16-03-2019, 10:26 AM
১৩
সাইকেল একদিকে, অন্যদিকে বুকুন।
বড়রাস্তায় ওঠার আগেই আমার হাতের বাজুটা জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলল বুকুন।
ওকে কাঁদতে দিলাম বেশকিছুক্ষণ।
তারপরে ধীরে ধীরে বললাম, ‘বাড়ি চল।‘
কাঁদতে কাঁদতেই ও বলল, ‘কোন মুখে বাড়ি যাব রবিদা? সে কার সঙ্গে শুয়ে আছে মদ খেয়ে – সেটা শুনতে হল ওর বন্ধুর কাছ থেকে – তার বউয়ের সামনে!’
সাইকেলটা আমার কোমরের কাছে হেলিয়ে রেখে অন্য হাতটা আস্তে আস্তে বুকুনের পিঠে রাখলাম।
‘এখন তো বাড়ি চল। অন্ধকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে এভাবে কাঁদিস না। রাত প্রায় তিনটে বাজে!’
আরও মিনিট দশেক সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে আর কাঁদতে দিলাম বুকুনকে।
তারপর আবারও বললাম, ‘শোন, যে বলেছে, আর যার সামনে বলেছে – তাদের কাউকেই তুই চিনিস না। তাও আবার একজন মদের ঘোরে বলেছে ব্যাপারটা। সকালে উঠে হয়তো মনেই থাকবে না। অপমানিত হওয়ার ব্যাপারটা মাথা থেকে মুছে ফেল।‘
‘আর তুই? তুইও তো জানলি তোর বুকুন কী সুন্দর আছে! কী দারুণ সংসার করছে তোর বুকুন!’
‘আমার কাছে আবার তোর অপমান! চল সোনা বাড়ি চল। ভোর হতে চলল।‘
এবার পিঠে আর ঘাড়ে একটু চাপ দিলাম।
বুকুনের শরীর যে আমার গায়ে লেপ্টে রয়েছে, সেটা এতক্ষণে নজর করলাম। আমার হাত জড়িয়ে ধরে কাঁদার সময়ে তার বুকটা আমার হাতের বাজুতে চেপে গিয়েছিল। সোনা শব্দটা শুনে বুকুন একঝলক মুখ তুলে তাকাল।
‘রবিদা, আমাকে আবার ফিরিয়ে নে তোর কাছে।‘
কথাকটা বলেই মফস্বল শহরের বড়রাস্তার হাল্কা আলোতেই আমাকে জড়িয়ে ধরল বুকুন।
আমার জামার বুকের কাছটা ওর কান্নার জলে একটু একটু করে ভিজতে লাগল।
ওর পিঠে, ঘাড়ে ধীরে ধীরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম আমি।
আমাদের দুজনেরই চোখ বন্ধ ছিল।
ওর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ‘তুই কোথাও তো যাস নি বুকুন। আমার কাছেই তো ছিলি এতগুলো বছর! এমন একটা দিনও যায় নি যেদিন তোর কথা মনে পড়েনি। ফিরে আসার কথা বলছিস কেন?’
বুকুন আমাকে দুহাত দিয়ে আরও জোরে চেপে ধরল।
ওইভাবেই বেশ কিছুক্ষণ কেটে গিয়েছিল। আমাদের দুজনের চটক ভাঙ্গল কাছাকাছি কোথাও একটা কুকুর ডেকে ওঠার শব্দে।
বুকুনের বাঁধন একটু আলগা হল। বললাম, ‘কাকিমা চিন্তা করছে খুব। চল।‘
বুকুন আমার কাছ থেকে সামান্যই সরে দাঁড়াল, যাতে আমি একটু ঘুরে সাইকেলটায় উঠতে পারি।
সামনের রডে বসল বুকুন।
প্যাডেল করতে থাকলাম আমি।
হ্যান্ডেল ধরে থাকা আমার হাতদুটোর ওপরে সাইকেলে উঠেই নিজের হাতদুটো রেখেছিল বুকুন। ওর শরীর আমার খুব কাছে এখন।
প্যাডেল করতে করতেই ওর মাথার চুলে নাক ডুবিয়ে ছোট্ট একটা চুমু খেলাম আমি।
ও গা এলিয়ে দিল আমার দিকে। ওর চোখ থেকে হু হু করে জলের ধারা যে নেমে আসছে, সেটা অন্ধকার রাস্তায় সাইকেল চালাতে চালাতেই টের পেলাম।
হঠাৎই আকাশ থেকেও দু এক ফোঁটা জল পড়ল।
আর তারপরেই দশমীর ভোরে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি শুরু হল।
--
১৪
তড়িঘড়ি বুকুন আর আমার সাইকেল নিয়ে দৌড়ে একটা বড় অশ্বথ গাছের নীচে গিয়ে দাঁড়ালাম বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে।
অন্ধকার চারদিক, তারমধ্যে বৃষ্টি বেড়েই চলেছে। বড় গাছটা ভাগ্যিস ছিল, নাহলে দুজনকেই কাক ভেজা হয়ে যেতে হত এতক্ষণে।
তবুও বৃষ্টির ছাঁট গায়ে লাগছে।
সাইকেলটাও ভিজছে।
‘একটু সরে আয়, অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বরটর হয়ে যাবে,’ বলল বুকুন।
এমন নয় যে আমরা দুজন অনেক দূরে দাঁড়িয়েছিলাম।
ওর আহ্বানে আরও কিছুটা সরে দাঁড়ালাম ওর দিকে – একেবারেই গায়ে গায়ে।
বৃষ্টি শুরু হতেই বুকুন শাড়ির আঁচলটা গায়ে জড়িয়ে নিয়েছিল। এতক্ষনে আঁচলটা বেশ ভিজে গেছে – তবুও সেটাই গায়ে জড়িয়ে রেখেছে বুকুন।
আমার আর বুকুনের হাতের বাজু, পা, কোমড় এ ওকে ছুঁয়ে রয়েছে – বৃষ্টির ছাঁট থেকে বাঁচতে।
আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে লাইটারটা হাওয়া থেকে আড়াল করে সিগারেট ধরানোর চেষ্টা করছিলাম।
ঠিক তখনই বুকুন আমার হাতের বাজুটা জড়িয়ে ধরল আর আমার কাঁধে মাথাটা হেলিয়ে দিল।
সিগারেটে একটা টান দিয়ে বুকুনের কাঁধে হাত রাখলাম আমি।
ওর বুক ততক্ষণে আমার শরীর স্পর্শ করছে।
ফিস ফিস করে বলল, ‘আজ যা শুনলাম, তারপর কীভাবে ওর সাথে থাকব রবিদা?’
ওর কাঁধ, কানের লতিতে আলতো করে আঙুল ছুঁইয়ে দিতে দিতে বললাম, ‘সে সব পরে ভাবা যাবে। এখন কাল সকালে ঠিক ঠাক বাড়ি তো ফিরুক অর্ণব। আর এখানে থাকার সময়ে ও নিয়ে একটা কথাও বলবি না। কাকিমাকেও বারণ করে দিবে যেন এই বিষয়টা না তোলে। অর্ণবের অ্যাটিচিউড কেমন থাকে সেটা লক্ষ্য কর আগে। অত ভাবিস না।‘
বুকুন ততক্ষনে আমার কাঁধে, হাতের বাজুতে নাক, মুখ ঘষতে শুরু করেছে।
আমার আঙুলগুলোও ওর কান, কাঁধ ছুঁয়ে নামছে ধীরে ধীরে নীচের দিকে।
এবার একটা হাতের বদলে দুটো হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল বুকুন আমাকে।
আমি দু পা পিছিয়ে গিয়ে বড় অশ্বথ গাছের গুঁড়িটাতে ঠেস দিলাম। বুকুন দুহাতে আমার পিঠ খামচে ধরে বুকে, গলায়, কানে নাক, মুখ ঘষতে শুরু করল। আমার সিগারেট না ধরা হাতটা ওর আঁচল ঢাকা পিঠে ঘুরছিল – কখন ওর ঘাড়ে, কখনও ওর শিরদাঁড়ায় – একবার ধীরে ধীরে ওর শাড়ির আঁচল আর ব্লাউজে ঢাকা ব্রায়ের স্ট্র্যাপটা ছুঁয়ে কোমড় অবধি নামছে, তারপর আবারও ধীরে ধীরে ওপরে উঠছে।
সিগারেটটা ফেলে দিলাম – একটা হাত আটকিয়ে ছিল, এখন সেটাও ফ্রি হয়ে গেল।
বুকুনের একটা হাত আমার পিঠ থেকে সরে এসে আমার পাঞ্জাবি জামা আর গেঞ্জির নীচ দিয়ে ঢুকে গিয়ে বুকের কাছে খামচে ধরছে, আর আমার গলায় কখনও জিভ দিয়ে চেটে দিচ্ছে, কখনও হাল্কা কামড় বসাচ্ছে।
আমাদের দুজনের তলপেট একে অপরকে চাপ দিচ্ছে - কখনও আবার ডানদিক বাঁদিক করে আদর করছে ওরা একে অপরকে।
আমার পাজামার ভেতরে ক্রমশ জেগে উঠছে একটা ময়াল সাপ – খুঁজে বেড়াচ্ছে জঙ্গলের রাস্তা।
--
১৫
বৃষ্টির ছাঁট যতই বাড়ছে, ততই যেন বুকুনের আদরের বহর বাড়ছে।
আমার পাঞ্জাবি আর গেঞ্জিটা প্রায় গলার কাছে তুলে দিয়ে আমার বুকে আঁচড় দিচ্ছে, কামড়াচ্ছে। একটা পা ভাঁজ করে একটু তুলে দিয়ে নিজের কোমরটা ঘষছে আমার তলপেটে।
আমার হাতদুটোও আর নিজের কন্ট্রোলে নেই তখন। কখনও একটা হাত বুকুনের কোমরটা খাবলে ধরছে, কখনও কোমর থেকে আরও নীচে নেমে যাচ্ছে – ওর নিতম্বের ওপরে।
বুকুন আমার বুকে অনেকক্ষণ আদর করে মাথাটা সামান্য তুলে জিভটা বার করল, আমিও ওর ইঙ্গিতটা ধরে ঠোঁট ফাঁক করে টেনে নিলাম ওর ঠোঁট।
দুই প্রায় চল্লিশ ছোঁয়া নারী-পুরুষ বৃষ্টির মধ্যে ঘন অন্ধকারে গাছতলায় দাঁড়িয়ে যে এরকম কিছু করতে পারে, তা যদি ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পায়, তাহলে যে আমাদের দুটো পরিবারকেই চিরকালের মতো গ্রাম ছাড়া হতে হবে, আরও কী কী ঘটতে পারে – সেই সব কথা আমাদের দুজনের কারও মাথাতেই নেই তখন।
তখন আমি ব্যস্ত, বলা ভাল বুকুনের নিতম্বের ওপরে হস্তসঞ্চালনে। আর তার ফলে যে ওর পায়ের দিক থেকে শাড়ী-পেটিকোট ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠে আসতে শুরু করেছে, সেটা কি আর সে খেয়াল করে নি!
কিন্তু আমাকে বাধা দেওয়ার বদলে সে উল্টে নিজের কোমর আমার তলপেটে পাজামার ফুলে থাকা জায়গায় আরও জোরে ঘষতে শুরু করল দুই হাতে আমার মাথাটা আঁকড়ে ধরে।
আমি তখন একপায়ে খাড়া। মানে, একটা পা মাটিতে, অন্য পা দিয়ে বুকুনের পা ঘষছি ধীরে ধীরে। ওর শাড়ি-পেটিকোট তখন আমার হাতের টানে উঠে এসেছে ওর হাঁটুরও ওপরে।
আমার মাথা থেকে একটা হাত সরিয়ে সে সরাসরি আমার পাজামার ফুলে ওঠা জায়গাটায় চেপে ধরল।
আমি উঁক করে একটা আওয়াজ করলাম নাক আর গলা দিয়ে। মুখ তো বন্ধ সেই কখন থেকে।
পাজামার ওপর দিয়ে বোধহয় বুকুন ওর কাঙ্খিত জিনিষটা পাচ্ছিল না ঠিক, তাই চেষ্টা করছিল পাজামার দড়িটা খোলার।
ওর মুখ থেকে নিজেকে সামান্য সরিয়ে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম, ‘এবার খোল দেখি আমার পাজামার দড়িটা!! ছোটবেলায় তো বিলের মাঠে তোর সালোয়ারের দড়িতে গিঁট পড়িয়ে দিয়েছিলাম বলে মেজাজ করেছিলি!!’
আমি হি হি করে হাসতেই বুকুনের ছোট্ট জবাব, ‘শয়তান কোথাকার’!
তবে সেই শয়তানের পাজামার দড়ি গিঁট না ফেলেই ঝট করে খুলেও ফেলল সে। তারপরে নিজের কাজে মন দিল। আর আমি আমার কাজে – যদিও আমার কাজ যে খুব একটা বাকি নেই, সেটা জানি। ওর শাড়ী-পেটিকোট যতটা তোলার প্রয়োজন, ততটা প্রায় তুলেই ফেলেছি আমি।
আর একটাই মাত্র আবরণ সরানোর কাজ বাকি আমার।
তবে বুকুন এ ব্যাপারে আমার থেকে এগিয়ে। সে অপ্রয়োজনীয় দুটো আবরণই আমার কোমর থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
আমি তখন তার হাতের মুঠোয় পিষ্ট হচ্ছি।
বুকুনের কাঁধদুটো ধরে দুজনে জায়গা বদল করে নিলাম। ও এখন অশ্বত্থ গাছের গুঁড়ির দিকে মুখ করে – দুই হাতে গাছের গুঁড়িটা আগলে রেখেছে। আমি রাস্তার দিকে পেছন করে বুকুনের সঙ্গে লেপ্টে রয়েছি।
গাছের গুঁড়ি আর বুকুনের বৃষ্টি-ভেজা ব্লাউজের তলায় থাকা বুকের মাঝে পিষে যাচ্ছে আমার একটা হাত।
অন্য হাতটা বুকুনের কাঁধে।
বুকুনের কোমরে লেগে থাকা তিনকোনা শেষ আবরণটা কী ভেবে আর সরালাম না, মনে হল থাক – ওটা আর নামাবো না।
কিন্তু আমার ময়াল সাপটা যে জঙ্গল খোঁজার জন্য অসম্ভব খেপে উঠেছে – সে কি আর কোনও বাধা মানবে?
মানলও না। বুকুনই মানতে দিল না বলা চলে।
নিজের হাতেই ঝপ করে সাপের মাথাটা ধরে ফেলে শেষ লজ্জাবস্ত্রের পাশ দিয়েই জঙ্গলে ঢোকার পথ দেখিয়ে দিল সে আমার সাপটাকে।
একটা আঁআআক করে শব্দ বেরলো ওর মুখ থেকে। তারপরে মাঝে মাঝে হাল্কা শীৎকার। ওর গলা দিয়ে হয়তো একটু জোরেই বেরচ্ছিল, কিন্তু প্রচন্ড বৃষ্টির আওয়াজে ওর মুখের বেশ কাছে থাকা স্বত্ত্বেও আমার কানে সেগুলো খুব হাল্কা হয়েই আসছিল।
কিন্তু অনেক দূর দিয়ে বৃষ্টির শব্দের মধ্যেও একটা ট্রাক বা ভারী কোনও গাড়ি যাওয়ার আওয়াজ পেলাম। একটা কুকুর ডেকে উঠল কোথাও। হয়তো সে-ও আমাদেরই মতো বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে কোনও গাছতলায়!
আমরা দুজনেরই যে দম একটু একটু করে কমে আসছে সময়ের সাথে সাথে, সেটা বোঝা যাচ্ছিল আমাদের লয় বাড়া অনুভব করেই।
লয় আরও বাড়াতে বলল বুকুন হাল্কা স্বরে। যতটা সম্ভব চেষ্টা করলাম।
কিন্তু তার ফলেই হোক আর যে কোনও কারণেই হোক, লয় কিছুটা বেড়ে যাওয়ার পরে আর বেশীক্ষণ কসরৎ দেখাতে হল না ওস্তাদজীকে। একটু যেন হঠাৎই গানের আসর শেষ হয়ে গেল।
বুকুনের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, ‘তোর হল?’
‘মমমম আগেই হয়েছে আমার!’
‘ওহ বুঝি নি তো!!’
‘আর বুঝে কাজ নেই। বৃষ্টি ধরে আসছে বোধহয়। ঠিক হতে দে।‘
পরিষ্কার হওয়ার জন্য জলের অভাব নেই। গাছের আড়াল থেকে ওই অবস্থাতেই সামান্য হাতটা বাড়াতেই আঁজলা ভরে জল নিয়ে প্রথমে নিজে, তারপরে বুকুনকে একটু পরিষ্কার করে দিলাম।
ও বলছিল বটে, ‘ধ্যাত, তোকে করতে হবে না। নিজেই ধুয়ে নিচ্ছি।‘
কিন্তু আমি আঁজলা ভরা জল দিয়ে ওকে পরিষ্কার করে দেওয়ার সময়ে বাধাও দেয় নি।
তারপর আর শুকনো হওয়ার দরকার ছিল না। কারণ আবারও তো বৃষ্টিতে ভিজতেই হবে আমাদের।
তবে পোষাকআশাক একটু সভ্য-ভদ্র করে নিলাম দুজনেই – যদিও আমাদের জামাকাপড় দেখার জন্য রাস্তায় এই ভোর চারটের সময়ে বৃষ্টির মধ্যে অন্ধকারে কেউই দাঁড়িয়ে থাকবে না!! তবুও!!
একটা সিগারেট ধরালাম।
বুকুন বলল, ‘আমাকেও একটা দে তো। খাব।‘
‘অ্যাঁ?’
‘দে না। কয়েকবার খেয়েছি আমি।‘
ভেজা প্যাকেট থেকে সিগারেট বার করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। বলল, ‘ধরিয়ে দে। ওটা পারি না, কাশি হয়ে যায় খুব।‘
আমার মুখের সিগারেটটা বার করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম।
‘ইশ তোর খাওয়াটা দিচ্ছিস!! যাক কী আর হবে, তোর মুখের ভেতরটাই তো খেলাম এক্ষুনি!!’ সিগারেটটা দুই আঙ্গুলে চেপে ধরে হাসতে হাসতে বলল বুকুন।
আমি সদ্য বার করা অন্য সিগারেটটা ধরিয়ে নিলাম।
দুজনে তখনও গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে।
বৃষ্টি কমার লক্ষণ নেই।
‘কী করবি রে! দুই বাড়িতেই তো চিন্তা করছে। ফোন করে দিবি একটা?’ বললাম আমি।
‘না। তাহলে আরও চিন্তা করবে। ভাববে কোথায় আটকিয়ে পড়েছি। তার থেকে মা, জেঠিমা জানে যখন তুই আছিস সাথে বেশী ভাববে না।‘
সিগারেটটা শেষ হয়ে গেল, বৃষ্টি শেষ হল না।
হঠাৎই বুকুন বলল, ‘চল ভিজেই যাই! যাবি?’
‘শীত শুরু হচ্ছে। ভিজলে জ্বরজারিতে পড়বি।‘
‘হুম তা ঠিক। জ্বর হলে বর হয়তো আমার সেবা করার জন্য বাড়িতে বসে থাকবে বন্ধুর বউ-শালীর সঙ্গে না শুয়ে!’
একটা বাকা হাসি দিল বুকুন।
আমি কথা না বাড়িয়ে ওর কাঁধে একটা হাত রেখে সামান্য চাপ দিলাম।
ও একটা হাত তুলে আমার হাতের ওপরে রাখল। তারপর বলল, ‘চল বেরই।‘
--
সাইকেল একদিকে, অন্যদিকে বুকুন।
বড়রাস্তায় ওঠার আগেই আমার হাতের বাজুটা জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলল বুকুন।
ওকে কাঁদতে দিলাম বেশকিছুক্ষণ।
তারপরে ধীরে ধীরে বললাম, ‘বাড়ি চল।‘
কাঁদতে কাঁদতেই ও বলল, ‘কোন মুখে বাড়ি যাব রবিদা? সে কার সঙ্গে শুয়ে আছে মদ খেয়ে – সেটা শুনতে হল ওর বন্ধুর কাছ থেকে – তার বউয়ের সামনে!’
সাইকেলটা আমার কোমরের কাছে হেলিয়ে রেখে অন্য হাতটা আস্তে আস্তে বুকুনের পিঠে রাখলাম।
‘এখন তো বাড়ি চল। অন্ধকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে এভাবে কাঁদিস না। রাত প্রায় তিনটে বাজে!’
আরও মিনিট দশেক সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে আর কাঁদতে দিলাম বুকুনকে।
তারপর আবারও বললাম, ‘শোন, যে বলেছে, আর যার সামনে বলেছে – তাদের কাউকেই তুই চিনিস না। তাও আবার একজন মদের ঘোরে বলেছে ব্যাপারটা। সকালে উঠে হয়তো মনেই থাকবে না। অপমানিত হওয়ার ব্যাপারটা মাথা থেকে মুছে ফেল।‘
‘আর তুই? তুইও তো জানলি তোর বুকুন কী সুন্দর আছে! কী দারুণ সংসার করছে তোর বুকুন!’
‘আমার কাছে আবার তোর অপমান! চল সোনা বাড়ি চল। ভোর হতে চলল।‘
এবার পিঠে আর ঘাড়ে একটু চাপ দিলাম।
বুকুনের শরীর যে আমার গায়ে লেপ্টে রয়েছে, সেটা এতক্ষণে নজর করলাম। আমার হাত জড়িয়ে ধরে কাঁদার সময়ে তার বুকটা আমার হাতের বাজুতে চেপে গিয়েছিল। সোনা শব্দটা শুনে বুকুন একঝলক মুখ তুলে তাকাল।
‘রবিদা, আমাকে আবার ফিরিয়ে নে তোর কাছে।‘
কথাকটা বলেই মফস্বল শহরের বড়রাস্তার হাল্কা আলোতেই আমাকে জড়িয়ে ধরল বুকুন।
আমার জামার বুকের কাছটা ওর কান্নার জলে একটু একটু করে ভিজতে লাগল।
ওর পিঠে, ঘাড়ে ধীরে ধীরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম আমি।
আমাদের দুজনেরই চোখ বন্ধ ছিল।
ওর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ‘তুই কোথাও তো যাস নি বুকুন। আমার কাছেই তো ছিলি এতগুলো বছর! এমন একটা দিনও যায় নি যেদিন তোর কথা মনে পড়েনি। ফিরে আসার কথা বলছিস কেন?’
বুকুন আমাকে দুহাত দিয়ে আরও জোরে চেপে ধরল।
ওইভাবেই বেশ কিছুক্ষণ কেটে গিয়েছিল। আমাদের দুজনের চটক ভাঙ্গল কাছাকাছি কোথাও একটা কুকুর ডেকে ওঠার শব্দে।
বুকুনের বাঁধন একটু আলগা হল। বললাম, ‘কাকিমা চিন্তা করছে খুব। চল।‘
বুকুন আমার কাছ থেকে সামান্যই সরে দাঁড়াল, যাতে আমি একটু ঘুরে সাইকেলটায় উঠতে পারি।
সামনের রডে বসল বুকুন।
প্যাডেল করতে থাকলাম আমি।
হ্যান্ডেল ধরে থাকা আমার হাতদুটোর ওপরে সাইকেলে উঠেই নিজের হাতদুটো রেখেছিল বুকুন। ওর শরীর আমার খুব কাছে এখন।
প্যাডেল করতে করতেই ওর মাথার চুলে নাক ডুবিয়ে ছোট্ট একটা চুমু খেলাম আমি।
ও গা এলিয়ে দিল আমার দিকে। ওর চোখ থেকে হু হু করে জলের ধারা যে নেমে আসছে, সেটা অন্ধকার রাস্তায় সাইকেল চালাতে চালাতেই টের পেলাম।
হঠাৎই আকাশ থেকেও দু এক ফোঁটা জল পড়ল।
আর তারপরেই দশমীর ভোরে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি শুরু হল।
--
১৪
তড়িঘড়ি বুকুন আর আমার সাইকেল নিয়ে দৌড়ে একটা বড় অশ্বথ গাছের নীচে গিয়ে দাঁড়ালাম বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে।
অন্ধকার চারদিক, তারমধ্যে বৃষ্টি বেড়েই চলেছে। বড় গাছটা ভাগ্যিস ছিল, নাহলে দুজনকেই কাক ভেজা হয়ে যেতে হত এতক্ষণে।
তবুও বৃষ্টির ছাঁট গায়ে লাগছে।
সাইকেলটাও ভিজছে।
‘একটু সরে আয়, অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বরটর হয়ে যাবে,’ বলল বুকুন।
এমন নয় যে আমরা দুজন অনেক দূরে দাঁড়িয়েছিলাম।
ওর আহ্বানে আরও কিছুটা সরে দাঁড়ালাম ওর দিকে – একেবারেই গায়ে গায়ে।
বৃষ্টি শুরু হতেই বুকুন শাড়ির আঁচলটা গায়ে জড়িয়ে নিয়েছিল। এতক্ষনে আঁচলটা বেশ ভিজে গেছে – তবুও সেটাই গায়ে জড়িয়ে রেখেছে বুকুন।
আমার আর বুকুনের হাতের বাজু, পা, কোমড় এ ওকে ছুঁয়ে রয়েছে – বৃষ্টির ছাঁট থেকে বাঁচতে।
আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে লাইটারটা হাওয়া থেকে আড়াল করে সিগারেট ধরানোর চেষ্টা করছিলাম।
ঠিক তখনই বুকুন আমার হাতের বাজুটা জড়িয়ে ধরল আর আমার কাঁধে মাথাটা হেলিয়ে দিল।
সিগারেটে একটা টান দিয়ে বুকুনের কাঁধে হাত রাখলাম আমি।
ওর বুক ততক্ষণে আমার শরীর স্পর্শ করছে।
ফিস ফিস করে বলল, ‘আজ যা শুনলাম, তারপর কীভাবে ওর সাথে থাকব রবিদা?’
ওর কাঁধ, কানের লতিতে আলতো করে আঙুল ছুঁইয়ে দিতে দিতে বললাম, ‘সে সব পরে ভাবা যাবে। এখন কাল সকালে ঠিক ঠাক বাড়ি তো ফিরুক অর্ণব। আর এখানে থাকার সময়ে ও নিয়ে একটা কথাও বলবি না। কাকিমাকেও বারণ করে দিবে যেন এই বিষয়টা না তোলে। অর্ণবের অ্যাটিচিউড কেমন থাকে সেটা লক্ষ্য কর আগে। অত ভাবিস না।‘
বুকুন ততক্ষনে আমার কাঁধে, হাতের বাজুতে নাক, মুখ ঘষতে শুরু করেছে।
আমার আঙুলগুলোও ওর কান, কাঁধ ছুঁয়ে নামছে ধীরে ধীরে নীচের দিকে।
এবার একটা হাতের বদলে দুটো হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল বুকুন আমাকে।
আমি দু পা পিছিয়ে গিয়ে বড় অশ্বথ গাছের গুঁড়িটাতে ঠেস দিলাম। বুকুন দুহাতে আমার পিঠ খামচে ধরে বুকে, গলায়, কানে নাক, মুখ ঘষতে শুরু করল। আমার সিগারেট না ধরা হাতটা ওর আঁচল ঢাকা পিঠে ঘুরছিল – কখন ওর ঘাড়ে, কখনও ওর শিরদাঁড়ায় – একবার ধীরে ধীরে ওর শাড়ির আঁচল আর ব্লাউজে ঢাকা ব্রায়ের স্ট্র্যাপটা ছুঁয়ে কোমড় অবধি নামছে, তারপর আবারও ধীরে ধীরে ওপরে উঠছে।
সিগারেটটা ফেলে দিলাম – একটা হাত আটকিয়ে ছিল, এখন সেটাও ফ্রি হয়ে গেল।
বুকুনের একটা হাত আমার পিঠ থেকে সরে এসে আমার পাঞ্জাবি জামা আর গেঞ্জির নীচ দিয়ে ঢুকে গিয়ে বুকের কাছে খামচে ধরছে, আর আমার গলায় কখনও জিভ দিয়ে চেটে দিচ্ছে, কখনও হাল্কা কামড় বসাচ্ছে।
আমাদের দুজনের তলপেট একে অপরকে চাপ দিচ্ছে - কখনও আবার ডানদিক বাঁদিক করে আদর করছে ওরা একে অপরকে।
আমার পাজামার ভেতরে ক্রমশ জেগে উঠছে একটা ময়াল সাপ – খুঁজে বেড়াচ্ছে জঙ্গলের রাস্তা।
--
১৫
বৃষ্টির ছাঁট যতই বাড়ছে, ততই যেন বুকুনের আদরের বহর বাড়ছে।
আমার পাঞ্জাবি আর গেঞ্জিটা প্রায় গলার কাছে তুলে দিয়ে আমার বুকে আঁচড় দিচ্ছে, কামড়াচ্ছে। একটা পা ভাঁজ করে একটু তুলে দিয়ে নিজের কোমরটা ঘষছে আমার তলপেটে।
আমার হাতদুটোও আর নিজের কন্ট্রোলে নেই তখন। কখনও একটা হাত বুকুনের কোমরটা খাবলে ধরছে, কখনও কোমর থেকে আরও নীচে নেমে যাচ্ছে – ওর নিতম্বের ওপরে।
বুকুন আমার বুকে অনেকক্ষণ আদর করে মাথাটা সামান্য তুলে জিভটা বার করল, আমিও ওর ইঙ্গিতটা ধরে ঠোঁট ফাঁক করে টেনে নিলাম ওর ঠোঁট।
দুই প্রায় চল্লিশ ছোঁয়া নারী-পুরুষ বৃষ্টির মধ্যে ঘন অন্ধকারে গাছতলায় দাঁড়িয়ে যে এরকম কিছু করতে পারে, তা যদি ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পায়, তাহলে যে আমাদের দুটো পরিবারকেই চিরকালের মতো গ্রাম ছাড়া হতে হবে, আরও কী কী ঘটতে পারে – সেই সব কথা আমাদের দুজনের কারও মাথাতেই নেই তখন।
তখন আমি ব্যস্ত, বলা ভাল বুকুনের নিতম্বের ওপরে হস্তসঞ্চালনে। আর তার ফলে যে ওর পায়ের দিক থেকে শাড়ী-পেটিকোট ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠে আসতে শুরু করেছে, সেটা কি আর সে খেয়াল করে নি!
কিন্তু আমাকে বাধা দেওয়ার বদলে সে উল্টে নিজের কোমর আমার তলপেটে পাজামার ফুলে থাকা জায়গায় আরও জোরে ঘষতে শুরু করল দুই হাতে আমার মাথাটা আঁকড়ে ধরে।
আমি তখন একপায়ে খাড়া। মানে, একটা পা মাটিতে, অন্য পা দিয়ে বুকুনের পা ঘষছি ধীরে ধীরে। ওর শাড়ি-পেটিকোট তখন আমার হাতের টানে উঠে এসেছে ওর হাঁটুরও ওপরে।
আমার মাথা থেকে একটা হাত সরিয়ে সে সরাসরি আমার পাজামার ফুলে ওঠা জায়গাটায় চেপে ধরল।
আমি উঁক করে একটা আওয়াজ করলাম নাক আর গলা দিয়ে। মুখ তো বন্ধ সেই কখন থেকে।
পাজামার ওপর দিয়ে বোধহয় বুকুন ওর কাঙ্খিত জিনিষটা পাচ্ছিল না ঠিক, তাই চেষ্টা করছিল পাজামার দড়িটা খোলার।
ওর মুখ থেকে নিজেকে সামান্য সরিয়ে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম, ‘এবার খোল দেখি আমার পাজামার দড়িটা!! ছোটবেলায় তো বিলের মাঠে তোর সালোয়ারের দড়িতে গিঁট পড়িয়ে দিয়েছিলাম বলে মেজাজ করেছিলি!!’
আমি হি হি করে হাসতেই বুকুনের ছোট্ট জবাব, ‘শয়তান কোথাকার’!
তবে সেই শয়তানের পাজামার দড়ি গিঁট না ফেলেই ঝট করে খুলেও ফেলল সে। তারপরে নিজের কাজে মন দিল। আর আমি আমার কাজে – যদিও আমার কাজ যে খুব একটা বাকি নেই, সেটা জানি। ওর শাড়ী-পেটিকোট যতটা তোলার প্রয়োজন, ততটা প্রায় তুলেই ফেলেছি আমি।
আর একটাই মাত্র আবরণ সরানোর কাজ বাকি আমার।
তবে বুকুন এ ব্যাপারে আমার থেকে এগিয়ে। সে অপ্রয়োজনীয় দুটো আবরণই আমার কোমর থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
আমি তখন তার হাতের মুঠোয় পিষ্ট হচ্ছি।
বুকুনের কাঁধদুটো ধরে দুজনে জায়গা বদল করে নিলাম। ও এখন অশ্বত্থ গাছের গুঁড়ির দিকে মুখ করে – দুই হাতে গাছের গুঁড়িটা আগলে রেখেছে। আমি রাস্তার দিকে পেছন করে বুকুনের সঙ্গে লেপ্টে রয়েছি।
গাছের গুঁড়ি আর বুকুনের বৃষ্টি-ভেজা ব্লাউজের তলায় থাকা বুকের মাঝে পিষে যাচ্ছে আমার একটা হাত।
অন্য হাতটা বুকুনের কাঁধে।
বুকুনের কোমরে লেগে থাকা তিনকোনা শেষ আবরণটা কী ভেবে আর সরালাম না, মনে হল থাক – ওটা আর নামাবো না।
কিন্তু আমার ময়াল সাপটা যে জঙ্গল খোঁজার জন্য অসম্ভব খেপে উঠেছে – সে কি আর কোনও বাধা মানবে?
মানলও না। বুকুনই মানতে দিল না বলা চলে।
নিজের হাতেই ঝপ করে সাপের মাথাটা ধরে ফেলে শেষ লজ্জাবস্ত্রের পাশ দিয়েই জঙ্গলে ঢোকার পথ দেখিয়ে দিল সে আমার সাপটাকে।
একটা আঁআআক করে শব্দ বেরলো ওর মুখ থেকে। তারপরে মাঝে মাঝে হাল্কা শীৎকার। ওর গলা দিয়ে হয়তো একটু জোরেই বেরচ্ছিল, কিন্তু প্রচন্ড বৃষ্টির আওয়াজে ওর মুখের বেশ কাছে থাকা স্বত্ত্বেও আমার কানে সেগুলো খুব হাল্কা হয়েই আসছিল।
কিন্তু অনেক দূর দিয়ে বৃষ্টির শব্দের মধ্যেও একটা ট্রাক বা ভারী কোনও গাড়ি যাওয়ার আওয়াজ পেলাম। একটা কুকুর ডেকে উঠল কোথাও। হয়তো সে-ও আমাদেরই মতো বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে কোনও গাছতলায়!
আমরা দুজনেরই যে দম একটু একটু করে কমে আসছে সময়ের সাথে সাথে, সেটা বোঝা যাচ্ছিল আমাদের লয় বাড়া অনুভব করেই।
লয় আরও বাড়াতে বলল বুকুন হাল্কা স্বরে। যতটা সম্ভব চেষ্টা করলাম।
কিন্তু তার ফলেই হোক আর যে কোনও কারণেই হোক, লয় কিছুটা বেড়ে যাওয়ার পরে আর বেশীক্ষণ কসরৎ দেখাতে হল না ওস্তাদজীকে। একটু যেন হঠাৎই গানের আসর শেষ হয়ে গেল।
বুকুনের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, ‘তোর হল?’
‘মমমম আগেই হয়েছে আমার!’
‘ওহ বুঝি নি তো!!’
‘আর বুঝে কাজ নেই। বৃষ্টি ধরে আসছে বোধহয়। ঠিক হতে দে।‘
পরিষ্কার হওয়ার জন্য জলের অভাব নেই। গাছের আড়াল থেকে ওই অবস্থাতেই সামান্য হাতটা বাড়াতেই আঁজলা ভরে জল নিয়ে প্রথমে নিজে, তারপরে বুকুনকে একটু পরিষ্কার করে দিলাম।
ও বলছিল বটে, ‘ধ্যাত, তোকে করতে হবে না। নিজেই ধুয়ে নিচ্ছি।‘
কিন্তু আমি আঁজলা ভরা জল দিয়ে ওকে পরিষ্কার করে দেওয়ার সময়ে বাধাও দেয় নি।
তারপর আর শুকনো হওয়ার দরকার ছিল না। কারণ আবারও তো বৃষ্টিতে ভিজতেই হবে আমাদের।
তবে পোষাকআশাক একটু সভ্য-ভদ্র করে নিলাম দুজনেই – যদিও আমাদের জামাকাপড় দেখার জন্য রাস্তায় এই ভোর চারটের সময়ে বৃষ্টির মধ্যে অন্ধকারে কেউই দাঁড়িয়ে থাকবে না!! তবুও!!
একটা সিগারেট ধরালাম।
বুকুন বলল, ‘আমাকেও একটা দে তো। খাব।‘
‘অ্যাঁ?’
‘দে না। কয়েকবার খেয়েছি আমি।‘
ভেজা প্যাকেট থেকে সিগারেট বার করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। বলল, ‘ধরিয়ে দে। ওটা পারি না, কাশি হয়ে যায় খুব।‘
আমার মুখের সিগারেটটা বার করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম।
‘ইশ তোর খাওয়াটা দিচ্ছিস!! যাক কী আর হবে, তোর মুখের ভেতরটাই তো খেলাম এক্ষুনি!!’ সিগারেটটা দুই আঙ্গুলে চেপে ধরে হাসতে হাসতে বলল বুকুন।
আমি সদ্য বার করা অন্য সিগারেটটা ধরিয়ে নিলাম।
দুজনে তখনও গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে।
বৃষ্টি কমার লক্ষণ নেই।
‘কী করবি রে! দুই বাড়িতেই তো চিন্তা করছে। ফোন করে দিবি একটা?’ বললাম আমি।
‘না। তাহলে আরও চিন্তা করবে। ভাববে কোথায় আটকিয়ে পড়েছি। তার থেকে মা, জেঠিমা জানে যখন তুই আছিস সাথে বেশী ভাববে না।‘
সিগারেটটা শেষ হয়ে গেল, বৃষ্টি শেষ হল না।
হঠাৎই বুকুন বলল, ‘চল ভিজেই যাই! যাবি?’
‘শীত শুরু হচ্ছে। ভিজলে জ্বরজারিতে পড়বি।‘
‘হুম তা ঠিক। জ্বর হলে বর হয়তো আমার সেবা করার জন্য বাড়িতে বসে থাকবে বন্ধুর বউ-শালীর সঙ্গে না শুয়ে!’
একটা বাকা হাসি দিল বুকুন।
আমি কথা না বাড়িয়ে ওর কাঁধে একটা হাত রেখে সামান্য চাপ দিলাম।
ও একটা হাত তুলে আমার হাতের ওপরে রাখল। তারপর বলল, ‘চল বেরই।‘
--