05-12-2020, 04:23 PM
(This post was last modified: 08-12-2020, 11:52 AM by snigdhashis. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
নষ্ট মেয়ের ভ্রষ্ট কাহন
Written by lekhok_dada
বাস স্ট্যান্ডের সামনে এসে রুমাল দিয়ে মুখটা একটু মুছে নিলো দেবশ্রী। হালকা হালকা গরম পড়তে শুরু করেছে দোল টা পার হবার পরে। অফিস থেকে বাস স্ট্যান্ড অবদি এইটুকু রাস্তা হেঁটে আসতে গিয়েই ঘাম এসে গেছে। রুমাল দিয়ে দুটো গাল আর নাকের নিচের বিন্দু বিন্দু ঘামটুকু মুছে নিয়ে ঝুঁকে দেখলো বাস আসছে কিনা। তারপর আশেপাশে একটু নজর করলো। এখন বিকেল পাঁচটা। বাস স্ট্যান্ডে খুব বেশি ভিড় নেই। অফিস ফেরত ভিড়টা এখনো শুরু হয়নি। দু-চারজন ছেলে বুড়ো এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক পিছনেই একটা পান-সিগারেটের দোকান, ওখানেও কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়ে হবার কারণে একটা সহজাত অনুভূতি তার মধ্যে কাজ করে। ছেলেগুলো সবাই যে তার দিকে বার বার দেখছে, সেটা দেবশ্রী তাদের দিকে সরাসরি না তাকিয়েও বুঝতে পারলো। আর তার দিকে না তাকিয়েও পারা যায় না।
ছাব্বিশ বছরের পূর্ণ যুবতী শরীর। হাইট আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই, মাঝারি। দেখতেও যে সে সিনেমা আর্টিস্টদের মতো অসাধারণ রূপসী, তা নয়। কিন্তু যথেষ্ট সুন্দরী বলা চলে। মুখে একটা খুব সুন্দর আলগা শ্রী আছে। দুটো টোপা গাল। লম্বা চুল যেটা এখন বিনুনি করে রাখা আছে পিঠের ঠিক মাঝখানে। নিজেকে সবসময় পরিপাটি করে রাখতেই দেবশ্রী পছন্দ করে। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো তার ত্বক। প্রচন্ড উজ্জ্বল, ফর্সা, মোলায়েম মাখনের মতো তুলতুলে ত্বক। ছোটবেলা থেকেই তার শরীর বেশ আঁটোসাঁটো। আর মেয়েলি জিনিসগুলোও ভগবান তাকে দিতে কোনো কার্পণ্য করেননি। বেশ টাইট ৩৬ সাইজের বুক, চর্বিবিহীন কোমর, গোল ভরাট-ভরাট পাছা, মসৃন পিঠ, নাদুস-নুদুস উরু। কলেজের বন্ধুরা সবসময় বলতো তোর খুব সুন্দর বিয়ে হবে, দেখিস। তা বিয়ে ভালোই হয়েছিল। স্বামীকে নিয়ে সে খুবই গর্বিত। কিন্তু যা ভেবেছিলো, তা যেন ঠিক হলো না। অবশ্য একটা জিনিস হয়েছে, বিয়ের পর সে গায়ে-গতরে যেন আরো সেক্সী হয়ে উঠেছে। আয়নায় নিজেকে দেখলেই সেটা টের পায় সে। দু’বছরের বিবাহিত জীবনের পরে তার উপোসী যৌবন যেন আরো ঢলোঢলো হয়ে ঝরে পড়েছে শরীরে। দোকানে বাজারে রাস্তায় যেখানেই দেবশ্রী যায়, পুরুষগুলো তার দিকে চেয়ে চোখ দিয়েই যেন তাকে গিলে খেতে চায়। এই ব্যাপারটা সে খুব উপভোগও করে। যদিও তার কোনো এক্সট্রা-ম্যারিট্যাল সম্পর্ক নেই। যথেষ্ট উচ্চশিক্ষিত পরিবারের মেয়ে বলেই জীবনে কখনো খুব বোল্ড কিছু সে করেনি। তবে ছেলেদেরকে অল্প-স্বল্প টীজ করতে তার বেশ ভালোই লাগে।
ঝুঁকে পরে বাস দেখার সময় আলগোছে বিনুনিটাকে দেবশ্রী পিঠের দিক থেকে সামনে নিয়ে এলো। এতে তার স্বল্প-উন্মোচিত পিঠটা আরো ভালো করে দেখা গেলো। সে একটা সাদা রঙের টপ পড়েছে, যার হাতা দুটো প্রায় স্লিভলেস। কাঁধ থেকে মাত্র ৩-৪ ইঞ্চি এসেই শেষ হয়েছে টপটার হাতা। পিঠের দিকে টপটা ডীপ করে কাটা, যাতে তার পিঠের ৪ ভাগের ১ ভাগ খোলা দেখা যাচ্ছে। আর টাইট টপের ভেতর থেকে তার উদ্ভিন্ন বিশাল বুক ঠেলা খেয়ে বেরিয়ে আছে। নিচে সে পড়েছে একটা হালকা হলুদ রঙের টাইট লেগিংস। টপটা এসে শেষ হয়েছে লেগিংসের ইলাস্টিক এর একটু নীচে। কোমর থেকে ৫-৬ ইঞ্চি নীচে। ফলে সামনের দিকে তার উরুর আকার আর পিছনে তার ধামসানো পাছার আভাস বোঝা যাচ্ছে। যে কারণে মেয়েরা লেগিংসের উপর ছোট জামা পরে না, ঠিক সেই কারণেই দেবশ্রী ছোট এই টপটা পড়েছে, যাতে তার শরীরের সৌন্দর্য আরো ভালো করে ফুটে ওঠে। ফর্সা ঘামে ভেজা পিঠটা পড়ন্ত রোদ্দুরের আলোয় চকচক করছে। বিনুনিটা সরিয়ে নিতেই খোলা পিঠটা সবার নজরে পড়লো। ছেলেগুলো যে তার দিকেই তাকিয়ে দেখছে, এটা দেবশ্রী ভালোই বুঝতে পারলো। এমনি কোনো ছেলে যখন তার দিকে লোভী দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে, সে একটা দারুন উত্তেজনা অনুভব করে, যা তাকে প্রচন্ড সুখ দেয়। ছেলেরা তাকিয়ে দেখে কারণ সে সুন্দরী। নিজের সৌন্দর্যের প্রতিভাস সে পায় পুরুষ মানুষদের লালাসিত চেহারায়। তাদের ক্ষুধার্ত দৃষ্টি দেবশ্রীর খারাপ তো লাগেই না, বরং নিজের সৌন্দর্যের জন্য তার বেশ গর্বই বোধ হয়।
২-৩ মিনিটের মধ্যেই একটা মিনিবাস এলো। এটা তাদের বাড়ির দিকেই যাবে। বাসটা পুরো খালি না থাকলেও খুব ভিড়ও ছিল না। দাঁড়ানোর জায়গা আছে। পার্সটা একহাতে সামলে দেবশ্রী উঠে পড়লো বাসে। অফিস যেতে আসতে সঙ্গে কোনো হ্যান্ডব্যাগ নেয় না সে, ভিড়ভাট্টার মধ্যে খুবই অসুবিধা হয় ব্যাগ নিয়ে। একটা ছোট পার্স সঙ্গে রাখে, মোবাইল, টাকা ও টুকিটাকি কিছু জিনিস রাখে তাতে। বাসে উঠে দেবশ্রী দেখলো বসার কোনো সীট খালি নেই, দু-চারজন দাঁড়িয়ে আছে। সে পিছনের দিকে লেডিস সীটের পাশে গিয়ে জানলার দিকে মুখে করে দাঁড়ালো। একটা হাতে তার পার্স আর রুমাল একসঙ্গে চেপে ধরা। অন্য হাতটা দিয়ে জানলার দিকে একটু ঝুঁকে রড ধরে দাঁড়ালো সে। তারপর রুমাল ধরা হাতটাও বাড়িয়ে দিয়ে রডটা টাচ করলো, যদিও ওই হাতে জোর নেই চেপে ধরার কারণ ওই হাতে অলরেডি পার্স আর রুমাল ধরে আছে সে। এইভাবে দাঁড়ানোর ফলে তার বুকদুটো সাইড থেকে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। গোল মাটোল স্তনের সাইজ যেন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আর সামনে একটু ঝুঁকে দাঁড়াবার ফলে পাছাটা একটু উঁচু হয়ে রইলো পিছনে। ফর্সা পিঠের ওপর বিনুনি লুটিয়ে আছে।
দেবশ্রী যে সীটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে এক মধ্যবয়সী মহিলা আর বাইশ-তেইশ বছর বয়সী একটি মেয়ে বসে আছে। মেয়েটি দেখতে ততটা সুন্দর নয়, চাপা গায়ের রং। দেবশ্রী আন্দাজ করলো যে তারা হয়তো মা-মেয়ে হবে, মুখের গড়ন অনেকটা একইরকম। দেবশ্রীর কাছাকাছি দুচারজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু কেউই ঠিক গায়ের কাছে নেই। সামনে বসে থাকা মেয়ে ও তার মায়ের সাথে একবার চোখাচোখি হলো দেবশ্রীর। তারা যেন তাকে ঠিক পছন্দ করলো না, এমন মুখের ভাব। এটা দেবশ্রী বহুবার দেখেছে। তার সৌন্দর্যের কারণেই হোক বা যে কারণেই হোক, রাস্তাঘাটে ছেলেরা যেমন তাকে চোখ দিয়ে চাটে, মেয়েরা তেমনি তাকে খুব একটা পছন্দ করে না। সেটা হয়তো মেয়েলি ঈর্ষাই হবে। ঠিক বোঝে না দেবশ্রী। সে পাত্তাও দেয় না। এই সমাজে ছেলেদের মন পেলে আর কিছু লাগে নাকি পুরো সমাজটাই পুরুষশাসিত। তাই পুরুষের পছন্দের পাত্রী হতে পারলেই কেল্লা ফতে। ছেলেদের মন পেলেই সব বস্তু পাওয়া যায়। আর ছেলেদের মন থাকে তাদের দুটো পায়ের মাঝখানে ঝুলে থাকা দন্ডে। ওটাকে একটু জাগাতে পারলেই যেকোনো ছেলের মন একদম মুঠোর মধ্যে। ভগবানের দৌলতে তার শরীরে এমন অনেক সম্পত্তিই আছে যা একটু দূর থেকে দেখলেও ছেলেদের লালা টসকায় এটা দেবশ্রী ভালোই জানে। মেয়েদের ঈর্ষা বা হিংসাকে তাই সে পাত্তা দেয় না। ওরা ওকে দেখে জ্বললে জ্বলুক।
দেবশ্রী বাঁদিকে তাকিয়ে দেখলো, ৩০-৩২ এর একটি যুবক তার থেকে একটা সীট পরেই দাঁড়িয়ে আছে। দেবশ্রী যখন সেদিকে তাকালো, যুবকটি তার শরীরের দিকেই তাকিয়ে ছিল। সে তাকাতেই যুবকটি অন্যদিকে চোখ সরিয়ে নিলো। দেবশ্রী মনে মনে একটু হেসে এক হাত দিয়ে বিনুনিটা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে নিলো। ফলে তার মসৃন পিঠ অনেকটা উন্মোচিত হয়ে গেলো আরো। চোখের কোণে সে ডানদিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো মাঝবয়সী একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। সামনের অন্যান্য সীটে যে মহিলারা বসে আছে, তারা কেউই ততো আকর্ষণীয় নয়। বাস চলতে চলতে পরবর্তী স্টপে এলো। এখান থেকে বেশ কিছুজন উঠলো বাসে। ভিতরের খালি খালি ভাবটা একটু কমে এলো। ভিড়ের চাপে ডানদিকের লোকটা দেবশ্রীর আরো কাছে সরে এলো। আরো দুএকজন ছেলে এসে এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে পড়লো। মিনিবাসে দুপাশের দুই সারি সীটের মাঝখানে এমনিতেই খুব কম জায়গা থাকে। তার উপর ভিড় বাড়লে কারুর পার্সোনাল স্পেস বলে কিছু থাকে না। গায়ে গা লেগেই যায়। সবকিছু ছাপিয়ে, সুন্দরী তন্বী কোনো মেয়ে যদি দাঁড়িয়ে থাকে, তো ছেলেরা ইচ্ছা করেই তার গায়ে আরো লেগে যেতে চায়। কিন্তু দেবশ্রী সেটা অপছন্দ করে না। শুধু মুখে সে শালীনতাটা বজায় রাখে। সে চায়, সে যে সুন্দরী, সেটা পুরুষরা অহরহ জাহির করুক তার সামনে। তাতে ভীষণ সুখ পায় সে। কিন্তু শালীনতা অতিক্রম করে কোনোকিছু করতেই সে আগ্রহী নয়। অন্তত আজ অবদি সেরকম কিছু সে করেনি।
পরের স্টপেজে কোনো একটা কলেজ থেকে ১০-১২ জনের একটা দল উঠলো বাসে। তারা গেটের মুখে ভিড় করে দাঁড়ালো। ফলে বাসটা ভিতর দিকে একদম জ্যাম প্যাক্ড হয়ে গেলো। ডানদিকের ওই লোকটা আরো সরে এসে দেবশ্রীর গায়ের সঙ্গে ঠেসে দাঁড়াতে বাধ্য হলো। দেবশ্রীর বাঁদিকে যে যুবকটি দাঁড়িয়ে ছিল, তার আর দেবশ্রীর মাঝের ছোট্ট জায়গায় আরেকটি মাঝবয়সী ছেলে এসে চেপে দাঁড়ালো। দেবশ্রীর পিছন দিকেও সরু প্যাসেজের মধ্যে আরো এক সারি লোক উল্টোদিকের জানলার দিকে মুখে করে দাঁড়িয়ে আছে। এই দুই সারি লোকের মাঝখান দিয়ে যাবার একটুও রাস্তা রইলো না আর। বরঞ্চ, দেবশ্রীর গায়ের সাথে তাদের পিছন ঘসাঘসি হচ্ছে বাস কাত হলেই। ঘেমে যেতে লাগলো দেবশ্রী। ভাগ্যিস সাদা টপের নিচে সাদা রঙের ব্রা পড়েছে, নাহলে ঘামে ভিজে টপটার যা অবস্থা, তাতে কোনো কন্ট্রাস্ট কালারের ব্রা হলে বাইরে থেকে পরিষ্কার বোঝা যেত। সাদা ব্রা বলে টপটা কিছুটা ভিজে গেলেও বিশেষ কিছু বোঝা যাচ্ছে না। জানলা দিয়ে ফুরফুর করে যেটুকু হাওয়া আসছে, সেটা নামমাত্র। আরেকটু ভালো করে হাওয়াটা পাবার জন্য সে সামনে ঝুঁকতে চেষ্টা করলো, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তার পাছা পিছনের কারোর পাছার সাথে চেপে যাচ্ছে দেখে সে আবার সোজা হয়ে দাঁড়ালো। রুমাল দিয়ে ঘাড় গলা আরেকটু মুছে নিলো। তারপর যেই আবার সামনের রডটা ধরতে যাবে, বাসটা আচমকা একটা ব্রেক কষলো। দেবশ্রী টাল সামলাতে না পেরে ডানদিকের লোকটার গায়ে পুরো চেপে গেলো। ডান হাতটা উপরে রডের কাছে তোলা ছিল বলে সে ডানদিকে চেপে যাবার সাথে সাথে যেটা হলো তাতে তার শরীর পুরো শিউরে উঠলো। তার ডানদিকের উন্থিত স্তন ডানদিকের লোকটার বুকের সাথে ময়দার মতো চিপে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে দেবশ্রী নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াবার চেষ্টা করলো। কিন্তু ওই দু-সেকেন্ডের নরম স্পর্শ পেয়ে লোকটা ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো যেন তারই দোষ। দেবশ্রী কিছু বলার আগেই লোকটা বলে উঠলো ‘সরি, সরি, বাসটা এমনভাবে চালাচ্ছে!’ দেবশ্রী বুঝলো, লোকটা তার শরীরের স্পর্শ ভালোই পেয়েছে, নাহলে ওইভাবে সরি বলতো না, যেখানে দোষটা দেবশ্রীরই। কিন্তু লোকটার ওভাবে অকারণে সরি বলাটা ভীষণ এনজয় করলো সে। তার ভিতরের একটা সুপ্ত কামনা যেন জেগে উঠলো।
মনে মনে হিসেবে করছিলো দেবশ্রী, বাড়ী ফেরার পথে কিছু মুদির মাল কিনে নিতে হবে গ্রোসারি স্টোর্স থেকে। সৈকতের ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে আটটা অন্তত বাজবে। তার আগে ডিনারটা বানিয়ে নিতে হবে। অফিস থেকে ফিরে খুব ক্লান্ত থাকে সৈকত। ডাক্তারের কড়া নির্দেশ, ডিনার করতে বেশি রাত করা যাবে না। তাই অফিস থেকে ফিরলেই ডিনার দিয়ে দেয় দেবশ্রী। ডিনার করেই বিছানায়। সেইটা তাদের একান্ত নিজস্ব সময় তখন। গত আট-দশ মাস যাবৎ এই রুটিনই চলছে। তার আগে প্রথম প্রথম যখন বিয়ে হয়েছিল, ওরা মাঝে মাঝেই রাত্রে বাইরে ডিনার করতে যেত। সেসব এখন পুরো বন্ধ। এখন রোজই বাড়িতে তাকেই ডিনার রেডি করতে হয়।
সামনের স্টপেজে নামবার জন্য কেউ ভিতর থেকে উঠে এলো, গেটের দিকে যাবে বলে। কিন্তু জায়গা এতটাই কম যে দুদিকের দুই সারি লোকের মধ্যে দিয়ে কষ্ট করে যেতে গিয়ে ছেলেটা দেবশ্রীর গায়ের সাথে একদম চেপে গেলো। তার মাংসল পাছা ঘষে বেরোনোর চেষ্টা করলো ছেলেটা। দেবশ্রী স্পষ্ট টের পেলো তার শরীরের সাথে একটা শক্ত লম্বা জিনিস যেন ঘষে গেলো। সাথে সাথে তার কাঁধেও হালকা স্পর্শ পেলো একটা হাতের। নেমে যাবার সময় ছেলেটা ভালোই হাত মেরে গেলো তার শরীরে। মনে মনে ভালো লাগলেও মুখে ছদ্ম-বিরক্তি প্রকাশ করে বললো সে, ‘কি হচ্ছে টা কি, দেখে যান ছেলেটা কিছু একটা তো তো করে বলে সামনে এগিয়ে গেলো। দেবশ্রী পিছনে হাত দিয়ে টপটা একটু ঠিক করে নিলো, ঘষাঘষিতে ওটা কোমরের উপরে উঠে গিয়েছিলো। এর পর সে তার ডানহাতটা আসতে করে সামনের রডের উপর আরেকটু ডানদিকে সরিয়ে দিলো। ডানদিকে যে লোকটা দাঁড়িয়ে ছিল, তার বাঁহাতও ওই রডের উপরেই আছে। দেবশ্রী তার হাতটা সরাতে, তার ডানহাতের কড়ে আঙুলটা ওই লোকটার বাঁহাতের কড়ে আঙুলকে স্পর্শ করলো। ইচ্ছা করেই সে লোকটাকে টাচ দিলো। লোকটা একবার তার দিকে তাকিয়েই আবার জানলার দিকে তাকালো সেটা লক্ষ্য করলো দেবশ্রী। সে জানে যে তার মতো হট আর কম বয়সী একটা মেয়ের ছোঁয়া পেতে লোকটার খুব ভালোই লাগবে। এদিকে তার বাঁদিকে যে ছেলেটা দাঁড়িয়ে ছিল, সে তার ডান হাতটা এমন ভাবে রেখেছে যে বাসের দুলুনিতে বার বার দুজনের কনুই ঠেকে ঠেকে যাচ্ছে। দুদিকে দুজন পুরুষকে ছোঁয়া দিতে দিতে দেবশ্রী চেষ্টা করলো তার এগিয়ে থাকা বুকটা আরেকটু উঁচু করে রাখতে।
যে স্টপেজে বাসটা থামলো, সেখানে কয়েকজন নামলো, কিন্তু উঠলো আরো বেশি লোক। ভিড়ের চাপটাও একটু বেড়ে গেলো। দেবশ্রীর শরীর এখন সরাসরি দুদিকের লোকদুটোর গায়ে ঠেকছে। দুটো হাত উপরে রডের কাছে তুলে রাখার জন্য তার বুকদুটো দুদিকের সাইড থেকে উন্মুক্ত মাঝে মাঝেই ঘষা খাচ্ছে পাশের দুজনের সাথে। সে তাদেরকে আরেকটু টীজ করার জন্য ছদ্ম-বিরক্তি দেখিয়ে বললো, ‘ঢুকিয়েই যাচ্ছে, ঢুকিয়েই যাচ্ছে, আরো কত ঢোকাবে কে জানে -‘।
আচম্বিত তার মুখে এরকম কথা শুনে ছেলেটা আর লোকটা তো বটেই, এমনকি সামনে বসে থাকা মহিলা আর তার মেয়েও তার দিকে না তাকিয়ে পারলো না। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেবশ্রী তার কথাটা সম্পূর্ণ করলো, ‘যত পারছে লোক ঢুকিয়ে যাচ্ছে বাসে, ভিতরে যে একটুও জায়গা নেই সেটা দেখে না। দাঁড়ানোই যাচ্ছে না।’ ইচ্ছা করেই সে তার প্রথম বলা দ্ব্যর্থক বাক্যটাকে একটা ভদ্র রূপ দিলো। কিন্তু তাতে কি, ছেলেটা আর লোকটা তার প্রথম কথাটা শুনেই নিজেদের যৌনাঙ্গে একটা শিহরণ টের পেলো। ঢোকানো বলতে সবার প্রথমে যে কথাটা মনে আসে, সেটাই তারা ভেবেছিলো। যদিও দেবশ্রীর পরের বাক্যে বোঝা গেলো যে সে সেই অর্থে ঢোকানো বলতে চায়নি, কিন্তু তার কথার প্রভাব অলরেডি কাজ করতে শুরু করেছিল তাদের শরীরে। ডানদিকের লোকটা বাসের সামনের দিকে তাকিয়ে উঁচু গলায় হেঁকে উঠলো, ‘আর কোথায় লোক তুলছো বাসটা একটু চালাও জোরে! ভিতরে তো দাঁড়ানো যাচ্ছে না -‘ দেবশ্রী কথাটা বলেছিলো সামনের সীটে বসা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে। কিন্তু দেবশ্রীর টাইট ছোট পোশাক আর তার মুখের ভাব দেখে মেয়েটা যেন ঠিক পছন্দ করলো না তাকে। সে তার পাশের মহিলাটির সাথে দৃষ্টি বিনিময় করলো। মহিলাটি বিড়বিড় করে দেবশ্রীর সম্বন্ধে তার মেয়েকে বললো, ‘বাজে মেয়েছেলে ঢং করে দাঁড়িয়ে আছে গায়ে গা লাগিয়ে। তাকাস না ওইদিকে।’ মহিলাটি কথাটা তার মেয়েকে নিচুস্বরে বললেও, তার ভাবভঙ্গি দেখে দেবশ্রী আন্দাজ করতে পারলো কি বলতে পারে। তাদের মুখচোখ দেখে দেবশ্রী স্পষ্ট বুঝতে পারলো যে তারা ওকে পছন্দ করছে না, খুব ঈর্ষা করছে। তাদের সেই ঈর্ষা দেবশ্রীর মনে খুব পুলকের সঞ্চার করলো। সে ওই মেয়েটাকে যেন বলতে চাইলো, আমি থাকতে কোনো ছেলে তোদের দিকে তাকিয়েও দেখবে না, সব ছেলেদের নজর আমি একাই ধরে রাখবো। আমার মতো উঁচু ডাঁসা বুক আছে তোদের ? হঠাৎ তার চিন্তায় ধাক্কা লাগলো, পিছনে ভিড়ের মধ্যে একটা কোনো হাত তার পাছার মাংস মুহূর্তের জন্য খাবলে ধরেই ছেড়ে দিলো। সহজাত নারীসুলভ প্রতিক্রিয়ায় দেবশ্রী চকিতে পিছনে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করলো। পিছনে তিন-চারজন ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে আছে, সবাই ছেলে। সব ভোলাভালা মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে, অথচ ওদের মধ্যেই কেউ এটা করেছে। পাছায় পুরুষের হাতের টেপা খেতে ভালোই লাগে, কিন্তু পুরুষটিকে দেখতে পেলে আরো ভালো লাগে। এখানে কে করেছে সেটা বোঝা গেলো না। সামনের দিকে আবার মুখ ফিরিয়ে নিলো সে। তার ডানদিকের হাতটা বাসের রডের উপর আরেকটু ডানদিকে চেপে দিলো, তার ফলে ডানদিকে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার বাঁহাতের কড়ে আঙুলের উপর উঠে গেলো তার ডানহাতের কড়ে আঙুল। লোকটার অবস্থা এবার সঙ্গিন হয়ে উঠলো। সে বোধহয় টের পেলো দেবশ্রী ইচ্ছা করেই তার হাতের সাথে নিজের হাত ঠেকিয়ে রেখেছে। সে এবার দেবশ্রীর হাতটা নিজের হাত দিয়ে চেপে ধরলো রডের উপর। ‘আঃ দেবশ্রী একবার হালকা আওয়াজ করেই চুপ হয়ে গেলো। লোকটা তড়িঘড়ি তার হাতটা সরিয়ে নিলো। সামনের সীটে বসে থাকা মেয়েটা তাকিয়ে একবার দেখলো দেবশ্রীর দিকে। তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে এবার দেবশ্রী তার বাঁদিকে একটু হেলে গিয়ে বাঁদিকে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার গায়ে তার উন্নত বুকের স্পর্শ দিলো। ছেলেটা পুলকিত হয়ে এক ঝলক এদিকে তাকিয়েই আবার অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। দেবশ্রী বাসের চলার তালে তালে আবার একবার বুকের বাতাবী লেবু দিয়ে ছোঁয়া দিলো বাঁদিকের ছেলেটাকে। ছেলেটা এবার দেবশ্রীর দিকে একদম সরে এলো, দেবশ্রীর শরীরের সাথে চেপে দাঁড়ালো। কিন্তু কেউই কাউকে দেখছে না। ওদিকে ডানদিকের লোকটা সাহস করে আবার তার বাঁহাতটা রডের সাথে দেবশ্রীর ডানহাতের উপর আলতো করে রাখলো। দেবশ্রী কিছু বললো না। সামনের সীটে বসা মেয়েটা তাকে লক্ষ্য করছিলো। সে যে ছেলেটাকে আর লোকটাকে লাই দিচ্ছে, এটা মেয়েটা ভালোই বুঝতে পারছিলো। সে মুখ বেঁকিয়ে তার পাশের মহিলাটির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ছেনালি করছে দেখো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে, ইচ্ছা করে বুক দিয়ে ঠেকা দিচ্ছে ছেলেটার গায়ে।’ মহিলাটি ঘৃণা সহকারে বললো, ‘লজ্জা শরম কিছু নেই, ছিঃ ছিনাল মাগি। খারাপ পাড়ার মেয়ে।’ হাসি হাসি মুখে সামনে বসা মেয়েটির ও সেই মহিলাটির ঈর্ষান্বিত আচরণ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিলো দেবশ্রী। পুরুষ মানুষের আদর তো সব মেয়েই চায়, কিন্তু যারা সেটা পায় না তারাই দেবশ্রীর মতো সুন্দরী মেয়েদের প্রতি হিংসায় জ্বলে মরে। তাদের জ্বলতে দেখে আনন্দ পাচ্ছিলো সে। এই সময় দেবশ্রী আবার টের পেলো, তার বাঁদিকের পাছার দাবনায় কেউ হাত রেখেছে। সে আর পিছনে তাকালো না। যে হাত রেখেছে, সে এবার আর হাত সরিয়ে নিলো না। ওখানেই রেখে দিলো হাতটা। দেবশ্রীর টাইট পাতলা লেগিংসের উপর দিয়ে তার মাংসল পাছার উত্তাপ নিতে লাগলো। ব্যাপারটা বুঝতেই দেবশ্রীর দুই পায়ের সংযোগস্থলে ভীষণ একটা সুড়সুড়ানি জেগে উঠলো। চোখটা বুঝে সে অনুভব করার চেষ্টা করলো ভিড়ের সুযোগে কেউ তার শরীরটা হাতাচ্ছে। ঠোঁট দুটো অল্প ফাঁক হয়ে গেলো তার, ভিতরের সুপ্ত আগ্নেয়গিরি যেন জেগে উঠছে। ঠিক এই সময় কন্ডাক্টারের ডাকে তার সম্বিৎ ফিরলো। তার বাড়ির স্টপেজ এসে গেছে। নামতে হবে। ডানহাতটাকে পাশের লোকটার মুঠো থেকে ছাড়িয়ে, সামনে বসে থাকা মেয়েটি আর তার সঙ্গের মহিলাটির ঘৃণাদৃষ্টির সামনে দিয়ে দেবশ্রী সরে এলো। তার পাছায় যে হাত রেখে দিয়েছিলো, সে সরিয়ে নিতে বাধ্য হলো হাতটা। সামনের দিকে আসতে গিয়ে যে লোকটি তার ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, তার পিঠের সাথে নিজের তুলতুলে নরম ভারী দুটো স্তন মর্দন করে দিলো দেবশ্রী। এমনিতেই পাছায় পুরুষ হাতের স্পর্শ পেয়ে গরম হয়ে উঠেছিল সে। তাছাড়া এই লোকটা অনেক ভদ্রভাবে তার হাতের উপর নিজের হাত চেপে রেখেছিলো। এমনকি তার পক্ষ নিয়ে কন্ডাক্টারকে হেঁকেওছিলো একবার। একটা পুরস্কার তো দিতেই হয়। তাই তাকে ভালোভাবেই নিজের স্তনযুগল অনুভব করালো সে। সাথে সাথে আর একবার টের পেলো কেউ তার ডানদিকের পাছা শেষ বারের মতো খাবলে ধরেই ছেড়ে দিলো। দারুন একটা অনুভূতির সাথে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো দেবশ্রী। এই স্টপেজে নেমে মিনিট দশেক হাঁটলেই তাদের কলোনি। নামার আগে টিকিট কেটে নিলো সে। কন্ডাক্টার তাকে ভালো করে একবার দেখলো। কেউই দেখতে ছাড়ে না। দেবশ্রী জানে তার শরীরের এমন খাঁজ-ভাঁজ যে, কোনো পুরুষই পারবে না তার দিকে না তাকিয়ে থাকতে। আর সে পোশাকও পরে শরীরের সাথে মানানসই। ছেলেদের ভাষায় যাকে বলে ভীষণ হট।
ঠিক জায়গায় বাসটা দেবশ্রীকে নামিয়ে দিলো।
পাশাপাশি অনেকগুলো তিনতলা ফ্ল্যাট। এটাই সিদ্ধা এম.আই.জি. আবাসন কলোনি। সরকার থেকে লটারির মাধ্যমে এখানে কিছু কম দামে মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট বন্টন করা হয়েছিল, তারই একটা সৈকতরা পেয়েছে। এভাবে ছাড়া কলকাতার বুকে আজকাল ফ্ল্যাট কেনা তাদের মতো মানুষের পক্ষে অসম্ভব। খুব গলির ভিতরেও টু-বেডরুম ফ্ল্যাট পঁচিশ-তিরিশের কমে হয় না। আর নাহয় জোকা কি দমদমের দিকে চলে গেলে কিছু কম হতে পারে। কিন্তু সেখান থেকে আবার অফিস যাতায়াত খুব পরিশ্রমের। আর এখন তো সৈকতের পক্ষে অতো ট্রাভেল করাই সম্ভব নয়। এই আবাসনে তারা ষোলো লাখেই একটা বেশ ভালো ফ্ল্যাট পেয়ে গিয়েছিলো লটারিতে। ফ্ল্যাটটা বেশ বড়ো, সাড়ে ন’শো স্কোয়ার ফিট। দুটো বেডরুম, একটা বড়ো লিভিং রুম, সুন্দর ব্যলকনিও আছে একটা।
তাদের ফ্ল্যাটটা তিনতলায়। আবাসনেরই লাগোয়া মুদিখানা থেকে টুকিটাকি কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিয়ে দেবশ্রী ফ্ল্যাটে এসে ঢুকলো। জিনিসগুলো টেবিলের ওপর নামিয়ে রেখে সোজা বাথরুমে ঢুকে গেলো আগে ভালো করে গা ধুয়ে নিতে হবে। শাওয়ারের জলও যেন সারা দিনের গরমে তেতে আছে। কিছুটা জল ফেলে দিতে ঠান্ডা জলের ছোঁয়া পাওয়া গেলো। সেই জলের নীচে দাঁড়িয়ে নিজেকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ভালো করে ভিজিয়ে খুব আরাম পেলো সে। সারাদিনের ক্লান্তি আর ঘাম গা থেকে ছাড়িয়ে দিতে পেরে শরীরটা যেন আবার ঝরঝরে হয়ে গেলো। ফ্রেশ হয়ে প্রথমে একটা নাইটি পরে নিলো দেবশ্রী। চুলটা পিছনে খোঁপা করে বেঁধে নিলো। তারপর এক কাপ চা খেলো ভালো করে। ডিনার করবার তাড়া আছে। কিন্তু তার আগে মুখে একটা ফেস প্যাক লাগিয়ে নিলো, ঘন্টাখানেক রেখে ধুয়ে নিতে হবে। ফেস প্যাকটা লাগিয়েই কিচেনে ঢুকলো সে। শরীরের ব্যাপারে খুবই যত্ন নেয় দেবশ্রী। নিজের শরীরটাকে দেখতে আর দেখাতে খুবই ভালোবাসে সে।
বিয়ের পর প্রথম প্রথম সৈকতও পাগলের মতো করতো তার এই শরীরের জন্য। সারাদিন ব্যাকুল হয়ে থাকতো, আর সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফিরেই তাকে জড়িয়ে ধরতো। অনেক রাত অবদি চলতো তাদের বিছানায় রতিক্রিয়া। আর ছুটির দিন সারাদিনই পারলে তাকে ধরে ওসব করে, এরকমটাই ছিল সে। অন্য কোনো মেয়ের দিকে কোনোদিন তাকিয়েও দেখতো না সৈকত, আর এটার জন্য স্বামীকে নিয়ে ভীষণ গর্ব ছিল তার। এই একটা জিনিস মেয়েরা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। সেই দিক থেকে সে ভীষণ ভালো বর পেয়েছে। দেবশ্রীর শ্বশুরবাড়ি, মানে সৈকতদের অরিজিনাল বাড়ি বর্ধমানে। বাবা-মা সব ওখানেই থাকেন। কলকাতায় একটা ভাড়া বাড়িতে থেকে সৈকত চাকরি করতো। বিয়ের পর মাসখানেক দেবশ্রীকেও থাকতে হয়েছে মধ্য-কলকাতার ওই ভাড়া বাড়িতে। আর ঠিক তখনি এই ফ্ল্যাটটা সৌভাগ্যবশত ওরা পেয়ে যায় লটারিতে। তারপর এখানে চলে আসা হয়। সৈকত সব সময় বলতো যে দেবশ্রী নাকি ওর জন্য খুব পয়া। বউকে নিয়ে গর্ব, অহংকার আর বাসনার অন্ত ছিল না। কিন্তু সেই মানুষটা আজ কী থেকে কী হয়ে গেলো।
সাড়ে আটটার একটু পরেই গাড়ির আওয়াজ পেলো দেবশ্রী। এই আবাসনে খুব কম বাড়িতেই নিজস্ব গাড়ি আছে। তাই সে বুঝলো যে সৈকত এসে গেছে। মিনিট দশেক বাদে কলিং বেলটা বাজলো। কিচেনের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিলো ইতিমধ্যে। দেবশ্রী গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজাটা খুলে দিলো। সৈকত দেওয়ালটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বোঝাই যাচ্ছে খুব ক্লান্ত। এখানে তো লিফট নেই। সিঁড়ি দিয়েই ওঠা-নামা করতে হয়। এক-বারে তিনতলা অবদি উঠে আসতে পারে না সৈকত। একটু থেমে থেমে আসতে হয়।
তাও ঘেমে নেয়া একশা। দেবশ্রী এগিয়ে গিয়ে সৈকতের একটা হাত ধরে নিজের কাঁধে তুলে দিলো। দেবশ্রীর উপর একটু ভর দিয়ে সৈকত ঢুকলো ফ্ল্যাটে। ঢুকেই সোফার উপর বসে পড়লো ধপ করে।
‘কষ্ট হচ্ছে জল খাও একটু।’ দেবশ্রী জলের বোতলটা টেবিলের উপর থেকে নিয়ে এগিয়ে দিলো সৈকতের দিকে। ডাক্তার সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে বহুবার বারণ করেছে। কিন্তু ওদের কিছু করার নেই। ফ্ল্যাটটা নেবার সময় তো আর জানা ছিলো না যে এতকিছু ঘটবে আর জীবনটা এইভাবে পাল্টে যাবে। তখন লিফটের কথা কেই বা আর ভেবেছিলো। এই ধরণের এম.আই.জি. আবাসনে সাধারণত লিফট থাকে না। আর তাদের তখন মনেও হয়নি যে লিফটের কোনোদিন প্রয়োজন হবে বলে। এখন এই ফ্ল্যাট বদলিয়ে অন্য ফ্ল্যাট আবার কেনা সম্ভব নয়। বরং তিনতলার বদলে যদি এখানেই কোনো একতলার ফ্ল্যাট পাওয়া যায়, সেটাই দেখতে হবে। কিন্তু এই তিনতলাটা দেবশ্রীর খুব পছন্দ। এখানে কত সুন্দর হাওয়া খেলে। বৃষ্টির সময় কী সুন্দর দেখতে লাগে চারপাশটা। একতলায় চলে যাওয়াটা তার একদম মনোপূতঃ নয়। সে খুব দোনোমনায় আছে এই নিয়ে। আচ্ছা, সৈকত কি কোনোদিনই আর পুরো ভালো হবে না সুস্থ হয়ে উঠবে না সেই আগের মতো না যদি হয়, তো কী নিয়ে বাঁচবে সে ? নিজের মনেই চিন্তা করতে করতে দেবশ্রী ডিনার রেডি করে ফেললো টেবিলে। সৈকত একটু জিরিয়ে নিয়ে বাথরুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে এসে ডিনারে বসে গেলো। তাকে খাবার পরিবেশন করে দেবশ্রী নিজেও বসে গেলো তার পাশে ডিনার করতে। তাদের মধ্যে খুব বেশি কথা এখন আর হয় না। আসলে সৈকত সর্বদা নিজের কাছে ছোটো হয়ে থাকে তার এই পরিস্থিতির জন্য। বউকে যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়া তার কর্তব্য, সে তো সে এখন আর পারেই না, বরং শারীরিকভাবেও সে যেন এখন অনেকটাই দেবশ্রীর উপর নির্ভরশীল।
‘অফিসের কাজকর্ম সব ঠিকঠাক ছিল দেবশ্রী হালকা গলায় জানতে চাইলো।
‘হুঁ’, সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলো সৈকত। দেবশ্রী জানে ওকে বেশি ঘাঁটানো যাবে না। সে যে প্রচন্ড মানসিক গ্লানিতে ডুবে আছে, এটা দেবশ্রী জানে। সে চেষ্টা তো করে নিজের দিক থেকে যতটা সম্ভব সম্পর্কটাকে স্বাভাবিক রাখতে, কিন্তু মাঝে মাঝে সেও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কবে যে এসব শেষ হবে, আদৌ কোনোদিন আর সম্ভব হবে কিনা, কে জানে! বিয়ের পর প্রথম এক বছর তো ঠিকই ছিল সব। রঙ্গিন জীবন যত সুন্দর হওয়া সম্ভব, তাদের সে সবই ছিল। সৈকত একটা ছোটো প্রাইভেট ফার্মে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকারের কাজ করতো। আর. এম. ফাইনান্সিয়াল লিমিটেড। তার কাজ ছিল কলকাতার বিভিন্ন মাড়োয়ারি ব্যবসাদারদের পটিয়ে তাদের টাকা বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্ট স্কীমে ও শেয়ারে লাগানো, যাতে তারা বেশ ভালো টাকা রিটার্ন পায়। কোম্পানি এর থেকে কমিশন পেতো, আর সেটাই ছিল কোম্পানির লাভ। সেই লাভের একটা ভাগ সৈকত পেতো। আর একটা ফিক্সড স্যালারিও ছিল তার। টোটাল যা রোজগার হতো, তাতে এলাহীভাবেই তাদের চলে যেত। সমস্যাটা শুরু হলো ইউরোপের ব্রেক্সিট চলাকালীন। একটা গেলো গেলো রব উঠলো শেয়ার বাজারে। তৎপরবর্তী বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ডামাডোলে ভারতে ইনভেস্টমেন্টের ব্যবসা প্রায় মার খেতে বসলো।
তাদের ক্লায়েন্টরা আতংকিত হয়ে সব টাকা ইনভেস্টমেন্ট স্কীম থেকে তুলে নিতে থাকলো। নতুন ক্লায়েন্ট তো আর আসেই না, এমনকি কমিশনের অবস্থাও তথৈবচ।
সৈকতের উপর ভীষণ চাপ এলো, তার চাকরি প্রায় যায় যায়। তার কাজই ছিল ক্লায়েন্ট জোগাড় করা আর স্যালারিও ছিল মূলত কমিশন ভিত্তিক। দুইদিক থেকেই তখন খুব মন্দা দশা চলছে। অনেক রাত অবদি অফিসে কাটে। দিনরাত কাজের চিন্তা। এইভাবে মাস দু-তিন যাবার পর ঘটনাটা ঘটলো। এতো চাপ আর নিতে পারছিলো না তার শরীর।
একটা ম্যাসিভ হার্ট এ্যাটাক হলো সৈকতের। তড়িঘড়ি একটা নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলো। প্রায় একমাস সেখানে থেকে একটু সুস্থ হয়ে তবে বাড়ি ফিরতে পারলো সৈকত। এই সময়টা চোখে পুরো অন্ধকার দেখেছে দেবশ্রী। একজন সাধারণ গৃহবধূ হিসাবে তার কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না এইরকম বিপদের। একদিকে সংসার সামলানো, অন্যদিকে সৈকতের চিকিৎসার খরচ কিভাবে যে সে সামাল দিয়েছিলো, সে নিজেই জানে না। সৈকতের যেটুকু টাকা পয়সা জমানো ছিল, চিকিৎসার খাতে সবই খরচ হয়ে গিয়েছিলো। এমনকি দেবশ্রীকে নিজের বেশ কিছু গয়নাও বেচে দিতে হয়েছে সেই সময়। কিন্তু সব করে শেষমেশ সৈকত যে বাড়ি ফিরে আসতে পেরেছে সুস্থ হয়ে, সেটার জন্যেও ভগবানকে ধন্যবাদ দিতে হয়।
যদিও পুরোপুরি সুস্থ হওয়া আর হলো না সৈকতের। ডাক্তার তিনমাস কমপ্লিট রেস্টের নির্দেশ দিলেন। তার পরেও অফিসের কাজে বেশি চাপ নেওয়া আর চলবে না তার পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন। আর একবার এরকম এ্যাটাক এলে হয়তো কিছু করা যাবে না। তাই খুব সাবধানে থাকার নির্দেশ দিলেন। ফলত হলো এই, যে তার অফিসের চাকরিটা আর রইলো না। তবে তারা তাকে পুরোপুরি ছাঁটাই করলো না ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং থেকে অন্য ডিপার্টমেন্টে সরিয়ে দিলো, যেখানে কাজের চাপ কম।
সৈকত এখন ওদের ফার্মেরই এ্যাকাউন্টস সেকশানে আছে ওখানের কর্মচারীদের টাকা-পয়সার হিসেব ও অন্যান্য বিষয় দেখাশোনা করে। খুবই হালকা কাজ। টার্গেট নির্ভর কাজ নয়। সাধারণ অফিস ওয়ার্ক। মাইনেও সেই তুলনায় অনেক কমে গেলো। কোনো কমিশানও নেই। গোদের উপর বিষফোঁড়া হলো এই যে, বাড়ি থেকে আর পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অফিস যাতায়াত করা যাবে না ডাক্তার কড়া নির্দেশ দিয়ে দিলেন। কোনোরকম ধকল বা উত্তেজনা তার শরীর নিতে পারবে না। একটা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ি তিনিই সস্তায় জোগাড় করে দিলেন। সেই গাড়ি কেনার জন্যেও ওদের লোন নিতে হলো। সেই লোন এখনো চলছে। আর গাড়ি কেনার খরচ তো তবু কিছু নয়, এর পর মাসে মাসে ড্রাইভার রাখার খরচ, গাড়ির মেইন্টেনেন্সের খরচ, অনেক হ্যাপা। নিজে যে ড্রাইভ করবে, সেই ভরসাও সৈকত পায় না। বলতে গেলে, তার যা মাইনে, তা অনেকটাই প্রায় চলে যায় এই লোন, ফ্ল্যাটের লোন, ওষুধের খরচ আর গাড়ি-পোষার খরচে। সামান্যই আর পড়ে থাকে হাতে।