16-03-2019, 10:27 AM
১৯
নিজে কী অবস্থায় থাকবে, এটা ভেবে তমাল ওর গাড়ি আনে নি কাল। সুরজিতের গাড়িতেই গিয়েছিল পার্টিতে।
সুরজিতের ফ্ল্যাট থেকে বেরনোর আগেই একটা ক্যাব বুক করে নিয়েছিল। সেটা গেটের বাইরেই অপেক্ষা করছে।
পিয়ালীকে নিয়ে সেটাতে উঠে পড়ল তমাল।
গাড়িতে বসেই পিয়ালী গলা নামিয়ে বলল, ‘বাকি কথা আর শুনতে ইচ্ছা করছে না। জাস্ট তোর বন্ধুর কাছ থেকে জেনে বলে দে আমার বরের সাথে তার কী কথা হয়েছে। বাড়িতে তো আমাকেও সেরকমই বলতে হবে।‘
তমাল ফোন করল সুরজিতকে।
‘হুম বেরিয়ে গেছি। জাস্ট জানতে চাইছি পিয়ালীর বরের সাথে তোর কী কী কথা হয়েছে – কী বলেছিস ওকে, সেটা একটু পিয়ালীকে বলে দে.. ফোনটা দিচ্ছি ধর।‘
তমালের হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে কানে লাগিয়ে পিয়ালী শুধু ‘হুম’ বলল। এরা দুজন তাকে নিয়ে যা করেছে কাল রাত থেকে তারপরে আর বাড়তি কথা বলার ইচ্ছা নেই ওর।
মাঝে মাঝে শুধু হু, আচ্ছা বলে তমালকে ফোনটা দিয়ে দিল। মুখটা ঘুরিয়ে বাইরের দিকেই দেখতে লাগল পিয়ালী।
পাশে বসা লোকটার সাথে যে কখনও কলেজে পড়ত বা কম বয়সে শরীর নিয়ে সামান্য কিছু একস্পেরিমেন্ট চালিয়েছে, সেসব ভাবতেও এখন ঘেন্না লাগছে।
এখন আর ওর বুঝতে বাকি নেই যে ওকে নিয়ে কী কী করা হয়ে থাকতে পারে সুরজিতের ফ্ল্যাটে।
তার আগে পার্টিতেও শেষের দিকে কী করেছিল, সেসবও মনে নেই। তবে একটু ফ্লার্ট করছিল গোড়ার দিকে, সেটা মনে আছে।
ওর পেছনে যে বেশ ব্যথা সেটা সকালে বাথরুমে গিয়েই টের পেয়েছিল। কারণটাও আন্দাজ করতে পারছে – নিশ্চই এই দুজনেরই অবদান ওই ব্যথাটা!!
মনে মনে ভাবল ছি! এটা ও কি করল! এতটা নীচে নামল কী করে ও। বাড়িতে ছেলেকে একা ফেলে রেখে দিয়ে।
এখন রবি কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করে কে জানে। সুরজিতের কাছ থেকে কতটা শুনেছে, কী মানে দাঁড় করিয়েছে – কে জানে!
নিউ টাউন থেকে সল্ট লেক হয়ে বাইপাস – গোটা রাস্তাই আজ ফাঁকা। তাই ক্যাবটা বেশ জোরেই চলছে।
এখন আর বাড়িতে বা রবিকে ফোন করবে না। একবারে বাড়ি ঢুকে ফোন করবে। কীভাবে ছেলেকে আর রবিকে ম্যানেজ করবে, সেসবই ভাবছিল পিয়ালী।
ওর মুড দেখে তমালও একটু ঘাবড়ে গেছে। দু একবার কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পিয়ালীর দিক থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে এখন চুপ করে গেছে।
বাড়ির সামনে চলে এল চল্লিশ মিনিটের মধ্যে।
ক্যাব থেকে নামার আগে শুধু একবারই তমালের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আর কখনও কনট্যাক্ট করার চেষ্টা করিস না।‘
বেশ জোরেই দরজাটা বন্ধ করে নিজের ফ্ল্যাটবাড়ির দিকে এগল পিয়ালী।
দরজায় বেল দিতেই ভেতর থেকে ছেলের গলার আওয়াজ পেল পিয়ালী।
একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে তৈরী হল ছেলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য।
--
২০
কাজের মাসি দরজা খুলতেই পিয়ালীর ওপরে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল ছেলে।
‘কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমিইইই,’ মাকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কেঁদেই ফেলল ও।
‘কোথাও যাই নি বাবু.. এই তো আমি, আসতে দেরী হল,’ ছেলেকে আর মিথ্যে বলতে পারল না পিয়ালী।
বেশ কিছুক্ষণ ছেলেকে আদর করে কাজের মাসিকে বলল, ‘আমাকে বেশী করে লেবু দিয়ে অল্প চিনি আর নুন দিয়ে একটু সরবৎ করে দাও তো।‘
‘আমি একটু চেঞ্জ করে নিই বাবু?’
ছেলেকে কোল থেকে নামিয়ে টিভিতে কার্টুন চ্যানেল চালিয়ে দিল পিয়ালী।
বেডরুমে গিয়ে বিছানায় বসে পড়েছিল মাথাটা হাতের তালুতে রেখে।
ছেলেকে তো সামাল দেওয়া গেল আপাতত, রবিকে কীভাবে ফেস করবে ও।
আরওপরে তমাল আর সুরজিৎ কী কী করেছে কে জানে, যদি কিছু হয়ে যায় তখন মুখ দেখাবে কী করে!
কিছুই মাথায় আসছে না ওর। কেন যে যেতে গেল পার্টিতে.. ইশ!!!!
ভাবতে ভাবতেই মাসি লেবুর জলটা নিয়ে এল।
সেটা হাতে দিতে দিতে বলল, ‘বৌদি, তোমার বোধহয় একটু বেশী খাওয়া হয়ে গিয়েছিল রাতে! কিছু মনে কর না, এসব তো আমাদের ঘরে সামলাতে হয় মাঝে মাঝে, বর তো গলা পর্যন্ত গিলে আসে। ঠান্ডা জলে স্নান করে নাও। কিছু মুখে দাও, শরীর ঠিক হয়ে যাবে।‘
লেবুর জলটা ঢক ঢক করে খেতে খেতে কাজের মাসির কথা শুনল পিয়ালী। ইশ কাজের মাসির সামনেও এক্সপোজড হয়ে গেলাম!! ছি! ছি! ও বুঝে গেল যে বৌদি মদ খেয়ে হুল্লোড় করেছে সারা রাত আদ্ধেক দিন! ইশশ!
কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গেছে, সেটা তো আর পাল্টানো যাবে না।
মাসির কথার জবাব না দিয়ে জিগ্যেস করল, ‘ছেলে দুপুরে খেয়েছে?’
‘ওই ভুলিয়ে ভালিয়ে টি ভি চালিয়ে দিয়ে খাইয়েছি। সকাল বেলায় খুব কাঁদছিল, তারপর প্যান্ডেলে নিয়ে গেলাম, একটু ভুলেছিল। আবার দুপুরে খেতে বসে কাঁদছিল। তুমি স্নান করে নাও। আমি খাবার গরম করি।‘
চলে গেল মাসি।
স্নানে যাওয়ার আগে রবিকে ফোন করা দরকার।
ও ঠিক করে নিয়েছে কী বলবে বরকে।
নম্বরটা ডায়াল করতেই প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফোনটা তুলল, যেভাবে হ্যালো বলল রবি, সে যে ওয়ারিড, তা এক সেকেন্ডেই বুঝে গেল পিয়ালী।
একটু থেমে থেমে সময় নিয়ে বলল, ‘আমি বাড়িতে। ঠিকই আছি। বেশী ড্রিংক করা হয়ে গিয়েছিল, তাই এতদূর না এসে তমালের এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে থেকে গিয়েছিলাম।‘
রবি যাতে আরও ওয়ারিড না হয়ে পড়ে, তার জন্য দলা পাকিয়ে উঠতে চাওয়া কান্নাটা গলার কাছেই কোনওমতে আটকে রাখল পিয়ালী।
রবিকে বারণ করল পিয়ালী তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে - ওর আজ নিজেকে একটু গুছিয়ে নেওয়ার সময় দরকার। রবি রাতের মধ্যে ফিরে এলে নিজেকে সামলাতে পারবে না – যদি বরের বুকে মাথা রেখে সব কিছু বলে ফেলে তার পরিণতি কী হতে পারে, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না পিয়ালীর।
অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে – কেঁদে – ফোনেই চুমু-টুমু দিয়ে রবির ফিরে আসাটা আটকাল পিয়ালী।
ফোনটা ছেড়ে একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে চোখটা বুজে রইল কয়েক মিনিট।
তারপরে উঠে গিয়ে বেডরুমের দরজাটা লক করে দিয়ে ওয়াড্রোব থেকে পরিষ্কার জামাকাপড়, আন্ডারগার্মেন্টস বার করল। চুলটা খুলে ফেলে নিজেকে একবার দেখল ওয়াড্রোবের দেওয়ালে লাগানো বডি সাইজড আয়নায়, তারপরে ঢুকে গেল বাথরুমে।
গিজারটা চালিয়ে দিল প্রথমেই – তারপরে স্নানঘরের চারদেওয়ালের নিজস্ব স্পেসে মুখোমুখি হল বড় আয়নাটার।
এই ফ্ল্যাটটা যখন সাজানো হচ্ছিল, তখন পিয়ালী-ই এই বড় আয়নাটা লাগিয়েছিল নিজেদের বেডরুমের সঙ্গের বাথরুমে।
রবি জিগ্যেস করেছিল বাথরুমে এতবড় আয়না দিয়ে কী করবে!
বরের দিকে হাল্কা করে একটা চোখ টিপে বলেছিল, ‘যখন করব, তখন দেখবে কী করি!’
রবি কথা বাড়ায় নি আর সেদিন।
যেদিন শিফট করেছিল ওরা এই ফ্ল্যাটে, সারাদিন ধরে ঘরদোর গোছানোর পরে সন্ধেটা একান্ত নিজেদের করে সামান্য ওয়াইন নিয়ে ব্যালকনিতে গল্প করতে করতে কাটিয়েছিল ওরা দুজনে। ছেলে সেদিন সারা সন্ধ্যে কার্টুন চ্যানেল দেখার পারমিশান পেয়ে গিয়েছিল না চাইতেই।
ব্যালকনির মেঝেতে গা ঘেঁষে বসেছিল ওরা দুজনে। সেটা বর্ষাকাল ছিল না, তবুও সেদিন হাল্কা বৃষ্টি পড়ছিল। এত উঁচুতে ফ্ল্যাট – তাই হাওয়াও দিচ্ছিল বেশ। হাল্কা বৃষ্টি আর হাওয়ায় ওদের দুজনেরই একটু শিরশির করছিল – তাই ওরা দুজনে আরও কাছাকাছি সরে আসছিল ক্রমশ।
একটা সময়ে রবি আর পিয়ালী দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরেছিল - বোধহয় ঠান্ডার হাত থেকেই বাঁচতে!!!
তার একটু পরেই ব্যালকনির কাঁচের দরজার পেছনে থাকা ভারী পর্দাটা সামান্য সরিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে নিয়েছিল ভেতরটা – কোনও ব্যাঘাত আসবে না ভেতর থেকে (থ্যাঙ্কস টু কার্টুন !) - নিশ্চিত হয়েই মেঝেতে ওয়াইনের চার নম্বর পেগের আধ খাওয়া গ্লাসটা নামিয়ে রেখে পিয়ালী উঠে বসেছিল রবির কোলে।
হাল্কা গোলাপী রঙ্গের সিল্কের নরম নাইট গাউনটা একটু টেনে তুলে নিয়েছিল হাঁটুর কাছে! অন্য কোনও কারণ নেই – রবির কোলে বসতে সুবিধা হবে – এই ভেবে।
তার পরের মুহুর্তেই বরের মুখটা টেনে নিয়েছিল নিজের বুকে।
রবির পেটেও তখন সমপরিমান ওয়াইন।
তবুও সে ওয়াইনের মায়াটা তখনই ত্যাগ না করতে পেরে এক হাতে গ্লাস আর অন্য হাতে বউয়ের পিঠ বেড় দিয়ে ধরেছিল।
--
২১
ওয়াইনের মায়া কাটিয়ে গ্লাসটা বেশ কিছুক্ষণ পরে নিজেই নামিয়ে রেখেছিল রবি – যখন বুঝতে পারল যে ওয়াইনের থেকেও ভাল কিছুতে ওর মুখটা ভরে গেছে আর সেই বস্তুটি তখনই গিলে ফেলাও যাবে না – অনেকক্ষণ ধরে ভক্ষণ করতে হবে।
পিয়ালী বরের মুখে নানা ভাবে ওই সুস্বাদু খাদ্যটি গুঁজে দিচ্ছিল – আর পতি দেবের শরীর মন জুড়িয়ে যাওয়ার আনন্দে নিজেও উৎফুল্ল হয়ে উঠছিল। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট শীৎকার দিয়ে সেটা বরকে জানাচ্ছিলও।
ওর বরের তখনও মুখ ভর্তি – সে একমনে কামড়িয়ে, চুষে ভক্ষণ করে চলেছে পিয়ালীকে।
তার বরের পরিতৃপ্তিটা পিয়ালী টের পাচ্ছিল নিজের তলপেটের তলায়।
রবির মাথা ভরা চুলের মধ্যে নিজের মুখটা গুঁজে বলেছিল, ‘উফ কী খোঁচাচ্ছে বল তো তখন থেকে!’
রবি ঠিকমতো জবাব দিতে পারে নি – কারণ তার মুখভর্তি খাবার যেটা পিয়ালীই তাকে খাইয়ে দিচ্ছিল।
ওদের তখন আর শীত শীত ভাবটা কেটে গিয়েছিল।
পিয়ালী রবির কানে হাল্কা একটা কামড় দিয়ে আর্তি জানিয়েছিল ‘ভেতরে চল সোনা।‘
দুজনে কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে নিজেদের একটু ঠিক ঠাক করে নিয়ে ব্যালকনির মেঝে থেকে ওয়াইনের গ্লাস দুটো তুলে ভারী পর্দাটা সরিয়ে ড্রয়িং রুম হয়ে নিজেদের বেডরুমের দিকে পা বাড়িয়েছিল।
ছেলে তখনও কার্টুনে মগ্ন। সেদিকেই তাকে আরও বেশ কিছুক্ষণ আটকিয়ে রাখার জন্য একটা চিপসের প্যাকেটা ধরিয়ে দিয়েছিল পিয়ালী।
ছেলে হয়তো ভেবেছিল আজ মায়ের হল টা কী – কার্টুন চিপস এক সাথে!!!
অন্য দিন তো চাইলেই বকা দেয়! আর আজ এদুটোর সঙ্গে আবার গাল টিপে আদরও করে দিয়ে বলল দেখ বাবু বসে বসে!
পিয়ালী বেডরুমের দরজাটা ভেতর থেকে লক করেই সেটাতেই ঠেস দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ছিল – একটা পা হাঁটু থেকে একটু ভাঁজ করে দরজায় ঠেকানো – পিঠও দরজায় ঠেস দেওয়া – দুটো দাঁত দিয়ে নীচের ঠোটের একটা কোণ কামড়িয়ে ধরে বরের দিকে তাকিয়েছিল চোখটা একটু ছোট করে।
আসলে ঠিক বরের দিকে নয়, বরের দুই পায়ের মাঝখানটায় তাকিয়েছিল পিয়ালী।
রবি তখন বিছানাতে বসেই ছিল।
নাইটগাউনটা আবারও ব্যালকনির কায়দায় একটু উঠিয়ে নিয়ে রবির কোমরের দুদিকে পা ছড়িয়ে চেপে বসেছিল পিয়ালী।
এবার রবির হাতে ওয়াইন গ্লাস ছিল না – বড় বড় চুমুকে শেষ করে বেডসাইড টেবিলে রেখে দিয়েছে ও – পিয়ালী ছেলেকে চিপস দিয়ে আসার মধ্যেই।
বউ কোলে চেপে বসতেই তার কোমরটা জড়িয়ে ধরে নিজের কোমরের দিকে আরও টেনে নিয়েছিল রবি।
তারপরের বেশ অনেকটা সময় সঙ্গমরত দুটো সাপ যেমন এ ওকে জড়িয়ে ধরে নানা কায়দায় – সেই ভাবে ওরা দুজনেও একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছিল।
তবে এখানে ফারাক একটাই – মাঝে মাঝেই শীৎকারের আওয়াজ বেরচ্ছিল পিয়ালীর গলা দিয়ে – কিছুটা সাবধানী আওয়াজ – যাতে কার্টুনের আওয়াজ না ছাপিয়ে যায় ওর এই ভাললাগার, ভালবাসার শব্দ।
বউয়ের নাইট গাউনের কোমরে জড়িয়ে থাকা সিল্কের বেল্টটা সবে খুলতে যাবে রবি, তখনই পিয়ালী বরের হাতদুটো চেপে ধরেছিল।
চোখদুটো একটা ছোট করে বরের দিকে তাকিয়ে দুদিকে মাথা নেড়ে বারণ করেছিল খুলতে।
রবি একটু অবাকই হয়েছিল, ‘হঠাৎ করে কী হল পিউ?
নিজের মুখটা বরের মুখের আরও কাছে নামিয়ে এনে প্রায় ফিস ফিস করে বলেছিল, ‘এখানে নয় বাবু – আমার সাজানো নতুন বাথরুমে..’
আয়না লাগার পরে সেই বিশাল বাথরুমে প্রমাণ সাইজের বাথটাবও বসিয়েছে পিয়ালী – ওর বরের আদরের পিউ।
‘ও হো.. তাই বলো..’
বউকে কোলে করেই নিয়ে যেতে গিয়েছিল রবি – তবে সেটা আর পারে নি। পিয়ালী বরের পিঠে হাল্কা একটা চাপড় মেরে বলেছিল, ‘এভাবে নিয়ে যেতে গিয়ে ফেলে দিলে কিন্তু সবটাই মাটি – বাথরুমের বদলে তোমাকে হসপিটালে নিয়ে দৌড়তে হবে!’
তাই আর নিজের শক্তি পরীক্ষা না করে রবি কোল থেকে বউকে নামিয়ে দিয়েছিল।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ওরা দুজনে বড় আয়নাটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়েছিল।
সামনে পিয়ালী, ঘাড়টা ডানদিকে সামান্য কাৎ করে দেওয়া।
পেছনে দাঁড়িয়ে রবি বউয়ের ঘাড়ের বাঁদিকে চুমু দিচ্ছিল আর জিভ বুলিয়ে দিচ্ছিল।
রবির হাতদুটোও থেমে ছিল না – বউয়ের শরীরের সামনের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল সেদুটো।
আর পিয়ালী এক হাতে রবির হাতের চলাফেরা আটকানোর চেষ্টা করছিল, অন্য হাতটা আবার একেবারে উল্টো কাজ করছিল !
পেছনে থাকা রবির ঘাড়টা জড়িয়ে ধরে তার মাথাভর্তি চুলগুলো ঘেঁটে দিচ্ছিল।
পিয়ালী আয়নাটা লাগানোর সময়ে ভেবেছিল ওদের দুজনের ভালবাসাটা চোখের সামনে দেখবে সে – কিন্তু আজ যখন সেটা করছে ওরা, তার চোখ আবেশে প্রায় বুজে এসেছে – দেখতে খুব একটা পাচ্ছে না সে।
সেই অবস্থাতেই কখন যে গা থেকে সিল্কের নাইট গাউনটা সরিয়ে দিয়েছিল রবি, সেটা খেয়ালই করে নি।
ওর আবেশ কেটেছিল যখন ওকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে আয়ানার ঠিক মুখোমুখি বসানো বাথটাবটাতে শুইয়ে দিয়েছিল রবি, সেই সময়ে।
ওদের দুজনেই তখন আদিম মানব-মানবী।
--
নিজে কী অবস্থায় থাকবে, এটা ভেবে তমাল ওর গাড়ি আনে নি কাল। সুরজিতের গাড়িতেই গিয়েছিল পার্টিতে।
সুরজিতের ফ্ল্যাট থেকে বেরনোর আগেই একটা ক্যাব বুক করে নিয়েছিল। সেটা গেটের বাইরেই অপেক্ষা করছে।
পিয়ালীকে নিয়ে সেটাতে উঠে পড়ল তমাল।
গাড়িতে বসেই পিয়ালী গলা নামিয়ে বলল, ‘বাকি কথা আর শুনতে ইচ্ছা করছে না। জাস্ট তোর বন্ধুর কাছ থেকে জেনে বলে দে আমার বরের সাথে তার কী কথা হয়েছে। বাড়িতে তো আমাকেও সেরকমই বলতে হবে।‘
তমাল ফোন করল সুরজিতকে।
‘হুম বেরিয়ে গেছি। জাস্ট জানতে চাইছি পিয়ালীর বরের সাথে তোর কী কী কথা হয়েছে – কী বলেছিস ওকে, সেটা একটু পিয়ালীকে বলে দে.. ফোনটা দিচ্ছি ধর।‘
তমালের হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে কানে লাগিয়ে পিয়ালী শুধু ‘হুম’ বলল। এরা দুজন তাকে নিয়ে যা করেছে কাল রাত থেকে তারপরে আর বাড়তি কথা বলার ইচ্ছা নেই ওর।
মাঝে মাঝে শুধু হু, আচ্ছা বলে তমালকে ফোনটা দিয়ে দিল। মুখটা ঘুরিয়ে বাইরের দিকেই দেখতে লাগল পিয়ালী।
পাশে বসা লোকটার সাথে যে কখনও কলেজে পড়ত বা কম বয়সে শরীর নিয়ে সামান্য কিছু একস্পেরিমেন্ট চালিয়েছে, সেসব ভাবতেও এখন ঘেন্না লাগছে।
এখন আর ওর বুঝতে বাকি নেই যে ওকে নিয়ে কী কী করা হয়ে থাকতে পারে সুরজিতের ফ্ল্যাটে।
তার আগে পার্টিতেও শেষের দিকে কী করেছিল, সেসবও মনে নেই। তবে একটু ফ্লার্ট করছিল গোড়ার দিকে, সেটা মনে আছে।
ওর পেছনে যে বেশ ব্যথা সেটা সকালে বাথরুমে গিয়েই টের পেয়েছিল। কারণটাও আন্দাজ করতে পারছে – নিশ্চই এই দুজনেরই অবদান ওই ব্যথাটা!!
মনে মনে ভাবল ছি! এটা ও কি করল! এতটা নীচে নামল কী করে ও। বাড়িতে ছেলেকে একা ফেলে রেখে দিয়ে।
এখন রবি কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করে কে জানে। সুরজিতের কাছ থেকে কতটা শুনেছে, কী মানে দাঁড় করিয়েছে – কে জানে!
নিউ টাউন থেকে সল্ট লেক হয়ে বাইপাস – গোটা রাস্তাই আজ ফাঁকা। তাই ক্যাবটা বেশ জোরেই চলছে।
এখন আর বাড়িতে বা রবিকে ফোন করবে না। একবারে বাড়ি ঢুকে ফোন করবে। কীভাবে ছেলেকে আর রবিকে ম্যানেজ করবে, সেসবই ভাবছিল পিয়ালী।
ওর মুড দেখে তমালও একটু ঘাবড়ে গেছে। দু একবার কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পিয়ালীর দিক থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে এখন চুপ করে গেছে।
বাড়ির সামনে চলে এল চল্লিশ মিনিটের মধ্যে।
ক্যাব থেকে নামার আগে শুধু একবারই তমালের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আর কখনও কনট্যাক্ট করার চেষ্টা করিস না।‘
বেশ জোরেই দরজাটা বন্ধ করে নিজের ফ্ল্যাটবাড়ির দিকে এগল পিয়ালী।
দরজায় বেল দিতেই ভেতর থেকে ছেলের গলার আওয়াজ পেল পিয়ালী।
একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে তৈরী হল ছেলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য।
--
২০
কাজের মাসি দরজা খুলতেই পিয়ালীর ওপরে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল ছেলে।
‘কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমিইইই,’ মাকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কেঁদেই ফেলল ও।
‘কোথাও যাই নি বাবু.. এই তো আমি, আসতে দেরী হল,’ ছেলেকে আর মিথ্যে বলতে পারল না পিয়ালী।
বেশ কিছুক্ষণ ছেলেকে আদর করে কাজের মাসিকে বলল, ‘আমাকে বেশী করে লেবু দিয়ে অল্প চিনি আর নুন দিয়ে একটু সরবৎ করে দাও তো।‘
‘আমি একটু চেঞ্জ করে নিই বাবু?’
ছেলেকে কোল থেকে নামিয়ে টিভিতে কার্টুন চ্যানেল চালিয়ে দিল পিয়ালী।
বেডরুমে গিয়ে বিছানায় বসে পড়েছিল মাথাটা হাতের তালুতে রেখে।
ছেলেকে তো সামাল দেওয়া গেল আপাতত, রবিকে কীভাবে ফেস করবে ও।
আরওপরে তমাল আর সুরজিৎ কী কী করেছে কে জানে, যদি কিছু হয়ে যায় তখন মুখ দেখাবে কী করে!
কিছুই মাথায় আসছে না ওর। কেন যে যেতে গেল পার্টিতে.. ইশ!!!!
ভাবতে ভাবতেই মাসি লেবুর জলটা নিয়ে এল।
সেটা হাতে দিতে দিতে বলল, ‘বৌদি, তোমার বোধহয় একটু বেশী খাওয়া হয়ে গিয়েছিল রাতে! কিছু মনে কর না, এসব তো আমাদের ঘরে সামলাতে হয় মাঝে মাঝে, বর তো গলা পর্যন্ত গিলে আসে। ঠান্ডা জলে স্নান করে নাও। কিছু মুখে দাও, শরীর ঠিক হয়ে যাবে।‘
লেবুর জলটা ঢক ঢক করে খেতে খেতে কাজের মাসির কথা শুনল পিয়ালী। ইশ কাজের মাসির সামনেও এক্সপোজড হয়ে গেলাম!! ছি! ছি! ও বুঝে গেল যে বৌদি মদ খেয়ে হুল্লোড় করেছে সারা রাত আদ্ধেক দিন! ইশশ!
কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গেছে, সেটা তো আর পাল্টানো যাবে না।
মাসির কথার জবাব না দিয়ে জিগ্যেস করল, ‘ছেলে দুপুরে খেয়েছে?’
‘ওই ভুলিয়ে ভালিয়ে টি ভি চালিয়ে দিয়ে খাইয়েছি। সকাল বেলায় খুব কাঁদছিল, তারপর প্যান্ডেলে নিয়ে গেলাম, একটু ভুলেছিল। আবার দুপুরে খেতে বসে কাঁদছিল। তুমি স্নান করে নাও। আমি খাবার গরম করি।‘
চলে গেল মাসি।
স্নানে যাওয়ার আগে রবিকে ফোন করা দরকার।
ও ঠিক করে নিয়েছে কী বলবে বরকে।
নম্বরটা ডায়াল করতেই প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফোনটা তুলল, যেভাবে হ্যালো বলল রবি, সে যে ওয়ারিড, তা এক সেকেন্ডেই বুঝে গেল পিয়ালী।
একটু থেমে থেমে সময় নিয়ে বলল, ‘আমি বাড়িতে। ঠিকই আছি। বেশী ড্রিংক করা হয়ে গিয়েছিল, তাই এতদূর না এসে তমালের এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে থেকে গিয়েছিলাম।‘
রবি যাতে আরও ওয়ারিড না হয়ে পড়ে, তার জন্য দলা পাকিয়ে উঠতে চাওয়া কান্নাটা গলার কাছেই কোনওমতে আটকে রাখল পিয়ালী।
রবিকে বারণ করল পিয়ালী তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে - ওর আজ নিজেকে একটু গুছিয়ে নেওয়ার সময় দরকার। রবি রাতের মধ্যে ফিরে এলে নিজেকে সামলাতে পারবে না – যদি বরের বুকে মাথা রেখে সব কিছু বলে ফেলে তার পরিণতি কী হতে পারে, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না পিয়ালীর।
অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে – কেঁদে – ফোনেই চুমু-টুমু দিয়ে রবির ফিরে আসাটা আটকাল পিয়ালী।
ফোনটা ছেড়ে একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে চোখটা বুজে রইল কয়েক মিনিট।
তারপরে উঠে গিয়ে বেডরুমের দরজাটা লক করে দিয়ে ওয়াড্রোব থেকে পরিষ্কার জামাকাপড়, আন্ডারগার্মেন্টস বার করল। চুলটা খুলে ফেলে নিজেকে একবার দেখল ওয়াড্রোবের দেওয়ালে লাগানো বডি সাইজড আয়নায়, তারপরে ঢুকে গেল বাথরুমে।
গিজারটা চালিয়ে দিল প্রথমেই – তারপরে স্নানঘরের চারদেওয়ালের নিজস্ব স্পেসে মুখোমুখি হল বড় আয়নাটার।
এই ফ্ল্যাটটা যখন সাজানো হচ্ছিল, তখন পিয়ালী-ই এই বড় আয়নাটা লাগিয়েছিল নিজেদের বেডরুমের সঙ্গের বাথরুমে।
রবি জিগ্যেস করেছিল বাথরুমে এতবড় আয়না দিয়ে কী করবে!
বরের দিকে হাল্কা করে একটা চোখ টিপে বলেছিল, ‘যখন করব, তখন দেখবে কী করি!’
রবি কথা বাড়ায় নি আর সেদিন।
যেদিন শিফট করেছিল ওরা এই ফ্ল্যাটে, সারাদিন ধরে ঘরদোর গোছানোর পরে সন্ধেটা একান্ত নিজেদের করে সামান্য ওয়াইন নিয়ে ব্যালকনিতে গল্প করতে করতে কাটিয়েছিল ওরা দুজনে। ছেলে সেদিন সারা সন্ধ্যে কার্টুন চ্যানেল দেখার পারমিশান পেয়ে গিয়েছিল না চাইতেই।
ব্যালকনির মেঝেতে গা ঘেঁষে বসেছিল ওরা দুজনে। সেটা বর্ষাকাল ছিল না, তবুও সেদিন হাল্কা বৃষ্টি পড়ছিল। এত উঁচুতে ফ্ল্যাট – তাই হাওয়াও দিচ্ছিল বেশ। হাল্কা বৃষ্টি আর হাওয়ায় ওদের দুজনেরই একটু শিরশির করছিল – তাই ওরা দুজনে আরও কাছাকাছি সরে আসছিল ক্রমশ।
একটা সময়ে রবি আর পিয়ালী দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরেছিল - বোধহয় ঠান্ডার হাত থেকেই বাঁচতে!!!
তার একটু পরেই ব্যালকনির কাঁচের দরজার পেছনে থাকা ভারী পর্দাটা সামান্য সরিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে নিয়েছিল ভেতরটা – কোনও ব্যাঘাত আসবে না ভেতর থেকে (থ্যাঙ্কস টু কার্টুন !) - নিশ্চিত হয়েই মেঝেতে ওয়াইনের চার নম্বর পেগের আধ খাওয়া গ্লাসটা নামিয়ে রেখে পিয়ালী উঠে বসেছিল রবির কোলে।
হাল্কা গোলাপী রঙ্গের সিল্কের নরম নাইট গাউনটা একটু টেনে তুলে নিয়েছিল হাঁটুর কাছে! অন্য কোনও কারণ নেই – রবির কোলে বসতে সুবিধা হবে – এই ভেবে।
তার পরের মুহুর্তেই বরের মুখটা টেনে নিয়েছিল নিজের বুকে।
রবির পেটেও তখন সমপরিমান ওয়াইন।
তবুও সে ওয়াইনের মায়াটা তখনই ত্যাগ না করতে পেরে এক হাতে গ্লাস আর অন্য হাতে বউয়ের পিঠ বেড় দিয়ে ধরেছিল।
--
২১
ওয়াইনের মায়া কাটিয়ে গ্লাসটা বেশ কিছুক্ষণ পরে নিজেই নামিয়ে রেখেছিল রবি – যখন বুঝতে পারল যে ওয়াইনের থেকেও ভাল কিছুতে ওর মুখটা ভরে গেছে আর সেই বস্তুটি তখনই গিলে ফেলাও যাবে না – অনেকক্ষণ ধরে ভক্ষণ করতে হবে।
পিয়ালী বরের মুখে নানা ভাবে ওই সুস্বাদু খাদ্যটি গুঁজে দিচ্ছিল – আর পতি দেবের শরীর মন জুড়িয়ে যাওয়ার আনন্দে নিজেও উৎফুল্ল হয়ে উঠছিল। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট শীৎকার দিয়ে সেটা বরকে জানাচ্ছিলও।
ওর বরের তখনও মুখ ভর্তি – সে একমনে কামড়িয়ে, চুষে ভক্ষণ করে চলেছে পিয়ালীকে।
তার বরের পরিতৃপ্তিটা পিয়ালী টের পাচ্ছিল নিজের তলপেটের তলায়।
রবির মাথা ভরা চুলের মধ্যে নিজের মুখটা গুঁজে বলেছিল, ‘উফ কী খোঁচাচ্ছে বল তো তখন থেকে!’
রবি ঠিকমতো জবাব দিতে পারে নি – কারণ তার মুখভর্তি খাবার যেটা পিয়ালীই তাকে খাইয়ে দিচ্ছিল।
ওদের তখন আর শীত শীত ভাবটা কেটে গিয়েছিল।
পিয়ালী রবির কানে হাল্কা একটা কামড় দিয়ে আর্তি জানিয়েছিল ‘ভেতরে চল সোনা।‘
দুজনে কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে নিজেদের একটু ঠিক ঠাক করে নিয়ে ব্যালকনির মেঝে থেকে ওয়াইনের গ্লাস দুটো তুলে ভারী পর্দাটা সরিয়ে ড্রয়িং রুম হয়ে নিজেদের বেডরুমের দিকে পা বাড়িয়েছিল।
ছেলে তখনও কার্টুনে মগ্ন। সেদিকেই তাকে আরও বেশ কিছুক্ষণ আটকিয়ে রাখার জন্য একটা চিপসের প্যাকেটা ধরিয়ে দিয়েছিল পিয়ালী।
ছেলে হয়তো ভেবেছিল আজ মায়ের হল টা কী – কার্টুন চিপস এক সাথে!!!
অন্য দিন তো চাইলেই বকা দেয়! আর আজ এদুটোর সঙ্গে আবার গাল টিপে আদরও করে দিয়ে বলল দেখ বাবু বসে বসে!
পিয়ালী বেডরুমের দরজাটা ভেতর থেকে লক করেই সেটাতেই ঠেস দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ছিল – একটা পা হাঁটু থেকে একটু ভাঁজ করে দরজায় ঠেকানো – পিঠও দরজায় ঠেস দেওয়া – দুটো দাঁত দিয়ে নীচের ঠোটের একটা কোণ কামড়িয়ে ধরে বরের দিকে তাকিয়েছিল চোখটা একটু ছোট করে।
আসলে ঠিক বরের দিকে নয়, বরের দুই পায়ের মাঝখানটায় তাকিয়েছিল পিয়ালী।
রবি তখন বিছানাতে বসেই ছিল।
নাইটগাউনটা আবারও ব্যালকনির কায়দায় একটু উঠিয়ে নিয়ে রবির কোমরের দুদিকে পা ছড়িয়ে চেপে বসেছিল পিয়ালী।
এবার রবির হাতে ওয়াইন গ্লাস ছিল না – বড় বড় চুমুকে শেষ করে বেডসাইড টেবিলে রেখে দিয়েছে ও – পিয়ালী ছেলেকে চিপস দিয়ে আসার মধ্যেই।
বউ কোলে চেপে বসতেই তার কোমরটা জড়িয়ে ধরে নিজের কোমরের দিকে আরও টেনে নিয়েছিল রবি।
তারপরের বেশ অনেকটা সময় সঙ্গমরত দুটো সাপ যেমন এ ওকে জড়িয়ে ধরে নানা কায়দায় – সেই ভাবে ওরা দুজনেও একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছিল।
তবে এখানে ফারাক একটাই – মাঝে মাঝেই শীৎকারের আওয়াজ বেরচ্ছিল পিয়ালীর গলা দিয়ে – কিছুটা সাবধানী আওয়াজ – যাতে কার্টুনের আওয়াজ না ছাপিয়ে যায় ওর এই ভাললাগার, ভালবাসার শব্দ।
বউয়ের নাইট গাউনের কোমরে জড়িয়ে থাকা সিল্কের বেল্টটা সবে খুলতে যাবে রবি, তখনই পিয়ালী বরের হাতদুটো চেপে ধরেছিল।
চোখদুটো একটা ছোট করে বরের দিকে তাকিয়ে দুদিকে মাথা নেড়ে বারণ করেছিল খুলতে।
রবি একটু অবাকই হয়েছিল, ‘হঠাৎ করে কী হল পিউ?
নিজের মুখটা বরের মুখের আরও কাছে নামিয়ে এনে প্রায় ফিস ফিস করে বলেছিল, ‘এখানে নয় বাবু – আমার সাজানো নতুন বাথরুমে..’
আয়না লাগার পরে সেই বিশাল বাথরুমে প্রমাণ সাইজের বাথটাবও বসিয়েছে পিয়ালী – ওর বরের আদরের পিউ।
‘ও হো.. তাই বলো..’
বউকে কোলে করেই নিয়ে যেতে গিয়েছিল রবি – তবে সেটা আর পারে নি। পিয়ালী বরের পিঠে হাল্কা একটা চাপড় মেরে বলেছিল, ‘এভাবে নিয়ে যেতে গিয়ে ফেলে দিলে কিন্তু সবটাই মাটি – বাথরুমের বদলে তোমাকে হসপিটালে নিয়ে দৌড়তে হবে!’
তাই আর নিজের শক্তি পরীক্ষা না করে রবি কোল থেকে বউকে নামিয়ে দিয়েছিল।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ওরা দুজনে বড় আয়নাটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়েছিল।
সামনে পিয়ালী, ঘাড়টা ডানদিকে সামান্য কাৎ করে দেওয়া।
পেছনে দাঁড়িয়ে রবি বউয়ের ঘাড়ের বাঁদিকে চুমু দিচ্ছিল আর জিভ বুলিয়ে দিচ্ছিল।
রবির হাতদুটোও থেমে ছিল না – বউয়ের শরীরের সামনের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল সেদুটো।
আর পিয়ালী এক হাতে রবির হাতের চলাফেরা আটকানোর চেষ্টা করছিল, অন্য হাতটা আবার একেবারে উল্টো কাজ করছিল !
পেছনে থাকা রবির ঘাড়টা জড়িয়ে ধরে তার মাথাভর্তি চুলগুলো ঘেঁটে দিচ্ছিল।
পিয়ালী আয়নাটা লাগানোর সময়ে ভেবেছিল ওদের দুজনের ভালবাসাটা চোখের সামনে দেখবে সে – কিন্তু আজ যখন সেটা করছে ওরা, তার চোখ আবেশে প্রায় বুজে এসেছে – দেখতে খুব একটা পাচ্ছে না সে।
সেই অবস্থাতেই কখন যে গা থেকে সিল্কের নাইট গাউনটা সরিয়ে দিয়েছিল রবি, সেটা খেয়ালই করে নি।
ওর আবেশ কেটেছিল যখন ওকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে আয়ানার ঠিক মুখোমুখি বসানো বাথটাবটাতে শুইয়ে দিয়েছিল রবি, সেই সময়ে।
ওদের দুজনেই তখন আদিম মানব-মানবী।
--