Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত
ভরাক্রান্ত মন নিয়ে ফ্লাইটে  বসে পড়লাম ! সাড়ে ছটা  নাগাদ হায়দরাবাদ পৌঁছে গেলাম ! সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা হোস্টেল ! কিছুই ভালো লাগছিলো না ! মঞ্জুকে ছাড়া কি করে এতদিন কাটাবো সেটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না ! মনে পরে গেলো মঞ্জুকে ফোন করার কথা আমার ! তাড়াতাড়ি পিসিওতে  গিয়ে পিসির বাড়ির নাম্বার মেলালাম ! ফোন পিসিই তুললো ! আমি পিসি পিসেমশাইয়ের খবরাখবর নিলাম ! বললাম "পাগলিটা কি করছে ?" পিসি বললেন বিকালে ফিরে এসে খুব কাঁদছিলো ! চৈতালির সাথে ওর পিসির বাড়ি গেছিলো ! সেখান থেকে ফিরে এসে খুব কান্নাকাটি করছিলো ! চৈতালি এসে ওকে ওদের বাড়িতে নিয়ে গেছে !
আমি বললাম দাঁড়াও আমি চৈতালির বাড়িতে ফোন করে পাগলির পাগলামি দূর করছি !
হ্যা  তাই কর ! কি জানি মেয়েটা কারুর প্রেমে পড়লো কিনা ! এইরকম পাগলামি করার কোনো মানে আছে ? তুই ওকে একটু বোঝা ! ও তোর কথাই  একমাত্র শোনে এবং মানে ! ওকে একটু বোঝা বাবা  !
- ঠিক আছে তুমি চিন্তা কোরোনা  ! আমি এখুনি ফোন করছি !
ফোন রেখে দিয়ে এবার চৈতালিদের  বাড়িতে ফোন করলাম ! লাহিড়ীদা ফোন তুললেন ! তুলেই আনন্দে চেঁচিয়ে উঠলেন ! " আরে সুনন্দ বাবু ! আজ হটাৎ আমার কথা মনে পড়লো ! "
- না মানে বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম ফোন করবো ! কিন্তু পড়াশোনার এতো চাপ তাই সময় করে করা হয়ে ওঠেনি ! বেমালুম মিথ্যা কথা বলে দিলাম ! আর লাহিড়ীদা সেটাই বিশ্বাস করে নিয়ে বললেন " সেটা ঠিক ! তাই তোকে আমরা আর ডিস্টার্ব করিনি ! ভেবেছিলাম তোকে ফোন করবো ! একটা কথা জানানোর ছিল ! কিন্তু। ..........
- কিসের কিন্তু ?
- না থাক ! তুই শুনে কষ্ট  পাবি !
- এইতো ! আমাকে সাসপেন্সে  ফেলে দিলে ! বলেই দাও দাদা কি হয়েছে ! না জানতে পারলে টেনশনে আমার মাথা খারাপ হয়ে যাবে ! প্লিজ দাদা বলে দাও !
- কমলবাবুর লিভারে খুব প্রবলেম  দেখা দিয়েছে ! এখানকার ডাক্তার সন্দেহ করছে যে লিভার ক্যান্সার ! এই পর্যন্ত বলে লাহিড়ীদা থেমে গেলেন ! বুঝে গেলাম আমার জন্য আরো অনেক খারাপ খবর রয়েছে !
- লাহিড়ীদা ! আমাকে সব কথা খুলে বোলো প্লিজ। ....
- তুই তোদের পিসিওর নাম্বারটা আমাকে দে আমি তোকে ফোন করছি ! তোর প্রচুর বিল উঠছে !
আমি পিসিওর নাম্বার না দিয়ে আমাদের হোস্টেলের ফোন নাম্বার দিয়ে বললাম ঠিক ১০ মিনিটে আমাকে ফোন করো ! তাড়াতাড়ি বিল মিটিয়ে হোস্টেলের অফিসে গিয়ে বসে পড়লাম ! গার্ড বসে ছিলো ! আমার সাথে বেশ ভালোই পরিচিতি হয়ে গেছিলো ! কারণ মাঝে মধ্যেই ওকে দিয়ে মাল আনতাম ! ! সেই জন্য ভালোই বকশিস পেতো  ! তাই সে আমাদের প্রতি সহৃদয় ছিল ! আমি ওকে বললাম যে আমার ফোন আসবে ! ও আমাকে জিজ্ঞাসা করলো কিছু আনতে  হবে ? আমি ওকে টাকা দিয়ে দিলাম ! ও জানে কি আনতে  হবে !  সাথে এটাও বলে দিলাম যে আমার রুমে গিয়ে সমীর আর রাজুকে যেন বলে দেয়  জল আর চাটের  ব্যবস্থা যেন করে রাখে ! (কারণ আমার মুড খুব খারাপ হয়ে রয়েছে ! একে  তো মঞ্জু কে ছেড়ে আসার যন্ত্রনা ! তার উপর বাড়িতে ফিরে মঞ্জুর কান্না ! ফোনেতে কমলদার খবর শোনা ! নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো ! তাই ওকে মাল আনতে  দিলাম ! যদি কিছুক্ষন হলেও এই সমস্ত যন্ত্রনা ভোলা যায় ! )  ও ঘাড় নাড়িয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো !  
আমি ফোনের অপেখ্যায় বসে রইলাম ! রাজু আর সমীর দুজনেই অফিসে এসে গেলো ! ওদের সব বুঝিয়ে বললাম ! ওদেরও  মন খারাপ হয়ে গেলো ! ফোনের ঘন্টি বাজতেই ফোন তুলে নিলাম ! লাহিড়ীদার গলা !
- হ্যা বলো লাহিড়ীদা !
- তোকে আমি জানাতে চাইনি ! তবুও জানাতে বাধ্য হচ্ছি ! ঘোষ বাবুর মেয়ে মিতালি। ....
- কি হয়েছে মিতালীর ?
- ব্রেন টিউমার !
থমকে গেলাম ! কত স্মৃতি মনে পরে গেলো ! ঐরকম একটা উচ্ছল মেয়ের ব্রেন টিউমার ? নিজেই থতমত খেয়ে গেলাম ! আমার চোখের সামনে মঞ্জুর কান্নাভেজা মুখ ! যন্ত্রনায় ছটফটানো কমলদার চোখ আর মিতালীর যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যাওয়া চেহেরা ভেসে উঠতে লাগলো ! নিজের বুকে একটা বিরাট যন্ত্রনা অনুভব করলাম ! অনেক কষ্টে লাহিড়ীদাকে যোগাসসা করলাম
'কোন স্টেজ?"
- জানিনা ! আমরা সবাই ঠিক করেছি যে সামনের সপ্তাহে দুজনকেই নিয়ে ভেলোর যাবো ! কমলবাবু আপত্তি করছেন  ! ওনার কথায়  ওনার আর বেঁচে থাকায় কারুর কিছুই এসে যাবে না ! ......
মনটা এতো ভরাক্রান্ত হয়ে গেলো যে গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরুতে চাইছে না ! তবুও জোর করে বললাম " তুমি একটু ফোনটা চৈতালি বা মঞ্জুকে দেবে ?"
- ওরা  কেউ নেই ! সবাই মিতালীর বইতে আছে !
-ঠিক আছে তুমি ভেলোর আসার তারিখ বলো  ! আমি নিজে ভেলোরে থাকবো !
লাহিড়ীদা বললেন টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না ! পেলেই তোকে জানাবো !
- তুমি সুভাষ বাবুকে ফোন করো ! উনি নিশ্চয় কোনো না কোনো ভাবে টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারবেন !
- আমার মাথায় একদম ছিলোনা ! তুই রাখ ! আমি সুভাষকে ফোন করি !
আমার মুখের চোখের চেহেরা দেখে রাজু আর সমীর দুজনেই চিন্তিত ! ফোন রাখতেই ওরা  আমাকে ধরলো ! আমি ওদের সব কথা বুঝিয়ে বললাম ! সব শুনে ওরা  যথারীতি ব্যথিত ! কমলদার মতো মানুষের এইরকম হতে পারে সেটা ওদের ধারণাতেই আনতে  পারছে না ! তার উপর মিতালি ! যদিও মিতালিকে  ওরা  দেখেনি ! তবুও সহানুভূতি। ....
আমি থম মেরে বসে ছিলাম ! তার মধ্যেই আমাদের গার্ড সুখলাল ফিরে এলো !      
ওর হাতে ১০০ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিয়ে বললাম যে এসটিডি লক  খুলে দিতে ! লক  খুলতে গিয়ে আমাকে লকের  কোড বলে দিলো ! যদি আমার প্রয়োজন হয় তাহলে আমি সেই কোড ইউজ  করতে পারি ! ১০০ টাকার ক্ষমতা তখন অনেক ! আমি পিসির বাড়িতে ফোন করে সব বললাম ! পিসি শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলেন ! আমার কাছে মুখার্জিদার নাম্বার ছিল  ! ওনাকেও ফোন করলাম ! উনি ফোন তুলে প্রায় কাঁদো  কাঁদো  অবস্থায় আমাকে বললেন " কি হবে সুনন্দ ?"
- কিছুই হবে না ! সব ঠিক হয়ে যাবে ! ভগবানের উপর ভরসা রাখো !
ওনার ফোন ছেড়ে দিয়ে আমি আমার বাড়িতে ফোন করলাম ! বাবা ফোন তুললেন ! বাবাকে সব বলতে বলতে আমি কেঁদে ফেললাম ! বাবা বললেন চিন্তা করিস না ! আমি কালই ওখানকার পুলিশ স্টেশনে ফোন করে ওনাদের টিকিটের ব্যবস্থা করতে বলে দিচ্ছি ! আমি বাবাকে লাহিড়ীদাকে ফোন করতে বললাম ! কারণ আমি ঠিক জানিনা কতজন যাবে। . বাবা আমাকে আশ্বস্ত  করে বললেন তুই চিন্তা করিস না ! আমি সমস্ত ব্যবস্থা করে দেবো  ! আমাদের পুলিশের কোটা আছে রেলে  !
বাবার কথা শুনে মনটা একটু শান্ত হলো ! আমি লাহিড়ীদাকে ফোন করে সব বললাম ! লাহিড়ীদা বললেন কালই  তোর বাবার সাথে দেখা করবো !
আমি ফোন ছেড়ে দিলাম ! মন পুরো ভরাক্রান্ত ! নিজেদের রুমে ফিরে এলাম ! রাজু আর সমীর দরজা বন্ধ করে আমাদের মদের  জোগাড়ে লেগে গেলো ! ওরা  কমলদার খবর শুনে বেশ চিন্তিত ! দু পেগ পেতে যাবার পর সমীর বললো "তোরা বোস  ! আমি আসছি ! ....
রাজু চুপচাপ পেগে  চুমুক দিতে থাকলো ! আমার কথা অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছিলো ! উদাস দৃষ্টিতে দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে গ্লাসে চুমুক দিতে থাকলাম !
সমীর ফিরে এসে বললো " চিন্তার কিছুই নেই ! বাবা কালকেই আমাকে এক লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেবেন ! কমলদার বা মিতালীর চিকিৎসার খরচের চিন্তা আর নেই !
কি করে ওদের বোঝাবো যে কমলদা বা মিতালীর বাবা টাকার অভাব নেই ! কিন্তু কিছু না বলে আমি নীরবে সমীরকে একটা থাঙ্কস জানালাম !
পরেরদিন বিকাল বেলায় পিসির বাড়িতে ফোন করলাম ! মঞ্জু ফোন তুললো ! খুব গম্ভীর গলা ! আমি মঞ্জুকে সমস্ত জানালাম ! ওকে বললাম " আমিই আছি জানু ! তুমি ভেবোনা !  মঞ্জু কেঁদে ফেললো ! আমিই মঞ্জুকে কথা দিলাম যে ওকে প্রতি সপ্তাহে ফোন করবো ! চেষ্টা করবো যেন লাহিড়ীদা ওকে আর চৈতালিকে সঙ্গে নিয়ে ভেলোরে আসেন !
মঞ্জু একটু শান্ত হলো ! কানাইকে ফোন করে সব বললাম ! কানাই আমাকে কথা দিলো যে কমলদার এই অবস্থায় ও কোনো ভাবেই কমলদাকে  একা  থাকতে দেবে না ! আমি কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম !
তিনদিন পরে লাহিড়ীদার ফোন পেলাম জানলাম যে সবার টিকিটের ব্যবস্থা সিআইডির চিঠিতেই হয়ে গেছে ! ওনারা আগামী পরশু ভেলোরের উদেশ্যে রওনা হচ্ছেন ! লাহিড়ীদা, ঘোষদা ছাড়াও কমলদা আর মিতালীর সাথে মঞ্জু, চৈতালি আর আমার বন্ধু কানাইও আসছে !
আমি সমীর আর রাজুকে বলতেই ওরা  বললো "আমরাও যাবো ! "
হায়দরাবাদ থেকে ভেল্লোরের দূরত্ব মাত্র ৬২০ কিলোমিটার ! ফ্লাইটের টিকিট তখন ৬৫০ টাকা প্রতিজন ! আমরা আগের দিনের টিকিট কেটে নিলাম !
সকাল ১০ টা  নাগাদ ভেল্লোর পৌঁছে গিয়ে হোটেল এবং হসপিটালে গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করে নিলাম !
সন্ধ্যে বেলায় ওদের রিসিভ করতে ভেল্লোর স্টেশনে পৌঁছে গেলাম ! কমলদাকে  অনেক রোগা আর ক্লিস্ট  লাগছে ! মিতালীর দিকে তাকানোর উপায় নেই ! একটা মাংস বিহীন হাড়কাঠের শরীর !
এ কোন মিতালীকে দেখছি আমি !? যে মিতালীকে দেখলে শরীরের রক্ত ছলকে ছলকে উঠতো সেই মিতালি কোথায় ?
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ঝর্ণা The Untold story ! - by dada_of_india - 07-12-2020, 08:43 PM



Users browsing this thread: 50 Guest(s)