14-11-2020, 07:00 PM
শেষ পর্ব
দীপঙ্কর : কি? কিসের মূর্তির এটা অবনী বাবু? এর পরিচয় কি?
অবনী বাবু সোজা দীপঙ্কর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন: succubus! এদের succubus বলা হয়.
দীপঙ্কর বাবু অবাক হয়ে বললেন: succubus? সে আবার কি?
অবনী বাবু অর্কর মামার থেকে চোখ একটুও না সরিয়ে বললেন: ভয়ঙ্কর জিনিস এরা...... এদের পাল্লায় পড়লে বেঁচে ফেরা কঠিন... খুব কঠিন.
দীপঙ্কর বাবু : প্লিস একটু ডিটেলে বলুন.
অবনী বাবু: আমি সেই জিপসি মহিলার থেকে জানি যে এদের succubus বলা হয়. এরা নরকের যৌনদাসী. এদের রূপে অসাধারণ হয়ে থাকে, এতটাই অসাধারণ যে এই রূপ একবার দেখলে পৃথিবীর কোনো পুরুষই ভুলতে পারবেনা. কিন্তু সেটা নকল. এই নারীদের নকল রূপ যতটা সুন্দর এদের আসল রূপ ততটাই ভয়ঙ্কর... সেই রূপও যদি কেউ দেখে সেটাও কোনোদিন ভুলতে পারবেনা. এই নারীদের কাজ হলো শয়তানকে খুশি করা. শুধু মিলনের মাধ্যমে নয়..... আত্মা জোগাড় করে শয়তানের কাছে নিয়ে আসা.
দীপঙ্কর : আত্মা জোগাড় করে? মানে?
অবনী বাবু: বলছি দীপঙ্কর বাবু. এরা নরকের জীব হলেও পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করার একটি গুপ্তপথ এরা জানে. সেই গুপ্তপথ হলো স্বপ্ন. হ্যা...... স্বপ্ন. পুরুষদের স্বপ্নের মাধ্যমে এরা সেই চিহ্নিত পুরুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে. পুরুষ চিহ্নিতকরণ বা নির্বাচন ক্ষেত্রে এরা নির্দোষ বা জীবনে খুবই কম পাপ করেছে এমন পুরুষ টার্গেট করে. তা সে যেকোনো দেশের যেকোনো জাতির হতে পারে. তবে এই যোগাযোগ স্থাপন নিজের থেকে তারা করতে পারেনা... কোনো মাধ্যম প্রয়োজন এই ক্ষেত্রে. অর্থাৎ সেই পুরুষের সহিত স্বপ্নে যোগাযোগ করার জন্যেও কোনো মাধ্যম প্রয়োজন. এমনি এমনি তারা যে কারোর স্বপ্নে আসতে পারেনা. এরপরে তাকে নিজের লোভনীয় রূপ যৌবন দিয়ে নিজের জালে একটু একটু করে ফাঁসাতে থাকে. সেই পুরুষ জানতেও পারেনা কখন সে এই নারীর জালে জড়িয়ে পড়েছে. প্রথমে সব কিছুর শুরু স্বপ্ন দিয়ে হলেও পরবর্তী সময়ে ব্যাপারটা বাস্তবিক রূপ নেয়. সেই পুরুষেরই শরীরের থেকে শক্তি নিয়ে সেই নারী নিজের দেহ গঠন করার শক্তিলাভ করে. যেমন আত্মারা নিজের দেহ গঠনের ক্ষেত্রে মানব শরীরের একটোপ্লাজম ব্যাবহার করে থাকে. এরফলে এমনিতেই সেই পুরুষের দৈহিক শক্তি অনেক কমে যায়. তারপরে সেই নারী শুরু করে সেই পুরুষের সাথে ভয়ঙ্কর পৈশাচিক যৌন মিলন. ভাবতেই পারছেন পৃথিবীর সামান্য পুরুষের সাথে নরকের দানবীর যৌনমিলন......এমনই উগ্র ভয়ঙ্কর ও সুখের ক্ষমতা সেই মিলনের যে পৃথিবীর কোনো নারীর সেই মিলনের ক্ষমতা নেই. এমনিতেই সেই পুরুষের দৈহিক শক্তি কম থাকে, তারওপর ঐরকম ভয়ঙ্কর মিলনের ফলে পুরুষটার কি অবস্থা হয় বুঝতেই পারছেন.... কিন্তু.... কিন্তু তবু সেই ভয়ঙ্কর নারীর থেকে নিজেকে আলাদা করা তার পক্ষে ততদিনে অসম্ভব. সেই নারীর রূপ যৌবনের দাস সে.
পুরুষটি ভাবে সে ওই নারীকে উপভোগ করছে... কিন্তু আসল ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টো. এই ভয়ঙ্কর succubus একটু একটু করে সেই পুরুষের যৌবন, দেহ শুষে নিচ্ছে. একসময় পুরুষটির ওপর এর প্রভাব দেখা দেয়. সে কমজোর হয়ে যেতে থাকে, খাদ্যের প্রতি অনীহা দেখা দেয়, সামান্য কারণে রেগে যেতে থাকে, পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয় কিন্তু সেই পুরুষ এই নারীর থেকে আলাদা হবার কথা কল্পনাও করতে পারেনা. এই ভয়ঙ্কর নারীর যৌন খিদে ভয়ানক. পুরুষ এদের কাছে শুধুই ভোগের বস্তু. তাদের যৌনাঙ্গ ও বীর্য হলো এই নারীর কাছে আসল. যে পুরুষ সেই নারীকে সবথেকে বেশি যৌনসুখ দেয়... এই নারী সেই পুরুষকে ততো ধীরে শেষ করে. যাতে সেই পুরুষের যৌন ক্ষমতার শেষ মুহূর্ত অব্দি এরা উপভোগ করতে পারে. আর যে পুরুষের থেকে এরা সেই পরিমানে সুখ পায়না তাদের তাড়াতাড়ি শেষ করে, আবার অনেক সময় তাদের বাধ্য করে কোনো পাপ কর্মে লিপ্ত হতে তা সেটা করতে সেই পুরুষের যতই বারণ আপত্তি থাকুক না কেন.. শেষমেষ পারেনা নিজেকে সামলাতে আর সেই পাপ ক্রিয়ায় নিযুক্ত হন সেই পুরুষ. এই নারী পুরুষ শিকারী তাই এক পুরুষে এরা কখনোই সন্তুষ্ট হয়না... নিজের নির্বাচিত পুরুষ ছাড়াও কোনো শক্তিশালী সমর্থ পুরুষ এদের নজরে পড়লে এই দানবী তাকেও উত্তেজিত করার চেষ্টা করে.
দীপঙ্কর বাবু অবাক হয়ে: এসব.... এসব কি বলছেন আপনি?
অবনী বাবু হেসে: বিশ্বাস হচ্ছেনা তাইতো? জানি... হবারও নয়... কারণ আমরা শুধু সেইটুকুই বিশ্বাস করি যা হয় আমরা সবসময় আমাদের চারপাশে হতে দেখি... বা যা শিখে বড়ো হই. কিন্তু তার বাইরে কিছু জানতে পারলে সেটা আমাদের কাছে অবাস্তব আর আজগুবি হয়. আপনাকে দোষ দিয়ে কি লাভ? আমি নিজেও কি ছাই এসব মানতাম?.... এখনও যে পুরোপুরি মানি তা বললেও মিথ্যে বলা হবে কারণ আমি নিজে জীবনে এসবের কিছুই দেখিনি. কিন্তু...... কি বলুনতো দীপঙ্কর বাবু..... আমি বা আপনি দেখিনি বলেই যে সেই জিনিসটার অস্তিত্ব নেই.... সেটা মেনে নেওয়াও কিন্তু উচিত নয়. এই জগতে যখন শুভ শক্তি অর্থাৎ ঈশ্বর আছেন তাহলে অশুভ শক্তি কেন থাকবেনা? রচনাত্মক শক্তি যখন আছে তখন ধ্বংসাত্মক শক্তি কেন থাকবেনা? প্রতি মানুষের মধ্যেই দুই রূপ আছে... ভালো ও খারাপ. যে ভাগটি বেশি পরিমানে আমাদের মধ্যে বিচার করে আমরা মানুষরা সেই রূপের চিন্তাশক্তি অনুযায়ী পরিচালিত হই. তবে অন্যরূপও কিন্তু প্রতি পদে আমাদের প্রথম রূপকে হারিয়ে সেই স্থানে বসতে চায়. তা সে ভালো হোক বা মন্দ. আচ্ছা..... ষড়রিপু কি জানেন তো?
প্রশ্ন করলেন অবনী বাবু. দীপঙ্কর বাবু বললেন: হ্যা ঐতো লোভ কাম ক্রোধ... ওগুলো তো?
অবনী বাবু না সূচক মাথা নাড়িয়ে বললেন: উহু... হলোনা..... ঐভাবে বললে হবেনা. পর পর সাজিয়ে বললে দাঁড়ায় - কাম,ক্রোধ,লোভ, মোহো. মদ ও মাৎসর্য. সবার প্রথমে অবস্থান করে "কাম". আর এই কামই হলো মানুষের প্রধান কমজুরি. বাকি রিপুর উৎপত্তি একদিক থেকে বলতে গেলে এর থেকেই. আর এই কামকেই অস্ত্র বানিয়ে পুরুষ শিকার করে succubus. আর তন্ত্র মন্ত্রের কথা যদি বলেন তবে এই রিচুয়াল প্রায় সব দেশেই আছে. আমাদের দেশে যেমন পিশাচ তন্ত্র, ডাইনি তন্ত্র আরও নানারকম তন্ত্র, তেমনি বিদেশেও এমন অনেক নিয়ম কানুন আছে যা দিয়ে এইসব নরকের জীবকে আহ্বান করা যায়. এদের আমরা মূলত ডেমোন বলেই জানি. বিভিন্ন স্তরের ডেমোন হয়. এই succubus হলো নিম্ন শ্রেণীর ডেমোন. ঐযে বললাম অসাধারণ সুন্দরী... তবে সেটা শুধু সেই পুরুষের চোখেই.... আসলে এরা ভয়ানক দেখতে. বিশেষত এদের পূর্ণাঙ্গ রূপ. অর্ধ নারী আর অর্ধ জন্তু. বাদুড়ের মতন পাখনা, ছাগলের পা, মাথায় সিং. এদের মতো পুরুষ ডেমোনও আছে. তাদের incubus বলে. কিন্তু succubus আরও ভয়ানক. অনেকটা Black widow spider এর মতন. নাম শুনেছেন তো? কি জন্য বিখ্যাত এই মাকড়সা জানেন তো?
দীপঙ্কর: হ্যা..... নিজের পুরুষ সঙ্গীর সাথে মিলনের পরে এরা সেই পুরুষ মাকড়সাকে মেরে খেয়ে ফেলে.
অবনী বাবু: yes..... Very dangerous!! সব ক্ষেত্রে পুরুষ দোষী হয়না স্যার...... কিছু এমন ব্যাপারও আছে যেখানে নারী পুরুষের থেকেও বীভৎস হয়ে উঠতে পারে. এই succubus তাই. নিজের শিকারের মস্তিস্ক দারুন ভাবে ম্যানুপুলেট করতে পারে. যে রূপে চাইবে সেই রূপেই আসতে পারে...... তবে.. সেটা শুধু সেই পুরুষের চোখে. অবশ্য ধীরে ধীরে পুরুষের সহিত যৌন মিলনে এদের শক্তি ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে. তখন হয়ত সত্যিই সেই রূপেই সেই নারী সকলকে দেখা দেবে. যেমন আমার বন্ধুর ক্ষেত্রে হয়েছে. আগে শুধু সে নিজের স্ত্রীকে দেখতো আসতে কিন্তু পরে তার ছেলেও দেখতো যে মা আসছে প্রতি রাতে.
সেই জিপসি মহিলা আমায় জানায় ওদের একপ্রকার নিষিদ্ধ পুস্তক আছে যা পাঠ করলে ও সেই পুস্তকে লিখিত সব নিয়মাবলী পালন করলে সরাসরি শয়তানের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব. অবশ্য তার অনেক নিয়ম যা আপনার আমার পক্ষে মেনে চলা প্রায় অসম্ভব. অনেক বলিদান দিতে হয় আরও নানারকম পর্যায় অতিক্রম করতে হয়. নিজেকে কঠোর না বানালে সেই পর্যায় অতিক্রম সম্ভব নয়... আর একটু যদি ভুল হয় তবে সব শেষ. আর যদি একবার সফল হওয়া যায় তাহলে......
দীপঙ্কর : তাহলে? তাহলে কি?
অবনী: অমরত্ব লাভ.... মানে প্রায় অমরত্বই বলতে পারেন. মৃত্যু ছুঁতেও পারবেনা সেই মানুষকে, কোনো শত্রুর হাতে মৃত্যু নেই, কোনো রোগ ব্যাধি ধরাশায়ী করতে পারবেনা সেই ব্যাক্তিকে ও তার সাথে নানাবিধ অপকর্মের শক্তি যেমন বশীকরণ, স্বপ্ন পূরণ, শত্রু দমন ইত্যাদি. তবে এই অমরত্বের ও অলৌকিক শক্তির একটি নির্দিষ্ট সময়কাল আছে....এই সময়কালের মধ্যে মৃত্যু সেই মানুষের কাছেও আসতে পারবেনা. সেই সময়ের মধ্যে সেই মানব অমর....তবে নিজের এই অমরত্ব সর্বদা বজায় রাখতে সেই ব্যাক্তিকে এক বিশেষ সময়ে বা বলতে পারেন অলোকিক শক্তির সময়কাল ফুরোবার আগেই শয়তানকে খুশি করতে হয়..... বলি দিয়ে.
দিব্যেন্দু: বলি দিয়ে! মানে নরবলি?
অবনী বাবু: আপনি যে বলি ভাবছেন এটা সেরকম নয়.... নিজের হাতে সেই ব্যাক্তিকে কিছুই করতে হয়না. যা করার করে সেই ব্যাক্তির অধীনে থাকা সেই শয়তানি... মানে succubus. যে মানুষ ওই নিষিদ্ধ পুস্তক পাঠ করে শয়তানকে খুশি করতে পারে তার কাছে সেই শয়তানিকে বশে আনা কি আর ব্যাপার...... অনেকে সেই succubus কে নিজের ভোগ মেটাতে ব্যবহার করে আবার কেউ কেউ নিজের কার্যসিদ্ধি করতে. আবার কেউ উভয় ক্রিয়াতেই. তবে এই নারীকে সামলানো ওতো সোজা নয় সে আপনি যতই বড়ো উপাসক হন. এর খিদে মেটাতে না পারলে এর ক্রোধ সেই উপাসকের আয়ু কেড়ে নিতেও পারে. ওই জিপসি মহিলা আমায় বলে ছিল সেই পুস্তকে succubus কে আহ্বান করার সব নিয়মাবলী লেখা আছে. আরও অনেক কিছু লেখা আছে... সবই ল্যাটিন ভাষায়. সেই পুস্তক নাকি ভয়ানক.... পৃথিবীতে মাত্র তিনটি পুস্তক অবশিষ্ট আছে. যারা শয়তানের উপাসক হয় তাদের গুরু তাদের সেই পুস্তকের কিছু নির্দিষ্ট অংশ পাঠ করার জন্য দেয়. সম্পূর্ণ পুস্তক খুব কম উপাসক নিজের চোখে দেখেছে. আমার বন্ধুর ক্ষেত্রেও এমনই কিছু হয়ে ছিল. আমার কাছে ওই মূর্তি বেচতে এমনই এক শয়তান উপাসক এসেছিলো. এই ধরণের উপাসক সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে. আজ থেকে নয়... বহু বছর ধরে. লুসিফার অর্থাৎ শয়তানের দাসত্ব গ্রহণ করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করা. ওই জিপসি মহিলা আমায় জানায় যে ব্যাক্তি সেই succubus কে বশে আনে... সে ওই শয়তানি শক্তিকে একটি মূর্তির মধ্যে আবদ্ধ করে এবং সেই মূর্তি হস্তান্তর করে কোনো ব্যাক্তির কাছে. বলতে পারেন তার শিকারের কাছে. সেই ব্যাক্তি সেই মূর্তি নিজের সাথে একবার নিয়ে গেলেই ব্যাস..... কিছু সময়ের মধ্যেই কার্যসিদ্ধি. অবশ্যই সময় দিতে হয়, ধৈর্য লাগে অনেক নিজের শয়তানি কার্যসিদ্ধি করতে. ওই শয়তানি নিজের রূপ কামনার জালে সেই ব্যাক্তিকে বশীভূত করে, ভোগ করে তিলে তিলে শেষ করে, সেই ব্যাক্তির আয়ু কেড়ে নেয় আর শেষে মৃত্যু ঘটে সেই ব্যাক্তির. আর তার আত্মা শয়তানের বন্দি হয়. শয়তান নিজের কাজে সেই আত্মাকে ব্যবহার করে. আর এই ক্রিয়া যে উপাসকের দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে... শয়তান তাকে দেয় অমরত্বের উপহার তার সহিত স্বপ্ন পূরণ এর সুখ. সাফল্যের চাবিকাঠি চলে আসে তার কাছে. তবে এসবের জন্য জীবন যায় নিষ্পাপ মানুষের. স্যাক্রিফাইস...... এই স্যাক্রিফাইস হল এসব ক্রিয়ার মূল শক্তি. নির্দোষ মানুষের বলিদান.
সব শুনে অর্কর মামা কি বলবেন কিছুই বুঝতেই পারছেন না. ছোটবেলায় ভুত প্রেত এসবে অন্যান্য বাচ্চাদের মতো তিনিও ভয় পেতেন কিন্তু যত বড়ো হয়েছেন ততই বুঝেছেন এসব শুধু গল্পেই মানায়. এসবের বাস্তবিক কোনো অস্তিত্ব নেই... কিন্তু আজ এই মানুষটার সব কথা শুনে তিনি অবাক. বিস্বাস করতে একটুও মন রাজী নয়... অথচ নিজের জামাই বাবুর যে রূপ তিনি দেখেছেন, তাছাড়া ওই খুনের কেসের তদন্তে গিয়ে তিনি যা শুনেছেন তাও তো এড়িয়ে যেতে পারেন না তিনি.
- কি হলো দীপঙ্কর বাবু? অবনী বাবুর প্রশ্নে আবার বর্তমানে ফিরে এলেন অর্কর মামা. ওনাকে চিন্তিত দেখে অবনী বাবু জিজ্ঞেস করলেন - আচ্ছা..... এই মূর্তির ছবি আপনি পেলেন কোথায়? কোনো পুরোনো কেসের সঙ্গে কি.........
ওনার প্রশ্নের পরিবর্তে অর্কর মামা বললেন: সব বলবো.... আগে আপনার কথা শেষ হোক. এই... এই succubus না কি যেন বললেন এর থেকে মুক্তির কি কোনো উপায় নেই? মানে কোনোভাবেই কি এর হাত থেকে বাঁচা সম্ভব নয়?
অবনী বাবু বললেন: প্রশ্ন থাকলে উত্তর তো থাকবেই. এর উত্তরও আছে. অসম্ভব কিছুই নয়. কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যাপারটা এতটাই কঠিন যে প্রায় অসম্ভবই ধরে নিন. একবার এই নারীর জালে যে পুরুষ ফাঁসে তার বেরিয়ে আসা অসম্ভব. যদি না.......
দীপঙ্কর: যদি না? যদি না কি অবনী বাবু?
অবনী বাবু দুই হাতের আঙ্গুল একত্রিত করে টেবিলে রেখে সোজা দীপঙ্কর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন: দেখুন দুটো রাস্তা আছে... এই জাল থেকে বেরোনোর.... কিন্তু দুটোই প্রায় অসম্ভব কঠিন রাস্তা. এক...... এই নারীকে যে উপাসক নিজের শিকারের কাছে পাঠিয়েছে শুধু সেই মানুষই আবার এই নারীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে তার বদলে সেই পুরুষ নিজের অমরত্ব হারাবে কাজেই বুঝতেই পারছেন এই রাস্তা প্রায় অসম্ভব.
দীপঙ্কর: আর.... দ্বিতীয় রাস্তা.
অবনী বাবু: আর দ্বিতীয় রাস্তা হলো যে পুরুষের ওপর এই succubus নিজের জাল বিস্তার করে, যাকে একটু একটু করে নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে আসে... সেই পুরুষ যদি নিজে থেকে চায় যে সে আর এই মায়াবিনীর অধীনে থাকবেনা ও সেই নারীকে আদেশ দেয় যে সে চলে যাক তবেই সেই নারীর হাত থেকে এই পুরুষ মুক্তি পাবে. তবে নিশ্চই বুঝতেই পারছেন এই রাস্তাও কতটা কঠিন. যে মায়াবিনীর রূপে মোহিত হয়ে সেই পুরুষ তার সব কিছু উজাড় করে দেয়, সেই নারীর একপ্রকার ক্রীতদাসে পরিণত হয়, এমন কি কোনো পাপ কর্মেও লিপ্ত হতে রাজী হয়.. সেই পুরুষ কিকরে রাজী হবে ওই শর্তে. যদি না ভেতর থেকে পাপবোধ বা ঘৃণা ও রাগ জন্মায় ওই নারীর প্রতি. যেমনটা আমার বন্ধুর ক্ষেত্রে হলো. নিজের স্ত্রীকে পরপুরুষের সাথে দেখে তার মনে ক্রোধ ঘৃনা উৎপন্ন হয়েছিল আর সেই মোহো কেটে গেছিলো তৎক্ষণাৎ.
দীপঙ্কর: হুমম... বুঝলাম.
অবনী বাবু অর্কর মামার চিন্তিত মুখ দেখে এবারে আবার জিজ্ঞেস করলেন: আমার সব কথা তো শুনলেন...... এবারে আপনি বলুন তো.... এই মূর্তির ফটো আপনি কোথায় পেলেন?
দীপঙ্কর বাবু একবার ভাবলেন সত্যিটা বলেই ফেলবেন কিন্তু এই ব্যাপারটার সাথে তার নিজের বোনের সংসারের সাথে জড়িত তাই আসল ব্যাপারটা গুপ্ত রেখে তিনি বললেন -
দীপঙ্কর: আসলে... একটি কেসের ব্যাপারে এগুলো জানতে এসেছিলাম. একজনের বাড়িতে আমি এই স্ট্যাচু দেখেছিলাম ... ওই বাড়িতে একটি অঘটন ঘটেছেছিল.... সেই বাড়ির একটি মেয়ে আমায় জানায় সব দোষ নাকি সেই মূর্তির.... যদিও আমি তখন এসব কিছুই কানে দিইনি.... কিন্তু আমার পরিচিত একজনের বাড়িতে কদিন আগে আমি এই মূর্তি আবার দেখি. আর তাছাড়াও আমার সেই বন্ধুর মধ্যে কিছু অদ্ভুত পরিবর্তন......
সর্বনাশ!!! অর্কর মামার কথার মাঝেই চেঁচিয়ে বলে উঠলেন অবনী বাবু. তারপরে ভয় আর আতঙ্কিত দৃষ্টিতে দীপঙ্কর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন: দীপঙ্কর বাবু আপনার সেই বন্ধুর জীবন খুবই বিপদে..... সে কি বিবাহিত?
দীপঙ্কর: হ্যা.....
অবনী: তাহলে সবার আগে বিপদ ওনার স্ত্রীয়ের.... এই শয়তান দানবী নিজের শিকারের কাছের মানুষকে বিশেষত মহিলাকে সহ্য করতে পারেনা.... সে নারী সম্পূর্ণ রূপে নিজের করে নিতে চায় ওই পুরুষকে...... তাই সবার আগে সে সেই পুরুষের স্ত্রী বা প্রেমিকাকে রাস্তা থেকে সরায়.... নিজে নয়.... সেই পুরুষেরই সাহায্যে.... কারণ এই পাপে সেই পুরুষের আত্মা পাপী হয় আর শয়তান এটাই তো চায়....... দীপঙ্কর বাবু....... আপনি আগে ওই মূর্তি ওই বাড়ি থেকে সরানোর ব্যাবস্থা করুন... যেভাবেই হোক. আমার কথা মানুন বা না মানুন...... ওই মূর্তি ওই বাড়ি থেকে সরান...... আপনি সব খুলে বলুন ওই বাড়ির সদস্যদের..... দরকার হলে চালাকি করে ওটা কিনে নিন আপনার বন্ধুর বাড়ি থেকে...... তারপরে আমার কাছে নিয়ে আসুন..... আমি টাকা দিয়ে দেবো...... পুরোটাই করতে হবে যখন আপনার সেই বন্ধু বাড়িতে থাকবেনা.....কারণ তার উপস্তিতিতে সে কখনোই ওই মূর্তির হাতছাড়া হতে দেবেনা. সে ওই মূর্তির জন্য পাগল.... কিছুতেই ওটাকে নিজের থেকে আলাদা করবেন না.. তাই সে যখন বাড়িতে থাকবেনা তখন কাজটা করতে হবে. যদিও দিনে কোনো বিপদ নেই.. তাই পুরোটা দিনে করতে হবে.
অবনী বাবুর কথা শুনে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলেন ওনার দিকে অর্কর মামা. ওনার মনেও এবার ভয় ঢুকে গেছে. ভয় এমনই জিনিস যে বিশ্বাস অবিশ্বাসের তোয়াক্কা করেনা.
দীপঙ্কর: আপনি কি বলছেন.....!! ওটা... ওটা বাড়ি থেকে সরাতে হবে মানে..... মানে ওটা তাহলে সত্যিই .....!!
অবনী বাবু অধৈর্য হয়ে বললেন: এছাড়া আর এই মুহূর্তে কোনো রাস্তা নেই.... অন্তত আগে ওই বাড়ি থেকে আপোদটা সরিয়ে ফেলা হোক........ নইলে... নইলে বিরাট বড়ো একটা বিপদ নেমে আসবে.... আসবে কি? আসতে চলেছে.... দানবী নিজের খেলা দেখাতে শুরু করে দিয়েছে..... আচ্ছা.... আচ্ছা একটা কথা বলুন তো.... আপনার সেই বন্ধুর মধ্যে আপনি কি কি পরিবর্তন লক্ষ করেছেন এখন পর্যন্ত?
দীপঙ্কর বাবু: ঐতো ও আগের থেকে বেশ রুগ্ন হয়ে গেছে..... জিজ্ঞেস করায় সে বললো ডায়েট করছে... তা ছাড়া অন্যমনস্ক... ওর স্ত্রী তো বললো এখন নাকি সকালে ঘুম ভাঙতেই চাইনা... আর.... আর ও বেশ হাসি খুশি স্বভাবের লোক.... কিন্তু এখন নাকি একটু রাগী হয়ে গেছে.... এই..
অবনী বাবুর চোখ মুখে আরও আতঙ্ক ফুটে উঠলো. নিজের চশমাটা খুলে কপালে হাত বোলাতে বোলাতে চিন্তিত মুখে নিজেকেই নিজে বললেন: আবার.... আবার সেই সব পুনরাবৃত্তি হচ্ছে.... আবার.....এইভাবে আর কিছুদিন চললে উফফফফ আমি আর ভাবতে পারছিনা....!!!
তারপরে ডানদিকে তাকিয়ে দেয়ালে টাঙানো রক্ষা কালি মায়ের ছবির দিকে ভক্তিমূলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাকে বললেন: মা..... মা... রক্ষা করো..... তোমার এক সন্তান আজ বিপদে.... নিজের ছেলেকে রক্ষা করো মা ওই দানবীর থেকে..... তুমিই পারবে মা....রক্ষা করো... রক্ষা করো.....
ট্রেনে করে ফিরছিলেন অতনু বাবু. আজ বেশ ভিড়. আজকাল কেন জানি আর কাজে আগের মতো মন বসছেনা. ইচ্ছেই করেনা কাজ করতে. বার বার অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন অর্কর বাবা. এইতো আজকেই এর জন্য চঞ্চল বাবু হালকা করে দুটো কথাই শুনিয়ে দিলো. মাথাটা গরম হয়ে গেছিলো অতনু বাবুর. কোনোরকমে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন তখন. কেন আজকাল ওনার রাগ টাও খুব বেড়ে গেছে. একটুতেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে. তারপর আবার খাওয়া দাওয়া করতেও আর সেইভাবে ইচ্ছে করেনা. কাল শ্রীপর্ণা মাছের ঝোলটা দারুন রেঁধেছিলো কিন্তু অতনু বাবুর সেইভাবে ভালোই লাগছিলোনা খেতে. কেমন গন্ধ লাগছিলো. মাত্র একটা মাছ দিয়ে সামান্য খেয়েই উঠে পড়েছিল অর্কর বাবা. আজকাল যে কেন এরকম হচ্ছে বুঝতে পারছেন না অর্কর বাবা. শুধু রাতের সুখ টুকু ছাড়া যেন বাকি সব জঘন্য লাগে.
এসবই ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিলেন তিনি. এমন সময় এক বৃদ্ধা সেই স্থানে এসে দাঁড়ায়. মনে হয় সে বসার জন্য জায়গা খুঁজছে. অতনু বাবু তাকিয়ে দেখলেন ওনার দিকে. গেরুয়া পরিধারী ওই বৃদ্ধা, গায়ে হাতে নানারকম তাবিজ. অনেক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন আর এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছেন.... বসার জায়গা পাননি মনে হয় তারওপর বেশ ক্লান্ত লাগছে ওনাকে. অতনু বাবু চারিদিকে তাকিয়ে দেখলেন. সবাই যে যার মতো বসে আছে. কেউ তাকিয়েও দেখছেন, বা হয়তো দেখেও না দেখার ভান করছে. বয়স্ক মানুষটাকে ঐভাবে দেখে আর থাকতে না পেরে অর্কর বাবাই উঠে ওই বৃদ্ধাকে নিজের জায়গায় ছেড়ে দিলেন. এইটুকু শ্রদ্ধা, ভদ্রতা ও মানবিকতা হয়তো এখনও অবশিষ্ট ছিল ওনার মধ্যে. বৃদ্ধা কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সামান্য হেসে ধন্যবাদ বাবা... বলে ওনার স্থানে বসে একটু স্বস্তির নিঃস্বাস নিলেন. একটু পরে স্টেশনে কিছু মানুষ নেমে গেলো. ওনার আসে পাশের থেকেও দুজন নেমে যেতেই উনি তাদের একজনের স্থানে বসে পড়লেন. ট্রেন আবার নিজস্ব গতিতে চলছে. অতনু বাবু নিজের খেয়ালে ডুবে ছিলেন.... হঠাৎ ওনার চোখ পড়লো ওই বৃদ্ধার দিকে. একি! মহিলা যে সোজা ওনার দিকেই তাকিয়ে. বৃদ্ধার মুখে চিন্তার ছাপ. প্রথমে উনি ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলেন কিন্তু একটু পরেও তাকিয়ে যখন দেখলেন বৃদ্ধা সেই আগের মতোই ওনার দিকে চিন্তিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তখন অস্বস্তি হতে লাগলো ওনার. এবারে অতনু বাবু নিজেই ওই বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেন -
অতনু:আপনি কি কিছু বলতে চান?
বৃদ্ধা সামান্য হেসে বললেন - হ্যা বাবা.... যদি কিছু মনে না করো একটা কথা বলবো?
অতনু: হ্যা.. বলুন?
বৃদ্ধা: বাবা.... তোমার কি কোনোপ্রকার দুশ্চিন্তার কারণ দেখা দিয়েছে? বা কোনো ঝামেলায় পড়েছো কি বর্তমানে?
অতনু: কেন বলুনতো? হঠাৎ এমন কথা জিজ্ঞেস করছেন?
বৃদ্ধা: না মানে..... তুমি বলেই বলছি বাবা... কারণ এখনও তোমার মধ্যে ভালো কিছু গুন অবশিষ্ট রয়েছে দেখতে পাচ্ছি. কিন্তু হয়তো বেশিদিন......
অতনু: বেশিদিন কি?
বৃদ্ধা ব্যাপারটা এড়িয়ে হেসে বললো: না.. না.. কিছুনা.... বাবা একটা কথা রাখবে আমার তুমি? যদি রাখো তাহলে খুব ভালো লাগবে আমার.
অতনু: হ্যা বলুন..... আপনাকে কি নামিয়ে দিতে হবে কোথাও?
বৃদ্ধা আবার হেসে বললো: না.. না.. আমি নিজেই চলে যেতে পারবো.... আমি অন্য কথা রাখার ব্যাপারে বলছিলাম.
এই বলে তিনি নিজের ঝোলা থেকে একটি জবা ফুল বার করে প্রথমে নিজ মাথায় ছুঁয়ে নিলেন.. তারপরে সেটি অতনু বাবুর হাতে দিয়ে বললেন-
বৃদ্ধা: বাবা..... এই ফুলটি কিছুদিন নিজের সাথে রাখো. তুমি এসবে মানো আর নাই মানো... অন্তত এই বুড়ির কথা রাখতেই এই ফুলটি নিজের সাথে রাখো.
অতনু সামান্য হেসে: তাহলেই কি আমার সব বিপদ কেটে যাবে নাকি?
বৃদ্ধা বললেন: সব না কাটলেও... সবথেকে বড়ো বিপদটা মনেহয় কেটে যাবে তোমার. নাও বাবা.
অতনু বাবু ফুলটি হাতে নিলেন. ছোট একটি জবা ফুল. যদিও তিনি এইসব ব্যাপারে খুব একটি মানেন না... কিন্তু বৃদ্ধার কথা রাখতে তিনি সেটি নিয়ে পকেটে রেখে দিলেন.
বৃদ্ধা বললেন: আজ রাতে নিজের মাথার বালিশের নীচে এটি রেখে ঘুমিও বাবা. বয়সে আমি তোমার মায়ের থেকেও বড়ো... আমার এই কথাটা রেখো কিন্তু বাবা. দেখবে তোমার সব বাঁধা কেটে যাবে.
একটু পরেই ট্রেন থামলো. বৃদ্ধা উঠে পড়লো আর বললো: আমার স্টেশন এসে গেছে বাবা. আমি যাচ্ছি... তুমি কিন্তু আমি যা বললাম সেটি যথার্থ ভাবে পালন করো বাবা. আমি আসি.
নেমে যাবার আগে সেই বৃদ্ধা অতনু বাবুর মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করে বললেন: তোমার কল্যাণ হোক. তারপরে তিনি নেমে গেলেন. ভিড়ের মধ্যে আর খুঁজে পাওয়া গেলোনা তাকে. অতনু বাবু নিজের জায়গাতেই বসে রইলেন. অনুভব করলেন হঠাৎ যেন অনেকটা নিজেকে শান্ত লাগছে. অনেকদিন পরে যেন মনে একটা শান্তি, একটা আনন্দ অনুভব করছেন তিনি. কেন... তা তিনি জানেন না.
বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেকটা ঝরঝরে হয়ে উঠলেন. যেন কিসের একটা ভার নেমে যাচ্ছে শরীর থেকে. বাড়ি পৌঁছে সেই আগের হাসি মাখা মুখ নিয়ে ঘরে ঢুকলেন অর্কর বাবা. শ্রীপর্ণা স্বামীর আবার সেই আগের হাসিমুখ দেখে মনে একটু শান্তি পেলো. ঘরে এসে কাপড় পাল্টানোর সময় পকেট থেকে ফুলটা বার করে টেবিলে রেখে জামা পাল্টে এসে সোফায় বসলেন ছেলের পাশে. নিজের বাবাকে সেই আগের রূপে ফিরে পেয়ে অর্ক অবাক এবং সাথে আনন্দিতও. বাবাকে জড়িয়ে বসে রইলো সে. এতদিন পরে যেন সে তার আগের বাবাকে ফিরে পেয়েছে.
অবনী বাবুর থেকে সব জেনে এসে কি যে করা উচিত বুঝে উঠতে পারছেন না অর্কর মামা. যা শুনে এলেন তার একটুও বিশ্বাস করতে মন চাইছে না. কিন্তু........ যা যা তিনি নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন তাও বা এড়িয়ে যান কিকরে? ওই খুন হয়ে যাওয়া বাড়ির বাচ্চা মেয়েটার বয়ান, নিজের জামাইবাবুর দৈহিক পরিবর্তন, ওই মূর্তি.... উফফফফ কিচ্ছু বুঝে উঠতে পারছেন না দীপঙ্কর বাবু. বোনকে জানাবেন? না... যদি এই ব্যাপার নিয়ে স্বামী স্ত্রীয়ের ঝামেলা হয়. শ্রীপর্ণা আবার দুশ্চিন্তায় পড়বে. কিন্তু... কিন্তু তাহলে ওই মূর্তি ওই বাড়ি থেকে সরানো যায় কিভাবে? না.... বোনকে সব সত্যি জানানো উচিত হবেনা..... তার থেকে একবার কাল কি অতনুকে ফোন করবেন? কি বলবেন? তোমার মূর্তিটা আমায় দাও? কোনো লাভ হবে তাতে? না.... তাহলে সব সত্যি খুলে বলবেন? যদি না মানতে চায় তাহলে একবার অবনী বাবুকে নিয়ে অতনুর সাথে দেখা করবেন. এখনও সময় আছে.... যদি এতেও লাভ না হয় তাহলে অন্য রাস্তা বার করতে হবে. এ যে কি অদ্ভুত পরিস্থিতিতে পড়লেন..... উফফফ.