Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত
মঞ্জু ঝর্নাকে দেখে একটু অবাক হোল ! হটাত ঝর্নাকে নিয়ে এলে ?
ওকেও পাসপোর্ট বানাতে হবে ! স্কলারশিপ পেয়েছে ! জুনে ও আমেরিকা চলে যাবে  তাই... কেউই বেশি কথা বললাম না ! পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দুটো ফর্ম কিনে বাইরে বেড়িয়ে এসে সবার সমস্ত ডকুমেন্ট এর জেরক্স করিয়ে ফর্ম ফিলাপ করে স্ক্রুটনির লাইনে দাঁড়িয়ে জমা করে দিয়ে যখন বেরুচ্ছি তখন প্রায় সাড়ে তিনটে বাজে ! খিদেয় পেটে ছুঁচো ডন মারছে ! দুজনকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের লাগোয়া হোটেলে মাছ ভাত খেয়ে নিলাম ! পেট শান্ত তো মনও শান্ত ! খেতে খেতেই মঞ্জু বলল আগামি ৬ ডিসেম্বর ওদের কলেজ থেকে বিহার ঘোড়াতে নিয়ে যাচ্ছে ! ওও যাচ্ছে ! 
শুনে খুশি হলাম ! যাক একটু বেড়িয়ে আসুক ! কারন আর কিছুদিন পরেই ও এই দেশ ছেরে আমার সাথে বিদেশে পারি দেবে ! এখন না হয় একটু বান্ধবিদের সাথে আনন্দ করুক ! 
৬ ডিসেম্বরই আমার ট্রেন ! কিন্তু ওর ট্রেনের সময় দুপুর বেলায় আর আমার রাতে ! তাই আমি ওকে স্টেশনে তুলতে আসতে পারবো না ! ও একটু দুক্ষ পেল ! কিন্তু ও জানে যে আমাকেও ফিরে যেতে হবে  তাই বিশেষ কিছু বলল না ! হাতে বেশি সময় নেই ! মঞ্জুকে যে একটু সময়ের জন্য আদর করব সেটারও উপায় নেই ! ঝর্না আমার সাথে আছে ! 
একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে ঝর্না এবং মঞ্জু দুজনেই কেউ কারুর সাথে একটাও কথা বলেনি সকাল থেকে !
আমি ঝর্নাকে জিজ্ঞাসা করলাম কি রে তোদের ভিতর আবার কিসের ঝগড়া ?
- তুমি মঞ্জুদিকেই জিজ্ঞাসা করো ! আমাকে কেন করছ ?    
- কি হোল বলবে কিছু ? মঞ্জুকে প্রশ্ন করলাম !কিন্তু মঞ্জু কিছুই বলল না ! 
চুপচাপ মঞ্জুকে ওদের বাড়িতে ছেরে খুব সাবধানে ঘুরতে যাবার পরামর্শ দিয়ে আমি ঝর্নাকে নিয়ে ফিরে এলাম ! রাস্তায় যখন আমরা রিক্সায় বসে আছি তখন ঝর্না আমার হাত ধরে জিজ্ঞাসা করল "দাদা তুমি রাগ করলে ?"
- আমি কেন রাগ করতে যাবো ?
ঝর্না আমার হাত কে কলে নিয়ে বলল আমি স্কলারশিপ পেয়েছি বলেই মঞ্জুদির একটু রাগ ! ও চায়না যে আমি আমেরিকায় গিয়ে বড় হয়ে তোমাদের বরাবরি করি ! আর এমনিতেও তো  স্কলারশিপ আমি পেতাম না যদি না সিডিউল কাস্ট না হতাম ! এতে আমার কি দোষ বল ?
বুঝলাম মঞ্জু ঠিক মেনে নিতে পারছেনা যে ঝর্না স্কলারশিপ পেয়ে বাইরে যাবে ! একদিন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আমাদের সাথে বরাবরি করবে ! 
আমি ঝরনার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম "আরও বড় হ ! দুনিয়াকে দেখিয়ে দে যে তুই বা তোর মতো মেয়েরা সব পারে ! "
- তোমরা না থাকলে কি আর আমি লেখাপরা করতে পারতাম দাদা ?আর আমি তোমাদের বরাবরি করব? তোমরাই আমার ভগবান  ! তোমাদের আসন সবসময় আমার মাথায় থাকবে ! 
রিক্সার মধ্যেই ঝর্নাকে আলতো করে জরিয়ে ধরলাম ! কিন্তু ঝর্না আমাকে জোর করে চেপে ধরল ওর বুকের সাথে ! 
এই সেই ঝর্না যে আমাকে কতো গালাগালি দিত ! আর আজকের ঝর্না একদম অন্য ! আমাকে দেখলেই ওর চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ! অন্য কারুর সাথে আমাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনা ! এমনকি মঞ্জুকেও আমার সাথে মেনে নিতে পারে না ! আমি বেশ ভালো করেই লক্ষ করেছি যে যখনি মঞ্জু বা কোয়েল আমার পাশে এসেছে তখনি ঝরনার চোখ জ্বলে উঠেছে ! প্রথম প্রথম আমি ঝরনার ছেলেমানুষি বোলে ভুল করেছি ! কিন্তু এখন ঝরনার জরিয়ে ধরাকে বুঝলাম আমার প্রতি ঝরনার দুর্বলতা ! 
ঝর্নাকে ছাড়িয়ে দিয়ে বললাম "এগুলো তোর করা সাজেনা ! তোকে অনেক বড় হতে হবে ! অনেক আগে যেতে হবে ! আমাকে মনের থেকে মুছে ফেলে ভবিষ্যতের দিকে তাকা ! "
ঝরনার চোখে জল ! আধ অন্ধকারেও দেখতে পাচ্ছি সেটা ! কিন্তু আমি ঝর্নাকে কোন স্বান্তনা দিলাম না ! কারন আমি জানতাম যদি সেই সময় ঝর্নাকে স্বান্তনা দিতে যেতাম তাহলে ঝর্না সেটাকে প্রশ্রয় এবং দুর্বলতা ভেবে আমাকে আরও বেশি করে জরিয়ে ধরবে ! আসলে কালো মেয়েদের দেখলে আগে যেরকম একটা মনোবৃত্তি হতো সেটা হায়দেরাবাদে পরতে গিয়ে ৯০% কালো মেয়ে এবং তাদের প্রতিভা দেখে আমার মনোভাব সম্পূর্ণ পালতে গেছে ! বাড়ির সামনে রিক্সা দাঁড়াতেই ঝর্না গম্ভির মুখে ধীর পদক্ষেপে বাড়ির ভিতর চলে গেলো ! মা হয়ত ঝর্নাকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেন কিন্তু ঝর্না কোন কথার উত্তর না দিয়েই ঘরের ভিতর ঢুকে গেলো ! মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন "তুই কি ঝর্নাকে কিছু বলেছিস নাকি রে ?"
-না ! আমি কেন ওকে কিছু বলতে যাবো ? ওর সাথে মঞ্জুর একটু মনমালিন্য হয়েছে ! আসলে মঞ্জু ঠিক নিতে পারছেনা যে ঝর্না বিদেশে পরতে যাবে ! এটাই হয় ! তাই তোমার আমার চিন্তা করার কিছুই নেই ! 
মা বললেন " আসলে গরিবরা একটু উন্নতি করুক সেটা অনেকেই দেখতে পারেনা ! কিন্তু মঞ্জুর মন এত ছোট কি করে হোল ?"
- হয় মা হয় ! এই রকম জেলাসি এই বয়সে একটু আধটু  আসতেই পারে ! ওসব নিয়ে তুমি চিন্তা করোনা ! 

৬ তারিখ সকালে মঞ্জুকে ফোন করে খুব সাবধানে থাকতে বললাম ! ও যেন একা একা ট্রেন থেকে না নামে ! অজানা কেউ কিছু না দিলে যেন না খায় ! ইত্যাদি ইত্যাদি উপদেশ দেইয়ে ফোন রেখে দিলাম ! 
সন্ধ্যে বেলায় বাবা আমাকে ছাড়তে হাওড়া স্টেশনে এলেন ! আমাকে ট্রেনে তুলে দেবার আগে বললেন " এত তারাতারি না করে আগে জিবনে দাঁড়া ! তারপর না হয় কিছু ভেবেচিন্তে করবি !"
- মানে ?......। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আমি প্রশ্ন করলাম !
আমার চোখে চোখ রেখে বাবা বললেন " আমি সিআইডী তে চাকরি করি ! আমি যদি আমার ছেলের খবর না রাখি তাহলে তো আমার চাকরি ছেরে দেওয়া উচিত ! বুঝে গেলাম বাবা মঞ্জু আর আমার ব্যাপারে সব জানেন ! মাথা নিছু করে নিলাম ! 
একটু লম্বা স্বাস নিয়ে বাবা বললেন সম্পর্কটা এমন একটা জিনিস সেটা ভাংতে বেশি সময় লাগে না ! কিন্তু তাকে ধরে রাখতে অনেক কষ্ট করতে হয়  ! তাই বলছিলাম সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শেখ ! আমি তোদের পথে বাঁধা হব না ! কিন্তু এই মুহূর্তে তোরা যেটা করতে চাইছিস সেটা এখন না করে পরে করলেই ভালো হবে বলেই আমি মানি ! আমি বাবার সামনে মুখ তুলে তাকাতে সাহস পাচ্ছিনা ! বাবা আবার বোলে উঠলেন "আগে তুই যা ! নিজেকে ঠিক করে প্রতিষ্ঠিত কর ! তারপর না হয় ............
মাথা নিচু করেই বাবাকে বললাম " তাই হবে বাবা ! "
চুপচাপ বাবাকে প্রনাম করে ট্রেনের কম্পারটমেনটে ঢুকে গিয়ে নিজের সিটে বসে পরলাম ! নিজেকে খুবই ছোট মনে হচ্ছিলো ! কি করে ভুলে গেছিলাম যে আমার বাবা একজন সিআইডী অফিসার ! যিনি দুনিয়ার খোঁজ রাখেন তিনি কি আর ছেলের খবর রাখবেন না ?  কি করে যে এতটা ভুল করেছিলাম !! একটা জিনিস ভেবে নিজেকে স্বান্তনা দিলাম যাক বাবা আমাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছেন ! উনি নিজেই কিছুদিন আমাকে অপেখ্যা করতে বলেছেন ! মনের ভিতর একটা উতফুল্লতা কাজ করলো ! 
হায়দেরাবাদে ৯ তারিখ সকাল বেলায় পৌঁছে গেলাম !    
সকাল দশটায় আমাদের পাস আউট সেরিমনি ! আজ সব বন্ধু বান্ধব এক সাথে বসে আছি ! জানিনা এর পর কে কোথায় হারিয়ে যাবে ! কোয়েল আমাকে দেখে এগিয়ে এলো  ! "সরি সুনন্দ ! আমি নিজের স্বার্থে অন্ধ হয়ে গেছিলাম ! "
- ইটস ওকে ! তুমি যে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছ সেটাই অনেক ! আমরা সব সময় ভালো বন্ধু হয়েই থাকতে চাই ! 
আমাদের ব্যাচের সবারই রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছে ! সবাই মসগুল নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ! কারন সবারই ক্যাম্পাস থেকেই চাকরি হয়ে গেছে ! শুধু আমি আর হরপ্রিত বাইরে যাবার সুযোগ পেয়েছি ! এতে সমিরের মনে কোন দুক্ষ নেই কারন মাস ছয়েকের মধ্যেই ওদের বিয়ে তারপর হয় হরপ্রিত চাকরি বদলে এদেশে চলে আসবে আর না হলে সমির চাকরি নিয়ে বিদেশে পারি দেবে ! রাজু আর সুজাতা দুজনেই আইবিএম দিল্লিতে চাকরি পেয়েছে ! দুজনেই খুব খুশি ! কলেজ থেকে কাল আমাদের ফেয়ারওয়েল দেবে ! আমার ফেরার টিকিট ১১ তারিখের ! তার মানে পরশুর ! হস্টেলে গিয়ে সমস্ত গুছাতে শুরু করে দিলাম ! কারন সন্ধ্যে বেলায় আমাদের পার্টি আছে "গ্রিন হায়দ্রাবাদ বারেতে ! আজ সব বন্ধু মিলে এঞ্জয় করব ! আবার কবে দেখা হবে তার কোন ঠিক নেই ! 
পরেরদিন সকাল দশটায় আমাদের ফেয়ারওয়েল পার্টি শুরু হোল ! অনেক খানাপিনা ! মিউজিক, নাচ গান ! অনেক কিছুই হোল ! সবাই ক্লান্ত ! সন্ধ্যে বেলায় আমি আমার সমস্ত জিনিসের আরও একবার তদারকি করে নিয়ে বেরুতে যাবো ঠিক সেই সময় আমাদের গার্ড এসে হাজির ! 
- তারাতারি এসো তোমার বাড়ি থেকে ফোন ! 
আমি দৌড়ে গিয়ে ফোন তুললাম ওপারে মায়ের গলা " খোকা আ আ আ ! তুই এখুনি চলে আয় ! আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে ! "
- মা তুমি এরকম করছ কেন ? কি হয়েছে আমাকে খুলে বল ! মায়ের সেই এক কথা কাঁদতে কাঁদতে বলছেন তুই এখুনি চলে আয় ! আর অন্য কোন শব্দ মায়ের মুখ থেকে বেরুচ্ছে না ! কাঁদতে কাঁদতেই মা ফোন কেটে দিলেন ! 
- মনের ভিতর প্রচণ্ড ঝর উঠেছে ! কি এমন হোল যে মা কাঁদছেন আর আমাকে এখুনি আমাকে ফিরে যেতে বলছেন ? আমার চোখের মুখের অবস্থা শোচনীয় ! কি করি কাকে ফোন করি ! বাবার কিছু হয়নি তো ? মনের মাঝে দুনিয়ার দুর্ভাবনা ! আমার হাত পা সব কাঁপতে শুরু করেছে ! 
এমন সময় রাজু এসে অফিসে ঢুকে আমাকে দেখে বলল " কি হয়েছে সুনন্দ ? তুই এমন করছিস কেন ?"
গার্ড বলল " ওর বাড়ি থেকে ফোন এসেছিলো ! তারপর থেকেই ও এইরকম করছে ! "
রাজু নিজে আমার বাড়ির ফোন নাম্বার ডায়াল করল ! কিছুক্ষণ হু হা করে ফোন ছেরে দিয়ে বলল " চল এয়ারপোর্ট ! "
এয়ারপোর্ট এর বাইরের কাউনটার থেকে টিকিট কেটে আমাকে এয়ারপোর্ট এর ভিতরে ঠেলে দেবার সময় বলল "মঞ্জু আর নেই ! "
[+] 7 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ঝর্ণা The Untold story ! - by dada_of_india - 15-12-2020, 08:23 PM



Users browsing this thread: 19 Guest(s)