27-11-2020, 05:47 PM
৫৫ পর্ব
দুপুর ১২ টা.. সব নিউজ চ্যানেলে একটাই নিউজ প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বালেশ্বর ঝাঁয়ের হত্যার পরিকল্পনার অডিও ক্লিপ্স ফাঁস।এতে শোনা যাচ্ছে প্রয়াত মন্ত্রীর ঘনিষ্ট ও বর্তমান নমনীত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী প্রতাপ হাজরা ও নার্গিস বেগম নামের একজন অজ্ঞাত নারীর কথোপকথন।তাহলে কি নিজের পথ পরিস্কার করতেই প্রতাপ বাবু এমন করলেন?এ উত্তর আমদের কাছে এখনো অজানা।কিছুক্ষণ আগে একটা অজ্ঞাত নম্বর থেকে আমাদের অফিসের নম্বরে এই অডিও ক্লিপ্সটা আসে আমরা ওই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সুইচ অফ পাই।এর পরেই আমরা বিষয়টা পুলিশকে জানিয়ে উনারদের থেকে কোন তথ্য পেলেই আমরা আমাদের জানাবো।নিউজ দেখে প্রতাপ হাজরা মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলেন।এই মূহুর্তে কি করবেন বুঝতে পারছেন না।বাসার সামনে নিউজের লোক গুলা লাইন দিয়েছে।এখন পালিয়ে থাকলে আরো সন্দেহ বাড়বে।কিন্তু শালার মাগীটা চায় কি?আমাকে MMS করলো,ভাবলাম কিছু অফার করবে কিন্তু কিছুই করলো না উল্টো নিউজের লোকদের হাতে দিয়ে দিলো।প্রতাপ হাজরা নিজের মোবাইল থেকে কাকে কাকে যেন ফোন করে বললো সারা শহর তন্নতন্ন করে ফেল ওই নার্গিসকে আমার চাই।ফোন রেখে রুমের বাইরে বের হলো ঘরে বসে থাকলে সমস্যা আরো বাড়বে।বের হয়ে আসতেই নিউজের লোক গুলা হামলে পরলো।স্যার যেটা নিউজে দেখাচ্ছে সে ব্যাপারে কিছু বলুন?প্রতাপ হাজরা নিজেকে শক্ত করে বললো দেখুন নিউজটা আমি ও দেখেছি অনেক সেনসেটিফ একটা বিষয় এটা স্পষ্ট যে এটা বিরোধীদের কাজ আর আমার কন্ঠটাও EDIT করা এটা আমি বলবো বাকিটা পুলিশের কাজ।এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।আর একজন প্রশ্ন করতে গেলে প্রতাপ হাজরা হাত জোর করে বললেন দেখুন এর বেশি আমার আর কিছুই বলার নেই আমি সত্যি হতাশ!!আমি নিজেও চাই আমাদের প্রয়াত মন্ত্রীর হত্যার বিচার হোক,এর জন্য আমার যতোটুকু পুলিশকে সাহায্য করার আমি করবো।বলে প্রতাপ হাজরা বাসার ভিতরে চলে গেলেন।ওখানে এসব বলে এলেও প্রতাপ হাজরা ভিতরে ভিতরে খুবই চিন্তিত শেষে কি তীরে এসে তরী ডুববে!?এমনিতেই সামনে বছর আমিই নমিনেশন পেতাম শালা মাগীটা গুদ আর ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে সব শেষ করে দিলো।
প্রতাপ হাজরার বক্তব্য শুনে বিরোধীরাও ক্ষেপে হা চোরের মার বড় গলা।আমরাও চাই CID তদন্ত হোক।এসব বলে না কথায় সরকারী দলকে তুলোধুনা করে চলেছে আর করবেই বা না কেন একটা বড় গুটি এখন তাদের হাতে।এসবের মাঝে তাদের ভোট দিয়ে এবার জয়যুক্ত করার কথাও বলতে ভুলছেনা।রোড ম্যাচ,মিটিং,মিছিল,সভার সংখ্যাও বাড়িয়ে চলেছে।প্রতাপ হাজরা বসে যখন নিজের মাথার চুল টানছে তখন মোবাইলটা বেজে উঠলো।রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে এক মহিলা কন্ঠ বললো।কোন কথা বলবেন না যা বলছি তাই শুনুন সময় খুব কম।আজ বিকাল পাঁচটায় আপনার বাগান বাড়িতে চলে আসুন।একা আসবেন কোন চালাকী করবেন না।মনে রাখবেন যে নিউজটা টিভিতে দেখছেন সেটা জাষ্ট ট্রেলার,সিনেমাটা আমার কাছে আছে।একা খালি হাতে মনে থাকে যেন তা না হলে এমন কাজ করবো নিজের ঘর থেকেই বেরতে পারবেন না।আমি আপনার বাগান বাড়িতে দেখা করতে চাচ্ছি তাহলে আমার ক্ষমতা কেমন একটু ভেবে দেখবেন।আর আপনার বাগান বাড়ির দাড়োয়ান দুটাকে এখনি ফোন করে ছুটি দিয়ে দিন।আর আমাকে কল করে পাবেননা তাই চেষ্টা করে লাভ নেই।একনাগারে এতোগুলা কথা বলে মহিলাটি থেমে গেল।প্রতাপ কিছু বলতে যাবে,তখনি মহিলাটি বাই বলে ফোন রেখে দিলো।প্রতাপ হাজরা হ্যালো হ্যালো করেও কোন সাড়া পেলনা।সাথে সাথে ওই নম্বরে কল দিয়ে দেখলো সুইচ অফ।
কি হচ্ছে এসব কি করবে প্রতাপ হাজরা তার রাজনৈতিক জীবনে এতো হতাশাগ্রস্ত আগে কখনো হয়নি সে।দলের লোকজন দেখা করতে চাইলেও অসুস্থতার কথা বলে ফিরিয়ে দিয়েছে।আবার এভাবে বসে থাকলেও তো ভোটের আগেই সে হেরে যাবে।না বিকালে এই মহিলার সাথে দেখা করে একটা মিটমাট করতে হবে।আর দেখা তো করতে হবে আমার বাগান বাড়িতে তাহলে সমস্যা কি?আর আমি প্রতাপ হাজরা শয়তানের বাপ একা যাবো কি দুকা যাবো সেটা পরে দেখা যাবে।সকাল থেকেই প্রতাপ হাজরার বাগান বাড়ির আশেপাশে কয়েকজোড়া চোখ গোপনে উঁকি ঝুকিঁ দিচ্ছে আর একটু পরপর তারা কাকে যেন কল করছে।প্রতাপ বাবু এলো ঠিক ৫ টার সময় গেটের সামনে এসে এদিক ওদিক দেখে মৃদ হেঁসে ভিতরে ঢুকলো।কিন্তু মহিলার আসার কোন নাম গন্ধ নেই।প্রায় বিশ মিনিট পর গেটের সামনে গাড়ির শব্দ পেয়ে বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলো গাড়ি থেকে এক মহিলা নামছে পরনে জিন্সের প্যান্ট আর ফুলশার্ট কিন্তু মুখটা কাপড়ে ঢাকা এটা স্পষ্ট যে উনি নিজের চেহারা দেখাতে চাচ্ছেন না।গটগট করে হেঁটে এসে সরাসরি প্রতাপ হাজরার দিকে তাকিয়ে বললো চলুন ভিতরে বসি আমিই ফোন করেছিলাম।অন্য সময় হলে এমন মাল হাত ছাড়া করতো না প্রতাপ হাজরা।নিজের বাড়িতেও অথিতির মত পিছন পিছন যেয়ে রুমে বসলো প্রতাপ হাজরা।মহিলাটি সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসলো।প্রতাপ হাজরা কিছু বলতে যাবে মহিলাটি হাতের উঁচু করে থামিয়ে দিয়ে বললেন।আপনাকে বলেছিলাম একা আসতে সাথে কুকুরও নিয়ে এসেছেন।আপনার আনা কুকুর গুলো বাড়ির পিছে গাছের সাথে বাঁধা আছে যাবার সময় সাথে নিয়ে যাবেন।মহিলার কথা শুনে প্রতাপ হাজরার গলা শুকিয়ে গেলো।হা সে একটা চাল দিয়েছিলো আগে থেকেই কিছু লোক ফিট করে রেখেছিলো যাতে এই কাজ হাসীল হবার পর মাগীটাকে খালাশ করে দেওয়া যায়।
প্রতাপ হাজরা চুপ আছে দেখে মহিলাটি বললো কোন ব্যাপার না।এমনটা করা টাই স্বাভবিক এমনিতে আপনার সময় ভালো যাচ্ছেনা।আপনার কি চাই বলুন এতোক্ষণ পর প্রতাপ হাজরা মুখ খুললো।এই জন্যই আপনাকে আমার ভালো লাগে অল্পতেই বুঝে যান।দেখুন আজ টিভিতে যেটা দেখেছেন সেটা দেখেই আপনার এই অবস্থা বাকি আরো যা আছে আমার কাছে সেটা দেখলে তো চোক্ষুচড়ক গাছ হয়ে যাবে।তাই বলছি আমার পিছে না লেগে আমার সাথে চলুন এতেই আপনার মঙ্গল।প্রতাপ হাজরা আবার বললো কি চাই আপনার বলুন কতো টাকা চাই?মৃদ হেসে মহিলাটি বললো টাকার আমার অভাব নেই।কিন্তু আমার একজন ব্যক্তিকে চাই আর সেটা এখনি!!যদি পারেন আমিও আপনার সব ডকুমেন্টস এখনি দিয়ে দিবো!!আর চালাকি করার চেষ্টা করবেন না বুঝতেই পারছেন আমি সব আঁট ঘাট বেঁধেই এসেছি।একজন মাএ ব্যক্তি!!প্রতাপ হাজরার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটলো।
বলুন কে সে?আমার লোক তাকে এখনি তুলে আনবে সে যদি পাতালেও লুকিয়ে থাকে তবুও।
হুম সে আমি জানি,কিন্তু আপনাকে এতো কষ্ট করতে হবেনা।আপনি তাকে চেনেন,তাই শুধু তাকে ফোন করে এখানে আসতে বলুন আমি জাষ্ট তাকে দেখতে চাই।কে সে?জানতে চাইলো প্রতাপ হাজরা।জ্বালানী বিজ্ঞানী অমিত রায় চৌধুরীর উপর যার কথাতে হামলা করেছিলেন!মহিলার কথা শুনে বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকালো প্রতাপ হাজরা।আপনা থেকেই মুখ থেকে বেড়িয়ে এলো আপনি জানলেন কিভাবে?সেটা জেনে আপনার কোন দরকার নাই এতোদিন অন্যদের ব্লাকমেইল করে কাজ হাসিল করেছে আর আজ আপনি সেই ফাঁদেই পরেছেন।তাই আমি কে?এসব কোথা থেকে জানলাম সে সব প্রশ্ন না করে কাজের কাজ করুন। না হলে বলুন আমি চলে যাচ্ছি!বলে মহিলাটি উঠতে গেলে। প্রতাপ হাজরা ব্যস্ত হয়ে বললেন যাবেন না প্লিজ আমি এখনি তাকে কল করছি এমনিতে সে আমার কাছে বিশেষ কোন ব্যক্তি না।কিন্তু এটা করার পর যে আপনি আমার ক্ষতি করবেন না সেটা আমি কিভাবে নিশ্চিত হবো।দেখুন আমি শুধু আপনাকে বিশ্বাস করতে বলবো।বাকিটা আপনার ইচ্ছা আর এছাড়া আপনার কাছে কোন অপশন নেই তাই যা করার তাড়াতাড়ি করেন। প্রতাপ হাজরা আর কথা না বাড়িয়ে কাকে যেন কল করে খুব ইমারজেন্সি বলে আসতে বললো।ফোন রেখে বললো বিশ মিনিটে চলে আসবে।কিন্তু সে ভিতরে আসবে না মহিলাটি বললো! মানে? প্রতাপ হাজরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো। হা উনি যখন আপনার গেটের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করবে তখন তাকে আবার কল করে বলবেন আপনার বিশেষ দরকারে আপনি বেড়িয়ে গেছেন তাই উনাকে ফিরে যেতে বলবেন। আর এর সাথেই আপনার কাজ শেষ।আমি আপনাকে পেনড্রাইভ দিয়ে চলে যাবো। আর আপনি আপনার পথ দেখবেন।
প্রতাপ হাজরা আর প্রশ্ন করলো না সে ইতোমধ্যো বুঝে গেছে প্রশ্ন করে কোন লাভ নেই। কিন্তু কে এই মহিলা নার্গিস না তো!!আমার একের পর এক প্লান বানচাল করে দিচ্ছে। প্রায় বিশ মিনিট পর গেটের সামনে গাড়ি থামার শব্দে প্রতাপ হাজরা আর মহিলাটি নিজের মধ্যো নজর বিনিময় করলো।এমন সময় মহিলাটির ফোনে একটা কল এলো। রিসিভ করে হুম ভিতরে আসতে দাও বলে ফোন রেখে দিলো। মহিলাটি প্রতাপ হাজরাকে ইশারা করলো কল করার জন্য। আর মহিলাটি যেয়ে দাড়ালো জানালার ধারে যেখান থেকে স্পষ্ট বাড়ির প্রবেশ পথ দেখা যায়।প্রতাপ হাজরা নিজের কাজ শুরু করে দিলো,লোকটিও ইতোমধ্যো বাসার প্রবেশ দ্বাড় পার করে ভিতরে ঢুকেছে।মহিলাটির নজর লোকটির উপর পরতেই পায়ের নিচের মাটি যেন কেঁপে উঠলো। হাত পা কাঁপছে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। লোকটি আবার ফিরে যেতে দেখে মহিলাটি ধীর পায়ে প্রতাপ হাজরার কাছে ফিরে এলো।
দুপুর ১২ টা.. সব নিউজ চ্যানেলে একটাই নিউজ প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বালেশ্বর ঝাঁয়ের হত্যার পরিকল্পনার অডিও ক্লিপ্স ফাঁস।এতে শোনা যাচ্ছে প্রয়াত মন্ত্রীর ঘনিষ্ট ও বর্তমান নমনীত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী প্রতাপ হাজরা ও নার্গিস বেগম নামের একজন অজ্ঞাত নারীর কথোপকথন।তাহলে কি নিজের পথ পরিস্কার করতেই প্রতাপ বাবু এমন করলেন?এ উত্তর আমদের কাছে এখনো অজানা।কিছুক্ষণ আগে একটা অজ্ঞাত নম্বর থেকে আমাদের অফিসের নম্বরে এই অডিও ক্লিপ্সটা আসে আমরা ওই নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সুইচ অফ পাই।এর পরেই আমরা বিষয়টা পুলিশকে জানিয়ে উনারদের থেকে কোন তথ্য পেলেই আমরা আমাদের জানাবো।নিউজ দেখে প্রতাপ হাজরা মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলেন।এই মূহুর্তে কি করবেন বুঝতে পারছেন না।বাসার সামনে নিউজের লোক গুলা লাইন দিয়েছে।এখন পালিয়ে থাকলে আরো সন্দেহ বাড়বে।কিন্তু শালার মাগীটা চায় কি?আমাকে MMS করলো,ভাবলাম কিছু অফার করবে কিন্তু কিছুই করলো না উল্টো নিউজের লোকদের হাতে দিয়ে দিলো।প্রতাপ হাজরা নিজের মোবাইল থেকে কাকে কাকে যেন ফোন করে বললো সারা শহর তন্নতন্ন করে ফেল ওই নার্গিসকে আমার চাই।ফোন রেখে রুমের বাইরে বের হলো ঘরে বসে থাকলে সমস্যা আরো বাড়বে।বের হয়ে আসতেই নিউজের লোক গুলা হামলে পরলো।স্যার যেটা নিউজে দেখাচ্ছে সে ব্যাপারে কিছু বলুন?প্রতাপ হাজরা নিজেকে শক্ত করে বললো দেখুন নিউজটা আমি ও দেখেছি অনেক সেনসেটিফ একটা বিষয় এটা স্পষ্ট যে এটা বিরোধীদের কাজ আর আমার কন্ঠটাও EDIT করা এটা আমি বলবো বাকিটা পুলিশের কাজ।এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।আর একজন প্রশ্ন করতে গেলে প্রতাপ হাজরা হাত জোর করে বললেন দেখুন এর বেশি আমার আর কিছুই বলার নেই আমি সত্যি হতাশ!!আমি নিজেও চাই আমাদের প্রয়াত মন্ত্রীর হত্যার বিচার হোক,এর জন্য আমার যতোটুকু পুলিশকে সাহায্য করার আমি করবো।বলে প্রতাপ হাজরা বাসার ভিতরে চলে গেলেন।ওখানে এসব বলে এলেও প্রতাপ হাজরা ভিতরে ভিতরে খুবই চিন্তিত শেষে কি তীরে এসে তরী ডুববে!?এমনিতেই সামনে বছর আমিই নমিনেশন পেতাম শালা মাগীটা গুদ আর ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে সব শেষ করে দিলো।
প্রতাপ হাজরার বক্তব্য শুনে বিরোধীরাও ক্ষেপে হা চোরের মার বড় গলা।আমরাও চাই CID তদন্ত হোক।এসব বলে না কথায় সরকারী দলকে তুলোধুনা করে চলেছে আর করবেই বা না কেন একটা বড় গুটি এখন তাদের হাতে।এসবের মাঝে তাদের ভোট দিয়ে এবার জয়যুক্ত করার কথাও বলতে ভুলছেনা।রোড ম্যাচ,মিটিং,মিছিল,সভার সংখ্যাও বাড়িয়ে চলেছে।প্রতাপ হাজরা বসে যখন নিজের মাথার চুল টানছে তখন মোবাইলটা বেজে উঠলো।রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে এক মহিলা কন্ঠ বললো।কোন কথা বলবেন না যা বলছি তাই শুনুন সময় খুব কম।আজ বিকাল পাঁচটায় আপনার বাগান বাড়িতে চলে আসুন।একা আসবেন কোন চালাকী করবেন না।মনে রাখবেন যে নিউজটা টিভিতে দেখছেন সেটা জাষ্ট ট্রেলার,সিনেমাটা আমার কাছে আছে।একা খালি হাতে মনে থাকে যেন তা না হলে এমন কাজ করবো নিজের ঘর থেকেই বেরতে পারবেন না।আমি আপনার বাগান বাড়িতে দেখা করতে চাচ্ছি তাহলে আমার ক্ষমতা কেমন একটু ভেবে দেখবেন।আর আপনার বাগান বাড়ির দাড়োয়ান দুটাকে এখনি ফোন করে ছুটি দিয়ে দিন।আর আমাকে কল করে পাবেননা তাই চেষ্টা করে লাভ নেই।একনাগারে এতোগুলা কথা বলে মহিলাটি থেমে গেল।প্রতাপ কিছু বলতে যাবে,তখনি মহিলাটি বাই বলে ফোন রেখে দিলো।প্রতাপ হাজরা হ্যালো হ্যালো করেও কোন সাড়া পেলনা।সাথে সাথে ওই নম্বরে কল দিয়ে দেখলো সুইচ অফ।
কি হচ্ছে এসব কি করবে প্রতাপ হাজরা তার রাজনৈতিক জীবনে এতো হতাশাগ্রস্ত আগে কখনো হয়নি সে।দলের লোকজন দেখা করতে চাইলেও অসুস্থতার কথা বলে ফিরিয়ে দিয়েছে।আবার এভাবে বসে থাকলেও তো ভোটের আগেই সে হেরে যাবে।না বিকালে এই মহিলার সাথে দেখা করে একটা মিটমাট করতে হবে।আর দেখা তো করতে হবে আমার বাগান বাড়িতে তাহলে সমস্যা কি?আর আমি প্রতাপ হাজরা শয়তানের বাপ একা যাবো কি দুকা যাবো সেটা পরে দেখা যাবে।সকাল থেকেই প্রতাপ হাজরার বাগান বাড়ির আশেপাশে কয়েকজোড়া চোখ গোপনে উঁকি ঝুকিঁ দিচ্ছে আর একটু পরপর তারা কাকে যেন কল করছে।প্রতাপ বাবু এলো ঠিক ৫ টার সময় গেটের সামনে এসে এদিক ওদিক দেখে মৃদ হেঁসে ভিতরে ঢুকলো।কিন্তু মহিলার আসার কোন নাম গন্ধ নেই।প্রায় বিশ মিনিট পর গেটের সামনে গাড়ির শব্দ পেয়ে বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলো গাড়ি থেকে এক মহিলা নামছে পরনে জিন্সের প্যান্ট আর ফুলশার্ট কিন্তু মুখটা কাপড়ে ঢাকা এটা স্পষ্ট যে উনি নিজের চেহারা দেখাতে চাচ্ছেন না।গটগট করে হেঁটে এসে সরাসরি প্রতাপ হাজরার দিকে তাকিয়ে বললো চলুন ভিতরে বসি আমিই ফোন করেছিলাম।অন্য সময় হলে এমন মাল হাত ছাড়া করতো না প্রতাপ হাজরা।নিজের বাড়িতেও অথিতির মত পিছন পিছন যেয়ে রুমে বসলো প্রতাপ হাজরা।মহিলাটি সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসলো।প্রতাপ হাজরা কিছু বলতে যাবে মহিলাটি হাতের উঁচু করে থামিয়ে দিয়ে বললেন।আপনাকে বলেছিলাম একা আসতে সাথে কুকুরও নিয়ে এসেছেন।আপনার আনা কুকুর গুলো বাড়ির পিছে গাছের সাথে বাঁধা আছে যাবার সময় সাথে নিয়ে যাবেন।মহিলার কথা শুনে প্রতাপ হাজরার গলা শুকিয়ে গেলো।হা সে একটা চাল দিয়েছিলো আগে থেকেই কিছু লোক ফিট করে রেখেছিলো যাতে এই কাজ হাসীল হবার পর মাগীটাকে খালাশ করে দেওয়া যায়।
প্রতাপ হাজরা চুপ আছে দেখে মহিলাটি বললো কোন ব্যাপার না।এমনটা করা টাই স্বাভবিক এমনিতে আপনার সময় ভালো যাচ্ছেনা।আপনার কি চাই বলুন এতোক্ষণ পর প্রতাপ হাজরা মুখ খুললো।এই জন্যই আপনাকে আমার ভালো লাগে অল্পতেই বুঝে যান।দেখুন আজ টিভিতে যেটা দেখেছেন সেটা দেখেই আপনার এই অবস্থা বাকি আরো যা আছে আমার কাছে সেটা দেখলে তো চোক্ষুচড়ক গাছ হয়ে যাবে।তাই বলছি আমার পিছে না লেগে আমার সাথে চলুন এতেই আপনার মঙ্গল।প্রতাপ হাজরা আবার বললো কি চাই আপনার বলুন কতো টাকা চাই?মৃদ হেসে মহিলাটি বললো টাকার আমার অভাব নেই।কিন্তু আমার একজন ব্যক্তিকে চাই আর সেটা এখনি!!যদি পারেন আমিও আপনার সব ডকুমেন্টস এখনি দিয়ে দিবো!!আর চালাকি করার চেষ্টা করবেন না বুঝতেই পারছেন আমি সব আঁট ঘাট বেঁধেই এসেছি।একজন মাএ ব্যক্তি!!প্রতাপ হাজরার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটলো।
বলুন কে সে?আমার লোক তাকে এখনি তুলে আনবে সে যদি পাতালেও লুকিয়ে থাকে তবুও।
হুম সে আমি জানি,কিন্তু আপনাকে এতো কষ্ট করতে হবেনা।আপনি তাকে চেনেন,তাই শুধু তাকে ফোন করে এখানে আসতে বলুন আমি জাষ্ট তাকে দেখতে চাই।কে সে?জানতে চাইলো প্রতাপ হাজরা।জ্বালানী বিজ্ঞানী অমিত রায় চৌধুরীর উপর যার কথাতে হামলা করেছিলেন!মহিলার কথা শুনে বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকালো প্রতাপ হাজরা।আপনা থেকেই মুখ থেকে বেড়িয়ে এলো আপনি জানলেন কিভাবে?সেটা জেনে আপনার কোন দরকার নাই এতোদিন অন্যদের ব্লাকমেইল করে কাজ হাসিল করেছে আর আজ আপনি সেই ফাঁদেই পরেছেন।তাই আমি কে?এসব কোথা থেকে জানলাম সে সব প্রশ্ন না করে কাজের কাজ করুন। না হলে বলুন আমি চলে যাচ্ছি!বলে মহিলাটি উঠতে গেলে। প্রতাপ হাজরা ব্যস্ত হয়ে বললেন যাবেন না প্লিজ আমি এখনি তাকে কল করছি এমনিতে সে আমার কাছে বিশেষ কোন ব্যক্তি না।কিন্তু এটা করার পর যে আপনি আমার ক্ষতি করবেন না সেটা আমি কিভাবে নিশ্চিত হবো।দেখুন আমি শুধু আপনাকে বিশ্বাস করতে বলবো।বাকিটা আপনার ইচ্ছা আর এছাড়া আপনার কাছে কোন অপশন নেই তাই যা করার তাড়াতাড়ি করেন। প্রতাপ হাজরা আর কথা না বাড়িয়ে কাকে যেন কল করে খুব ইমারজেন্সি বলে আসতে বললো।ফোন রেখে বললো বিশ মিনিটে চলে আসবে।কিন্তু সে ভিতরে আসবে না মহিলাটি বললো! মানে? প্রতাপ হাজরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো। হা উনি যখন আপনার গেটের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করবে তখন তাকে আবার কল করে বলবেন আপনার বিশেষ দরকারে আপনি বেড়িয়ে গেছেন তাই উনাকে ফিরে যেতে বলবেন। আর এর সাথেই আপনার কাজ শেষ।আমি আপনাকে পেনড্রাইভ দিয়ে চলে যাবো। আর আপনি আপনার পথ দেখবেন।
প্রতাপ হাজরা আর প্রশ্ন করলো না সে ইতোমধ্যো বুঝে গেছে প্রশ্ন করে কোন লাভ নেই। কিন্তু কে এই মহিলা নার্গিস না তো!!আমার একের পর এক প্লান বানচাল করে দিচ্ছে। প্রায় বিশ মিনিট পর গেটের সামনে গাড়ি থামার শব্দে প্রতাপ হাজরা আর মহিলাটি নিজের মধ্যো নজর বিনিময় করলো।এমন সময় মহিলাটির ফোনে একটা কল এলো। রিসিভ করে হুম ভিতরে আসতে দাও বলে ফোন রেখে দিলো। মহিলাটি প্রতাপ হাজরাকে ইশারা করলো কল করার জন্য। আর মহিলাটি যেয়ে দাড়ালো জানালার ধারে যেখান থেকে স্পষ্ট বাড়ির প্রবেশ পথ দেখা যায়।প্রতাপ হাজরা নিজের কাজ শুরু করে দিলো,লোকটিও ইতোমধ্যো বাসার প্রবেশ দ্বাড় পার করে ভিতরে ঢুকেছে।মহিলাটির নজর লোকটির উপর পরতেই পায়ের নিচের মাটি যেন কেঁপে উঠলো। হাত পা কাঁপছে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। লোকটি আবার ফিরে যেতে দেখে মহিলাটি ধীর পায়ে প্রতাপ হাজরার কাছে ফিরে এলো।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!