08-12-2020, 11:24 AM
অফিসের বাইরে এসে দাঁড়ানোর একটু পরেই নীল একটা গাড়ি এলো ফুটপাথের কাছে। গাড়ি থেকে কাঁচ নামিয়ে অমিতজি তাকে হাত নেড়ে ডাকলেন। গাড়িটা অডি গাড়ি। অমিতজি নিজেই চালিয়ে এলেন। যদিও দেবশ্রী গাড়ির বেশি কিছু বোঝে না, তাদের তো একটা স্যান্ত্রো আছে জাস্ট, তাও পুরোনো, সেকেন্ড হ্যান্ড। তবু অমিতজির গাড়িটা দেখেই তার মনে হলো যে বেশ দামি গাড়ি হবে। সে দরজাটা খুলে সামনের সীটে বসে পড়লো। আর দরজাটা টেনে বন্ধ করে দিলো। ভিতরটা বেশ ঠান্ডা, নরম চামড়ার সিট। খুব আরাম হলো তার। গাড়িতে উঠেই দেবশ্রী অনুভব করলো যে এগুলো খুব বড়লোকদের গাড়ি। কোনোদিন এরকম গাড়িতে সে চড়েনি। কী সুন্দর একটা মায়া-মায়া গন্ধ আর হালকা মিউজিক বাজছে পিছনে। অমিতজির দিকে ফিরে মিষ্টি হেসে সে বললো, ‘থ্যাঙ্কস।’ অমিতজি সামনের দিকেই চোখে রেখে গাড়িটা চালাতে চালাতে বললেন, ‘থ্যাঙ্কস কীসের জন্য দেবশ্রী অমিতজির দিকে একটু ঝুঁকে বললো, ‘সবকিছুর জন্য।’ তারপর একটু থেমে বললো, ‘এই যে আজ আমাকে ডাকলেন, আপনার সঙ্গে ঘুরতে নিয়ে যাবার জন্য। এইজন্য থ্যাঙ্কস। বুঝলেন অমিতজি এক ঝলক দেবশ্রীর দিকে তাকালেন। দেবশ্রীর শরীরে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন। চুড়িদারের উপর দিয়ে তার বিনা-ওড়নার উঁচু হয়ে থাকা স্তন সাইড থেকে দেখে বেশ খুশি হলেন। তারপর আবার রাস্তার দিকে চোখ ফিরিয়ে দেবশ্রীর কথার উত্তর দিলেন তিনি, ‘এর জন্য থ্যাঙ্কস দিলে তো আমাকেও থ্যাঙ্কস দিতে হয় আপনাকে আমার সঙ্গে ঘুরতে যেতে রাজি হলেন বলে।’ দেবশ্রী তৎক্ষণাৎ বললো, ‘সে তো আমাকে রাজি হতেই হবে। বাব্বা, রাজি না হয়ে উপায় আছে আমার কোথায় কত অপ্সরা-উর্বশী আছে আপনার, তাদের সঙ্গেই তো থাকেন রাতদিন, মেসেজ করলেও তাই মেসেজের উত্তর আসে না। এরপর আপনার ডাকে ঘুরতে যেতে রাজি না হলে আমাকে আর মনে রাখবেন আপনি দেবশ্রীর কপট অনুযোগের কোনো উত্তর না দিয়ে অমিতজি একটু হেসে গাড়ি চালাতেই ব্যস্ত থাকলেন। দেবশ্রী একটু অপেক্ষা করে আবার বললো, ‘আপনার কতো জায়গায় কতো ভালোবাসা আছে আপনাকে ধরে রাখতে হলে আমাকে এটুকু তো করতেই হবে। তাই না অমিতজি একটু হেসে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ভালোবাসা নয়, কিন্তু শরীর দেবার জন্য বেশ কিছু মেয়ে আছে।’ দেবশ্রী ছদ্ম-রাগ দেখিয়ে আবার অমিতজির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আছে সত্যি সত্যি কতজন আছে শুনি।’ অমিতজি বললেন, ‘আছে। আপনার সেসব জানার প্রয়োজন নেই। কী করবেন জেনে তবে তারা কেউ আপনার মতো নয়।’ দেবশ্রী সত্যি সত্যি এবার একটু মনোক্ষুন্ন হয়ে সামনের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো, ‘থাক। আমি সব বুঝি। এই একই কথা তাদেরও নিশ্চয়ই শোনান, তাই না অমিতজি আরো কিছুক্ষণ চুপচাপ ড্রাইভ করে দেবশ্রীকে বললেন, ‘আমাদের বাড়িতে মোট পাঁচটা গাড়ি। এই গাড়িটা আমার সবচেয়ে ফেভারিট। এছাড়া আরো দুটো গাড়ি আছে আমার, ড্রাইভাররা চালায়। আমার ড্যাড এর কাছে আরো দুটো গাড়ি আছে। মোট তিনজন ড্রাইভার আমাদের। কখনো কোথাও যেতে হলে ওরাই নিয়ে যায়। ড্যাড এখন আর নিজে গাড়ি চালান না। আমিও চালাই না। শুধু খুব রেয়ারলি, মাঝে সাঝে, আমি আমার এই অডি গাড়িটা বের করি, নিজে ড্রাইভ করবো বলে। একমাত্র কোনো বিশেষ অকেশানে আমি নিজে গাড়ি চালাই, ড্রাইভার নিই না। আর আজ সেরকম একটা দিন। কারণ আজ আপনি আমার সঙ্গে যাচ্ছেন, তাই। আপনি আমার কাছে স্পেশাল। বুঝলেন দেবশ্রী চুপচাপ শুনছিলো অমিতজির দিকে তাকিয়ে। এখন সে অনুভব করলো যে সে এই মানুষটাকে ভুল বুঝছিলো। সে দুটো হাত বাড়িয়ে অমিতজির বাঁদিকের হাতটা স্টিয়ারিংয়ের উপর দিয়েই চেপে ধরলো। বললো, ‘আমি খুব সরি। আপনি আমার কথায় কিছু মনে করবেন না প্লিজ। আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছি আপনার সঙ্গে আসতে পেরে।’ গাড়িটা সল্টলেকের বুক চিরে খালি রাস্তা পেয়ে দৌড়াচ্ছিলো। বাঁহাতে দেবশ্রীর হাতের নরম স্পর্শ পেয়েই অমিতজি সেই হাতটা দেবশ্রীর দিকে নিয়ে গেলেন। তারপর সামনের দিকে চোখ রেখেই খপ করে দেবশ্রীর ডানদিকের স্তনটা তার চুড়িদারের উপর দিয়ে ধরেই চিপতে লাগলেন। যদিও রাস্তায় গাড়ি কম, আর এই গাড়ির জানলার কাঁচে ফিল্ম লাগানো আছে, তবু দেবশ্রী সচকিত হয়ে এপাশে-ওপাশে তাকিয়ে দেখে নিলো একবার। কিন্তু অমিতজির হাতটা তার বুকের উপর থেকে সে সরালো না। বরং একটু ডানদিকে সরে এলো, যাতে তার বুকের গোল গোল ডেয়ারি ভান্ডার চটকাতে অমিতজির সুবিধা হয়। নিজের হাতদুটোও সে অমিতজির হাতের উপর দিয়ে চেপে রইলো। মুখে তার একটা মিষ্টি লাজুক হাসি। হাসতে হাসতেই সে অমিতজিকে প্রশ্ন করলো, ‘আমরা আসলে যাচ্ছিটা কোথায় বললেন অমিতজি উত্তর দিলেন, ‘স্বপ্নপুরী ষ্টুডিও। আমার অ্যালবামের শুটিং হচ্ছে ওখানে।’ দেবশ্রী শুনলো, কিন্তু বুঝতে পারলো না কীসের অ্যালবাম। অমিতজি নিজেই আবার খোলসা করে বললেন, ‘আমার একটা মিডিয়া বিজনেস আছে। মানে মিউজিক কোম্পানি আছে। এই আপনাদের মতো সুন্দরী সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে গান, আইটেম ড্যান্স, ভোজপুরি গান বানানো হয়। আরো কিছু প্রোডাকশন আছে, যেমন ছট পুজো, হোলি উৎসব, শিব ভজন, স্যাড সং এইসবও মেকিং হয়। তারপর মিডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে সেগুলো ডিস্ট্রিবিউট হয়। অনলাইন ভিউয়ারশিপ তো আছেই। প্লাস রিটেল বিজনেস হয় ইউপি, বিহারে। যতটা না বিজনেস, তার চেয়ে বেশি আমার এটা নেশা বলতে পারেন।’ দেবশ্রীর দিকে ফিরে একটু হাসলেন অমিতজি। দেবশ্রীর বুকের গভীর খাঁজে তার হাতের আঙুলগুলো রগড়াতে রগড়াতে বাকিটা শেষ করলেন, ‘শুটিং যা হয়, এই স্বপ্নপুরী ষ্টুডিওতেই হয়। আর কিছু শুটিং হয় দিল্লিতে। এখানে ষ্টুডিও ভাড়া কম। টেকশিয়ান এখানে বেটার। বাংগাল ড্যান্স গ্রূপের খুব ডিমান্ড আছে জানেন তো ইউপি-বিহারে। এইজন্য শুটিংটা এইখানেই হয়। এখান থেকে ভিডিও তৈরী হয়ে চলে যায় কানপুর, ঔরাঙ্গবাদ, পাটনা, পুরো বিহারে। রাঁচিতে। তো আমি ভাবলাম আমি যাচ্ছি যখন, আপনিও চলুন। শুটিং দেখবেন। ভালো লাগলে আপনি একটা-দুটো সং-এ অ্যাক্টিং করেও দেখতে পারেন। আপনার যা ফিগার আছে কামাল হয়ে যাবে আপনি যদি ভিডিও করেন।’ দেবশ্রী তার সুডৌল স্তনে আর স্তনের খাঁজে অমিতজির কর্কশ হাতের টেপন খেতে খেতে এদিক ওদিক দেখছিলো। অমিতজি যত যা খুশি করুক, কিন্তু বাইরের কেউ প্রকাশ্যে দেখুক, সেটা সে চাইছিলো না। সে বাসের মধ্যে এর-ওর হাতের টেপন খেয়েছে। সেসব তো ভিড়ের মধ্যে, বোঝাও যায় না, দেখাও যায় না। কিন্তু এরকম ওপেন রাস্তায় তার কেমন যেন একটা মেয়েলি অনুভূতি তৈরী হচ্ছিলো কেউ দেখছে না তো অবশ্য খোলা ফাঁকা রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ভিতর কি হচ্ছে তা দেখার জন্য কেউ ছিল না ওখানে।
অমিতজির কথা শুনতে শুনতে খুব উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলো দেবশ্রী। সিনেমা-অ্যাক্টিং-শুটিং এসব তার কাছে স্বপ্ন। সে এই জগৎটা চেনে না। অমিতজির বিজনেস তার মানে সত্যি সত্যি চারদিকে ছড়ানো। ভীষণ লাকি সে, এরকম একটা লোকের সাথে হঠাৎই পরিচয় হয়ে গেলো। তারই গাড়িতে তার পাশে বসে সে বুকে ম্যাসাজ খাচ্ছে। তবে অ্যাক্টিং কি আর তার দ্বারা হবে কোনোদিন সামান্য পাড়ার স্টেজেও সে ওঠেনি কোনো কারণে। সে উত্তর দিলো, ‘আমি ওসব পারবো না অমিতজি। আমি এসব অ্যাক্টিং-ফ্যাক্টিং বুঝি না। কিন্তু শুটিং দেখতে আমার খুব ভালো লাগবে, আমি কোনোদিন রিয়েল শুটিং দেখিনি। জানেন, আমার খুব ইচ্ছা ষ্টুডিওর ভিতরে গিয়ে শুটিং দেখার অমিতজি তার হাত আবার স্টিয়ারিংয়ের উপর ফিরিয়ে নিয়ে এসে বললেন, ‘তো চলুন আজ দেখবেন, কীভাবে শুটিং হয় ভোজপুরি গানের। রিয়েল দেখবেন। কখনো দেখেছেন ভোজপুরি ভিডিও বা ভোজপুরি ড্যান্স দেবশ্রী সত্যি কথাই বললো, ‘না, মানে ভোজপুরি তো আমি জানি না। ভোজপুরি ভাষা কীভাবে বলে বা কেমন শুনতে তাই জানি না।’ অমিতজি হাত নেড়ে বললেন, ‘ও আপনি বুঝে যাবেন। হিন্দি বোঝেন তো ব্যাস তাহলেই হবে। ফিফটি পার্সেন্ট হিন্দি, আর তার সাথে ফিফটি পার্সেন্ট আপনার বাংলা ব্যাস মিশিয়ে দিলেই ভোজপুরি। খুব সুইট ভাষা। চলুন আপনার ভালো এক্সপেরিয়েন্স হবে আজ।’ দেবশ্রী সত্যি সত্যি খুব উৎসাহিত বোধ করছিলো এরকম একটা অভিজ্ঞতার জন্য। অমিতজির গাড়ি কিছুক্ষনের মধ্যেই বেদিক ভিলেজ পার করে বিশাল পাঁচিলঘেরা একটা জায়গায় ঢুকলো। জায়গাটা খুব সুন্দর করে সাজানো। আশেপাশে প্রচুর ফুলের গাছ আর পার্ক মতো দেখতে পেলো দেবশ্রী। অনেকটা জায়গা জুড়ে একটা রিসর্টের মতো লাগলো তার এই জায়গাটা। লোকজন বেশি কেউ নেই, দু-চারজন মালি গাছে জল দিচ্ছে, পরিষ্কার-টরিস্কার করছে। ছবির মতো সাজানো চারদিক। মাঝখানে একটা সুবিশাল সুইমিং পুল। বাঁধানো রাস্তা। এরকমই হয় তাহলে ষ্টুডিও, দেবশ্রী ভাবলো। ওই রিসর্টের একদিকে গাড়িটা পার্ক করে অমিতজি দেবশ্রীকে নিয়ে একটা সাজানো বিল্ডিংএ ঢুকলেন। খুব বেশি উঁচু নয়, দোতলা বিল্ডিং। ব্যাঙ্কোয়েট হলের মতো সুবিশাল ফ্লোর। ফ্লোরটা ফাঁকা। কেউ নেই একতলায়। অমিতজি যেদিকে এগিয়ে গেলেন সেদিকে উপরে ওঠার একটা সিঁড়ি। অমিতজির পিছু পিছু দেবশ্রীও সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে এলো। এটা ষ্টুডিওর দোতলা। নীচ থেকেই এখানে খুব জোরে কোনো গান চলার আওয়াজ পাচ্ছিলো দেবশ্রী। গানটা একটানা বাজছে না। থামছে, আবার হচ্ছে, আবার থামছে, আবার একই জায়গা রিপিট হচ্ছে। এইরকম। দোতলায় এসে সে শুটিংয়ের সেটটা দেখতে পেলো। নীচের মতোই একটা বিশাল বড়ো হলরুম। তারই একদিকে শুটিং চলছে। দশ-বারোজন ছেলেমেয়ে চড়া আলোর সামনে ঝলমলে পোশাক পরে নাচের ভঙ্গিমা করছে। তাদের পিছনে সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডের একটা উঁচু স্ক্রিন লাগানো আছে। কাছাকাছি খুব পাওয়ারফুল কিছু লাইট লোহার স্ট্যান্ডের উপর দাঁড় করানো রয়েছে। সেগুলো ওই আর্টিস্টগুলোর দিকে ফোকাস করা। শুটিং এর জায়গাটা এই কারণে খুব আলোকিত, হলরুমের অন্য দিকগুলো অপেক্ষাকৃত আধো অন্ধকার। এই ঘরে একটাও জানলা বলে কিছু নেই, দেবশ্রী লক্ষ্য করলো।
অমিতজি হলরুমে ঢুকে একদিকে একটা চেয়ারে দেবশ্রীকে বসতে বললেন। দেবশ্রী বসতে বসতে বললো, ‘এটাই শুটিং হচ্ছে এইরকম জায়গায় অমিতজি হালকা হেসে বললেন, ‘হ্যাঁ ওই যে সবুজ স্ক্রিনটা দেখছেন, ওটা কম্পিউটারে চেঞ্জ করে ইচ্ছামতন ব্যাকগ্রাউন্ড লাগিয়ে দেওয়া হবে। এটাই আউটডোর হয়ে যাবে। সমুদ্র-সৈকত কিংবা ফুলের বাগান, যা খুশি।’ দেবশ্রী বললো, ‘দারুন ব্যাপার তো। সব তার মানে এইভাবেই হয় অমিতজি উত্তর দিলেন, ‘না, না, এটা তো কস্ট কাটিংয়ের জন্য করা হয়। রিয়েল আউটডোর শুটিংও করা হয় প্রয়োজনে। আচ্ছা, আপনি এখানে শুটিং দেখুন, আমি আমার কাজটা সেরে আসি।’ তাকে বসতে বলে অমিতজি অন্যদিকে চলে গেলেন কার সাথে কথা বলতে। দেবশ্রী বসে বসে শুটিং দেখতে লাগলো। নাচের আর্টিস্টরা ছাড়াও ঘরে আরো জনা-সাতেক লোক উপস্থিত। তাদের কেউ কেউ দেবশ্রীকে বসে থাকতে দেখেও খুব একটা পাত্তা দিলো না। এরা নতুন নতুন মুখ দেখে নিশ্চয়ই অভ্যস্ত, দেবশ্রী ভাবলো। ওই লোকগুলোর মধ্যে কেউ ক্যামেরা ধরে রেখেছে, কেউ ক্যামেরার পাশে পাশে ঘুরছে। দুজন লাইটের পিছনে রয়েছে। একজন ডানদিকে অনেকটা দূরে মিউজিক সিস্টেমের পিছনে বসে আছে বোধহয় গান চালাচ্ছে, রিপিট করছে। কিন্তু দেবশ্রী দেখলো যে এখানে ক্যামেরাগুলো খুব হাই-ফাই নয়। বিয়ের বাড়িতে যেরকম লাইট-লাগানো ক্যামেরা নিয়ে ঘোরে ভিডিও শুটিং এর জন্য, এই ক্যামেরাগুলোও সেইরকম। দুটো ওরকম ক্যামেরা, আর একজনের হাতে একটা স্টিল ক্যামেরা। এতেই শুটিং করা হচ্ছে। যে লোকটা ক্যামেরার পাশে পাশে রয়েছে, তার দিকেই ওই আর্টিস্ট বা ড্যান্সারগুলো বেশিরভাগ তাকিয়ে আছে। সে ওদের বুঝিয়ে দিচ্ছে, আর ওরা সেইভাবে বডি মুভমেন্ট করছে নাচের সময়। এরা বোধহয় ঠিকমতো ট্রেন্ড নয়, কারণ দেবশ্রী দেখলো যে পনেরো-কুড়ি সেকেন্ডের বেশি একসাথে শুট করাই যাচ্ছে না। আর্টিস্টদের মধ্যে কেউ না কেউ কিছু না কিছু ভুল করে ফেলছে। আর সেই জায়গাটা আবার শুটিং করতে হচ্ছে। কিন্তু এগুলো তো তবু স্বাভাবিক। দেবশ্রীর সবচেয়ে অবাক লাগলো অন্য জিনিসে। যারা ড্যান্স করছে, তাদের মধ্যে কিছু ছেলে-মেয়ে সাধারণ জিন্স-লেগিংস পরে আছে। মেয়েগুলোর সাদা লেগিংস, আর লাল-টপ। আর ছেলেগুলোর গায়ে জিন্সের সাথে লাল জামা। এরা মনে হয় সাইড আর্টিস্ট, কারণ এরা পিছনে আছে আর একই ভঙ্গিতে ডানদিকে-বাঁদিকে হেলেদুলে স্টিরিওটাইপ ড্যান্স করছে। ক্যামেরা আসল ফোকাস করছে যে দুজনের উপর, তারাই বোধহয় হিরো-হিরোইন হবে। চব্বিশ-পঁচিশ বছর বয়স হবে দুজনেরই। ছেলেটা জিন্স আর কটকটে হলুদ একটা জামা পড়ে আছে, গলায় বড়ো একটা রুমাল পেঁচিয়ে রাখা আছে, লাল রঙের। আর মেয়েটা মোটামুটি দেখতে, কিন্তু তার গায়ে খুব ছোট পোশাক।
সেটা দেখেই সবচেয়ে অবাক হলো দেবশ্রী। মেয়েটা একটা স্কার্ট পড়ে আছে, যেটা হাঁটু অবধিও নামেনি তার কোমর থেকে। ফর্সা পা নীচ থেকে উরুর মাঝামাঝি অব্দি পুরো উন্মুক্ত। আর উপরের পোশাক বলতে বুকে খুব ছোট একটা কাঁচুলি মতো বাঁধা, যেটা কোনোক্রমে তার মাঝারি সাইজের দুটো স্তনকে ঢেকে রেখেছে। দেবশ্রী এক ঝলকেই বুঝতে পারলো যে মেয়েটা প্যাডেড ব্রা পড়েছে, বুক উঁচু দেখানোর জন্য। সেই ব্রা-এর উপর কাঁচুলিটা টাইট করে বেঁধেছে। ব্রা দেখা যাচ্ছে না। স্তনদুটো ফোলা ফোলা লাগছে। ভীষণ শরীর-দেখানো পোশাক পরেছে মেয়েটা। মুখে বেশ মেকআপ করা, খুব সুন্দর লাগছে দেখতে তাকে। যদিও তার মুখশ্রী ততো আকর্ষণীয় মনে হলো না দেবশ্রীর। তবে খুব ছোট ছোট পোশাকের কারণে সেক্সী লাগছে মেয়েটাকে। মেয়েটা খুব চটুল ভঙ্গিতে তার শরীর দোলাচ্ছে। নিজে থেকেই দোলাচ্ছে বা হয়তো তাকে দোলাতে বলা হয়েছে। এদের ড্যান্স চলার সাথে সাথে সাইন্ড বক্সে যে গানটা বাজছিলো, দেবশ্রী তার কিছুটা ধরতে পারলো একটা লাইন। সেটা হলো, তোহার মুসম্বি, দারু কে জাম্বি। জাম্বি, না জাম্মি কে জানে। দু-তিনবার শুনেও শব্দটা বা তার মানেটা ঠিক বুঝলো না সে। কিন্তু দেখলো, যতবার মুসম্বি শব্দটা আসছে, ওই মেয়েটা তার কাঁচুলি সমেত বুকটা ঝাঁকাচ্ছে। মুসম্বি বলতে তার বুকের স্তনদুটোকে বোঝাতে চাইছে তার হাতের তালু দিয়ে তার দুটো স্তনের দুপাশে ধরে স্তনের আকারটা ঝাঁকিয়ে দেখাচ্ছে। সামনের ছেলেটা ঠিক সেই সাথে তার মুখটা ওই মেয়েটার স্তনের সামনে নিয়ে গিয়ে মুখ থেকে জিভ বার করে স্তনদুটো যেন চাটার চেষ্টা করছে। পুরো জিনিষটা ক্যামেরার ঠিক সামনে হচ্ছে, আর ক্যামেরা যিনি ধরে আছেন তিনি বার বার করতে বলছেন। ঘরে উপস্থিত সবকটা পুরুষ গোগ্রাসে যেন গিলছে সীনটা, তারা সবকটা মিলে ওই মেয়েটার বুকের কাঁচুলির দিকেই লোলুপ চোখে তাকিয়ে আছে। আর মেয়েটাও বার বার ওইরকম করে তার স্তন ঝাঁকিয়ে দেখাচ্ছে। দুহাত দিয়ে স্তনদুটো ধরে দেখাচ্ছে ক্যামেরার দিকে। পুরো দৃশ্যটা ভীষণই রগরগে লাগলো দেবশ্রীর। বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় এই লাইনটা শুট হবার পর, ক্যামেরায় যিনি ছিলেন, তিনি হাত তুলে সাউন্ড সিস্টেমের ছেলেটাকে বললেন, ‘ও পেহলাবালা লাইন ফিরসে।’ নায়িকা মেয়েটাকেও তিনি বললেন, ‘চলো স্টার্ট।’ গান বাজতে শুরু করলো, ‘উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ মেয়েটাও নাচ শুরু করলো। যদিও সেটাকে দেখে ঠিক নাচ বলে মনেও হলো না দেবশ্রীর। ‘উপর সে বত্তিশ’ বলার সাথে সাথে সে সামনে ঝুঁকে তার স্তনের খাঁজ দেখিয়ে আর কাঁচুলির দুই সাইড থেকে হাত দিয়ে ধরে স্তনদুটো চিপে ক্যামেরার দিকে দেখালো। তারপর সেকেন্ড লাইনে ‘নীচে কে ছত্তিশ’ বলার সাথে সাথে পিছন দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। আর পাছা দুটো উঁচু করে স্কার্টের উপর দিয়েই দুহাতে পাছার উপর খাবলে ধরলো।
এরপর গানে এলো, ‘বিচওয়ে কে চব্বিশ বুঝাতা কি না, বুঝাতা কি না মেয়েটা তখন আবার সামনে ফিরে তার মসৃন খোলা পেটের উপর হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখাতে লাগলো। আবার এলো ‘উপর সে বত্তিশ’। মেয়েটা আবার সামনে ঝুঁকে তার বুকের খাঁজ দেখিয়ে দেখিয়ে দুহাত দিয়ে স্তনদুটো চেপে ধরে ক্যামেরার দিকে তাক করে ধরলো। যিনি সামনের ক্যামেরায় ছিলেন, তিনি হাত দেখিয়ে বললেন কাট। তারপর তিনি পাশের জনকে কিছু বললেন, দেবশ্রী দূর থেকে শুনতে পেলো না ততো, ওদিকে গানও চলছে। পাশের জন, সে-ই ড্যান্স মাস্টার হবে হয়তো, মেয়েটাকে কিছু বোঝালো নিজের বুকের কাছে হাত দিয়ে। মেয়েটা মাথা নেড়ে বোঝালো যে সে বুঝেছে। আবার গান শুরু হলো ‘উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ’। মেয়েটা এইবার করলো কী কাঁচুলির দুপাশে হাতের দুটো বুড়ো আঙ্গুল ঢুকিয়ে অন্য আঙুলগুলো দিয়ে স্তনের নীচে চাপ দিলো ছত্তিশ বলার সাথে সাথে। স্তনের মাংস যেন বেরিয়ে আসবে বাইরে। এইভাবে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে সে কাঁচুলির উপর থেকে প্রায় অর্ধেক স্তন বার করে দিলো দুদিকে সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন, বোঝা গেলো ওই নগ্ন দৃশ্য সবার পছন্দ হয়েছে। যে ছেলেটা তার সাথে নাচছে, তার দিকে কেউ নজরই দিচ্ছে না সে নিজের মতো কিছু স্টেপ বানিয়ে করে যাচ্ছে। সবার ফোকাস শুধু ওই মেয়েটার উপর। গানে যখনই ‘নীচে কে ছত্তিশ’ আসছে, মেয়েটা আবার পিছনদিকে ঘুরে স্কার্টের উপর দিয়ে পাছায় দুটো হাত বুলিয়ে পাছা খামচে ধরছে স্কার্টের উপর দিয়ে। তারপর আবার সামনে ফিরে পেট আর নাভি দেখিয়ে হাত বোলানো চলছে। যেন তার শরীরের সম্পদ ধরে ধরে দেখাচ্ছে, কিরকম ফুলকো মাল সে। গোটা সীনটা এতক্ষণে সবার পছন্দ হয়েছে বলে মনে হলো। কিন্তু গানটা ওখানেই রিপিট হতে থাকলো, আর লোকগুলো ওদেরকে ওইভাবেই বার বার নাচাতে লাগলেন শট ওকে হওয়া সত্ত্বেও। মেয়েটাও একবার সামনে ঝুঁকে বুকের স্তন প্রায় বার করে দেখাচ্ছে দুহাত দিয়ে, পরক্ষণেই পিছনদিকে ফিরে পাছায় খাবলে ধরে দেখাচ্ছে, আবার সামনে ফিরে পেট আর নাভি দেখাচ্ছে। তারপর আবার স্তন বার করে দেখাচ্ছে। আবার পাছা। আবার স্তন। এইভাবে লাগাতার করেই যাচ্ছে, আর লোকগুলো ক্যামেরাবন্দি করতে করতে সবটা গিলছে। একবার-দুবার নয়, প্রায় বিশ-পঁচিশবার মেয়েটাকে ওই করে যেতে হলো। চড়া আলোর সামনে অতো ছোট পোশাকে অতোগুলো লোকের সামনে দাঁড়িয়ে সে বার বার তার দেহ ওইভাবে প্রদর্শন করে যেতে লাগলো। দেখে তাজ্জব দেবশ্রী। এটা শুটিং হচ্ছে নাকি ওই মেয়েটাকে অর্ধনগ্ন করে এই লোকগুলো সুখ নিচ্ছে তার শরীরের প্রায় পঁচিশ তিরিশবার মেয়েটা ওইভাবে দেহ প্রদর্শন করার পরে ক্যামেরার লোকটা মেয়েটাকে বললো, কাট। গান থামলো। মেয়েটা ও অন্যান্য সহশিল্পীরা দাঁড়িয়ে পড়লো। এইসময় মেয়েটার সাথে একবার চোখাচোখি হলো দেবশ্রীর। মেয়েটা খুব অবাক হলো মনে হলো তাকে দেখে, বার বার দেখতে লাগলো। কিন্তু কিছু বললো না। ওদিকে ক্যামেরাম্যান আর দু-তিনজন মিলে ক্যামেরায় ঝুঁকে পরে সদ্য শুট করা অংশটা দেখছিলো, সব ঠিক এলো কিনা। একবার ক্যামেরাম্যান ডাকলেন মেয়েটাকে। ডেকে তাকে সামনের দিকে ঝুকে দাঁড়াতে বললেন। একজন ছেলে, স্পটবয় মতোন, দাঁড়িয়ে ছিল সাইডে। তাকে বললেন আলোটা নামিয়ে ধরতে। সে একটা আলোর স্ট্যান্ড সমেত উঠিয়ে মেয়েটার বুকের কাছাকাছি ঝুঁকিয়ে ধরে রাখলো। আরেকজন পাশ থেকে একটা রিফ্লেক্টর ধরলো মেয়েটার সামনে। এতে মেয়েটার বুকের কাছটা খুব উজ্জ্বল হয়ে উঠলো তীব্র আলোয়। সেই সময়, আগের লোকটা ক্যামেরাটা এনে মেয়েটার পুরো বুকের সাথে প্রায় ঠেকিয়ে ধরলেন, কয়েক আঙুল তফাতে।
মেয়েটাকে বললেন বুকটা ঝাঁকাতে। মেয়েটা বুকের স্তনদুটো জোরে জোরে উপর-নীচে ঝাঁকাতে লাগলো ক্যামেরার ঠিক সামনে। খুব কাছ থেকে সেটা তোলা হলো। তারপর দূরে সরে এসে তিনি সাউন্ড সিস্টেমের ছেলেটাকে নির্দেশ দিলেন, ‘আব ও-বালা লাগাও গাড়ি কে রফতার।’ গান শুরু হলো, কোনো মেয়ের গলায় ‘গাড়ি কে রফতার ধীরে করো ছক্কা মারলাপে আব দুখাতা সিনা মেয়েটা এবার ক্যামেরার দিকে সাইড হয়ে তার পাছাটা বিচ্ছিরিভাবে উঁচু করে দাঁড়ালো। আর গানের নায়ক ছেলেটা তার পিছনে এসে তার কোমরটা দুহাতে ধরে স্কার্টের উপর দিয়ে নিজের কোমরটা মেয়েটার পাছার সাথে ঠেকিয়ে দাঁড়ালো। গান বাজছে, ওরা ওই পোজে দাঁড়িয়ে আছে। একবার তাল বুঝে ওরা শুরু করলো অ্যাক্টিং। ছেলেটা কোমর সামনে পিছনে করে দেখানোর চেষ্টা করছে যে সে তার লিঙ্গই যেন ঢুকিয়ে দিচ্ছে মেয়েটার পিছনে। আর মেয়েটা একটু ঢং করছে পাছা দুটো সামনে পিছনে করে, ছেলেটাকে লিঙ্গ ঢোকাতে সে যেন সাহায্যই করছে। এসব দেখে দেবশ্রীর গা গরম হয়ে উঠছিলো। এইরকম হয় ভোজপুরি গান জীবনে প্রথমবার সে কোনো ভোজপুরি গান শুনলো, আর একইসঙ্গে তার শুটিংও দেখলো। নিজের চোখকে তার বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে এতো উগ্র নাচ শুট করছে এরা। সে হিন্দি সিনেমার আইটেম ড্যান্সের সঙ্গে পরিচিত। সেখানেও খোলামেলা পোশাক ব্যবহার হয়। এমনকি বিকিনিও থাকে অধিকাংশ আইটেম ড্যান্সে। কিন্তু সবকিছুর উপর একটা আর্টের ছাপ থাকে। মানে চটুল হলেও সেগুলোতে একটা মান-মর্যাদার ব্যাপার থাকে। কিন্তু এখানে যেটা হচ্ছে, মেয়েটা স্তন প্রায় বার করে দেখাচ্ছে ক্যামেরার সামনে, পাছার উপর ক্যামেরা ফোকাস করে তার পাছা খাবলে ধরাটা তোলা হচ্ছে, এখন তো পুরো পিছন থেকে লিঙ্গ ঢোকানোটা দেখাচ্ছে। এর মধ্যে না আছে আর্ট, না আছে মর্যাদা। আর মেয়েটাও পুরো তৈরী মাল। নির্লজ্জের মতো সে তার শরীর দেখাচ্ছে। তার নাচের কোনো সেন্স আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। নাচের কোনো সেন্স দরকার আছে কিনা এখানে তা-ই সন্দেহ। দেবশ্রী ভাবছিলো অ্যাক্টিং নাকি কত কঠিন ব্যাপার হবে। কিন্তু এ তো অন্য জিনিস। সে বুঝতে পারলো যে সে যা ভাবছিলো, এটা ততো কঠিন কিছুই না। চেষ্টা করলে সে-ও করতে পারবে এগুলো। তবে এভাবে এতো লোকের সামনে এতটা খোলামেলা হতে তার সংকোচ লাগবে। এই মেয়েটা অনেক বেশি সাবলীল। হয়তো এই লাইনে কাজ করার সুবাদেই এতটা সাবলীল হতে পেরেছে মেয়েটা। দেবশ্রীর খুব ভালো লাগছিলো ভাবতে যে সেও একদিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবে, যদি অমিতজি সুযোগ দেন। পুরুষ মানুষদেরকে বশীকরণের কিছু মন্ত্র তারও তো জানা আছে। সুযোগ পেলে সে কিছুটা চেষ্টা করতেই পারে এই মেয়েটির মতো হতে। দেবশ্রী নিজে তখনো জানতো না যে খুব তাড়াতাড়িই একদিন সে এই মেয়েটিকে অনেক পিছনে ফেলে দেবে শরীরী আবেদনের প্রতিযোগিতায়। দেবশ্রী বসে বসে শুটিং দেখছিলো, বা বলা ভালো শুটিংয়ের নামে খোলাখুলি যৌনতার এই বিপণন দেখছিলো।
অমিতজির কথা শুনতে শুনতে খুব উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলো দেবশ্রী। সিনেমা-অ্যাক্টিং-শুটিং এসব তার কাছে স্বপ্ন। সে এই জগৎটা চেনে না। অমিতজির বিজনেস তার মানে সত্যি সত্যি চারদিকে ছড়ানো। ভীষণ লাকি সে, এরকম একটা লোকের সাথে হঠাৎই পরিচয় হয়ে গেলো। তারই গাড়িতে তার পাশে বসে সে বুকে ম্যাসাজ খাচ্ছে। তবে অ্যাক্টিং কি আর তার দ্বারা হবে কোনোদিন সামান্য পাড়ার স্টেজেও সে ওঠেনি কোনো কারণে। সে উত্তর দিলো, ‘আমি ওসব পারবো না অমিতজি। আমি এসব অ্যাক্টিং-ফ্যাক্টিং বুঝি না। কিন্তু শুটিং দেখতে আমার খুব ভালো লাগবে, আমি কোনোদিন রিয়েল শুটিং দেখিনি। জানেন, আমার খুব ইচ্ছা ষ্টুডিওর ভিতরে গিয়ে শুটিং দেখার অমিতজি তার হাত আবার স্টিয়ারিংয়ের উপর ফিরিয়ে নিয়ে এসে বললেন, ‘তো চলুন আজ দেখবেন, কীভাবে শুটিং হয় ভোজপুরি গানের। রিয়েল দেখবেন। কখনো দেখেছেন ভোজপুরি ভিডিও বা ভোজপুরি ড্যান্স দেবশ্রী সত্যি কথাই বললো, ‘না, মানে ভোজপুরি তো আমি জানি না। ভোজপুরি ভাষা কীভাবে বলে বা কেমন শুনতে তাই জানি না।’ অমিতজি হাত নেড়ে বললেন, ‘ও আপনি বুঝে যাবেন। হিন্দি বোঝেন তো ব্যাস তাহলেই হবে। ফিফটি পার্সেন্ট হিন্দি, আর তার সাথে ফিফটি পার্সেন্ট আপনার বাংলা ব্যাস মিশিয়ে দিলেই ভোজপুরি। খুব সুইট ভাষা। চলুন আপনার ভালো এক্সপেরিয়েন্স হবে আজ।’ দেবশ্রী সত্যি সত্যি খুব উৎসাহিত বোধ করছিলো এরকম একটা অভিজ্ঞতার জন্য। অমিতজির গাড়ি কিছুক্ষনের মধ্যেই বেদিক ভিলেজ পার করে বিশাল পাঁচিলঘেরা একটা জায়গায় ঢুকলো। জায়গাটা খুব সুন্দর করে সাজানো। আশেপাশে প্রচুর ফুলের গাছ আর পার্ক মতো দেখতে পেলো দেবশ্রী। অনেকটা জায়গা জুড়ে একটা রিসর্টের মতো লাগলো তার এই জায়গাটা। লোকজন বেশি কেউ নেই, দু-চারজন মালি গাছে জল দিচ্ছে, পরিষ্কার-টরিস্কার করছে। ছবির মতো সাজানো চারদিক। মাঝখানে একটা সুবিশাল সুইমিং পুল। বাঁধানো রাস্তা। এরকমই হয় তাহলে ষ্টুডিও, দেবশ্রী ভাবলো। ওই রিসর্টের একদিকে গাড়িটা পার্ক করে অমিতজি দেবশ্রীকে নিয়ে একটা সাজানো বিল্ডিংএ ঢুকলেন। খুব বেশি উঁচু নয়, দোতলা বিল্ডিং। ব্যাঙ্কোয়েট হলের মতো সুবিশাল ফ্লোর। ফ্লোরটা ফাঁকা। কেউ নেই একতলায়। অমিতজি যেদিকে এগিয়ে গেলেন সেদিকে উপরে ওঠার একটা সিঁড়ি। অমিতজির পিছু পিছু দেবশ্রীও সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে এলো। এটা ষ্টুডিওর দোতলা। নীচ থেকেই এখানে খুব জোরে কোনো গান চলার আওয়াজ পাচ্ছিলো দেবশ্রী। গানটা একটানা বাজছে না। থামছে, আবার হচ্ছে, আবার থামছে, আবার একই জায়গা রিপিট হচ্ছে। এইরকম। দোতলায় এসে সে শুটিংয়ের সেটটা দেখতে পেলো। নীচের মতোই একটা বিশাল বড়ো হলরুম। তারই একদিকে শুটিং চলছে। দশ-বারোজন ছেলেমেয়ে চড়া আলোর সামনে ঝলমলে পোশাক পরে নাচের ভঙ্গিমা করছে। তাদের পিছনে সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডের একটা উঁচু স্ক্রিন লাগানো আছে। কাছাকাছি খুব পাওয়ারফুল কিছু লাইট লোহার স্ট্যান্ডের উপর দাঁড় করানো রয়েছে। সেগুলো ওই আর্টিস্টগুলোর দিকে ফোকাস করা। শুটিং এর জায়গাটা এই কারণে খুব আলোকিত, হলরুমের অন্য দিকগুলো অপেক্ষাকৃত আধো অন্ধকার। এই ঘরে একটাও জানলা বলে কিছু নেই, দেবশ্রী লক্ষ্য করলো।
অমিতজি হলরুমে ঢুকে একদিকে একটা চেয়ারে দেবশ্রীকে বসতে বললেন। দেবশ্রী বসতে বসতে বললো, ‘এটাই শুটিং হচ্ছে এইরকম জায়গায় অমিতজি হালকা হেসে বললেন, ‘হ্যাঁ ওই যে সবুজ স্ক্রিনটা দেখছেন, ওটা কম্পিউটারে চেঞ্জ করে ইচ্ছামতন ব্যাকগ্রাউন্ড লাগিয়ে দেওয়া হবে। এটাই আউটডোর হয়ে যাবে। সমুদ্র-সৈকত কিংবা ফুলের বাগান, যা খুশি।’ দেবশ্রী বললো, ‘দারুন ব্যাপার তো। সব তার মানে এইভাবেই হয় অমিতজি উত্তর দিলেন, ‘না, না, এটা তো কস্ট কাটিংয়ের জন্য করা হয়। রিয়েল আউটডোর শুটিংও করা হয় প্রয়োজনে। আচ্ছা, আপনি এখানে শুটিং দেখুন, আমি আমার কাজটা সেরে আসি।’ তাকে বসতে বলে অমিতজি অন্যদিকে চলে গেলেন কার সাথে কথা বলতে। দেবশ্রী বসে বসে শুটিং দেখতে লাগলো। নাচের আর্টিস্টরা ছাড়াও ঘরে আরো জনা-সাতেক লোক উপস্থিত। তাদের কেউ কেউ দেবশ্রীকে বসে থাকতে দেখেও খুব একটা পাত্তা দিলো না। এরা নতুন নতুন মুখ দেখে নিশ্চয়ই অভ্যস্ত, দেবশ্রী ভাবলো। ওই লোকগুলোর মধ্যে কেউ ক্যামেরা ধরে রেখেছে, কেউ ক্যামেরার পাশে পাশে ঘুরছে। দুজন লাইটের পিছনে রয়েছে। একজন ডানদিকে অনেকটা দূরে মিউজিক সিস্টেমের পিছনে বসে আছে বোধহয় গান চালাচ্ছে, রিপিট করছে। কিন্তু দেবশ্রী দেখলো যে এখানে ক্যামেরাগুলো খুব হাই-ফাই নয়। বিয়ের বাড়িতে যেরকম লাইট-লাগানো ক্যামেরা নিয়ে ঘোরে ভিডিও শুটিং এর জন্য, এই ক্যামেরাগুলোও সেইরকম। দুটো ওরকম ক্যামেরা, আর একজনের হাতে একটা স্টিল ক্যামেরা। এতেই শুটিং করা হচ্ছে। যে লোকটা ক্যামেরার পাশে পাশে রয়েছে, তার দিকেই ওই আর্টিস্ট বা ড্যান্সারগুলো বেশিরভাগ তাকিয়ে আছে। সে ওদের বুঝিয়ে দিচ্ছে, আর ওরা সেইভাবে বডি মুভমেন্ট করছে নাচের সময়। এরা বোধহয় ঠিকমতো ট্রেন্ড নয়, কারণ দেবশ্রী দেখলো যে পনেরো-কুড়ি সেকেন্ডের বেশি একসাথে শুট করাই যাচ্ছে না। আর্টিস্টদের মধ্যে কেউ না কেউ কিছু না কিছু ভুল করে ফেলছে। আর সেই জায়গাটা আবার শুটিং করতে হচ্ছে। কিন্তু এগুলো তো তবু স্বাভাবিক। দেবশ্রীর সবচেয়ে অবাক লাগলো অন্য জিনিসে। যারা ড্যান্স করছে, তাদের মধ্যে কিছু ছেলে-মেয়ে সাধারণ জিন্স-লেগিংস পরে আছে। মেয়েগুলোর সাদা লেগিংস, আর লাল-টপ। আর ছেলেগুলোর গায়ে জিন্সের সাথে লাল জামা। এরা মনে হয় সাইড আর্টিস্ট, কারণ এরা পিছনে আছে আর একই ভঙ্গিতে ডানদিকে-বাঁদিকে হেলেদুলে স্টিরিওটাইপ ড্যান্স করছে। ক্যামেরা আসল ফোকাস করছে যে দুজনের উপর, তারাই বোধহয় হিরো-হিরোইন হবে। চব্বিশ-পঁচিশ বছর বয়স হবে দুজনেরই। ছেলেটা জিন্স আর কটকটে হলুদ একটা জামা পড়ে আছে, গলায় বড়ো একটা রুমাল পেঁচিয়ে রাখা আছে, লাল রঙের। আর মেয়েটা মোটামুটি দেখতে, কিন্তু তার গায়ে খুব ছোট পোশাক।
সেটা দেখেই সবচেয়ে অবাক হলো দেবশ্রী। মেয়েটা একটা স্কার্ট পড়ে আছে, যেটা হাঁটু অবধিও নামেনি তার কোমর থেকে। ফর্সা পা নীচ থেকে উরুর মাঝামাঝি অব্দি পুরো উন্মুক্ত। আর উপরের পোশাক বলতে বুকে খুব ছোট একটা কাঁচুলি মতো বাঁধা, যেটা কোনোক্রমে তার মাঝারি সাইজের দুটো স্তনকে ঢেকে রেখেছে। দেবশ্রী এক ঝলকেই বুঝতে পারলো যে মেয়েটা প্যাডেড ব্রা পড়েছে, বুক উঁচু দেখানোর জন্য। সেই ব্রা-এর উপর কাঁচুলিটা টাইট করে বেঁধেছে। ব্রা দেখা যাচ্ছে না। স্তনদুটো ফোলা ফোলা লাগছে। ভীষণ শরীর-দেখানো পোশাক পরেছে মেয়েটা। মুখে বেশ মেকআপ করা, খুব সুন্দর লাগছে দেখতে তাকে। যদিও তার মুখশ্রী ততো আকর্ষণীয় মনে হলো না দেবশ্রীর। তবে খুব ছোট ছোট পোশাকের কারণে সেক্সী লাগছে মেয়েটাকে। মেয়েটা খুব চটুল ভঙ্গিতে তার শরীর দোলাচ্ছে। নিজে থেকেই দোলাচ্ছে বা হয়তো তাকে দোলাতে বলা হয়েছে। এদের ড্যান্স চলার সাথে সাথে সাইন্ড বক্সে যে গানটা বাজছিলো, দেবশ্রী তার কিছুটা ধরতে পারলো একটা লাইন। সেটা হলো, তোহার মুসম্বি, দারু কে জাম্বি। জাম্বি, না জাম্মি কে জানে। দু-তিনবার শুনেও শব্দটা বা তার মানেটা ঠিক বুঝলো না সে। কিন্তু দেখলো, যতবার মুসম্বি শব্দটা আসছে, ওই মেয়েটা তার কাঁচুলি সমেত বুকটা ঝাঁকাচ্ছে। মুসম্বি বলতে তার বুকের স্তনদুটোকে বোঝাতে চাইছে তার হাতের তালু দিয়ে তার দুটো স্তনের দুপাশে ধরে স্তনের আকারটা ঝাঁকিয়ে দেখাচ্ছে। সামনের ছেলেটা ঠিক সেই সাথে তার মুখটা ওই মেয়েটার স্তনের সামনে নিয়ে গিয়ে মুখ থেকে জিভ বার করে স্তনদুটো যেন চাটার চেষ্টা করছে। পুরো জিনিষটা ক্যামেরার ঠিক সামনে হচ্ছে, আর ক্যামেরা যিনি ধরে আছেন তিনি বার বার করতে বলছেন। ঘরে উপস্থিত সবকটা পুরুষ গোগ্রাসে যেন গিলছে সীনটা, তারা সবকটা মিলে ওই মেয়েটার বুকের কাঁচুলির দিকেই লোলুপ চোখে তাকিয়ে আছে। আর মেয়েটাও বার বার ওইরকম করে তার স্তন ঝাঁকিয়ে দেখাচ্ছে। দুহাত দিয়ে স্তনদুটো ধরে দেখাচ্ছে ক্যামেরার দিকে। পুরো দৃশ্যটা ভীষণই রগরগে লাগলো দেবশ্রীর। বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় এই লাইনটা শুট হবার পর, ক্যামেরায় যিনি ছিলেন, তিনি হাত তুলে সাউন্ড সিস্টেমের ছেলেটাকে বললেন, ‘ও পেহলাবালা লাইন ফিরসে।’ নায়িকা মেয়েটাকেও তিনি বললেন, ‘চলো স্টার্ট।’ গান বাজতে শুরু করলো, ‘উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ মেয়েটাও নাচ শুরু করলো। যদিও সেটাকে দেখে ঠিক নাচ বলে মনেও হলো না দেবশ্রীর। ‘উপর সে বত্তিশ’ বলার সাথে সাথে সে সামনে ঝুঁকে তার স্তনের খাঁজ দেখিয়ে আর কাঁচুলির দুই সাইড থেকে হাত দিয়ে ধরে স্তনদুটো চিপে ক্যামেরার দিকে দেখালো। তারপর সেকেন্ড লাইনে ‘নীচে কে ছত্তিশ’ বলার সাথে সাথে পিছন দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। আর পাছা দুটো উঁচু করে স্কার্টের উপর দিয়েই দুহাতে পাছার উপর খাবলে ধরলো।
এরপর গানে এলো, ‘বিচওয়ে কে চব্বিশ বুঝাতা কি না, বুঝাতা কি না মেয়েটা তখন আবার সামনে ফিরে তার মসৃন খোলা পেটের উপর হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখাতে লাগলো। আবার এলো ‘উপর সে বত্তিশ’। মেয়েটা আবার সামনে ঝুঁকে তার বুকের খাঁজ দেখিয়ে দেখিয়ে দুহাত দিয়ে স্তনদুটো চেপে ধরে ক্যামেরার দিকে তাক করে ধরলো। যিনি সামনের ক্যামেরায় ছিলেন, তিনি হাত দেখিয়ে বললেন কাট। তারপর তিনি পাশের জনকে কিছু বললেন, দেবশ্রী দূর থেকে শুনতে পেলো না ততো, ওদিকে গানও চলছে। পাশের জন, সে-ই ড্যান্স মাস্টার হবে হয়তো, মেয়েটাকে কিছু বোঝালো নিজের বুকের কাছে হাত দিয়ে। মেয়েটা মাথা নেড়ে বোঝালো যে সে বুঝেছে। আবার গান শুরু হলো ‘উপর সে বত্তিশ, নীচে কে ছত্তিশ’। মেয়েটা এইবার করলো কী কাঁচুলির দুপাশে হাতের দুটো বুড়ো আঙ্গুল ঢুকিয়ে অন্য আঙুলগুলো দিয়ে স্তনের নীচে চাপ দিলো ছত্তিশ বলার সাথে সাথে। স্তনের মাংস যেন বেরিয়ে আসবে বাইরে। এইভাবে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে সে কাঁচুলির উপর থেকে প্রায় অর্ধেক স্তন বার করে দিলো দুদিকে সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন, বোঝা গেলো ওই নগ্ন দৃশ্য সবার পছন্দ হয়েছে। যে ছেলেটা তার সাথে নাচছে, তার দিকে কেউ নজরই দিচ্ছে না সে নিজের মতো কিছু স্টেপ বানিয়ে করে যাচ্ছে। সবার ফোকাস শুধু ওই মেয়েটার উপর। গানে যখনই ‘নীচে কে ছত্তিশ’ আসছে, মেয়েটা আবার পিছনদিকে ঘুরে স্কার্টের উপর দিয়ে পাছায় দুটো হাত বুলিয়ে পাছা খামচে ধরছে স্কার্টের উপর দিয়ে। তারপর আবার সামনে ফিরে পেট আর নাভি দেখিয়ে হাত বোলানো চলছে। যেন তার শরীরের সম্পদ ধরে ধরে দেখাচ্ছে, কিরকম ফুলকো মাল সে। গোটা সীনটা এতক্ষণে সবার পছন্দ হয়েছে বলে মনে হলো। কিন্তু গানটা ওখানেই রিপিট হতে থাকলো, আর লোকগুলো ওদেরকে ওইভাবেই বার বার নাচাতে লাগলেন শট ওকে হওয়া সত্ত্বেও। মেয়েটাও একবার সামনে ঝুঁকে বুকের স্তন প্রায় বার করে দেখাচ্ছে দুহাত দিয়ে, পরক্ষণেই পিছনদিকে ফিরে পাছায় খাবলে ধরে দেখাচ্ছে, আবার সামনে ফিরে পেট আর নাভি দেখাচ্ছে। তারপর আবার স্তন বার করে দেখাচ্ছে। আবার পাছা। আবার স্তন। এইভাবে লাগাতার করেই যাচ্ছে, আর লোকগুলো ক্যামেরাবন্দি করতে করতে সবটা গিলছে। একবার-দুবার নয়, প্রায় বিশ-পঁচিশবার মেয়েটাকে ওই করে যেতে হলো। চড়া আলোর সামনে অতো ছোট পোশাকে অতোগুলো লোকের সামনে দাঁড়িয়ে সে বার বার তার দেহ ওইভাবে প্রদর্শন করে যেতে লাগলো। দেখে তাজ্জব দেবশ্রী। এটা শুটিং হচ্ছে নাকি ওই মেয়েটাকে অর্ধনগ্ন করে এই লোকগুলো সুখ নিচ্ছে তার শরীরের প্রায় পঁচিশ তিরিশবার মেয়েটা ওইভাবে দেহ প্রদর্শন করার পরে ক্যামেরার লোকটা মেয়েটাকে বললো, কাট। গান থামলো। মেয়েটা ও অন্যান্য সহশিল্পীরা দাঁড়িয়ে পড়লো। এইসময় মেয়েটার সাথে একবার চোখাচোখি হলো দেবশ্রীর। মেয়েটা খুব অবাক হলো মনে হলো তাকে দেখে, বার বার দেখতে লাগলো। কিন্তু কিছু বললো না। ওদিকে ক্যামেরাম্যান আর দু-তিনজন মিলে ক্যামেরায় ঝুঁকে পরে সদ্য শুট করা অংশটা দেখছিলো, সব ঠিক এলো কিনা। একবার ক্যামেরাম্যান ডাকলেন মেয়েটাকে। ডেকে তাকে সামনের দিকে ঝুকে দাঁড়াতে বললেন। একজন ছেলে, স্পটবয় মতোন, দাঁড়িয়ে ছিল সাইডে। তাকে বললেন আলোটা নামিয়ে ধরতে। সে একটা আলোর স্ট্যান্ড সমেত উঠিয়ে মেয়েটার বুকের কাছাকাছি ঝুঁকিয়ে ধরে রাখলো। আরেকজন পাশ থেকে একটা রিফ্লেক্টর ধরলো মেয়েটার সামনে। এতে মেয়েটার বুকের কাছটা খুব উজ্জ্বল হয়ে উঠলো তীব্র আলোয়। সেই সময়, আগের লোকটা ক্যামেরাটা এনে মেয়েটার পুরো বুকের সাথে প্রায় ঠেকিয়ে ধরলেন, কয়েক আঙুল তফাতে।
মেয়েটাকে বললেন বুকটা ঝাঁকাতে। মেয়েটা বুকের স্তনদুটো জোরে জোরে উপর-নীচে ঝাঁকাতে লাগলো ক্যামেরার ঠিক সামনে। খুব কাছ থেকে সেটা তোলা হলো। তারপর দূরে সরে এসে তিনি সাউন্ড সিস্টেমের ছেলেটাকে নির্দেশ দিলেন, ‘আব ও-বালা লাগাও গাড়ি কে রফতার।’ গান শুরু হলো, কোনো মেয়ের গলায় ‘গাড়ি কে রফতার ধীরে করো ছক্কা মারলাপে আব দুখাতা সিনা মেয়েটা এবার ক্যামেরার দিকে সাইড হয়ে তার পাছাটা বিচ্ছিরিভাবে উঁচু করে দাঁড়ালো। আর গানের নায়ক ছেলেটা তার পিছনে এসে তার কোমরটা দুহাতে ধরে স্কার্টের উপর দিয়ে নিজের কোমরটা মেয়েটার পাছার সাথে ঠেকিয়ে দাঁড়ালো। গান বাজছে, ওরা ওই পোজে দাঁড়িয়ে আছে। একবার তাল বুঝে ওরা শুরু করলো অ্যাক্টিং। ছেলেটা কোমর সামনে পিছনে করে দেখানোর চেষ্টা করছে যে সে তার লিঙ্গই যেন ঢুকিয়ে দিচ্ছে মেয়েটার পিছনে। আর মেয়েটা একটু ঢং করছে পাছা দুটো সামনে পিছনে করে, ছেলেটাকে লিঙ্গ ঢোকাতে সে যেন সাহায্যই করছে। এসব দেখে দেবশ্রীর গা গরম হয়ে উঠছিলো। এইরকম হয় ভোজপুরি গান জীবনে প্রথমবার সে কোনো ভোজপুরি গান শুনলো, আর একইসঙ্গে তার শুটিংও দেখলো। নিজের চোখকে তার বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে এতো উগ্র নাচ শুট করছে এরা। সে হিন্দি সিনেমার আইটেম ড্যান্সের সঙ্গে পরিচিত। সেখানেও খোলামেলা পোশাক ব্যবহার হয়। এমনকি বিকিনিও থাকে অধিকাংশ আইটেম ড্যান্সে। কিন্তু সবকিছুর উপর একটা আর্টের ছাপ থাকে। মানে চটুল হলেও সেগুলোতে একটা মান-মর্যাদার ব্যাপার থাকে। কিন্তু এখানে যেটা হচ্ছে, মেয়েটা স্তন প্রায় বার করে দেখাচ্ছে ক্যামেরার সামনে, পাছার উপর ক্যামেরা ফোকাস করে তার পাছা খাবলে ধরাটা তোলা হচ্ছে, এখন তো পুরো পিছন থেকে লিঙ্গ ঢোকানোটা দেখাচ্ছে। এর মধ্যে না আছে আর্ট, না আছে মর্যাদা। আর মেয়েটাও পুরো তৈরী মাল। নির্লজ্জের মতো সে তার শরীর দেখাচ্ছে। তার নাচের কোনো সেন্স আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। নাচের কোনো সেন্স দরকার আছে কিনা এখানে তা-ই সন্দেহ। দেবশ্রী ভাবছিলো অ্যাক্টিং নাকি কত কঠিন ব্যাপার হবে। কিন্তু এ তো অন্য জিনিস। সে বুঝতে পারলো যে সে যা ভাবছিলো, এটা ততো কঠিন কিছুই না। চেষ্টা করলে সে-ও করতে পারবে এগুলো। তবে এভাবে এতো লোকের সামনে এতটা খোলামেলা হতে তার সংকোচ লাগবে। এই মেয়েটা অনেক বেশি সাবলীল। হয়তো এই লাইনে কাজ করার সুবাদেই এতটা সাবলীল হতে পেরেছে মেয়েটা। দেবশ্রীর খুব ভালো লাগছিলো ভাবতে যে সেও একদিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবে, যদি অমিতজি সুযোগ দেন। পুরুষ মানুষদেরকে বশীকরণের কিছু মন্ত্র তারও তো জানা আছে। সুযোগ পেলে সে কিছুটা চেষ্টা করতেই পারে এই মেয়েটির মতো হতে। দেবশ্রী নিজে তখনো জানতো না যে খুব তাড়াতাড়িই একদিন সে এই মেয়েটিকে অনেক পিছনে ফেলে দেবে শরীরী আবেদনের প্রতিযোগিতায়। দেবশ্রী বসে বসে শুটিং দেখছিলো, বা বলা ভালো শুটিংয়ের নামে খোলাখুলি যৌনতার এই বিপণন দেখছিলো।