26-10-2020, 06:21 PM
বলতে পারছে না। কারন সিরিজার স্বামীটাও তালে গোলে এমন সময় এসে হাজির হয়েছে, যে রজত সব দোষ দিবাকরের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে। বলা যায় না, স্বামীটাকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারে এ বাড়ীতে। ভালোমানুষ সেজে ঐ মাতালটাকে বলবে, সিরিজার সাথে আমি তো কিছু করিনি, যা করার ঐ লোকটাই করেছে। সুতরাং ওকে পাকড়াও। তোমার বউ এর মাথা খাওয়ার মূলে ওই। আমি তো নিতান্তই সাধুপুরুষ।
দিবাকরকে চমকে দিয়ে রজত বললো, "এতো নাটক কেন করো? আসল কথাটা বলে দিলেই তো হয়?"
দিবাকর যেন আকাশ থেকে পড়লো, বললো, "কিসের নাটক? কি করেছি আমি?"
রজত বললো, "এই যে, রেশমীকে নিয়ে তুমি হয়তো আমার আর সিরিজার সাথে ভিড়তে চাও না। নির্জনে প্রেম করবে। তা সেটা তো বললেই হয়। অত ন্যাকামোর কি আছে?"
দিবাকর বললো, "দাঁড়াও দাঁড়াও, আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে।"
রজত বললো, "কি?"
- "সিরিজ আর রেশমী দুজনকে নিয়েই আমি না হয় গায়েব হয়ে যাচ্ছি। তোমার এই মূহূর্তে গা ঢাকা দেওয়াটা ঠিক হবে না।"
রজত বেশ চেঁচিয়ে উঠে বললো, "ওয়াট?"
এতক্ষণ ওর চোয়ালটা শক্ত হয় নি। এবার সত্যি সত্যি শক্ত হল। মনে মনে দিবাকরকে গাল দিয়ে বললো, "শালা, তোর পেটে পেটে এত? একটার বদলে এখন দুটো? তোর ঐ নিচের আখাম্বাটার জোর আছে? দুজনকে সামাল দিতে পারবি তুই? সে ক্ষমতা তোর আছে?"
দিবাকর বললো, "তুমি যতই অন্যকিছু ভাবো, আমি কিন্তু তোমার জন্যই....."
রজত বললো, "মানে?"
- "মানে তুমি বুঝতে পারছো না? এখন যদি ঐ বাড়ীতে জোর করে কদিন একাই থাকতে পারো, তাহলেই তো মুশকিল আসান। ওর বরটাকে বলবে, সিরিজা তো আমার কাছে নেই। ওকে অন্য কেউ নিয়ে পালিয়ে গেছে। আর কোথায় গেছে তুমিও জানো না। ওর বরটা হন্যে হয়ে কদিন ঘুরবে, তারপর হতাশ হয়ে গ্রামে ফিরে যাবে। আর তুমিও তখন আবার ফিরে আসবে আমাদেরই কাছে।"
কি বুদ্ধি! রজত মনে মনে বললো, "শালা তোর পেটে পেটে এত? একটাকে নয়, দুটোকেই চাই? সিরিজাকেও চাই আবার রেশমীকেও চাই? জীবনে কোনদিন, মেয়েমানুষের গা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখলি না। একবার সিরিজার আর আমার ভালোবাসা দেখে তুই শুকনো ডাঙায় আছাড় খেলি। তোর পেটে পেটে এখন এতো?"
দিবাকরও বুঝতে পারছিল, কথাটা রজতের হজম করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে, ও মনে মনে বললো, "কেন, এখন কদিন না হয় দোলনকে নিয়েই তুমি ফূর্তী করো। রেশমী সিরিজা কেউ যখন তোমার সাথ দেবে না। তখন ওদেরকে যা বোঝার আমাকেই তো সব বুঝে নিতে হবে, তাই না? আগে তুই সিরিজার বরটাকে কিভাবে সামল দিবি, সেটা নিয়েই বেশী চিন্তা করো।"
এক নারীকে নিয়ে টানাপোড়েন, আর দ্বন্দ। কি অবস্থাই হয়েছে এখন দুজনের মধ্যে। কেউ সিরিজাকে ছাড়ার পক্ষপাতী নয়। পারলে যেন, এই মারে কি সেই মারে। আর কি?
রজত বললো, "সিরিজা এত দেরী করছে কেন? কখন ঢুকেছে বাথরুমে? কুড়ি মিনিট তো হয়ে গেল বসে আছি। বেরুবার নামই করছে না।"
দিবাকর, রজতের অস্থির হওয়াটা দেখে বেশ মজা পাচ্ছিল। এখন সিরিজা রজতের আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মায়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে দিবাকরকেই সঙ্গী করেছে। কাল রাতে সিরিজাকে অবজ্ঞা করার মজাটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রজত। বলা যায় না ও হয়তো ইচ্ছে করেই বেরোচ্ছে না। রজত যাতে আরো ব্যতিব্যস্ত হয়। ছটফট করে মরে যাবে রজত। জানে না কি ভুলই ও কাল করেছে।
ঠিক তার দু মিনিট পরেই বাথরুম থেকে স্নান সেরে বেরোলো সিরিজা। রজত দিবাকর দুজনেই ওকে দেখে বেশ অবাক হল। দেখলো সিরিজা ভিজে শাড়ীটা গায়ে জড়িয়েছে। কিন্তু শাড়ীটা এমন ভাবে চেপে বসেছে, শরীরর উঁচু নিচু খাঁজগুলো সব শাড়ীর তলাতেও স্পষ্ট। স্তনের বোঁটার চারপাশে কালো আর খয়েরী মেশানো অংশটা, যেটা একটা কালো আধার তৈরী করেছে। ভিজে শাড়ীর তলা থেকেও ওটা স্পষ্ট বিদ্যমান। ফুলে থাকা বোঁটাদুটো যেন বিকশিত হচ্ছে ভেতর থেকে। এত উন্নত আর দৃঢ় সিরিজার স্তন। সেঁটে থাকা শাড়ীটা যেন জৌলুস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বুকদুটোর। রজত ঠোঁটদুটো একটু হাঁ করে ফেললো। কিন্তু দিবাকর হাঁ করলো না। ওর জিভটা দাঁতের ফাঁকে কোথায় যেন আটকে গেল। মনে হল, সিরিজার ওই শক্তিশালী বুক দুটো দেখে জিভ এমনভাবে জড়িয়ে গেছে, ওটাকে এখন স্বাভাবিক করা বেশ শক্ত।
রজত আত্মহারার মতন বলে উঠলো, "সিরিজা তুমি বেরিয়েছো? আমি তো কখন থেকে এসে বসে আছি তোমার জন্য।"
সিরিজা, দিবাকরের দিকে একবারও তাকালো না। রজতকে বললো, "আমি বাথরুমের ভেতর থেকে সবই শুনছিলাম, তোমার কথা। ঐ সুখেনটা এসেছে বুঝি? ও আমাকে নিয়ে যাবে? জোর করে? আমিও যাবো ওর সঙ্গে? এতদিন বাদে, আবার আমার জন্য তার এত দরদ কেন? পারে তো অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করে নিক। সুন্দরী মেয়ের তো অভাব নেই ঐ গ্রামেতে। ও যা অপদার্থ লোক। কে বিয়ে করবে ওকে? ভেবেছে, আমিই বুঝি, সারাজীবন ওর গলায় মালা দিয়ে থাকবো? আমার নিজস্ব কোন শখ আল্লাদ নেই? স্বাধীনতা নেই।"
রজত কিছু বলতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "তোমাকে সেই থেকে কত ঝেমেলা পোয়াতে হচ্ছে। অথচ আমিই বলেছিলাম, আমাকে নিয়ে তোমার কোন সমস্যা নেই। এখন সব জোট হয়েছে এক সাথে।"
রজত উঠে দাঁড়িয়ে তখনই জড়িয়ে ধরে সিরিজাকে চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা একটু চালাকী করলো, রজতকে বললো, "একটু বসো, আমি এক্ষুনি আসছি, কাপড়টা ছেড়ে।"
এই বলে শোবার ঘরে ঢুকলো। আর দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল। রজতের আর ভেতরে ঢোকা হলো না।
সিরিজার আচরণটা ঠিক বোধগম্য হল না দিবাকরের। রজত বললো, "আসলে তুমি সামনে রয়েছ তো, তাই একটু লজ্জ্বা পেল মনে হয়।"
বলেই আপন মনে হাসতে লাগলো রজত। আবার একটা সিগারেট ধরালো। মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে। দিবাকরকে নিয়ে একটা সন্দেহ করেছিল ও। সিরিজা ওভাবে রজতের প্রতি দরদ দেখাতে সন্দেহটা এখন কেটে গেছে।
বেশ খুশি মনেই দিবাকরকে বললো, "দিবাকর কিছু যদি মনে না করো, সিরিজা বেরোলেই, আমি ওঘরে একটু ঢুকবো। ওর সাথে কিছু কথা আছে আমার। তাছাড়া, ওকে নিয়ে একটু খুনসুটি, আর সাথে কিছু আদর। বোঝো তো সব। তুমি যদি এক ঘন্টা এঘরে একটু একা থাকো, আপত্তি নেই তো তোমার?"
রজতের কথাটা দিবাকরের মাথায় যেন বাজ পড়ার মতন হল। বুঝতেই পারছিল, ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি তৈরী হতে যাচ্ছে একটু পরে। এতবড় সাহস ওর? বলে কিনা, এক ঘন্টা আমি সিরিজাকে আদর করবো, আর তুমি ততক্ষণ এঘরে একদম এসো না। আমি উজবুক? আমি নির্বোধ? শালা খচ্চর একটা, দম থাকে তো, সিরিজাকে আদর করে দেখা দেখি ওঘরে? তোর ক্ষমতায় কুলোবে না। সিরিজা তোকে.....
বলতে বলতেই শোবার ঘরের দরজাটা খুলে সিরিজা এসে দাঁড়ালো সামনে। দিবাকরকে অবাক করে সিরিজা রজতকে বললো, "এঘরে আসবে নাকি? দিবাকরদা ততক্ষণ, না হয় এঘরেই বসুক। আমার কাপড় ছাড়া হয়ে গেছে। এসো তাহলে।"
সিরিজার ওই এক কথাতেই রজতের মনে হল, আগের সিরিজা যেন আগের মতই আছে। কোন পরিবর্তন নেই, ঠিক যেন চেনাপরিচিত সেই ঢং। সেই আকুতি, সেই শরীরের টান, রজতকে কাছে পাবার জন্য যে নিজেও ছটফট করে মরে।
রজত চেয়ার ছেড়ে পুরো লাফিয়ে উঠলো, ভাবলো, "এই তো আমার জান নিজে থেকেই ডেকেছে আমাকে। যেন এখুনি ঘরে ঢুকে সিরিজার শরীরটা ওপর থেকে নিচ অবধি, মন মাতানো সুখে চাটবে। আদরে আদরে ভরিয়ে দেবে শরীর। ওকে পাওয়া মানে, সব বাঁধাকে হেলায় তুচ্ছ করা। সিরিজা কাছে থাকলে, টেনশন বলে পৃথিবী কিছু আর থাকে না।"
দিবাকর পুরো হতভম্ব। সিরিজার হঠাৎ রজতকে এভাবে ঘরে ডেকে নেবার উদ্দেশ্য কি, ওর কিছুই মাথায় ঢুকলো না। কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। তারপর দেখলো, সিরিজা, রজত দুজনেই ওকে প্রায় কলা দেখিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল।
চেয়ারে একা একা বসে রইলো দিবাকর। দেখলো, শোবার ঘরের দরজাটাও আসতে আসতে বন্ধ হচ্ছে। তারমানে এই মূহূর্তে ওর ঘরে ঢোকারও আর কোন অধিকার নেই।
কেন এমন করলো সিরিজা? তাহলে কি রেশমীর ব্যাপারটাই ওকে সম্পূর্ণ বদলে দিল? রজত এতক্ষণ চেয়ারে বসে রেশমীর কথাগুলো জোরে জোরে এমন ভাবে বলেছে, সিরিজা বোধহয় সবই শুনেছে বাথরুম থেকে। রেশমী আসছে, এই শুনেই কি সিরিজা তাহলে সরে যেতে চায় দিবাকরের জীবন থেকে? আবার সেই রজতকেই মেনে নেওয়া। রজতের হাজার দোষ থাকা সত্ত্বেও? সিরিজার দেওয়া প্রতিশ্রতি, রজতের প্রতি তার তীব্র অভিমান, সব দিবাকরের মনে হচ্ছিল, মনগড়া সব কথা। পুরুষের মনকে আকৃষ্ট করতে সিরিজা এসবে দক্ষ। সাধে কি সবাই ওর জন্য পাগল হয়? রজত পাগল হয়েছে এমনি এমনি?
মুখটা এমন ভাবে ব্যাজার করে বসে রইলো দিবাকর, যেন দেখে মনে হবে একটু আগে শ্মশান থেকে উঠে এসেছে। মনে মনে ভাবল, না সিরিজা নয়, এখন মনে হচ্ছে রেশমীই আমার জীবনে ঠিক নারী। কথায় কথায় এমন পাল্টি খেতে রেশমী জানে না। ভালোবাসাটা ওর কাছে স্বচ্ছ। সিরিজার মত মেকী ভালোবাসা নয়। দেহগত ভালোবাসা ছাড়া সিরিজা মনে হয় আর কিছুই জানে না।
একটু কান খাড়া করে শোনবার চেষ্টা করলো দিবাকর, ওদের দুজনের মধ্যে কি কথা হচ্ছে। কিন্তু ও দেখলো, দরজাটা ভেতর থেকে সিরিজা বা রজত যেই হোক না কেন, এমন ভাবে লাগিয়েছে, টু শব্দটিও শোনা যাচ্ছে না ভেতর থেকে। যেন ওরা দুজনে খুব আস্তে আস্তে কথা বলছে। বাইরে থেকে দিবাকর শুনুক, সেটা দুজনের কেউ চায় না।
সিরিজাকে ঘরের মধ্যে পেয়ে রজত প্রথমেই ওর ঠোঁটে একটা জোরালো চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "এই দাঁড়াও, দাঁড়াও। পাশের ঘরে দিবাকরদা আছে, সেটা খেয়াল আছে তোমার?"
রজত বললো, "কে দিবাকর? আমি চিনি না ওকে।" বলেই সিরিজাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত দুহাতে।
- "কি করছো তুমি?"
-- "আমার সিরিজাকে এখন একটা চুমু খাবো।"
- "কেন? কাল বুঝি চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা মনে পড়েনি?"
-- "কাল তো আমি দোলনের শুধু মন রেখেছি সিরিজা, তুমি বুঝতে পারো নি?"
- "খুবই পেরেছি। দোলনকে নিয়ে তোমার অত পীরিত।"
-- "পীরিত? ঐ পাজী মেয়েটাকে নিয়ে পীরিত? কখনই নয়।"
- "তাহলে কি?"
-- "ওটা সিরিজাকে চিরকাল পাওয়ার জন্য।"
- "আমাকে চিরকাল পাবে বলে, তুমি এখানে পাঠিয়ে দিলে? তাই বুঝি?"
রজত সিরিজার ঠোঁটের কাছে ঠোঁটটা নিয়ে গিয়ে বললো, "কেন? তুমি বোঝো না? আমি তোমাকে কতটা চাই? সারা পৃথিবী একদিকে, আর তুমি আমি একদিকে। এত লড়াই করছি কার জন্য? শুধু তোমাকে পাব বলেই তো....."
সিরিজা বললো, "আমাকে পেতে তোমার কত কষ্টই সহ্য করতে হচ্ছে তাই না?"
রজত বললো, "দূর, এ আর এমন কি কষ্ট? কষ্টটা মনে করলেই কষ্ট। তোমার জন্য আমি সব বাঁধা অতিক্রম করতে পারি। কেউ তোমাকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না আমার কাছ থেকে।"
সিরিজা বললো, "দোলন তোমাকে বুঝি কাল অনেক জ্বালিয়েছে? সারারাত শুতে দিয়েছিল তোমাকে? না কি....."
দিবাকরকে চমকে দিয়ে রজত বললো, "এতো নাটক কেন করো? আসল কথাটা বলে দিলেই তো হয়?"
দিবাকর যেন আকাশ থেকে পড়লো, বললো, "কিসের নাটক? কি করেছি আমি?"
রজত বললো, "এই যে, রেশমীকে নিয়ে তুমি হয়তো আমার আর সিরিজার সাথে ভিড়তে চাও না। নির্জনে প্রেম করবে। তা সেটা তো বললেই হয়। অত ন্যাকামোর কি আছে?"
দিবাকর বললো, "দাঁড়াও দাঁড়াও, আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে।"
রজত বললো, "কি?"
- "সিরিজ আর রেশমী দুজনকে নিয়েই আমি না হয় গায়েব হয়ে যাচ্ছি। তোমার এই মূহূর্তে গা ঢাকা দেওয়াটা ঠিক হবে না।"
রজত বেশ চেঁচিয়ে উঠে বললো, "ওয়াট?"
এতক্ষণ ওর চোয়ালটা শক্ত হয় নি। এবার সত্যি সত্যি শক্ত হল। মনে মনে দিবাকরকে গাল দিয়ে বললো, "শালা, তোর পেটে পেটে এত? একটার বদলে এখন দুটো? তোর ঐ নিচের আখাম্বাটার জোর আছে? দুজনকে সামাল দিতে পারবি তুই? সে ক্ষমতা তোর আছে?"
দিবাকর বললো, "তুমি যতই অন্যকিছু ভাবো, আমি কিন্তু তোমার জন্যই....."
রজত বললো, "মানে?"
- "মানে তুমি বুঝতে পারছো না? এখন যদি ঐ বাড়ীতে জোর করে কদিন একাই থাকতে পারো, তাহলেই তো মুশকিল আসান। ওর বরটাকে বলবে, সিরিজা তো আমার কাছে নেই। ওকে অন্য কেউ নিয়ে পালিয়ে গেছে। আর কোথায় গেছে তুমিও জানো না। ওর বরটা হন্যে হয়ে কদিন ঘুরবে, তারপর হতাশ হয়ে গ্রামে ফিরে যাবে। আর তুমিও তখন আবার ফিরে আসবে আমাদেরই কাছে।"
কি বুদ্ধি! রজত মনে মনে বললো, "শালা তোর পেটে পেটে এত? একটাকে নয়, দুটোকেই চাই? সিরিজাকেও চাই আবার রেশমীকেও চাই? জীবনে কোনদিন, মেয়েমানুষের গা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখলি না। একবার সিরিজার আর আমার ভালোবাসা দেখে তুই শুকনো ডাঙায় আছাড় খেলি। তোর পেটে পেটে এখন এতো?"
দিবাকরও বুঝতে পারছিল, কথাটা রজতের হজম করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে, ও মনে মনে বললো, "কেন, এখন কদিন না হয় দোলনকে নিয়েই তুমি ফূর্তী করো। রেশমী সিরিজা কেউ যখন তোমার সাথ দেবে না। তখন ওদেরকে যা বোঝার আমাকেই তো সব বুঝে নিতে হবে, তাই না? আগে তুই সিরিজার বরটাকে কিভাবে সামল দিবি, সেটা নিয়েই বেশী চিন্তা করো।"
এক নারীকে নিয়ে টানাপোড়েন, আর দ্বন্দ। কি অবস্থাই হয়েছে এখন দুজনের মধ্যে। কেউ সিরিজাকে ছাড়ার পক্ষপাতী নয়। পারলে যেন, এই মারে কি সেই মারে। আর কি?
রজত বললো, "সিরিজা এত দেরী করছে কেন? কখন ঢুকেছে বাথরুমে? কুড়ি মিনিট তো হয়ে গেল বসে আছি। বেরুবার নামই করছে না।"
দিবাকর, রজতের অস্থির হওয়াটা দেখে বেশ মজা পাচ্ছিল। এখন সিরিজা রজতের আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মায়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে দিবাকরকেই সঙ্গী করেছে। কাল রাতে সিরিজাকে অবজ্ঞা করার মজাটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রজত। বলা যায় না ও হয়তো ইচ্ছে করেই বেরোচ্ছে না। রজত যাতে আরো ব্যতিব্যস্ত হয়। ছটফট করে মরে যাবে রজত। জানে না কি ভুলই ও কাল করেছে।
ঠিক তার দু মিনিট পরেই বাথরুম থেকে স্নান সেরে বেরোলো সিরিজা। রজত দিবাকর দুজনেই ওকে দেখে বেশ অবাক হল। দেখলো সিরিজা ভিজে শাড়ীটা গায়ে জড়িয়েছে। কিন্তু শাড়ীটা এমন ভাবে চেপে বসেছে, শরীরর উঁচু নিচু খাঁজগুলো সব শাড়ীর তলাতেও স্পষ্ট। স্তনের বোঁটার চারপাশে কালো আর খয়েরী মেশানো অংশটা, যেটা একটা কালো আধার তৈরী করেছে। ভিজে শাড়ীর তলা থেকেও ওটা স্পষ্ট বিদ্যমান। ফুলে থাকা বোঁটাদুটো যেন বিকশিত হচ্ছে ভেতর থেকে। এত উন্নত আর দৃঢ় সিরিজার স্তন। সেঁটে থাকা শাড়ীটা যেন জৌলুস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বুকদুটোর। রজত ঠোঁটদুটো একটু হাঁ করে ফেললো। কিন্তু দিবাকর হাঁ করলো না। ওর জিভটা দাঁতের ফাঁকে কোথায় যেন আটকে গেল। মনে হল, সিরিজার ওই শক্তিশালী বুক দুটো দেখে জিভ এমনভাবে জড়িয়ে গেছে, ওটাকে এখন স্বাভাবিক করা বেশ শক্ত।
রজত আত্মহারার মতন বলে উঠলো, "সিরিজা তুমি বেরিয়েছো? আমি তো কখন থেকে এসে বসে আছি তোমার জন্য।"
সিরিজা, দিবাকরের দিকে একবারও তাকালো না। রজতকে বললো, "আমি বাথরুমের ভেতর থেকে সবই শুনছিলাম, তোমার কথা। ঐ সুখেনটা এসেছে বুঝি? ও আমাকে নিয়ে যাবে? জোর করে? আমিও যাবো ওর সঙ্গে? এতদিন বাদে, আবার আমার জন্য তার এত দরদ কেন? পারে তো অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করে নিক। সুন্দরী মেয়ের তো অভাব নেই ঐ গ্রামেতে। ও যা অপদার্থ লোক। কে বিয়ে করবে ওকে? ভেবেছে, আমিই বুঝি, সারাজীবন ওর গলায় মালা দিয়ে থাকবো? আমার নিজস্ব কোন শখ আল্লাদ নেই? স্বাধীনতা নেই।"
রজত কিছু বলতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "তোমাকে সেই থেকে কত ঝেমেলা পোয়াতে হচ্ছে। অথচ আমিই বলেছিলাম, আমাকে নিয়ে তোমার কোন সমস্যা নেই। এখন সব জোট হয়েছে এক সাথে।"
রজত উঠে দাঁড়িয়ে তখনই জড়িয়ে ধরে সিরিজাকে চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা একটু চালাকী করলো, রজতকে বললো, "একটু বসো, আমি এক্ষুনি আসছি, কাপড়টা ছেড়ে।"
এই বলে শোবার ঘরে ঢুকলো। আর দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল। রজতের আর ভেতরে ঢোকা হলো না।
সিরিজার আচরণটা ঠিক বোধগম্য হল না দিবাকরের। রজত বললো, "আসলে তুমি সামনে রয়েছ তো, তাই একটু লজ্জ্বা পেল মনে হয়।"
বলেই আপন মনে হাসতে লাগলো রজত। আবার একটা সিগারেট ধরালো। মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে। দিবাকরকে নিয়ে একটা সন্দেহ করেছিল ও। সিরিজা ওভাবে রজতের প্রতি দরদ দেখাতে সন্দেহটা এখন কেটে গেছে।
বেশ খুশি মনেই দিবাকরকে বললো, "দিবাকর কিছু যদি মনে না করো, সিরিজা বেরোলেই, আমি ওঘরে একটু ঢুকবো। ওর সাথে কিছু কথা আছে আমার। তাছাড়া, ওকে নিয়ে একটু খুনসুটি, আর সাথে কিছু আদর। বোঝো তো সব। তুমি যদি এক ঘন্টা এঘরে একটু একা থাকো, আপত্তি নেই তো তোমার?"
রজতের কথাটা দিবাকরের মাথায় যেন বাজ পড়ার মতন হল। বুঝতেই পারছিল, ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি তৈরী হতে যাচ্ছে একটু পরে। এতবড় সাহস ওর? বলে কিনা, এক ঘন্টা আমি সিরিজাকে আদর করবো, আর তুমি ততক্ষণ এঘরে একদম এসো না। আমি উজবুক? আমি নির্বোধ? শালা খচ্চর একটা, দম থাকে তো, সিরিজাকে আদর করে দেখা দেখি ওঘরে? তোর ক্ষমতায় কুলোবে না। সিরিজা তোকে.....
বলতে বলতেই শোবার ঘরের দরজাটা খুলে সিরিজা এসে দাঁড়ালো সামনে। দিবাকরকে অবাক করে সিরিজা রজতকে বললো, "এঘরে আসবে নাকি? দিবাকরদা ততক্ষণ, না হয় এঘরেই বসুক। আমার কাপড় ছাড়া হয়ে গেছে। এসো তাহলে।"
সিরিজার ওই এক কথাতেই রজতের মনে হল, আগের সিরিজা যেন আগের মতই আছে। কোন পরিবর্তন নেই, ঠিক যেন চেনাপরিচিত সেই ঢং। সেই আকুতি, সেই শরীরের টান, রজতকে কাছে পাবার জন্য যে নিজেও ছটফট করে মরে।
রজত চেয়ার ছেড়ে পুরো লাফিয়ে উঠলো, ভাবলো, "এই তো আমার জান নিজে থেকেই ডেকেছে আমাকে। যেন এখুনি ঘরে ঢুকে সিরিজার শরীরটা ওপর থেকে নিচ অবধি, মন মাতানো সুখে চাটবে। আদরে আদরে ভরিয়ে দেবে শরীর। ওকে পাওয়া মানে, সব বাঁধাকে হেলায় তুচ্ছ করা। সিরিজা কাছে থাকলে, টেনশন বলে পৃথিবী কিছু আর থাকে না।"
দিবাকর পুরো হতভম্ব। সিরিজার হঠাৎ রজতকে এভাবে ঘরে ডেকে নেবার উদ্দেশ্য কি, ওর কিছুই মাথায় ঢুকলো না। কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। তারপর দেখলো, সিরিজা, রজত দুজনেই ওকে প্রায় কলা দেখিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল।
চেয়ারে একা একা বসে রইলো দিবাকর। দেখলো, শোবার ঘরের দরজাটাও আসতে আসতে বন্ধ হচ্ছে। তারমানে এই মূহূর্তে ওর ঘরে ঢোকারও আর কোন অধিকার নেই।
কেন এমন করলো সিরিজা? তাহলে কি রেশমীর ব্যাপারটাই ওকে সম্পূর্ণ বদলে দিল? রজত এতক্ষণ চেয়ারে বসে রেশমীর কথাগুলো জোরে জোরে এমন ভাবে বলেছে, সিরিজা বোধহয় সবই শুনেছে বাথরুম থেকে। রেশমী আসছে, এই শুনেই কি সিরিজা তাহলে সরে যেতে চায় দিবাকরের জীবন থেকে? আবার সেই রজতকেই মেনে নেওয়া। রজতের হাজার দোষ থাকা সত্ত্বেও? সিরিজার দেওয়া প্রতিশ্রতি, রজতের প্রতি তার তীব্র অভিমান, সব দিবাকরের মনে হচ্ছিল, মনগড়া সব কথা। পুরুষের মনকে আকৃষ্ট করতে সিরিজা এসবে দক্ষ। সাধে কি সবাই ওর জন্য পাগল হয়? রজত পাগল হয়েছে এমনি এমনি?
মুখটা এমন ভাবে ব্যাজার করে বসে রইলো দিবাকর, যেন দেখে মনে হবে একটু আগে শ্মশান থেকে উঠে এসেছে। মনে মনে ভাবল, না সিরিজা নয়, এখন মনে হচ্ছে রেশমীই আমার জীবনে ঠিক নারী। কথায় কথায় এমন পাল্টি খেতে রেশমী জানে না। ভালোবাসাটা ওর কাছে স্বচ্ছ। সিরিজার মত মেকী ভালোবাসা নয়। দেহগত ভালোবাসা ছাড়া সিরিজা মনে হয় আর কিছুই জানে না।
একটু কান খাড়া করে শোনবার চেষ্টা করলো দিবাকর, ওদের দুজনের মধ্যে কি কথা হচ্ছে। কিন্তু ও দেখলো, দরজাটা ভেতর থেকে সিরিজা বা রজত যেই হোক না কেন, এমন ভাবে লাগিয়েছে, টু শব্দটিও শোনা যাচ্ছে না ভেতর থেকে। যেন ওরা দুজনে খুব আস্তে আস্তে কথা বলছে। বাইরে থেকে দিবাকর শুনুক, সেটা দুজনের কেউ চায় না।
সিরিজাকে ঘরের মধ্যে পেয়ে রজত প্রথমেই ওর ঠোঁটে একটা জোরালো চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "এই দাঁড়াও, দাঁড়াও। পাশের ঘরে দিবাকরদা আছে, সেটা খেয়াল আছে তোমার?"
রজত বললো, "কে দিবাকর? আমি চিনি না ওকে।" বলেই সিরিজাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত দুহাতে।
- "কি করছো তুমি?"
-- "আমার সিরিজাকে এখন একটা চুমু খাবো।"
- "কেন? কাল বুঝি চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা মনে পড়েনি?"
-- "কাল তো আমি দোলনের শুধু মন রেখেছি সিরিজা, তুমি বুঝতে পারো নি?"
- "খুবই পেরেছি। দোলনকে নিয়ে তোমার অত পীরিত।"
-- "পীরিত? ঐ পাজী মেয়েটাকে নিয়ে পীরিত? কখনই নয়।"
- "তাহলে কি?"
-- "ওটা সিরিজাকে চিরকাল পাওয়ার জন্য।"
- "আমাকে চিরকাল পাবে বলে, তুমি এখানে পাঠিয়ে দিলে? তাই বুঝি?"
রজত সিরিজার ঠোঁটের কাছে ঠোঁটটা নিয়ে গিয়ে বললো, "কেন? তুমি বোঝো না? আমি তোমাকে কতটা চাই? সারা পৃথিবী একদিকে, আর তুমি আমি একদিকে। এত লড়াই করছি কার জন্য? শুধু তোমাকে পাব বলেই তো....."
সিরিজা বললো, "আমাকে পেতে তোমার কত কষ্টই সহ্য করতে হচ্ছে তাই না?"
রজত বললো, "দূর, এ আর এমন কি কষ্ট? কষ্টটা মনে করলেই কষ্ট। তোমার জন্য আমি সব বাঁধা অতিক্রম করতে পারি। কেউ তোমাকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না আমার কাছ থেকে।"
সিরিজা বললো, "দোলন তোমাকে বুঝি কাল অনেক জ্বালিয়েছে? সারারাত শুতে দিয়েছিল তোমাকে? না কি....."