Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সিরিজা by Lekhak
    ।। ছাব্বিশ ।।


রজত বসেছিল বিছানার ওপরে। পাশে রাখা মোবাইলটা হঠাৎ বাজতে শুরু করেছে। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো ওটা দিবাকরের ফোন। বিকেলে তো আসার কথা দিবাকরের। তাহলে হঠাৎ ফোন করেছে কেন এখন?

রজত ফোনটা ধরেই বললো, "হ্যালো। বলো, কখন আসছো তাহলে?"

ও প্রান্ত থেকে দিবাকর বললো, "আমি আসছি না আজকে।"

রজত অবাক হয়ে বললো, "সেকী? কেন?"

 - "আমার পেট খারাপ হয়েছে। বারে বারে বাথরুমে যেতে হচ্ছে। ভীষন অস্বস্তি। মনে হচ্ছে যেতে পারবো না।"

একটু বিরক্ত হলো রজত। বললো, "ওফঃ পেট খারাপটা তোমার আজকেই হল। আর সময় পেল না। এত দরকারী কথা রয়েছে, মেয়েটাকে তোমার ওখানে পাঠাব বলে ঠিক করলাম। আর তুমি সব মাটি করে দিলে।"

দিবাকর বললো, "কি করবো? কাল রাত্রি থেকেই গন্ডগোলটা হয়েছে। চুপচাপ বসে থাকতেও পারছি না। ওষুধ তো খেয়েছি। দেখি শরীরটা একটু ভালো থাকলে যাবো।"

 -- "বুঝেছি, তার মানে তুমি আর আসছ না।"

একটু রাগ দেখিয়েই দিবাকরকে ও বললো, "ওফ মাঝে মাঝে তোমার যে কি হয়?"

সিরিজা এই মাত্র ঢুকেছে ঘরে। বেশ চিন্তিত মুখ। রজত ওকে বললো, "দিবাকর আর আসছে না আজকে। ওর পেট খারাপ হয়েছে।"

সিরিজা রজতের দিকে ভুরু কূচকে তাকাল। রজতকে বললো, "এলেই বা কি হত? দোলন তো যাবে না ঐ বাড়ীতে। এসেও কোন লাভ নেই।"

রজত বেশ রাগান্বিত হয়ে বললো, "যাবে না মানে? ও কি এখানেই চিরকাল থাকবে নাকি? যত সব ন্যাকামি। বেয়াদপিপনার একটা তো শেষ আছে। আর কত সহ্য করা যায়? সিরিজা তুমিই কিছু একটা করো না। আমার আর ভালো লাগছে না।"

রজতের ঠোঁটের ওপর হাত রেখে সিরিজা ওকে চুপ করতে বললো, রজতকে ইশারা করে বললো, "আস্তে। ও শুনতে পাবে। তুমি অধৈর্য হয়ো না। আমি দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ওকে মানানোর চেষ্টা করছি। তুমি বেশি জেদ দেখালেই ও বিগড়ে বসবে। তখন আর নড়তেই চাইবে না এখান থেকে। সব চেষ্টা মাটি হয়ে যাবে।"

রজত কিছু বলার আগেই সিরিজা বললো, "দেখছো না হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে এখন। আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্কটা ওর সহ্য হচ্ছে না এখন। কথায় কথায় ঠেস মারছে। আমাকেও ও বলতে ছাড়েনি।"

রজত বিরক্তির সঙ্গেই সিরিজাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কেন কিছু বলছিল তোমাকে?"

সিরিজা বললো, "সেই থেকে এখানে আসার পর থেকেই তো বলছে। মাঝে মাঝে এমন হাবভাব দেখাচ্ছে, যেন আমার জায়গায় তোমার সাথে ও থাকলেই বোধহয় ভালো হতো। কিচ্ছু বিশ্বাস নেই। দোলনকে এখন চটালে চলবে না। ও সব জানে। আমাদের ক্ষতি করে দিলে মুশকিল।"

রজত বুঝতে পারছিল তুরুপের তাসটা এখন দোলনের হাতেই ধরা আছে। সিরিজার কথাই ঠিক। ক্রোধের বশে রজতের বউকেও লাগিয়ে দিতে পারে সিরিজা আর ওর সম্পর্কের কথা বলে। ওদিকে মাতাল স্বামীটাকেও যদি পথ দেখিয়ে এ বাড়ীতে নিয়ে আসে তাহলে তুমুল কান্ড বেঁধে যাবে। একদিকে সিরিজার পুরোন সমস্যা আর একদিকে রজতের স্ত্রী কে নিয়েও চরম ভোগান্তি। মাঝখানে দাঁড়িয়ে দোলন। ঠিক যেন বোড়ের চালটা চেলেছে যথা সময়ে।

দিবাকরও ডুবিয়ে দিল। এখন দোলনকে সিরিজা কিভাবে ম্যানেজ করবে সেটাই দেখার।

রজতকে একটু সতর্ক করে সিরিজা বললো, "আর ওভাবে আমাকে চুমু খেতে যেও না ওর সামনে। ও সহ্য করতে পারছে না এসব।"

যত বিপত্তি চুমু খাওয়াকে ঘিরেই। বেশি সাহসি হতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনল নিজেই। এখন এর ফল ওকে ভোগ করতে হবে। জ্বালা হয়েছে সিরিজারও। বেচারী সেই থেকে যে ঝামেলা সহ্য করে যাচ্ছে, তার জন্য কোন বিরক্তি নেই ওর মুখেও। অনবদ্য সুখের শরীরটা নির্দিধায় তুলে দিয়েছিল রজতের হাতে, এর এখন দেখো, চেনাজানা লোকগুলোই এমন ভাবে এসে ঘাড়ে ভর করছে, যেন এখানে সিরিজাকে নিয়ে টেকাটাই দায় হয়ে পড়েছে। কবে যে এগুলো ঘাড় থেকে নামবে কে জানে? আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে।

বিরক্তির চোটে ভর্তি সিগারেটের প্যাকেটটা তুলে আছাড় মারলো রজত মেঝেতে। মুখে বললো, "দূর আর ভালো লাগে না সিরিজা। চলো তো আমরা কোথাও পালিয়ে যাই।"

সিরিজা হেসে বললো, "পালিয়ে যাবে? কোথায়?"

 -- "যেখানে কেউ আমাদের নাগাল পাবে না। শুধু তুমি আর আমি, মাঝখানে আর কেউ নেই। এ বাড়ীতে থেকে তুমি আর আমি সুখ করবো, তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে সিরিজা। আমি চাই মজা ষোলআনা। তোমার এই শরীরটা থাকবে আমার হাতের নাগালে বিনা ঝামেলায়। তবেই তো স্বস্তি। তা না কিনা যত উটকো ঝামেলা পরপর।"

সিরিজা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, "কিন্তু তোমার এই ফ্ল্যাটটার?"

 -- "নিকুচি করেছে ফ্ল্যাটের। এটাতো আমার কেনা ফ্ল্যাট নয়। ভাড়ায় রয়েছি। মালিকও থাকে না এখানে। তালা লাগিয়ে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো। কেউ টেরও পাবে না। তারপর মালিককে জানিয়ে দেব, আমি অন্য জায়গায় ফ্ল্যাট নিয়ে নিয়েছি। তাহলেও হল।"

সিরিজা কৌতূহল মুখ নিয়ে বললো, "তুমি সত্যি বলছো?"

রজত বললো, "সত্যিই তো বলছি। চলো যাবে তুমি? কালকেই রওনা দেব আমরা।"

 - "কিন্তু দিবাকরদার কি হবে?"

 -- "কেন দিবাকরের আবার কি হল?"

 - "ঐ যে রেশমি?"

 -- "ওফঃ আবার রেশমি? আর পারি না। আমি চাইছি এসব ঝামেলা ঝঞ্জাট এড়াতে। আর তুমি কিনা পড়ে রয়েছ ঐ রেশমি কে নিয়ে। অত পরের উপকার করার মত এখন সময় নেই। নিজেদের সুখটা আগে দেখবো? না পরের কথা আগে চিন্তা করবো।"

সিরিজা কিছুক্ষণ ভেবে বললো, "সবই তো বুঝলাম। কিন্তু দোলনকে না ভাগিয়ে আমাদের তো কিছু করার উপায় নেই।"

রজত সিরিজার ঘাড়ে দোলনের ব্যাপারটা ছেড়ে দিয়ে বললো, "ঐ বদ ছুঁড়ীটাকে তুমি সামলাও। এখান থেকে অন্য জায়গায় যাবার ব্যাপারটা আমি সামলাচ্ছি।"

সিরিজাকে নিজেই ঝামেলা ঘাড়ে নিতে বলে আবার একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন সিগারেটটা টানতে লাগলো রজত। দোলনকে নিয়ে ও নিজেও চিন্তা করছে। শেষ পর্যন্ত সিরিজা যদি ওকে পটাতে না পারে, তাহলে দোলনকে নিয়ে রজত কি বা করতে পারে? মেয়েটার সাথে মিছি মিছি একটা মন দেওয়া নেওয়ার অভিনয় করা যেতে পারে। অথবা দোলনের সাথে শারীরিক মিলনে আবদ্ধ হওয়ার আগে, শর্ত আরোপ করতে পারে দোলনকে। ঠিক আছে সিরিজার জন্য তোমার যখন এত হিংসে হচ্ছে, আমি রাজী আছি তোমার সঙ্গে ভালোবাসাবাসির খেলা খেলতে। কিন্তু সেটা কেবল একদিনের জন্যই। তুমি তোমার সাধ পূরণ করে নাও। তারপরেই কিন্তু তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাদের এ বাড়ী থেকে। আর কোনদিনই এ পথ তুমি মাড়াবে না। সিরিজাকে চিরতরে পাওয়ার জন্য একদিনের এই স্যাক্রিফাইস করতে আমি রাজী হলাম। জীবনের বাকী যেকটা দিন আছে, তার থেকে কেবল একদিনই তোমার জন্য আমি তোমাকে দিতে পারি। বাকী জীবনে সিরিজাই আমার মন প্রান জুড়ে থাকবে সবসময়। ওখানে তোমাকে আমি কোনদিনই বসাতে পারবো না।

সিরিজা রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "কি ভাবছো?"

রজত বললো, "কিচ্ছু না। শুধু ওপরওয়ালাকে ডাকছি, তিনি যদি দয়ালু হয়ে এই ঝামেলাটা কোনমতে মিটিয়ে দেন,তাহলে তোমাকে নিয়ে আমি বাকী জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটাতে পারি।"

রান্নাঘরে দোলন একা রয়েছে। কখন আবার হূট করে এই ঘরে চলে আসতে পারে। সিরিজা বললো, "আমি যাই। দেখি ও কড়াইতে খুন্তী নাড়ছে কিনা? এ ঘরে বেশিক্ষণ থাকলে ওর আবার হিংসে হবে।"

সিরিজা রজতের জীবনে আসার আগে অবধি রজত ছিল একরকম। আর সিরিজা আসার পরে রজত হয়ে গেল অন্যরকম। এক নারীতে রজতের মন কোনদিনই টেকেনি। বহু নারীতে আসক্তি। একাধিক নারীর সাথে মিলন, শরীরি সুখে ভেসে যাওয়া এসব অহরহ চলছিলই। কাউকে বেশিদিনের জন্য মনে ধরত না রজতের। মেয়েছেলে যেন শুধু এক রাত্তিরেরই খোরাক, এই নিয়ে ওর কামুক জীবন অতিবাহিত হচ্ছিলো। রীতা রজতকে বিয়ে করে রজতের স্বভাবের জন্য অতীষ্ঠ হয়ে ওর সঙ্গ ছেড়েছে। ভেবেছিল রজত কোনদিনই শুধরোবে না। সুতরাং ওর সাথে ঘর করা বৃথা। বউ ছেড়ে চলে যাবার পরই ও সিরিজাকে পেয়েছে। শরীরে যার এত ঐশ্বর্য ভান্ডারে ভর্তি তাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রতি আবার আসক্তি? শুধু রজত কেন, পৃথিবীর কোন পুরুষই এই মুর্খামি করবে না। সিরিজার সঙ্গে সেক্সুয়াল লাইফে মাতোয়ারা হবার পর থেকে ওর আর কোন চাহিদা নেই জীবনে। বাকী জীবনটা এখন শুধু সিরিজা আর সিরিজাই।

সিরিজার উদ্ধত নগ্ন স্বাস্থ্য, রজতের খোলা বুকে মাথা রেখে ও যখন শুয়ে থাকে, রজত মনে মনে চিন্তা করে বউ নেই বলেই এখন কত সুখ। বউ থাকলে কি সিরিজার সাথে মাখামাখিটা করতে পারত? রাগে দূঃখে বউ তখন ক্ষোভে ফেটে পড়তো। যে সুখটা ও বউ এর অনুপস্থিতিতে সিরিজার সাথে করতে পারছে। সেটা সিরিজার সামনেই দোলনের সাথে করবে কি করে? হলেই বা একরাত্রিরের শর্ত। সিরিজা এক ঘরে, দোলন ও সেই ঘরে। চোখের সামনে সেই শর্ত পালন করা কি সম্ভব? সিরিজার চোখে ও তো খারাপ হয়ে যেতে পারে? যাকে পাওয়ার জন্য এমন কান্ড ঘটালো, সেই কিনা চলে গেল ওর জীবন থেকে। তারপর বাকী জীবনটা ও শুধু দোলনকে নিয়ে? অসম্ভব। কিছুতেই সম্ভব হবে না সেটা।

রজত মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো খামচে ধরেছে। যেন মনে হবে নিজেরই চুল ছিঁড়ছে কপালের দোষে। শেষ পর্যন্ত এমন একটা দূঃসাহসিক ঝুকি নেওয়াটা কিছুতেই ঠিক হবে না। সিরিজা যদি ভুল বুঝে ওকে ছেড়ে চলে যায়? ওর এমন চোখ ধাধানো শরীর। রজতের মত আর একটা মেয়ে পাগল লোককে অনায়াসেই জুটিয়ে নিতে পারে সিরিজা। তখন আফসোসের আর শেষ থাকবে না। সুখের বাতি নিভে যাবে চিরকালের মতন। ঐ হতচ্ছাড়া বদমায়েশ মেয়েটাকে নিয়েই কাটাবে নাকি তখন বাকী জীবন? রজত কিছুতেই তা পারবে না। মরে যাবে তবু পারবে না। তার চেয়ে সিরিজার ওপরই ছেড়ে দেওয়া ঠিক। ও যা করবে, সেটা কখনই মন্দ হবে না।

যেন একটা বিপদ থেকে বেঁচে গেল রজত। মাথা খারাপ হলে লোকে উল্টোপাল্টা ভাবতে শুরু করে, ওরও তাই এমন অবস্থা হয়েছিল একটু আগে। নিজের আপন মনেই বিড় বিড় করে বলতে লাগলো, "নাহ, এটা কখনই ঠিক হবে না। কিছুতেই ঠিক হবে না।"

হঠাৎই সিরিজার বদলে এবার দোলন ঢুকল শোবার ঘরে। রজতের সামনে এসে বললো, "কি ঠিক হবে না দাদাবাবু? কি ঠিক হবে না?"

রজত রীতিমতন চমকে গেছে দোলনের হঠাৎ এই আগমন দেখে। ওকে বললো, "তুমি?"

দোলন ন্যাকামো করে বললো, "হ্যাঁ আমিই। কি হয়েছে বলো? সিরিজাই তো আমাকে পাঠালো তোমার ঘরে।"

 - "সিরিজা পাঠালো?"

 -- হ্যাঁ।"

 - "মানে?"

 -- "বললো, দাদাবাবু একা ঘরে রয়েছে। তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল। যা একবার দেখা করে আয়।"

রজত মনে মনে ভাবল, সিরিজার কি ভীমরতি হয়েছে? নিজে না এসে দোলনকে পাঠিয়েছে। আমি আবার কি জিজ্ঞাসা করবো? একে আবার এ ঘরে পাঠালো কেন?

 -- "কি ভাবছিলে দাদাবাবু? মনে মনে বিড়বিড় করছিলে?"

রজত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, "কই, কিছু না তো?"

একটু কাছে এসে রজতের একেবারে সামনেই বসে পড়লো দোলন। বললো, "বলো না তুমি আমার কথা ভাবছিলে? আমাকে এখান থেকে ভাগিয়ে দেবে, সেটা ঠিক হবে না, সেটাই মনে মনে বলছিলে?"

রীতিমতন গা জ্বলে যাচ্ছে রজতের। দোলন একেবারে যেচে গায়ে পড়তে চাইছে। লজ্জ্বা শরমের বালাই নেই। হঠাৎই এমন ভাবে এগিয়ে আসছে রজতের দিকে যেন এখুনি কিছু একটা করে বসবে মেয়েটা। হলও তাই। রজত দেখলো দোলন ওর বুকের আঁচলটা সরিয়ে দিয়েছে। মধ্যেখানের খাঁজ উন্মুক্ত। একেবারে বেহায়ার মতন

আবার ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিয়েছে রজতের দিকে। যেন সিরিজার মতই জোয়ার ভাসা নদীর উথাল পাতাল ঘন শরীরটাকে নিয়ে এখুনি আছড়ে পড়বে রজতের বুকে।

একেবারে চক্ষু চড়ক গাছ। রজত রীতিমতন বিরক্ত হয়ে বললো, "কি হচ্ছেটা কি দোলন? যাও দূরে গিয়ে বসো। একি? এটা কি হচ্ছে?"

 -- "যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে। সিরিজাই আমাকে অনুমতিটা দিয়েছে তোমার ঠোঁটে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তুমি যদি না খাও, আমিই তোমাকে চুমু খেতে পারি।"

অযথা বাঘটাকে খ্যাপানোর চেষ্টা করছে দোলন। এই বাঘটা এখন শুধু সিরিজার কাছেই পোষ মেনেছে। যাকে ছাড়া ও কারুর কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে না, অথচ সিরিজার নাম দোলনের মুখে শুনে বেশ অবাক হয়ে গেল রজত। কি বলছে কি মেয়েটা? সিরিজার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি? দোলনকে সিরিজা বলেছে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে। এর মানে?

বেশ ক্ষেপে গিয়ে বললো, "তোমার কোন লজ্জা নেই দোলন? এটা কি অসভ্যতামি হচ্ছে?"

লজ্জা নারীর ভূষণ। দোলনের সেই লজ্জা একেবারেই নেই। রজতের বুকের ওপর আছড়ে পড়ে, দোলন এবার ওর দুই স্তনের ছোঁয়া দিল রজতের শরীরে। রজতকে প্রবল ভাবে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দোলন ওর ঠোঁট দুটো নামিয়ে আনল রজতের মুখের ওপরে। প্রবল আশ্লেষে চুম্বনের উত্তাপ দিয়ে একবার.. দুবার.. তিনবার, চুষতে লাগলো রজতের দুই ঠোঁট। রজতের বুকের ওপর তখন খোঁচা মারছে দোলনের দুই স্তন। রজত ঠোঁট সরাবার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ঐভাবে গাঢ় চুমু খেয়েও দোলনের যেন মন ভরছে না। একেবারে আক্রমণাত্মক চুমু, সেই সাথে রজত পড়েছে এক কুলকিনারাহীন নদীতে। ঘুর্নীস্রোতে ভাসছে, নাকানি চোবানি খেয়ে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। রজতের সঙ্গে গাঢ় চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে দোলনের তখন শরীরে অনন্ত সুখ। রীতিমতন দাপাচ্ছে ও রজতের ঠোঁটে, চুষতে চুষতে ফুলিয়ে দিল ও রজতের ঠোঁট। সিরিজার চেয়ে কোন অংশে কম যায় না। রজতের কানের পাশে দুহাত রেখে ঠোঁটদুটোকে রজতের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ রেখে দুচোখ বুজে ফেললো দোলন। যেন অনেক দিনের না পাওয়া কোন তৃপ্তিকে মনের সুখে উপভোগ করছে দোলন।

চোখ বন্ধ অবস্থায় রজতকে বললো, "সিরিজাকে তুমি যখন চুমুটা খাচ্ছিলে, আমি জ্বলে পুড়ে মরছিলাম গো। এত কপাল করে ওকে পেয়েছ, আমার কি কপালে সিরিজার মত সুখ জুটবে না গো? তোমার ঠোঁটে হামলে পড়ে চুমু খাচ্ছি, দেখো আমারও কেমন শরীর মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। আরও একটু চুমুটা খেতে দাও না গো আমাকে।"

গায়ে পড়ে সান্নিধ্যে আসার চেষ্টা? রজতের গা ঘিন ঘিন করছে। দোলনের আগ বাড়িয়ে অমন একটা দামাল চুমুও রজতের মন ভরাতে পারেনি। তীব্র ঘেন্নায় ও দোলনকে দুই হাত দিয়ে ঠেলা মারলো এমন জোরে দোলন ছিটকে গিয়ে পড়লো বিছানার একপাশে। খাটের কোনাটা লেগে গেল ওর মাথায়।

তীব্র যন্ত্রণায় দোলন চিৎকার করে উঠলো, "উহুঁহুঁহুঁ। ও মা মরে গেলাম। কি জোরে লাগলো গো, উহুঁ রে।"

রজতের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যা হয়েছে, ঠিক হয়েছে। বেশ হয়েছে। এই হিংসুটে মাগীটার এমনই হওয়া উচিত। চুমু খেতে এসেছে আমাকে। কত বড় সাহস। আস্পর্ধা কম নয়। ভেবেছে সিরিজার মতন দোলনের সঙ্গেও মাখামাখিতে জড়িয়ে পড়বে রজত। তারপরই ওর অভিসন্ধি পূরণ হবে। একেবারে যেন মাথায় চড়ে গেছে এই বাড়ীতে এসে। বদমায়েশের হাড়ি। আবার কিনা বলে সিরিজাই ওকে পাঠিয়েছে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তাচ্ছিল্য করে ওর দিকে না তাকিয়ে রজত হাবভাবে বোঝাতে চাইল ও কতটা অসুন্তুষ্ট হয়েছে দোলনের এমন নির্লজ্জ আচরণে।

রান্নাঘর থেকে দোলনের চিৎকার শুনে ছুটে এসেছে সিরিজা। খাটের এক পাশে বসে কপালে হাত দিয়ে তখন কাতরাচ্ছে দোলন। রজতের মুখ গম্ভীর। একবার ওর দিকে তাকিয়ে সিরিজা দোলনকে জিজ্ঞাসা করলো, "কি হয়েছে তোর? লাগলো নাকি? অমন চেঁচিয়ে উঠলি কেন?"

দোলনের মুখে প্রথমে কোন কথা নেই। মাথাটা নিচু করে কপালটা হাত দিয়ে ডলতে ডলতে অনেক কষ্ট করে সিরিজাকে বললো, "খাটের কোনাটায় গিয়ে মাথাটা লাগলো। দাদাবাবু আমাকে ছুঁড়ে ফেললো। বললাম, তুমিই আমাকে দাদাবাবুর কাছে পাঠিয়েছ। চুমুটা খেতে গেলাম, দাদাবাবু আমাকে বিশ্বাস করলো না। তাই আমাকে ঠেলে ফেলে দিল। দেখো এখন কি অবস্থা।"

বলিহারি, তোমার সিরিজা। এই বদ মেয়েটাকে তুমি পাঠিয়েছ, আমাকে চুমু খাওয়ার জন্য? তোমার কি আক্কেল বলে কিছু নেই? রজত কি এখনও সেই মেয়েমানুষ লোভী হয়ে রয়ে গেছে? কোথাকার একটা মেয়ে, সে আমাকে এসে চুমু খাবে আর আমি সেটা সাদরে গ্রহন করবো? আমি কি এতটাই নিচে নেমে গিয়েছি? যাকে নিয়ে আমি এত দুশ্চিন্তায় মরছি, সে এত দূঃসাহসিক কাজ করে বসবে আর আমি সেটা চুপচাপ মেনে নেব? এ তুমি কি করলে সিরিজা? ওর ফাঁদে পড়ে ওকে এমন অন্যায় প্রশ্রয়টা তুমি দিলে? কেন দিলে তুমি?

রজত সিরিজাকে সামনে পেয়ে এমনই কথাটা বলতে যাচ্ছিলো মুখ দিয়ে। ওকে অবাক করে সিরিজা দোলনের দিকে তাকিয়ে বললো, "তোকে নিয়ে আমি কি করি বলো তো দোলন? দাদাবাবুকে তুই চটিয়ে দিলি। আমি কি তোকে এই জন্যই এই ঘরে পাঠালাম? তুই এ ঘরে এসে এসব কি করেছিস? জোর করে দাদাবাবুর গায়ে পড়েছিস? ছিঃ।"

দোলন ঐ অবস্থায় মাথায় হাত দিয়ে ডলতে ডলতে ফিক ফিক করে হাসছে। রজত ক্রমশ রেগে গুম হয়ে যাচ্ছে। সিরিজাকে ন্যাকামি করে দোলন বললো, "ফ্রীজে বরফ আছে? একটু দাও না গো। কপালের কাছটা ক্রমশ ফুলে ঢোল হয়ে যাচ্ছে।"

তাহলে কি সিরিজা দোলনকে চুমু খেতে বলেনি? তার মানে সিরিজার নাম করে জোর করে আমার ঠোঁটে চুমুটা খেল। কি সাংঘাতিক মেয়ে। রান্নাঘরে যেটা করতে চেয়েছিল, সেটা ঘরে এসে সারল। তলে তলে এমন বদমায়েশি বুদ্ধি। রজতের ইচ্ছে করছিল জোর করে দোলনের মাথাটা আর একবার দেয়ালে ঠুকে দিতে। এক্ষুনি ওর গলা টিপে ওকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। আসতে না আসতেই সিরিজার জায়গাটা নেবার চেষ্টা করছে, ওর আস্পর্ধা কম নয়।

রাগ কমা তো দূর। রজত বুঝেই নিল খুব পরিকল্পিত ভাবেই সিরিজার নাম করে চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা ঘটিয়েছে দোলন। এমন মেয়েকে এ বাড়ীতে রাখাটা এরপরে বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই হবে না। অমন মেয়ের মুখ দেখাটাও পাপ। তক্ষুনি বিছানা থেকে নেমে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল রজত। সিরিজাকে বললো, "আমি একটু ঘুরে আসছি বাইরে থেকে। আমার এখন ঘরে থাকতে কিছুতেই আর ভালো লাগছে না।"

হতবাক সিরিজাও। দোলনের ওপর চটে আগুন অথচ মুখে কিছু বলতে পারছে না। কি থেকে কি যেন হয়ে গেছে। রজতের রাগ কমানোর কোন ভাষাও নেই ওর কাছে। জামা প্যান্ট পড়ে রজতকে বেরোতে দেখে ও জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি বাইরে যাচ্ছো? খেতে আসবে না? রান্না তো একটু পরেই সব হয়ে যাবে।"

রজত বিরক্তি মুখ নিয়ে বললো, "তোমরা খেয়ে নাও। আমার কিছু ভালো লাগছে না।"

সদর দরজাটা দড়াম করে বন্ধ করে রজত বেরিয়ে গেল বাইরে। দোলন, সিরিজা তখন নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। কিছু একটা কথা হয়েছে ওদের মধ্যে একটু আগে, যেটা রজতও জানে না। রাগটা মনে মনে হলেও সিরিজা পুরোপুরি ওটা দেখাতে পারছে না দোলনকে। কিছু একটা বলেছে সিরিজা দোলনকে, একটু আগে ঐ রান্নাঘরেই। দোলন তারপরে যেটুকু করেছে সেটা অতিরিক্ত। পরিনাম যে এত বেশি পরিমানে হবে সেটা আশাও করেনি দুজনে। কি করবে সিরিজা কিছুই বুঝতে পারছে না। দোলনের মুখেও কোন কথা নেই। বোকার মতন চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। বুঝতে পারছে চুমুর প্রকোপটা খুব খারাপই দাগ কেটেছে রজতের মনে। গায়ে পড়ে হামলি খেয়ে জোর করে চুমু খাওয়াটা কিছুতেই উচিত হয় নি দোলনের।

রজত বেরিয়ে যেতেই সিরিজা বললো, "তুই আমার উপকার করেছিস, তারমানে এই নয় তোর মনের ইচ্ছেটা দাদাবাবুও মেনে নেবে। ভাব জমাতে চাইছিস বলে হুমড়ি খেয়ে দাদাবাবুর গায়ের ওপর পড়লি কেন? আমি কি তোকে তাই বলেছিলাম?"

দোলন বললো, "বারে, তুমিই তো বললে, দাদাবাবু মেয়েমানুষ পছন্দ করে। কিন্তু তুমি আসার পর থেকে দাদাবাবু নাকি একেবারে অন্যরকম হয়ে গেছে। আমার সাথে ভাব জমাতে তাই দাদাবাবুর সময় লাগবে।"

 - "হ্যাঁ তাই তো বলেছি। আর তুই কি বললি তার উত্তরে?"

 -- "আমি বললাম, তোমার জন্য পাগল ঐ লোকটাকে পটাতে আমারও বেশি সময় লাগবে না। তুমি যদি বলো, এখনি ঘরে গিয়ে আমি দাদাবাবুকে পটিয়ে নেব।"

সিরিজা বললো, "এই তার ছিরি? পটানোর নাম করে তুই দাদাবাবুর ঠোঁটে চুমু খেয়েছিস? আমি কি তোকে তাই বলেছিলাম?"

মাথাটা নিচু করে ফেলেছে দোলন। সিরিজার এবার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ওর ওপর। সোফায় বাচ্চাটা ঘুমোচ্ছিল। হঠাৎই ঘুম ভেঙে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। দোলন দেখছে সিরিজা বাচ্চাটার কাছে যায় কিনা? ভাবখানা এমন অনেক তো পরপুরুষের সাথে পীরিত করেছো। এবার নিজের বাচ্চা নিজে সামলাও। দেখবে মজা কেমন লাগে।

দোলন কে একেবারেই পাত্তা না দিয়ে সিরিজা নিজেই এগিয়ে গেল বাচ্চাটার দিকে। কি ভীমরতিতে যে তখন বাচ্চাটাকে তুলে দিয়েছিল দোলনের হাতে। আজ তার খেসারত ওকে দিতে হচ্ছে। এখানে এসে এখন ওর সুখে ভাগ বসাতে চাইছে দোলন, সবই প্রতিদানে কিছু চাওয়ার মতন। বাচ্চাটা সিরিজার কাছে থাকলে আজ এই কান্ড ওকে কিছুতেই পোয়াতে হত না।

বাচ্চাটাকে বুকে ধরে নিজের বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করলো সিরিজা। হঠাৎই শিশুটার ওপর খুব মায়া পড়ে গেছে। কপালে চুমু খেতে খেতে বাচ্চাটাকে আদর করে বললো, "তুই এরপরে আমার কাছেই থাকবি। আর তোকে কোথাও যেতে হবে না। আমি দেখব এবার আমার ক্ষতি কে করে?"

দোলন শোবার ঘর থেকেই মুখ বাড়িয়ে সিরিজাকে দেখছে। বাচ্চাটাকে বুকে আঁকড়ে ধরে স্তন্যপান করাচ্ছে সিরিজা। বাচ্চাটাও খুশ। অনেক দিনের না পাওয়া স্বাদ এবার নিয়ম করে পাবে তার জন্য সিরিজার ছেলের খুশি ধরে না।

ন্যাকামো করে একটু অপরাধ গোছের মুখ নিয়ে শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে এল দোলন। সিরিজারও ওর চালাকি বুঝতে আর বাকী নেই। বাচ্চাটাকে বুকে ধরে আপন মনে স্তন বিলোতে লাগলো। দোলনকে দেখেও যেন দেখলো না সিরিজা।

সিরিজার সামনে বসে হাত দিয়ে দুকান ধরে দোলন বললো, "খুব ভুল হয়ে গেছে গো। আর কখনও এমন হবে না, আমি কথা দিচ্ছি।"

সিরিজা অত সহজে গলে যাবার পাত্র নয়। দোলনকে পাত্তা না দিয়েই ও বাচ্চাটাকেই আদর করতে লাগলো। দোলনের অভিসন্ধি বুঝে গেছে ও। এবার দোলনকে কি করে জব্দ করতে হয় দেখাবে সিরিজা।

মুখে কোন কথা নেই, সিরিজা মুখ গম্ভীর করে বসে আছে বাচ্চাটাকে বুকে ধরে। অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর দোলনকে বললো, "তোর মতলবটা কি বলো তো দোলন? এখানে কি উদ্দেশ্যে এসেছিস তুই? তোর ইচ্ছেটা কি? আমাকে খুলে বলতে পারিস। দাদাবাবু এখন ঘরে নেই, এই সুযোগে তোর মনে কি আছে খুলে বল। ও ফিরে এলে কিন্তু একমূহূর্ত দেরী করবে না তোকে বিদায় করতে।"

এবার একটু গলার স্বর উঁচু করে দোলন বললো, "তুমি করলে কোন দোষ নয়। আর আমি করলেই যত দোষ। দাদাবাবুর শরীরে অনেক কাম আছে, আমি ভালোই বুঝি। তোমাকে পেয়ে তোমার শরীরটা তাই উপভোগ করছে, আমি যদি একটু ভাগ নিতে চাই ক্ষতি কি? ওসব পুরুষমানুষের ন্যাকামো আমি সব বুঝি। দুদিন এখানে থাকলেই তখন আবার আমার প্রতি পীরিত আসবে। তুমি চাও না দাদাবাবু তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে পীরিত করুক, সেটাই বলো না।"

দোলনের কথা শুনে সিরিজার প্রায় চোখ কপালে উঠে গেছে। কি বলছে কি মেয়েটা? তাহলে কি দূঃসময় ঘনিয়ে আসছে?

রজত ফ্ল্যাট থেকে রেগেমেগে বেরিয়ে চলে এল বড় রাস্তার মোড়ে। সামনেই একটা সিগারেট পান বিড়ির দোকান। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেখলো সিগারেট প্যাকেটটা ফেলে এসেছে ঘরে। মেঝেতে আছাড় মারা প্যাকেটটা এখনও বোধহয় ঘরেই গড়াগড়ি খাচ্ছে। একটু আগে মাথার মধ্যে আগুনটা যেভাবে জ্বলে উঠেছিল রাগের চোটে, সহজে নিভতে চাইছে না। এখনও চোয়াল শক্ত হয়ে রয়েছে। ভেবে পাচ্ছে না ও কি করবে?

একটু খানি এগিয়ে গিয়ে ও একটা নতুন সিগারেটের প্যাকেট কিনল দোকানটা থেকে। সিগারেট টা ধরিয়ে ঘনঘন কয়েকটা টান মেরেও মাথা দিয়ে কোন উপায় বেরোচ্ছে না। মনে হচ্ছে শক্তিশালী চুমুটাতেই দোলন পুরো কাত করে দিয়েছে রজতকে। এখন ওকে বুদ্ধি করে উপায় বের করতে হবে। দোলনকে বাগে আনতে গেলে রাগ দেখালে মোটেই চলবে না।

নিজেকে ভীষন অসহায় মনে হচ্ছিল রজতের। এই প্রথম কোন মেয়েমানুষ ওকে নাকানি চোবানি খাওয়াচ্ছে, সিরিজার সঙ্গে অবাধ যৌনসুখের বিচরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করার জন্যই দোলনের পদার্পন ঘটেছে এই ফ্ল্যাটে। একে একপ্রকার হিংসে ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে। সিরিজাকে অসম্ভব হিংসে করছে দোলন। রজতের সাথে সিরিজার যৌনসম্পর্ক, সিরিজার প্রতি রজতের দূর্বলতা, কোনকিছুই সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছে না। এবং দোলন নিজেও জানে, এই অবস্থায় সিরিজা রজতের দুজনেরই কিছু করার নেই। এত সাহস যে মেয়েটা পাচ্ছে তার কারন তো দুটোই, একদিকে রজতের স্ত্রী, আর একদিকে সিরিজার স্বামী। এমন অবস্থায় একটাই উপায়, যদি.....

রজত ভাবতে ভাবতেই আপন মনে হঠাৎ বলে উঠলো, "দূর, আবার সেই মাথা দিয়ে উদ্ভট চিন্তা। মেয়েমানুষকে একরাতের যৌনসুখ দিলেই কি সে বশ মেনে যায়? একবার রজতের স্বাদ পেলেই তখন নেশা ধরে যাবে দোলনের। রজতের ফ্ল্যাট থেকে তো নড়তে চাইবেই না। উপরন্তু বারবার শরীরি সুখ আদায় করার চেষ্টা করবে রজতের কাছ থেকে। তখন উপায়? সিরিজাকে ভালোবাসে, ওর শরীরটাকে বারবার চায়, তাই বলে কি দোলনের সাথেও দিনরাত চোদাচুদি করা যায় নাকি? দুটো মেয়েকে ঘাড়ে করে সারাজীবন? অসম্ভব। কিছুতেই তা সম্ভব নয়।"

একটু দূরে একটা রোগা প্যাটকা লোক রজতকে তাকিয়ে লক্ষ্য করছে কিছুক্ষণ ধরে। রজত সিগারেট টানতে টানতে হঠাৎই খেয়াল করলো সেটা। লোকটাকে রজত আগে দেখেনি কোনদিন। মনে হচ্ছে এই চত্তরে থাকে না। নতুন এসেছে, কিন্তু রজতের দিকে ওভাবে তাকিয়ে দেখছে কেন লোকটা?

একটু কড়া ভাবে লোকটার দিকে একদৃষ্টে তাকাতেই লোকটা এবার মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল। রজতের সন্দেহটা গেল না। বোধহয় বুঝতে পেরেছে লোকটা, তাই মুখটা ঘুরিয়ে নিল। একবার ভাবলো, লোকটা কে? এ আবার সিরিজার মাতাল স্বামী নয়তো? তাহলে তো কেলেঙ্কারী বেধে যাবে। কিন্তু ঐ বা রজতকে চিনবে কি করে? দোলন তো সেভাবে কিছু বলে নি।

রজত ওভাবে তখনও কড়া চোখে তাকিয়ে আছে বলে, লোকটা এবার সামনের দিকে হাঁটা দিল। রজতও নাছড়বান্দা, লোকটা কোথায় যায় দেখি। রজতও পিছু পিছু ধাওয়া করার মতন হাঁটা দিল।

ওভাবে রজতকে অনুসরণ করতে দেখে একটু বেশ নার্ভাস হয়ে পড়েছে লোকটা। রজত তাড়াতাড়ি পা চালাচ্ছে, দেখছে লোকটা ভয় পেয়ে দৌড়োয় কিনা। যদি ওর শ্বশুড়মশাইয়ের কোন চর হয়, এক্ষুনি ঘুসি মেরে ফেলে দেবে রাস্তার ওপর। বলা যায় না, ঐ বুড়োই বোধহয় কাউকে ফিট করে রেখেছে, আমার গতিবিধি নজর করার জন্য। একবার বাগে পাই, তারপর দেখাচ্ছি মজা।

লোকটা দৌড়তে পারছে না। রজত ঠিক ওকে ধরে ফেললো। একটু পেছন থেকে চেঁচিয়ে বললো, "এই যে দাদা, শুনুন........

রজতের ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়েছে ঐ রোগা লোকটা। বেশ নার্ভাস, বুঝতে পারেনি রজত ওভাবে ধাওয়া করে আসবে। মুখ ঘুরিয়ে বললো, "আমাকে ডাকছেন?"

 - "হ্যাঁ আপনাকে।"

 -- "বলুন।"

 - "আপনি আমাকে ওয়াচ করছিলেন। কে পাঠিয়েছে আপনাকে? এক্ষুনি বলুন, নইলে আমি ছাড়বো না আপনাকে।"

অসম্ভব ভয় পেয়ে গেছে লোকটা রজতের ওরকম রুদ্রমূর্তী দেখে। পেছন পেছন ওকে ধাওয়া করে চলে আসবে বুঝতে পারেনি। একটু থতমত খেয়ে বললো, "কই, আমি তো আপনাকে দেখিনি। আমি এমনি এমনি তাকিয়ে ছিলাম।"

মাথায় যেন খুন চেপে যাচ্ছে রজতের। হাতের জামাটা গোটাতে গোটাতে বললো, "আপনাকে গোয়েন্দাগিরি করতে পাঠিয়েছে এখানে? ন্যাকামো মারছেন? বলুন এক্ষুনি, নইলে আমি কিন্তু রাস্তায় লোক জড়ো করে দেব। নাম বলুন শিগগীর। নইলে কিন্তু ভালো হবে না।"

ঢোক গিলে লোকটা রীতিমতন আমতা আমতা করতে লাগলো। রজত বুঝেই গেছে, লোকটার সেরকম দূঃসাহস নেই, একটা ভেড়াকে শ্বশুড়মশাই পাঠিয়েছে, রজতের ওপর নজরদারী করার জন্য। একেবারে হাতে নাতে লোকটাকে ধরতে পেরেছে রজত। এবার একটা হেনস্থা করেই ছাড়বে।

রজত ওর কলারটা চেপে ধরতে যাচ্ছিলো। রীতিমতন ভয় পেয়ে লোকটা বললো, "আরে করছেন টা কি? আমি তো বলছিই আপনার দিকে তাকায়নি। শুধু শুধু আপনি রোয়াব দেখাচ্ছেন।"

 - "শুধু শুধু? মারবো না, তোমার মুখ ফাটিয়ে দেব। কে পাঠিয়েছে তোকে বল। নইলে শালা মুখ ফাটিয়ে দেব।"

হাত তুলে মারতেই যাচ্ছিলো লোকটাকে। আশে পাশে দু একজন দাঁড়িয়ে গেছে ঐ দৃশ্য দেখে। রজত ওদেরকেও চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, "এই দেখুন, এই লোকটা কেমন চোর সেজে এসেছে এখানে। এখন ধরেছি, শালা পালাতে পারলে বাঁচে।"

লোকগুলো এই এলাকার লোক নয়। পথচারী পথ চলতে চলতে যেরকম দাঁড়িয়ে পড়ে। সেরকমই দাঁড়িয়ে পড়েছিল তামাশা দেখার জন্য।

রজত তখনও চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, "কে পাঠিয়েছে তোকে? আমার শ্বশুড়মশাই না আমার বউ?"

ব্যক্তিগত কোন সমস্যা। লোকগুলো ঐ শুনে আর দাঁড়ালো না ওখানে। রজত এবার রীতিমতন কোনঠাসা করে ফেললো ঐ রোগাপ্যাটকা লোকটাকে।

গালে ঠাস করে একটা চড়। লোকটাও মাথা নিচু করে ফেলেছে। মেজাজ হারিয়ে রজত তখন রীতিমতন ক্ষিপ্ত।

মারের চোটে লোকটা বলেই ফেললো আসল কথাগুলো। রজত নইলে আরও তেড়ে যেত। লোকটা বললো, "আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনার শ্বশুড় মশাই আর আপনার বউ, দুজনের কথাতেই এখানে এসেছি।"

 - "কেন?"

 -- "আমাকে বলা হয়েছে, কোন মহিলাকে নিয়ে আপনি রয়েছেন এখন ফ্ল্যাটে। সেইটা খোঁজ করার জন্য।"

 - "তাতে তোর বাপের কি?" এবার কর্কশ গলায় রজত বললো, "ঐ বুড়োটাকে বলে দিস, একটা নয়, এখন দুটো মহিলা রয়েছে আমার সাথে। ওরা যা পারে করে নিক। ভয় পাই নাকি? শালা!"

[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 07:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kalobonduk - 03-10-2020, 07:11 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kolir kesto - 03-10-2020, 09:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by sohom00 - 04-10-2020, 10:02 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by nightangle - 04-10-2020, 12:47 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 06-10-2020, 08:36 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 07-10-2020, 07:47 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 07-10-2020, 03:53 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 08-10-2020, 07:13 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 16-10-2020, 02:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 19-10-2020, 06:49 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 25-10-2020, 02:58 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by pagolsona - 30-10-2020, 11:36 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by raja05 - 18-06-2021, 04:24 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Fokir_sadhU - 09-10-2022, 01:52 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:03 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Arpon Saha - 09-10-2022, 02:56 AM



Users browsing this thread: 26 Guest(s)