16-03-2019, 10:25 AM
-- ১০ --
টিকিট কেটে সাইকেলটা নিয়ে একটু হেঁটে এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে ভাবছিলাম বুকুনকে ফোন করে জানাব সিনেমা দেখার কথাটা।
তখনই বুক পকেটে রাখা মোবাইলটা কুর কুর করে বেজে উঠল। স্ক্রীণে সেই সেভ না করা, কিন্তু ভীষণ চেনা নম্বরটা।
কল রিসিভ বাটনটা টিপেই কানে দিয়ে বললাম, ‘বল’।
‘কোথায় তুই এখন?’ প্রশ্ন এল ওপার থেকে।
‘তোকেই ফোন করতে যাচ্ছিলাম এক্ষুণি। টাউনে এসেছি, নতুন যে হলটা হয়েছে মুভি ম্যাজিক বলে, সেখানে। ৩.৪৫ এ ব্যোমকেশের শো। তিনটে টিকিট কেটেছি। তুই মা আর কাকিমা আসবি,’ এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেললাম।
‘তোকে তো টিকিট কাটতে বলি নি রবিদা! আমি যাব না,’ কথাটা শেষ করেই ফোনটা কেটে দিল।
মনে মনে ভাবলাম, যাহ শালা। এখনও সেই ছোটবেলার মতো মান-অভিমান করে মেয়েটা!
তক্ষুনি আবারও কলব্যাক করা ঠিক হবে না। একটু সময় দিয়ে দেখি। এই ভেবে সাইকেলে চেপে বসলাম।
বাড়ি যাব। আড্ডা দেওয়ার মুড নেই এখন। আরেকবার স্নান করে খেয়ে দেয়ে ঘুম দেব একটা। গেলই না হয় কিছু টাকা জলে, কী আর করা যাবে!
তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে দেখে মা ব্যস্ত হয়ে জিগ্যেস করল, ‘কী রে, আড্ডা দিবি বলে বেরলি, এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি যে! শরীর খারাপ না কি?’
আমি বললাম, ‘না গো। গরম পড়েছে। টাউনে গিয়েছিলাম তো। তাই আর রোদে ঘুরতে ভাল লাগছে না। যাই হোক সিনেমার টিকিট কেটে এনেছি। তুমি আর না না করো না। কাকিমা আর বুকুনকে নিয়ে দেখে এস সিনেমাটা। ভাল লাগবে।‘
‘বললাম যে আমি যাব না সিনেমা দেখতে! কেন কাটতে গেলি!’
‘অত কথা আর বলতে ভাল লাগছে না। তুমি যাবে, ব্যস।‘
নিজের ঘরে চলে গেলাম। পোষাক পাল্টে পাখাটা চালিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। হাতে মোবাইলটা নিয়ে হোয়াটস্অ্যাপটা চেক করতে গিয়ে দেখলাম বুকুন ম্যাসেজ পাঠিয়েছে।
‘এত্তগুলো টাকা বেকার খরচ করলি। আমি যাব না সিনেমা দেখতে। মাকে রাজী করিয়েছি। ছেলে তো ব্যোমকেশের কথা শুনেই লাফাচ্ছে। ওরা দুজন যাক। সঙ্গে তুই বা জেঠিমা যাস।‘
লম্বা মেসেজের ছোট্ট উত্তর দিলাম, আমারও যে একটু অভিমান হয়েছে, সেটা বোঝানোর জন্য।
‘মাকে বলেছি যেতে। বাকি দুটো টিকিটের কী হবে, তুই ঠিক কর।‘
ও অনলাইন নেই। তাই তক্ষুনি মেসেজটা দেখতে পেল না।
আমি সিগারেটটা শেষ করে একটু চোখ বুজলাম।
মিনিট দশেক পরেই হবে বোধহয়, মোবাইলটা বাজল।
বুকুন ফোন করেছে আবার। মুডটা অফ ছিল। তাই ধরলাম না ওর ফোন।
মোবাইলটা বেজে বেজে বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটু পরে হোয়াটস্অ্যাপ খুলে দেখি ও মেসেজ করেছে ‘ওকে’ বলে।
মানে আমার মা, ওর মা আর ওর ছেলে সিনেমা দেখতে যাবে। মাকে বলতে হবে তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া করে নিতে।
‘আমরা দুই বুড়ি পারব যেতে? সঙ্গে আবার একটা বাচ্চা!’
‘চেনা রিকশা ঠিক করে দেব। ও-ই আবার নিয়ে আসবে। ঘুরে এস তোমরা।‘
খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে বুকুনকে ফোন করলাম।
‘বল’
‘মা যাবে। জেঠিমা আর তোর ছেলেকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসিস তিনটে নাগাদ। চেনা একটা রিকশা ঠিক করে দেব। সে-ই আবার ফিরিয়ে আনবে। দেরী করিস না।‘
‘পারবে মা আর জেঠিমা দুজনে? সঙ্গে আবার ছেলেটাও থাকবে!’
‘মনে হয় না অসুবিধা হবে। মা কে বুঝিয়ে দেব। আর এই সব হলের স্টাফরাও সাহায্য করে, অন্তত কলকাতায় তো করেই।‘
‘ঠিক আছে, তিনটে নাগাদ পৌঁছে যাব তোদের বাড়িতে। আচ্ছা, আমার বর কি তোকে আর ফোন করেছিল সন্ধ্যেবেলার ব্যাপারে?’
‘না তো!’
‘ও আচ্ছা।‘
‘কিছু বলেছে তোকে?’
‘সে তো খাওয়া দাওয়া করে বেরল বোধহয় কোথাও মদ খেতেই গেল।‘
‘ও। দুপুরেই মদ খেতে বেরিয়েছে?’
‘হুম। এই তো করে ছুটির দিনে!’
‘যাক। তুই কাকিমা আর ছেলেকে নিয়ে চলে আসিস।‘
‘হুম।‘
ফোন রেখে দিল বুকুন।
কয়েক ঘন্টা আগের রাগ-অভিমান টের পেলাম না ওর গলায়।
মা সময়মতোই তৈরী হয়ে গিয়েছিল। আমি পাড়ার মোড়ে গিয়ে একটা চেনা রিকশা ডেকে আনলাম। তাকে বলে বুঝিয়ে দিলাম যে কটার সময়ে ফেরত আনতে হবে। কোন জায়গায় দাঁড়াবে – সব। মাকেও সেসব বোঝাচ্ছিলাম, তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হল।
‘ওই বোধহয় এসে গেল ওরা,’ মা বলল।
দরজা খুলে দেখি ঠিকই, বুকুন মা আর ছেলেকে নিয়ে এসেছে।
কাকিমাকে দেখে আমার মা বলল, ‘কী যে সব করে এরা! এই বয়সে নিজেরা কি আর সিনেমা দেখতে যেতে পারি আমরা!’
বুকুনের ছেলেটা বেশ স্মার্ট।
‘তোমরা ভয় পাচ্ছ কেন বল তো দিদা! আমি জানি মাল্টিপ্লেক্সে কী করে যেতে হয়। কলকাতায় তো কত দেখি আমরা।‘
‘বাবা, খুব পাকা হয়ে গেছ তো তুমি দাদু। আমাদের তাহলে গাইড করো।‘
মা, কাকিমা আর বুকুনের ছেলেকে নিয়ে রিক্সাটা বেরিয়ে গেল।
বুকুন আমার দিকে সামান্য মাথাটা তুলে বলল, ‘রাগ করেছিস রবিদা?’
‘কেন? রাগ করার মতো কিছু করেছিস নাকি তুই?’
‘ওই যে বললাম সিনেমা দেখতে যাব না আমি!’
কথাটার জবাব না দিয়ে আমি জিগ্যেস করলাম, ‘তুই কি বাড়ি চলে যাবি? কেউ তো নেই। ভেতরে আয় গল্প করা যাবে।‘
বলে আমি ঘরে ঢুকলাম।
ও আমার পেছন পেছন ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করল।
নিজের ঘরে ঢুকে বললাম, ‘বোস’।
ও জবাব দিল, ‘চা খাবি? করব?’
বলে দরজার দিকে ঘুরতে যাচ্ছিল।
আমি ওর একটা হাত ধরে ফেললাম, ‘চা করতে হবে না এখন, পরে করিস।‘
‘হাতটা ছাড় রবিদা। যখন ধরার কথা ছিল, তখন আসিস নি। এখন হাত ধরতে হবে না।‘
বুকুন কথাগুলো বলল বটে, কিন্তু আমার হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নেওয়ার কোনও চেষ্টাই করল না ও।
এক পা কাছে এগিয়ে গিয়ে গলাটা নামিয়ে আমি বললাম, ‘গোটা ব্যাপারটা তো আমি জানতামই না! তুই তো কিছুই জানাস নি যে তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে। হঠাৎ করেই চুপ করে গিয়েছিলি তুই। তারপর মার কাছে জানতে পেরেছিলাম। ততদিনে তো অন্যের বউ!’
ওর হাতের তালুতে ধীরে ধীরে আঙুল বোলাচ্ছিলাম আমি।
এটা ছোটবেলায় প্রেম করার সময়ে ওকে উত্তেজিত করে তুলত মনে আছে।
ও একই জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বুকুনের চোখ দুটো বন্ধ, নীচের ঠোঁটটা দাঁত দিয়ে হাল্কা চেপে রাখা।
এবার বুকুনের অন্য হাতের কব্জিটা হাল্কা করে ধরে নিজের দিকে সামান্য টানলাম।
একটা লম্বা নিশ্বাস নিল ও।
চোখদুটো বন্ধ করে রেখেই প্রায় শোনা যাচ্ছে না, এমন গলায় বলল, ‘তোকে এত্তবছর পরেও খুব মিস করি রে রবিদা।‘
এই কথাটা শোনার আগে পর্যন্তও আমার একটা সংশয় ছিল যে আর এগনো ঠিক হবে কী না!
কিন্তু সেটা কেটে গেল ওর মিস করার কথায়। নিজের দিকে এক ঝটকায় টেনে নিলাম বুকুনকে।
একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে নিলাম দুজনেই, কারণ পরের বেশ কিছুটা সময় যে দুজনের কেউই দম নিতে পারব না, এটা দুজনেই জানি আমাদের বিবাহিত জীবনের এক্সপিরিয়েন্স থেকে।
---
- ১১ -
আমরা দুজনেই দুজনের চোখের দিকে পাতা না ফেলে তাকিয়ে রইলাম কয়েক মুহুর্ত। তারপর বুকুনই ওর মুখটা আমার মুখের দিকে এগিয়ে দিল ঠোঁটটা অল্প একটু ফাঁক করে দিয়ে। আমার মুখটা সামান্যই এগতে হল। ওর জিভের স্বাদ সেই যে ছোটবেলায় সরস্বতী পুজোর দিন পেয়েছিলাম হঠাৎ করে বিলের মাঠে, তারপরে আরও অনেকবার পেয়েছি।
প্রায় কুড়ি বছর পরে স্বাদটা একটুও বদলায় নি।
এর মধ্যে আমি অন্য দুজনের জিভের স্বাদ গ্রহণ করেছি অবশ্য – একজন তো আমার বউ পিয়ালী, তবে তারও আগে দিল্লিতে সহপাঠিনী গুরপ্রীতের।
বুকুনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরের মাসগুলোতে যে যখন আমি একরকম বিধ্বস্ত চেহারা নিয়ে এম বি এ ক্লাসে যেতাম, সেই সময়েই আমার দিকে নিজে থেকেই কিছুটা এগিয়ে এসেছিল গুরপ্রীত।
বুকুনের কথা, ওর হঠাৎ চলে যাওয়া, সব কিছুই গুরপ্রীতকে খুলে বলে মন কিছুটা হাল্কা করার চেষ্টা করেছিলাম। ধীরে ধীরে আমার অনেক গোপন কথাই জেনে গিয়েছিল গুরপ্রীত, আমিও ওর কথা জেনেছিলাম।
তারপর একদিন আমাকে নোটস শেয়ার করার জন্য ও নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। জানতাম না সেদিন ওর বাড়িতে আর কেউ ছিল না।
নোটস শেয়ার করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু আরও কিছু শেয়ার করার প্ল্যান আগে থেকে করে রেখেছিল গুরপ্রীত। ও জানত যে বাড়ি ফাঁকা থাকবে, সেই সুযোগেই আমাকে নিয়ে গিয়েছিল সেদিন।
সেদিনই প্রথম গুরপ্রীতের জিভের স্বাদ পেয়েছিলাম আমি, তারপর গোটা শরীরেরও।
সেদিনই আমি কুমারত্ব হারিয়েছিলাম, যেটা হারানো চেষ্টা করেছিলাম একবার কলেজ ছুটির সময়ে বাড়িতে, নিজের ঘরে, বুকুনের কাছে।
সে আর হল কই!
গুরপ্রীতের সঙ্গে সম্পর্কটা ধীরে ধীরে শরীরিই হয়ে গিয়েছিল। ও সেটাই চাইছিল হয়তো। তবে উজার করে শরীরি ভালবাসার শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিল আমাকে ওই বছর দেড়েকে।
পাশ করার পরেই কানাডায় ওর কাকা জেঠাদের কাছে চলে গিয়েছিল গুরপ্রীত। আর যোগাযোগ হয় নি।
তারপরে ফুলশয্যার রাতে আমার গ্রামের বাড়ির এই ঘরেই আমি তৃতীয় নারীর স্বাদ পেয়েছিলাম।
গুরপ্রীতের শেখানো আদবকায়দা ব্যবহার করেছিলাম পিয়ালীর ওপরে। ওর আগে কোনও এক্সপিরিয়েন্স ছিল না, তাই আমার গুরু মারা বিদ্যে, অর্থাৎ গুরপ্রীতের শেখানো ভালবাসার কায়দা কানুন দেখে কুপোকাৎ হয়ে গিয়েছিল পিয়ালী।
ও হয়তো ভেবেছিল আমি গ্রামের ছেলে, এসব ব্যাপারে আমি আর কী জানব!
তারপর থেকে বিছানায় আমিই রাজা!
এতগুলো বছর পরে বুকুনের জিভের স্বাদ নিতে গিয়ে হঠাৎই পুরণো কথাগুলো মনে পড়ল।
এদিকে বুকুন আমার হাত থেকে নিজের হাতদুটো ছাড়িয়ে নিয়ে আমার মাথার পেছন দিকটা চেপে ধরেছিল চুলগুলো মুঠো করে। আমার হাত ওকে যেন কিছুটা সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ওর পিঠে, শিরদাঁড়ায় ঘুরছিল। কখনও কোমরের কাছে চেপে ধরছিলাম, কখনও আর একটু নীচে মাংসল অংশটায়। ওর গলা দিয়ে ‘মম.. মম’ করে একটা গোঙানির আওয়াজ বেরচ্ছিল। আমাকে আরও আঁকড়ে ধরছিল আমার প্রথম প্রেম বুকুন।
দুজনে কতক্ষণ যে ওইভাবে ছিলাম, তা জানি না, কিন্তু ওইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই ব্যালান্স হারিয়ে ধপাস করে আমি বিছানায় পড়লাম, বুকুন আমার ওপরে।
তখনই আমাদের মুখের মাঝে একটুখানি ফাঁক হল – এতক্ষণ পরে।
আমার ওপরে শুয়ে, চুলগুলো মুঠি করে ধরে ঠোঁটের কোনে একটু হাসি এনে ফিস ফিস করে বুকুন বলল, ‘এত ভাল চুমু খেতে শিখলি কার কাছে রে?’
কথার জবাব না দিয়ে ওর মাথাটা আমার দিকে টেনে আনলাম আমি। তারপর ও-ই দায়িত্ব নিয়ে নিল সবকিছুর।
আমাদের দুজনের বুক একে অন্যকে পিষছে, বুকুনের কোমর আমার কোমরকে। ওকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম একটু পিঠে, কোমরে হাত বুলিয়ে দিয়ে, কখনও বা আরও একটু নীচে। কিন্তু তাতে ও শান্ত তো হলই না, উল্টে আরও পাগলামি শুরু করে দিল।
একটা সময়ে আমাদের দুজনের গা থেকেই একে একে জামাকাপড়গুলো গা-ছাড়া হতে শুরু করল।
পেটিকোটের ফিতেটা যখন আমি অভ্যস্ত হাতে খুলে দিলাম একটানেই, তখন বুকুন হাসতে হাসতে বল, ‘মনে আছে বিলের মাঠে একবার আমার সালোয়ারে ফিতে খুলতে গিয়ে জট পাকিয়ে কী কান্ড করেছিলি!’
‘তারপরে এতবছর প্র্যাক্টিস করেছি না!’ আমিও হেসে জবাব দিলাম।
তার পরের মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমরা আদম আর ইভের পোষাকে!
বেশ কিছুটা সময় নিয়ে আমরা দুজনে দুজনের নিরাভরণ শরীরদুটো পরখ করলাম। দেখা শেষ হয়ে গেলে স্বাদ নিতে শুরু করলাম শরীরের নানা জায়গার।
কখনও আমি ওপরে, কখনও বুকুন, কখনও ৬৯।
অষ্টমীর সেই বিকেলে বুকুন যেন পাগল হয়ে গিয়েছিল। আমিও যে হই নি, তা নয়। কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছিল, ততই বুকুনের পাগলামিটা বাড়ছিল।
আমার মনে হচ্ছিল যে ওর ওই পাগলের মতো আদর করায় একটু বাধ না সাধলে এবারও হয়তো আমরা আসল বাধাটা পেরতে পারব না – যে বাধাট প্রায় ২২ বছর আগে এই ঘরেই একবার পেরনোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলাম। যদিও সেদিন আমারই দোষ ছিল – বাইরেই নিসৃত হয়েছিলাম।
এবার তাই আর সেটা যাতে না হয়, তারজন্য আমার কোমরের কাছে বসে মুখ ভরিয়ে নিয়ে বসে থাকা বুকুনের কাঁধদুটো ধরে টেনে আনলাম।
‘সোনা এবার আয়। শুয়ে পড়। আর পারছি না। আবার সেই দিনের মতো বাইরেই বেরিয়ে যাবে।‘
ও সাড়া দিল মুহুর্তে।
পা দুটো এমনভাবে ভাঁজ করে ছাদের দিকে তুলে দিয়েছিল, যেন V চিহ্ন দেখাচ্ছে – জয় করতে পেরেছে অবশেষে – ‘এত্ত বছর’ পরে!
আমি প্রবেশ করার পরে ওর বুকের দুপাশে জেগে থাকা দুই পাহাড়ের শিখরে, কখনও দুই পাহাড়ের মাঝের উপত্যকায় মুখ ডুবিয়ে দিচ্ছিলাম, কখনও আবার গাঢ় খয়েরী পর্বতশিখরে আমার দুটো আঙুল চেপে দিচ্ছিলাম।
কোমর দোলানোতে কোনও ছন্দপতন তো হয়ই নি, উল্টে মাঝে মাঝে ছন্দ পাল্টাচ্ছিল। কখনও খুব দ্রুত লয়ে, কখনও আলাপের ভঙ্গিতে – ধীরে ধীরে।
বুকুন এরই মাঝে একবার ভীষণভাবে আমার হাতের বাজুদুটো খামচে ধরেছিল। ওর কোমরটা বিছানা থেকে একটু উঠে গিয়েছিল। ওর শরীরটা বেঁকেচুড়ে গিয়েছিল, চোখ প্রায় বন্ধ! মুখ দিয়ে একটা অস্বাভাবিক গোঙানির আওয়াজ।
এ আওয়াজ আর ভঙ্গি আমার চেনা, রমনের সময়ে ঠিক কখন শয্যাসঙ্গিনীর এ অবস্থা হয়, আমার যেমন জানা, বুকুনেরও নিশ্চই জানা আছে!
তখন আমার কোমর দোলানোর ছন্দ আর এক্সপ্রেস বা মেল ট্রেন নয়, একেবারে মালগাড়ির ধীর গতিতে চলছিল।
বুকুন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আবারও যখন আমার সঙ্গে তাল মেলাচ্ছিল, তার বেশ খানিকক্ষণ পরে যখন মনে হয়েছিল যে সময় ঘনিয়ে আসছে।
প্রোটেকশন ছিল না কোনও – স্বাভাবিকভাবেই। কেউই তো এটা আগে থেকে ভাবি নি! নাহলে আজ টাউনে গেলাম, কন্ডোমের একটা প্যাকেট কিনে আনতেই পারতাম!
শেষ যখন ঘনিয়ে আসছে, তখন ওর চোখের দিকে ইশারায় জানতে চেয়েছিলাম কী করব, কোনও প্রোটেকশান নেই যে!
ও চোখের ইশারাতেই জানিয়েছিল, ভয় নেই, ভেতরে ফেলতেই পারি।
ওর কথাই রেখেছিলাম সেদিন।
একটু পরে প্রায় বেদম হয়ে যখন আমরা দুজনেই হাপাতে হাপাতে বিছানায় চিৎপাত, তখন ও-ই বলেছিল যে নিয়মিত পিল খায় ও। তাই ভয়ের কিছু নেই।
‘উফ... এত্তগুলো বছর পরে, শেষমেশ হল বল রবি দা!’
আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে জড়িয়ে ধরেছিলাম।
‘আমার এই প্রথম অর্গ্যাজম হল। কখনও আগে হয় নি এরকম!’ আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল বুকুন।
‘মানে?’ ওর দিকে কাৎ হয়ে শুয়ে জিগ্যেস করেছিলাম।
‘বলব তোকে একদিন। আজ থাক।‘
আরও কিছুক্ষণ পরে জামাকাপড় পরে পরিষ্কার হতে গিয়েছিলাম বাথরুমে। বুকুন ফ্রেশ হয়ে এসে চা করে এনেছিল আমাদের দুজনের জন্য।
ঘড়ি দেখছিলাম আমরা – ওদের সিনেমা প্রায় শেষ হতে চলল।
চা খেয়ে বুকুন চলে গিয়েছিল সেদিন।
যাওয়ার আগে গালে আলতো একটা চুমু।
টিকিট কেটে সাইকেলটা নিয়ে একটু হেঁটে এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে ভাবছিলাম বুকুনকে ফোন করে জানাব সিনেমা দেখার কথাটা।
তখনই বুক পকেটে রাখা মোবাইলটা কুর কুর করে বেজে উঠল। স্ক্রীণে সেই সেভ না করা, কিন্তু ভীষণ চেনা নম্বরটা।
কল রিসিভ বাটনটা টিপেই কানে দিয়ে বললাম, ‘বল’।
‘কোথায় তুই এখন?’ প্রশ্ন এল ওপার থেকে।
‘তোকেই ফোন করতে যাচ্ছিলাম এক্ষুণি। টাউনে এসেছি, নতুন যে হলটা হয়েছে মুভি ম্যাজিক বলে, সেখানে। ৩.৪৫ এ ব্যোমকেশের শো। তিনটে টিকিট কেটেছি। তুই মা আর কাকিমা আসবি,’ এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেললাম।
‘তোকে তো টিকিট কাটতে বলি নি রবিদা! আমি যাব না,’ কথাটা শেষ করেই ফোনটা কেটে দিল।
মনে মনে ভাবলাম, যাহ শালা। এখনও সেই ছোটবেলার মতো মান-অভিমান করে মেয়েটা!
তক্ষুনি আবারও কলব্যাক করা ঠিক হবে না। একটু সময় দিয়ে দেখি। এই ভেবে সাইকেলে চেপে বসলাম।
বাড়ি যাব। আড্ডা দেওয়ার মুড নেই এখন। আরেকবার স্নান করে খেয়ে দেয়ে ঘুম দেব একটা। গেলই না হয় কিছু টাকা জলে, কী আর করা যাবে!
তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে দেখে মা ব্যস্ত হয়ে জিগ্যেস করল, ‘কী রে, আড্ডা দিবি বলে বেরলি, এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি যে! শরীর খারাপ না কি?’
আমি বললাম, ‘না গো। গরম পড়েছে। টাউনে গিয়েছিলাম তো। তাই আর রোদে ঘুরতে ভাল লাগছে না। যাই হোক সিনেমার টিকিট কেটে এনেছি। তুমি আর না না করো না। কাকিমা আর বুকুনকে নিয়ে দেখে এস সিনেমাটা। ভাল লাগবে।‘
‘বললাম যে আমি যাব না সিনেমা দেখতে! কেন কাটতে গেলি!’
‘অত কথা আর বলতে ভাল লাগছে না। তুমি যাবে, ব্যস।‘
নিজের ঘরে চলে গেলাম। পোষাক পাল্টে পাখাটা চালিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। হাতে মোবাইলটা নিয়ে হোয়াটস্অ্যাপটা চেক করতে গিয়ে দেখলাম বুকুন ম্যাসেজ পাঠিয়েছে।
‘এত্তগুলো টাকা বেকার খরচ করলি। আমি যাব না সিনেমা দেখতে। মাকে রাজী করিয়েছি। ছেলে তো ব্যোমকেশের কথা শুনেই লাফাচ্ছে। ওরা দুজন যাক। সঙ্গে তুই বা জেঠিমা যাস।‘
লম্বা মেসেজের ছোট্ট উত্তর দিলাম, আমারও যে একটু অভিমান হয়েছে, সেটা বোঝানোর জন্য।
‘মাকে বলেছি যেতে। বাকি দুটো টিকিটের কী হবে, তুই ঠিক কর।‘
ও অনলাইন নেই। তাই তক্ষুনি মেসেজটা দেখতে পেল না।
আমি সিগারেটটা শেষ করে একটু চোখ বুজলাম।
মিনিট দশেক পরেই হবে বোধহয়, মোবাইলটা বাজল।
বুকুন ফোন করেছে আবার। মুডটা অফ ছিল। তাই ধরলাম না ওর ফোন।
মোবাইলটা বেজে বেজে বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটু পরে হোয়াটস্অ্যাপ খুলে দেখি ও মেসেজ করেছে ‘ওকে’ বলে।
মানে আমার মা, ওর মা আর ওর ছেলে সিনেমা দেখতে যাবে। মাকে বলতে হবে তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া করে নিতে।
‘আমরা দুই বুড়ি পারব যেতে? সঙ্গে আবার একটা বাচ্চা!’
‘চেনা রিকশা ঠিক করে দেব। ও-ই আবার নিয়ে আসবে। ঘুরে এস তোমরা।‘
খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে বুকুনকে ফোন করলাম।
‘বল’
‘মা যাবে। জেঠিমা আর তোর ছেলেকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসিস তিনটে নাগাদ। চেনা একটা রিকশা ঠিক করে দেব। সে-ই আবার ফিরিয়ে আনবে। দেরী করিস না।‘
‘পারবে মা আর জেঠিমা দুজনে? সঙ্গে আবার ছেলেটাও থাকবে!’
‘মনে হয় না অসুবিধা হবে। মা কে বুঝিয়ে দেব। আর এই সব হলের স্টাফরাও সাহায্য করে, অন্তত কলকাতায় তো করেই।‘
‘ঠিক আছে, তিনটে নাগাদ পৌঁছে যাব তোদের বাড়িতে। আচ্ছা, আমার বর কি তোকে আর ফোন করেছিল সন্ধ্যেবেলার ব্যাপারে?’
‘না তো!’
‘ও আচ্ছা।‘
‘কিছু বলেছে তোকে?’
‘সে তো খাওয়া দাওয়া করে বেরল বোধহয় কোথাও মদ খেতেই গেল।‘
‘ও। দুপুরেই মদ খেতে বেরিয়েছে?’
‘হুম। এই তো করে ছুটির দিনে!’
‘যাক। তুই কাকিমা আর ছেলেকে নিয়ে চলে আসিস।‘
‘হুম।‘
ফোন রেখে দিল বুকুন।
কয়েক ঘন্টা আগের রাগ-অভিমান টের পেলাম না ওর গলায়।
মা সময়মতোই তৈরী হয়ে গিয়েছিল। আমি পাড়ার মোড়ে গিয়ে একটা চেনা রিকশা ডেকে আনলাম। তাকে বলে বুঝিয়ে দিলাম যে কটার সময়ে ফেরত আনতে হবে। কোন জায়গায় দাঁড়াবে – সব। মাকেও সেসব বোঝাচ্ছিলাম, তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হল।
‘ওই বোধহয় এসে গেল ওরা,’ মা বলল।
দরজা খুলে দেখি ঠিকই, বুকুন মা আর ছেলেকে নিয়ে এসেছে।
কাকিমাকে দেখে আমার মা বলল, ‘কী যে সব করে এরা! এই বয়সে নিজেরা কি আর সিনেমা দেখতে যেতে পারি আমরা!’
বুকুনের ছেলেটা বেশ স্মার্ট।
‘তোমরা ভয় পাচ্ছ কেন বল তো দিদা! আমি জানি মাল্টিপ্লেক্সে কী করে যেতে হয়। কলকাতায় তো কত দেখি আমরা।‘
‘বাবা, খুব পাকা হয়ে গেছ তো তুমি দাদু। আমাদের তাহলে গাইড করো।‘
মা, কাকিমা আর বুকুনের ছেলেকে নিয়ে রিক্সাটা বেরিয়ে গেল।
বুকুন আমার দিকে সামান্য মাথাটা তুলে বলল, ‘রাগ করেছিস রবিদা?’
‘কেন? রাগ করার মতো কিছু করেছিস নাকি তুই?’
‘ওই যে বললাম সিনেমা দেখতে যাব না আমি!’
কথাটার জবাব না দিয়ে আমি জিগ্যেস করলাম, ‘তুই কি বাড়ি চলে যাবি? কেউ তো নেই। ভেতরে আয় গল্প করা যাবে।‘
বলে আমি ঘরে ঢুকলাম।
ও আমার পেছন পেছন ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করল।
নিজের ঘরে ঢুকে বললাম, ‘বোস’।
ও জবাব দিল, ‘চা খাবি? করব?’
বলে দরজার দিকে ঘুরতে যাচ্ছিল।
আমি ওর একটা হাত ধরে ফেললাম, ‘চা করতে হবে না এখন, পরে করিস।‘
‘হাতটা ছাড় রবিদা। যখন ধরার কথা ছিল, তখন আসিস নি। এখন হাত ধরতে হবে না।‘
বুকুন কথাগুলো বলল বটে, কিন্তু আমার হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নেওয়ার কোনও চেষ্টাই করল না ও।
এক পা কাছে এগিয়ে গিয়ে গলাটা নামিয়ে আমি বললাম, ‘গোটা ব্যাপারটা তো আমি জানতামই না! তুই তো কিছুই জানাস নি যে তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে। হঠাৎ করেই চুপ করে গিয়েছিলি তুই। তারপর মার কাছে জানতে পেরেছিলাম। ততদিনে তো অন্যের বউ!’
ওর হাতের তালুতে ধীরে ধীরে আঙুল বোলাচ্ছিলাম আমি।
এটা ছোটবেলায় প্রেম করার সময়ে ওকে উত্তেজিত করে তুলত মনে আছে।
ও একই জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বুকুনের চোখ দুটো বন্ধ, নীচের ঠোঁটটা দাঁত দিয়ে হাল্কা চেপে রাখা।
এবার বুকুনের অন্য হাতের কব্জিটা হাল্কা করে ধরে নিজের দিকে সামান্য টানলাম।
একটা লম্বা নিশ্বাস নিল ও।
চোখদুটো বন্ধ করে রেখেই প্রায় শোনা যাচ্ছে না, এমন গলায় বলল, ‘তোকে এত্তবছর পরেও খুব মিস করি রে রবিদা।‘
এই কথাটা শোনার আগে পর্যন্তও আমার একটা সংশয় ছিল যে আর এগনো ঠিক হবে কী না!
কিন্তু সেটা কেটে গেল ওর মিস করার কথায়। নিজের দিকে এক ঝটকায় টেনে নিলাম বুকুনকে।
একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে নিলাম দুজনেই, কারণ পরের বেশ কিছুটা সময় যে দুজনের কেউই দম নিতে পারব না, এটা দুজনেই জানি আমাদের বিবাহিত জীবনের এক্সপিরিয়েন্স থেকে।
---
- ১১ -
আমরা দুজনেই দুজনের চোখের দিকে পাতা না ফেলে তাকিয়ে রইলাম কয়েক মুহুর্ত। তারপর বুকুনই ওর মুখটা আমার মুখের দিকে এগিয়ে দিল ঠোঁটটা অল্প একটু ফাঁক করে দিয়ে। আমার মুখটা সামান্যই এগতে হল। ওর জিভের স্বাদ সেই যে ছোটবেলায় সরস্বতী পুজোর দিন পেয়েছিলাম হঠাৎ করে বিলের মাঠে, তারপরে আরও অনেকবার পেয়েছি।
প্রায় কুড়ি বছর পরে স্বাদটা একটুও বদলায় নি।
এর মধ্যে আমি অন্য দুজনের জিভের স্বাদ গ্রহণ করেছি অবশ্য – একজন তো আমার বউ পিয়ালী, তবে তারও আগে দিল্লিতে সহপাঠিনী গুরপ্রীতের।
বুকুনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরের মাসগুলোতে যে যখন আমি একরকম বিধ্বস্ত চেহারা নিয়ে এম বি এ ক্লাসে যেতাম, সেই সময়েই আমার দিকে নিজে থেকেই কিছুটা এগিয়ে এসেছিল গুরপ্রীত।
বুকুনের কথা, ওর হঠাৎ চলে যাওয়া, সব কিছুই গুরপ্রীতকে খুলে বলে মন কিছুটা হাল্কা করার চেষ্টা করেছিলাম। ধীরে ধীরে আমার অনেক গোপন কথাই জেনে গিয়েছিল গুরপ্রীত, আমিও ওর কথা জেনেছিলাম।
তারপর একদিন আমাকে নোটস শেয়ার করার জন্য ও নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। জানতাম না সেদিন ওর বাড়িতে আর কেউ ছিল না।
নোটস শেয়ার করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু আরও কিছু শেয়ার করার প্ল্যান আগে থেকে করে রেখেছিল গুরপ্রীত। ও জানত যে বাড়ি ফাঁকা থাকবে, সেই সুযোগেই আমাকে নিয়ে গিয়েছিল সেদিন।
সেদিনই প্রথম গুরপ্রীতের জিভের স্বাদ পেয়েছিলাম আমি, তারপর গোটা শরীরেরও।
সেদিনই আমি কুমারত্ব হারিয়েছিলাম, যেটা হারানো চেষ্টা করেছিলাম একবার কলেজ ছুটির সময়ে বাড়িতে, নিজের ঘরে, বুকুনের কাছে।
সে আর হল কই!
গুরপ্রীতের সঙ্গে সম্পর্কটা ধীরে ধীরে শরীরিই হয়ে গিয়েছিল। ও সেটাই চাইছিল হয়তো। তবে উজার করে শরীরি ভালবাসার শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিল আমাকে ওই বছর দেড়েকে।
পাশ করার পরেই কানাডায় ওর কাকা জেঠাদের কাছে চলে গিয়েছিল গুরপ্রীত। আর যোগাযোগ হয় নি।
তারপরে ফুলশয্যার রাতে আমার গ্রামের বাড়ির এই ঘরেই আমি তৃতীয় নারীর স্বাদ পেয়েছিলাম।
গুরপ্রীতের শেখানো আদবকায়দা ব্যবহার করেছিলাম পিয়ালীর ওপরে। ওর আগে কোনও এক্সপিরিয়েন্স ছিল না, তাই আমার গুরু মারা বিদ্যে, অর্থাৎ গুরপ্রীতের শেখানো ভালবাসার কায়দা কানুন দেখে কুপোকাৎ হয়ে গিয়েছিল পিয়ালী।
ও হয়তো ভেবেছিল আমি গ্রামের ছেলে, এসব ব্যাপারে আমি আর কী জানব!
তারপর থেকে বিছানায় আমিই রাজা!
এতগুলো বছর পরে বুকুনের জিভের স্বাদ নিতে গিয়ে হঠাৎই পুরণো কথাগুলো মনে পড়ল।
এদিকে বুকুন আমার হাত থেকে নিজের হাতদুটো ছাড়িয়ে নিয়ে আমার মাথার পেছন দিকটা চেপে ধরেছিল চুলগুলো মুঠো করে। আমার হাত ওকে যেন কিছুটা সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ওর পিঠে, শিরদাঁড়ায় ঘুরছিল। কখনও কোমরের কাছে চেপে ধরছিলাম, কখনও আর একটু নীচে মাংসল অংশটায়। ওর গলা দিয়ে ‘মম.. মম’ করে একটা গোঙানির আওয়াজ বেরচ্ছিল। আমাকে আরও আঁকড়ে ধরছিল আমার প্রথম প্রেম বুকুন।
দুজনে কতক্ষণ যে ওইভাবে ছিলাম, তা জানি না, কিন্তু ওইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই ব্যালান্স হারিয়ে ধপাস করে আমি বিছানায় পড়লাম, বুকুন আমার ওপরে।
তখনই আমাদের মুখের মাঝে একটুখানি ফাঁক হল – এতক্ষণ পরে।
আমার ওপরে শুয়ে, চুলগুলো মুঠি করে ধরে ঠোঁটের কোনে একটু হাসি এনে ফিস ফিস করে বুকুন বলল, ‘এত ভাল চুমু খেতে শিখলি কার কাছে রে?’
কথার জবাব না দিয়ে ওর মাথাটা আমার দিকে টেনে আনলাম আমি। তারপর ও-ই দায়িত্ব নিয়ে নিল সবকিছুর।
আমাদের দুজনের বুক একে অন্যকে পিষছে, বুকুনের কোমর আমার কোমরকে। ওকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম একটু পিঠে, কোমরে হাত বুলিয়ে দিয়ে, কখনও বা আরও একটু নীচে। কিন্তু তাতে ও শান্ত তো হলই না, উল্টে আরও পাগলামি শুরু করে দিল।
একটা সময়ে আমাদের দুজনের গা থেকেই একে একে জামাকাপড়গুলো গা-ছাড়া হতে শুরু করল।
পেটিকোটের ফিতেটা যখন আমি অভ্যস্ত হাতে খুলে দিলাম একটানেই, তখন বুকুন হাসতে হাসতে বল, ‘মনে আছে বিলের মাঠে একবার আমার সালোয়ারে ফিতে খুলতে গিয়ে জট পাকিয়ে কী কান্ড করেছিলি!’
‘তারপরে এতবছর প্র্যাক্টিস করেছি না!’ আমিও হেসে জবাব দিলাম।
তার পরের মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমরা আদম আর ইভের পোষাকে!
বেশ কিছুটা সময় নিয়ে আমরা দুজনে দুজনের নিরাভরণ শরীরদুটো পরখ করলাম। দেখা শেষ হয়ে গেলে স্বাদ নিতে শুরু করলাম শরীরের নানা জায়গার।
কখনও আমি ওপরে, কখনও বুকুন, কখনও ৬৯।
অষ্টমীর সেই বিকেলে বুকুন যেন পাগল হয়ে গিয়েছিল। আমিও যে হই নি, তা নয়। কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছিল, ততই বুকুনের পাগলামিটা বাড়ছিল।
আমার মনে হচ্ছিল যে ওর ওই পাগলের মতো আদর করায় একটু বাধ না সাধলে এবারও হয়তো আমরা আসল বাধাটা পেরতে পারব না – যে বাধাট প্রায় ২২ বছর আগে এই ঘরেই একবার পেরনোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলাম। যদিও সেদিন আমারই দোষ ছিল – বাইরেই নিসৃত হয়েছিলাম।
এবার তাই আর সেটা যাতে না হয়, তারজন্য আমার কোমরের কাছে বসে মুখ ভরিয়ে নিয়ে বসে থাকা বুকুনের কাঁধদুটো ধরে টেনে আনলাম।
‘সোনা এবার আয়। শুয়ে পড়। আর পারছি না। আবার সেই দিনের মতো বাইরেই বেরিয়ে যাবে।‘
ও সাড়া দিল মুহুর্তে।
পা দুটো এমনভাবে ভাঁজ করে ছাদের দিকে তুলে দিয়েছিল, যেন V চিহ্ন দেখাচ্ছে – জয় করতে পেরেছে অবশেষে – ‘এত্ত বছর’ পরে!
আমি প্রবেশ করার পরে ওর বুকের দুপাশে জেগে থাকা দুই পাহাড়ের শিখরে, কখনও দুই পাহাড়ের মাঝের উপত্যকায় মুখ ডুবিয়ে দিচ্ছিলাম, কখনও আবার গাঢ় খয়েরী পর্বতশিখরে আমার দুটো আঙুল চেপে দিচ্ছিলাম।
কোমর দোলানোতে কোনও ছন্দপতন তো হয়ই নি, উল্টে মাঝে মাঝে ছন্দ পাল্টাচ্ছিল। কখনও খুব দ্রুত লয়ে, কখনও আলাপের ভঙ্গিতে – ধীরে ধীরে।
বুকুন এরই মাঝে একবার ভীষণভাবে আমার হাতের বাজুদুটো খামচে ধরেছিল। ওর কোমরটা বিছানা থেকে একটু উঠে গিয়েছিল। ওর শরীরটা বেঁকেচুড়ে গিয়েছিল, চোখ প্রায় বন্ধ! মুখ দিয়ে একটা অস্বাভাবিক গোঙানির আওয়াজ।
এ আওয়াজ আর ভঙ্গি আমার চেনা, রমনের সময়ে ঠিক কখন শয্যাসঙ্গিনীর এ অবস্থা হয়, আমার যেমন জানা, বুকুনেরও নিশ্চই জানা আছে!
তখন আমার কোমর দোলানোর ছন্দ আর এক্সপ্রেস বা মেল ট্রেন নয়, একেবারে মালগাড়ির ধীর গতিতে চলছিল।
বুকুন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আবারও যখন আমার সঙ্গে তাল মেলাচ্ছিল, তার বেশ খানিকক্ষণ পরে যখন মনে হয়েছিল যে সময় ঘনিয়ে আসছে।
প্রোটেকশন ছিল না কোনও – স্বাভাবিকভাবেই। কেউই তো এটা আগে থেকে ভাবি নি! নাহলে আজ টাউনে গেলাম, কন্ডোমের একটা প্যাকেট কিনে আনতেই পারতাম!
শেষ যখন ঘনিয়ে আসছে, তখন ওর চোখের দিকে ইশারায় জানতে চেয়েছিলাম কী করব, কোনও প্রোটেকশান নেই যে!
ও চোখের ইশারাতেই জানিয়েছিল, ভয় নেই, ভেতরে ফেলতেই পারি।
ওর কথাই রেখেছিলাম সেদিন।
একটু পরে প্রায় বেদম হয়ে যখন আমরা দুজনেই হাপাতে হাপাতে বিছানায় চিৎপাত, তখন ও-ই বলেছিল যে নিয়মিত পিল খায় ও। তাই ভয়ের কিছু নেই।
‘উফ... এত্তগুলো বছর পরে, শেষমেশ হল বল রবি দা!’
আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে জড়িয়ে ধরেছিলাম।
‘আমার এই প্রথম অর্গ্যাজম হল। কখনও আগে হয় নি এরকম!’ আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল বুকুন।
‘মানে?’ ওর দিকে কাৎ হয়ে শুয়ে জিগ্যেস করেছিলাম।
‘বলব তোকে একদিন। আজ থাক।‘
আরও কিছুক্ষণ পরে জামাকাপড় পরে পরিষ্কার হতে গিয়েছিলাম বাথরুমে। বুকুন ফ্রেশ হয়ে এসে চা করে এনেছিল আমাদের দুজনের জন্য।
ঘড়ি দেখছিলাম আমরা – ওদের সিনেমা প্রায় শেষ হতে চলল।
চা খেয়ে বুকুন চলে গিয়েছিল সেদিন।
যাওয়ার আগে গালে আলতো একটা চুমু।