Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance চ্যাটরুম
#3

বাইরে বেরতেই একটা রিকশা পেয়ে গেল।
কয়েক মুহুর্ত আগে অবধিও মনটা বেশ ফুরফুরে ছিল ওর সোমের সাথে কথা হবে, তাই ছটফটানিটা ছিলই, এদিকে টিঙ্কুর চোখের চোরা দৃষ্টি একটা হাল্কা শিরশিরানি তৈরী করেছিল। তবে দোকান থেকে বেরনোর মুহুর্তে অনুদিদির কথা মনে পড়তেই সেই যে খারাপ লাগাটা শুরু হল, সেটা রিকশায় যেতে যেতে যেন জেঁকে বসছে।
চেষ্টা করেও কাটাতে পারছে না রীণা।
কী যে মাথায় ভূত চেপেছিল অনুদি-র কে জানে। সুমিতদার সাথে প্রায় পাকা হতে যাওয়া সম্পর্কটা হঠাৎ কেন যে ভেঙ্গে দিয়ে বয়সে বেশ কয়েক বছরের ছোট প্রবীরকে বিয়ে করে বসল অনুদি, আজও বুঝতে পারে না রীণা।
আর তারপরে সুমিতদাই বা যে ওইরকম একটা স্ক্যান্ডাল ঘটিয়ে বসবে, তাই বা কে জানত।
এতদিন যার সাথে প্রেম করল, তার নামে এরকম মিথ্যা রটাতে একবারও ভাবল না সুমিতদা! অথচ অনুদিদির সাথে বিয়ে হবে বলে এই সূত্রে জামাইবাবুর মতোই অনেকটা ব্যবহার করত সুমিতদা।
পড়াশোনায় ভাল, চাকরীও ভাল করত সুমিতদা, কিন্তু অনুদিদি হঠাৎ যে কেন ওকে বিয়ে করতে বেঁকে বসল, সেটা আজও জানে না রীণা।
আর সেই রাগেই মাসিদের পাড়ার লোকজনের কাছে ছড়িয়ে দিল অনুদিদি নাকি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়েছিল! সুমিতদার ঔরসজাত সন্তানই নাকি ছিল অনুদিদির পেটে। কোন নার্সিং হোমে নিয়ে গিয়ে নাকি অ্যাবরশন করিয়েছিল সুমিতদা।
আর এইসব কেলেঙ্কারির গুজব ছড়াতে বেশী সময় নেয় নি পাড়ায়। যতই হবু বর হোক, বিয়ের আগে পাড়ার মেয়ের কুমারীত্ব হারানো সেই সময়  লোকে ভাবতেই পারত না।
আজকাল তো আকছার হচ্ছে এসব।
কিন্তু সুমিতদা কেন ওই মিথ্যা কথাটা রটিয়েছিল, আর কেনই বা ওই গুজবটার আগে হঠাৎই প্রবীরের সাথে মাখামাখি শুরু করেছিল, সেটা অনুদিদি কোনওদিন বলে নি রীণাকে।
বিয়ের পরে প্রবীর আর তার বাপ-মায়ের কানেও কোনও সহৃদয় ব্যক্তি দায়িত্ব নিয়ে অনুদিদির প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ার সেই মিথ্যাটা তুলে দিয়ে এসেছিল।
নতুন শ্বশুড়বাড়িতে সেই নিয়ে নিত্য অশান্তি। প্রবীরও বিশ্বাস করে নিয়েছিল যে অনুদিদি বিয়ের আগেই কুমারীত্ব হারিয়েছে।
একদিন নাকি খুব গালাগালি করে মারধরও করেছিল।
সেই রাতেই এক কাপড়ে মাস তিনেকের বিবাহিত জীবন ছেড়ে ওদের বাড়িতে চলে এসেছিল অনুদিদি।
সেই সময়টায় অনুদিদিকে আগলে রাখত রীণার মা। ওইরকম হাসিখুশি, মজা ইয়ার্কি করা অনুদিদি একেবারে অন্যরকম হয়ে গিয়েছিল তখন।
ওর বর প্রবীর দুএকবার নিয়ে যেতে চেয়েছে, কিন্তু রীণার বাবা গম্ভীর মুখে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে একবার যে গালাগালি করে গায়ে হাত দেয়, সে আবারও দেবে। তাই অনুকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতে ও বাড়িতে যেন আর পা না দেয় প্রবীর।
কয়েকমাস পরে ডিভোর্সের নোটিস এসেছিল মাসির বাড়িতে।
নিজেদের পাড়াতেও ফিরতে পারত না লোকলজ্জার ভয়ে, তাই ওদের বাড়ি থেকেই কোর্ট কাছারির ঝামেলা সামলাতো।
রীণার বাবা মা সবসময়ে পাশে থেকেছেন দিদির মেয়েটার।
রীণার মাসি মাঝে মাঝেই বোনের বাড়িতে আসতেন মেয়ের কাছে, কিন্তু মেসো খুব কমই এসেছিলেন।
রীণার কেবলই মনে হত মেয়ের ব্যাপারে একটা আদ্যন্ত মিথ্যা কি তাহলে মেসোও বিশ্বাস করে নিয়েছে!
বছর খানেক ছিল বোধহয় অনুদিদি ওদের বাড়িতে।
কোর্টকাছারির মধ্যেই চাকরীর চেষ্টা করত। পরীক্ষা দিত মাঝে মাঝেই।
ডিভোর্স পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই কুচবিহারে চলে যায় একটা স্কুলের চাকরী নিয়ে।
একাই থাকে। বিয়ে করবে না আর খুব স্পষ্ট ভাষায় বাবা মা, মাসি মেসোদের জানিয়ে দিয়েছে অনুদিদি।
ওর বন্ধুবান্ধবীদের সকলেরই বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেমেয়ের মা তারা এখন।
অথচ তাদের সকলের পথপ্রদর্শক ছিল যে অনুদিদি, সেই একা পড়ে আছে সেই কুচবিহারের কোন মফস্বল শহরে।
অনুদিদির কথা ভাবতে ভাবতে কখন বাড়ির সামনে পৌঁছিয়ে গিয়েছিল রীণার রিকশাটা।
---

বাড়িতে ঢুকে শাশুড়ীর ঘরে গিয়ে ওষুধটা দিয়ে নিজের ঘরে ফিরল রীণা।
একবার আড়চোখে কম্পিউটারটার দিকে তাকাল। এখন আর সোমের সাথে আড্ডা দিতে ভাল লাগছে না ওর। মুডটা অফ হয়ে গেছে।
তবুও বেচারা অপেক্ষা করে আছে, একেবারে কথা না বলা উচিত হবে না।
তাই লেগিংস আর কুর্তি পাল্টিয়ে নাইটিটা পড়ে নিয়ে বাথরুমে গেল একবার। মুখে চোখে জল দিয়ে এল।
তারপরে বসল কম্পিউটারের সামনে।
‘হাই। আছো?’ লিখল ছোট্ট করে।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উত্তর এল, ‘ওষুধ পেলে? অনেক দূর যেতে হল নাকি?’
‘হুম। বড় রাস্তায় যেতে হল। পাড়ার দোকানটা বন্ধ হয়ে গেছে। সরি তোমাকে অনেকক্ষণ ওয়েট করালাম।‘
‘ধুর। এতে সরি বলার কী আছে! আমি তো এমনিই বসে ছিলাম। গল্পের বই পড়ছি, গান শুনছি আর মাঝে মাঝে চেক করছিলাম যে তুমি এলে না কি!’
‘কী গান শুনছ?’
‘কিশোর কুমার। শুনবে? ইউ টিউবের লিঙ্ক দিতে পারি।‘
‘লিঙ্ক পাঠিয়ে দাও। কিন্তু এখন মুডটা একটু অফ হয়ে গেছে। গানটান ভাল লাগছে না। পরে শুনব।‘
‘কেন? কী হল?’
‘নাহ কিছু না। বাদ দাও।‘
একটু পরেই ইউ টিউবের একটা লিঙ্ক পাঠালো সোম। অনেকবার শোনা কিশোরের এই গানটা। মুডটা ফেরানোর চেষ্টা করতে গানের লিঙ্কটা খুলে হেডফোনটা কানে লাগালো রীণা।
‘কী? একেবারে চুপ করে গেলে যে!’
‘গান শুনছি তো!’ জবাব দিল রীণা।
‘শুধু গানই শুনবে বুঝি আজকে?’
রীণা জানে এই কথাটা কীসের ইঙ্গিত। আজ রবিবার, সোমের ছুটির দিন। কদিন ধরেই এই রবিবারের অপেক্ষায় ছিল ওরা। সারা দুপুর সোম ওর কোয়ার্টারে থাকবে, এই কথাটা দু তিন দিন ধরেই বলছে ও রীণাকে। আর কোয়ার্টারে যে সোম একাই থাকে, সেটা তো জানাই আছে!
তাই রবিবার দুপুরবেলা একটু দুষ্টুমি হতে পারে কী না, সেটা লজ্জার মাথা খেয়ে শেষমেশ কাল রাতে জিগ্যেসই করে ফেলেছিল সোম।
ঠোঁট টিপে নিজের মনেই একটু হেসে রীণা লিখেছিল, ‘খুব শখ বুঝি?’
শখ তো ওর নিজেরও। তাও একবারে ধরা না দিয়ে আরও একটু খেলিয়েছিল সোমকে।
‘শখ কী শুধু আমার? তোমার ইচ্ছে নেই বুঝি?’ জবাব এসেছিল কাল রাতে।
‘ইচ্ছে থাকাটাই তো স্বাভাবিক – সবই তো জানো!’ উত্তর দিয়েছিল রীণা।
‘তাহলে আর কী! মিঞাঁ বিবি রাজি তো কেয়া করেগা কাজি!’
‘ইশ! আমরা মিঞা বিবি হয়ে গেলাম কবে?’ হেসে উত্তর দিয়েছিল রীণা। গালটা বোধহয় সামান্য লালও হয়েছিল।
‘ভার্চুয়াল ওর্য়াল্ড এটাই সোনা, এখানে কেউ প্রেম করতে আসে না,’ উত্তর দিয়েছিল সোম।
ভার্চুয়াল ওর্য়াল্ড, চ্যাটরুম – এসব নিয়ে আগে খুব একটা ধারণা ছিল না রীণার। ফেসবুকে কয়েকজন নতুন ছেলে বন্ধু হয়েছিল যদিও আগেই, তবে তাদের সাথে ম্যাসেঞ্জারে একটু আধটু ফ্লার্ট ছাড়া আর কিছু করতে সাহস হয় নি ওর।
ফেসবুক বন্ধুদের ব্যাপারে যেসব ঘটনা খবরের কাগজে বেরয়, সেগুলো তো সাংঘাতিক! কার মনে কী আছে সে তো বোঝা যায় না।
তবে পরিচয় গোপন রেখে যে চ্যাট করা যায়, সেটা এক বান্ধবীর কাছে শুনেছিল।
তারপরে এক অলস দুপুরে কম্পিউটার খুলে বসে পড়েছিল। বেশ কয়েকটা চ্যাট সাইটে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে প্রথমেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল।
রীণা নামটা না ব্যবহার করে নাম নিয়েছিল কাকলি
মেয়ের নাম দেখেই হুড়মুড়িয়ে ঢুকতে শুরু করেছিল প্রাইভেট মেসেজ। কীভাবে সামলাবে বুঝেই উঠতে পারছিল না ও।
কয়েকটাতে জানতে চাওয়া হয়েছিল এ এস এল! সেটা যে কী বুঝতে ওকে গুগল করতে হয়েছিল।
তারই মধ্যে প্রচুর মেসেজ – বেশীরভাগই প্রচন্ড নোংরা আর হিন্দী বা ইংরেজীতে
কেউ লিখেছে ‘কী রেট কত?’, ‘চোদাবি নাকি?’, ‘সাইজ কত?’ এইসব কথা।
গা গুলিয়ে উঠেছিল রীণার। ওই সাইটটা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।
তারপরে আরও বেশ কয়েকটা সাইটেও একই অভিজ্ঞতা। কয়েকটাতে আবার পর্ণো ছবি দিচ্ছে লোকে, সেগুলোকে চ্যাটরুমের অন্যরা জিফ বলছে।
বুঝতে আবারও গুগল ভরসা।
ওই জিফগুলো বেশ উত্তেজক। রীণার তো দেখতে বেশ লাগছিল।
তবে নোংরা মেসেজের বন্যায় হাবুডুবু খেতেই হচ্ছিল ওকে।
ওই সাইটে আবার নানা রুম আছে। এই রুম, ওই রুম ঘুরতে ঘুরতে একটা বাঙালী নামের রুম পেয়েছিল।
উৎসাহ নিয়ে সেখানে ঢুকেছিল। বেশ কয়েকজন ছিল রুমটাতে। তবে ওইরকম খারাপ মেসেজ এসেছিল বোধহয় একটা কি দুটো।
বাকিরা বেশ সাদরে ডেকে নিয়েছিল ওকে।
পরে জেনেছে কারণটা – খুব বেশী মেয়ে নাকি চ্যাটরুমগুলোতে আসে না। তাই কাকলি বলে একটা মেয়েকে পেয়ে ওরা আর হারাতে চায় নি।
ও বলেছিল যে চ্যাটিংয়ে ওটাই ওর প্রথম দিন।
দুএকজন দায়িত্ব নিয়ে ওকে ওই সাইটের নানা ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে দিয়েছিল – যেমন কেউ অসভ্যতা বেশী করলে তাকে কীভাবে মিউট করে দিতে হয়, বা প্রাইভেট রুমটা কী জিনিষ!
টুকটাক কথার মধ্যেই সোম একটা ছোট্ট হাই পাঠিয়েছিল।
সেই শুরু।
তারপরে দুজনে বয়স, কী করে – এসব ইনফরমেশন দেওয়া নেওয়া করেছিল। কয়েকজন তারই মধ্যে জানতে চেয়েছিল আরপি করতে কী না!
সোমের কাছেই রীণা জানতে চেয়েছিল আরপি ব্যাপারটা কী!
রোল প্লেয়িংটা রীণাকে বোঝাতে বোঝাতে কীকরে যেন সোম কাকলির সাথে রোল প্লেয়িং শুরুই করে ফেলেছিল।
একটা সময়ে দুজনেই বুঝতে পেরেছিল যে ওরা সত্যিই আরপি শুরু করেছে।
ব্যাপারটাকে এত সহজ আর স্বাভাবিক করে দিয়েছিল সোম, যে রীণার অস্বস্তি হয় নি একটুও।
কিন্তু সেদিন সোম শরীরের দিকে ঘেঁষেই নি একদম। যেন দুজন অ্যাডাল্ট নারী-পুরুষ গল্প করছে – এভাবেই কথা বলে সেদিনের মতো বিদায় নিয়েছিল।
ততক্ষণে বিকেল হয়ে গেছে। শাশুড়ীর চা খাওয়ার সময় হয়েছে আর সোমেরও অফিস ছুটির সময় হয়ে গেছে।
কথা হয়েছিল রাতের দিকে আবারও গল্প হবে।
কিন্তু খাওয়া দাওয়া করে সংসারের টুকটাক কাজকর্মগুলো সারতেই বরের ফোন এসেছিল। তার সাথে সত্যিকারের স্বামী স্ত্রীর দুষ্টুমিগুলো করতে করতে খেয়ালই ছিল না যে ভার্চুয়াল জগতে তার জন্য কেউ অপেক্ষা করছে।
পরের দিন স্নান করে খাওয়া দাওয়া সারার পরে খেয়াল হয়েছিল, ‘যাহ! কাল যে রাতে আসব বলেছিলাম সোমকে! একদম তো ভুলে গেছি!’
আবারও কম্পিউটারে লগ ইন – সেই রুমটায় পৌঁছিয়ে যাওয়া।
একটু অবাক হয়েছিল সেখানে অলরেডি অপেক্ষা করছে সোম!
খুব সরি টরি বলেছিল – কিন্তু আগের রাতে না আসার কারণ হিসাবে বরের সাথে টেলিফোনে কী হয়েছিল, সেটা বেমালুম চেপে গিয়ে একটা ঢপ দিয়েছিল রীণা।
দ্বিতীয় দিনে রোল প্লেয়িংটা আবারও শুরু করার প্রস্তাবটা সোমই দিয়েছিল খুব ভদ্র ভাবে।
সেদিনই দুই ভার্চুয়াল নরনারীর শরীর একে অন্যকে হাল্কা ছুঁয়ে দেখেছিল।
রীণার গা শিরশির করতে শুরু করেছিল। হাজার হোক পরপুরষের ছোঁয়া – যতই হোক তা ভার্চুয়াল!
বেশ কয়েক ঘন্টা পরে, সেই বিকেলে চ্যাট শেষ করে শাশুড়ীর আর নিজের জন্য চা করতে যাওয়ার আগে বাথরুমে গিয়ে শাওয়ারের তলায় দাঁড়াতে হয়েছিল রীণাকে।
সেই শেষ বিকেলে শাওয়ারের ঠান্ডা জল আর উষ্ণ লাভাস্রোত মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল।
তবুও স্নানের পরে চা দুকাপ চা করেও চিনি মেশানো চায়ের কাপটা সে দিয়ে এসেছিল সুগারের পেশেন্ট শাশুড়ীর ঘরে, যাঁর কোনওরকম মিষ্টি খাওয়াই একেবারে নিষিদ্ধ।
---

বেখেয়াল আর কাকে বলে!
ঘরে এসে বেশ কিছুক্ষণ পরে নিজের কাপে বেশ কয়েকবার চুমুক দেওয়ার পরে খেয়াল করেছিল রীণা, যে ওর চায়ে চিনি দেওয়া নেই।
চটক ভেঙ্গেছিল রীণার তখনই।
প্রায় দৌড়ে গিয়েছিল শাশুড়ীর ঘরে।
‘চায়ে চুমুক দিয়ে দিয়েছেন নাকি মা?’ তড়িঘড়ি জানতে চেয়েছিল রীণা।
‘হুম। তবে এক চুমুকই দিয়েছি,’ বহুদিন পরে মুখমিষ্টি করার সুযোগ পেয়ে বেশ খুশি ছিলেন শাশুড়ী।
আঙ্গুল তুলে বেডসাইড টেবিলে রাখা প্রায় ভর্তি চায়ের কাপটার দিকে দেখিয়েছিলেন তিনি।
‘নিজের কাপে চুমুক দিয়েই বুঝেছি যে কী কান্ড করেছি। ৫ মিনিট বসুন। করে নিয়ে আসছি,’ শাশুড়ীর কাপটা নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গিয়েছিল ওই ঘর থেকে।
আবারও গ্যাসে চায়ের জল গরম করতে দিয়ে ওপরের পাটির দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা একটু কামড়ে ধরেছিল রীণা।
শাশুড়ীর জন্য এক কাপই চা করেছিল, চিনি ছাড়া। আর ও যে কাপটা নিয়ে চুমুক দিয়েছিল, সেটাতে চিনি মিশিয়ে নিয়েছিল।
নিজের ঘরে ফিরে এসে বিছানায় বসে কাপে চুমুক দিতে দিতে মনে মনে বলেছিল, এ কী হল আমার!! একদিন চ্যাট করেই এই অবস্থা করে দিল লোকটা!!
এরপরে ???
রীণা জানে না।
কারও সাথে যে আলোচনা করবে, সেটাও সম্ভব না। কারণ এ যে নিষিদ্ধ আড্ডা!
ভাবতে ভাবতেই সোমের সাথে আর পিটা রিওয়াইন্ড করছিল রীণা!
লোকটার প্রত্যেকটা মুভ স্পষ্ট মনে পড়ে যাচ্ছে ওর।
এমন একটা সিচুয়েশন তৈরী করেছিল সোম রোল প্লের জন্য, যেন কাকলির নামের আড়ালে সত্যিই রীণাই ছিল।
তার আগে রীণা, মানে কাকলির পরিবার, স্বামী – শাশুড়ি, ওর পড়াশোনা, পছন্দ-অপছন্দ অনেকটাই জেনে নিয়েছিল সোম।
তার ওপর ভিত্তি করেই এমন একটা সিচুয়েশন তৈরী করেছিল, এক্কেবারে আসলের মতো।
শুধু কম্পিউটারে টাইপ করে যে এমন আসল উত্তেজনা তৈরী করা যায়, কোনও ধারণাই ছিল না রীণার!
সেই দুপুরে সোম হয়েছিল কাকলির বরের বন্ধু। রীণার বর যে বাইরে থাকে কাজের সূত্রে, সেটা সোম আগেই জেনে গিয়েছিল।
বাইরে থেকে কাকলির বর বন্ধুকে ফোন করে তাদের বাড়িতে পাঠিয়েছে একটা জরুরী প্রয়োজনে। সেই সময়ে বন্ধুপত্নী বাড়িতে একা। খেয়েদেয়ে সবে একটু গড়িয়ে নিতে শুয়েছে।
ঠিক যেমনটা রীণার করার কথা ছিল, কিন্তু না গড়িয়ে ও চ্যাটে বসেছিল।
দরজা খুলেই কাকলি দেখেছিল যে বরের বন্ধু সোম দাঁড়িয়ে আছে। বলেছিল, ‘সরি তোমার ঘুমের ডিসটার্ব করলাম বোধহয়। তোমার বরকে কতবার বললাম বৌদি এখন খাওয়া দাওয়া করে বোধহয় শুয়েছে একটু – বিকেলে যাব তোদের বাড়ি। শুনলই না। এখনই আসতে হল। একটা পেপার না কী দেবে তুমি, সেটা কুরিয়ার করতে হবে।‘
কাকলির বকলমে রীণা লিখেছিল, ‘ও হ্যাঁ। সকালে মেসেজ পাঠিয়েছিল যে একটা সার্টিফিকেট পাঠাতে হবে ওর অফিসে। সে তো আমিই করে দিতে পারতাম! আপনাকে আসতে বলল কেন?’
থার্ড ব্র্যাকেট দিয়ে সোম লিখেছিল, ‘সুপার্ব। পারফেক্ট নাটক। একদিনেই তো শিখে গেছ দেখছি।‘
থার্ড ব্র্যাকেটেই রীণা উত্তর দিয়েছিল, ‘লোল’।
এই থার্ড ব্র্যাকেটের মধ্যে লেখাগুলো যে রোল প্লে চ্যাটের বাইরে দুজনের কথাবার্তা, সেটা সোমই প্রথমদিন শিখিয়ে দিয়েছিল।
বরের বন্ধু ঘরে এসে বসেছিল। বরের সার্টিফিকেটের সঙ্গে ভর দুপুরবেলায় তার জুটেছিল পোড়া আমের সরবৎ। আর তারপরে একেবারে কপিবুক স্টাইলে বা বলা যেতে পারে দক্ষিণী সফটকোর পর্নের আদলে গ্লাসটা ধরাতে গিয়ে কাকলির আঁচলটা খসে গিয়েছিল।
আঁচল খসার ব্যাপারটা রীণাই লিখেছিল।
সোম সাথে সাথেই থার্ড ব্র্যাকেটে লিখেছিল, ‘তুমি তো পড়ে ছিলে নাইটি! আঁচল খসল কী করে!! হা হা হা!’
কাকলি যা-তা রকমের ছড়িয়েছে বুঝেই জিভ কেটেছিল রীণা।
রীণা জিভ কাটলেও উত্তরটা দিয়েছিল কাকলি, ‘ইশ!!!! হি হি হি !’
‘নো প্রব! ক্লিভ কিন্তু নাইটি পড়া অবস্থাতেও দেখে ফেলতে পারে তোমার বরের বন্ধু! ডিপেন্ড করে তুমি কীরকম নাইটি পড়ে আছো, তার ওপরে! একটু লো কাট নাকি? আর নাইটির নীচে অন্য কিছু না থাকলেও ঝুঁকে পড়লে ক্লিভ দেখা যায় ম্যাডাম!’
লিখেই খিল খিল করে হেসেছিল স্মাইলি দিয়ে।
গত সপ্তাহ তিনেক ধরে চ্যাট করার পরে এখন রীণা জানে সোমের ওই কথাটার মানে কী ছিল। ও খুব চালাকি করে জেনে নিতে চেয়েছিল রীণা আসলে কী পোষাকে রয়েছে, বা অন্তর্বাস রয়েছে কী না, সেটা।
কাকলি কিছু না বুঝেই সব বলে ফেলেছিল।
ও পাশে সোম নিশ্চই নিজের আচমকা পাওয়া সাফল্যে মুচকি হেসেছিল।
তারপরে আবারও চালিয়ে গিয়েছিল আর পি চ্যাট।
যার পরিণতি হয়েছিল সোম তার বাল্যবন্ধুর বউকে নিয়ে তাদেরই বিছানায় পৌঁছিয়েছিল। আর তখন বন্ধুপত্নীর লোকাট নাইটির ফাঁক দিয়ে নয়, কাকলিকে ধীরে ধীরে নিরাভরণ করে দিয়েছিল সোম। তার আগে প্রায় আধঘন্টা ধরে চলেছিল উন্মাদনা তৈরীর মঞ্চ।
যে বন্ধুর বিয়ের জন্য জান লড়িয়ে খেটেছিল, সেই তারই বিছানায়, তারই বৌকে নিয়ে যাওয়ার পরে কাকলির নাইটি ঢাকা শরীর থেকে একটা পা তুলে নিয়ে প্রথম চুমুটা দিয়েছিল পায়ের গোছে।
তারপরে সেই চুমু ধীরে ধীরে উঠেছিল ওর কাফ মাসলে। সাথে চলছিল ছোট্ট ছোট্ট কামড় আর জিভ দিয়ে সেই কামড় দেওয়ার জায়গাগুলো বুলিয়ে দেওয়া।
এগুলোর সাথেই কাকলির নাইটিটা ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছিল হাঁটুর দিকে। ওর অন্য পা-টা বিছানার ওপরে আছাড়ি পিছাড়ি করছিল মুক্তির জন্য।
কিছুক্ষণ পরে সোম সেই পাটাকে নিজের দুই পায়ের মাঝে চেপে ধরেছিল।
খাটটা বিয়েতে পাওয়া, কিন্তু খুব কম দিনের জন্যই বিয়ের পাত্রকে ওই খাটে পেয়েছিল কাকলি, অথবা রীণা। কয়েক সপ্তাহের ছুটির শেষেই সে চলে গিয়েছিল কাজের জায়গায়।
তারপর থেকে গত দুবছরে মাত্র তিনবার আসতে পেরেছে সে। বাকি সময়টা বিয়ের খাটে একাই শুতে হয় রীণাকে।
তাই আজ কাকলিকে যখন সেই বিছানাতেই নিয়ে এসেছে সোম, তখন রীণার বাঁধ প্রায় ভাঙ্গতে বসেছিল।
সবটাই অবশ্য কল্পনায় – টেক্সেটের মাধ্যমে।
রীণার শরীরে শিরশিরানির শুরু হয়েছিল তার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই। ও কল্পনার জগৎ আর বাস্তব দ্রুত মিলিয়ে ফেলছিল।
সোম বোধহয় সেটা কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পেরেছিল। তাই থার্ড ব্র্যাকেটে লিখেছিল, ‘গো স্লো কাকলি।‘ সাথে একটা স্মাইলি।
একটু সময় নিয়ে, একটু রাখঢাক করেই কাকলি উত্তর দিয়েছিল, ‘আমি যে আর পারছি না স্লোডাউন করতে।‘
রীণা সত্যিই পারছিল না সোমের অদ্ভুত ভালবাসাভরা আদরের মুভগুলো সহ্য করতে! কাকলির শরীরে কী হচ্ছিল ও জানে না, তবে ওর নিজের শরীরের শিরশিরানি ততক্ষণে পরিণত হয়েছে ছটফটানিতে।
সোম যখন তার বন্ধুপত্নী কাকলিকে সম্পূর্ণ নিরাভরণ করে দিয়ে ভালবাসা আর আদরে ভরিয়ে দিয়ে শেষ পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত, তখনই চ্যাট সাইটটা হ্যাঙ করে গিয়েছিল।
---
Like Reply


Messages In This Thread
চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-03-2019, 04:41 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-03-2019, 04:42 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-03-2019, 06:27 PM
RE: চ্যাটরুম - by ronylol - 17-03-2019, 11:18 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 17-03-2019, 11:54 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 17-03-2019, 11:52 AM
RE: চ্যাটরুম - by SailiGanguly - 17-03-2019, 10:22 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 18-03-2019, 01:20 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 19-03-2019, 08:47 AM
RE: চ্যাটরুম - by ronylol - 19-03-2019, 09:52 AM
RE: চ্যাটরুম - by buddy12 - 20-03-2019, 12:09 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 22-03-2019, 09:49 AM
RE: চ্যাটরুম - by buddy12 - 28-03-2019, 11:20 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 28-03-2019, 12:44 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 28-03-2019, 12:43 PM
RE: চ্যাটরুম - by sairaali111 - 10-04-2019, 07:21 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 12-04-2019, 11:18 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 12-04-2019, 11:22 AM
RE: চ্যাটরুম - by ronylol - 12-04-2019, 06:31 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 12-04-2019, 11:04 PM
RE: চ্যাটরুম - by kroy - 13-04-2019, 06:57 PM
RE: চ্যাটরুম - by kroy - 18-04-2019, 03:58 PM
RE: চ্যাটরুম - by BiryaniLover24 - 20-04-2019, 01:32 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 11-05-2019, 02:58 PM
RE: চ্যাটরুম - by kishen - 12-05-2019, 02:58 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 12-05-2019, 04:54 PM
RE: চ্যাটরুম - by kroy - 13-05-2019, 12:04 AM
RE: চ্যাটরুম - by naag.champa - 14-05-2019, 05:16 AM
RE: চ্যাটরুম - by kishen - 14-05-2019, 10:32 AM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 15-05-2019, 03:57 PM
RE: চ্যাটরুম - by kishen - 22-05-2019, 10:09 AM
RE: চ্যাটরুম - by kroy - 23-05-2019, 10:38 AM
RE: চ্যাটরুম - by naag.champa - 28-05-2019, 04:30 AM
RE: চ্যাটরুম - by ronylol - 28-05-2019, 06:29 PM
RE: চ্যাটরুম - by bengaligudboy - 04-06-2019, 08:27 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 12-06-2019, 01:17 PM
RE: চ্যাটরুম - by buddy12 - 12-06-2019, 01:39 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 21-06-2019, 11:35 AM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 21-06-2019, 04:42 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 06-07-2019, 07:43 PM
RE: চ্যাটরুম - by kroy - 07-07-2019, 12:02 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 08-07-2019, 10:15 AM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 07-07-2019, 05:17 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 08-07-2019, 10:17 AM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 08-07-2019, 11:35 AM
RE: চ্যাটরুম - by pcirma - 08-07-2019, 02:57 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 09-07-2019, 09:52 AM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 08-07-2019, 05:15 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 09-07-2019, 09:52 AM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 14-07-2019, 10:55 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 22-07-2019, 02:01 PM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 22-07-2019, 06:28 PM
RE: চ্যাটরুম - by SailiGanguly - 22-07-2019, 07:54 PM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 22-07-2019, 08:36 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 22-07-2019, 10:58 PM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 22-07-2019, 11:09 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 22-07-2019, 10:57 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-09-2019, 10:05 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-09-2019, 10:05 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 16-09-2019, 10:06 AM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 16-09-2019, 11:29 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 17-09-2019, 09:54 AM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 16-09-2019, 05:19 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 17-09-2019, 09:54 AM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 17-09-2019, 11:30 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 18-09-2019, 11:49 AM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 18-09-2019, 11:48 AM
RE: চ্যাটরুম - by Shoumen - 17-09-2019, 01:52 PM
RE: চ্যাটরুম - by Mr.Wafer - 14-02-2020, 01:50 PM
RE: চ্যাটরুম - by Mr.Wafer - 14-02-2020, 02:08 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 24-02-2020, 02:26 PM
RE: চ্যাটরুম - by tirths2000 - 30-04-2022, 02:56 PM
RE: চ্যাটরুম - by susantopakrashi - 02-06-2022, 01:00 PM
RE: চ্যাটরুম - by chndnds - 24-02-2020, 02:39 PM
RE: চ্যাটরুম - by Mr.Wafer - 24-02-2020, 04:14 PM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 26-02-2020, 04:42 PM
RE: চ্যাটরুম - by Mr.Wafer - 26-02-2020, 06:01 PM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 10-06-2021, 01:51 PM
RE: চ্যাটরুম - by Uttam4004 - 30-04-2022, 12:52 PM
RE: চ্যাটরুম - by ddey333 - 30-04-2022, 02:46 PM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 30-04-2022, 04:31 PM
RE: চ্যাটরুম - by Karims - 02-06-2022, 04:32 PM
RE: চ্যাটরুম - by byomkesh11 - 05-05-2022, 01:22 PM
RE: চ্যাটরুম - by sudipto-ray - 02-06-2022, 11:39 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)