Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সিরিজা by Lekhak
   ।। আটত্রিশ ।।


দিবাকরের মুখের ওপর সজোরে রজতের ঘুষিটা এমন জোরে পড়ল, দিবাকরের মনে হল, যাঃ দাঁতটাই বোধহয় গেল ভেঙে। সিরিজাকে ছেড়ে দিয়ে রজত এবার দিবাকরের কলার চেপে ধরেছে। খাবার টেবিলটার ওপর দিবাকরের শরীরটা পুরো বেঁকে গিয়েছে, রজত ওর ওপর চড়াও হয়েছে। দিবাকর পুরো ধরাশায়ী। রজত আবার ওকে মারবে বলে উদ্যোগ নিয়েছে, ঠিক তখনই টেবিলের ওপর একটা ছুরী রাখা ছিল। ওটা হাতে নিয়ে দিবাকর রজতের পেট চিরে দিলো ক্ষতবিক্ষত করে।

 -- "আঃ।" রজত কঁকিয়ে উঠলো।

রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা ঘরটা। চোখের সামনে রজতের দেহটা কাঁপতে কাঁপতে স্থির হয়ে গেল। সিরিজা দিবাকরকে চেঁচিয়ে বলে উঠলো, "তুমি ওকে খুন করে ফেললে? রজত..... রজত....."

মৃতদেহটাকে জড়িয়ে ধরে হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলো সিরিজা। দিবাকর রক্তমাখা ছুরীটা হাতে নিয়ে পাথরের মত দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারছে ওর হাতে শেষ পর্যন্ত খুন হয়ে গেছে রজত। হাত দুটো দিয়ে মুখটাকে চেপে ধরে দিবাকর বললো, "এ আমি কি করলাম? না না আমি তোমাকে খুন করতে পারি না রজত। সিরিজা তো তোমারই। প্লীজ আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও, চোখ খোলো। রজত..... রজত....."

হঠাৎই যেন হুঁশ ফিরলো দিবাকরের। বুঝতে পারলো, পুরো দৃশ্যটাকেই ও এতক্ষণ মনে মনে কল্পনা করছিল। রজত সিরিজা কারুরই কিছু হয় নি। ওরা অক্ষত। দিব্যি ঘরের মধ্যে কথা বলছে ওরা দুজনে। রজতের কথাটা পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে। সিরিজাও কথা বলছে মাঝে মাঝে।

দরজা থেকে সরে গিয়ে দিবাকর চেয়ারটায় আবার বসে পড়লো। প্যাকেট থেকে সিগারেট বার করে আর একটা সিগারেট ধরালো। মনে মনে বললো, "না, এ আমি কি করতে যাচ্ছিলাম? নিজের বাসনার তাগিদে শেষ পর্যন্ত রজতকে খুন করতে যাচ্ছিলাম? পশুর মতন আচরণ করতে যাচ্ছিলাম সিরিজার সঙ্গে? কি লাভ হত এসব করে? জোর করে সিরিজাকে হাসিল করে, কোনো লাভ হত কি? ও হয়তো রজতকে দেখে মন পাল্টে ফেলেছে। সিরিজা চায় না রজত ওর জন্য কষ্ট পাক। দিবাকরের জীবনে সিরিজা না থাকুক, রেশমী তো আছেই। যে মেয়েটা এতদিন বাদে ভুল বুঝে ওর কাছে ফিরে আসছে, দিবাকরকে তার কথাই চিন্তা করতে হবে, সিরিজার কথা নয়।"

চেয়ারে বসে ও সিগারেট টানতে লাগলো, আর মনে মনে ঠিক করে নিল, দরজা খুলে রজত বেরোলে একদম স্বাভাবিক থাকবে। মনের মধ্যে যে ক্ষোভ আর হিংসাটা জেগে উঠেছিল, সেটা কিছুতেই ওকে বুঝতে দেবে না। সিরিজাকেও নয়।

রজত বন্ধ ঘরের মধ্যে সিরিজাকে বললো, "আজ কিন্তু আমার মন ভরলো না সিরিজা। তুমি আমাকে কিছুই করতে দিলে না।"

সিরিজা বিছানার ওপর বসে, ব্লাউজটা লাগাতে লাগাতে বললো, "আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি? তোমারই তো আছি, সেটা তুমি বুঝতে পারো না?"

রজত সিরিজার গালে একটা চুমু খেলো। বললো, "পারি পারি। ঠিকই পারি। আজ তুমি একটু জড়োসড়ো হয়ে রয়েছো। দিবাকরের বাড়ী বলেই হয়তো তোমার অসুবিধে হচ্ছে।"

সিরিজা বললো, "হ্যাঁ।"

তারপরেই বললো, "দেখো হয়তো দিবাকরদা এসেও পড়েছে। পাশের ঘরেই বসে আছে। কি ভাবছে কে জানে?"

রজত বললো, "দাঁড়াও। আমি দেখছি, দিবাকর এসে পড়েছে কিনা?"

খাট থেকে উঠে দরজা খুললো রজত। দেখলো দরজাটার ঠিক পাশেই দিবাকর ঐ চেয়ারটাতে বসে। আপনমনে সিগারেট টানছে।

রজত বললো, "কখন এসেছো?"

দিবাকর বললো, "এই তো এলাম। তোমাদের ডাকতেই যাচ্ছিলাম। তারপরে ভাবলাম, কথা বলছো হয়তো। তাই বিরক্ত করিনি।"

রজতের পেছন পেছন বেরিয়ে এসেছে সিরিজাও। দিবাকর দেখলো, সিরিজা বুকের ব্লাউজটা লাগানো। একটু আগেই ওই ব্লাউজ খোলা বুকে মুখ ঘষছিল রজত। একপ্রকার বুক দুটোকে সিরিজাই নিবেদন করেছিল রজতের কাছে। ঠিক সেই মূহূর্তে দিবাকরও তখন তালা খুলে ঢুকে পড়েছে ঘরের ভেতরে। রজত, সিরিজা দুজনেই কেউ টের পায়েনি। দিবাকর ওই দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেনি। রজত, সিরিজাকে বুঝতে না দিয়ে দিবাকর ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার পরই রজত আবার সিরিজাকে নিয়ে আবার ঢুকে পড়ে শোবার ঘরে। দিবাকর ঘরে ঢুকে দেখছে, সিরিজা রজত দুজনেই কেউ বসার ঘরটাতে নেই। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কান পেতে শুনছিল ওদের কথোপকথন। তারপরেই যেন কিসব ঘটে গেল। সবই কল্পনায়। কোনোটাই সত্যি নয়।

রজত বললো, "দিবাকর, তুমি আমাদেরকে ফেলে হঠাৎ চলে গেলে? কোথায় গিয়েছিলে?"

দিবাকর বললো, "একটা জায়গা ঠিক করতে গিয়েছিলাম। এখানে সিরিজাকে রাখা তো আর নিরাপদ হবে না। তাই....."

সিরিজা কেমন অবাক হয়ে তাকালো দিবাকরের দিকে।

রজত বললো, "এই না হলে তুমি আমার বন্ধু। সিরিজাকে তো ঠিক এই কথাটাই বলছিলাম।"

দিবাকর বললো, "তুমি এক কাজ করতে পারো। সিরিজাকে নিয়ে কোথাও চলে যেতে পারো। আমি বরং এদিকটা সামলে নিচ্ছি।"

রজত বললো, "না, না, তুমি সামলাতে পারবে না। আমার ঝামেলা আমাকেই মেটাতে হবে। ওর বরটাকে ভাগাতে গেলে, আমার এখানে থাকা দরকার। আমি চলে গেলে ওরা আরও সন্দেহ করবে।"

দিবাকর বললো, "কিন্তু সিরিজার তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ওকে এখানে রেখে যদি শেষপর্যন্ত ঝামেলা আরও বাড়ে।"

রজত বললো, "আর একটা দিন দিবাকর। কষ্ট করে একটা দিন। কাল রেশমী আসলেই আমরা চারজনে অন্য কোথাও চলে যাবো।"

দিবাকর বললো, "কিন্তু....."

রজত বললো, "কোনো কিন্তু নয়। আমি ঠিক করে নিয়েছি। তবে আমার মনে হয়, এখানে না থেকে তোমাদের দুজনের কোনো হোটেলে চলে যাওয়া ভালো। একটা রাত্রির। তুমি সিরিজাকে সঙ্গ দাও। তারপরে আমি আবার আসছি।"

দিবাকর দেখলো, সিরিজা পুরো সায় দিচ্ছে রজতের কথাটায়। ঘাড় নেড়ে বলছে, "হ্যাঁ ঠিকই তো। ঠিকই তো।"

ওর ঠিক বোধগম্য হল না। বুঝতে পারছে না, সিরিজা আসলে কি চাইছে?

রজত বললো, "শোনো, আমি আর দেরী করবো না। আর হ্যাঁ, তোমার মোবাইলে রেশমীর ফোন নম্বরটা সেভ করে নাও। আজ রাতে তুমি রেশমীকে একটা ফোন করবে। কাল ওর আসার ব্যাপারটা কনফার্ম করে নেবে। তারপর আমাকে ফোন করে জানিয়ে দেবে। আমি ওখানে গিয়ে ওদের একটা ব্যবস্থা করছি। সেই সাথে দোলনেরও।"

দিবাকর বললো, "তুমি দোলনকে কি করে ভাগাবে?"

রজত বললো, "সে যা করার আমি করবো। উপায় আমি ঠিক করে নিয়েছি। জায়গা মত প্রয়োগ করবো। সিরিজার জন্য কিছু তো আমাকে করতে হবে। আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না।"

রজত দিবাকরের সামনেই সিরিজাকে একবার জড়িয়ে ধরলো পাশ থেকে। ওর ঘাড়ে পিঠে গলায় চুমু খেতে লাগলো। দিবাকর মুখটা নিচু করে নিলো। সিরিজা আরও অস্বস্তিতে পড়ে গেল।

 -- "নাও, ফোন নম্বরটা নাও।"

রজত, দিবাকরকে রেশমীর ফোন নম্বরটা দিলো। দিবাকর বললো, "কিন্তু রেশমীকে আমি আসতে বলবো কোথায়?"

রজত বললো, "কেন? তোমার বাড়ীতে।"

দিবাকর বললো, "বাড়ীতে তো আমি থাকবো না। আমি তখন হোটেলে।"

রজত বললো, "রেশমীর জন্যই তো তুমি আবার হোটেল ছেড়ে বাড়ীতে আসবে।"

দিবাকর যেন কিছুই বুঝতে পারছে না। চোখ দুটো কাচু মাচু মতন করে রজতের দিকে তাকালো। রজত বললো, "সিরিজার কথা ভাবছো তো?"

দিবাকর বললো, "হ্যাঁ।"

রজত বললো, "তুমি যখন রেশমীকে রিসিভ করতে বাড়ীতে আসবে। তখন সিরিজাকে হোটেলে রেখে আসবে। সিরিজা কয়েকঘন্টার জন্য ওখানে একা থাকবে। তারপরে আমিও চলে আসবো।"

দিবাকর ভালোমতন বুঝতে পারছে, এতোদিন ধরে রজতের জন্য অনেক উপকার ও করে এসেছে। এবারে শেষ উপকারটুকু করে, সিরিজাকে রজতের হাতেই তুলে দিতে হবে। যার জিনিষ, তার কাছেই ওকে ফিরিয়ে দিতে হবে শেষ পর্যন্ত।

ওর কথায় সায় দিয়ে দিবাকর বললো, "ঠিক আছে, তাই হবে তাহলে। আমি সিরিজাকে নিয়ে একটু পরে বেরোচ্ছি। কোন হোটেলে আছি। তোমাকে বলে দিচ্ছি ফোনে।"

রজত বললো, "আমাকে তুমি ফোন কোরো না। ফোন আমি তোমাকে করবো। নইলে ওরা বুঝে যাবে। বুদ্ধি করে সব কাজ করতে হবে।"

দিবাকর ঘাড় নাড়লো। রজতকে বললো, "তুমি চিন্তা কোরো না। তোমার কথা মতই সব কাজ হবে।"

সিরিজাকে আবার জড়িয়ে ধরে ওর কপালে চুমু খেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল রজত। দিবাকর দেখলো, সিরিজা ওর দিকে তাকিয়ে আছে, কিন্তু ওর এই তাকানোতে মনের মধ্যে ঝড়টা আর বইছে না। কাল রাতে সিরিজা একটা ঝড় বইয়ে দিয়েছিল দিবাকরের শরীরে। কিন্তু আজ ওই ঝড়টা আর নেই। দিবাকরের ভেতরের পৃথিবীটা এখন অনেক শান্ত হয়ে গেছে।

দিবাকর সিরিজাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো, "ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন? তৈরী হয়ে নাও। আমাদেরকে তো হোটেলের জন্য এবারে বেরোতে হবে।"

সিরিজা দিবাকরের চোখের ওপর থেকে চোখ সরাচ্ছে না। একনাগাড়ে ওভাবে তাকিয়ে থাকাটা দিবাকরের মনে কোনো প্রভাব ফেলছে না। দিবাকর একটু বিরক্ত হয়েই বললো, "বেশী দেরী করে ফেললে কিন্তু মুশকিল হয়ে যাবে। ওদিকে রজত কিভাবে ব্যাপারটা সামলাবে, আমি এখনো জানি না। তারপরে ওরা আবার যদি জেনে যায়, তুমি এখানে আছো। তখন আমি পড়ে যাবো আরো অস্বস্তিতে। কেউ কিছু সন্দেহ করার আগেই আমাদের চলে যেতে হবে হোটেলে। তুমি তো স্নানটা বোধহয় সেরে নিয়েছো। এবারে পুরোপুরি তৈরী হয়ে নাও। আমি ততক্ষণ স্নান সেরে রেডী হয়ে নিচ্ছি।"

সিরিজা তবু এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে পাথরের মতন। দিবাকরকে কিছু বলতে চাইছে, কিন্তু সেভাবে বলার মতন শক্তিটা অর্জন করতে পারছে না।

দিবাকর বললো, "কি হয়েছে? কিছু বলবে?"

অনেক কষ্টে সিরিজা এবার মুখ দিয়ে দুটো কথা বের করলো। - "তুমি খুব রেগে আছো। তাই না দিবাকরদা?"

দিবাকর মুখটা নিচু করে নিলো। এখন ওর রেগে যাওয়াতে আর কি যায় আসে?

 - "আমার কিছু করার ছিলো না, দিবাকরদা। ও, যেভাবে এসে বললো, বাড়ীতে সুখেনও নাকি চলে এসেছে। আমাকে ধরার জন্য বসে আছে। এই মূহূর্তে আমি দেখলাম, তোমার বন্ধুকে যদি মুখের ওপরে আমি না করে দিই, তাহলে হয়তো সে খারাপটা কিছু করে বসতে পারে। আমি তাকে সবই বলেছি, তুমি যে আমাকে ভালোবাসো, তাও বলেছি। কিন্তু তবু আমি ওকে কিছু বুঝতে দিই নি। পাছে রজত চটে না যেতে পারে। আমি তো ওকে শুধু সামাল দিচ্ছিলাম। একটু ঠেকনা দিচ্ছিলাম। যাতে ও কিছু সন্দেহ করতে না পারে।"

সিরিজা দেখলো, এতো কিছু বলার পরেও দিবাকর সেই মুখ নীচু করেই বসে আছে। সিরিজার কথাটায় ওর মনের কোনো পরিবর্তন হয় নি। যেন আর আগ্রহই নেই এসব ব্যাপারে। এখন শুধু রজতের কথামতন বাকী কাজটুকু ও সেরে নিতে প্রস্তুত।

সিরিজা এবার বললো, "ঘরের মধ্যে ওকে আমি ডেকে নিয়ে গিয়েছিলাম, তার জন্যও তুমি আমার ওপর চটে আছো, তাই না দিবাকরদা?"

দিবাকর এবারও চুপ।

সিরিজা বলতে লাগলো, "বিশ্বাস করো। ও আমার সাথে অনেক কিছু করতে চেয়েছিলো। আমাকে বিছানায় নিয়ে....."

দিবাকর ওকে বাধা দিয়ে বললো, "থাক না সিরিজা। কেন এসব কথা তুমি তুলছো? রজত তোমার সঙ্গে ঘরের দরজা বন্ধ করে কি করেছে বা কি করতে চেয়েছে, আমি কি দেখেছি? না তোমাকে আমি এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করেছি?"

সিরিজা বললো, "তোমার কাছে আমি অনেক খারাপ হয়ে গেছি, তাই না দিবাকরদা?"

দিবাকর বললো, "দুনিয়ায় সবাই ভালো। আমিই শুধু খারাপ। খারাপ বলেই আমাকে এত কষ্ট সহ্য করতে হয়। আমি আবার যখন অন্যের ভালো করতে যাই, তখনো আমি খারাপ হই।"

চেয়ারটায় বসেছিল দিবাকর। ওর আর একটু কাছে এগিয়ে এলো সিরিজা। দিবাকরকে বললো, "আমি তো খারাপই। নইলে কি আর নিজের মরদটাকে ছেড়ে চলে আসতাম? দুনিয়ায় সবাই ভালো। তুমি ভালো, তোমার বন্ধুও ভালো। খারাপ শুধু আমিই। না আমি তোমার কাছে ভালো হতে পারছি, না তোমার বন্ধুর কাছে।"

দিবাকর বললো, "আমার কাছে তোমাকে ভালো হতে হবে না। তুমি রজতের কাছেই ভালো থাকো। তাহলেই হবে।"

হঠাৎই দিবাকরের পায়ের কাছে বসে পড়লো সিরিজা। দিবাকরের পা দুটো জড়িয়ে বললো, "আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও। আমি অনেক ভুল করে ফেলেছি।"

দিবাকরের পা ধরে হাঁটুর ওপর মাথা রেখে সিরিজা এমন কাকুতি মিনতি করতে লাগলো, দিবাকর ভীষন অস্বস্তিতে পড়ে গেলো।

 -- "এই কি করছো, কি করছো? ছাড়ো বলছি।"

দিবাকর সিরিজার কাঁধ দুটো ধরে ওর পা টাকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগলো।

মাথা সরাচ্ছে না সিরিজা। দিবাকরের পা টাকে হাত দিয়ে জাপটে ধরে রেখেছে সিরিজা। দিবাকর বললো, "শোনো শোনো, আমার কথা শোনো। আমি বুঝেছি, তুমি কি বলতে চাইছো। তুমি যেটা করেছো, সেটা না করলে রজত বিগড়ে যেতো। ও তক্ষুনি, প্রতিহিংসার বশে তোমার ক্ষতি করে দিতে পারতো। আমি তো রজতকে এই কটা দিন ধরে দেখে আসছি। তোমাকে না পেলে ও কাউকেই সেই সুযোগ পেতে দেবে না। আমাকে রজত শুরুতেই আজ এসে একটু সন্দেহ করেছে। সকালে ওর আমি ফোনটা ধরিনি। মনে মনে তখুনি রজত সন্দেহ শুরু করে দিয়েছিল আমাকে নিয়ে। এক দিক দিয়ে তুমি ওকে খুশি করেছো, এখন ও কিছুটা শান্ত।"

সিরিজা বললো, "আমি সেভাবে ওকে কোনো খুশী করিনি। তুমি বিশ্বাস করো।"

দিবাকর বিশ্বাস করলো না। কারণ ওর চোখের সামনে তখন সেই ছবিটা ভেসে উঠছে। তালা খুলে ঘরে ঢুকেছে দিবাকর। আর দেখছে, সিরিজাকে জাপটে ধরে রজত ওর বুক চুষছে। সিরিজা, রজত কেউ ওকে দেখতে পায়নি। তাই সিরিজা এখন এ কথা বলছে। কিন্তু দিবাকর তো জানে। ঘরের বাইরেই সিরিজা রজতকে যেভাবে খুশি করছিল, ঘরের মধ্যে না জানি আরো কত কিছু করেছে।

তবু ও বললো, "ঠিক আছে, ঠিক আছে, তুমি এবার তৈরী হবে কি? আমাদের কে কিন্তু এবার বেরোতেই হবে।"

দিবাকরকে অবাক করে দিয়ে সিরিজা বললো, "চলো না, হোটেলে না গিয়ে আমরা অন্য কোথাও চলে যাই। যেখানে কেউ আমাদের খুঁজে পাবে না।"

 -- "মানে?"

 - "মানে, তুমি আর আমি শুধু। কেউ ওখানে আর থাকবে না।"

 -- "সেকী, রজত তো তাহলে তোমাকে খুব মিস করবে। পাগল হয়ে যাবে তোমার জন্য।"

 - "আমি রজতকে আর চাই না দিবাকরদা, আমি শুধু তোমার সাথেই থাকতে চাই।"

 -- "কি বলছো কি সিরিজা? তোমার মাথার ঠিক আছে?"

 - "ঠিকই বলছি তো। কাল রাত থেকে আজ অবধি, সবকিছু একই আছে। সব ঠিক আছে। মাঝের একঘন্টা তোমার বন্ধু খালি এসেছিল। ওই সময়টুকু বাদ দিয়ে তুমি ধরে নাও, কালকের সিরিজা এখনো কালকেরই আছে। সিরিজার মন পাল্টে যায়নি।"

কিছু বুঝতে পারলো না দিবাকর। থতমত খেয়ে বললো, "কিন্তু সিরিজা, রজতকে তাহলে ঠকানো হয়ে যাবে না? ও এতো আশা নিয়ে গেছে। কি হবে তাহলে রজতের?"

সিরিজা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। যেন দিবাকর শেষ মূহূর্তে সিরিজা পরীক্ষা করে দেখে নিচ্ছে, রজতের প্রতি ওর কোনো দূর্বলতা আছে কিনা?

কিছুটা আমতা আমতা করেই ও বললো, "তুমি কি ভাবো, তোমার বন্ধু এই ঝামেলা সামাল দিতে পারবে?"

দিবাকর বললো, "কেন সামাল দিতে পারবে না কেন?"

সিরিজা বললো, "আমার মন বলছে, এই ঝেমেলা থেকে ও বেরোতে পারবে না।"

দিবাকর এবার চুপ করে রইলো। কঠিন এক পরিস্থিতি। যেন মাথা কাজ করছে না। ব্রেন অবশ হয়ে যাচ্ছে। সিরিজাকে বললো, "তুমি সত্যি বলছো?"

সিরিজা বললো, "এই তোমার শরীর ছুঁয়ে বলছি।" বলেই দিবাকর হাতের ওপর হাতটা রাখলো সিরিজা।

সিরিজার মুখের মধ্যে আবার সেই আকুতিটা ফুটে উঠেছে। দিবাকরকে পাওয়ার জন্য সিরিজা যে ছটফটানিটা দেখিয়েছিল কালকে। শেষমেশে দিবাকরও তাল মিলিয়েছিল সিরিজার সাথে। এখন আবার যেন ভেতরে ভেতরে কামনাটা জাগছে। শুধু মনে একটা প্রশ্ন, রজতের তাহলে কি হবে? কাল রেশমী আসছে। রেশমীর কি হবে?

দিবাকরের মুখ দিয়ে রেশমীর নামটা বেরিয়েও পড়লো। সিরিজাকে বললো, "কিন্তু কাল যে রেশমী আসছে, তাহলে কি হবে?"

সিরিজা বললো, "রেশমীর আসার সত্যিই কি কোনো দরকার আছে? তুমি ফোন করে ওকে না করে দিলে হবে না?"

দিবাকর বুঝতে পারছে সিরিজা ওকে পাওয়ার জন্য এতটাই আকূল যে রেশমীর প্রতিও ওর কোনো সহানুভূতি নেই। রেশমী দিবাকরের জীবনে আবার ফিরে আসুক, সেটা বোধহয় সিরিজা আর মন থেকে চাইছে না।

 - "তুমি কি রেশমীকে এখনো চাও দিবাকরদা? ও আসুক ফিরে, তুমি চাও?"

দিবাকর কোনো জবাব দিতে পারছে না।

সিরিজা আবার বললো, "রেশমীকে কি তুমি এখনো ভালোবাসো?"

কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো, দিবাকর। তারপর হঠাৎই সিরিজাকে জড়িয়ে ওর ঠোঁটে, গালে, কপালে পাগলের মত চুমু খেতে লাগলো। মূহূর্তে নিজের ঠোঁটটা এক করে দিলো সিরিজার ঠোঁটের সাথে। পাগলের মত সিরিজার ঠোঁট চুষতে চুষতে বললো, "না, আমি রেশমীকে চাই না সিরিজা। আমি শুধু তোমাকেই এখন চাই।"

সিরিজা দিবাকরকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো। চুম্বনের খেলা চলতে লাগলো বেশ কিছুক্ষণ ধরে। ঠিক তখনই দিবাকরের মোবাইলে রজতের ফোন এলো। দিবাকর ফোন ধরতেই রজত বললো, "কি গো? বেরিয়েছো তোমরা? তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ো। হোটেলে পৌঁছে আমাকে একটা মিস কল দিও। সময় কিন্তু হাতে বেশী নেই।"

[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 07:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kalobonduk - 03-10-2020, 07:11 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kolir kesto - 03-10-2020, 09:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by sohom00 - 04-10-2020, 10:02 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by nightangle - 04-10-2020, 12:47 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 06-10-2020, 08:36 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 07-10-2020, 07:47 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 07-10-2020, 03:53 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 08-10-2020, 07:13 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 16-10-2020, 02:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 25-10-2020, 02:58 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 27-10-2020, 08:54 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by pagolsona - 30-10-2020, 11:36 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by raja05 - 18-06-2021, 04:24 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Fokir_sadhU - 09-10-2022, 01:52 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:03 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Arpon Saha - 09-10-2022, 02:56 AM



Users browsing this thread: 16 Guest(s)