18-03-2019, 02:54 PM
ঘুরঘুট্টি অন্ধকারের মধ্যে করণ যেন নাইট ভিশন ক্যামেরা দিয়ে দেখতে পাচ্ছিল। রাস্তা টা পুরটাই কাঁচা। চাকার চাপে নুড়ি কাঁকড়ের ছিটকে যাওয়ার শব্দ আর ইঞ্জিনের একটা খুবই মৃদু ঘড়ঘড় আওয়াজ ছাড়া বাকি সব কিছু যেন নিঝুম মেরে আছে। কুয়াশার চাদর টা ছড়িয়ে আছে ইতস্তত। আমার খটকা লাগছিল জীপের আওয়াজ টা। আজ পর্যন্ত যতগুলো জীপ গাড়িতে চড়েছি এটা তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম শব্দ করে। নাহ শুধু জীপ নয়, কলকাতায় আমার যে মারুতি এস এক্স ফোর টা আছে টার চেয়েও কম শব্দ। অদ্ভুত, অথচ আমি গাড়ি টাকে দেখেই চিনতে পেরেছিলাম। এটা যোঙ্গা। ভারতের সেনাবাহিনি এই গাড়ি টা ব্যাবহার করে।
আমি বি আর ও তে থাকা কালীন অনেক দেখেছিলাম। ঘন কালো ধোঁয়া আর ইঞ্জিনের আওয়াজ দেখে দূর থেকেই বোঝা যেত। হয়তো আমারি ভুল বা করণ যা ওঁচা ছেলে, নির্ঘাত কোনও দামি সাইলেন্সার লাগিয়েছে গাড়িতে। করণ কোনও কথা বলছেনা। ওঁকে অনেক মনোযোগ করে চালাতে হচ্ছে। আমি রাইফেল টা আঁকড়ে মনমড়া হয়ে গাড়ির ঝাকুনি সামলাতে লাগলাম। উদিতাকে একা ফেলে আস্তে একদম ইচ্ছে করছিল না। বেচারির ওপর দিয়ে ওরকম একটা ধাক্কা গেল তার ওপরে অম্লান দার হাবভাব একেবারেই ভাল ছিলনা। উদিতার ঘুমিয়ে থাকা অবস্থার খারাপ ফায়দা নিতে পারে। তবে লোকটাতে দেখে মনে হয়না একটু উকিঝুকি মেরে দেখা বা বড়জোর হাত টাত দেওয়া ছাড়া বেশী কিছু করতে পারবে। প্রিয় বন্ধু করণের সাথে এডভেঞ্চারের হাতছানিকে এড়ানো অনেক বেশী কঠিন ছিল। আশাকরি উদিতাকে পড়ে বুঝিয়ে বলতে পারবো।
বেশ বুঝতে পারছিলাম একটা ভালোই গোলমালে জড়িয়ে পড়েছি। আমার হাতের .২২ বোর বন্দুক টা আজকাল খেলা ধুলার জগতেই বেশী ব্যাবহার হয়। গ্রাম জঙ্গলের দিকে অনেকেই এটা রাখে ছোটখাটো শিকার বা আত্মরক্ষার জন্যে। এটা দিয়ে শেষ কবে কোনও মানুষ মরেছিল তার বোধহয় হিসেব নেই। তবে জখম করতে পারবে কাউকে। করণের পিস্তল টাও পুচকে মতন। লুকিয়ে ফেলার জন্যে আইডিয়াল। তবে যে জিনিস টা এখনো মনের ভিতরে খচ খচ করে চলেছে সেটা ওর চকচকে খুকরি টা। ওই জিনিস টা কোনও সাধারন লোক সাধারন অবস্থায় বারান্দার জুতর র*্যাকে লুকিয়ে রাখবেনা। আমি করণের দিকে অপাঙ্গে তাকালাম। কালো শাল জড়ানো আমার ছেলেবেলার বন্ধু টাকে একটু অচেনা লাগছে নাকি।
মিনিট দশেক চালানোর পর একটা কালভারট এর কাছে গিয়ে দাড় করাল জীপটাকে। চারদিকে কুয়াশাতে দশ মিটার পরের কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না।
-“এটা কোথায় দাড় করালি?”, আমি জিগাসা করলাম।
করণ নেমে গিয়ে কাল্ভারত এর কাছটায় মাটিতে হাতু গেড়ে বসে বলল, “কাল্ভারতের ওপাশ টা দেখ। ওটাই সাঁওতাল বস্তি। ওরা এখান দিয়ে ডান দিকে বেঁকে গেছে। ইয়াদবের একটা পেল্লাই র*্যাংলার আছে। ভেজা মাটিতে দাগ বোঝা যাচ্ছে।”… “ডানদিকের রাস্তা টা ওই সোজা রেল লাইনের পাশ দিয়ে অবন্তি পুরের দিকে চলে গেছে।”
-“শালা, ফেলুদারও দাদা দেখছি। দেখতে পাচ্ছিস কি করে এত কিছু?”, আমি সিট এর ওপরে উঠে দাড়িয়ে জিগাসা করলাম।
-“হ্যাঁ, সিধু জ্যাঠা বলতে পারিস”, করণ হেসে বলল, “আমরা ডান দিক দিয়ে যাবনা। এদিকে কোনও কভার নেই। ওরা যদি লাইনের ধারের ভাঙ্গা ওয়াগন গুলোর কাছাকাছি থাকে তাহলে অনেক আগে থেকে আমাদের দেখতে পেয়ে যাবে। আমরা বা দিকের কাঁচা রাস্তা দিয়ে জঙ্গল হয়ে ঘুরপথে যাব। শেষ দিকের কিছুটা হেঁটে বা দৌড়ে পেরোতে হবে”।
-“আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। তোর প্ল্যান টাকি? আমরা লুকিয়ে যাব কেন? গাড়ির হেড লাইট জ্বালিয়ে জোরে হর্ন মারতে মারতে যাব। যাতে ওরা গোলমাল দেখে মেয়েটাকে ছেড়ে ভয় পেয়ে চলে যায়।”, করণের প্ল্যান আমার মাথায় ঢুকল না। ছেলে গুলোকে তো আর আমরা অ্যারেস্ট করতে জাচ্ছিনা। মউয়া কে যে ভাবে হোক ফিরিয়ে নিয়ে আস্তে হবে।
-“সামশের সিঙ্ঘ সুরাজপুরের সুলতান। ও আমাদের গাড়ির আওয়াজে পালাবে না রে। ওর কাছে একটা এস এল আর আছে যেটা দিয়ে আধ কিমি আগেই আমাদের ঘিলু উড়িয়ে দেবে। জানিনা আজকে সেটা নিয়ে ঘুরছে কিনা।”, করণ আমার যুক্তি এক কোথায় নস্যাত করে দিল।
-“করণ, উদিতা জানতেও পারলনা আমরা এইসব করছি। জানলে ও কিছুতেই আস্তে দিতনা। পুলিশ কে খবর দিলে হয়না? এসব তো আমাদের ধরাছোঁয়ার অনেক ওপর দিয়ে যাচ্ছে।”, আমার গলাটা একটু ধরে এলো। উদিতার মায়াবী মুখটা মনে পড়েই হয়তো। আমার এই খেলনার মতন বন্দুক আর ওই পুচকে পিস্তল নিয়ে সেমি অটোমেটিক এর সামনা করতে হবে ভেবেই পেটের ভিতর গুরগুর করে উঠল।
-“সোমনাথ, এই জঙ্গলে বানচোত পুলিশ শুধু লাশ কুড়াতে আসে রে। আমরা শুধু মেয়েটার জান বাঁচানোর চেষ্টা করছি, ইজ্জত তো ছেড়েই দে। কাল সকাল অবধি ওয়েট করলে মউয়ার ল্যাঙট বডি ওই খাল দিয়ে ভেসে আসবে।” করণ ঠাণ্ডা গলায় বলল।
“তোকে উদিতার কাছ থেকে সরিয়ে আনতে আমার কি খুব ভাল লেগেছে হতভাগা। সত্যি বলতে কি আজকে আবার তোর বউয়ের প্রেমে পড়লাম রে নতুন করে। এত সুন্দরী একটা মেয়ে আমার বাড়ি এসেছে, আমারও কি ইচ্ছে করে নাকি রাস্তায় গিয়ে রংবাজি করতে?”
-“শালা মাদারচোত, পুরকি তোমার যায়না। লম্পটের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে গিলছিলি চোখ দিয়ে, তাতেও আশ মেটেনি। যাহ্* আজকে ভালোয় ভালোয় বাড়ি ফিরলে চুদিস আমার বউকে”, আমি নকল রাগ দেখিয়ে বললাম।
-“আলবাত চুদব, প্রানের আশ মিটিয়ে আগামি সাতদিন ধরে মস্তি করবো। শালা সুরাজপুরে কেউ জবান দিলে ফেরত নিতে পারেনা। চল জলদি করে কাজ মিটিয়ে বাড়ি ফিরি। আজ রাত থেকেই শুরু হবে তাহলে”, করণ গাড়িতে ফিরে স্টার্ট দিয়ে দিল।
আমি হেসে ফেললাম ওর কথা বলার ভঙ্গিতে। মাল টার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। আজ কতদিন পরে দেখা হল। ফাইনাল ইয়ারের পরে মাঝে একবার দিল্লি তে দেখা হয়েছিল। তখনো আমার বিয়ে হয়নি। খুব ব্যাস্ত ছিল। দু মিনিটও কথা হয়নি। তারপরে মাঝে মধ্যে ফোন করতো, উদিতা আর আমার খবর নিত। তারপরে পাঁচ ছয় বছর একদম বেপাত্তা। গত বছর পুজর আগে হটাত ফোন আর সেভাবেই আবার যোগাযোগ শুরু। না চাইতেও হটাত কল্পনা করে ফেললাম, করণ আর উদিতাকে একসঙ্গে, নিবিড় আলিঙ্গনে। বলতে নেই, মন্দ লাগ্লনা ভাবতে।
-“একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস সমু?”, করণ বলল।
-“নাহ তো কি?”, উদিতা আর করণের কাল্পনিক রোঁম্যান্স ভেঙ্গে আমি জবাব দিলাম।
-“ এত বড় একটা ঘটনা ঘটল আর সাঁওতাল বস্তি পুরো শুনশান। কেউ বাইরে বেড়িয়ে হইচই করছে না। এর আগে এরকম একটা ঘটনা হয়েছিল বছর দুএক আগে। সবাই সড়কি মশাল নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিল। আজকে কোত্থাও কেউ নেই। এই জঙ্গলের রাস্তা তেও মাঝ রাত অবধি অনেকে তাড়ি খেয়ে পরে থাকে বা নিজের, অন্যের বউ কে নিয়ে মস্তি করে।”, করণ ভ্রূ কুঁচকে বলল।
-“হয়তো সবাই ভয় পেয়ে আছে। তুই তো বলছিলি এখানে সবাই ইয়াদব কে যমের মতন ভয় পায়। ”, আমি আমতা আমতা করে যুক্তি খারা করার চেষ্টা করলাম। আমি সুরাজপুরে এসেছি বারো ঘণ্টাও হয়নি। এর মধ্যেই ঘটনার ঘনঘটায় কুপকাত প্রায়।
করণ তাও বিড়বিড় করে বলে চলল, “…জোছনার বর আজকে তিন বছর পরে বাড়ি ফিরছে কেন…”। করণ যখন এতবার করে বলছে তখন কিছু একটা গোলমাল তো আছেই। আমি রাইফেল টাকে একটু বাগিয়ে ধরে বসলাম। এই সামশের সিঙ্ঘ টা আবার কে কেজানে। করণ নিত্য নতুন নাম বলছে। ইয়াদবের কোনও এক চেলা যে এস এল আর নিয়ে ঘোরে। আজকে যদি আমাদের ভাগ্য খুব ভাল থাকে তাহলে হয়তো সেটাকে আনবে না কিন্তু নেহাত খালি হাতে তো আর সাওতাল বস্তি থেকে মেয়ে তুলতে আসবে না। যা আনবে তাই আমাদের স্বর্গ প্রাপ্তির জন্যে যথেষ্ট।
প্রচণ্ড ঝাকুনি দিয়ে গাড়িটা হটাত দাড়িয়ে গেল। আমার হাত থেকে বন্দুক টা প্রায় রাস্তায় পরে যাচ্ছিল, কোনওমতে সামলালাম। করণের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও এক দৃষ্টে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। এই অন্ধকারে কি দেখছে কে যানে।
-“কি হল রে করণ? কোনও জংলি জানোয়ার নাকি?”, আমি ফিস ফিস করে বললাম।
-“পারকিং লাইট টা একবার জ্বালাবো তার মধ্যে দেখেনিস। বা দিকের ঝোপের পাশের গাছটার দিকে তাকা”, করণ আরও চাপা গলায় বলে উঠল। পারকিং লাইট একবার জ্বালিয়েই নিবিয়ে দিল। “দেখতে পেলি গামছা টা?”, করণ আস্তে করে গাড়িটাকে রাস্তার ডানদিকের ঢাল ধরে নামিয়ে দিল। আমি আবছা দেখতে পেয়েছিলাম কোনও একটা ছোটো কাপড়ের টুকরো ঝুলছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তাতে এত আশ্চর্য হওয়ার কি আছে বুঝতে পারলাম না। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে ফিস ফিস করে বলল “নেমে পর… এই রাস্তায় আর যাওয়া যাবেনা। আই ই ডি পোঁতা আছে।”
-“যাহ্* শালা…”, আমার মুখ ঝুলে পড়লো। “কি করে বুঝলি?”
-“ওই গামছা টা সিগন্যাল, তাদের জন্যে যারা জানে।”
-“কি জানে? আর তুই কি করে জানলি? এসব কি হচ্ছে করণ?”, আমি ওর শাল টা খামচে ধরলাম। অক্টোবরের ঠাণ্ডাতেও আমি ভিতরে ভিতরে ঘেমে ভিজে গেছি। সব কিছু ছেড়ে ছুটে পালাতে ইচ্ছে করছে।
-“জানার জন্যে চোখ খোলা রাখতে হয়। আমি এই রাস্তা দিয়ে পরশু রাতেও গেছি। কোথাও কিছু ছিলনা। সুরাজপুরের জঙ্গলে কেউ অকারণে গাছে কাপড় বেঁধে রাখবে না। এই একটাই রাস্তা সোজা গেছে হাজারিবাগের সি আর পি ক্যাম্পে এখান থেকে মাইল কুড়ি দূরে। অন্য রাস্তা টা অবন্তিপুরের দিক দিয়ে ন্যাশনাল হাইওয়ে তে মিশেছে। আর আছে রেল লাইন। অবন্তিপুরে গোলমাল হলে সি আর পি এই রাস্তা দিয়েই আসবে। এই ফাঁদ টা ওদের জন্যেই পাতা হয়েছে। লাল পার্টি মনেহয় আসছে ইয়াদবের ঘাঁটির দখল নিতে।”, করণ এক নিশ্বাসে বলে গেল। জীপের বনেট টা খুলে দ্রুত হাতে কিসব করছে যেন।
-“উদিতা যে বাড়িতে একা আছে করণ, চল ফিরে চল। এসব আমাদের ক্ষমতার অনেক বাইরে।”, আমি কাতর ভাবে অনুনয় করে উঠলাম। সুরাজপুরের জঙ্গলে মাওবাদীদের গুলি খেয়ে খবর হওয়ার মতেই ইচ্ছে নেই আমার। “সুমন সন্ধ্যে বেলা একবার ঘুরে গেছে তোর বাড়িতে। আমাদের হাতে মার খেয়েছে। বদলা নিতে আস্তেই পারে।”
-“লাল পার্টি আমার বাড়ি যাবেনা। ওখানে ওদের কিছু পাওয়ার নেই। ওরা যাবে ইয়াদবের কোঠায়। সুমন বদলা নিতে হয়তো আসবে পরে, আজকে রাতে ভাঙ্গা হাত নিয়েই ব্যাস্ত থাকবে রে। এখন আগে মউয়া কে বাঁচাতে হবে”, করণ একি ভাবে বলে গেল। “আঃ, পেয়েছি” । আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে বলল, “স্পার্ক প্লাগ গুলো খুলে নিলাম, আর কেউ ইউজ করতে পারবে না গাড়িটা”। কোমরের পিছন থেকে পিস্তল টা নিয়ে এসে কক করে নিল। আমার কাছে এসে বলল, “এই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নর্থ এর দিকে মিনিট দশেক চললেই কাশ বন টা পড়বে। ওখান থেকে ডান দিকে ভাঙ্গা ওয়াগন গুলো দেখা যায়। কাশ বন টা আমাদের কভার দেব্যা ভাল। তুই আমার থেকে তিন মিটার পিছনে পিছনে এইট ও ক্লক এ থাকবি সবসময়। ওয়াগন গুলোর কাছাকাছি গিয়ে আবার প্ল্যান করবো নেক্সট স্টেপস। ক্লিয়ার?”
বেকুবের মতন ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম। বিশ্ব বখাটে করণ কি করে এরকম একের পর এক খেল দেখাচ্ছে বুঝতে পারলাম না। মনে হচ্ছে এখানকার পথঘাট হাতের তালুর মতন চেনে। আমাকে এখনো বালিগঞ্জের রাস্তায় ছেড়ে দিলে হারিয়ে যেতে পারি। তিন বছরে করণ এখানে কতবার এসেছে। ওর তো বম্বে তে রিয়েল এস্টেট এর ব্যাবসা আছে জানতাম। ব্যাবসায়ি রা কি এতটা পাগল হয়। কথাকার কোন এক মেয়ের জন্যে এতবর ঝুঁকি নিচ্ছে। শালা আমাকেও ফাসাচ্ছে।
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে করণ ছুটে চলল ঝড়ের মতন। আমি হাফাতে হাফাতে মনের মধ্যে হাজার রকম যোগ বিয়োগ গুন ভাগ করে অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করে যেতে লাগলাম। জল আমার মাথার অনেক ওপর দিয়ে বইছে।
করণ আর সোমনাথের কথা বারতার ধরন ধারন দেখে অম্লান দার মাথা গরম হয়ে গেল। ওরা যেন আজকে সন্ধ্যের ব্যাপারটার জন্যে ওঁকেই দায়ি করছে। শালা শাড়ি খুলে গেল তো সব্বাই চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলে শুধু আমাকেই কেন বলা, অম্লান দা মনে মনে বলতে লাগলেন। বউ কে নিয়ে বন্ধুর কাছে বেশ্যা বাজি করাতে নিয়ে এসেছে সোমনাথ অম্লান দা বেশ বুঝতে পারছিলেন, নইলে এভাবে সায়া তুলে দেয় প্রায় কোমর অবধি আর সোমনাথ চুপ করে বসে বসে দেখে? সুমন বাবু কে আর দোষ দিয়ে লাভ কি।।আর কিছুক্ষণ উদিতা ওরকম শাড়ি খোলা অবস্থায় থাকলে উনি নিজেই হয়তো হাত বাড়িয়ে মাই টিপে দিতেন। শালির ফিগার টা জব্বর। সব কিছু যেন টস টস করছে। অম্লান দা সড়াৎ করে জিভের জল টেনে নিলেন। করণ আর সোমনাথ বেড়িয়ে গেছে দশ পনেরো মিনিট হল। অম্লান দা বারান্দায় বসে বসে একের পর এক সিগারেট টেনে যাচ্ছেন। ঠিক মনস্থির করতে পারছেন না ওপরে যাবেন কি যাবেন না। যেভাবে বন্দুক উঁচিয়ে বলে গেল, কিছু কেলেঙ্কারি হলে জানে না মারুক হাত পা ভেঙ্গে দিতেই পারে। সেটাতেও অম্লান দার যথেষ্টই ভয়। বুধু জোছনাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে গেছে। ওখানেই ডিভানে বসে গুঙ্গিয়ে গুঙ্গিয়ে কাদছিল একটু আগেও। এখন চুপ মেরে গেছে। মেয়ে তো পুরো রেনডির মতন পোশাক আসাক পড়ত। ইয়া বড় বড় মাই, টাইট জামা, আধ খোলা পেট ইয়াদবের লোকেদের নজর তো পড়বেই। অম্লান বাবুর ধারনা হল এই সাঁওতাল মেয়ে গুলোর সবকটার মধ্যেই মান ইজ্জতের ব্যাপার গুলো আলগা। এই জোছনা নিশ্চয়ই করণের কাছে মাঝে মধ্যেই থাপান খায়। ব্যাচেলর ছেলে থাকে নিশ্চয়ই শালা মস্তি করে। পাঁচ দশ টাকা গুঁজে দেয় মনে হয় হাতে। করণ যা চোদনা ছেলে মা কে বাড়ি পাঠিয়ে মেয়ে কে ডেকে আনে মনে হয়। নাহ…কিছু একটা করতে তো হবেই। ঘুম তো আর আজকে হবে না। অম্লান দা মনস্থির করে উঠে পরলেন। উপরে গিয়ে দেখে আসবেন একবার উদিতা কে। যদি অঘোরে ঘুমায় তাহলে একটু আধটু খুলে টুলে দেখবেন। বেশী কিছু করাটা রিস্কি। হটাত জেগে গেলে বিরাট বাওয়াল হয়ে যাবে।
বসার ঘরের দরজার পাস দিয়ে পা টিপে টিপে এগলেন অম্লান দা। চান না বুধু বা জোছনা ওনাকে দেখুক ওপরে যেতে। দেখলেই বা কি যদিও বলবেন উদিতা ঠিক ঠাক আছে নাকি সেটাই দেখতে গেছিলেন। কিন্তু তাও যত সাক্ষী কম রাখা যায়। দরজা দিয়ে একবার উঁকি মেরে দেখে থমকে গেলেন। ঘরে একটা মোম্বাতি জ্বলছে। নিবু নিবু তার আলো। ডিভানের ওপরে জোছনা শুয়ে রয়েছে কাত হয়ে। বুক পুরো খোলা। বিরাট দুধ দুটো ঝুলে পড়েছে সাইডে। কাপড় টা এক পাল্টা হয়ে কোমর আর পাছার ওপর দিয়ে গেছে। একটু মেদ বহুল পেট আর গভীর চেরা নাভি। নগ্ন নারী শরীরের আকর্ষণ এড়ানো কঠিন। অম্লান দা ঘরে ঢুকে দেখলেন বুধু নেই। সামনের বারান্দা দিয়ে তো বেরয়নি তাহলে কি পিছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে গেছে? শালার মনেহয় মেয়েছেলের ধাত নেই। নইলে এমন দৃশ্য ছেড়ে কেউ যায়। জোছনা এখনো বিড়বিড় করে মউয়া মউয়া করছে। তোর বিতিয়া এতক্ষণে বারো ভাতারে হয়ে গেছে, অম্লান দা মনে মনে বললেন। জোছনার একদম কাছে গিয়ে খোলা কোমরে হাত রেখে হালকা করে ডাকলেন “অ্যায় জোছনা, মাত রোঁ আভি”। ভিতরে ভিতরে প্রচণ্ড উত্তেজনা বোধ করছেন তিনি। এত কাছ থেকে ল্যাঙট মেয়েছেলে অনেক দিন পরে দেখছেন। জোছনা কি নেশা করেছে নাকি, কোনও সাড়া দিলনা। অম্লান দার সাহস বেড়ে গেল। উদিতার চিন্তা মাথা থেকে বেড়িয়ে গেছে এতক্ষণে। এটা অনেক সেফ হবে। যদি হটাত জেগেও যায় তাহলে দেবেন নাহয় কিছু টাকা গুঁজে হাতে। বাচ্চা ছেলের মতন লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে বসার ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলেন। ফিরে এসে ডিভানের পাশে মেঝেতে থেবড়ে বসলেন। বাচ্চারা যেমন খাবার দেখলে ছটফট করে, ওনার এখন তাই অবস্থা। নেশা গ্রস্ত জোছনার কুচকুচে কালো শরীর ওনার সামনে অর্ধ নগ্ন। অম্লান দা কোথা দিয়ে শুরু করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। ঠোঁটে চুমু খাবেন না ঠিক করলেন। কোথাকার বনে জঙ্গলে থাকে, মুখ ঠিক ঠাক ধোয় কিনা কে জানে। জোছনার কোমর থেকে কাপড় টা এক টানে সরিয়ে দিলেন। আগে তো পুরপুরি ল্যাঙট করি, ভাব্লেন তিনি। মোটা মোটা মসৃণ উরু মোমের আলোয় চকচক করে উঠল। দুই উরুর মধ্যিখানে ঘন চুলে ঢাকা যোনি। অম্লান দা এক ঝলকে ভাব্লেন, উদিতার টা মনে হয় শেভড। প্যানটির আশ পাস দিয়ে চুল তো দেখেননি তিনি আইস প্যাক লাগানর সময়। মরুক গে যাক, মন কে আবার এই ঘরে ফিরিয়ে আনলেন অম্লান দা। ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে জোছনার কালো বালে বিলি কেটে দিতে লাগলেন। মাগী এখনো বেহুঁশ। মেয়ের শোকে না নেশা ভাঙে কে জানে। এরকম থাকলেই ভাল। বেশ একটা বিবেক দংশনহীন ভাবে অপকর্ম করা যায়। নিজেকে নিজে বাহবা দিলেন সঠিক চয়েস করার জন্যে। আরে বাবা মাগী হলেই হল, শহুরে বা গাইয়া। যেটাতে ঝামেলা কম।
আমি বি আর ও তে থাকা কালীন অনেক দেখেছিলাম। ঘন কালো ধোঁয়া আর ইঞ্জিনের আওয়াজ দেখে দূর থেকেই বোঝা যেত। হয়তো আমারি ভুল বা করণ যা ওঁচা ছেলে, নির্ঘাত কোনও দামি সাইলেন্সার লাগিয়েছে গাড়িতে। করণ কোনও কথা বলছেনা। ওঁকে অনেক মনোযোগ করে চালাতে হচ্ছে। আমি রাইফেল টা আঁকড়ে মনমড়া হয়ে গাড়ির ঝাকুনি সামলাতে লাগলাম। উদিতাকে একা ফেলে আস্তে একদম ইচ্ছে করছিল না। বেচারির ওপর দিয়ে ওরকম একটা ধাক্কা গেল তার ওপরে অম্লান দার হাবভাব একেবারেই ভাল ছিলনা। উদিতার ঘুমিয়ে থাকা অবস্থার খারাপ ফায়দা নিতে পারে। তবে লোকটাতে দেখে মনে হয়না একটু উকিঝুকি মেরে দেখা বা বড়জোর হাত টাত দেওয়া ছাড়া বেশী কিছু করতে পারবে। প্রিয় বন্ধু করণের সাথে এডভেঞ্চারের হাতছানিকে এড়ানো অনেক বেশী কঠিন ছিল। আশাকরি উদিতাকে পড়ে বুঝিয়ে বলতে পারবো।
বেশ বুঝতে পারছিলাম একটা ভালোই গোলমালে জড়িয়ে পড়েছি। আমার হাতের .২২ বোর বন্দুক টা আজকাল খেলা ধুলার জগতেই বেশী ব্যাবহার হয়। গ্রাম জঙ্গলের দিকে অনেকেই এটা রাখে ছোটখাটো শিকার বা আত্মরক্ষার জন্যে। এটা দিয়ে শেষ কবে কোনও মানুষ মরেছিল তার বোধহয় হিসেব নেই। তবে জখম করতে পারবে কাউকে। করণের পিস্তল টাও পুচকে মতন। লুকিয়ে ফেলার জন্যে আইডিয়াল। তবে যে জিনিস টা এখনো মনের ভিতরে খচ খচ করে চলেছে সেটা ওর চকচকে খুকরি টা। ওই জিনিস টা কোনও সাধারন লোক সাধারন অবস্থায় বারান্দার জুতর র*্যাকে লুকিয়ে রাখবেনা। আমি করণের দিকে অপাঙ্গে তাকালাম। কালো শাল জড়ানো আমার ছেলেবেলার বন্ধু টাকে একটু অচেনা লাগছে নাকি।
মিনিট দশেক চালানোর পর একটা কালভারট এর কাছে গিয়ে দাড় করাল জীপটাকে। চারদিকে কুয়াশাতে দশ মিটার পরের কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না।
-“এটা কোথায় দাড় করালি?”, আমি জিগাসা করলাম।
করণ নেমে গিয়ে কাল্ভারত এর কাছটায় মাটিতে হাতু গেড়ে বসে বলল, “কাল্ভারতের ওপাশ টা দেখ। ওটাই সাঁওতাল বস্তি। ওরা এখান দিয়ে ডান দিকে বেঁকে গেছে। ইয়াদবের একটা পেল্লাই র*্যাংলার আছে। ভেজা মাটিতে দাগ বোঝা যাচ্ছে।”… “ডানদিকের রাস্তা টা ওই সোজা রেল লাইনের পাশ দিয়ে অবন্তি পুরের দিকে চলে গেছে।”
-“শালা, ফেলুদারও দাদা দেখছি। দেখতে পাচ্ছিস কি করে এত কিছু?”, আমি সিট এর ওপরে উঠে দাড়িয়ে জিগাসা করলাম।
-“হ্যাঁ, সিধু জ্যাঠা বলতে পারিস”, করণ হেসে বলল, “আমরা ডান দিক দিয়ে যাবনা। এদিকে কোনও কভার নেই। ওরা যদি লাইনের ধারের ভাঙ্গা ওয়াগন গুলোর কাছাকাছি থাকে তাহলে অনেক আগে থেকে আমাদের দেখতে পেয়ে যাবে। আমরা বা দিকের কাঁচা রাস্তা দিয়ে জঙ্গল হয়ে ঘুরপথে যাব। শেষ দিকের কিছুটা হেঁটে বা দৌড়ে পেরোতে হবে”।
-“আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। তোর প্ল্যান টাকি? আমরা লুকিয়ে যাব কেন? গাড়ির হেড লাইট জ্বালিয়ে জোরে হর্ন মারতে মারতে যাব। যাতে ওরা গোলমাল দেখে মেয়েটাকে ছেড়ে ভয় পেয়ে চলে যায়।”, করণের প্ল্যান আমার মাথায় ঢুকল না। ছেলে গুলোকে তো আর আমরা অ্যারেস্ট করতে জাচ্ছিনা। মউয়া কে যে ভাবে হোক ফিরিয়ে নিয়ে আস্তে হবে।
-“সামশের সিঙ্ঘ সুরাজপুরের সুলতান। ও আমাদের গাড়ির আওয়াজে পালাবে না রে। ওর কাছে একটা এস এল আর আছে যেটা দিয়ে আধ কিমি আগেই আমাদের ঘিলু উড়িয়ে দেবে। জানিনা আজকে সেটা নিয়ে ঘুরছে কিনা।”, করণ আমার যুক্তি এক কোথায় নস্যাত করে দিল।
-“করণ, উদিতা জানতেও পারলনা আমরা এইসব করছি। জানলে ও কিছুতেই আস্তে দিতনা। পুলিশ কে খবর দিলে হয়না? এসব তো আমাদের ধরাছোঁয়ার অনেক ওপর দিয়ে যাচ্ছে।”, আমার গলাটা একটু ধরে এলো। উদিতার মায়াবী মুখটা মনে পড়েই হয়তো। আমার এই খেলনার মতন বন্দুক আর ওই পুচকে পিস্তল নিয়ে সেমি অটোমেটিক এর সামনা করতে হবে ভেবেই পেটের ভিতর গুরগুর করে উঠল।
-“সোমনাথ, এই জঙ্গলে বানচোত পুলিশ শুধু লাশ কুড়াতে আসে রে। আমরা শুধু মেয়েটার জান বাঁচানোর চেষ্টা করছি, ইজ্জত তো ছেড়েই দে। কাল সকাল অবধি ওয়েট করলে মউয়ার ল্যাঙট বডি ওই খাল দিয়ে ভেসে আসবে।” করণ ঠাণ্ডা গলায় বলল।
“তোকে উদিতার কাছ থেকে সরিয়ে আনতে আমার কি খুব ভাল লেগেছে হতভাগা। সত্যি বলতে কি আজকে আবার তোর বউয়ের প্রেমে পড়লাম রে নতুন করে। এত সুন্দরী একটা মেয়ে আমার বাড়ি এসেছে, আমারও কি ইচ্ছে করে নাকি রাস্তায় গিয়ে রংবাজি করতে?”
-“শালা মাদারচোত, পুরকি তোমার যায়না। লম্পটের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে গিলছিলি চোখ দিয়ে, তাতেও আশ মেটেনি। যাহ্* আজকে ভালোয় ভালোয় বাড়ি ফিরলে চুদিস আমার বউকে”, আমি নকল রাগ দেখিয়ে বললাম।
-“আলবাত চুদব, প্রানের আশ মিটিয়ে আগামি সাতদিন ধরে মস্তি করবো। শালা সুরাজপুরে কেউ জবান দিলে ফেরত নিতে পারেনা। চল জলদি করে কাজ মিটিয়ে বাড়ি ফিরি। আজ রাত থেকেই শুরু হবে তাহলে”, করণ গাড়িতে ফিরে স্টার্ট দিয়ে দিল।
আমি হেসে ফেললাম ওর কথা বলার ভঙ্গিতে। মাল টার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। আজ কতদিন পরে দেখা হল। ফাইনাল ইয়ারের পরে মাঝে একবার দিল্লি তে দেখা হয়েছিল। তখনো আমার বিয়ে হয়নি। খুব ব্যাস্ত ছিল। দু মিনিটও কথা হয়নি। তারপরে মাঝে মধ্যে ফোন করতো, উদিতা আর আমার খবর নিত। তারপরে পাঁচ ছয় বছর একদম বেপাত্তা। গত বছর পুজর আগে হটাত ফোন আর সেভাবেই আবার যোগাযোগ শুরু। না চাইতেও হটাত কল্পনা করে ফেললাম, করণ আর উদিতাকে একসঙ্গে, নিবিড় আলিঙ্গনে। বলতে নেই, মন্দ লাগ্লনা ভাবতে।
-“একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস সমু?”, করণ বলল।
-“নাহ তো কি?”, উদিতা আর করণের কাল্পনিক রোঁম্যান্স ভেঙ্গে আমি জবাব দিলাম।
-“ এত বড় একটা ঘটনা ঘটল আর সাঁওতাল বস্তি পুরো শুনশান। কেউ বাইরে বেড়িয়ে হইচই করছে না। এর আগে এরকম একটা ঘটনা হয়েছিল বছর দুএক আগে। সবাই সড়কি মশাল নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিল। আজকে কোত্থাও কেউ নেই। এই জঙ্গলের রাস্তা তেও মাঝ রাত অবধি অনেকে তাড়ি খেয়ে পরে থাকে বা নিজের, অন্যের বউ কে নিয়ে মস্তি করে।”, করণ ভ্রূ কুঁচকে বলল।
-“হয়তো সবাই ভয় পেয়ে আছে। তুই তো বলছিলি এখানে সবাই ইয়াদব কে যমের মতন ভয় পায়। ”, আমি আমতা আমতা করে যুক্তি খারা করার চেষ্টা করলাম। আমি সুরাজপুরে এসেছি বারো ঘণ্টাও হয়নি। এর মধ্যেই ঘটনার ঘনঘটায় কুপকাত প্রায়।
করণ তাও বিড়বিড় করে বলে চলল, “…জোছনার বর আজকে তিন বছর পরে বাড়ি ফিরছে কেন…”। করণ যখন এতবার করে বলছে তখন কিছু একটা গোলমাল তো আছেই। আমি রাইফেল টাকে একটু বাগিয়ে ধরে বসলাম। এই সামশের সিঙ্ঘ টা আবার কে কেজানে। করণ নিত্য নতুন নাম বলছে। ইয়াদবের কোনও এক চেলা যে এস এল আর নিয়ে ঘোরে। আজকে যদি আমাদের ভাগ্য খুব ভাল থাকে তাহলে হয়তো সেটাকে আনবে না কিন্তু নেহাত খালি হাতে তো আর সাওতাল বস্তি থেকে মেয়ে তুলতে আসবে না। যা আনবে তাই আমাদের স্বর্গ প্রাপ্তির জন্যে যথেষ্ট।
প্রচণ্ড ঝাকুনি দিয়ে গাড়িটা হটাত দাড়িয়ে গেল। আমার হাত থেকে বন্দুক টা প্রায় রাস্তায় পরে যাচ্ছিল, কোনওমতে সামলালাম। করণের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও এক দৃষ্টে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। এই অন্ধকারে কি দেখছে কে যানে।
-“কি হল রে করণ? কোনও জংলি জানোয়ার নাকি?”, আমি ফিস ফিস করে বললাম।
-“পারকিং লাইট টা একবার জ্বালাবো তার মধ্যে দেখেনিস। বা দিকের ঝোপের পাশের গাছটার দিকে তাকা”, করণ আরও চাপা গলায় বলে উঠল। পারকিং লাইট একবার জ্বালিয়েই নিবিয়ে দিল। “দেখতে পেলি গামছা টা?”, করণ আস্তে করে গাড়িটাকে রাস্তার ডানদিকের ঢাল ধরে নামিয়ে দিল। আমি আবছা দেখতে পেয়েছিলাম কোনও একটা ছোটো কাপড়ের টুকরো ঝুলছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তাতে এত আশ্চর্য হওয়ার কি আছে বুঝতে পারলাম না। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে ফিস ফিস করে বলল “নেমে পর… এই রাস্তায় আর যাওয়া যাবেনা। আই ই ডি পোঁতা আছে।”
-“যাহ্* শালা…”, আমার মুখ ঝুলে পড়লো। “কি করে বুঝলি?”
-“ওই গামছা টা সিগন্যাল, তাদের জন্যে যারা জানে।”
-“কি জানে? আর তুই কি করে জানলি? এসব কি হচ্ছে করণ?”, আমি ওর শাল টা খামচে ধরলাম। অক্টোবরের ঠাণ্ডাতেও আমি ভিতরে ভিতরে ঘেমে ভিজে গেছি। সব কিছু ছেড়ে ছুটে পালাতে ইচ্ছে করছে।
-“জানার জন্যে চোখ খোলা রাখতে হয়। আমি এই রাস্তা দিয়ে পরশু রাতেও গেছি। কোথাও কিছু ছিলনা। সুরাজপুরের জঙ্গলে কেউ অকারণে গাছে কাপড় বেঁধে রাখবে না। এই একটাই রাস্তা সোজা গেছে হাজারিবাগের সি আর পি ক্যাম্পে এখান থেকে মাইল কুড়ি দূরে। অন্য রাস্তা টা অবন্তিপুরের দিক দিয়ে ন্যাশনাল হাইওয়ে তে মিশেছে। আর আছে রেল লাইন। অবন্তিপুরে গোলমাল হলে সি আর পি এই রাস্তা দিয়েই আসবে। এই ফাঁদ টা ওদের জন্যেই পাতা হয়েছে। লাল পার্টি মনেহয় আসছে ইয়াদবের ঘাঁটির দখল নিতে।”, করণ এক নিশ্বাসে বলে গেল। জীপের বনেট টা খুলে দ্রুত হাতে কিসব করছে যেন।
-“উদিতা যে বাড়িতে একা আছে করণ, চল ফিরে চল। এসব আমাদের ক্ষমতার অনেক বাইরে।”, আমি কাতর ভাবে অনুনয় করে উঠলাম। সুরাজপুরের জঙ্গলে মাওবাদীদের গুলি খেয়ে খবর হওয়ার মতেই ইচ্ছে নেই আমার। “সুমন সন্ধ্যে বেলা একবার ঘুরে গেছে তোর বাড়িতে। আমাদের হাতে মার খেয়েছে। বদলা নিতে আস্তেই পারে।”
-“লাল পার্টি আমার বাড়ি যাবেনা। ওখানে ওদের কিছু পাওয়ার নেই। ওরা যাবে ইয়াদবের কোঠায়। সুমন বদলা নিতে হয়তো আসবে পরে, আজকে রাতে ভাঙ্গা হাত নিয়েই ব্যাস্ত থাকবে রে। এখন আগে মউয়া কে বাঁচাতে হবে”, করণ একি ভাবে বলে গেল। “আঃ, পেয়েছি” । আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে বলল, “স্পার্ক প্লাগ গুলো খুলে নিলাম, আর কেউ ইউজ করতে পারবে না গাড়িটা”। কোমরের পিছন থেকে পিস্তল টা নিয়ে এসে কক করে নিল। আমার কাছে এসে বলল, “এই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নর্থ এর দিকে মিনিট দশেক চললেই কাশ বন টা পড়বে। ওখান থেকে ডান দিকে ভাঙ্গা ওয়াগন গুলো দেখা যায়। কাশ বন টা আমাদের কভার দেব্যা ভাল। তুই আমার থেকে তিন মিটার পিছনে পিছনে এইট ও ক্লক এ থাকবি সবসময়। ওয়াগন গুলোর কাছাকাছি গিয়ে আবার প্ল্যান করবো নেক্সট স্টেপস। ক্লিয়ার?”
বেকুবের মতন ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম। বিশ্ব বখাটে করণ কি করে এরকম একের পর এক খেল দেখাচ্ছে বুঝতে পারলাম না। মনে হচ্ছে এখানকার পথঘাট হাতের তালুর মতন চেনে। আমাকে এখনো বালিগঞ্জের রাস্তায় ছেড়ে দিলে হারিয়ে যেতে পারি। তিন বছরে করণ এখানে কতবার এসেছে। ওর তো বম্বে তে রিয়েল এস্টেট এর ব্যাবসা আছে জানতাম। ব্যাবসায়ি রা কি এতটা পাগল হয়। কথাকার কোন এক মেয়ের জন্যে এতবর ঝুঁকি নিচ্ছে। শালা আমাকেও ফাসাচ্ছে।
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে করণ ছুটে চলল ঝড়ের মতন। আমি হাফাতে হাফাতে মনের মধ্যে হাজার রকম যোগ বিয়োগ গুন ভাগ করে অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করে যেতে লাগলাম। জল আমার মাথার অনেক ওপর দিয়ে বইছে।
করণ আর সোমনাথের কথা বারতার ধরন ধারন দেখে অম্লান দার মাথা গরম হয়ে গেল। ওরা যেন আজকে সন্ধ্যের ব্যাপারটার জন্যে ওঁকেই দায়ি করছে। শালা শাড়ি খুলে গেল তো সব্বাই চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলে শুধু আমাকেই কেন বলা, অম্লান দা মনে মনে বলতে লাগলেন। বউ কে নিয়ে বন্ধুর কাছে বেশ্যা বাজি করাতে নিয়ে এসেছে সোমনাথ অম্লান দা বেশ বুঝতে পারছিলেন, নইলে এভাবে সায়া তুলে দেয় প্রায় কোমর অবধি আর সোমনাথ চুপ করে বসে বসে দেখে? সুমন বাবু কে আর দোষ দিয়ে লাভ কি।।আর কিছুক্ষণ উদিতা ওরকম শাড়ি খোলা অবস্থায় থাকলে উনি নিজেই হয়তো হাত বাড়িয়ে মাই টিপে দিতেন। শালির ফিগার টা জব্বর। সব কিছু যেন টস টস করছে। অম্লান দা সড়াৎ করে জিভের জল টেনে নিলেন। করণ আর সোমনাথ বেড়িয়ে গেছে দশ পনেরো মিনিট হল। অম্লান দা বারান্দায় বসে বসে একের পর এক সিগারেট টেনে যাচ্ছেন। ঠিক মনস্থির করতে পারছেন না ওপরে যাবেন কি যাবেন না। যেভাবে বন্দুক উঁচিয়ে বলে গেল, কিছু কেলেঙ্কারি হলে জানে না মারুক হাত পা ভেঙ্গে দিতেই পারে। সেটাতেও অম্লান দার যথেষ্টই ভয়। বুধু জোছনাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে গেছে। ওখানেই ডিভানে বসে গুঙ্গিয়ে গুঙ্গিয়ে কাদছিল একটু আগেও। এখন চুপ মেরে গেছে। মেয়ে তো পুরো রেনডির মতন পোশাক আসাক পড়ত। ইয়া বড় বড় মাই, টাইট জামা, আধ খোলা পেট ইয়াদবের লোকেদের নজর তো পড়বেই। অম্লান বাবুর ধারনা হল এই সাঁওতাল মেয়ে গুলোর সবকটার মধ্যেই মান ইজ্জতের ব্যাপার গুলো আলগা। এই জোছনা নিশ্চয়ই করণের কাছে মাঝে মধ্যেই থাপান খায়। ব্যাচেলর ছেলে থাকে নিশ্চয়ই শালা মস্তি করে। পাঁচ দশ টাকা গুঁজে দেয় মনে হয় হাতে। করণ যা চোদনা ছেলে মা কে বাড়ি পাঠিয়ে মেয়ে কে ডেকে আনে মনে হয়। নাহ…কিছু একটা করতে তো হবেই। ঘুম তো আর আজকে হবে না। অম্লান দা মনস্থির করে উঠে পরলেন। উপরে গিয়ে দেখে আসবেন একবার উদিতা কে। যদি অঘোরে ঘুমায় তাহলে একটু আধটু খুলে টুলে দেখবেন। বেশী কিছু করাটা রিস্কি। হটাত জেগে গেলে বিরাট বাওয়াল হয়ে যাবে।
বসার ঘরের দরজার পাস দিয়ে পা টিপে টিপে এগলেন অম্লান দা। চান না বুধু বা জোছনা ওনাকে দেখুক ওপরে যেতে। দেখলেই বা কি যদিও বলবেন উদিতা ঠিক ঠাক আছে নাকি সেটাই দেখতে গেছিলেন। কিন্তু তাও যত সাক্ষী কম রাখা যায়। দরজা দিয়ে একবার উঁকি মেরে দেখে থমকে গেলেন। ঘরে একটা মোম্বাতি জ্বলছে। নিবু নিবু তার আলো। ডিভানের ওপরে জোছনা শুয়ে রয়েছে কাত হয়ে। বুক পুরো খোলা। বিরাট দুধ দুটো ঝুলে পড়েছে সাইডে। কাপড় টা এক পাল্টা হয়ে কোমর আর পাছার ওপর দিয়ে গেছে। একটু মেদ বহুল পেট আর গভীর চেরা নাভি। নগ্ন নারী শরীরের আকর্ষণ এড়ানো কঠিন। অম্লান দা ঘরে ঢুকে দেখলেন বুধু নেই। সামনের বারান্দা দিয়ে তো বেরয়নি তাহলে কি পিছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে গেছে? শালার মনেহয় মেয়েছেলের ধাত নেই। নইলে এমন দৃশ্য ছেড়ে কেউ যায়। জোছনা এখনো বিড়বিড় করে মউয়া মউয়া করছে। তোর বিতিয়া এতক্ষণে বারো ভাতারে হয়ে গেছে, অম্লান দা মনে মনে বললেন। জোছনার একদম কাছে গিয়ে খোলা কোমরে হাত রেখে হালকা করে ডাকলেন “অ্যায় জোছনা, মাত রোঁ আভি”। ভিতরে ভিতরে প্রচণ্ড উত্তেজনা বোধ করছেন তিনি। এত কাছ থেকে ল্যাঙট মেয়েছেলে অনেক দিন পরে দেখছেন। জোছনা কি নেশা করেছে নাকি, কোনও সাড়া দিলনা। অম্লান দার সাহস বেড়ে গেল। উদিতার চিন্তা মাথা থেকে বেড়িয়ে গেছে এতক্ষণে। এটা অনেক সেফ হবে। যদি হটাত জেগেও যায় তাহলে দেবেন নাহয় কিছু টাকা গুঁজে হাতে। বাচ্চা ছেলের মতন লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে বসার ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলেন। ফিরে এসে ডিভানের পাশে মেঝেতে থেবড়ে বসলেন। বাচ্চারা যেমন খাবার দেখলে ছটফট করে, ওনার এখন তাই অবস্থা। নেশা গ্রস্ত জোছনার কুচকুচে কালো শরীর ওনার সামনে অর্ধ নগ্ন। অম্লান দা কোথা দিয়ে শুরু করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। ঠোঁটে চুমু খাবেন না ঠিক করলেন। কোথাকার বনে জঙ্গলে থাকে, মুখ ঠিক ঠাক ধোয় কিনা কে জানে। জোছনার কোমর থেকে কাপড় টা এক টানে সরিয়ে দিলেন। আগে তো পুরপুরি ল্যাঙট করি, ভাব্লেন তিনি। মোটা মোটা মসৃণ উরু মোমের আলোয় চকচক করে উঠল। দুই উরুর মধ্যিখানে ঘন চুলে ঢাকা যোনি। অম্লান দা এক ঝলকে ভাব্লেন, উদিতার টা মনে হয় শেভড। প্যানটির আশ পাস দিয়ে চুল তো দেখেননি তিনি আইস প্যাক লাগানর সময়। মরুক গে যাক, মন কে আবার এই ঘরে ফিরিয়ে আনলেন অম্লান দা। ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে জোছনার কালো বালে বিলি কেটে দিতে লাগলেন। মাগী এখনো বেহুঁশ। মেয়ের শোকে না নেশা ভাঙে কে জানে। এরকম থাকলেই ভাল। বেশ একটা বিবেক দংশনহীন ভাবে অপকর্ম করা যায়। নিজেকে নিজে বাহবা দিলেন সঠিক চয়েস করার জন্যে। আরে বাবা মাগী হলেই হল, শহুরে বা গাইয়া। যেটাতে ঝামেলা কম।