Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
পর্ব নয় – (#1-46)

 
ঠিক সেই সময়ে রিশুর ফোন বেজে ওঠে। ফোনের দিকে না তাকিয়েই ফোন কানের কাছে এনে জিজ্ঞেস করে, “হ্যালো, হু ইজ দেয়ার?”

অন্যপাশ থেকে ভেসে আসে এক তরুণীর সুরেলা কন্ঠস্বর, “হাউ আর ইউ হ্যান্ডসাম?”

রিশুর বুকের ওপরে মাথা রেখেই শুয়েছিল ঝিনুক তাই কানের মধ্যে মেয়েলী কন্ঠের “হ্যান্ডসাম” শব্দটা যেতেই কানখাড়া হয়ে যায়। ভুরু কুঁচকে রিশুর হতবাক চেহারা দিকে দেখে হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ফোনের নাম্বার দেখে হেসে ফেলে ঝিনুক। ওর একমাত্র দুষ্টু মিষ্টি বোনকে উত্তর দেয়, “কি রে কি করছিস?” 
 
রিশু ভুরু নাচিয়ে প্রশ্ন করে, কে ফোন করেছে? ইশারায় উত্তর দেয় ঝিনুক, ঝিলিক।
 
দিদির গলার আওয়াজ পেয়ে সপ্তদশী তন্বী তরুণী দিদিকে ইয়ার্কি মেরে বলে, “বাঃবাআ... একদম জিজুর কোলে বসে ছিলিস মনে হচ্ছে?”

রিশুর আবেগ ভরা চোখের দিকে লাজুক হেসে বোনকে উত্তর দেয়, “না না এই তো চা খাচ্ছিলাম” রিশু জিব বের করে ঝিনুকের ঠোঁট স্পর্শ করতে যেতেই আলতো চাঁটি মেরে প্রেমিককে বিরত করে বোনকে ইয়ার্কি মেরে বলে, “বেশ তো আমাদের ছাড়াই চিকেন বিরিয়ানি খেয়ে নিলি, বল।”
 
রিশু ইশারায় ইয়ার্কি মেরে বলে, বাঃবা কত চা খেলাম। লোমশ বুকের ওপরে আলতো চাঁটি গোলাপি ঠোঁটের ওপরে তর্জনী রেখে ইশারায় চুপ করিয়ে দেয়।
 
ঝিলিক ওকে প্রশ্ন করে, “কি রে আমাদের দিল্লী যাওয়ার কথা জিজুর সাথে কিছু ডিস্কাস করলি?”

ইসসস একদম ভুলে গেছিল ঝিনুক, “এই তো ব্যাস, এই একটু পরেই তোর জিজু তোদের ফ্লাইটের টিকিট কেটে দেবে। দিয়া কোথায়?”

দিয়া ঝিলিকের পাশেই ছিল, “দাদাভাইয়ের কি মাম্মার সাথে কথা হয়েছে?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, “হ্যাঁ রে বাবা তোর দাদাভাই মামনির সাথে কথা বলে সব ঠিক করে নিয়েছে।”

দিয়া লাফিয়ে উঠে ঝিলিককে জড়িয়ে ধরে বলে, “ইও বেব, তাহলে দিল্লী যাচ্ছি।”

ঝিলিকও স্বমসুরে বলে, “ফাক বেব, বিশ্বাস করতে পারছি না, একা একা এই প্রথম বার বাড়ির বাইরে যাবো।” “ফাক” কথাটা বলেই লজ্জা পেয়ে জিব কেটে দিদিকে জিজ্ঞেস করে, “জিজু কি কাছেই আছে নাকি?”

ওদের কথা শুনে হেসে ফেলে রিশু, “হ্যাঁ এই তো।” একটু গম্ভির হয়ে ভ্রাতৃসুলভ কন্ঠে বলে, “পড়াশুনা তো মনে হয় লাটে উঠে গেছে, এখানে এলে বই খাতা নিয়ে আসতে হবে।”

দাদার গলা পেয়েই অপ্রস্তুত হয়ে পরে দিয়া, গলা নামিয়ে ছোট্ট উত্তর দেয়, “আচ্ছা নিয়ে আসব।” সঙ্গে সঙ্গে শিশুসুলভ কন্ঠে দাদার কাছে আবদার করে, “আমার লিভাইসের জিন্স।”

হেসে ফেলে রিশু, “হবে তবে রেজাল্ট দেখে।”

কাঁদো কাঁদো কন্ঠে দিয়া বলে ওঠে, “যাও তাহলে আমি আর যাবো না।”

দিয়ার আহত কন্ঠ শুনে ঝিনুক রিশুর গালে একটা আলতো চাঁটি মেরে দিয়াকে বলে, “তুই ছাড় তো তোর দাদার কথা, তুই আয় তোর জিন্স আমি কিনে দেব।”

ওদিকে ঝিলিক ও চেঁচিয়ে ওঠে, “আমারও একটা জিন্স চাইইইই...”

হেসে ফেলে রিশু, “আচ্ছা বাবা সব হবে।”
 
বিছানায় রিশুর বুকের ওপরে শুয়েই দুই প্রেমে বিভোর কপোত কপোতী আরো কিছুক্ষন এই ভাবেই জড়াজড়ি করে শুয়ে ফোনে গল্প করে শেষ পর্যন্ত উঠে পরে বিছানা থেকে। সেই দুপুরে খাওয়া হয়েছিল তারপরে বাড়ি এসে আর খাওয়া দাওয়া হয়নি, খিধেতে পেটের নাড়ি ভুড়ি মোচড় দিচ্ছে দুইজনার। মেঝেতে পরে থাকা তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে মদালসা ললনা সারা অঙ্গে ঢেউ তুলে ভারী নিটোল নিতম্ব রিশুর চোখের সামনে দুলিয়ে মুচকি হেসে বিছনা ছেড়ে উঠে পরে। সারা শরীর জুড়ে প্রেমের সহবাসের মিষ্টি প্রলেপ মাখানো। দুই নিটোল পীনোন্নত স্তনের মাঝে দুলতে থাকা বড় মুক্তোর লকেট দেখে খুব খুশি। রিশু মুচকি হেসে আলমারি খুলে একটা পায়জামা বের করে পরে নেয়। হাত বাড়িয়ে প্রেয়সীকে ধরতে যাওয়ার আগেই খিলখিল করে হেসে ছোট ত্রস্ত পায়ে দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। অগত্যা রিশু ল্যাপটপ খুলে শ্যালিকার আর বোনের জন্য চার দিন পরে ফ্লাইটের টিকিট কেটে নেয়। বাড়িতে মাকে ফোনে জানিয়ে দেয় দিয়া আর ঝিলিকের আসার কথা, মা যদিও একটু দোনামনা করছিল কিন্তু রিশু অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে মাকে আস্বস্থ করে।
 
রিশু রান্না ঘরে ঢুকে নিজেদের জন্য চা বানাতে শুরু করে। মন প্রান পরে থাকে বাথরুমের জলের শব্দে, মদালসা রূপসী প্রেয়সীর চুম্বনে মাখা ওর লোমশ ছাতির পেশি, সারা পিঠে নখের আঁচর, ঠোঁটের ব্যাথাটা ভীষণ মিষ্টি। অতি সন্তর্পণে দরজা খুলে ভীষণ লজ্জা জড়ানো কামতৃপ্ত ঝিনুক বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এলো। প্রেমিকার রূপ দেখে রিশুর আবার কামোত্তেজিত হয়ে ওঠে। তোয়ালেটা ভীষণ ছোট আর সেই ছোট তোয়ালে দিয়ে কোনরকমে ঝিনুক নিজের লাস্যময়ী নধর দেহ পল্লব ঢেকে রেখেছে। তোয়ালেটা ঝিনুকের উদ্ধত পীনোন্নত স্তনের মাঝের থেকে কোনোমতে ঊরুসন্ধি পর্যন্ত অতি কষ্টে নেমে এসেছে। তোয়ালেটা ঝিনুকের নিটোল পীনোন্নত স্তনের অর্ধেকটা ঢাকতে সক্ষম, তোয়ালের গিঁট গভীর বক্ষ বিভাজন মাঝে আটাকানো, যার ফলে উন্নত স্তন জোড়া আর বেশি করে ফুলে উঠেছে। ঊরুসন্ধির নিচের থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত সম্পূর্ণ অনাবৃত। সুগঠিত জঙ্ঘাদ্বয় যেন কিছুতেই আর শেষ হতে চায় না। ঘরের হলদে আলো প্রেয়সীর মসৃণ জঙ্ঘার ত্বকে পিছল খেয়ে প্রতিফলিত হয়ে যায়। বক্র পায়ের গুলি, ছোট গোড়ালি দুটোতে রুপোর নুপুরে সজ্জিত। পুরুষ্টু জঙ্ঘা বয়ে অসংখ্য অতি সরু জলের ধারা নেমে এসেছে। ঝিনুকের রোমহীন মসৃণ জঙ্ঘার কাম উদ্ভাসিত রস যেন চুইয়ে চুইয়ে গড়িয়ে চলেছে। সময় যেন স্তব্দ, বিভোর চোখে ঝিনুকের রূপ সাগরে নিমজ্জিত হয় রিশুফর্সা মসৃণ মরালী গর্দানে ওর দেওয়া মোটা সোনার হার ভীষণ ভাবেই জ্বলজ্বল করছে। দুই পীনোন্নত স্তন মাঝে বড় মুক্তোর লকেট শোভা পায়। নুপুরের রিনিঝিনি নিক্কন, প্রেয়সীর সদ্য স্নাত দেহের প্রমত্ত ঘ্রাণে আর মদালসা ছন্দের চলনে ওর মাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করে দেয়।
 
প্রেমিকের প্রেমে বিভোর নজর ওকে তাড়িয়ে বেড়ায়, ঝিনুক ভুরু নাচিয়ে রিশুকে মিহি গলায় একটু বকুনি দেয়, “এখন একদম শয়তানি করবে না।”

রিশু চা ছাঁকতে ভুলে গিয়ে বুকের বাম দিকে কিল মেরে উত্তেজিত রক্ত শান্ত করে ঝিনুকের দিকে একপা এগিয়ে বলে, “উম্মম হানি তুমি না...
 
নধর লাস্যময়ী দেহপল্লবের প্রলুব্ধকর দৃশ্য দেখে রিশুর লিঙ্গে পুনরায় রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ওঠে। ধীর পায়ে ঝিনুকের দিকে এগিয়ে এসে ওকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে।
 
প্রেমিকের বাহুপাশে আবিষ্ঠ হয়ে ঝিনুকের হৃদয় আবার কেঁপে ওঠে, কিন্তু তাও কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “ইসসস ছাড়ো ছাড়ো কি নোংরা মানুষ তুমি। ছিঃ হসপিটাল থেকে এসে এখন স্নান করেনি আবার আমাকে নিয়ে পড়েছে।” সাপের মতন নরাচড়া করলেও প্রেমিকের প্রেমঘন বাহুপাশে আবিষ্ঠ হয়েও নিজেকে ছাড়ানোর বিন্দু মাত্র চেষ্টা করে না ঝিনুক।

রিশু ঝিনুকের নাকের ওপরে নাক ঘষে কাতর আবেদন করে, “একটা ছোট্ট হামি খাবো ব্যাস।”

গোলাপি পাতলা ঠোঁটের ওপরে কোমল চাঁপার কলি তর্জনী রেখে একটু রেগেই বলে, “নো হামি, ফার্স্ট স্নান তারপরে ডিনার তারপরে বাকি সব।”

বলিষ্ঠ বাহুপাশে প্রেয়সীর কোমল নধর দেহপল্লব পিষে ধরে ভুরু নাচিয়ে বলে, “বাকি সব...”

ইসসস ছেলেটা না, এইভাবে বললে একদম শুনবে না তাই মধু ঢালা মদির কন্ঠে বলে, “রুশুউউ, প্লিজ হানি স্নানে যাও।”
 
উফফফ এই নামটা কেন যে বারেবারে নেয়, প্রেয়সীর মধুর কন্ঠে এই নামটা শুনলেই ওর মাথা গুলিয়ে যায়, সম্মোহিত হয়ে যায় ওর প্রান। একটু ঝুঁকে সুন্দরী ঝিনুকের নরম লালচে গালে একটা চুমু খেয়ে শেষ পর্যন্ত স্নানে ঢুকে পরে রিশু। রাতের খাওয়ার পরে দুই প্রেমে বিভোর নর নারী আরো একবার নিজ নিজ বাহুপাশে বদ্ধ হয়ে সুখের সাগরে নিমজ্জিত হয়ে নিজেদের ভাসিয়ে দেয়।
 
সেদিনের পর থেকে ঝিনুক আর রিশুর জীবন বদলে যায়। রিশুর আগেই ঝিনুক ঘুম থেকে উঠে পরে, নতুন রাঁধুনি কোনদিন ব্রেড টোস্ট পুড়িয়ে দেয়, কোনদিন অমলেট বানাতে গিয়ে নুন বেশি দিয়ে ফেলে তাও সেই খেয়েই রিশু হসপিটালে যায়। লন্ডন যাওয়ার ভিসা এখন আসেনি, রোজদিন একবার করে এডমিন কে জিজ্ঞেস করে কবে আসবে সেই খোঁজ খবর নেয়।
 
তিনদিন এইভাবেই কেটে যায়। পরেরদিন সকালের ফ্লাইটে দিয়া আর ঝিনুকের আসার কথা। বিকেলে হসপিটাল থেকে ফিরে মায়ের সাথে বাড়ির সবার সাথে কথা হয়েছিল। দিপ ভীষণ জেদ ধরেছিল কিন্তু রিশু অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে তবে ওকে বিরত করতে পেরেছে, ওকে বলেছে লন্ডন থেকে ওর জন্য একটা ঘড়ি কিনে নিয়ে আসবে। মা ওকে বারবার বলে দিয়েছে একটু সাবধানে দেখিস এই প্রথমবার দুটো মেয়ে একদম একা যাচ্ছে। যদিও ঝিলিক আর দিয়া বেশ বড় হয়েছে তাও দুই মায়ের মন। হসপিটাল থেকে ফিরে যথারীতি প্রত্যেকদিনের মতন পাশের বাজারে একটু ঘুরতে যায় রিশু আর ঝিনুক। বিগত তিন দিনে ইউ টিউব দেখে আর মায়ের সাথে ফোনে ভিডিও কল করে বেশ কিছু রান্না বান্না শিখে গেছে ঝিনুক। মেয়ের এই আমূল পরিবর্তন দেখে পিয়ালী ভীষণ খুশি। যে মেয়ে বাড়িতে জলের গ্লাস পর্যন্ত নিজে গড়িয়ে খেত না সে এতদিন পরে নিজের বাড়িতে রান্না করছে জেনে ভীষণ ভালো লাগে।
 
মাছের বাজারে মাছ কেনার সময়ে হটাত যেন ঝিনুকের মনে হল একজন মহিলা ওদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। রিশু কাটা রুই কিনতে ব্যাস্ত, একবার ভাবে রিশুকে জানাবে তারপরে ভাবে না থাক কত লোক মাঝে মাঝে ওইভাবে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে। বিশেষ করে ঝিনুক একটু বেশি সুন্দরী আর আগে যেমন শালোয়ার কামিজ পড়ত এখন চাপা জিন্স চাপা শারট আর বুটস পরে রিশুর সাথে বের হয়। সেই দেখেও অনেকে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে। বাজার করার শেষে রিশুর বাইকের পেছনে ওঠার সময়েও আড় চোখে সেই মহিলাকে দেখতে পায় ঝিনুক। সেই মহিলাও দেখতে সুন্দরী, পরনে চাপা সালোয়ার কামিজ আর গায়ে একটা ভারী জ্যাকেট হাতে একটা বাজারের থলে। ওদের মতন মাছ কিনেই ফিরছে হবে। বেশ দুর থেকে দেখতে পেলেও সেই মহিলার তীক্ষ্ণ চোখের ভাষা পড়ে ফেলে ঝিনুক। সারাটা রাস্তা মনের মধ্যে একটা দুশ্চিন্তা ভর করে আসে।
 
শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে রাতে খাওয়ার সময়ে রিশুকে বলে, “এই জানো আজকে বাজারে একটা মেয়ে আমার দিকে কেমন ভাবে যেন তাকিয়েছিল।”

দুই জনে মিলে হাত পুড়িয়ে সেই প্রথমবার কাটা রুই ভেজেছে তাই রুই মাছ খেতে খেতে হেসে বলে, “আরে তুমি যা সেক্সি তাতে যে কারুর মাথা ঘুরে যাবে।”

খাওয়া থামিয়ে মৃদু ঝাঁঝিয়ে ওঠে ঝিনুক, “ধ্যাত তুমি না।” একটু থেমে বলে, “আরে সত্যি বলছি ওই মেয়েটা মাছ কিনতে এসে আমাদের দেখে কেমন একটা চোখে তাকিয়ে ছিল।”

সেই আগন্তুক মহিলার মাছ কেনার কথা শুনে ভুরু কুঁচকে ঝিনুকের দিকে দেখে প্রশ্ন করে, “কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল মানে? মেয়েটা কেমন দেখতে?”

ডান দিকের ওপরের দিকে একটু তাকিয়ে সেই অচেনা মেয়েটার চেহারা মনে করতে করতে বলে, “একটু ডার্ক স্কিন, চোখ জোড়া বেশ উজ্জ্বল, মুখটা বেশ মিষ্টি, একটু গোলগাল নাদুসনুদুস ফিগার।”

মেয়েটার বিবরণ শুনে চমকে ওঠে রিশু, খাওয়া থামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “মাছের বাজারে দেখছ?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, “হ্যাঁ।” ডান হাত মুঠো করে মুখের কাছে চেপে ধরে চিন্তিত হয়ে পরে রিশু। রিশুকে ওইভাবে চিন্তিত অবস্থায় দেখে ভীত হয়ে ওঠে ঝিনুক, “মেয়েটাকে তুমি চেনো?” মাথা দোলায় রিশু, হুম। এক অজানা আশঙ্কায় বুকের ভেতরটা ভীষণ ভাবেই দুরুদুরু করা শুরু করে দেয় ঝিনুকের। কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কে?”

চশমার ফাঁক দিয়ে ঝিনুকের ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া চেহারার দিকে তাকিয়ে আসস্থ কন্ঠে বলে, “কেউ একজন, তুমি খাও এখন পরে বলব।”

রিশুর মুখের ভাব বদলে যেতেই ঝিনুক খাওয়া ছেড়ে ওর দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তোমার এক্স? চন্দ্রিকা?”

ঝিনুকের মুখে চন্দ্রিকার নাম শুনে ধাক্কা রিশু। মাথা নিচু করে সম্মতি সুচক ভাবে মাথা দোলায়, হুম।

ভুরু কুঁচকে পালটা প্রশ্ন করে ঝিনুক, “সে চেন্নাই চলে গেছে, মামনি তো তাই বলেছিল। তাহলে এখানে কি করে?”
 
সেদিন যে চন্দ্রিকার সাথে হসপিটালে দেখা হয়েছিল সেটা আগেই ঝিনুককে জানিয়ে দিলে ভালো করত, কিন্তু আর জানানো হয়নি। একটা মিথ্যে ঢাকতে আরো একটা মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয় রিশুকে।
 
প্রশ্ন বানে জর্জরিত হয়ে রিশু অসস্থি বোধে একটু চড়া গলায় উত্তর দেয়, “আমি কি করে জানব ও এখানে কেন? আমি কি ওর খবর নিতে গেছি নাকি? তুমি কি বলতে চাইছ?”
 
খাওয়া ছেড়ে রিশুর আনত চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে কোথাও কোন ভুল হচ্ছে ওর। ওর রিশু সর্বদা ওর চোখের দিকে তাকিয়েই কোন কথা বলে কিন্তু এই চন্দ্রিকার নাম শুনে থালার দিকে অথবা অন্যদিকে দেখে উত্তর দিচ্ছে দেখে একটু সন্দেহ হয় ঝিনুকের। মাছটা ভীষণ বিস্বাদ লাগে জিবে।
 
তাও খুঁটে খুঁটে একটু মাছ ভাত মুখের মধ্যে তুলে নরম গলায় বলে, “আমি তো তোমাকে জাস্ট জিজ্ঞেস করলাম, তাতে তুমি এত ক্ষেপে যাচ্ছও কেন?”

গলার স্বর বেশ চড়ে গেছিল রিশুর সেটা নামিয়ে এনে নরম সুরে বলে, “না মানে।”

বুকের ভেতর কেঁদে ওঠে ঝিনুকের, বহু কষ্টে পাওয়া এই ভালোবাসা আবার সেই প্রতারণার সম্মুখীন হতে হবে নাকি? তাহলে এবারে মরেও শান্তি পাবে না। চোখের কোনা ভিজে যায় ওর, বুকের ভেতরটা হুহু করে অপার শূন্যতায় ভরে যায়, কাঁপা গলায় বলে, “তুমি একবার আমাকে বলতে পারতে, রিশু।” নাকের ডগা লাল হয়ে গেছে ঝিনুকের।

ধরে আসা গলার স্বর শুনে ঝিনুকের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে নরম সুরে বলে, “কি বলব?”

কান্না ভেজা গলায় ওকে বলে, “সত্যিটা রুশু, আই জাস্ট ওয়ান্ট টু নো ট্রুথ।”

রুশু নাম শুনে কান্না পেয়ে যায় রিশুর। খাওয়া থামিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে এঁটো হাতেই জড়িয়ে ধরে ঝিনুককে। রিশুর হাতের পরশ পেয়ে ভেঙ্গে পরে ঝিনুক। ঝিনুকের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে বুক ভরা শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করে রিশু, “হ্যাঁ আমি জানতাম ও এখানে।” জল ভরা প্রচন্ড বেদনা মাখা চোখে রিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে ঝিনুক। বাঁ হাত দিয়ে ঝিনুকের চোখের জল মুছিয়ে আসস্থ করে বলে, “আমি জানি চন্দ্রিকা দিল্লী ফিরে এসেছে। কিন্তু এই তোমাকে ছুঁয়ে বলছি ঝুনু, আমার লাইফে আমার বুকে তুমি ছাড়া আর কেউ নেই।”
 
কি বিশ্বাস করবে কিছুই বুঝতে পারে না। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। ভুরু কুঁচকে জল ভরা চোখে হাজার প্রশ্ন নিয়ে রিশুর দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। ধিরে ধিরে রিশু সেইদিন বিকেলের ঘটনার বিবরণ দেয়। শোয়ার ঘর থেকে নিজের ফোন এনে সেদিনের চন্দ্রিকার সেই অচেনা নাম্বার খুঁজে খুঁজে বের করে ঝিনুককে দেখায় এবং সেই সাথে এটাও দেখায় যে সেইদিনের পরে আর কোনদিন ওই নাম্বারের সাথে আর কথা হয়নি। এক বছর আগের চন্দ্রিকার বিয়ের কথাও জানায় ঝিনুককে, সেই সাথে সেই চিঠির কথাও জানায় যে চিঠি প্লেনে বসে সেই রাতে ছিঁড়ে ফেলেছিল রিশু। সব শুনে অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থাকে ঝিনুক।
 
বেশ কিছুক্ষন পরে চোখের জল মুছে মৃদু হেসে ওকে বলে, “নাম্বারটা দিও তো আমাকে আমি একবার কথা বলব।”
চমকে ওঠে রিশু, “কেন? কি কথা বলবে?”

ওর চোখে বেদানার নয় তখন একটু ভালোবাসার জল লেগেছিল তাই মুচকি হেসে বলে, “একটা বড় থ্যাঙ্কস জানাতাম।”

অবাক হয়েই ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে রিশু, “মানে?”

রিশুর কপালে কপাল ঠেকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “ও যদি আগেই আমার রিশুকে নিয়ে যেত তাহলে এই দুত্তু রুশুকে কি করে পেতাম বলো।”

শেষ পর্যন্ত হাঁপ ছেড়ে ওঠে রিশু, “উফফ তুমি না।”

ওর চোখের সামনে তর্জনী নাড়িয়ে মৃদু আদেশের সুরে বলে, “আমি তোমাকে আমার সব খুলে বলেছি, তুমি কেন এটা আমার কাছ থেকে লুকাতে গেলে?”

ডান হাত তখন এঁটো, খাওয়া অনেক আগেই মাথায় উঠে গেছে, বাঁ হাতেই মাথা চুলকে অপরাধীর মতন হয়ে বলে, “আচ্ছা বাবা মাফি চাইছি বেগম সাহিবা।”

খাওয়া আর হল না ওদের, মৃদু ঝাঁঝিয়ে ওঠে সুন্দরী ললনা, “এই প্রথমবার দুইজনে মিলে হাত পুড়িয়ে মাছ ভাজলাম আর তোমার জ্বালায় আর খাওয়া হল না।”

হেসে ফেলে রিশু, “আচ্ছা বাবা কাল আবার দুজনে মিলে মাছ ভাজবো।”

মুচকি হাসি দেয় ঝিনুক, “এবারে এইভাবে প্রেম করা লাটে উঠবে।” ভুরু নাচিয়ে বলে, “আগামী কাল সকালে দুটো যন্তর পিস বাড়ি আসছে।”
 
হেসে ফেলে রিশু, পরেরদিন সকালেই ওর দুষ্টু মিষ্টি বোন আর আদরের শ্যালিকার আগমন ঘটবে।
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 18-10-2020, 01:30 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:16 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 03:41 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:13 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 02:49 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 27-10-2020, 02:59 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 12:21 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 10:20 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 29-10-2020, 01:29 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 30-10-2020, 11:22 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 01-11-2020, 01:37 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 02-11-2020, 12:51 PM
পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 08-12-2020, 05:19 PM
RE: পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 09-12-2020, 06:58 PM
Block Guest Users! - by pinuram - 09-12-2020, 11:47 PM
RE: Block Guest Users! - by dreampriya - 10-12-2020, 09:46 AM
RE: Block Guest Users! - by pinuram - 10-12-2020, 12:18 PM
পর্ব আট – (#6-42) - by pinuram - 14-12-2020, 11:37 PM
পর্ব আট – (#7-43) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM
পর্ব আট – (#8-44) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by pinuram - 17-12-2020, 03:32 PM



Users browsing this thread: 22 Guest(s)