Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
পর্ব ছয় – (#4-27)

 
বাজারের পাশের দিকে একটা রেস্টুরেন্ট ছিল, রাতের রান্না করতে বারণ করে দিয়েছিল বটে কিন্তু রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়ার মতন মানসিক অবস্থা ওদের কারুর ছিল না।
 
রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, “রাতে কি খাবে? কাজের লোক ত কিছু রান্না করে যায়নি।”

বাইরে বেড়িয়ে ঝিনুকের মন একটু হাল্কা হয়, তাই একটু হেসে বলে, “দেখা যাবে খানে।”

এতক্ষন পরে সুন্দরীর ঠোঁটে হাসি দেখে রিশুর বেশ ভালো লাগে, “পাশে একটা বিরিয়ানি টেক এওয়ে আছে, প্যাক করে নিয়ে যাই?”

কোলকাতায় আজকাল যেখানে সেখানে বিরিয়ানির দোকান, কোন ছুতো পেলেই সবাই এই বিরিয়ানি সেই বিরিয়ানির দোকানে ঢুকে পারটি দেয়, ঝিনুকের বিরিয়ানি খাওয়ার একদম ইচ্ছে ছিল না। নাক কুঁচকে আপত্তি জানিয়ে বলে, “বিরিয়ানি নয় এখানের খাবার কিছু পাওয়া যায় না, মানে নর্থ ইন্ডিয়ান ফুড?”

রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, “আফগানি চিকেন তন্দুরি আর বাটার নান খেয়েছ?”

ঝিনুক উত্তর দেয়, “না খাইনি, কেমন খেতে?”

রিশু একটু হেসে উত্তর দেয়, “মন্দ নয়, আমার তো ভালো লাগে।” এতক্ষন ঘর বন্দী থাকার পরে বাইরে বেড়িয়ে দুজনের বেশ ভালো লাগে। রিশু ঝিনুকের গালের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “অয়েন্টমেন্টটা ঠিক ভাবে লাগাচ্ছো ত?”

বাপরে কত যেন ওর ওপরে নজর, অফিস ফেরত একবার দেখল না ঠিক ভাবে। মাথা দোলায় ঝিনুক, “হ্যাঁ।”

খুব জানতে ইচ্ছে করে রিশুর কেন বোকার মতন নিজেকে কষ্ট দিয়েছিল ঝিনুক, কৌতূহলী মন টাকে বেঁধে রেখে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ, লাগিও এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।”
 
কাঁচা সবজি, ডিম, চা, ঝিনুকের জন্য চপ্পল ইত্যাদি কেনাকাটা করতে করতে বেশ রাত হয়ে যায় ওদের। বাড়ি ফিরে যথারীতি আফগানি চিকেন আর বাটার নানের অর্ডার দেওয়া হয়। খেতে বেশ ভালোই লাগে ঝিনুকের এই ধরনের খাবার আগে কোনদিন খায়নি, কোলকাতায় তন্দুরি চিকেন অনেকবার খেয়েছে কিন্তু এখানের এই আফগানী তন্দুরি খায়নি এর আগে। খাওয়া শেষে আবার সেই আগের মতন যে যার ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে, তবে এইবারে গতরাতের মতন মুখের সামনে দরজা বন্ধ করেনি ঝিনুক। রাতের দিকে ভিডিও কল করে ঝিনুক বোনের সাথে গল্প করেছিল অনেকক্ষণ।
 
বদ্ধ পরিবেশ বেশ হাল্কা হলেও দুইজনের মধ্যে কথাবার্তা বিশেষ হত না। দিনের মধ্যে কয়েকটা মেসেজ, “খেয়েছ?” উত্তর আসত, “হ্যাঁ, তোমার খাওয়া হয়েছে?” উত্তর আসত, “এই যাবো ক্যান্টিনে” হয়ত কখন রিশু সময় পেলে ফোন করত, “খেয়ে নিও।” উত্তর আসত “আচ্ছা”। “কি করছ, কটা ওটি ছিল আজকে?” অথবা “সকালে কি খেলে? কাজের লোক কি রান্না করে গেল?” এই ধরনের দীর্ঘ প্রশ্ন উত্তর দুইজনেই এড়িয়ে যেত। রাতে খাওয়ার সময়েও দুইজনে সামনা সামনি বসে খাওয়া সেরে ফেলে। চুপচাপ খেয়ে দেয়ে যে যার নিজের ঘরে ঢুকে পড়ত, ঝিনুক নিজের ল্যাপটপ খুলে কখন বন্ধুদের সাথে গল্প করত অন্য দিকে রিশু নিজের পড়াশুনা আর পেপার নিয়েই ব্যাস্ত থাকত। তবে রোজ দিন এই ঠান্ডায় ভোর চারটেতে উঠে পড়ত ঝিনুক, রিশু হসপিটাল বেড়িয়ে যাবে তখন কি আর ঘুমিয়ে থাকা যায়। দরজায় দাঁড়িয়ে ঝিনুকের খুব ইচ্ছে করত বলতে, সাবধানে যেও, কিন্তু সে কথা বলতে পারত না। শুধু চেয়ে থাকত বারান্দা দিয়ে যতক্ষণ না রিশুর বাইক রাস্তার বাঁকে হারিয়ে যায়। বাইকে কিক মেরে একবার ওর বারান্দায় দেখা চাই, আবছা অন্ধকার হলেও দেখতে পেত ঝিনুকের চোখ দুটো, চোখা চুখি হলেই একটু হাত উঠিয়ে দিত ঝিনুক, ভদ্রতার খাতিরে একটু মাথা নোয়াত রিশু।
 
দেখতে দেখতে রবিবার চলে এলো, ঝিনুকের ভোর বেলা ওঠার তাড়া নেই, রিশুর হসপিটালে দৌড়ানো নেই। তবে রোজকার অভ্যেসের জেরেই রিশুর ঘুম আগেই ভেঙ্গে যায়। দাঁত ব্রাশ করতে উঠে দেখে ঝিনুকের রুমের দরজা তখন বন্ধ, মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, না থাক আজকে আর জাগিয়ে কাজ নেই। রোজদিন ওর জন্য সাত সকালে উঠে পরে, তারপরে ঠিক ভাবে ঘুমায় কি ঘুম হয় না জানা নেই। গত রাতেই খাওয়ার সময়ে কথা হয়েছিল যে পরেরদিন শপিং এ যাবে, সেই জন্য এটিএম থেকে টাকা তুলেছিল। টাকা কেন তুলছো, আমাকে বল তোমার কি চাই? না সেটা মুখে আনতে গিয়েও আনতে পারেনি রিশু। হয়ত এখন ওদের মাঝে সহস্র যোজনের দুরত্ব তাও রিশু ভেবে রেখেছিল যে ঝিনুক যা কিনতে চায় তাই কিনে দেবে।
 
রান্না ঘরে ঢুকে নিজের জন্য এক কাপ চা বানায়, দুধ ছাড়া, আদা তুলসি পাতা দেওয়া শুধু মাত্র পাতা দিয়ে চা তৈরি করে খায়। বসার ঘরের সোফায় বসে ভাবে গত কয়েকদিনের কথা, এমনিতে দুটো ওটি করতেই অনেক সময় চলে যেত, যদি দেখত যে তৃতীয় ওটি বেশি সময় নেবে তখন অন্য কাউকে বলে দিত করতে। একটা না হোক তবে দেড়টা কি দুটোর মধ্যে বাড়ি ফিরে আসত রিশু। যদিও ওদের কথাবার্তা খুব সীমিত তবুও ওই যে পাশের ঘর থেকে নুপুরের নিক্কন শোনা যায়, সেটাই অনেক। ওর সাথে কথা না বললেও যখন ওর বাড়ির সাথে কথা বলত অথবা নিজের বোনের সাথে কথা বলত তখন গলা শুনে মনে হত যে ওদের মাঝের দুরত্ব একদম নেই। শুধু মাত্র রিশুর মা ছাড়া বাকি কারুর চোখে পরেনি ওদের আসল ব্যাবধান। ফোন রাখার পরেই বাড়িতে সেই আগের মতন নিস্তব্ধতা নেমে আসত। মায়ের সাথে রাতে কথা বলার সময়ে রোজদিন জিজ্ঞেস করত, “কেমন আছিস বাবা?” ছোট তিনটে শব্দের মধ্যে প্রচুর না বলা প্রশ্ন লুকিয়ে। হেসে ফেলত রিশু, “তোমার কথা মতন হাঁটছি, দেখা যাক কবে পৌঁছানো যায়।”
 
দরজার ওপাশে খুট খাট আওয়াজ পেয়েই ঘুম ভেঙ্গে যায় ঝিনুকের, উঠে পরল নাকি ডাক্তার? ধুর ব্যাঙ এর জ্বালায় একটু শান্তিতে ঘুমানো যায় না। স্নান করার পরে তোয়ালে দিয়ে গা মোছার সময়ে নুপুরের মধ্যে মাঝে মাঝে তোয়ালে আটকে গিয়ে ভীষণ অসুবিধে হত, কোনদিন পরেনি অভ্যাস নেই, ধ্যাত খুলেই ফেলা যাক। কিন্তু যখন রিশু ওই নুপুরের রিনিঝিনি আওয়াজ শুনে ওর দিকে তাকিয়ে থাকত তখন এক মিষ্টি অনুভুতিতে ওর হৃদয় কোন অজানা কারনে কাতর হয়ে উঠত। অনুভুতি গুলো যদিও ওর অজানা নয় তবুও ওর মনে হত এ এক নতুন অনুভুতি ওর হৃদয়ে দোলা লাগিয়েছে, আর সেই জন্য পা থেকে নুপুর খোলেনি। আড়ামোড়া ভেঙ্গে দরজা খুলে দেখে যে সোফায় বসে একা একা চা খাচ্ছে। একটু রাগ হয় ওর, একটু অপেক্ষা করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত নাকি? চোখা চুখি হতেই মিষ্টি হাসি দেয় ঝিনুক। একটা সোয়েটার পরে বাথরুমে ঢুকে পরে ঝিনুক। রিশুও ঢুকে পরে রান্না ঘরে, নব বিবাহিতা স্ত্রীর জন্য চা বানাতে।
 
বাথরুম থেকে বের হতেই রিশু ওকে ডাকে, “এই নাও চা।”

চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে মুখ বেঁকায় ঝিনুক, “এই চা আমি খাই না, শুধু গরম জল।”

রিশু একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করে, “তাহলে কি খাও?”

রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে ঘাড় বেঁকিয়ে বলে, জানে না যখন তখন অত আদিখ্যেতা দেখিয়ে বানাতে কেন গেছিল? “আমি বানিয়ে নেব।”

নিজের চা বানিয়ে সোফায় একটু তফাত হয়ে বসে রিশুকে জিজ্ঞেস করে, এই সাদা চা খেয়ে কি পাও? দুধ নেই, চিনি নেই, ওয়াক থু। মুক প্রশ্নটা মুক থেকেই যায়, তার জায়গায় অন্য প্রশ্ন বের হয়, “সান্ডউইচ বানাবো?”

মাথা দোলায় রিশু, “হ্যাঁ আপত্তি নেই।”

চা খেতে খেতে রিশু ঝিনুককে বলে, “লাঞ্চের পরে বেড়িয়ে যাবো, বেশি রাত হয়ে গেলে আবার তোমার ঠান্ডা লাগতে পারে।”

আহা রে, মেয়েদের বেড়াতে বের হলে ঠান্ডা লাগে না বুঝলে ডাক্তার, মাথা দোলায় ঝিনুক, “ঠিক আছে।”

চা শেষ করে রিশু ওকে বলে, “কাল থেকে আমার জেনারেল ডিউটি, তিনদিন ওপিডি আর দুই দিন ওটি।”

বিশেষ বুঝল না এই কথা তাও মাথা নাড়িয়ে দিলো ঝিনুক, “আচ্ছা।”
 
চা খাওয়া শেষে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে একটা সিরিঞ্জ আর কয়েকটা ছোট বোতল হাতে নিয়ে বেড়িয়ে আসে রিশু। সিরিঞ্জ দেখে হাজার প্রশ্ন নিয়ে ওর দিকে তাকায় ঝিনুক, কি করতে চলেছে? ঝিনুকের হাতে একটা ছোট প্লাস্টিকের বোতল ধরিয়ে দিয়ে বলে, “কাল সকালে ইউরিন দিও একটা টেস্ট করাব।” আর সিরিঞ্জ দেখিয়ে বলে, “তোমার একটা ব্লাড টেস্ট করাবো।”

খানিকটা আশ্চর্য হয় ঝিনুক, সেই সাথে একটু বিরক্তি ভাব ফুটে ওঠে চেহারায়, তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছ যে আমি পার্থের সাথে সহবাস করে কোন রোগ বাধিয়েছি কি না? “কেন আমার কি হয়েছে?”

একটু হাসে রিশু, “না তোমার কিছু হয়নি, তবে মেয়েদের অনেক রকমের গ্যানোকজিকাল প্রবলেম হয়, ইউরিন ইনফেক্সান, থাইরয়েড বা কোন হরমোনাল প্রবলেম থাকলে আগে থেকে ধরা পরলে ওষুধে সেগুলো কন্ট্রোলে রাখা যায়।”

মুখ ব্যাজার করে উত্তর দেয় ঝিনুক, “না আমার কিছু হয়নি, আমি রক্ত দেব না।”

হেসে ফেলে রিশু, “আমি লিটার লিটার রক্ত নেব নাকি?” হাতের দুটো ছোট বোতল দেখিয়ে বলে, “এই ব্যাস এইটুকু।”

প্রচন্ড ইঞ্জেকশানের ভীষণ ভয় ঝিনুকের, জোরে মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, “উরি বাবাআআ নাআআআ...” বলেই সোফা ছেড়ে উঠে পরে।
 
হসপিটালে প্রচুর লোককে দেখেছে এমন করতে। চোখ নাক মুখ বন্ধ করে থাকে যখন ইঞ্জেকশান দেওয়া হয় দেখে মনে হয় যেন ওদের বুকে কেউ ছুরি ঢুকিয়ে দিয়েছে। যেভাবে সারা অঙ্গে ঢেউ তুলে এক ঝটকায় সোফা ছেড়ে উঠে পরল তাতে হাসি পেয়ে যায় রিশুর। ছন্দময় তালে মত্ত চলনে চোখের বাণে ওর বুকে আঘাত হেনে চলে গেল। হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে সোফায় বসে মিটিমিটি ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে হাসে, পাগলি মেয়ে, ফুচকা খেতে দেব, ম্যাবেলিনের লিপস্টিক পাবে, ম্যাকএর বেস কিনে দেব।
 
মরন দশা, ওই ভাবে দাঁত বের করে হাসার কি হয়েছে? আবার ডাকছে দেখো। যাবো না যাও, শপিং গেল মাথায় উঠে। মুখ কাচুমাচু করে কাতর কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “রক্ত না নিলেই নয়?”

ঝিনুকের কাচুমাচু মুখ দেখে হাসি থামাতে পারে না রিশু, বুড়ো আঙ্গুল আর তর্জনী মাঝে এক ইঞ্চি ব্যাবধান দেখিয়ে বলে, “এই এত্তটুকু নেব, একদম লাগবে না। একটা টিএসএইচ আর এলএফটি করাব।”

শান্ত পায়ে হরিণীর মতন দুলকি চালে রিশুর সামনে এসে মুখ ব্যাজার করে আদুরে কন্ঠে বলে, “লাগবে না’ত, সত্যি বলছ?”
 
ফর্সা হাত, হাতের পাতায় এখন মেহেন্দির রঙ একটু লেগে আছে। রোজদিন বিকেলে যখন ওর সাথে বাজারে বের হয় তখন শরীরে কোন পারফিউম লাগায়, কিন্তু সেদিন সকালে একদম কাছ থেকে ওর গায়ের গন্ধে মাতাল হয়ে যায় রিশু, ভোরের ফোটা শিউলি ফুল, ইচ্ছে করছিল হাত দুটো টেনে পাশে বসায়। বিয়ের পাঁচদিন কেটে গেছে কিন্তু সেই যে বিয়ের দিনে ওর হাতের ওপরে হাত রেখেছিল ঝিনুক তারপর আর সেই পদ্ম কুড়ির মতন কোমল হাত দুটো আর নিজের হাতে নেওয়া হয়নি। দুই কব্জি ভরা সোনার চুড়ি, সোনা দিয়ে শাঁখা পলা বাঁধানো, মাঝে মাঝেই ছনছন করে বেজে ওঠে। এই মিষ্টি মেয়টা কি ভাবে অসৎ সংসর্গে পড়েছিল ভেবে পায় না।
 
সোফায় বসতে অনুরোধ করে বলে, “না রে বাবা একদম লাগবে না।”

চুপচাপ সোফার ওপরে রিশুর পাশে বসে পরে ঝিনুক। সোয়েটারের হাতা গুটিয়ে ডান হাত এগিয়ে দেয় রিশুর দিকে। একটা রাবারের বেল্ট দিয়ে কুনুইয়ের ওপরে বাঁধতেই কোকিয়ে ওঠে ঝিনুক, ছটফট করতে করতে বলে, “লাগছে ত।”

রিশু ওকে বলে, “হাত মুঠো করো।”

ইঞ্জেক্সানের দিকে তাকিয়ে কাঁদুনে চেহারা করে হাত মুঠো করে মিউ মিউ করে ওঠে, “উম্মম্মম লাগছে হাতে...”

মেয়েটা এত ডানপিটে এত চঞ্চল তাও এই ইঞ্জেক্সানের ভয়? হাসি পেয়ে যায় রিশুর। ওর ডান হাত শক্ত করে ধরে, স্পিরিটে একটু তুলো ভিজিয়ে হাতের ওপরে আলতো করে ডলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা কি কি শপিং করবে কিছু ভেবেছ? কি রঙের জ্যাকেট কিনবে?”

আদিখ্যেতা দেখ, আবার জিজ্ঞেস করছে কি শপিং করবে। “জানি না যাও, আমি যাবো না তোমার সাথে শপিং করতে।” মাথা ঝাঁকিয়ে বলে ঝিনুক।
 
ফর্সা হাতের মাঝখানে শিরা খুঁজতে ব্যাস্ত রিশু। ঝিনুকের বাজুর মোলায়ম ফর্সা ত্বকের ওপরে দুটো আঙ্গুল দিয়ে একটু জোরেই বার কতক বাড়ি মারতেই লাল হয়ে যায় সেই স্থান। যে ভাবে মেয়েটা ছটফট করছে, নিডেল না বেঁকে যায়। এবারে একটা ধমক না দিলে কাজে দেবে না।
 
বাম হাতে ঝিনুকের ডান হাত শক্ত করে ধরে একটু ধমক দিয়েই বলে, “একদম ছটফট করবে না, নিডেল বেঁকে যাবে।”

যেই শুনেছে যে নিডেল বেঁকে যাবে, সেই ঝিনুকের কান্না শুরু। রিশুর হাত ছাড়িয়ে এক লাফে সোফা থেকে উঠে পরে, “তুমি ডাক্তার না হাতির মাথা, আমি রক্ত দেব না যাও।”
 
ঝিনুক নিজের হাতে বাঁধা রাবারের বেল্ট খুলে ছুঁড়ে মারে রিশুর দিকে। হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই, ঝিনুকের কান্ডকারখানা দেখে হেসে ফেলে রিশু। ইচ্ছে করছিল মেয়েটাকে এক ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়, অত ভয় পাওয়ার কি আছে? কিন্তু ওই মিষ্টি অনুরাগে রক্তিম ঝিনুকের লালচে গালের দিকে তাকিয়ে সেই ধমকের কথা ভুলে যায়। একটু পরেই ল্যাবের লোক আসবে রক্ত নিয়ে যেতে, তাকে আগে থেকেই আসতে বলেছিল। নিরুপায় রিশু আরো একবার চেষ্টা করে, মাথা দুলিয়ে ইশারায় ঝিনুককে ডাকে। ঝিনুক ততক্ষনে শোয়ার ঘরের দরজার আড়ালে লুকিয়ে পড়েছে, পাছে ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় সেই ভয়ে। বসার ঘর যেন এক রণক্ষেত্র, এদিকে হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে রিশু অন্যপাশে শোয়ার ঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে ঝিনুক।
 
শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেয় রিশু, “কাল সকালে হসপিটাল যাওয়ার আগে কিন্তু আমি ব্লাড নিয়ে যাবো।”

দরজার আড়াল থেকে একটু বিরক্তি মেশানো একটু হাসি মাখানো উত্তর আসে, “ধুস, কাল আমি দরজাই খুলবো না।”
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 18-10-2020, 01:30 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:16 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 03:41 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:13 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 02:49 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 27-10-2020, 02:59 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 12:21 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 10:20 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 29-10-2020, 01:29 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 30-10-2020, 11:22 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 01-11-2020, 01:37 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 02-11-2020, 12:51 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by pinuram - 18-11-2020, 10:01 AM
পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 08-12-2020, 05:19 PM
RE: পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 09-12-2020, 06:58 PM
Block Guest Users! - by pinuram - 09-12-2020, 11:47 PM
RE: Block Guest Users! - by dreampriya - 10-12-2020, 09:46 AM
RE: Block Guest Users! - by pinuram - 10-12-2020, 12:18 PM
পর্ব আট – (#6-42) - by pinuram - 14-12-2020, 11:37 PM
পর্ব আট – (#7-43) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM
পর্ব আট – (#8-44) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM



Users browsing this thread: 17 Guest(s)