Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সুরাজপুরে শুরু
#16
সোফার সামনে টেবিল টাতে জণি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেলটা হাফ বোতল পড়ে আছে। সামনের চারটে গ্লাসের মধ্যে খুঁজে আমার টা বের করলাম। হ্যাঁ এইটাই আমার ছিল। বাকি তিনটের একটাতে উদিতার পিঙ্ক লিপস্টিক লেগে আছে, একটা অম্লান দার আধ খাওয়া গেলাস আর একটাতে করণের সিগারেট ডোবান। সামান্য সোডা ওয়াটার আর আইস বক্স থেকে তিনটে কিউব ঢেলে সিপ টা নিলাম। হ্যাঁ ভালোই বানানো হয়েছে পেগ টা। বারান্দায় উঠে গিয়ে বেতের চেয়ার টা টেনে হাত পা ছড়িয়ে বসলাম। খুব রিলাক্সড লাগছে। সন্ধ্যে থেকে এই নিয়ে আমার সাত নম্বর। ছয় আর সাতের মাঝের এই এক ঘণ্টার ব্রেক টা দরকার ছিল। সানি কে গল্প বলে ঘুম পাড়াতে হয় আবার। আমি বা উদিতা পালা পালা করে এক একদিন এক একজন করে সেই কাজ টা করি যাতে এক গল্প তাড়াতাড়ি পুরনো না হয়ে যায়। আজকে আমার পালা ছিল। সমুদ্রের দিক থেকে একটা মৃদু হাওয়া আসছে আর তাতে যেন নেশা টা বেশী করে চড়ছে। ওরলির এই ফ্ল্যাটের ৩৭ তলায় বসে রাতের মুম্বাই এর সৌন্দর্য দেখার এক আলাদা আনন্দ। ঘড়িতে দেখলাম দশটা বাজে প্রায়। এত তাড়াতাড়ি মাতাল হলে চলবে নাকি। পুরো রাত পড়ে আছে তো মস্তি করার জন্যে।

নেশা করতে বসলেই না চাইলেও ওই দিনটার কথা মনে পড়ে যায়। দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল। কালকে দেওয়ালী, আবার আমরা কোলকাতার বাইরে। সেই অভিশপ্ত দিনটাকে নিয়ে আমি বা আমরা অনেক ভাবে ভেবেছি তারপরে। কি করলে হয়তো ভালো হতো, হয়তো কিছু কিছু জিনিস আটকাতে পারতাম। কিন্তু সত্যি করে বলছি কিছুই ভেবে পাইনি। না আমি, না উদিতা। করণ কে অনেক খুঁচিয়ে, অনেক সেনটু দিয়ে শেষমেষ কিছু খবর বের করতে পারলেও বাকি অনেকটাই আমার কল্পনা দিয়ে পুরন করতে হয়েছে। তাই সেগুলোর কতটা সত্যি আর কতটা নিছক আমার কল্প বিলাসি মনের ভ্রান্তি সেটা পরখ করার কেউ নেই।
বিশ্ব বখাটে ডাকাবুকো করণ সৎ বাবার ব্যবসায়ে যোগ দিয়ে এক বছরের মধ্যে বুঝে গিয়েছিল সে কাজ ওর জন্যে নয়। তারপর সেখান থেকে কি করে র’ এর ইকনমিক সারভেলান্স উইং এ ঢুকেছিল তা আমার জানা নেই। নিজের বাবা, সৎ বাবা, নিজের মা বা সৎ মা কারোর না কারোর খুব ভালো যোগাযোগেই হবে হয়তো। প্রথমে পোস্টিং ছিল মুম্বাই তেই। শেয়ার বাজারে পাকিস্তানের কালো টাকা কিভাবে খাটছে সেটার ওপরে ফিল্ড এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিল। সেখানেই আলাপ হয় তরুণী আইপিএস অফিসার সুদেস্না রাউতের সাথে। সুদেস্না ডেপুটেশন এ এসেছিল র’ তে। সুদেস্নার বিভাগ ছিল ইন্টারনাল সিকিউরিটি আর সেই সুত্রে পোস্টিং হয় পাটনা তে। দায়িত্ব ছিল বিহার ছত্তিসগড় এলাকার মাওবাদি আর রনবিরসেনার আর্মস স্মাগ্লিং নেটওয়ার্ক টার খোঁজ লাগানো।

করণের সাথে ঠিক প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক না থাকলেও একটা লিভ ইন রিলেশন বা ইংরিজি তে যাকে বলে ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিতস টাইপের কিছু একটা ছিল। মেঠো ছেলে করণও চেষ্টা চরিত্র করে দপ্তর বদল করে চলে আসে সুরাজপুরে। দীর্ঘ তিন বছরের চেষ্টায় ও আর সুদেস্না গড়ে তুলেছিল একটা স্ত্রং ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক যেটা এতদিন আইবি বা লোকাল পুলিশ করে উঠতে পারেনি। আমরা সুরাজপুরে ঘুরতে যাওয়ার ছয়মাস আগে হাজারীবাগের কাছে লোকাল ট্রেন এ একজন সন্দেহজনক চিনা টুরিস্ট ধরা পড়ে। পিএলএ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য ওই চাইনিজ কে ধরার খবর একদম চেপে দেওয়া হয়, এমনকি পুলিশ ও জানতে পারেনি যে এরকম কিছু একটা হয়েছে। আর সেখানেই অপারেশন চিনা চাচার জন্ম। করণ নিঃশব্দে অনুপ্রবেশ করে সত্যি কারের চিনা চাচার জালে। যেহেতু ভদ্রলোক কোনোদিন কাউকে নিজের মুখ দেখান নি গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য, করণের সেদিক দিয়ে একটা সুবিধাই হয়েছিল। কে যে এই চিনা চাচা সেটা না জেনেই সবাই ওর সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছিল। সেখান থেকেই জানতে পারে ডাবল এজেন্ট সামশের দু নৌকায় পা রেখে চলছে। এরকম মাস তিন চারেক চলার পর হটাত শুকিয়ে যেতে থাকে খবরের সূত্র। একের পর এক রেপ বা খুন হতে থাকে সুদেস্নার নেটওয়ার্ক এর খবরি রা, যার একজন ছিল ঝুম্লা। ঝুম্লার গন ;., আর খুনের পরে সুদেস্নার যেন আগুন হয়ে গেছিলো। পাল্টা আঘাতে রনবির সেনার চার পাঁচ জন কে এক রাত্তিরে উড়িয়ে দেয় স্পেশাল এজেন্ট রা আর ছড়িয়ে যায় চিনা চাচার লিফলেট। ওদের আসল টার্গেট ছিল সামশের কিন্তু করণ শেষ মুহূর্তে আচ পেয়ে ওকে খবর দিয়ে দেয়। সামশের বেঁচে যায় ও যাত্রা। সামশের কে বাঁচানোর ওর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল অপারেশন টাকে সফল করা। কিন্তু এই ঘটনাতে করণ আর সুদেস্নার মধ্যে একটা চাপা দ্বন্দ শুরু হয়ে যায় এবং ওরা একে অন্যকে এড়িয়ে নিজে নিজের মতন কাজ করা শুরু করে। খুব শিগগিরি লাল পার্টি সন্দেহ করা শুরু করে অন্য কেউ চিনা চাচার নাম নিয়ে এই খুন গুলো করেছে কারণ ওদের হাই কমান্ড থেকে কেউ সেরকম নির্দেশ দেয়নি বা অবন্তিপুরের মাটিতে রনবির সেনার ওপরে এরকম মাপের হামলা করার মতন লোকবল তখনো ওদের ছিলোনা। অপারেশন চিনা চাচার ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হতে করণের বারন না শুনে মরিয়া সুদেস্না নিজে ফিল্ডে নেমে সুরাজপুরে যায় সোর্স দের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে। ছদ্ম পরিচয় নিয়েছিল পাটনার কলেজে পড়া এক মেয়ের যে সোশ্যাল স্টাডি করার জন্যে এসেছে ওখানে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত সামশেরের লোকেরা ওকে তুলে নিয়ে যায় কোঠা তে আর পরের দিন অর্ধ নগ্ন মৃত দেহ পাওয়া যায় খালে। করণের ঘোরতর সন্দেহ হয় যে সামশের জেনে শুনে সুদেস্না কে তুলেছিল আর ওকে নিশ্চয়ই আর কেউ সুদেস্নার আসল পরিচয় দিয়ে দিয়েছিল। সেটা লোকাল পুলিশ বা আইবি র ভিতরের কেউ হতে পারে। একটু খোঁজ খবর নেওয়ার পড়ে জানতে পারে অবন্তিপুরের লাল পার্টির মাথা সুমন এই প্ল্যান তা ছকেছিল। করণ সেদিনই জানতে পারে যে সুমন এতদিন সুদেস্নার পে রোলে ছিল। ওই ফাঁদ পেতে সেদিন ডাবল ক্রস করেছিল সুদেস্না কে। করণের নিজের কভারও খুব সম্ভবত লাল পার্টির সন্দেহর তালিকায় চলে গেছিলো। বেশ বুঝতে পারছিল যে ওর প্রতিটা নড়াচড়া এখন নজরবন্দি। এই অবস্থায় একমাত্র উপায় ছিল বুধন আর মউয়া। ওপর তলা থেকে মারচিং অর্ডার ও চলে এসেছিল। সুদেস্নার ঘটনার পরে ওর সেফটি নিয়ে কোনও গ্যারান্টি ছিল না আর। অপারেশন চিনা চাচাকে গোটানোর জন্যে করণের হাতে আর মাত্র সাত দিন সময় ছিল যখন আমি ওকে ফোন করে বলি যে আমরা আসছি।
[+] 4 users Like ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সুরাজপুরে শুরু - by ronylol - 18-03-2019, 03:00 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)