30-10-2020, 03:57 PM
পরদিন সকালে দুই কপোত কপোতী কে আবার দেখা গেল একসাথে। পাশাপাশি সাইকেলে যেতে যেতে গল্পে মত্ত দুজনেই। আজ দিয়াই কথাটা তুলল। দেখা হবার পর একটু এগিয়েই দিয়া বলল আজ টিউশন যেতে একদম ইচ্ছে করছেনা।
অনিন্দ্য বলে তাহলে? বাড়ি ফিরে যাবে?
দিয়া লাজুক হেসে বলে না। চলো নদীর ধারে বসে গল্প করি।
দিয়ার কথা শুনে দুষ্টুমি করার ইচ্ছে জাগে অনিন্দ্যর মনে।
ভ্রু কুঁচকে বলে কেন বলোতো? ফাঁকা জায়গায় গিয়ে কিছু করবেনা তো আমাকে আবার? তাহলে কিন্তু আমি নেই।
চোখ গোল গোল করে মুখে কপট রাগ দেখিয়ে দিয়া বলে অসভ্য কোথাকার। প্যাঁক দেওয়া হচ্ছে আমাকে?
দিয়ার কথায় হেসে ফেলে অনিন্দ্য। বলে বেশ করেছি। দেবই তো।
খুব হয়েছে। থাক। ভেঙচি কেটে বলে দিয়া।
অনিন্দ্য বলে সত্যি যাবে?
মাথা নেড়ে দিয়া বলে হ্যাঁ যাব।
খুশি হয়ে অনিন্দ্য বলে চলো তাহলে।
দুজনের সাইকেলের অভিমুখ পরিবর্তিত হয়। বাবুপাড়ার পথ ছেড়ে নদীর পথে এগিয়ে যায় ওরা।
নদীর ঘাট থেকে অনেকটা তফাতে থামে ওরা। এত সকালে ঘাটেও লোকজন নেই। আর ওরা যেখানে থেমেছে সেখানে তো কেওই নেই। জায়গাটা শরবন আর হোগলার ঝোপে ঢাকা। সাইকেল পাশে রেখে তার মধ্যেই বসল দুজনে পাশাপাশি।
নদীর শান্ত রূপ এখন। স্থির জলের দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলল কি শান্ত না জায়গাটা? নিস্তব্ধ নিশ্চুপ। আমার এরকম জায়গাই ভালো লাগে। ভিড় ভাট্টা একদম পছন্দ না আমার।
দিয়া বলল তুমি কি কবিতা লেখো?
ধ্যাত। মোটেও না। লাজুক গলায় বলল অনিন্দ্য। আমি কবি নই। আমার এমনি শান্ত নির্জন জায়গা ভালো লাগে।
হুম বুঝলাম। আর কি কি ভালো লাগে তোমার? দিয়া জানতে চায়।
দূরে নদীর বুকে একটা নৌকা চলছে। সেদিকে তাকিয়ে স্মৃতি মেদুর গলায় অনিন্দ্য বলে গল্পের বই পড়তে, গান শুনতে আর ওই রকম নদীর বুকে অজানার পথে ভেসে বেড়াতে।
অনিন্দ্যর সহজ সরল কথা ছুঁয়ে যায় দিয়াকে। দিয়াও ভাবুক হয়ে যায়। আনমনে জলের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে আমারও গান শুনতে আর বই পড়তে ভালো লাগে। আর ভালো লাগে বেড়াতে।
জল থেকে চোখ সরিয়ে দিয়ার দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলে হুম জানি তো। তুমি বিকেলে ছাদে বসে গান শোনো।
লাজুক হেসে দিয়া বলে দেখেছ তাহলে।
দুঃখী গলায় অনিন্দ্য বলে দেখতে গিয়েই তো সাইকেল নিয়ে উল্টে পড়লাম।
মুখে হাত চাপা দিয়ে হাসি আটকে দিয়া বলে রাস্তায় চলবার সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হয়।
বড় বড় চোখ করে অনিন্দ্য বলে কেও যদি নজর কেড়ে নেয় তো আমার কি দোষ?
লজ্জায় আবারো গাল লাল হয় দিয়ার। মুখ নিচু করে নরম মাটির ঘাস ছিঁড়তে থাকে।
তোমার বাড়িতে কে কে আছে? দিয়াকে সহজ করার জন্য কথা বদলায় অনিন্দ্য।
-বাবা মা আর আমি। ব্যাস।
– ভাই বোন?
– নাহ। তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
– বাবা মা আমি আর ছোট ভাই। ফাইভে পড়ে।
– বাড়ি কতদিন অন্তর যাও?
– কলেজ ছুটি পড়লে তখনই যাই।
– বাড়িতে সবাইকে মিস করো না?
– হুম করি তো। কিন্তু সেই অভাবটা এখন তুমি পূরণ করে দিয়েছ।
আবার বুকের ভেতরটা শিরশিরিয়ে ওঠে দিয়ার। উফফ অনিন্দ্যটা পাগল না করে ছাড়বেনা তাকে।
অনিন্দ্য এগিয়ে আসে একটু। গভীর গলায় ডাকে দিয়া। – হুঁ
– আমার দিকে তাকাও
পদ্মকলির মত চোখ মেলে তাকায় দিয়া।
অনিন্দ্য দিয়ার নরম হাত নিজের মুঠোতে ধরে বলে তোমায় আমি ভীষণ ভালোবাসি দিয়া। ভীষন। এই কদিনে তুমি যে আমার কত আপন হয়ে গেছ সেটা বলে বোঝাতে পারব না তোমায়। তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছিনা আমি।
অনিন্দ্যর হাতের মুঠোয় দিয়ার হাত ঘেমে ওঠে। দিয়ার গলা শুকিয়ে যায়। কিছু বলতে চায় কিন্তু ঠোঁট দুখানি শুধু থরথর করে কেঁপে ওঠে। কোন আওয়াজ বেরোয় না মুখ থেকে।
ভাষায় প্রকাশ করতে না পেরে অন্যভাবে নিজের অভিব্যক্তি জানায় দিয়া। অনিন্দ্যর হাতটা আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে মাথা রাখে।
একহাত দিয়ার হাতে রেখে অন্যহাতটা দিয়ার মাথায় রাখে অনিন্দ্য। দুজনেই চুপ। কথার প্রয়োজনও নেই এখন। একে অপরের স্পর্শেই দুজন দুজনের মনের কথা পড়ে নেয়।
একে অন্যের শরীর ছুঁয়ে দুজনে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঠিক যেখানে আকাশ এসে মিশেছে নদীর বুকে। চারিদিক নিস্তব্ধ। শুধু পাড়ের কাছে নদীর জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর দুজনের হৃৎপিণ্ডের লাবডুব আওয়াজ শোনা যায়।
কতক্ষন ওভাবে চুপ করে ছিল ওরা খেয়াল ছিলনা ওদের। সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। নীরবতা ভেঙে দিয়া বলে
– আমায় ছেড়ে যাবেনা তো অনিন্দ্য?
হাতটা দিয়ার মাথা থেকে নামিয়ে ওর চিবুক ধরে মুখটা তুলে অনিন্দ্য বলল আজ এই নদীকে সাক্ষী রেখে কথা দিচ্ছি দিয়া। জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত শুধু তোমার হয়ে থাকব।
অনিন্দ্যর কথায় মন শান্ত হয়ে যায় দিয়ার।
আর তুমি? অনিন্দ্য জানতে চায় দিয়ার কাছে।
আমিও কথা দিলাম অনিন্দ্য। তুমি ছাড়া আর কেও কখনো আসবেনা আমার জীবনে।
দিয়ার মাথা আবার নিজের কাঁধে রেখে দিয়ে অনিন্দ্য বলে তুমি যদি কোনদিনও আমাকে ছেড়ে যাও তাহলে আমি শেষ হয়ে যাব দিয়া। আর বাঁচবনা।
ধড়মড় করে উঠে অনিন্দ্যর মুখে হাত চাপা দেয় দিয়া। রাগত স্বরে বলে আর কখনো এরকম অলুক্ষনে কথা বলবে না। তাহলে কিন্তু আমি কথা বলবনা।
দুহাতে দিয়ার মুখখানি ধরে অনিন্দ্য বলে বলবনা দিয়া। আর কোনদিনও বলবনা।
নিজের দুহাত অনিন্দ্যর হাতের ওপর রেখে দিয়া বলে ঠিক তো? কথা দিচ্ছ?
– একদম ঠিক। কথা দিচ্ছি।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক। অনিন্দ্যর হাতে ধরা দিয়ার মিষ্টি মুখখানি। অনিন্দ্য আর আটকাতে পারেনা নিজেকে। মুখ নামিয়ে আনে দিয়ার মুখের কাছে। দুজনের নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে।
কি হতে চলেছে সেটা সহজেই অনুমান করে নেয় দিয়া। কিন্তু তাতে আর কোন আপত্তি নেই তার। ঠোঁটদুটো ঈষৎ ফাঁক হয়ে যায় দিয়ার। আবেশে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসে। দুহাতে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্যকে।
অনিন্দ্যর তপ্ত তৃষিত ওষ্ঠ নেমে আসে দিয়ার নরম ভেজা ঠোঁটের ওপর আর তখনই যেন কালঘড়ি থেমে যায়।
দুহাতে দিয়াকে জড়িয়ে ধরে দিয়ার ঠোঁটের আস্বাদ নিতে থাকে অনিন্দ্য। আবেশে তারও দুচোখ বন্ধ হয়ে যায়। দিয়া আঁকড়ে ধরে অনিন্দ্যর পিঠ। আরো কাছে টেনে নেয় প্রিয়তমকে। নিস্তব্ধ নদীতীরে শুধু চুমুর শব্দ ভেসে বেড়ায়।
দিয়াকে আরো নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্য। দিয়ার নরম বুক মথিত হয় অনিন্দ্যর পুরুষালী বুকে। দুজনের ঠোঁট এক হয়ে যায়। কমলার কোয়ার মত দিয়ার রসালো ঠোঁট চুষে চলে অনিন্দ্য।
দুজনেই অনভিজ্ঞ। দুজনেরই জীবনের প্রথম চুম্বন। কিন্তু কিছু জিনিষ হাতে ধরে শেখাতে হয়না। আপনা আপনি শিখে যায় মানুষ। যেমন এখন ওদেরকে শেখাতে হচ্ছেনা। ওরা নিজেরাই শিখে নিচ্ছে কিভাবে প্রেমের পরশ ছড়িয়ে দিতে হয়।
চুমুর আতিশয্যে দুজনেই গলে যায়। ওদের আদর শেষ হতে চায়না। যেন পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে এভাবেই পরস্পরকে চুমু খেয়ে চলেছে ওরা। আদরের ঘনঘটায় দিয়ার শরীর পুলকে কেঁপে কেঁপে ওঠে বারবার।
গভীর আশ্লেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে চায় ওরা।
দুজনের দম শেষ হয়ে আসে। ঠোঁট দুটো ছাড়িয়ে নিয়ে দুজনেই হাঁপাতে থাকে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। কিছুক্ষন দম নেয়। তারপর আবার ঝাঁপিয়ে পড়ে একে অন্যের ওপর।
এবার আরো জোরে জাপটে ধরে একে অপরকে। দুটো শরীর মিলেমিশে এক হয়ে যায়। দুজনের কারোরই কোন হুঁশ নেই। শুধু চুমু খেতে ব্যস্ত।
অনিন্দ্যর হাত ঘুরে বেড়ায় দিয়ার পিঠে। অনিন্দ্যর কামঘন স্পর্শে থেকে থেকে শিহরিত হয় দিয়া। অনিন্দ্যর চুল মুঠো করে ওর ঠোঁট কামড়ে ধরে। জন্ম জন্মান্তরের আদর শেষ করে থামে ওরা। হাঁপায়। দুজনের ঠোঁট একে অপরের লালায় ভিজে একাকার। দিয়ার কামড়ে অনিন্দ্যর ঠোঁটে গভীর দাগ। সেটা দেখে একই সাথে লজ্জিত আর শিহরিত হয় দিয়া।
অনিন্দ্যকে জড়িয়ে ধরে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে আই লাভ ইউ। দিয়ার গালে চুমু খেয়ে প্রত্যুত্তর দেয় অনিন্দ্য।
আরো আধঘন্টা দুজনে বসে থাকে নদীর পাড়ে।
অনিন্দ্যর কোলে মাথা রেখে শোয় দিয়া। অনিন্দ্যর স্নেহশীল হাত দিয়ার চুলগুলো নিয়ে খেলা করে। পরম আবেশে দিয়ার চোখ বন্ধ হযে যায়।
অনিন্দ্য ডাকে দিয়া
উমম। চোখ বন্ধ রেখে আদুরে গলায় উত্তর দেয় দিয়া।
অনিন্দ্য বলে আজকের দিনটা সারা জীবন মনে থেকে যাবে। এত সুন্দর সকাল আমার জীবনে আর আসেনি।
চোখ খুলে অনিন্দ্যর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে দিয়া বলে আমারও।
নিচু হয়ে দিয়ার কপালে চুমু খায় অনিন্দ্য।দিয়া অনিন্দ্যর হাতে চুমু খায়।
তারপর আবোল তাবোল কত কি কথা বলে যায় দুজনে। সব কথার মাথামুন্ডুও নেই।
অনিন্দ্য বলে তাহলে? বাড়ি ফিরে যাবে?
দিয়া লাজুক হেসে বলে না। চলো নদীর ধারে বসে গল্প করি।
দিয়ার কথা শুনে দুষ্টুমি করার ইচ্ছে জাগে অনিন্দ্যর মনে।
ভ্রু কুঁচকে বলে কেন বলোতো? ফাঁকা জায়গায় গিয়ে কিছু করবেনা তো আমাকে আবার? তাহলে কিন্তু আমি নেই।
চোখ গোল গোল করে মুখে কপট রাগ দেখিয়ে দিয়া বলে অসভ্য কোথাকার। প্যাঁক দেওয়া হচ্ছে আমাকে?
দিয়ার কথায় হেসে ফেলে অনিন্দ্য। বলে বেশ করেছি। দেবই তো।
খুব হয়েছে। থাক। ভেঙচি কেটে বলে দিয়া।
অনিন্দ্য বলে সত্যি যাবে?
মাথা নেড়ে দিয়া বলে হ্যাঁ যাব।
খুশি হয়ে অনিন্দ্য বলে চলো তাহলে।
দুজনের সাইকেলের অভিমুখ পরিবর্তিত হয়। বাবুপাড়ার পথ ছেড়ে নদীর পথে এগিয়ে যায় ওরা।
নদীর ঘাট থেকে অনেকটা তফাতে থামে ওরা। এত সকালে ঘাটেও লোকজন নেই। আর ওরা যেখানে থেমেছে সেখানে তো কেওই নেই। জায়গাটা শরবন আর হোগলার ঝোপে ঢাকা। সাইকেল পাশে রেখে তার মধ্যেই বসল দুজনে পাশাপাশি।
নদীর শান্ত রূপ এখন। স্থির জলের দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলল কি শান্ত না জায়গাটা? নিস্তব্ধ নিশ্চুপ। আমার এরকম জায়গাই ভালো লাগে। ভিড় ভাট্টা একদম পছন্দ না আমার।
দিয়া বলল তুমি কি কবিতা লেখো?
ধ্যাত। মোটেও না। লাজুক গলায় বলল অনিন্দ্য। আমি কবি নই। আমার এমনি শান্ত নির্জন জায়গা ভালো লাগে।
হুম বুঝলাম। আর কি কি ভালো লাগে তোমার? দিয়া জানতে চায়।
দূরে নদীর বুকে একটা নৌকা চলছে। সেদিকে তাকিয়ে স্মৃতি মেদুর গলায় অনিন্দ্য বলে গল্পের বই পড়তে, গান শুনতে আর ওই রকম নদীর বুকে অজানার পথে ভেসে বেড়াতে।
অনিন্দ্যর সহজ সরল কথা ছুঁয়ে যায় দিয়াকে। দিয়াও ভাবুক হয়ে যায়। আনমনে জলের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে আমারও গান শুনতে আর বই পড়তে ভালো লাগে। আর ভালো লাগে বেড়াতে।
জল থেকে চোখ সরিয়ে দিয়ার দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলে হুম জানি তো। তুমি বিকেলে ছাদে বসে গান শোনো।
লাজুক হেসে দিয়া বলে দেখেছ তাহলে।
দুঃখী গলায় অনিন্দ্য বলে দেখতে গিয়েই তো সাইকেল নিয়ে উল্টে পড়লাম।
মুখে হাত চাপা দিয়ে হাসি আটকে দিয়া বলে রাস্তায় চলবার সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হয়।
বড় বড় চোখ করে অনিন্দ্য বলে কেও যদি নজর কেড়ে নেয় তো আমার কি দোষ?
লজ্জায় আবারো গাল লাল হয় দিয়ার। মুখ নিচু করে নরম মাটির ঘাস ছিঁড়তে থাকে।
তোমার বাড়িতে কে কে আছে? দিয়াকে সহজ করার জন্য কথা বদলায় অনিন্দ্য।
-বাবা মা আর আমি। ব্যাস।
– ভাই বোন?
– নাহ। তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
– বাবা মা আমি আর ছোট ভাই। ফাইভে পড়ে।
– বাড়ি কতদিন অন্তর যাও?
– কলেজ ছুটি পড়লে তখনই যাই।
– বাড়িতে সবাইকে মিস করো না?
– হুম করি তো। কিন্তু সেই অভাবটা এখন তুমি পূরণ করে দিয়েছ।
আবার বুকের ভেতরটা শিরশিরিয়ে ওঠে দিয়ার। উফফ অনিন্দ্যটা পাগল না করে ছাড়বেনা তাকে।
অনিন্দ্য এগিয়ে আসে একটু। গভীর গলায় ডাকে দিয়া। – হুঁ
– আমার দিকে তাকাও
পদ্মকলির মত চোখ মেলে তাকায় দিয়া।
অনিন্দ্য দিয়ার নরম হাত নিজের মুঠোতে ধরে বলে তোমায় আমি ভীষণ ভালোবাসি দিয়া। ভীষন। এই কদিনে তুমি যে আমার কত আপন হয়ে গেছ সেটা বলে বোঝাতে পারব না তোমায়। তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছিনা আমি।
অনিন্দ্যর হাতের মুঠোয় দিয়ার হাত ঘেমে ওঠে। দিয়ার গলা শুকিয়ে যায়। কিছু বলতে চায় কিন্তু ঠোঁট দুখানি শুধু থরথর করে কেঁপে ওঠে। কোন আওয়াজ বেরোয় না মুখ থেকে।
ভাষায় প্রকাশ করতে না পেরে অন্যভাবে নিজের অভিব্যক্তি জানায় দিয়া। অনিন্দ্যর হাতটা আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে মাথা রাখে।
একহাত দিয়ার হাতে রেখে অন্যহাতটা দিয়ার মাথায় রাখে অনিন্দ্য। দুজনেই চুপ। কথার প্রয়োজনও নেই এখন। একে অপরের স্পর্শেই দুজন দুজনের মনের কথা পড়ে নেয়।
একে অন্যের শরীর ছুঁয়ে দুজনে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঠিক যেখানে আকাশ এসে মিশেছে নদীর বুকে। চারিদিক নিস্তব্ধ। শুধু পাড়ের কাছে নদীর জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর দুজনের হৃৎপিণ্ডের লাবডুব আওয়াজ শোনা যায়।
কতক্ষন ওভাবে চুপ করে ছিল ওরা খেয়াল ছিলনা ওদের। সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। নীরবতা ভেঙে দিয়া বলে
– আমায় ছেড়ে যাবেনা তো অনিন্দ্য?
হাতটা দিয়ার মাথা থেকে নামিয়ে ওর চিবুক ধরে মুখটা তুলে অনিন্দ্য বলল আজ এই নদীকে সাক্ষী রেখে কথা দিচ্ছি দিয়া। জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত শুধু তোমার হয়ে থাকব।
অনিন্দ্যর কথায় মন শান্ত হয়ে যায় দিয়ার।
আর তুমি? অনিন্দ্য জানতে চায় দিয়ার কাছে।
আমিও কথা দিলাম অনিন্দ্য। তুমি ছাড়া আর কেও কখনো আসবেনা আমার জীবনে।
দিয়ার মাথা আবার নিজের কাঁধে রেখে দিয়ে অনিন্দ্য বলে তুমি যদি কোনদিনও আমাকে ছেড়ে যাও তাহলে আমি শেষ হয়ে যাব দিয়া। আর বাঁচবনা।
ধড়মড় করে উঠে অনিন্দ্যর মুখে হাত চাপা দেয় দিয়া। রাগত স্বরে বলে আর কখনো এরকম অলুক্ষনে কথা বলবে না। তাহলে কিন্তু আমি কথা বলবনা।
দুহাতে দিয়ার মুখখানি ধরে অনিন্দ্য বলে বলবনা দিয়া। আর কোনদিনও বলবনা।
নিজের দুহাত অনিন্দ্যর হাতের ওপর রেখে দিয়া বলে ঠিক তো? কথা দিচ্ছ?
– একদম ঠিক। কথা দিচ্ছি।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক। অনিন্দ্যর হাতে ধরা দিয়ার মিষ্টি মুখখানি। অনিন্দ্য আর আটকাতে পারেনা নিজেকে। মুখ নামিয়ে আনে দিয়ার মুখের কাছে। দুজনের নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে।
কি হতে চলেছে সেটা সহজেই অনুমান করে নেয় দিয়া। কিন্তু তাতে আর কোন আপত্তি নেই তার। ঠোঁটদুটো ঈষৎ ফাঁক হয়ে যায় দিয়ার। আবেশে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসে। দুহাতে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্যকে।
অনিন্দ্যর তপ্ত তৃষিত ওষ্ঠ নেমে আসে দিয়ার নরম ভেজা ঠোঁটের ওপর আর তখনই যেন কালঘড়ি থেমে যায়।
দুহাতে দিয়াকে জড়িয়ে ধরে দিয়ার ঠোঁটের আস্বাদ নিতে থাকে অনিন্দ্য। আবেশে তারও দুচোখ বন্ধ হয়ে যায়। দিয়া আঁকড়ে ধরে অনিন্দ্যর পিঠ। আরো কাছে টেনে নেয় প্রিয়তমকে। নিস্তব্ধ নদীতীরে শুধু চুমুর শব্দ ভেসে বেড়ায়।
দিয়াকে আরো নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্য। দিয়ার নরম বুক মথিত হয় অনিন্দ্যর পুরুষালী বুকে। দুজনের ঠোঁট এক হয়ে যায়। কমলার কোয়ার মত দিয়ার রসালো ঠোঁট চুষে চলে অনিন্দ্য।
দুজনেই অনভিজ্ঞ। দুজনেরই জীবনের প্রথম চুম্বন। কিন্তু কিছু জিনিষ হাতে ধরে শেখাতে হয়না। আপনা আপনি শিখে যায় মানুষ। যেমন এখন ওদেরকে শেখাতে হচ্ছেনা। ওরা নিজেরাই শিখে নিচ্ছে কিভাবে প্রেমের পরশ ছড়িয়ে দিতে হয়।
চুমুর আতিশয্যে দুজনেই গলে যায়। ওদের আদর শেষ হতে চায়না। যেন পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে এভাবেই পরস্পরকে চুমু খেয়ে চলেছে ওরা। আদরের ঘনঘটায় দিয়ার শরীর পুলকে কেঁপে কেঁপে ওঠে বারবার।
গভীর আশ্লেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে চায় ওরা।
দুজনের দম শেষ হয়ে আসে। ঠোঁট দুটো ছাড়িয়ে নিয়ে দুজনেই হাঁপাতে থাকে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। কিছুক্ষন দম নেয়। তারপর আবার ঝাঁপিয়ে পড়ে একে অন্যের ওপর।
এবার আরো জোরে জাপটে ধরে একে অপরকে। দুটো শরীর মিলেমিশে এক হয়ে যায়। দুজনের কারোরই কোন হুঁশ নেই। শুধু চুমু খেতে ব্যস্ত।
অনিন্দ্যর হাত ঘুরে বেড়ায় দিয়ার পিঠে। অনিন্দ্যর কামঘন স্পর্শে থেকে থেকে শিহরিত হয় দিয়া। অনিন্দ্যর চুল মুঠো করে ওর ঠোঁট কামড়ে ধরে। জন্ম জন্মান্তরের আদর শেষ করে থামে ওরা। হাঁপায়। দুজনের ঠোঁট একে অপরের লালায় ভিজে একাকার। দিয়ার কামড়ে অনিন্দ্যর ঠোঁটে গভীর দাগ। সেটা দেখে একই সাথে লজ্জিত আর শিহরিত হয় দিয়া।
অনিন্দ্যকে জড়িয়ে ধরে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে আই লাভ ইউ। দিয়ার গালে চুমু খেয়ে প্রত্যুত্তর দেয় অনিন্দ্য।
আরো আধঘন্টা দুজনে বসে থাকে নদীর পাড়ে।
অনিন্দ্যর কোলে মাথা রেখে শোয় দিয়া। অনিন্দ্যর স্নেহশীল হাত দিয়ার চুলগুলো নিয়ে খেলা করে। পরম আবেশে দিয়ার চোখ বন্ধ হযে যায়।
অনিন্দ্য ডাকে দিয়া
উমম। চোখ বন্ধ রেখে আদুরে গলায় উত্তর দেয় দিয়া।
অনিন্দ্য বলে আজকের দিনটা সারা জীবন মনে থেকে যাবে। এত সুন্দর সকাল আমার জীবনে আর আসেনি।
চোখ খুলে অনিন্দ্যর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে দিয়া বলে আমারও।
নিচু হয়ে দিয়ার কপালে চুমু খায় অনিন্দ্য।দিয়া অনিন্দ্যর হাতে চুমু খায়।
তারপর আবোল তাবোল কত কি কথা বলে যায় দুজনে। সব কথার মাথামুন্ডুও নেই।