03-11-2020, 03:44 PM
#অন্য_রূপকথা
সন্ধ্যা পেরিয়ে ঘড়ির কাঁটা ছুঁয়ে গেছিল আটটার ঘর। আজ একটু দেরিই হয়ে যাচ্ছিল বাড়ি ফিরতে। তাই, এপাং ওপাং ঝপাং কায়দায় হনহন করে পা চালিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। ঠিক এক্সাইড বিল্ডিংটার সামনে দিয়ে।
কিন্তু, এই 'নিউ নর্ম্যাল' দিনে যতই আগের তুলনায় ভিড় কম হোক না কেন, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন, একেবারে ঠেলাঠেলি না হলেও, ভিড় ছিল যথেষ্ট। তার মধ্যেও যতটা সম্ভব দূরত্ববিধি বজায় রেখে এগোচ্ছি, পথ আটকে দাঁড়াল একটি ছোট্ট ছেলে। শনের মতো শক্ত, ঝাঁকরা চুল, একটা হলুদ গেঞ্জি পরা, বুকের কাছে ইয়াব্বড় একটা ফুটো! কাঁধে ক'টা বেলুন -হলুদ রঙের, তাতে খুশি খুশি মুখ চোখ আঁকা!
এই রে! বেলুন নিয়ে শাটল গাড়িতে উঠব কি করে! সেকথা ভাবতে ভাবতেই দেখি, বাচ্চাটা একটু কিন্তু কিন্তু করে বলে উঠল "আমাকে একটু মোমো খাওয়াবে?"
আমি সাধারণত ভিক্ষা দিই না, বেশিরভাগ সময়েই খেয়ে নিতে বলি। নিদেন বিস্কুটের প্যাকেট দিয়ে দিই। কিন্তু ছেলেটির বলার মধ্যে কিছু যেন একটা ছিল। তাই "চল" বলে গেলাম মোমোর স্টলের কাছে। মোমো পেয়ে তার কী হাসি! দুই হাতে কাগজের প্লেট আর সুপের বাটি সামলাবার কী প্রাণান্তকর প্রয়াস!
পয়সা মিটিয়ে পা চালাতে যাব, দেখি পাশে দাঁড়িয়ে আছে বাচ্চাটা তখনও।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবলাম আরও সাঙ্গোপাঙ্গোর জন্য কিনে দিতে বলবে বোধহয়! তাই একটু গম্ভীর হয়ে বললাম, "আমার কাছে কিন্তু আর কেনার মতো টাকা নেই!"
ছেলেটা আমার দিকে তাকাল। তারপর, আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে বলে "আমার থেকে একটা নেবে?"
না, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারি নি!
আমাকে বাচ্চাটা খাবার নিতে বলল ওর থেকে? আমি একবার কনফার্ম হবার জন্যই জিজ্ঞেস করলাম "কি...কি বললি?"
ছেলেটা একটু হেসে বলল "তোমার কাছে টাকা নেই বললে...আমার থেকে নেবে মোমো?"
একটু তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে।
আমার শিশু ভোলানাথ।
কী অবলীলায় আমার মিথ্যে মিথ্যে "টাকা নেই" কে সত্যি ভেবে আমার সাথে ওর পরম লোভনীয় খাদ্য ভাগ করে নিতে চেয়েছে...!
আর আমরা... তথাকথিত সুপ্রতিষ্ঠিত ভদ্রমানুষেরা...পারি? এমনি অকপট আর মন ছোঁয়া হতে?
কেন যে পারি না!
জল জল চোখে গাল টা ধরলাম বাচ্চাটার...রুক্ষ চুলে একটু হাত বুলিয়ে দিলাম....
নিজেকে বড্ড পবিত্র লাগছে আজ....
(সঙ্গের ছবিটি মোবাইলে তোলা, নিতান্ত আকস্মিক ভাবে...কখন যে আঙুল পড়ে গেছিল, কে জানে!
এখন আফশোষ হচ্ছে... যদি একটা ভালো ছবি তুলতে পারতাম... ছোট্ট বীজটার...যে হয়ত একদিন মহীরুহ হয়ে উঠবে..।)
সন্ধ্যা পেরিয়ে ঘড়ির কাঁটা ছুঁয়ে গেছিল আটটার ঘর। আজ একটু দেরিই হয়ে যাচ্ছিল বাড়ি ফিরতে। তাই, এপাং ওপাং ঝপাং কায়দায় হনহন করে পা চালিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। ঠিক এক্সাইড বিল্ডিংটার সামনে দিয়ে।
কিন্তু, এই 'নিউ নর্ম্যাল' দিনে যতই আগের তুলনায় ভিড় কম হোক না কেন, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন, একেবারে ঠেলাঠেলি না হলেও, ভিড় ছিল যথেষ্ট। তার মধ্যেও যতটা সম্ভব দূরত্ববিধি বজায় রেখে এগোচ্ছি, পথ আটকে দাঁড়াল একটি ছোট্ট ছেলে। শনের মতো শক্ত, ঝাঁকরা চুল, একটা হলুদ গেঞ্জি পরা, বুকের কাছে ইয়াব্বড় একটা ফুটো! কাঁধে ক'টা বেলুন -হলুদ রঙের, তাতে খুশি খুশি মুখ চোখ আঁকা!
এই রে! বেলুন নিয়ে শাটল গাড়িতে উঠব কি করে! সেকথা ভাবতে ভাবতেই দেখি, বাচ্চাটা একটু কিন্তু কিন্তু করে বলে উঠল "আমাকে একটু মোমো খাওয়াবে?"
আমি সাধারণত ভিক্ষা দিই না, বেশিরভাগ সময়েই খেয়ে নিতে বলি। নিদেন বিস্কুটের প্যাকেট দিয়ে দিই। কিন্তু ছেলেটির বলার মধ্যে কিছু যেন একটা ছিল। তাই "চল" বলে গেলাম মোমোর স্টলের কাছে। মোমো পেয়ে তার কী হাসি! দুই হাতে কাগজের প্লেট আর সুপের বাটি সামলাবার কী প্রাণান্তকর প্রয়াস!
পয়সা মিটিয়ে পা চালাতে যাব, দেখি পাশে দাঁড়িয়ে আছে বাচ্চাটা তখনও।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবলাম আরও সাঙ্গোপাঙ্গোর জন্য কিনে দিতে বলবে বোধহয়! তাই একটু গম্ভীর হয়ে বললাম, "আমার কাছে কিন্তু আর কেনার মতো টাকা নেই!"
ছেলেটা আমার দিকে তাকাল। তারপর, আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে বলে "আমার থেকে একটা নেবে?"
না, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারি নি!
আমাকে বাচ্চাটা খাবার নিতে বলল ওর থেকে? আমি একবার কনফার্ম হবার জন্যই জিজ্ঞেস করলাম "কি...কি বললি?"
ছেলেটা একটু হেসে বলল "তোমার কাছে টাকা নেই বললে...আমার থেকে নেবে মোমো?"
একটু তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে।
আমার শিশু ভোলানাথ।
কী অবলীলায় আমার মিথ্যে মিথ্যে "টাকা নেই" কে সত্যি ভেবে আমার সাথে ওর পরম লোভনীয় খাদ্য ভাগ করে নিতে চেয়েছে...!
আর আমরা... তথাকথিত সুপ্রতিষ্ঠিত ভদ্রমানুষেরা...পারি? এমনি অকপট আর মন ছোঁয়া হতে?
কেন যে পারি না!
জল জল চোখে গাল টা ধরলাম বাচ্চাটার...রুক্ষ চুলে একটু হাত বুলিয়ে দিলাম....
নিজেকে বড্ড পবিত্র লাগছে আজ....
(সঙ্গের ছবিটি মোবাইলে তোলা, নিতান্ত আকস্মিক ভাবে...কখন যে আঙুল পড়ে গেছিল, কে জানে!
এখন আফশোষ হচ্ছে... যদি একটা ভালো ছবি তুলতে পারতাম... ছোট্ট বীজটার...যে হয়ত একদিন মহীরুহ হয়ে উঠবে..।)