16-03-2019, 10:28 AM
২৪
‘ও মা, দরজা খোল মা! ও মা..’ বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল পিয়ালীর ছেলে। ঘর আর বাথরুমের দরজা পেরিয়ে ছেলের ডাক কানে যায় নি পিয়ালীর। ও তখনও বাথরুমের দেওয়ালে শখ করে লাগানো বড় আয়নাটাতে নিজের অবয়বের ওপরেই নিজের সত্যিকারের শরীরটা চেপে ধরেছিল।
আয়নার ওপরে ওর বুক, পেট, কোমর, জঙ্ঘা, থাই – সব চেপে বসেছিল।
পিয়ালীর মনে পড়ছিল রবির সাথে এই ফ্ল্যাটে শিফট করার সন্ধ্যায় বাথরুমের টাবে সম্ভোগের কথা।
তারপরে কখন যে আয়নার সামনে থেকে সরে গিয়ে সে একাই টাবে শুয়ে পড়েছে, সেটা খেয়ালও করে নি ও।
দুটো পা বাথ-টাবের দুদিকে তুলে দিয়ে অল্প করে গরম-ঠান্ডা মেশানো জলের ধারা পড়ছিল আর টাবটা একটু একটু করে ভরে উঠছিল।
পিয়ালী একদিকে নিজের স্তনবৃন্তদুটোকে মুচড়িয়ে দিচ্ছিল – ঠিক যেভাবে রবি সেদিন আঙ্গুলের কারসাজি দিয়ে ওকে অসম্ভবরকম জাগিয়ে তুলেছিল – সেইভাবে।
সেদিন রবিকে ও যেভাবে আদর করছিল, আজও সেভাবেই আদর করতে লাগল – ওর মনেই হচ্ছিল না যে রবি সেই তার সাথে এই বাথটাবে।
একটা হাত যখন বুকে, অন্য হাতটা ততক্ষণে নিজের নাভিমূল হয়ে আরও বেশ কিছুটা নীচে নেমে গিয়েছিল পিয়ালীর – যেন রবিরই আঙ্গুলগুলো ঘোরাফেরা করছে সেখানে।
ওর চোখ দুটো তখনও পুরোপুরিই বোজা – নাহলে ঠিকই হয়তো টের পেত যে বাথটাবে ও একাই শুয়ে আছে, সঙ্গে রবি নেই।
একটা সময়ে নিজের যোনিপথে নিজের আঙ্গুলের ছোঁয়া পেতেই কেঁপে উঠল পিয়ালী।
ওপরের পাটির কয়েকটা দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরল আর মাথাটা আরও হেলিয়ে দিল, যেমনটা সেই প্রথম সন্ধ্যেবেলায় রবির বুকে হেলিয়ে দিয়েছিল আদর খাওয়ার সময়ে।
পিয়ালীর আঙ্গুলগুলো খুব ধীরে ধীরে ওর নিজেরই যোনিপথের দুটো দিক কখনও চেপে ধরছে, কখনও ডলে দিচ্ছে।
একটা সময়ে একটা আঙ্গুল সামান্য প্রবেশ করালো ভেতরে – রবিও এইভাবেই সেদিন তার বুড়ো আঙ্গুলটা প্রবেশ করিয়েছিল তার ভেতরে।
ততক্ষণে বাথটাবটা জলে বেশ কিছুটা ভরে উঠেছে – জল প্রায় তার যোনির নীচের দিকে ছুঁতে চলেছে।
চোখ বুজে নিজের শরীর মন্থন শুরু করেছিল পিয়ালী।
পা দিয়ে কলটা বন্ধ করে দিয়ে জল আর বেশী ভরে ওঠা আটকিয়ে দিয়েছিল একটু আগেই।
যোনির ভেতরের দেওয়ালগুলোতে যখন নিজের আঙ্গুলগুলো ছুঁয়ে দিচ্ছিল পিয়ালী, তখন ওর কেন যেন মনে হল আজ ভোররাতেই এই জায়গাগুলোকে মন্থন করেছে দুই পরপুরুষ! তমালকে চেনে সেই ইউনিভার্সিটি থেকে, আর তার শরীরের সামান্য অংশ তার আগেই চেনা, কিন্তু সুরজিৎ একেবারেই অচেনা পুরুষ।
পিয়ালীর মনের একটা কোণ ভরে উঠল লজ্জায়, আরেকটা দিক বলছিল এই মধ্য তিরিশেও সে তার মানে দু-দুটো পুরুষকে একা সামলানোর ক্ষমতা রাখে – বিয়ের এত বছর পরেও!! লজ্জা মেশানো সেই গর্বের মুহুর্তটাকে ধরে রাখতে সে একটার বদলে আরও একটা আঙ্গুল প্রবেশ করালো ভেতরে।
আজ ভোর রাতে যখন ওই দুই ‘পরপুরুষ’ তাকে সম্ভোগ করেছিল, সেই সময়টা তার একেবারেই মনে নেই – তাই সে এঞ্জয় করেছিল, না আকুতি জানাচ্ছিল ছেড়ে দেওয়ার জন্য – না কি দুই ‘পরপুরুষ’-এর সামনে নগ্নতা ঢাকতে বৃথা চেষ্টা করেছিল – কিছুই তার মনে নেই এখন। কিন্তু এখন একবার রবির ছোঁয়া আর একবার ওই দুই অচেনা পুরুষের ছোঁয়া তার মনের একেকটা কোনে হানা দিতে লাগল বারে বারে।
কখনও সুরজিতের আঙ্গুলের ছোঁয়া লাগছিল তার উত্থিত স্তনবৃন্তে, কখনও বা তমালের জিভ স্পর্শ করছিল তার নিম্নাঙ্গট।
চোখ বুঁজে সেই দৃশ্য কল্পনা করতে করতে কেঁপে কেঁপে উঠছিল পিয়ালী... আবার পরমুহুর্তেই তার মনে পড়ে যাচ্ছিল রবির সাথে এই বাথটাবে শুয়েই তার সেই সন্ধ্যের সঙ্গমের কথা – যখন বাথটাবের অল্পপরিসরের মধ্যেই তার বর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে চেখে নিচ্ছিল তার কামরস।
একই সাথে এই তিন তিন জন পুরুষের ছোঁয়া যেন পিয়ালীকে পাগল করে তুলছিল ক্রমশ।
‘সবকটার একই সাথে মনে আসার দরকার ছিল? উফ..’ নীচের ঠোঁটটা জোরে কামড়ে ধরে মনে মনে বলল পিয়ালী।
তার গলা দিয়ে বেরিয়ে আসছিল কখনও ইংরেজী, কখনও বা বিশুদ্ধ বাংলায় আকুতি.. যার মানেটা দাঁড়ায়.. ‘উফফ.. প্লিজ .. পারছি না আর সোনা..’ – এই জাতীয় শব্দ।
পিয়ালী কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনটে পুরুষের প্রতিনিধি হিসাবে নিজের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়েছিল নিজেরই তিনটে আঙ্গুল।
প্রথমে ব্যথায় কঁকিয়ে উঠেছিল, কিন্তু সেটা ক্ষণস্থায়ী – বাথটাবের জল আর নিজের দেহরস মিলিয়ে তার ভেতরটা তখন ভীষণ রকম পিচ্ছিল – তাই ব্যথাটা বেশীক্ষণ থাকে নি।
অন্য হাতের দুটো আঙ্গুলগুলো কখনও হিমালয় পর্বতের শিখরে উঠছে, কখনও বা পাহাড় চূড়া থেকে কিছুটা নেমে আসছে বেসক্যাম্পে।
বহুদিন পরে এভাবে নিজেকে মন্থন করছিল পিয়ালী।
বিয়ের পরে বোধহয় এরকমভাবে নিজেই নিজেকে ভালবাসে নি ও – দরকারও হয় নি রবির কল্যানে।
কিন্তু আজ ওর ভীষণ দরকার...
কতক্ষণ ধরে যে সে স্বমেহন করেছিল, সেটা খেয়াল নেই, কিন্তু যখন বাথটাবের জলে ওর শরীর থেকে স্রোতের মতো বেরিয়ে আসা তরল মিশে গিয়েছিল – তখন ওর গলা দিয়ে যে ডেসিবেলে আওয়াজ বেরচ্ছিল, তা দেওয়ালীর আগে পরে হলে কোর্টের ঠিক করে দেওয়া শব্দদূষনের মাত্রা থেকে খুব কম হত না।
নেহাৎ ছেলে বা কাজের মাসির কানে পৌঁছয় নি সেই শব্দ কারণ বাথরুম আর বেডরুম – দুটো ঘরেরই দরজা বন্ধ ছিল।
নাহলে হয়তো কাজের মাসি ভেবে বসত বৌদির আবার শরীর খারাপ লাগছে বোধহয়!
স্বমৈথুন শেষে বেশ কিছুক্ষণ নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল ও – বাথটাবের ভেতরেই।
ধীরে ধীরে জলস্তর বাড়ছিল – আর ওর তৃষ্ণার্ত শরীরটা ভিজিয়ে শান্ত হয়ে আসছিল।
একটা সময় সম্বিৎ ফিরল পিয়ালীর।
বাথ জেল লাগিয়ে নিজের শরীরটা পরিষ্কার করে নিয়ে উঠে দাঁড়াল ভেজা শরীরেই।
বড় আয়নাটায় নিজের চেহারটা দেখতে দেখতেই গায়ে জড়িয়ে নিল বাথটাওয়েলটা।
তারপর মুখ টিপে একটু হেসে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এল।
তখনই ওর খেয়াল হল যে ছেলে বেডরুমের দরজায় নক করছে।
ওদের বেডরুম থেকে বহুদূরে, ওর শ্বশুরবাড়ির গ্রামের এক বাড়ির বাথরুমের দরজাতেও সেই সময়ে নক করছিল কেউ।
‘কী হল রে মা... শরীর খারাপ লাগছে নাকি? দরজা খোল.. কী রে?’
পিয়ালীদের ফ্ল্যাটের বাথরুম থেকে অনেক দূরে, তার শ্বশুরবাড়ির গ্রামের এক বাড়ির বাথরুমের দরজাতেও প্রায় একই সময়ে ধাক্কা পড়ছিল – ঠিক যেমনটা পিয়ালীর ছেলে বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল।
‘ও বুকুন মা.... কী হল রে?’
বুকুনের মা বারে বারে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন তখন।
দরজার ছিটকিনিটা লাগিয়েই দরজায় ঠেস দিয়ে বাথরুমের মেঝেতে বসে পড়েছিল বুকুন – প্যান্ডেল থেকে প্রতিমাবরণ সেরে এসেই।
চোখ দিয়ে তখন অঝোর ধারায় জল নেমে আসছে – যেটা সে রিকশায় আসতে আসতে কোনও মতে সামলিয়ে ছিল।
রবিদা কী করে পারল কথাগুলো বলতে? সে আর রবিদা কি এই প্রথম কাছাকাছি এসেছিল? সেই কোন ছোটবেলাতেই তো নিজেকে সমর্পন করেছিল ওর হাতে – তারপরে এত্তগুলো বছর পরে প্রথমবার মিলিত হয়েছিল কাল দিনের বেলা – আবার ভোররাতে – হলই না হয় সেটা নির্জন রাস্তায় – বৃষ্টির মধ্যে, গাছের নীচে! কিন্তু তা বলে অর্ণবের কেচ্ছার যা বর্ণনা তাকে শুনতে হয়েছে তার বন্ধুর মুখ থেকে, তার বন্ধুপত্নীর সামনে – তার সঙ্গে তাদের দুজনের মিলনের ঘটনাটা তুলনা করে ফেলল রবিদা!
সেটা নিয়ে আবার মজা করারও চেষ্টা করছিল রবিদা।
কথাটা শুনে বুকুনের মনে হয়েছিল একটাই জবাব দেয় – ‘রবিদা – তুমিও? তোমরা সব পুরুষমানুষ কি একইরকম? তোমাকে অন্যরকম ভাবতাম এত্ত বছর। এখন দেখছি ভুল ভেবেছি – ভুল চিনেছি।‘
জবাবটা তার মুখে এসে গেলেও মুখ থেকে আর বেরয় নি।
সে উঠে পড়েছিল রিকশায়। ভাগ্যিস ঠিক সেই সময়েই রিকশাটা দেখতে পেয়েছিল!
‘ছি রবিদা, ছি!’ আবারও মনে মনেই কথাটা বলে সটান উঠে পড়েছিল রিকশায়।
এখন বাথরুমের নি:সঙ্গতায় বসে তার মনে হচ্ছে এত্তগুলো বছর কি তাহলে রবিদাকে মনে রেখে দেওয়া, তাকেই মনে প্রাণে ভালবেসে যাওয়াটা তার ভুল হয়েছিল?
রবিদার জন্যই তো সে অর্ণবের সাথে বিয়ের পরেও, অর্ণব অত ভালবাসা দিতে এগিয়ে আসার পরেও নিজেকে গুটিয়েই রেখেছে এত্তগুলো বছর ধরে।
সে সব কি তাহলে মিথ্যে?
মায়ের ডাকটা বেড়েই চলেছে – আর বেশীক্ষণ ভেতরে থাকলে সন্দেহ করতে পারে।
তাই বুকুন বলল, ‘ঠিক আছি আমি। বেরচ্ছি।‘
চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে মুখটা একটু মুছে নিয়ে যখন বাথরুমের দরজা খুলল বুকুন, তার মুখ দেখেই ওর মা বুঝলেন মেয়ে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে কাঁদছিল।
কেন কাঁদছিল মেয়ে, সেটা মা হয়ে বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় তাঁর।
--
২৫
বাথরুম থেকে বেরনোর সময়েই পিয়ালী ঠিক করে নিয়েছিল এরপরে ও কী করবে! ছেলেকে তাড়াতাড়ি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল। কাল ভোরে ওঠা আছে।
বুকুনও ভেবে নিয়েছে যে কী করবে ও।
পরের দিন ভোরের ট্রেন ধরে যখন পিয়ালী ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকল, পাশ দিয়ে যে রিকশাটা বেরিয়ে গেল, এক ভদ্রলোক, ভদ্রমহিলা আর একটা বাচ্চাকে নিয়ে, সেটা যে বুকুন ওর বর আর ছেলে ছিল, তা পিয়ালী বুঝতে পারল না।
কিন্তু রবিদাদের বাড়ির সামনে যে ভদ্রমহিলা আর বাচ্চা ছেলেটা রিকশা থেকে নামল, তারা যে রবিদার বউ আর ছেলে, সেটা বুঝতে বুকুনের বাকি থাকল না।
যতক্ষণ পারল রবিদার বাড়িটার দিকেই তাকিয়ে রইল ও – আড়চোখে।
কলকাতা যাওয়ার ট্রেনে উঠে কদিন আগে এড করা একটা নম্বর কন্ট্যাক্ট লিস্টে গিয়ে ব্লক করে দিল ও।
সমাপ্ত
‘ও মা, দরজা খোল মা! ও মা..’ বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল পিয়ালীর ছেলে। ঘর আর বাথরুমের দরজা পেরিয়ে ছেলের ডাক কানে যায় নি পিয়ালীর। ও তখনও বাথরুমের দেওয়ালে শখ করে লাগানো বড় আয়নাটাতে নিজের অবয়বের ওপরেই নিজের সত্যিকারের শরীরটা চেপে ধরেছিল।
আয়নার ওপরে ওর বুক, পেট, কোমর, জঙ্ঘা, থাই – সব চেপে বসেছিল।
পিয়ালীর মনে পড়ছিল রবির সাথে এই ফ্ল্যাটে শিফট করার সন্ধ্যায় বাথরুমের টাবে সম্ভোগের কথা।
তারপরে কখন যে আয়নার সামনে থেকে সরে গিয়ে সে একাই টাবে শুয়ে পড়েছে, সেটা খেয়ালও করে নি ও।
দুটো পা বাথ-টাবের দুদিকে তুলে দিয়ে অল্প করে গরম-ঠান্ডা মেশানো জলের ধারা পড়ছিল আর টাবটা একটু একটু করে ভরে উঠছিল।
পিয়ালী একদিকে নিজের স্তনবৃন্তদুটোকে মুচড়িয়ে দিচ্ছিল – ঠিক যেভাবে রবি সেদিন আঙ্গুলের কারসাজি দিয়ে ওকে অসম্ভবরকম জাগিয়ে তুলেছিল – সেইভাবে।
সেদিন রবিকে ও যেভাবে আদর করছিল, আজও সেভাবেই আদর করতে লাগল – ওর মনেই হচ্ছিল না যে রবি সেই তার সাথে এই বাথটাবে।
একটা হাত যখন বুকে, অন্য হাতটা ততক্ষণে নিজের নাভিমূল হয়ে আরও বেশ কিছুটা নীচে নেমে গিয়েছিল পিয়ালীর – যেন রবিরই আঙ্গুলগুলো ঘোরাফেরা করছে সেখানে।
ওর চোখ দুটো তখনও পুরোপুরিই বোজা – নাহলে ঠিকই হয়তো টের পেত যে বাথটাবে ও একাই শুয়ে আছে, সঙ্গে রবি নেই।
একটা সময়ে নিজের যোনিপথে নিজের আঙ্গুলের ছোঁয়া পেতেই কেঁপে উঠল পিয়ালী।
ওপরের পাটির কয়েকটা দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরল আর মাথাটা আরও হেলিয়ে দিল, যেমনটা সেই প্রথম সন্ধ্যেবেলায় রবির বুকে হেলিয়ে দিয়েছিল আদর খাওয়ার সময়ে।
পিয়ালীর আঙ্গুলগুলো খুব ধীরে ধীরে ওর নিজেরই যোনিপথের দুটো দিক কখনও চেপে ধরছে, কখনও ডলে দিচ্ছে।
একটা সময়ে একটা আঙ্গুল সামান্য প্রবেশ করালো ভেতরে – রবিও এইভাবেই সেদিন তার বুড়ো আঙ্গুলটা প্রবেশ করিয়েছিল তার ভেতরে।
ততক্ষণে বাথটাবটা জলে বেশ কিছুটা ভরে উঠেছে – জল প্রায় তার যোনির নীচের দিকে ছুঁতে চলেছে।
চোখ বুজে নিজের শরীর মন্থন শুরু করেছিল পিয়ালী।
পা দিয়ে কলটা বন্ধ করে দিয়ে জল আর বেশী ভরে ওঠা আটকিয়ে দিয়েছিল একটু আগেই।
যোনির ভেতরের দেওয়ালগুলোতে যখন নিজের আঙ্গুলগুলো ছুঁয়ে দিচ্ছিল পিয়ালী, তখন ওর কেন যেন মনে হল আজ ভোররাতেই এই জায়গাগুলোকে মন্থন করেছে দুই পরপুরুষ! তমালকে চেনে সেই ইউনিভার্সিটি থেকে, আর তার শরীরের সামান্য অংশ তার আগেই চেনা, কিন্তু সুরজিৎ একেবারেই অচেনা পুরুষ।
পিয়ালীর মনের একটা কোণ ভরে উঠল লজ্জায়, আরেকটা দিক বলছিল এই মধ্য তিরিশেও সে তার মানে দু-দুটো পুরুষকে একা সামলানোর ক্ষমতা রাখে – বিয়ের এত বছর পরেও!! লজ্জা মেশানো সেই গর্বের মুহুর্তটাকে ধরে রাখতে সে একটার বদলে আরও একটা আঙ্গুল প্রবেশ করালো ভেতরে।
আজ ভোর রাতে যখন ওই দুই ‘পরপুরুষ’ তাকে সম্ভোগ করেছিল, সেই সময়টা তার একেবারেই মনে নেই – তাই সে এঞ্জয় করেছিল, না আকুতি জানাচ্ছিল ছেড়ে দেওয়ার জন্য – না কি দুই ‘পরপুরুষ’-এর সামনে নগ্নতা ঢাকতে বৃথা চেষ্টা করেছিল – কিছুই তার মনে নেই এখন। কিন্তু এখন একবার রবির ছোঁয়া আর একবার ওই দুই অচেনা পুরুষের ছোঁয়া তার মনের একেকটা কোনে হানা দিতে লাগল বারে বারে।
কখনও সুরজিতের আঙ্গুলের ছোঁয়া লাগছিল তার উত্থিত স্তনবৃন্তে, কখনও বা তমালের জিভ স্পর্শ করছিল তার নিম্নাঙ্গট।
চোখ বুঁজে সেই দৃশ্য কল্পনা করতে করতে কেঁপে কেঁপে উঠছিল পিয়ালী... আবার পরমুহুর্তেই তার মনে পড়ে যাচ্ছিল রবির সাথে এই বাথটাবে শুয়েই তার সেই সন্ধ্যের সঙ্গমের কথা – যখন বাথটাবের অল্পপরিসরের মধ্যেই তার বর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে চেখে নিচ্ছিল তার কামরস।
একই সাথে এই তিন তিন জন পুরুষের ছোঁয়া যেন পিয়ালীকে পাগল করে তুলছিল ক্রমশ।
‘সবকটার একই সাথে মনে আসার দরকার ছিল? উফ..’ নীচের ঠোঁটটা জোরে কামড়ে ধরে মনে মনে বলল পিয়ালী।
তার গলা দিয়ে বেরিয়ে আসছিল কখনও ইংরেজী, কখনও বা বিশুদ্ধ বাংলায় আকুতি.. যার মানেটা দাঁড়ায়.. ‘উফফ.. প্লিজ .. পারছি না আর সোনা..’ – এই জাতীয় শব্দ।
পিয়ালী কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনটে পুরুষের প্রতিনিধি হিসাবে নিজের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়েছিল নিজেরই তিনটে আঙ্গুল।
প্রথমে ব্যথায় কঁকিয়ে উঠেছিল, কিন্তু সেটা ক্ষণস্থায়ী – বাথটাবের জল আর নিজের দেহরস মিলিয়ে তার ভেতরটা তখন ভীষণ রকম পিচ্ছিল – তাই ব্যথাটা বেশীক্ষণ থাকে নি।
অন্য হাতের দুটো আঙ্গুলগুলো কখনও হিমালয় পর্বতের শিখরে উঠছে, কখনও বা পাহাড় চূড়া থেকে কিছুটা নেমে আসছে বেসক্যাম্পে।
বহুদিন পরে এভাবে নিজেকে মন্থন করছিল পিয়ালী।
বিয়ের পরে বোধহয় এরকমভাবে নিজেই নিজেকে ভালবাসে নি ও – দরকারও হয় নি রবির কল্যানে।
কিন্তু আজ ওর ভীষণ দরকার...
কতক্ষণ ধরে যে সে স্বমেহন করেছিল, সেটা খেয়াল নেই, কিন্তু যখন বাথটাবের জলে ওর শরীর থেকে স্রোতের মতো বেরিয়ে আসা তরল মিশে গিয়েছিল – তখন ওর গলা দিয়ে যে ডেসিবেলে আওয়াজ বেরচ্ছিল, তা দেওয়ালীর আগে পরে হলে কোর্টের ঠিক করে দেওয়া শব্দদূষনের মাত্রা থেকে খুব কম হত না।
নেহাৎ ছেলে বা কাজের মাসির কানে পৌঁছয় নি সেই শব্দ কারণ বাথরুম আর বেডরুম – দুটো ঘরেরই দরজা বন্ধ ছিল।
নাহলে হয়তো কাজের মাসি ভেবে বসত বৌদির আবার শরীর খারাপ লাগছে বোধহয়!
স্বমৈথুন শেষে বেশ কিছুক্ষণ নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল ও – বাথটাবের ভেতরেই।
ধীরে ধীরে জলস্তর বাড়ছিল – আর ওর তৃষ্ণার্ত শরীরটা ভিজিয়ে শান্ত হয়ে আসছিল।
একটা সময় সম্বিৎ ফিরল পিয়ালীর।
বাথ জেল লাগিয়ে নিজের শরীরটা পরিষ্কার করে নিয়ে উঠে দাঁড়াল ভেজা শরীরেই।
বড় আয়নাটায় নিজের চেহারটা দেখতে দেখতেই গায়ে জড়িয়ে নিল বাথটাওয়েলটা।
তারপর মুখ টিপে একটু হেসে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এল।
তখনই ওর খেয়াল হল যে ছেলে বেডরুমের দরজায় নক করছে।
ওদের বেডরুম থেকে বহুদূরে, ওর শ্বশুরবাড়ির গ্রামের এক বাড়ির বাথরুমের দরজাতেও সেই সময়ে নক করছিল কেউ।
‘কী হল রে মা... শরীর খারাপ লাগছে নাকি? দরজা খোল.. কী রে?’
পিয়ালীদের ফ্ল্যাটের বাথরুম থেকে অনেক দূরে, তার শ্বশুরবাড়ির গ্রামের এক বাড়ির বাথরুমের দরজাতেও প্রায় একই সময়ে ধাক্কা পড়ছিল – ঠিক যেমনটা পিয়ালীর ছেলে বেডরুমের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল।
‘ও বুকুন মা.... কী হল রে?’
বুকুনের মা বারে বারে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন তখন।
দরজার ছিটকিনিটা লাগিয়েই দরজায় ঠেস দিয়ে বাথরুমের মেঝেতে বসে পড়েছিল বুকুন – প্যান্ডেল থেকে প্রতিমাবরণ সেরে এসেই।
চোখ দিয়ে তখন অঝোর ধারায় জল নেমে আসছে – যেটা সে রিকশায় আসতে আসতে কোনও মতে সামলিয়ে ছিল।
রবিদা কী করে পারল কথাগুলো বলতে? সে আর রবিদা কি এই প্রথম কাছাকাছি এসেছিল? সেই কোন ছোটবেলাতেই তো নিজেকে সমর্পন করেছিল ওর হাতে – তারপরে এত্তগুলো বছর পরে প্রথমবার মিলিত হয়েছিল কাল দিনের বেলা – আবার ভোররাতে – হলই না হয় সেটা নির্জন রাস্তায় – বৃষ্টির মধ্যে, গাছের নীচে! কিন্তু তা বলে অর্ণবের কেচ্ছার যা বর্ণনা তাকে শুনতে হয়েছে তার বন্ধুর মুখ থেকে, তার বন্ধুপত্নীর সামনে – তার সঙ্গে তাদের দুজনের মিলনের ঘটনাটা তুলনা করে ফেলল রবিদা!
সেটা নিয়ে আবার মজা করারও চেষ্টা করছিল রবিদা।
কথাটা শুনে বুকুনের মনে হয়েছিল একটাই জবাব দেয় – ‘রবিদা – তুমিও? তোমরা সব পুরুষমানুষ কি একইরকম? তোমাকে অন্যরকম ভাবতাম এত্ত বছর। এখন দেখছি ভুল ভেবেছি – ভুল চিনেছি।‘
জবাবটা তার মুখে এসে গেলেও মুখ থেকে আর বেরয় নি।
সে উঠে পড়েছিল রিকশায়। ভাগ্যিস ঠিক সেই সময়েই রিকশাটা দেখতে পেয়েছিল!
‘ছি রবিদা, ছি!’ আবারও মনে মনেই কথাটা বলে সটান উঠে পড়েছিল রিকশায়।
এখন বাথরুমের নি:সঙ্গতায় বসে তার মনে হচ্ছে এত্তগুলো বছর কি তাহলে রবিদাকে মনে রেখে দেওয়া, তাকেই মনে প্রাণে ভালবেসে যাওয়াটা তার ভুল হয়েছিল?
রবিদার জন্যই তো সে অর্ণবের সাথে বিয়ের পরেও, অর্ণব অত ভালবাসা দিতে এগিয়ে আসার পরেও নিজেকে গুটিয়েই রেখেছে এত্তগুলো বছর ধরে।
সে সব কি তাহলে মিথ্যে?
মায়ের ডাকটা বেড়েই চলেছে – আর বেশীক্ষণ ভেতরে থাকলে সন্দেহ করতে পারে।
তাই বুকুন বলল, ‘ঠিক আছি আমি। বেরচ্ছি।‘
চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে মুখটা একটু মুছে নিয়ে যখন বাথরুমের দরজা খুলল বুকুন, তার মুখ দেখেই ওর মা বুঝলেন মেয়ে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে কাঁদছিল।
কেন কাঁদছিল মেয়ে, সেটা মা হয়ে বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় তাঁর।
--
২৫
বাথরুম থেকে বেরনোর সময়েই পিয়ালী ঠিক করে নিয়েছিল এরপরে ও কী করবে! ছেলেকে তাড়াতাড়ি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল। কাল ভোরে ওঠা আছে।
বুকুনও ভেবে নিয়েছে যে কী করবে ও।
পরের দিন ভোরের ট্রেন ধরে যখন পিয়ালী ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকল, পাশ দিয়ে যে রিকশাটা বেরিয়ে গেল, এক ভদ্রলোক, ভদ্রমহিলা আর একটা বাচ্চাকে নিয়ে, সেটা যে বুকুন ওর বর আর ছেলে ছিল, তা পিয়ালী বুঝতে পারল না।
কিন্তু রবিদাদের বাড়ির সামনে যে ভদ্রমহিলা আর বাচ্চা ছেলেটা রিকশা থেকে নামল, তারা যে রবিদার বউ আর ছেলে, সেটা বুঝতে বুকুনের বাকি থাকল না।
যতক্ষণ পারল রবিদার বাড়িটার দিকেই তাকিয়ে রইল ও – আড়চোখে।
কলকাতা যাওয়ার ট্রেনে উঠে কদিন আগে এড করা একটা নম্বর কন্ট্যাক্ট লিস্টে গিয়ে ব্লক করে দিল ও।
সমাপ্ত