Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
পর্ব পাঁচ – (#2-19)

 
সকালের খাওয়া দাওয়ার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু, সন্ধ্যের ফ্লাইটে ফিরে যেতে হবে দিল্লী। ঝিনুকের বাবা মা কিছু পরে উপস্থিত হয়ে যায় আম্বালিকার বাড়িতে। জিনিস পত্র গুছাতেই সময় চলে যায় ওদের। বড় বড় তিনটে সুটকেস ভর্তি জিনিস পত্র, একটা রিশুর দুটো ঝিনুকের। বারবার আম্বালিকা ঝিনুককে জানিয়ে দেয় যে দিল্লীতে প্রচন্ড ঠান্ডা, যেন একটু সাবধানে থাকে। গত রাতের যে আড়ষ্ট ভাব ছিল সেটা মায়ের দেখা পেয়ে অনেকটাই কেটে যায় ঝিনুকের। যদিও ঠিক ভাবে এই সম্পর্ক মানতে নারাজ তাও সবার মুখের দিকে চেয়ে ঠোঁটে হাসি মাখিয়ে থাকে। সারাদিনে হ্যাঁ, না, মাথা দোলান ছাড়া বিশেষ কোন কথা হয়না রিশুর সাথে। লাজুক নতুন বউয়ের মতন ভাব দেখিয়ে এড়িয়ে গেছে রিশুকে। বিকেলের দিকেই সবাই রওনা হয় এয়ারপোরটের জন্য। সন্ধ্যের পরে ফ্লাইট, দিল্লী পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে যাবে, বাড়ি পৌঁছাতে আরো অনেক রাত হবে। আম্বালিকা বারেবারে ওদের বলে ছিল যে এয়ারপোরটে যেন কিছু খেয়ে নেয়। বাধ্য ছেলে মেয়ের মতন মাথা দুলিয়ে সায় দেয় রিশু আর ঝিনুক। জল ভরা চোখে সবাইকে বিদায় জানিয়ে এয়ারপোরটের কাঁচের দরজা দিয়ে ঢুকে পরে দুইজনে। আম্বালিকা আর পিয়ালী, দুই মা, ওদের দিকে জল ভরা চোখ নিয়ে বিদায় জানায়।
 
রিশু সারা দিনে ঠিক ভাবে চোখ ভরে দেখার অবকাশ পায়নি ঝিনুকের দিকে। সর্বদা ওকে ঘিরে কেউ না কেউ ছিল, বিয়ের পরের দিনেই এই ভাবে ফিরে যেতে হবে বলে সবার খুব মন খারাপ, কিন্তু কিছু করার নেই, রিশু ডাক্তার কর্তব্য দায়িত্ব সবার আগে। এয়ারপোরটে ঢুকে লাগেজ চেক করানোর সময়ে তাকিয়ে থাকে ঝিনুকের দিকে। যদিও ঝিনুকের পছন্দ অপছন্দ ওর জানা নেই তাও বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে একটা দামি তুঁতে রঙের সালোয়ার কামিজ কিনেছিল, সেই সাথে গাড় নীল রঙের কলার দেওয়া লম্বা ওভারকোট। ঝিনুকের পরনে ওর দেওয়া সেই সালোয়ার কামিজ দেখে বেশ ভালো লাগে। দুই কাজল টানা চোখের দিকে তাকায় রিশু, যেন ওকেই জিজ্ঞেস করছে, এত কি হা করে দেখছ? ঠোঁটে গাড় লাল রঙের লিপস্টিক, মাথার চুল একপাশে করে আঁচড়ান, গাড় বাদামি রঙের চুল মাথার পেছনে বেশ সুন্দর করে বাঁধা, সাজতে জানে মেয়েটা তাহলে। বাঁকা পাতলা ভুরুর মাঝে ছোট্ট লাল রঙের টিপ আর সিঁথিতে সিঁদুরের দাগ। ওভারকোটটার বেল্ট কোমরে বাঁধা থাকার ফলে কোমর বেশ পাতলা দেখায়, দুই হাতে সোনার গয়না আর সদ্য বিবাহিতার নিদর্শন স্বরূপ সোনায় বাধানো শাঁখা পলা, লম্বা নখে লাল রঙের নেল পলিশ।
 
রিশুকে ওইভাবে তাকিয়ে থাকাতে দেখে ভীষণ বিব্রত বোধ করে ঝিনুক। বুকের ওপরে হাত ভাঁজ করে অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে তাকিয়ে থাকে। অত কি ফ্যালফ্যাল করে দেখছে ছেলেটা, এর আগে কি মেয়ে দেখেনি নাকি। এতক্ষনে ঠিক ভাবে কথাও হয়নি, কথা বলার মতন মানসিকতা ছিল না একদম। শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়েই গেল আর এই মানুষটার সাথে কেমন নির্বিকার ভাবে চলেও যাচ্ছে দিল্লীতে। নিজের ওপর ভীষণ রাগ হয় ঝিনুকের, তোর নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছে বলতে কি কিছু নেই নাকি যে চলে যাচ্ছিস? আপন মনে হটাত করেই মাথা নাড়ায়, না চলে যাওয়া ছাড়া ওর কাছে আর কোন উপায় নেই।
 
সিকিউরিটি চেকের আগে ওর হাতে বোরডিং পাস ধরাবার সময়ে আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুলের ছোঁয়া লাগে। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের লাইন বেশ লম্বা, ঝিনুকের তাড়াতাড়ি চেকিং হয়ে যায়। বেড়িয়ে এসে কোথাও রিশুকে দেখতে না পেয়ে ব্যাকুল হয়ে যায় ওর হৃদয়, নিজের অজান্তেই শুন্য হয়ে যায় মনের কানা গলি, গেল কোথায়? এই ত দাঁড়িয়েছিল লাইনে। এদিকে ওদিকে তাকিয়েও খুঁজে পায় না। হাওয়ায় মিলিয়ে গেল নাকি? এমন সময়ে কাশির আওয়াজ শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে ওর পেছনে দাঁড়িয়ে। খুব বলতে ইচ্ছে করছিল, কোথায় গেছিলেন, এতক্ষন লাগে নাকি? না বলতে পারেনি ঝিনুক কেমন যেন বাধো বাধো ঠেকেছিল তখন। রিশু ইশারায় জানায় যে ফ্লাইটের আরো বেশ কিছু দেরি আছে। ঝিনুক ফোন করে মাকে জানিয়ে দেয় যে ওদের সিকিউরিটি চেক হয়ে গেছে, দিল্লীতে পৌঁছে জানিয়ে দেবে। একটা চেয়ার খালি দেখে ঝিনুক কে বসতে অনুরোধ করে রিশু।
 
অন্ধকার নেমে এসেছে বেশ আগেই, বড় কাঁচের জানালা পাশে দাঁড়িয়ে রিশু, কাঁধে ওর ল্যাপটপের ব্যাগ। চেয়ারে বসে ফোন দেখতে দেখতে আড় চোখে রিশুর দিকে তাকিয়ে দেখে। পরনে একটা জিন্স আর শারট, দেখে মনেই হয় না যে আগের দিন ওদের বিয়ে হয়েছে। ছেলেটাকে খুব সাধারন দেখতে কিন্তু কেমন যেন একটা আকর্ষণ আছে ওর বুদ্ধিদীপ্ত চোখে আর গুরু গম্ভির আওয়াজে। এই কয়দিনে ঠিক ভাবে নিজের ফোন দেখতে পারেনি ঝিনুক, প্রচুর কল আর প্রচুর মেসেজ। বন্ধু বান্ধবীরা যারা এসেছিল তাদের সবার প্রশ্ন, হটাত কি করে দিল্লীর এত বড় এক ডাক্তারের সাথে ওর বিয়ে হয়ে গেল। বসে বসে ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রাম খুলে পার্থের সাথে যেকটা ছবি দেওয়া ছিল, সব সরিয়ে দেয়। ফেসবুকে, মোবাইলে প্রচুর মেসেজ কিন্তু কারুর মেসেজের উত্তর দেওয়ার মতন মানসিকতা ছিল না ওর।
 
কাঁচের জানালার অন্যপাশে ঘন অন্ধকার, সারি দিয়ে প্লেন দাঁড়িয়ে। কাঁচের জানালায় ঠিক পেছনে বসে থাকা ঝিনুকের প্রতিফলনের দিকে চোখ যায়, মাথা নিচু করে বসে এক মনে ফোন দেখে চলেছে। আশে পাশে প্রচুর মানুষের ভিড়, যারা একা নয় তারা সবাই তাদের সাথের লোকের সাথে গল্প করছে। এপাশে ওপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ কয়েকজন দম্পতি চোখে পরে, সবাই কেমন একে অপরকে জড়িয়ে ধড়ে আলাপে মশগুল। ওর সাথে ওর নতুন বিবাহিতা স্ত্রী তাও রিশু বড় একা। ইন্দ্রজিত আর শালিনীকে বলেছিল সাথে আসতে, কিন্তু বিয়ের পরে নিলেশের সাথে ওদের বাড়ি চলে গেল তাই একা একাই ফিরতে হচ্ছে ওদের। ইন্দ্রজিত থাকলে অন্তত ওর সাথে গল্প করতে পারত আর শালিনীকে পেয়ে ঝিনুকের একাকিত্ত্ব ভাব দূর হত। অনেকক্ষণ না খেয়ে রয়েছে হয়ত ওর খিধে পেয়েছে, রিশুর অভ্যেস আছে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা, না খেয়ে থাকা। কোন কোন দিন টানা পাঁচ ছয় ঘন্টা অপারেশান থিয়েটারে কাটিয়ে যখন বের হয় তখন আর খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না। তাও একবার ঝিনুক কে জিজ্ঞেস করা উচিত কিছু খাবে কি না।
 
দুপুরের পরে কিছুই খায়নি, জল পিপাসাও পেয়েছে, কিছু বলতেও পারছে না ঝিনুক। গত রাতে যেভাবে গলা চড়িয়ে কথা বলেছে তারপর থেকে রিশু ওর সাথে ঠিক ভাবে কথা বলেনি। অতি আবশ্যক না হলে একদম কথাই বলেনি বরং ওকে এড়িয়েই চলে গেছে। ঝিনুক মাথা নিচু করে ফোন দেখলেও ষষ্ট ইন্দ্রিয় সজাগ ছিল ওর। পাশে ছায়া দেখতে পেয়ে মাথা উঁচু করতেই রিশুর সাথে চোখাচুখি হয়ে যায়।
 
ভুরু কুঁচকে ঝিনুক ওর দিকে তাকায়, কি হয়েছে? না মুখে বলেনি ইশারায় কথা হয় ওদের।

রিশু জিজ্ঞেস করে, “কিছু খাবে কি?”

নিজের ল্যাপটপের ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে উঠে দাঁড়ায় ঝিনুক, রিশুর চোখের দিকে তাকাতে গিয়েও চোখ নামিয়ে বলে, “একটু জল পেলে ভালো হত।”

ছোট্ট উত্তর দেয় রিশু, “আচ্ছা।”

সামনের একটা দোকান থেকে জলের বোতল কিনে ওর হাতে ধরিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আর কিছু চাই? ইঙ্কামিং ফ্লাইট এখন আসেনি তাই ফ্লাইট একটু লেট আছে।”

খিধে পেয়েছিল খুব, কিন্তু কিছুতেই মুখ ফুটে বলতে পারছে না। জল খেয়ে এপাশ অপাশ তাকিয়ে দেখে, বেশ কয়েকটা ফুড স্টল রয়েছে। ঝিনুকের চোখ খাবারের স্টলের দিকে যেতেই মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, “পিজ্জা বারগার না দোসা?”

এমনি বন্ধুদের সাথে হলে পিজ্জা না হয় বার্গার এইসব খেত কিন্তু রিশুকে কি বলবে? নিচু গলায় বলে, তুমি যা খেতে চাও। কিন্তু গলা থেকে স্বর বের হয়না ওর, শুধু ঠোঁট কাঁপাটাই রিশুর চোখে পরে। শুনতে না পেয়ে ঝিনুকের দিকে একটু ঝুঁকে পরে রিশু, নাকে ভেসে আসে মাদকতাময় সুঘ্রাণ, বুক ভরে শ্বাস নিয়ে সেই ঘ্রানে নিজের স্নায়ুকে তরতাজা করে নেয় রিশু। আবার জিজ্ঞেস করে, “কি খাবে বল?”

কানে কালা নাকি ছেলেটা, নাকি রিশু ইচ্ছে করেই ওর দিকে অমন ভাবে ঝুঁকে? কিঞ্চিত রেগে যায় ঝিনুক, ভুরু কুঁচকে বলে, “না, খিধে নেই আমার।”

মুচকি হাসে রিশু, “লো কস্ট ফ্লাইট, খেতে দেবে না কিন্তু।”

হাসি পেয়ে গেছিল ঝিনুকের তাও ওর সামনে হাসতে খুব বাধো বাধো ঠেকছিল তাই গোমাড়া মুখ করে উত্তর দেয়, “দোসা হলেই চলবে।”


দুটো মসালা দোসা নিয়ে সামনা সামনি চেয়ারে বসে খেতে শুরু করে দুইজনে। দিল্লী পৌঁছাতে কত রাত হবে জানা নেই, এয়ারপোরট থেকে ওর বাড়ি কতদুর সেটাও জানে না, শুধু জানে সিআর পার্ক এলাকায়। দিল্লীতে বেড়াতে এসেছে ঝিনুক কিন্তু সেটা অনেক ছোট বেলায়। গত রাতে পাশে আসেনি, সেটা ঠিক, কিন্তু দিল্লীতে কি করবে? কটা ঘর ওর বাড়িতে, আলাদা শোয়ার ঘর আছে? মনের মধ্যে হাজার প্রশ্ন জেগে ওঠে ওর। যদি রিশু বিছানায় শোয় তাহলে ও মাটিতে শোবে। যদিও ওদের ধর্ম সম্মত বিয়ে হয়েছে কিন্তু তাও এই ভাবে কোন অচেনা অজানা মানুষের কাছে নিজেকে সঁপে দিতে নারাজ। দেখে ত মনে হয় না যে রিশু ওর প্রতি এতটা নিষ্ঠুর হবে। এখন এই প্রশ্নের উত্তর জানা হয়নি, কেন ওকে বিয়ে করেছে। বেশ শিক্ষিত এত বড় ডাক্তার, ইচ্ছে করলে ওর চেয়েও অনেক ভালো মেয়েকে বিয়ে করতে পারত। প্রেমে ধাক্কা খেয়েছে বলে আর বিয়েই করল না? মায়ের মুখে শুনেছে, অম্বরীশ প্রচন্ড মাতৃ ভক্ত ছেলে, ভয় সেখানেই কথায় কথায় হয়ত এরপর মাকে টেনে আনবে। এই সব মাতৃ ভক্ত অতি ভালো ছেলেদের দেখলেই গা পিত্তি জ্বলে যায়, কেমন যেন ভিজে বেড়াল মনে হয় ওদের। এতক্ষন সামনে বসে থাকলেও ভুলেও চোখ তুলে তাকায়নি ওর দিকে, পাছে চোখাচুখি হয়ে যায় আর ওর মনের ভেতরের হাজার প্রশ্ন পড়ে ফেলে রিশু। তবে রিশুকে দেখে ভিজে বেড়াল বলে একদম মনে হয় না, বরঞ্চ মনে হয় যেন পশুর রাজা সিংহ, শান্ত বুদ্ধিদীপ্ত, মার্জিত শিক্ষিত সেটা ওর চলনে বলনে চেহারায় ফুটে ওঠে। গতরাতে ও যেমন ভাবে রিশুর ওপরে চেঁচিয়ে ছিল অন্য কোন ছেলে হলে সেই মুহূর্তে বাড়ির সবাইকে ডেকে একটা বিহিত করে দিত, হয়ত ওকে টেনে এক থাপ্পড় মেরে চুপ করিয়ে দিত। সেই সব কিছুই করেনি, উলটে ওকে বুঝিয়ে চুপ করাতে চেষ্টা করেছে।
 
চুপ করে খেতে খেতে মাঝে মাঝে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে দেখে। এত নিচু মাথা করে কি কেউ খায় নাকি? এরপর মনে হয় থালার মধ্যে ঢুকে পড়বে। ঝিনুকের খাওয়া দেখে ভীষণ হাসি পায় রিশুর, ছোট এক টুকরো নিয়ে কত ভেবে তারপরে মুখের মধ্যে গ্রাস তুলছে। এত কি ভাবছে? কোথায় হারিয়ে গেছে মেয়েটা? মায়ের মুখে অথবা পিয়ালী আন্টির মুখ থেকে যা শুনেছে তার কিছুই মিলছে না। শুনেছে এই মেয়ে নাকি প্রচন্ড কথা বলে, ভীষণ উচ্ছল আর প্রানবন্ত, কোথায় সেই সব? একটা প্রেমে ধাক্কা খেয়েছে বলে এত মুষড়ে পড়েছে? একদম সঠিক সময়ে সেই ধূর্তের সত্য উন্মোচন হয়েছে বলেই বেঁচে গেছে না হলে সারা জীবন সেই ধূর্তের সাথে কাটাতে হত। তাই বলে এই ভাবে মুষড়ে পড়বে নাকি? চন্দ্রিকা চলে যাওয়ার পরে মুষড়ে যদিও পরেনি তবে কারুর সাথে আর নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে পারেনি। মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, রাতে যেভাবে আহত সাপের মতন ওর দিকে ফোঁস করে উঠেছিল তাতেই বোঝা গেছে যে এই মেয়ে ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না।
 
ভাবনা চিন্তনের ধারা কেটে যায় রিশুর গলা শুনে, “এত কি ভাবছ?”

সত্যি ধরা পরে গেছে, কান লাল হয়ে যায় ঝিনুকের। মাথা নাড়ায়, না কিছু না এমনি। ওর দিকে তাকাতে ভীষণ বিব্রত বোধ করে। দোসা খাওয়া শেষ, অর্ধেক খেয়েই ওর পেট ভরে গেছে।

রিশু ওর থালার দিকে দেখে বলে, “এই টুকু, ব্যাস, আর খাবে না?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, না ব্যাস হয়ে গেছে।
 
খাওয়া শেষে উঠে পরে দুইজনে। হাঁটতে হাঁটতে গেটের দিকে চলে যায়, হাঁটার সময়ে পাশাপাশি না হেঁটে একটু তফাতে পেছনে পেছনে হেঁটে চলে ঝিনুক। ফোন করে বাড়িতে জানিয়ে দেয় যে ফ্লাইট লেট, ওদের দিল্লী পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে যাবে। যথারীতি, ওর মায়ের সাথে রিশুও কথা বলে। তারপরে যখন রিশু নিজের বাড়িতে ফোন করে তখন ঝিনুক ও বেশ ভালো ভাবেই কথা বলে। শুধু মাত্র যখন দুজনা অন্যজনের সাথে কথা বলে না তখন মনে হয় যেন দুইদিকে দুই তুষের আগুন জ্বলছে ধিকিধিকি করে।
 
বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরে প্লেনের বোর্ডিং কল হয়। জানালার পাশে ঝিনুকের সিট তার পাশে রিশু। কিছু পরে লম্বা রানওয়ে ধরে অন্ধকার চিড়ে ভীষণ জোরে দৌড়াতে শুরু করে প্লেন, ঝিনুকের বুক কেঁপে ওঠে, গত দশ বছর এই শহরে কাটিয়েছে। প্লেনটা মাটি ছাড়তেই চোখের কোনা ভিজে যায় ওর, রুমাল বার করে রিশুর অলক্ষেই চোখের কোনা মুছে বাইরের দিকে তাকায়। আলো গুলো ধিরে ধিরে এক এক করে ছোট হয়ে আসছে, আর কি ফিরে আসা হবে এই মাটিতে? চোখ বন্ধ করে জানালার দিকে মুখ ফিরিয়ে হাতের মুঠো শক্ত করে নেয়, বুকের পাঁজর কেঁদে ওঠে, মা গো...   
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 18-10-2020, 01:30 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:16 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 03:41 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:13 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 02:49 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 27-10-2020, 02:59 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 12:21 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 10:20 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 29-10-2020, 01:29 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 30-10-2020, 11:22 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by pinuram - 31-10-2020, 08:33 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 01-11-2020, 01:37 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 02-11-2020, 12:51 PM
পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 08-12-2020, 05:19 PM
RE: পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 09-12-2020, 06:58 PM
Block Guest Users! - by pinuram - 09-12-2020, 11:47 PM
RE: Block Guest Users! - by dreampriya - 10-12-2020, 09:46 AM
RE: Block Guest Users! - by pinuram - 10-12-2020, 12:18 PM
পর্ব আট – (#6-42) - by pinuram - 14-12-2020, 11:37 PM
পর্ব আট – (#7-43) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM
পর্ব আট – (#8-44) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM



Users browsing this thread: 12 Guest(s)