেন, তার পুত্র পৌত্র প্রপৌত্র সবাই আমায় কাতর প্রার্থনা জানিয়েছে আমায় মাসির কাজে সামিল হবার জন্য ৷ সে রাতে আর ঘুম হল না ৷ মনটা বিষাদে ভরে গেল ৷ মাসির কোলে পিঠে অনেক সময় কাটিয়েছি ছেলে বেলায় ৷ সে দিন গুলি মানুষের স্বর্ণালী আবেগ মাখানো লাখ টাকার দিন ৷ তার দশ গুণ দাম দিয়ে সে খুশি সে আনন্দ ফিরে পাওয়া যায় না ৷ অর্গল ভেঙ্গে পরের দিন অফিসে গিয়ে টেবিলে ব্রাউন রঙের খাম দেখে বুক ধুকপুকিয়ে উঠলো ৷ ইদানীং IOCL এ অনেক ঝামেলা চলছে না জানি এটা কিসের শো কজ ৷ খুলে দেখতেই খুশিতে মনটা ভরে গেল ৷ ট্রান্সফার অর্ডার ৷ হয়ত মাসির আশীর্বাদ ৷ ধর্মতলায় অফিসে টেকনো কমার্শিয়াল অফিসার ৷ প্রমোশন তার পরে অশোকদার সঙ্গ পাওয়া ভেবেই মন খুশিতে ভরে গেল ৷ কিন্তু কেউই ওরা আমাকে ফোনে করে নি এত দিন ! দেখি তো ফোন করে ! 
" অশোকদা সূর্য বলছি ৷ আমি আগামী সপ্তাহে কলকাতায় আসছি ৷" 
অশোকদা বললেন " তুই কি IOCL এর ফ্ল্যাটে থাকবি না গলফ গ্রিন এ আমার বাড়ির আসে পাশে ? " 
-"তুমি কি বল ?" আমি জিজ্ঞাসা করতেই খেরে গিয়ে অশোকদা বললেন " আমার আসে পাশে না থাকলে তোমার বিচি কেটে নেব শুয়োর, তোমার জন্য আমি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছি জানোয়ার তাড়া তাড়ি এস আর হ্যাঁ সামনের সপ্তাহে মানস চলে আসছে ওর হাওড়ায় কাজ আছে থাকবে দিন দশেক ৷ চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে বুঝলি " ৷ 
মন খুশিতে ভরে উঠলো ৷ মাসির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ৫-৬ টি মেয়েকে আমায় দেখতে যেতে হবে ৷ বরানগরেও থাকতে হবে দিন দুই তিন মাসির শ্রাদ্ধ ৷ সে ভেবে অফিসকে ডিউটি হ্যান্ড ওভার করে বেরিয়ে পড়লাম। চল কলকাতা ৷

মেয়ে দেখতে হবে শুনে বৌদি হেঁসে লুটিয়ে পড়ছিলেন ৷ আমি লজ্জায় যাই যাই এমন অবস্থা ৷ 
-"শেষমেশ সূর্য তুমি এই ধেড়ে ধেড়ে মেয়েগুলোকে দেখতে যাবে ৷" 
আমি এবার একটু তেতে উঠলাম, " কি করব বৌদি সবাই তো অশোকদার মত ভাগ্য নিয়ে জন্মায় না" ৷ বৌদি হাঁসি বন্ধ করে বললেন " তুমি বস আমি চা নিয়ে আসি !" 
আমার ব্যাপারটা ভালো লাগলো না ৷ সকালে এসেই অশোকদা আমাকে নিয়ে ফ্ল্যাটে তুলে দিয়েছে ৷ অফিস কামাই না করে চলে গেছে আমাকে বৌদির কাছে ছেড়ে গেছে গ্যাঁজানোর জন্য ৷ জানি না বাড়া বাড়ি হয়ে গেল কিনা ৷ 
একটু অস্বস্তি হলেও আমি বৌদিকে বললাম "বৌদি আজ যাই ভীষণ টায়ার্ড লাগছে" ৷ 
বৌদিকে যত দেখি ততই মায়ায় মুগ্ধ হয়ে যাই ৷ বৌদির চোখের গভীরতা দেখলে কবি নজরুল বিদ্রোহী না হয়ে প্রেমিকই হতেন বোধ হয় ৷ (পাঠক বন্ধুরা ক্ষমা করবেন ) স্নান করে খেয়ে ফ্ল্যাট গুছিয়ে আমায় অনেক কাজ করতে হবে ৷ 
চোখে মুখে তীব্র কঠিন চাহনি দিয়ে আমায় বললেন " আমার কথার অমান্য করলে আমি কিন্তু ভীষণ রেগে যাই সে কথা বলে নি অশোক ?" 
বৌদির এমন রাগী গলা দেখে আমি নিজেই হেঁসে বললাম " ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে ৷ কিন্তু আমি ঘুমাতে চললাম উপরের ঘরে অশোকদা এলে ডেকে দিও !" আসলে আমি ক্লান্ত তাই স্নান করেই অশোকদার বাড়িতেই খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম ৷ আমি লোভী, বৌদির হাতের রান্নার পরিতৃপ্তি নিতে ছাড়ি না ৷ অশোকদার সাথে আড্ডা মেরে ভালই কাটছিল দিনগুলো ৷ মাসির শ্রাদ্ধ হয়ে গেছে ৷ আমিও অফিস জয়েন করেছি ৷ কলকাতায় জীবন যাত্রায় আস্তে আস্তে নিজেকে অভ্যস্ত করে নিতে হচ্ছে ৷ কাজের চাপে আমিও খুব বেশি অশোকদার বাড়িতে যাই না ৷ কিন্তু সপ্তাহে ছুটির দিনগুলো বৌদির হাতের রান্না খেয়ে বেশ তৃপ্তি পেতাম ৷ এত দিনে কখনো মনে হয় নি বৌদি অসুস্থ ৷ 
[+] 6 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ভালোবাসা না ঘৃণা ? (সংগৃহীত) - by Mr Fantastic - 24-12-2020, 12:47 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)