01-11-2020, 09:47 PM
৪৯ পর্ব
রায় পরিবারের বাজার করার জন্য লোক থাকলেও মনি আজ নিজেই বাজার করার সিন্ধাথ নিলো। বাজার সেরে অমিতের কাছে বাজারের প্যাকেট গুলা ধরিয়ে দিয়ে বললো তুই বাড়ি যা আমি অঞ্জলী কে নিয়ে বাসায় ঢুকবো। অগ্রত অমিত রিক্সা নিয়ে বাড়ির পথে চলে গেল। আর মনি শংকর গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলো উদ্দেশ্য আশ্রম। অঞ্জলী নিজের রুমে বসে Laptop কিছু কাজ করছিলো। এমন সময় দরজায় ঢোকা পড়াতে উঠে দেখে মনি শংকর এসেছে। আরে দাদা আপনি , আমাকে বলতেন আমি আপনার ওখানে চলে যেতাম। ভিতরে আসুন বসুন। বলেন কি খাবেন ? না না অঞ্জলী ব্যস্ত হবার কিছু নেই। আসলে একটা খুশির সংবাদ আছে তাই নিজেই চলে এলাম। তাই নাকি ? অঞ্জলী উৎসাতিত ভাবে বললো। তো কি খুশির সংবাদ ? ভগবান আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছে। ওহ বুঝে গেছি এ তো খুবই ভালো খবর। যদিও বিন্দু অঞ্জলী কে আগেই বলেছিলো,কিন্তু সেটা প্রকাশ করলো না। তো দাদা মিষ্টি খাওয়াতে হবে কিন্তু । হুম সেই জন্যই তো এলাম তুমি রেডি হয়ে নেও। আজ রাতে আমাদের বাসায় খাওয়া দাওয়া করবে। বিন্দু তোমাকে কল করতে চেয়েছিলো। আমিই মানা করেছি,তোমাকে নিজে নিয়ে যাবো বলে,মনি শংকর বললো। কিন্তু দাদা ! কোন কিন্তু না রেডি হয়ে নেও। আচ্ছা আপনাকে কফি দিয়। আপনি বসে কফি খান আমি ততোক্ষণে রেডি হয়ে নিচ্ছি। বলে রুম থেকে বের হতে গেল।
অঞ্জলী !! মনি শংকর ডাকলো। অঞ্জলী ফিরে তাকিয়ে বললো হা দাদা কিছু বলবেন ? হা মানে কফি আনতে হবেনা,তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে ! তো বেশ তো পরে বলেন অঞ্জলী বললো। মনি শংকর বসা থেকে উঠে বললো না অঞ্জলী এখনি বলতে চাই আমি। অঞ্জলী এগিয়ে এসে বললো হা বলুন। মনি শংকর অঞ্জলীর পায়ের সামনে হাটু মুড়ে বসে পরে ঝড়ঝড় করে কেঁদে ফেললো। অঞ্জলী একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল,এমনটা সে আশা করেনি। একি করছেন দাদা উঠে বসুন যা বলার বসে বলুন । না অঞ্জলী আমার এভাবেই বলায় উচিত। অঞ্জলী আর কথা বাড়ালো না। মনি শংকর কাঁদতে কাঁদতে বললো আমাকে ক্ষমা করে দিও অঞ্জলী, আমি আজ স্বীকার করছি আমি অমিতের অনেক ক্ষতি করতে চেয়েছিলাম। এমন কি একটা সময় ভেবে ছিলাম সোজা পথে না হবে ওকে আমি শেষ করে দিবো। আসলে আমার ব্যবসার অবস্তা ভাল নেই জোয়া খেলে আর মদ মেয়ে মানুষে সব শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া দু দিন আমি তোমার উপরেও আক্রমন করেছিলাম। তার জন্য আমি লজ্ঞিত। অমিতের সামনে এই কথা গুলা আমি কোন দিন বলতে পারবোনা। আর এক মাএ তুমিই কিছুটা জানো এসব তাই আমি আজ তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আর অমিত বা তোমাদের কারো ক্ষতি চাইনা। আর আমার পরিবর্তন এসব কিছু বিন্দুর জন্য হয়েছে। ওর ইচ্ছাতেই মা দুর্গা আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছে। তাই এই পবিএ দিনে তোমার কাছে সব স্বীকার করে ক্ষমা চাচ্ছি।
অঞ্জলী কিছুক্ষণ চুপ করে মনি শংকরের কথা শুনলো। বুঝতে পারছে মানুষটা ভিতরে ভিতরে অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো। আর অনুতপ্ত ও তাই আমার কাছে এসেছে। আচ্ছা দাদা যা হবার হয়ে গেছে। আসুন আমরা সব ভুলে যায়। এখন উঠুন আমি আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি। এমন খুশির দিনে কেউ কাঁদে। মনি শংকরও কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠে বসলো। তারপর অঞ্জলী রেডি হয়ে নিলে দুজনে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
মনি শংকরের বাড়িতে খুশির আমেজ অঞ্জলী দেখলো সবাই আছে। অমিতকে দেখতে পেলনা। বিন্দু অঞ্জলীর সন্ধানী চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে গেল। তাই অঞ্জলীর কাছে এসে আস্তে করে ঠ্যাস দিয়ে বললো ,যাও তোমার নাগর বিছানা সাজিয়ে বসে আছে নিজের ঘরে। ওহ বৌদি তুমিও না। অঞ্জলী লজ্জা পেয়ে ওখান থেকে পালালো। অঞ্জলী অমিতের রুমে ঢুকতেই অমিত দেখতে পেয়ে ছুটে এসে অঞ্জলীকে জড়িয়ে ধরলো। তুমি এভাবে আমাকে ঘরে আটকে রাখবে? নিজেও দেখা করতে আসোনা। আমিও বের হতে দেও না। অভিযোগের সুরে কথা গুলা বললো অমিত। অঞ্জলীর অবাক লাগে বিশ্বের নামকরা জ্বালানী বিজ্ঞানী অথচ তার কাছে যেন নিতন্ত একটা ছোট্ট শিশু। অঞ্জলী অমিতের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অমিতের কপালে একটা চুম্বন এেঁকে দিয়ে বললো ,আর কয়েকটা দিন সময় দাও রাজকুমার তোমার এই দাসী সর্বদা তোমার চরণে পরে থাকবে। এখন যায় না হলে বিন্দু বৌদি আবার পিছে লাগবে।
রাতে খাবার টেবিলে দেখা গেলো রান্নার পদের শেষ নেই। মঞ্জু বাদে সবাই খেতে বসেছে সে পরিবেশন করছে। বিন্দু আর মনি শংকর পাশা পাশি তারপাশে ম্যাগী, তারপর বন্যা, তারপাশে রোহীত। সবশেষে অঞ্জলী আর অমিত পাশাপাশি। খাওয়ার মাঝে বিন্দু কথা বলে উঠলো। রোহিতকে উদ্দেশ্য করে বললো রোহিতদা আমার একটা প্রস্তাব ছিলো। রোহিত খেতে খেতে বিন্দুর দিকে একবার তাকিয়ে বললো হা বলো। আচ্ছা দাদা আমি ভনিতা না করে সরাসরিই বলছি আমাদের ঠাকুরপো আর অঞ্জলীর ভিতর একটা কিছু চলছে সেই ঠাকুমার আমল থেকে। বিন্দুর কথা শুনে সবাই অঞ্জলী আর অমিতের দিকে তাকালো। ওরা দুজন মাথা নিচু করে খেয়ে চলেছে। বিন্দু আবার শুরু করলো ওদের দুজনের অবিবাহিত থাকার কারণ ও এইটা। যা তাড়া দুজনেই আমার কাছে স্বীকার করেছে বা আমি বুঝেছি। তাই আমি চাই আমরা সবাই মিলে এবার ওদের চার হাত এক করে দিয়। কথাটা শোনা মাএ অঞ্জলী ম্যাগীর দিকে তাকালো। কথাটা শুনে ম্যাগী খুশি হলো না কষ্ট পেল।তেমন কিছু বুঝতে পারলো না ম্যাগীর মুখ দেখে অঞ্জলী । কিন্তু কথাটা শোনা মাএ মনি শংকর বললো এতো খুব ভাল কথা,আমার আপত্তি নেই। বিন্দু বললো রোহিতদা !আপনার ? রোহিত একটু আমতা আমতা করে বললো কিন্তু,,তারপর বললো তোমারা সেটা ভালো মনে করো। রোহিতের মুখের ভাবটা অঞ্জলীর নজর এড়ালো না। বিন্দু আবার বলে উঠলো তো মঞ্জুদি তুমি কি বলো ? মঞ্জু মনে মনে বললো যাক শেষ পযন্ত আমার বোনটার একটা হিল্লে হলো। তারপর বললো এতে আমার আর কি আপত্তি থাকতে পারে। সবার কথা শুনে বন্যা লাফিয়ে উঠে বললো তাহলে অঞ্জলী মাসী কে আমি কি বলে ডাকবো ,কাকীমনি না মাসীমনি ! বিন্দু সহ সবাই হেঁসে উঠে বললো তোর যা ইচ্ছা হয় তাই বলিস। মোটামোটি সব ঠিক হলো। মনি শংকর বললো আচ্ছা এই ব্যাপারে আমি আর রোহিতদা মিলে পরে আলোচনা করে একটা দিন ঠিক করবো। সব শুনে অঞ্জলীর আর খাওয়া শেষ করা হলো না। একটু লজ্জা পেয়ে উঠে চলে গেল। যেন ও এখনো বিশ্বাস করতে পারছেনা যে তার বিদ্যোহী রাজকুমার তার হতে চলেছে।
সবার খাওয়া দাওয়া শেষ হলে সবাই যার যার কাজে ব্যাস্ত । অঞ্জলী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে । অঞ্জলী কে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অমিত এসে বললো তুমি খুশি হওনি ? অঞ্জলী অমিতের দিকে ফিরতেই অমিত দেখলো অঞ্জলীর চোখে জল । কি হলো কাঁদছো কেন ? তুমি খুশিনা ? অঞ্জলী হাউমাউ করে কেঁদে উঠে অমিতের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো , এই দিনটার অপেক্ষাতেই এতো বেঁচে ছিলাম এতো দিন রাজকুমার। এতো সুখের জল। এর মাঝে ম্যাগী চলে এলো । অঞ্জলী নিজেকে সামলে নিয়ে অমিতকে বললো তুমি একটু রুমে যাও,আমি আর ম্যাগী একটু কথা বলি। অমিত চলে যেতেই অঞ্জলী বললো তুমি খুশি হয়েছো ম্যাগী ? আমাকে বলো প্রয়োজন হলে আমি না হয়,,,,! অঞ্জলীর কথা শেষ হবার আগেই ম্যাগী তার হাত দিয়ে অঞ্জলীর মুখ চেপে ধরে বললো। আমি খুব খুশি হয়েছি। একটা সত্যিকারের ভালবাসা পরিনীতি পেতে চলেছে। আর সেটা দেখার সৌভাগ্য আমার হবে,এর থেকে খুশির খবর কি হতে পারে। অঞ্জলী বললো কিন্তু তুমি যে বলেছিলে তুমি অমিতকে চাও ? হুম সেটার তোমার কথা জানার আগে । আর জানার পরে বলেছিলাম একরাতের জন্য চাই। তারপর ম্যাগী ফিসফিস করে বললো,সমস্যা কি তিন জনে না হয় থ্রীসাম করবো বলে হেঁসে ফেললো। ম্যাগীর কথা শুনে অঞ্জলী ও হেঁসে বললো যাঃ তোমার শুধু ওই চিন্তা।
রায় পরিবারের বাজার করার জন্য লোক থাকলেও মনি আজ নিজেই বাজার করার সিন্ধাথ নিলো। বাজার সেরে অমিতের কাছে বাজারের প্যাকেট গুলা ধরিয়ে দিয়ে বললো তুই বাড়ি যা আমি অঞ্জলী কে নিয়ে বাসায় ঢুকবো। অগ্রত অমিত রিক্সা নিয়ে বাড়ির পথে চলে গেল। আর মনি শংকর গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলো উদ্দেশ্য আশ্রম। অঞ্জলী নিজের রুমে বসে Laptop কিছু কাজ করছিলো। এমন সময় দরজায় ঢোকা পড়াতে উঠে দেখে মনি শংকর এসেছে। আরে দাদা আপনি , আমাকে বলতেন আমি আপনার ওখানে চলে যেতাম। ভিতরে আসুন বসুন। বলেন কি খাবেন ? না না অঞ্জলী ব্যস্ত হবার কিছু নেই। আসলে একটা খুশির সংবাদ আছে তাই নিজেই চলে এলাম। তাই নাকি ? অঞ্জলী উৎসাতিত ভাবে বললো। তো কি খুশির সংবাদ ? ভগবান আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছে। ওহ বুঝে গেছি এ তো খুবই ভালো খবর। যদিও বিন্দু অঞ্জলী কে আগেই বলেছিলো,কিন্তু সেটা প্রকাশ করলো না। তো দাদা মিষ্টি খাওয়াতে হবে কিন্তু । হুম সেই জন্যই তো এলাম তুমি রেডি হয়ে নেও। আজ রাতে আমাদের বাসায় খাওয়া দাওয়া করবে। বিন্দু তোমাকে কল করতে চেয়েছিলো। আমিই মানা করেছি,তোমাকে নিজে নিয়ে যাবো বলে,মনি শংকর বললো। কিন্তু দাদা ! কোন কিন্তু না রেডি হয়ে নেও। আচ্ছা আপনাকে কফি দিয়। আপনি বসে কফি খান আমি ততোক্ষণে রেডি হয়ে নিচ্ছি। বলে রুম থেকে বের হতে গেল।
অঞ্জলী !! মনি শংকর ডাকলো। অঞ্জলী ফিরে তাকিয়ে বললো হা দাদা কিছু বলবেন ? হা মানে কফি আনতে হবেনা,তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে ! তো বেশ তো পরে বলেন অঞ্জলী বললো। মনি শংকর বসা থেকে উঠে বললো না অঞ্জলী এখনি বলতে চাই আমি। অঞ্জলী এগিয়ে এসে বললো হা বলুন। মনি শংকর অঞ্জলীর পায়ের সামনে হাটু মুড়ে বসে পরে ঝড়ঝড় করে কেঁদে ফেললো। অঞ্জলী একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল,এমনটা সে আশা করেনি। একি করছেন দাদা উঠে বসুন যা বলার বসে বলুন । না অঞ্জলী আমার এভাবেই বলায় উচিত। অঞ্জলী আর কথা বাড়ালো না। মনি শংকর কাঁদতে কাঁদতে বললো আমাকে ক্ষমা করে দিও অঞ্জলী, আমি আজ স্বীকার করছি আমি অমিতের অনেক ক্ষতি করতে চেয়েছিলাম। এমন কি একটা সময় ভেবে ছিলাম সোজা পথে না হবে ওকে আমি শেষ করে দিবো। আসলে আমার ব্যবসার অবস্তা ভাল নেই জোয়া খেলে আর মদ মেয়ে মানুষে সব শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া দু দিন আমি তোমার উপরেও আক্রমন করেছিলাম। তার জন্য আমি লজ্ঞিত। অমিতের সামনে এই কথা গুলা আমি কোন দিন বলতে পারবোনা। আর এক মাএ তুমিই কিছুটা জানো এসব তাই আমি আজ তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আর অমিত বা তোমাদের কারো ক্ষতি চাইনা। আর আমার পরিবর্তন এসব কিছু বিন্দুর জন্য হয়েছে। ওর ইচ্ছাতেই মা দুর্গা আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছে। তাই এই পবিএ দিনে তোমার কাছে সব স্বীকার করে ক্ষমা চাচ্ছি।
অঞ্জলী কিছুক্ষণ চুপ করে মনি শংকরের কথা শুনলো। বুঝতে পারছে মানুষটা ভিতরে ভিতরে অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো। আর অনুতপ্ত ও তাই আমার কাছে এসেছে। আচ্ছা দাদা যা হবার হয়ে গেছে। আসুন আমরা সব ভুলে যায়। এখন উঠুন আমি আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি। এমন খুশির দিনে কেউ কাঁদে। মনি শংকরও কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠে বসলো। তারপর অঞ্জলী রেডি হয়ে নিলে দুজনে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
মনি শংকরের বাড়িতে খুশির আমেজ অঞ্জলী দেখলো সবাই আছে। অমিতকে দেখতে পেলনা। বিন্দু অঞ্জলীর সন্ধানী চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে গেল। তাই অঞ্জলীর কাছে এসে আস্তে করে ঠ্যাস দিয়ে বললো ,যাও তোমার নাগর বিছানা সাজিয়ে বসে আছে নিজের ঘরে। ওহ বৌদি তুমিও না। অঞ্জলী লজ্জা পেয়ে ওখান থেকে পালালো। অঞ্জলী অমিতের রুমে ঢুকতেই অমিত দেখতে পেয়ে ছুটে এসে অঞ্জলীকে জড়িয়ে ধরলো। তুমি এভাবে আমাকে ঘরে আটকে রাখবে? নিজেও দেখা করতে আসোনা। আমিও বের হতে দেও না। অভিযোগের সুরে কথা গুলা বললো অমিত। অঞ্জলীর অবাক লাগে বিশ্বের নামকরা জ্বালানী বিজ্ঞানী অথচ তার কাছে যেন নিতন্ত একটা ছোট্ট শিশু। অঞ্জলী অমিতের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অমিতের কপালে একটা চুম্বন এেঁকে দিয়ে বললো ,আর কয়েকটা দিন সময় দাও রাজকুমার তোমার এই দাসী সর্বদা তোমার চরণে পরে থাকবে। এখন যায় না হলে বিন্দু বৌদি আবার পিছে লাগবে।
রাতে খাবার টেবিলে দেখা গেলো রান্নার পদের শেষ নেই। মঞ্জু বাদে সবাই খেতে বসেছে সে পরিবেশন করছে। বিন্দু আর মনি শংকর পাশা পাশি তারপাশে ম্যাগী, তারপর বন্যা, তারপাশে রোহীত। সবশেষে অঞ্জলী আর অমিত পাশাপাশি। খাওয়ার মাঝে বিন্দু কথা বলে উঠলো। রোহিতকে উদ্দেশ্য করে বললো রোহিতদা আমার একটা প্রস্তাব ছিলো। রোহিত খেতে খেতে বিন্দুর দিকে একবার তাকিয়ে বললো হা বলো। আচ্ছা দাদা আমি ভনিতা না করে সরাসরিই বলছি আমাদের ঠাকুরপো আর অঞ্জলীর ভিতর একটা কিছু চলছে সেই ঠাকুমার আমল থেকে। বিন্দুর কথা শুনে সবাই অঞ্জলী আর অমিতের দিকে তাকালো। ওরা দুজন মাথা নিচু করে খেয়ে চলেছে। বিন্দু আবার শুরু করলো ওদের দুজনের অবিবাহিত থাকার কারণ ও এইটা। যা তাড়া দুজনেই আমার কাছে স্বীকার করেছে বা আমি বুঝেছি। তাই আমি চাই আমরা সবাই মিলে এবার ওদের চার হাত এক করে দিয়। কথাটা শোনা মাএ অঞ্জলী ম্যাগীর দিকে তাকালো। কথাটা শুনে ম্যাগী খুশি হলো না কষ্ট পেল।তেমন কিছু বুঝতে পারলো না ম্যাগীর মুখ দেখে অঞ্জলী । কিন্তু কথাটা শোনা মাএ মনি শংকর বললো এতো খুব ভাল কথা,আমার আপত্তি নেই। বিন্দু বললো রোহিতদা !আপনার ? রোহিত একটু আমতা আমতা করে বললো কিন্তু,,তারপর বললো তোমারা সেটা ভালো মনে করো। রোহিতের মুখের ভাবটা অঞ্জলীর নজর এড়ালো না। বিন্দু আবার বলে উঠলো তো মঞ্জুদি তুমি কি বলো ? মঞ্জু মনে মনে বললো যাক শেষ পযন্ত আমার বোনটার একটা হিল্লে হলো। তারপর বললো এতে আমার আর কি আপত্তি থাকতে পারে। সবার কথা শুনে বন্যা লাফিয়ে উঠে বললো তাহলে অঞ্জলী মাসী কে আমি কি বলে ডাকবো ,কাকীমনি না মাসীমনি ! বিন্দু সহ সবাই হেঁসে উঠে বললো তোর যা ইচ্ছা হয় তাই বলিস। মোটামোটি সব ঠিক হলো। মনি শংকর বললো আচ্ছা এই ব্যাপারে আমি আর রোহিতদা মিলে পরে আলোচনা করে একটা দিন ঠিক করবো। সব শুনে অঞ্জলীর আর খাওয়া শেষ করা হলো না। একটু লজ্জা পেয়ে উঠে চলে গেল। যেন ও এখনো বিশ্বাস করতে পারছেনা যে তার বিদ্যোহী রাজকুমার তার হতে চলেছে।
সবার খাওয়া দাওয়া শেষ হলে সবাই যার যার কাজে ব্যাস্ত । অঞ্জলী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে । অঞ্জলী কে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অমিত এসে বললো তুমি খুশি হওনি ? অঞ্জলী অমিতের দিকে ফিরতেই অমিত দেখলো অঞ্জলীর চোখে জল । কি হলো কাঁদছো কেন ? তুমি খুশিনা ? অঞ্জলী হাউমাউ করে কেঁদে উঠে অমিতের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো , এই দিনটার অপেক্ষাতেই এতো বেঁচে ছিলাম এতো দিন রাজকুমার। এতো সুখের জল। এর মাঝে ম্যাগী চলে এলো । অঞ্জলী নিজেকে সামলে নিয়ে অমিতকে বললো তুমি একটু রুমে যাও,আমি আর ম্যাগী একটু কথা বলি। অমিত চলে যেতেই অঞ্জলী বললো তুমি খুশি হয়েছো ম্যাগী ? আমাকে বলো প্রয়োজন হলে আমি না হয়,,,,! অঞ্জলীর কথা শেষ হবার আগেই ম্যাগী তার হাত দিয়ে অঞ্জলীর মুখ চেপে ধরে বললো। আমি খুব খুশি হয়েছি। একটা সত্যিকারের ভালবাসা পরিনীতি পেতে চলেছে। আর সেটা দেখার সৌভাগ্য আমার হবে,এর থেকে খুশির খবর কি হতে পারে। অঞ্জলী বললো কিন্তু তুমি যে বলেছিলে তুমি অমিতকে চাও ? হুম সেটার তোমার কথা জানার আগে । আর জানার পরে বলেছিলাম একরাতের জন্য চাই। তারপর ম্যাগী ফিসফিস করে বললো,সমস্যা কি তিন জনে না হয় থ্রীসাম করবো বলে হেঁসে ফেললো। ম্যাগীর কথা শুনে অঞ্জলী ও হেঁসে বললো যাঃ তোমার শুধু ওই চিন্তা।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!