25-11-2020, 01:00 PM
নীলা - পর্ব ২
স্বচ্ছ নীল শিফনের শাড়িটা পেঁচিয়ে ধরেছে পাতলা কোমর | ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে হট পিঙ্ক লিপসে একটা মোহিনী হাসি হেসে দামী হোটেলের নরম বিছানায় শুয়ে থাকা পুরুষটিকে শেষবারের মতো ঘায়েল করে রুম থেকে বেরিয়ে পরল নীলা | লিফট চেপে হোটেল লবি, সেখান থেকে ক্যাবে উঠে গাড়ির নরম সিটে নীলা গা এলিয়ে দিল, হ্যাঁ এখন আর ও গৃহবধূ নয়, ও এখন অন্য পরিচয়ে বাঁচে, ওর বর্তমান পরিচয় হল হাই সোসাইটির এসকর্ট গার্ল | এই পেশায় ওর নাম মেহেক | একটা নামকরা এজেন্সির মাধ্যমে ও ক্লায়েন্ট পায়, আর শহরের এসকর্ট গার্লের লিস্টে মেহেক মোটামুটি টপ পজিশনে আছে সুতরাং ওর দর যথেষ্ট চড়া | নিজের রোজগারের টাকায় ও কলকাতার পশ সোসাইটির একটা চৌদ্দশো স্কোয়ার ফিট ফ্ল্যাটের মালকিন | ওর ঘর জুড়ে আধুনিক স্টাইলের দামী দামী আসবাবের ছড়াছড়ি, দেওয়াল জোড়া হোয়াইট ওয়ার্ডোবে থরে বিথরে সাজানো রয়েছে রকমারি পোশাক, ব্যাগ, জুতো | মেহেক কি সত্যি এগুলোই চেয়েছিল ? ও আসলে কে ? মেহেক না নীলা... আজকাল মাঝেমধ্যেই ওকে নিজের পরিচয় হাতড়াতে হয় | ম্যাডাম আপকা কমপ্লেক্স আ গ্যায়া ... ক্যাব ড্রাইভারে ডাকে সম্বিত ফিরল ওর |রেন্ট পে করে লিফটের বোতাম টিপল, ফোরটিন ফ্লোর... বারান্দায় দাঁড়ালে হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যায় | কিন্তু আজকাল নীলা এত ক্লান্ত থাকে, সবুজ শহরের হাতছানি দেখার জন্যও ওর আর ব্যালকনিতে যেতে ইচ্ছে হয় না | ডোরম্যাটের নীচে রাখা চাবি দিয়ে দরজা খুলে রুমে ঢুকে সোফায় বসে চোখ বুজল নীলা, ফিরে গেল নিজের অতীতে | জিমে যাওয়ার আগ্রহ বাড়ছিল ক্রমশঃ... আগ্রহ নাকি নেশা ? নেশার মতো জিম ওকে টানছিল | একদিন না গেলেই মনখারাপ... সুপ্রতীক ততদিনে ওর দেহমন দখল করতে শুরু করেছে | নীলার সারা শরীর জুড়ে অনুরণন তুলছে সুপ্রতীকের শরীর চেনার নিষিদ্ধ আকর্ষণ.... অদ্ভুত এক উত্তেজনায় নীলা যেন সবসময় আচ্ছন্ন হয়ে থাকত, দেবাশিস ওর পাশেই আছে অথচ নেই... একদিন দুপুরে দেবাশিসের অনুপস্থিতিতে ওরা দু'জন নীলার বেডরুমে মিলিত হলো | সুপ্রতীকের পুরুষালি দেহের সঙ্গে নীলার শরীর পিষ্ট হচ্ছিল, উষর মরুভূমিতে সুধাবর্ষণ করছিল ঠোঁট নিঃসৃত অমৃত, অস্ফুট গোঙানী আর পরিতৃপ্তির মধুর আবেশ... এক অজানা সুখানুভূতি ছড়িয়ে পড়ছিল নীলার কোষে কোষে | মিলন শেষে এমন পরিতৃপ্তি দেবাশিস ওকে কোনদিন দিতে পারে নি | সুপ্রতীককে নীলা বলেছিল ওর চাহিদার কথা, ওর সাদামাটা জীবনের অসহায়তার কথা | সুপ্রতীকই ওকে প্রথম এসকর্ট সার্ভিসের কথা বলে | তুমি যদি চাও তোমার রাণী হওয়া আটকায় কে ? এত সুন্দর ফিগার তোমার, সঙ্গে নিখুঁত মুখশ্রী, অর্থবানদের টাকারা তো তোমার চরণে অর্পিত হওয়ার জন্যই অপেক্ষা করছে |
এভাবেই একদিন শুরু হয়েছিল নীলার এই পথে আসা | সুপ্রতীকই ওকে এসকর্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগটা করিয়ে দেয় | প্রথম প্রথম ওইরকম ছোট ছোট লেস/নেটের পোশাক পড়ে হোটেল রুমে পুরুষদের সামনে ঢুকতে নীলার খুবই লজ্জা করত | কিন্তু টাকা আসছিল জলের মতো | আগের মতো নামী দোকানে সাজানো শোকেসে দামী নেকলেস দেখে মনখারাপ হত না, কার্ডের দৌলতে সেটা গলায় পড়তে পারত | নামী পার্লার, ব্র্যান্ডেড পোশাক আশাক, দামী কসমেটিক্স.... নীলা বড় দ্রুত উপরে উঠছিল | দেবাশিসের সঙ্গে ওর বৈবাহিক সম্পর্কটা ধোঁকার টাটিতে পর্যবসিত হয়েছিল | দেবাশিস অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়তেই ও এসকর্ট সার্ভিসের কাজে বেরিয়ে পড়ত | দেবাশিস অফিস থেকে ফেরার আগেই ও বাড়ি ফিরে আসার চেষ্টা করত কিন্তু ক্লায়েন্টের আবদার মিটিয়ে সবসময় তা সম্ভব হতো না ! তখন ফিরতি পথে শপিং মল ঘুরে নানান জিনিস কেনাকাটা করে ফিরত | দেবাশিসকে বলত দেখেছ সেল দিচ্ছিল, কমদামে অনেক জিনিস পাওয়া যাচ্ছিল, তাই কেনাকাটা করতে করতে আজ ভীষণ লেট হয়ে গেল ! কেনাকেটা শেষে ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই তো আমি চমকে উঠেছি... এই কতক্ষণ এসেছ গো ? বলে একটা সরল মুখভঙ্গি করে হাতের জিনিসপত্র রেখে চা বানাতে চলে যেত | দেবাশিস কিছুই বলতো না শুধু সন্দিগ্ধ চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকত | যেন ওর চোখের দৃষ্টিতেই নীলার মনের ভিতরে লুকোনো সব কথা পড়ে ফেলবে | কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলা সম্ভব নয়, কতদিন আর শপিং মলে গিয়ে গুচ্ছের অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ব্যাগভর্তি করা যায় ?শেষে সুপ্রতীকই বুদ্ধি দিল, সেইমতো নীলা দেবাশিসকে জানালো ও একটা প্রাইভেট অফিসে রিশেপসনিস্টের জব পেয়েছে, এগারোটা থেকে আটটা ডিউটি টাইম, প্রায় ফিফটিন কে স্যালারি দেবে, পার্কস এক্সট্রা | নীলা ভেবেছিল দেবাশিস একবার হলেও জিজ্ঞেস করবে অভিজ্ঞতা ছাড়া কোনো ফ্রেশার্সকে কোম্পানি কেন এত টাকা স্যালারি দেবে ? নীলা সেই মতো উত্তর তৈরি করেই এসেছিল কিন্তু দেবাশিস কোন প্রশ্ন না করে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল | বোধহয় দেবাশিস বুঝে ফেলেছিল যারা অধঃপাতে যেতে চায় তাদের কোনোভাবেই আটকানো যায় না ! যদি সেদিন দেবাশিস নীলাকে আটকাত, কোনভাবেই ওকে কোম্পানির চাকরি করতে দিতে রাজি না হতো... আজ তাহলে... ? অবসর সময়ে নীলা মাঝেমধ্যেই এই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেরায় | কেন ? কেন ? কেন দেবাশিস তুমি একজন পুরুষ হয়েও অসহায়ের মতো নিয়তিকে মেনে নিলে ?
দেবাশিসকে নিয়েই দোলাচলে ছিল নীলা, দেবাশিস চাকরি করার অনুমতিটুকু দিতেই নীলার স্বেচ্ছাচারী জীবন শুরু হয়ে গেল | প্রথমে আটটায় ছুটির কথা বললেও অধিকাংশ দিনই বাড়ি ফিরতে নীলার রাত নটা বেজে যেত | অফিস থেকে ফিরে রাতের খাবার বানিয়ে দেবাশিস নিঃশব্দে নীলার জন্য অপেক্ষা করত, নীলা নামী হোটেলের দামী খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছিল, ঘরোয়া সাদামাটা খাবার ওর মুখে রুচত না ! মাঝে মাঝে দেবাশিসের জন্য দামী খাবার নিয়ে আসত... দেবাশিস হেসে বলত আমি খুব সাধারণ মানুষ নীলা আমার এত দামী খাবার খেলে বদহজম হবে ! নীলা কথা বাড়ানোর পক্ষপাতী ছিল না, দেবাশিসের কথাগুলো হয়ত ওর কানেই ঢুকত না ! টেবিলের উপর খাবারের প্যাকেটগুলো রেখে সোজা বাথরুমে ঢুকে যেত | তারপর নিজেকে ফ্রেশ রাখার জন্য আধঘন্টার একটা হট শাওয়ার... ব্যাস সারাদিনের ক্লান্তি শেষে গভীর ঘুমে নীলার চোখদুটো জুড়ে আসত | দিনগুলো কাটছিল স্বপ্নের মতো, দেবাশিস কেমন আছে সেটা জানার সময় নীলার কাছে ছিল না | দামী দামী জিনিসপত্র কেনার পর পেমেন্টের জন্য যখন নিজের ক্রেডিট কার্ডখানা বাড়িয়ে দিত, তখন ওর মনে হত এতদিনে বাবার কথা সত্যি হয়েছে, রাজকুমারী না হতে পারলেও ও রানি হয়েছে, কলঙ্কে কি বা আসে যায়... কাজলেরও তো কলঙ্ক আছে ! যেদিন নীলা বসার ঘর সাজানোর জন্য পঞ্চান্ন ইঞ্চির এলইডি টিভিটা কিনে নিয়ে এলো সেদিন প্রথম দেবাশিসের ব্যথাতুর চোখের দিকে ওর দৃষ্টি পড়ে গেছিল... কেমন যেন একটা অপরাধবোধ ওর মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলছিল | সেদিন আমতা আমতা করে নীলা দেবাশিসকে বলেছিল আজ অফিসে বাজাজ ফিনান্সের লোক এসেছিল, সবার সঙ্গে আমিও একটা কার্ড করালাম... টিভিটা ইএমআইতে কিনেছি, মাসে মাসে টাকা শোধ করব | কেন জানিনা বহুদিন বাদে সেদিন নীলার ইচ্ছে হয়েছিল দেবাশিসের বুকে মাথা রেখে সব সত্যি কথা বলতে ! এই কলঙ্কের জীবন ছেড়ে আবার সেই ছাপোষা গৃহবধূর জীবনে ফিরে যেতে.... কিন্তু হঠাৎ পাওয়া আর্থিক স্বচ্ছলতা, নিজের ইচ্ছেমতো জিনিস কেনার ক্ষমতা, ক্রমশঃ বেড়ে চলা লোভের থাবার মতো হাত থেকে নিস্তার পাওয়া কি আদৌ সম্ভব ? নীলার পক্ষে তো সম্ভব হয় নি | তাই পরের দিন সকালেই এজেন্সির কাছ থেকে পাওয়া হোটেলের ঠিকানায় ক্লায়েন্ট মিট করতে বেরিয়ে পড়েছিল নীলা ! কিন্তু ও কি স্বপ্নেও ভাবতে পেরেছিল সেদিন ক্লায়েন্ট হিসেবে ওর জন্য হোটেলের বিছানায় কে অপেক্ষা করছে ?
( ক্রমশঃ )
এভাবেই একদিন শুরু হয়েছিল নীলার এই পথে আসা | সুপ্রতীকই ওকে এসকর্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগটা করিয়ে দেয় | প্রথম প্রথম ওইরকম ছোট ছোট লেস/নেটের পোশাক পড়ে হোটেল রুমে পুরুষদের সামনে ঢুকতে নীলার খুবই লজ্জা করত | কিন্তু টাকা আসছিল জলের মতো | আগের মতো নামী দোকানে সাজানো শোকেসে দামী নেকলেস দেখে মনখারাপ হত না, কার্ডের দৌলতে সেটা গলায় পড়তে পারত | নামী পার্লার, ব্র্যান্ডেড পোশাক আশাক, দামী কসমেটিক্স.... নীলা বড় দ্রুত উপরে উঠছিল | দেবাশিসের সঙ্গে ওর বৈবাহিক সম্পর্কটা ধোঁকার টাটিতে পর্যবসিত হয়েছিল | দেবাশিস অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়তেই ও এসকর্ট সার্ভিসের কাজে বেরিয়ে পড়ত | দেবাশিস অফিস থেকে ফেরার আগেই ও বাড়ি ফিরে আসার চেষ্টা করত কিন্তু ক্লায়েন্টের আবদার মিটিয়ে সবসময় তা সম্ভব হতো না ! তখন ফিরতি পথে শপিং মল ঘুরে নানান জিনিস কেনাকাটা করে ফিরত | দেবাশিসকে বলত দেখেছ সেল দিচ্ছিল, কমদামে অনেক জিনিস পাওয়া যাচ্ছিল, তাই কেনাকাটা করতে করতে আজ ভীষণ লেট হয়ে গেল ! কেনাকেটা শেষে ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই তো আমি চমকে উঠেছি... এই কতক্ষণ এসেছ গো ? বলে একটা সরল মুখভঙ্গি করে হাতের জিনিসপত্র রেখে চা বানাতে চলে যেত | দেবাশিস কিছুই বলতো না শুধু সন্দিগ্ধ চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকত | যেন ওর চোখের দৃষ্টিতেই নীলার মনের ভিতরে লুকোনো সব কথা পড়ে ফেলবে | কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলা সম্ভব নয়, কতদিন আর শপিং মলে গিয়ে গুচ্ছের অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ব্যাগভর্তি করা যায় ?শেষে সুপ্রতীকই বুদ্ধি দিল, সেইমতো নীলা দেবাশিসকে জানালো ও একটা প্রাইভেট অফিসে রিশেপসনিস্টের জব পেয়েছে, এগারোটা থেকে আটটা ডিউটি টাইম, প্রায় ফিফটিন কে স্যালারি দেবে, পার্কস এক্সট্রা | নীলা ভেবেছিল দেবাশিস একবার হলেও জিজ্ঞেস করবে অভিজ্ঞতা ছাড়া কোনো ফ্রেশার্সকে কোম্পানি কেন এত টাকা স্যালারি দেবে ? নীলা সেই মতো উত্তর তৈরি করেই এসেছিল কিন্তু দেবাশিস কোন প্রশ্ন না করে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল | বোধহয় দেবাশিস বুঝে ফেলেছিল যারা অধঃপাতে যেতে চায় তাদের কোনোভাবেই আটকানো যায় না ! যদি সেদিন দেবাশিস নীলাকে আটকাত, কোনভাবেই ওকে কোম্পানির চাকরি করতে দিতে রাজি না হতো... আজ তাহলে... ? অবসর সময়ে নীলা মাঝেমধ্যেই এই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেরায় | কেন ? কেন ? কেন দেবাশিস তুমি একজন পুরুষ হয়েও অসহায়ের মতো নিয়তিকে মেনে নিলে ?
দেবাশিসকে নিয়েই দোলাচলে ছিল নীলা, দেবাশিস চাকরি করার অনুমতিটুকু দিতেই নীলার স্বেচ্ছাচারী জীবন শুরু হয়ে গেল | প্রথমে আটটায় ছুটির কথা বললেও অধিকাংশ দিনই বাড়ি ফিরতে নীলার রাত নটা বেজে যেত | অফিস থেকে ফিরে রাতের খাবার বানিয়ে দেবাশিস নিঃশব্দে নীলার জন্য অপেক্ষা করত, নীলা নামী হোটেলের দামী খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছিল, ঘরোয়া সাদামাটা খাবার ওর মুখে রুচত না ! মাঝে মাঝে দেবাশিসের জন্য দামী খাবার নিয়ে আসত... দেবাশিস হেসে বলত আমি খুব সাধারণ মানুষ নীলা আমার এত দামী খাবার খেলে বদহজম হবে ! নীলা কথা বাড়ানোর পক্ষপাতী ছিল না, দেবাশিসের কথাগুলো হয়ত ওর কানেই ঢুকত না ! টেবিলের উপর খাবারের প্যাকেটগুলো রেখে সোজা বাথরুমে ঢুকে যেত | তারপর নিজেকে ফ্রেশ রাখার জন্য আধঘন্টার একটা হট শাওয়ার... ব্যাস সারাদিনের ক্লান্তি শেষে গভীর ঘুমে নীলার চোখদুটো জুড়ে আসত | দিনগুলো কাটছিল স্বপ্নের মতো, দেবাশিস কেমন আছে সেটা জানার সময় নীলার কাছে ছিল না | দামী দামী জিনিসপত্র কেনার পর পেমেন্টের জন্য যখন নিজের ক্রেডিট কার্ডখানা বাড়িয়ে দিত, তখন ওর মনে হত এতদিনে বাবার কথা সত্যি হয়েছে, রাজকুমারী না হতে পারলেও ও রানি হয়েছে, কলঙ্কে কি বা আসে যায়... কাজলেরও তো কলঙ্ক আছে ! যেদিন নীলা বসার ঘর সাজানোর জন্য পঞ্চান্ন ইঞ্চির এলইডি টিভিটা কিনে নিয়ে এলো সেদিন প্রথম দেবাশিসের ব্যথাতুর চোখের দিকে ওর দৃষ্টি পড়ে গেছিল... কেমন যেন একটা অপরাধবোধ ওর মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলছিল | সেদিন আমতা আমতা করে নীলা দেবাশিসকে বলেছিল আজ অফিসে বাজাজ ফিনান্সের লোক এসেছিল, সবার সঙ্গে আমিও একটা কার্ড করালাম... টিভিটা ইএমআইতে কিনেছি, মাসে মাসে টাকা শোধ করব | কেন জানিনা বহুদিন বাদে সেদিন নীলার ইচ্ছে হয়েছিল দেবাশিসের বুকে মাথা রেখে সব সত্যি কথা বলতে ! এই কলঙ্কের জীবন ছেড়ে আবার সেই ছাপোষা গৃহবধূর জীবনে ফিরে যেতে.... কিন্তু হঠাৎ পাওয়া আর্থিক স্বচ্ছলতা, নিজের ইচ্ছেমতো জিনিস কেনার ক্ষমতা, ক্রমশঃ বেড়ে চলা লোভের থাবার মতো হাত থেকে নিস্তার পাওয়া কি আদৌ সম্ভব ? নীলার পক্ষে তো সম্ভব হয় নি | তাই পরের দিন সকালেই এজেন্সির কাছ থেকে পাওয়া হোটেলের ঠিকানায় ক্লায়েন্ট মিট করতে বেরিয়ে পড়েছিল নীলা ! কিন্তু ও কি স্বপ্নেও ভাবতে পেরেছিল সেদিন ক্লায়েন্ট হিসেবে ওর জন্য হোটেলের বিছানায় কে অপেক্ষা করছে ?
( ক্রমশঃ )