15-10-2020, 06:41 PM
১১
(আগের পর্বের পর)
"সব কিছুর জন্য দায়ী এই মূর্তিটা...... এটা অপয়া.. এটার জন্যই আজ মা আর নেই.... এই মূর্তির জন্য আমার সব শেষ হয়ে গেলো."
কথাগুলো মাথায় ঘুরছে দীপঙ্কর বাবুর. মনে পড়ে গেলো আজ থেকে ৫ বছর আগের একটি কেস. এক স্বামী নিজের হাতে তার স্ত্রীকে রাতে হত্যা করে. এমন কি সকালে সে নিজেই পুলিশকে ফোন করে সব স্বীকার করে. কিন্তু দীপঙ্কর বাবু ফোর্স নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর পরে আর তাকে গ্রেপ্তার করার পরে সেই লোক টা বিড় বিড় করে একটাই কথা বলছিলো - ও.... ও আমায় বললো... ও আমায় বললো করতে আর আমি করলাম.... কেন করলাম জানিনা.... কেন এত বড়ো পাপ করলাম? জানিনা.... শুধু ও..... ও.... বলছিলো.. আমায় আদেশ দিচ্ছিলো... আর আমি.... আমি পাপী... আমি পাপী. দীপঙ্কর বাবু ভেবেছিলেন বোধহয় লোকটার মাথার গন্ডগোল আছে. তাকে বাইরে নিয়ে যাবার পরে তিনি ঘরে তল্লাশি করেন. আর তখনই তার চোখে পড়েছিল শোকেসে রাখা ওই মেয়েমানুষের মূর্তি টা. একদম সেই স্ট্রাকচার. তিনি হয়তো ওই মূর্তির দিকে ওতো নজর দিতেন না.. যতটা দিয়ে ছিলেন একটা মেয়ের কথা শুনে. মেয়েটি ছিল ওই খুনীর. সে বার বার বলছিলো - কাকু.... সব ওই মূর্তির জন্য হয়েছে কাকু.... বাবা যবে থেকে এটাকে বাড়িতে এনেছিল তারপর থেকেই মায়ের সাথে বাবার ঝগড়া হতো, বাবার রাগ আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছিলো, বাবা মায়ের গায়ে হাত তুলতো... আর আজ বাবাই মাকে...... সব কিছুর জন্য দায়ী এই অপয়া মূর্তি.
তখন এইসব কথা মাথাতেই নেন নি দীপঙ্কর বাবু. ভেবেছিলেন মায়ের মৃত্যু শোকে মেয়ে এসব বলছে কিন্তু আজ নিজের বোনের শশুর বাড়িতে এই মূর্তি দেখে আর বোনের স্বামীর আজব আচরণ গুলো দেখে মনে কেমন যেন একটা অদ্ভুত সন্দেহ আর ভয় তৈরী হচ্ছে. যেন কিছু একটা খারাপ হতে চলেছে. উনি ঠিক করলেন ওনার বন্ধু শান্তনু কে এই মূর্তিটার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবেন. শান্তনুর এইসব মূর্তি, গিফট, এসবের বড়ো দোকান আছে. যদি ও কিছু বলতে পারে.
অর্ক কলেজের ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে আর দেখছে বাবার আজকেও ওই মূর্তিটা হাতে ধরে ওটার গায়ে হাত বোলাচ্ছে আর হাসছে মনে মনে. বাবার দেহের মধ্যে এই কদিনে ভালোই পরিবর্তন ঘটেছে. কিছুটা রোগা হয়ে গেছে, চোখের তলায় কালি, একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে আর বদমেজাজি হয়ে গেছেন. একটুতেই রেগে যায় আজকাল. আজ মামা মামীর সাথে বাইরে গিয়ে ওনাদের গাড়ি অব্দি তুলে দিয়ে ফিরে এসে জানিয়ে দিয়েছে বাবা যে আজ তিনি অফিসে যাবেন না. শরীরটা ভালো লাগছেনা. অর্ক আরেকটা ব্যাপার লক্ষ করছে.... বাবার হাত একটু একটু কাঁপছে. নিজের ওপর কন্ট্রোল যেন কমে গেছে বাবার. কিন্তু নেশাগ্রস্ত মানুষের মতো ওই মূর্তির গায়ে হাত বোলাচ্ছে বাবা. বাবার এইরূপ পরিবর্তন ভালো লাগছেনা অর্কর. সেই হাসিখুশি প্রাণখোলা বন্ধুর মতো বাবাটা যেন কোথাও হারিয়ে গেছে. কিন্তু কেন এরকম করছে বাবা? ছোট অর্ক বুঝতেই পারছেনা সব কিছুর জন্য দায়ী বাবার হাতের ওই মূর্তি.
পরের দিনই দীপঙ্কর বাবু নিজের বন্ধুর দোকানে গেলেন দেখা করতে. মূর্তিটার ছবি শান্তনু বাবু ভালো করে দেখলেন. তারপরে বললেন -
শান্তনু: দেখে তো সাধারণ মূর্তির মতোই লাগছে... তবে যে বানিয়েছে তাকে মানতেই হবে... নিখুঁত কাজ করেছে. জাত শিল্পী বোঝাই যাচ্ছে.
দীপঙ্কর: এটা কিসের মূর্তিবলতে পারিস?
শান্তনু বাবু আবারো ভালো করে নিরীক্ষণ করে মাথা নেড়ে বললেন: নারে..... ঠিক বুঝতে পারছিনা. মনে হচ্ছে পরীর মূর্তি... কিন্তু আমি যতদূর জানি পরীদের পাখনা পাখিদের মতো হয়. যদিও এসব ব্যাপারে আমার কোনো পড়াশুনা করা নেই.. কিন্তু........
দীপঙ্কর: কিন্তু কি?
শান্তনু: আমায় চিন্তায় ফেলছে এই মূর্তির পা. এতো মানুষের পা নয়.... ছাগলের পায়ের মতো.....দেখেছিস? আর তারওপর মূর্তির পায়ের নীচে এতগুলো মানুষের মাথার খুলি. আমি জানিনা এটা কোনো আর্টিস্টিক স্কাল্পচার কিনা... কিন্তু কেন জানিনা মূর্তিটা দেখে কেমন যেন লাগছে. কেন জানিনা মনে হচ্ছে জিনিসটা.......
এই টুকু বলে তিনি দীপঙ্কর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন: আচ্ছা কি ব্যাপার বলতো? মানে হঠাৎ এইসব ব্যাপারে তোর ইন্টারেস্ট কেন? আর এই ছবিটা কোথায় পেলি?
দীপঙ্কর বাবু আসল ঘটনা কিছুই বললেন না. শুধু হেসে বললেন: না.. আসলে একটা কেসের সঙ্গে এই মূর্তিটার যোগ আছে... সে তোকে পরে আমি সব বলবো... তা তুই আর কিছু পারবিনা বলতে?
শান্তনু বাবু বন্ধুর ফোনটা ফেরত দিয়ে বললেন: না ভাই... আমি মূর্তি টুর্তি বেচি ঠিকই কিন্তু এসব ব্যাপারে আমার আইডিয়া তেমন কিছু নেই. তুই একটা কাজ কর... অবনী চ্যাটার্জীর সাথে দেখা কর.
দীপঙ্কর: অবনী চ্যাটার্জী? সে কে?
শান্তনু: উনি একজন এন্টিক ডিলার. আমার পরিচিত..... বহুদিনের ব্যবসা ওনার আর তাছাড়াও অনেক পড়াশোনা করেছেন পুরোনো জিনিস নিয়ে. উনি নানারকম বিষয় জ্ঞান অর্জন করেছেন. আমি তোকে ঠিকানা দিচ্ছি. তুই গিয়ে দেখা কর. যদি কিছু বলতে পারেন.. তবে উনিই পারবেন. আমি ওনার সাথে কথা বলে রাখবো তোর ব্যাপারে.
সেদিন রাতে অর্কর ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো. চোখ খুলে দেখলো পাশে বাবা নেই. কিন্তু ঘরে কেমন পোড়া একটা হালকা গন্ধ. মা গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে. অর্কর হিসু পেয়েছিলো তাই ও উঠে বাথরুমে গেলো. বাথরুমে পৌঁছে অর্ক দেখলো ভেতর থেকে সেটি বন্ধ. মানে বাবা আছে বাথরুমে. কিন্তু বাবা আলো জ্বালেনি কেন? অন্ধকারে বাবার অসুবিধা হচ্ছেনা নাকি? আর বাবা কার সাথে ফিস ফিস করে কথা বলছে?
অর্ক দরজায় কান লাগিয়ে শুনলো বাবা কাকে যেন বলছে - ওহ এই নাও খাও.. আহহহহহ্হঃ ভালো করে খাও আহহহহহ্হঃ..... পুরোটা চোষো আহহহহহ্হঃ...
এসব বাবা কি বলছে? কাকে বলছে? কিন্তু তখনি বাবার আওয়াজ থেমে গেলো. ভেতর থেকে ফিসফিস আওয়াজ. তারপরে বাবা রাগী স্বরে জিজ্ঞেস করলো - বাইরে কে?
বাবার প্রশ্ন শুনে অর্ক ভয় পেয়ে গেলো. তবু সাহস করে বললো: আ.. আমি বাবা.
বাবা: কিহলো? তুই উঠে এলি কেন?
অর্ক: মানে... হিসু পেয়েছে তাই... তুমি করে নাও.. তারপরে আমি...
কথা শেষ হবার আগেই বাবা দরজা খুলে বেরিয়ে এলো. বাবা প্যান্টটা ঠিক করতে করতে রাগী চোখে অর্কর দিকে তাকালো. অর্ক ভয় পেয়ে গেলো. বাবার চোখে মুখে রাগ ও বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট. অর্কর দিকে সেই দৃষ্টিতে তাকিয়ে রাগী স্বরে তিনি বললেন - যা..... করে আয়... তারপরে আমি যাবো. আলো জ্বালানোর দরকার নেই.
অর্ক বাবাকে আর কিছু না বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো. কিন্তু সেই পোড়া গন্ধটা অর্ক এখানেও পেলো. বরং এখানে আরও বেশি করে পাচ্ছে. এই পোড়া গন্ধ মোটেও কাগজ বা কাপড় পোড়ার নয়.. যেন অন্য কিছু পুড়ছে. যাই হোক অর্ক প্যান্ট নামিয়ে হিসু করতে লাগলো. কিন্তু ওর মনে হচ্ছে ঠিক পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে. ওকেই দেখছে হিংস্র দৃষ্টিতে!!
এটা ভেবেই গায়ে কাঁটা দিলো ওর. পেছনে তাকাতে ইচ্ছে করছে আবার ভয়ও পাচ্ছে.. যদি কিছু দেখে ফেলে ও? এরকম অনুভূতি আগে কোনোদিন হয়নি ওর. ভাগ্গিস বাবা বাইরে দাঁড়িয়ে... এটাই যা একটু সাহস দিচ্ছে ওকে. কোনোরকমে হিসু করে বেরিয়ে এলো অর্ক. বাইরে বাবা দাঁড়িয়ে. ওকে বেরিয়ে আসতে দেখে ওর বাবা এগিয়ে এসে ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন: যা.... গিয়ে চুপচাপ মায়ের পাশে শুয়ে পর.
অর্ক: তুমি আসবেনা বাবা?
প্রশ্ন শুনে বাবা ছেলের গাল টিপে একবার ফাঁকা বাথরুমের দিকে তাকালো তারপরে কি জানি কি দেখে মুচকি হেসে আবার ছেলের দিকে তাকিয়ে একটু জোরেই গাল টিপে বড়ো বড়ো চোখ করে বাবা বললো - না.... আমার কাজ বাকি আছে.... তুই যা... ভালো ছেলের মতো মায়ের কাছে গিয়ে শুয়ে পর.
নিজের বাবাকে অর্ক কোনোদিন ভয় পায়নি. কেনই বা পাবে? কিন্তু আজ এই রাতে নিজের বাবাকে দেখে সে ভয় পেয়ে গেলো. বাবার এই মুখচোখ, শান্ত ভাব দেখেই অর্ক আর কোনো প্রশ্ন করলোনা... চুপচাপ মাথা নেড়ে নিজের ঘরে চলে গেলো. আর তাকায়ও নি বাবার দিকে.
বাবা যেন এই কদিনে কেমন বদলে গেছে. কেমন অন্য মানুষ হয়ে গেছে. সেই আগের হাসি, অর্কর সাথে বসে টিভি দেখা, ছেলেকে গল্প বলা সব বন্ধ করে দিয়েছে বাবা. বিছানায় শুয়ে এগুলোই ভাবছিলো অর্ক. বেশ কিছুক্ষন সময় পার হয়ে গেছে. বাবা এখনও ফিরছেনা. কি করছে বাবা? যাবো? কিন্তু বাবা বেরোতে বারণ করেছে. না থাক..... যদি বাবা বকে? কিন্তু এতক্ষন ধরে বাবা কি করছে?
আর বেশিক্ষন নিজের কৌতূহল দমন করে রাখতে পারলোনা অর্ক. সে মায়ের পাশে থেকে উঠে বাইরে এলো. খুব ধীর পায়ে বাথরুমের কাছে গেলো. কিন্তু না..... বাবা বাথরুমে নেই. বাইরে থেকে ছিটকিনি দেওয়া. তাহলে বাবা কোথায় গেলো? অর্ক বাবাকে খুঁজতে ওদের ড্রয়িং রুমে গেলো. সেখানেও অন্ধকার. কেউ নেই. এমনকি ওদের আরেকটা বেডরুমেও ঘুরে এলো. কই? বাবা তো সেখানেও নেই. তাহলে কি...........?
অর্কর কৌতূহল যেন প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে. সে এবারে এগিয়ে যেতে লাগলো সিঁড়ির দিকে. ছাদে ওঠার সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো সে. বুকে কেমন যেন ধুক ধুক হচ্ছে, একটা ভয় হচ্ছে অর্কর. নিজের বাবার কাছে যেতে কিসের ভয়? সেটা ও বুঝতে পারছেনা. শেষ সিঁড়িটা উঠে অর্ক দেখলো তার সন্দেহ ঠিক. ছাদের দরজা খোলা. আর ভেতরে বাবার হাসির শব্দ. মানে বাবা ভেতরেই. যাক তাহলে বাবা ছাদে... এই ভেবেই ও এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু ওকে আবার থামতে হলো. কারণ ছাদ থেকে এখন শুধু বাবার হাসির শব্দই আসছেনা... সাথে আরেকটি মানুষের হাসির শব্দও আসছে. আর সেই হাসি যেন অর্করও পরিচিত.
অর্ক দরজার কাছে পৌঁছে খুব সাবধানে মাথাটা একটু বাড়িয়ে ভেতরে দেখলো আর চমকে উঠলো. বাবা ছাদে একটি মহিলার সাথে কথা বলছে. আর সেই মহিলাকে অর্ক খুব ভালো করেই চেনে কারণ সেই মহিলা হলো অর্কর মামী. পিঙ্কির মা!
কিন্তু.... কিন্তু এ কিকরে সম্ভব? মামারা তো আজই ফিরে গেছেন. যাবার আগে অর্কর মামী ওকে কোলে নিয়ে আদর করে গালে চুমু খেয়ে গেছে. তাহলে এখন কি করে....? নিজের চোখকে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেনা বাচ্চাটা. কিন্তু ও ঠিক দেখছে. ওর একমাত্র মামী. ঠিক তখনি ওর চোখের সামনেই ওর বাবা ওর মামীকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরলো. আর মামীর গলায়, ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো. এসব বোঝার বয়স যদিও অর্কর হয়নি. ও শুধু বুঝলো বাবা মামীকে আদর করছে. কিন্তু কেন? বাবাকে তো কোনোদিন মামীকে স্পর্শ করতেও দেখেনি ও. শুধু পুজোর পরে একবার বাড়িতে ওরা বেড়াতে এসেছিলো তখন অর্ক দেখেছিলো ওর মামী ওর বাবার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিল. আর বাবাও শুধু মাথায় হাত রেখেছিলো মামীর. ব্যাস ঐটুকুই.
কিন্তু আজ একি দেখছে অর্ক. বাবাকেও মামী চুমু খাচ্ছে. বাবার গেঞ্জির ভেতর হাত ঢুকিয়ে বাবার পিঠে হাত বোলাচ্ছে মামী আর বাবা মামীর চোখে চোখ রেখে মামীকে দেখছে. অর্ক দেখলো মামী যে শাড়ীটা পড়ে আজ গেছিলো সেটাই তার পরনে এখনও. কিন্তু একি!
অর্কর চোখের সামনেই ওর বাবা ওর মামীর শাড়ীটা কাঁধ থেকে সরিয়ে দিলো. মামী শুধুই ব্লউস পড়ে. বাবা আরও ঘনিষ্ট ভাবে মামীকে জড়িয়ে ধরে মামীর পিঠে নিজের দুই হাত বোলাতে লাগলো. তারপরে মামীর গালে চুমু খেলো বাবা আর দুই হাত দিয়ে মামীর ব্লউসের হুক গুলো একটা একটা করে খুলতে লাগলো বাবা. শেষ হুকটা খুলে মামীর খোলা পিঠে হাত বোলাতে লাগলো বাবা. আর অন্য হাত দিয়ে মামীর ডান কাঁধ থেকে ব্লউসটা সরিয়ে সেখানে চুমু খেতে লাগলো বাবা.
তখনি মামী যেন সোজা এই দরজার দিকেই তাকালো. যেন মামী বুঝে গেছে বাইরে কেউ আছে. আর দাঁড়ালোনা অর্ক. সঙ্গে সঙ্গে নিজের মাথা সরিয়ে দ্রুত গতিতে নেমে এলো নীচে আর সোজা নিজের ঘরে গিয়ে মায়ের পাশে শুয়ে পড়লো ও.
-কি গো? কি দেখছো? জিজ্ঞেস করলেন অতনু বাবু.
সুজাতা........ না না.... সুজাতা নয়.... এত শুধু সুজাতার রূপ. ভেতরের মানুষটা তো মোহিনী. মোহিনী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ছাদের দরজার দিকে তাকিয়ে ছিল. এবারে বললো: মনে হয় কেউ আমাদের লুকিয়ে দেখছিলো.
অতনু: না... না... কই? কেউ তো নেই... ছেলেটা হিসু করতে উঠেছিল..... ওকে বোকে দিয়েছি. কেউ নেই.
মোহিনী/ সুজাতা: না...বোধহয় কেউ ছিলো... তোমার স্ত্রী নয়তো? ওই মহিলাকে আমার একদম ভালো লাগেনা... খুব বাজে....
অতনু: কেন?
মোহিনী/সুজাতা: তোমার মতো এরকম সুপুরুষকে না ভালোবেসে শুধু ছেলেকে নিয়ে পড়ে আছে.... ভুলেই গেছে যে তার স্বামীরও তাকে প্রয়োজন... সেও তো পুরুষ... তারও খিদে আছে. কোথায় তোমায় রাতে সুখ দেবে... তা না.. শুধুই ছেলে আর ছেলে. কোনো নারীত্ব নেই ওর. কোনো পুরুষের যোগ্য নয় সে..... তোমার মতো সুপুরুষের তো নয়ই.
অতনু বাবুর হঠাৎ মনে হতে লাগলো সত্যিই তো..... শ্রীপর্ণাকে কতদিন কাছে পায়নি সে. অর্ক যত বড়ো হচ্ছে ততই যেন শ্রীপর্ণার যৌবন শুকিয়ে যাচ্ছে.... সেই রস সেই সৌন্দর্য যেন হারিয়ে যাচ্ছে. শুধুই পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালন করছে সে .. কিন্তু স্বামীর ভালোবাসাকে, স্বামীর খিদেকে মেটাতে অক্ষম সে. আজ শ্রীপর্ণা শুধুই অর্কর মা.... অতনু বাবুর সেই সুন্দরী শ্রী যেন হারিয়ে গেছে.
আশ্চর্য... এসব চিন্তা তো এর আগে কোনোদিন মাথাতেও আসেনি অতনু বাবুর. কিন্তু আজ এই নারীর মুখে এসব শুনে মনে হচ্ছে সুজাতার প্রতিটা কথা ঠিক. শ্রীপর্ণা নিজের সৌন্দর্য ও যৌবন শুধুই মাতৃত্বের কর্তব্য পালনে নষ্ট করেছে.
মোহিনী অতনু বাবুর কানে ফিস ফিস করে বললো: কখনো তোমার ইচ্ছে করেনা...তোমার ওই বৌটাকে...ওই অকাজের মেয়ে মানুষটাকে শেষ করে দিতে? হি.. হি...
সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো অর্কর. উঠে দেখলো বাবা তখনো ঘুমিয়ে. বাবার মুখে ক্লান্তির ছাপ. রাতের সেই দৃশ্যটা মনে পড়ে গেলো অর্কর. বাইরে এসে মাকে জিজ্ঞেস করলো
অর্ক: মা?
মা: হুম কি বল?
অর্ক: কাল......
মা: কি কাল কি? তাড়াতাড়ি বল আমায় রান্না ঘরে যেতে হবে.
অর্ক: কাল রাতে... মানে বাবা... মানে... মামী.. মানে বাবা আর মামী কাল রাতে
ছেলের কথায় শ্রীপর্ণা অর্কর দিকে তাকিয়ে একটু রাগী কণ্ঠেই বললো: কিসব উল্টো পাল্টা বলছিস? মামীরা তো কাল সকালে চলে গেছে আবার রাতে তাকে কোথায় দেখলি? যত্তসব ভুলভাল কথা... যা বাথরুম যা... আমি যাই.... তোর বাবাকে ডাকি.... কিযে হলো তোর বাবার... ঘুম যেন সকালে ভাঙতেই চায়না.... আবার কেমন ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে.... কিছু বলাও যায়না... বাবু রাগ করে...
এসব বলতে বলতে মা বাবাকে ডাকতে চলে গেলো. অর্ক কিছুই বুঝতে পারলোনা. ও নিজেও জানে ওর মামা মামীরা কাল সকালেই চলে গেছে... তাহলে রাতে ওদের ছাদে ওর বাবার সাথে মামীকে কিকরে দেখলো ও? আর ওরা করছিলোই বা কি? এসব কি হচ্ছে? বাবা কেমন পাল্টে যাচ্ছে... অর্ক আজব জিনিস দেখছে.... কেন? ভাবতে ভাবতে ও বাথরুমে ঢুকে গেলো.
একটু আগেই স্বামী অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে. শ্রীপর্ণা ছেলেকে কলেজে ছাড়তে গেলো. ফিরে আসার সময় ও দেখলো আজ এত পরেও ওর বাড়ির ছাদে কাকেরা কা কা করছে. এমন সময় বাড়ির উল্টো দিকের কাকিমার সাথে ওর দেখা. উনিও ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন. উনি বললেন: আশ্চর্য ব্যাপার... আমি লক্ষ করছি প্রতিদিন ভোরের দিকে তোমাদের বাড়ির চারপাশে কাকেরা ঘুরে বেড়ায়. এর আগেও কাকেদের দল দেখেছি... কিন্তু কখনো এতদিন ধরে বার বার একই জায়গায় ফিরে আসতে দেখিনি. ঠিক সকালের এইরকম সময়ে ওগুলো আবার চলে যায়. আর ইয়ে......
কাকিমা কথাটা বলতে একটু সংশয় প্রকাশ করছেন দেখে শ্রীপর্ণাই বললো: বলুন না কি বলবেন.
কাকিমা অর্কর মায়ের দিকে একটু চিন্তিত মুখে তাকিয়ে বললেন: না মানে আমি শুনিছি.... এক জায়গায় এত কাক বার বার আসা..... মানে ব্যাপারটা নাকি ভালো নয়..... এরকম যেখানে হয় সেখানে নাকি....
উনি এইটুকু বলেই আর বললেন না. ওনাকে চুপ হয়ে যেতে দেখে শ্রীপর্ণা জিজ্ঞেস করলো: সেখানে.... সেখানে কি হয় কাকিমা?
উনি একটু মুচকি হেসেই বললেন: তোমরা এখনকার মানুষ... আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের কথা শুনে হয়তো হাসি পাবে.
শ্রীপর্ণা: তাও বলুন না..... কি হয়?
কাকিমা: না.. মানে আমি শুনিছি.... এরকম হলে নাকি... সেই বাড়িতে কোনো অনর্থ ঘটে... কোনো খারাপ কিছু......
তারপরেই তিনি আবার হেসে বললেন: অবশ্য এসব কিছুরই কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই মা..... এসব আমিও ছোট থেকে শুনে আসছি... আর তাছাড়াও সত্যিই তো..... বিনা কারণে পশু পাখিদের সঙ্গে এসব অলৌকিক কথা যোগ করার মানে হয়না.... ওদের কি দোষ? যাক গে... ছাড়ো...... আমি আসি মা.
উনি চলে গেলেন. শ্রীপর্ণা আরেকবার তাকালো ওদের বাড়ির ছাদে. কাকেদের সংখ্যা আগের থেকে কমে গেছে. উড়ে চলে যাচ্ছে ওগুলো. শ্রীপর্ণা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো.
কথাগুলো মাথায় ঘুরছে দীপঙ্কর বাবুর. মনে পড়ে গেলো আজ থেকে ৫ বছর আগের একটি কেস. এক স্বামী নিজের হাতে তার স্ত্রীকে রাতে হত্যা করে. এমন কি সকালে সে নিজেই পুলিশকে ফোন করে সব স্বীকার করে. কিন্তু দীপঙ্কর বাবু ফোর্স নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর পরে আর তাকে গ্রেপ্তার করার পরে সেই লোক টা বিড় বিড় করে একটাই কথা বলছিলো - ও.... ও আমায় বললো... ও আমায় বললো করতে আর আমি করলাম.... কেন করলাম জানিনা.... কেন এত বড়ো পাপ করলাম? জানিনা.... শুধু ও..... ও.... বলছিলো.. আমায় আদেশ দিচ্ছিলো... আর আমি.... আমি পাপী... আমি পাপী. দীপঙ্কর বাবু ভেবেছিলেন বোধহয় লোকটার মাথার গন্ডগোল আছে. তাকে বাইরে নিয়ে যাবার পরে তিনি ঘরে তল্লাশি করেন. আর তখনই তার চোখে পড়েছিল শোকেসে রাখা ওই মেয়েমানুষের মূর্তি টা. একদম সেই স্ট্রাকচার. তিনি হয়তো ওই মূর্তির দিকে ওতো নজর দিতেন না.. যতটা দিয়ে ছিলেন একটা মেয়ের কথা শুনে. মেয়েটি ছিল ওই খুনীর. সে বার বার বলছিলো - কাকু.... সব ওই মূর্তির জন্য হয়েছে কাকু.... বাবা যবে থেকে এটাকে বাড়িতে এনেছিল তারপর থেকেই মায়ের সাথে বাবার ঝগড়া হতো, বাবার রাগ আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছিলো, বাবা মায়ের গায়ে হাত তুলতো... আর আজ বাবাই মাকে...... সব কিছুর জন্য দায়ী এই অপয়া মূর্তি.
তখন এইসব কথা মাথাতেই নেন নি দীপঙ্কর বাবু. ভেবেছিলেন মায়ের মৃত্যু শোকে মেয়ে এসব বলছে কিন্তু আজ নিজের বোনের শশুর বাড়িতে এই মূর্তি দেখে আর বোনের স্বামীর আজব আচরণ গুলো দেখে মনে কেমন যেন একটা অদ্ভুত সন্দেহ আর ভয় তৈরী হচ্ছে. যেন কিছু একটা খারাপ হতে চলেছে. উনি ঠিক করলেন ওনার বন্ধু শান্তনু কে এই মূর্তিটার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবেন. শান্তনুর এইসব মূর্তি, গিফট, এসবের বড়ো দোকান আছে. যদি ও কিছু বলতে পারে.
অর্ক কলেজের ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে আর দেখছে বাবার আজকেও ওই মূর্তিটা হাতে ধরে ওটার গায়ে হাত বোলাচ্ছে আর হাসছে মনে মনে. বাবার দেহের মধ্যে এই কদিনে ভালোই পরিবর্তন ঘটেছে. কিছুটা রোগা হয়ে গেছে, চোখের তলায় কালি, একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে আর বদমেজাজি হয়ে গেছেন. একটুতেই রেগে যায় আজকাল. আজ মামা মামীর সাথে বাইরে গিয়ে ওনাদের গাড়ি অব্দি তুলে দিয়ে ফিরে এসে জানিয়ে দিয়েছে বাবা যে আজ তিনি অফিসে যাবেন না. শরীরটা ভালো লাগছেনা. অর্ক আরেকটা ব্যাপার লক্ষ করছে.... বাবার হাত একটু একটু কাঁপছে. নিজের ওপর কন্ট্রোল যেন কমে গেছে বাবার. কিন্তু নেশাগ্রস্ত মানুষের মতো ওই মূর্তির গায়ে হাত বোলাচ্ছে বাবা. বাবার এইরূপ পরিবর্তন ভালো লাগছেনা অর্কর. সেই হাসিখুশি প্রাণখোলা বন্ধুর মতো বাবাটা যেন কোথাও হারিয়ে গেছে. কিন্তু কেন এরকম করছে বাবা? ছোট অর্ক বুঝতেই পারছেনা সব কিছুর জন্য দায়ী বাবার হাতের ওই মূর্তি.
পরের দিনই দীপঙ্কর বাবু নিজের বন্ধুর দোকানে গেলেন দেখা করতে. মূর্তিটার ছবি শান্তনু বাবু ভালো করে দেখলেন. তারপরে বললেন -
শান্তনু: দেখে তো সাধারণ মূর্তির মতোই লাগছে... তবে যে বানিয়েছে তাকে মানতেই হবে... নিখুঁত কাজ করেছে. জাত শিল্পী বোঝাই যাচ্ছে.
দীপঙ্কর: এটা কিসের মূর্তিবলতে পারিস?
শান্তনু বাবু আবারো ভালো করে নিরীক্ষণ করে মাথা নেড়ে বললেন: নারে..... ঠিক বুঝতে পারছিনা. মনে হচ্ছে পরীর মূর্তি... কিন্তু আমি যতদূর জানি পরীদের পাখনা পাখিদের মতো হয়. যদিও এসব ব্যাপারে আমার কোনো পড়াশুনা করা নেই.. কিন্তু........
দীপঙ্কর: কিন্তু কি?
শান্তনু: আমায় চিন্তায় ফেলছে এই মূর্তির পা. এতো মানুষের পা নয়.... ছাগলের পায়ের মতো.....দেখেছিস? আর তারওপর মূর্তির পায়ের নীচে এতগুলো মানুষের মাথার খুলি. আমি জানিনা এটা কোনো আর্টিস্টিক স্কাল্পচার কিনা... কিন্তু কেন জানিনা মূর্তিটা দেখে কেমন যেন লাগছে. কেন জানিনা মনে হচ্ছে জিনিসটা.......
এই টুকু বলে তিনি দীপঙ্কর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন: আচ্ছা কি ব্যাপার বলতো? মানে হঠাৎ এইসব ব্যাপারে তোর ইন্টারেস্ট কেন? আর এই ছবিটা কোথায় পেলি?
দীপঙ্কর বাবু আসল ঘটনা কিছুই বললেন না. শুধু হেসে বললেন: না.. আসলে একটা কেসের সঙ্গে এই মূর্তিটার যোগ আছে... সে তোকে পরে আমি সব বলবো... তা তুই আর কিছু পারবিনা বলতে?
শান্তনু বাবু বন্ধুর ফোনটা ফেরত দিয়ে বললেন: না ভাই... আমি মূর্তি টুর্তি বেচি ঠিকই কিন্তু এসব ব্যাপারে আমার আইডিয়া তেমন কিছু নেই. তুই একটা কাজ কর... অবনী চ্যাটার্জীর সাথে দেখা কর.
দীপঙ্কর: অবনী চ্যাটার্জী? সে কে?
শান্তনু: উনি একজন এন্টিক ডিলার. আমার পরিচিত..... বহুদিনের ব্যবসা ওনার আর তাছাড়াও অনেক পড়াশোনা করেছেন পুরোনো জিনিস নিয়ে. উনি নানারকম বিষয় জ্ঞান অর্জন করেছেন. আমি তোকে ঠিকানা দিচ্ছি. তুই গিয়ে দেখা কর. যদি কিছু বলতে পারেন.. তবে উনিই পারবেন. আমি ওনার সাথে কথা বলে রাখবো তোর ব্যাপারে.
সেদিন রাতে অর্কর ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো. চোখ খুলে দেখলো পাশে বাবা নেই. কিন্তু ঘরে কেমন পোড়া একটা হালকা গন্ধ. মা গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে. অর্কর হিসু পেয়েছিলো তাই ও উঠে বাথরুমে গেলো. বাথরুমে পৌঁছে অর্ক দেখলো ভেতর থেকে সেটি বন্ধ. মানে বাবা আছে বাথরুমে. কিন্তু বাবা আলো জ্বালেনি কেন? অন্ধকারে বাবার অসুবিধা হচ্ছেনা নাকি? আর বাবা কার সাথে ফিস ফিস করে কথা বলছে?
অর্ক দরজায় কান লাগিয়ে শুনলো বাবা কাকে যেন বলছে - ওহ এই নাও খাও.. আহহহহহ্হঃ ভালো করে খাও আহহহহহ্হঃ..... পুরোটা চোষো আহহহহহ্হঃ...
এসব বাবা কি বলছে? কাকে বলছে? কিন্তু তখনি বাবার আওয়াজ থেমে গেলো. ভেতর থেকে ফিসফিস আওয়াজ. তারপরে বাবা রাগী স্বরে জিজ্ঞেস করলো - বাইরে কে?
বাবার প্রশ্ন শুনে অর্ক ভয় পেয়ে গেলো. তবু সাহস করে বললো: আ.. আমি বাবা.
বাবা: কিহলো? তুই উঠে এলি কেন?
অর্ক: মানে... হিসু পেয়েছে তাই... তুমি করে নাও.. তারপরে আমি...
কথা শেষ হবার আগেই বাবা দরজা খুলে বেরিয়ে এলো. বাবা প্যান্টটা ঠিক করতে করতে রাগী চোখে অর্কর দিকে তাকালো. অর্ক ভয় পেয়ে গেলো. বাবার চোখে মুখে রাগ ও বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট. অর্কর দিকে সেই দৃষ্টিতে তাকিয়ে রাগী স্বরে তিনি বললেন - যা..... করে আয়... তারপরে আমি যাবো. আলো জ্বালানোর দরকার নেই.
অর্ক বাবাকে আর কিছু না বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো. কিন্তু সেই পোড়া গন্ধটা অর্ক এখানেও পেলো. বরং এখানে আরও বেশি করে পাচ্ছে. এই পোড়া গন্ধ মোটেও কাগজ বা কাপড় পোড়ার নয়.. যেন অন্য কিছু পুড়ছে. যাই হোক অর্ক প্যান্ট নামিয়ে হিসু করতে লাগলো. কিন্তু ওর মনে হচ্ছে ঠিক পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে. ওকেই দেখছে হিংস্র দৃষ্টিতে!!
এটা ভেবেই গায়ে কাঁটা দিলো ওর. পেছনে তাকাতে ইচ্ছে করছে আবার ভয়ও পাচ্ছে.. যদি কিছু দেখে ফেলে ও? এরকম অনুভূতি আগে কোনোদিন হয়নি ওর. ভাগ্গিস বাবা বাইরে দাঁড়িয়ে... এটাই যা একটু সাহস দিচ্ছে ওকে. কোনোরকমে হিসু করে বেরিয়ে এলো অর্ক. বাইরে বাবা দাঁড়িয়ে. ওকে বেরিয়ে আসতে দেখে ওর বাবা এগিয়ে এসে ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন: যা.... গিয়ে চুপচাপ মায়ের পাশে শুয়ে পর.
অর্ক: তুমি আসবেনা বাবা?
প্রশ্ন শুনে বাবা ছেলের গাল টিপে একবার ফাঁকা বাথরুমের দিকে তাকালো তারপরে কি জানি কি দেখে মুচকি হেসে আবার ছেলের দিকে তাকিয়ে একটু জোরেই গাল টিপে বড়ো বড়ো চোখ করে বাবা বললো - না.... আমার কাজ বাকি আছে.... তুই যা... ভালো ছেলের মতো মায়ের কাছে গিয়ে শুয়ে পর.
নিজের বাবাকে অর্ক কোনোদিন ভয় পায়নি. কেনই বা পাবে? কিন্তু আজ এই রাতে নিজের বাবাকে দেখে সে ভয় পেয়ে গেলো. বাবার এই মুখচোখ, শান্ত ভাব দেখেই অর্ক আর কোনো প্রশ্ন করলোনা... চুপচাপ মাথা নেড়ে নিজের ঘরে চলে গেলো. আর তাকায়ও নি বাবার দিকে.
বাবা যেন এই কদিনে কেমন বদলে গেছে. কেমন অন্য মানুষ হয়ে গেছে. সেই আগের হাসি, অর্কর সাথে বসে টিভি দেখা, ছেলেকে গল্প বলা সব বন্ধ করে দিয়েছে বাবা. বিছানায় শুয়ে এগুলোই ভাবছিলো অর্ক. বেশ কিছুক্ষন সময় পার হয়ে গেছে. বাবা এখনও ফিরছেনা. কি করছে বাবা? যাবো? কিন্তু বাবা বেরোতে বারণ করেছে. না থাক..... যদি বাবা বকে? কিন্তু এতক্ষন ধরে বাবা কি করছে?
আর বেশিক্ষন নিজের কৌতূহল দমন করে রাখতে পারলোনা অর্ক. সে মায়ের পাশে থেকে উঠে বাইরে এলো. খুব ধীর পায়ে বাথরুমের কাছে গেলো. কিন্তু না..... বাবা বাথরুমে নেই. বাইরে থেকে ছিটকিনি দেওয়া. তাহলে বাবা কোথায় গেলো? অর্ক বাবাকে খুঁজতে ওদের ড্রয়িং রুমে গেলো. সেখানেও অন্ধকার. কেউ নেই. এমনকি ওদের আরেকটা বেডরুমেও ঘুরে এলো. কই? বাবা তো সেখানেও নেই. তাহলে কি...........?
অর্কর কৌতূহল যেন প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে. সে এবারে এগিয়ে যেতে লাগলো সিঁড়ির দিকে. ছাদে ওঠার সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো সে. বুকে কেমন যেন ধুক ধুক হচ্ছে, একটা ভয় হচ্ছে অর্কর. নিজের বাবার কাছে যেতে কিসের ভয়? সেটা ও বুঝতে পারছেনা. শেষ সিঁড়িটা উঠে অর্ক দেখলো তার সন্দেহ ঠিক. ছাদের দরজা খোলা. আর ভেতরে বাবার হাসির শব্দ. মানে বাবা ভেতরেই. যাক তাহলে বাবা ছাদে... এই ভেবেই ও এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু ওকে আবার থামতে হলো. কারণ ছাদ থেকে এখন শুধু বাবার হাসির শব্দই আসছেনা... সাথে আরেকটি মানুষের হাসির শব্দও আসছে. আর সেই হাসি যেন অর্করও পরিচিত.
অর্ক দরজার কাছে পৌঁছে খুব সাবধানে মাথাটা একটু বাড়িয়ে ভেতরে দেখলো আর চমকে উঠলো. বাবা ছাদে একটি মহিলার সাথে কথা বলছে. আর সেই মহিলাকে অর্ক খুব ভালো করেই চেনে কারণ সেই মহিলা হলো অর্কর মামী. পিঙ্কির মা!
কিন্তু.... কিন্তু এ কিকরে সম্ভব? মামারা তো আজই ফিরে গেছেন. যাবার আগে অর্কর মামী ওকে কোলে নিয়ে আদর করে গালে চুমু খেয়ে গেছে. তাহলে এখন কি করে....? নিজের চোখকে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেনা বাচ্চাটা. কিন্তু ও ঠিক দেখছে. ওর একমাত্র মামী. ঠিক তখনি ওর চোখের সামনেই ওর বাবা ওর মামীকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরলো. আর মামীর গলায়, ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো. এসব বোঝার বয়স যদিও অর্কর হয়নি. ও শুধু বুঝলো বাবা মামীকে আদর করছে. কিন্তু কেন? বাবাকে তো কোনোদিন মামীকে স্পর্শ করতেও দেখেনি ও. শুধু পুজোর পরে একবার বাড়িতে ওরা বেড়াতে এসেছিলো তখন অর্ক দেখেছিলো ওর মামী ওর বাবার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিল. আর বাবাও শুধু মাথায় হাত রেখেছিলো মামীর. ব্যাস ঐটুকুই.
কিন্তু আজ একি দেখছে অর্ক. বাবাকেও মামী চুমু খাচ্ছে. বাবার গেঞ্জির ভেতর হাত ঢুকিয়ে বাবার পিঠে হাত বোলাচ্ছে মামী আর বাবা মামীর চোখে চোখ রেখে মামীকে দেখছে. অর্ক দেখলো মামী যে শাড়ীটা পড়ে আজ গেছিলো সেটাই তার পরনে এখনও. কিন্তু একি!
অর্কর চোখের সামনেই ওর বাবা ওর মামীর শাড়ীটা কাঁধ থেকে সরিয়ে দিলো. মামী শুধুই ব্লউস পড়ে. বাবা আরও ঘনিষ্ট ভাবে মামীকে জড়িয়ে ধরে মামীর পিঠে নিজের দুই হাত বোলাতে লাগলো. তারপরে মামীর গালে চুমু খেলো বাবা আর দুই হাত দিয়ে মামীর ব্লউসের হুক গুলো একটা একটা করে খুলতে লাগলো বাবা. শেষ হুকটা খুলে মামীর খোলা পিঠে হাত বোলাতে লাগলো বাবা. আর অন্য হাত দিয়ে মামীর ডান কাঁধ থেকে ব্লউসটা সরিয়ে সেখানে চুমু খেতে লাগলো বাবা.
তখনি মামী যেন সোজা এই দরজার দিকেই তাকালো. যেন মামী বুঝে গেছে বাইরে কেউ আছে. আর দাঁড়ালোনা অর্ক. সঙ্গে সঙ্গে নিজের মাথা সরিয়ে দ্রুত গতিতে নেমে এলো নীচে আর সোজা নিজের ঘরে গিয়ে মায়ের পাশে শুয়ে পড়লো ও.
-কি গো? কি দেখছো? জিজ্ঞেস করলেন অতনু বাবু.
সুজাতা........ না না.... সুজাতা নয়.... এত শুধু সুজাতার রূপ. ভেতরের মানুষটা তো মোহিনী. মোহিনী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ছাদের দরজার দিকে তাকিয়ে ছিল. এবারে বললো: মনে হয় কেউ আমাদের লুকিয়ে দেখছিলো.
অতনু: না... না... কই? কেউ তো নেই... ছেলেটা হিসু করতে উঠেছিল..... ওকে বোকে দিয়েছি. কেউ নেই.
মোহিনী/ সুজাতা: না...বোধহয় কেউ ছিলো... তোমার স্ত্রী নয়তো? ওই মহিলাকে আমার একদম ভালো লাগেনা... খুব বাজে....
অতনু: কেন?
মোহিনী/সুজাতা: তোমার মতো এরকম সুপুরুষকে না ভালোবেসে শুধু ছেলেকে নিয়ে পড়ে আছে.... ভুলেই গেছে যে তার স্বামীরও তাকে প্রয়োজন... সেও তো পুরুষ... তারও খিদে আছে. কোথায় তোমায় রাতে সুখ দেবে... তা না.. শুধুই ছেলে আর ছেলে. কোনো নারীত্ব নেই ওর. কোনো পুরুষের যোগ্য নয় সে..... তোমার মতো সুপুরুষের তো নয়ই.
অতনু বাবুর হঠাৎ মনে হতে লাগলো সত্যিই তো..... শ্রীপর্ণাকে কতদিন কাছে পায়নি সে. অর্ক যত বড়ো হচ্ছে ততই যেন শ্রীপর্ণার যৌবন শুকিয়ে যাচ্ছে.... সেই রস সেই সৌন্দর্য যেন হারিয়ে যাচ্ছে. শুধুই পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালন করছে সে .. কিন্তু স্বামীর ভালোবাসাকে, স্বামীর খিদেকে মেটাতে অক্ষম সে. আজ শ্রীপর্ণা শুধুই অর্কর মা.... অতনু বাবুর সেই সুন্দরী শ্রী যেন হারিয়ে গেছে.
আশ্চর্য... এসব চিন্তা তো এর আগে কোনোদিন মাথাতেও আসেনি অতনু বাবুর. কিন্তু আজ এই নারীর মুখে এসব শুনে মনে হচ্ছে সুজাতার প্রতিটা কথা ঠিক. শ্রীপর্ণা নিজের সৌন্দর্য ও যৌবন শুধুই মাতৃত্বের কর্তব্য পালনে নষ্ট করেছে.
মোহিনী অতনু বাবুর কানে ফিস ফিস করে বললো: কখনো তোমার ইচ্ছে করেনা...তোমার ওই বৌটাকে...ওই অকাজের মেয়ে মানুষটাকে শেষ করে দিতে? হি.. হি...
সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো অর্কর. উঠে দেখলো বাবা তখনো ঘুমিয়ে. বাবার মুখে ক্লান্তির ছাপ. রাতের সেই দৃশ্যটা মনে পড়ে গেলো অর্কর. বাইরে এসে মাকে জিজ্ঞেস করলো
অর্ক: মা?
মা: হুম কি বল?
অর্ক: কাল......
মা: কি কাল কি? তাড়াতাড়ি বল আমায় রান্না ঘরে যেতে হবে.
অর্ক: কাল রাতে... মানে বাবা... মানে... মামী.. মানে বাবা আর মামী কাল রাতে
ছেলের কথায় শ্রীপর্ণা অর্কর দিকে তাকিয়ে একটু রাগী কণ্ঠেই বললো: কিসব উল্টো পাল্টা বলছিস? মামীরা তো কাল সকালে চলে গেছে আবার রাতে তাকে কোথায় দেখলি? যত্তসব ভুলভাল কথা... যা বাথরুম যা... আমি যাই.... তোর বাবাকে ডাকি.... কিযে হলো তোর বাবার... ঘুম যেন সকালে ভাঙতেই চায়না.... আবার কেমন ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে.... কিছু বলাও যায়না... বাবু রাগ করে...
এসব বলতে বলতে মা বাবাকে ডাকতে চলে গেলো. অর্ক কিছুই বুঝতে পারলোনা. ও নিজেও জানে ওর মামা মামীরা কাল সকালেই চলে গেছে... তাহলে রাতে ওদের ছাদে ওর বাবার সাথে মামীকে কিকরে দেখলো ও? আর ওরা করছিলোই বা কি? এসব কি হচ্ছে? বাবা কেমন পাল্টে যাচ্ছে... অর্ক আজব জিনিস দেখছে.... কেন? ভাবতে ভাবতে ও বাথরুমে ঢুকে গেলো.
একটু আগেই স্বামী অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে. শ্রীপর্ণা ছেলেকে কলেজে ছাড়তে গেলো. ফিরে আসার সময় ও দেখলো আজ এত পরেও ওর বাড়ির ছাদে কাকেরা কা কা করছে. এমন সময় বাড়ির উল্টো দিকের কাকিমার সাথে ওর দেখা. উনিও ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন. উনি বললেন: আশ্চর্য ব্যাপার... আমি লক্ষ করছি প্রতিদিন ভোরের দিকে তোমাদের বাড়ির চারপাশে কাকেরা ঘুরে বেড়ায়. এর আগেও কাকেদের দল দেখেছি... কিন্তু কখনো এতদিন ধরে বার বার একই জায়গায় ফিরে আসতে দেখিনি. ঠিক সকালের এইরকম সময়ে ওগুলো আবার চলে যায়. আর ইয়ে......
কাকিমা কথাটা বলতে একটু সংশয় প্রকাশ করছেন দেখে শ্রীপর্ণাই বললো: বলুন না কি বলবেন.
কাকিমা অর্কর মায়ের দিকে একটু চিন্তিত মুখে তাকিয়ে বললেন: না মানে আমি শুনিছি.... এক জায়গায় এত কাক বার বার আসা..... মানে ব্যাপারটা নাকি ভালো নয়..... এরকম যেখানে হয় সেখানে নাকি....
উনি এইটুকু বলেই আর বললেন না. ওনাকে চুপ হয়ে যেতে দেখে শ্রীপর্ণা জিজ্ঞেস করলো: সেখানে.... সেখানে কি হয় কাকিমা?
উনি একটু মুচকি হেসেই বললেন: তোমরা এখনকার মানুষ... আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের কথা শুনে হয়তো হাসি পাবে.
শ্রীপর্ণা: তাও বলুন না..... কি হয়?
কাকিমা: না.. মানে আমি শুনিছি.... এরকম হলে নাকি... সেই বাড়িতে কোনো অনর্থ ঘটে... কোনো খারাপ কিছু......
তারপরেই তিনি আবার হেসে বললেন: অবশ্য এসব কিছুরই কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই মা..... এসব আমিও ছোট থেকে শুনে আসছি... আর তাছাড়াও সত্যিই তো..... বিনা কারণে পশু পাখিদের সঙ্গে এসব অলৌকিক কথা যোগ করার মানে হয়না.... ওদের কি দোষ? যাক গে... ছাড়ো...... আমি আসি মা.
উনি চলে গেলেন. শ্রীপর্ণা আরেকবার তাকালো ওদের বাড়ির ছাদে. কাকেদের সংখ্যা আগের থেকে কমে গেছে. উড়ে চলে যাচ্ছে ওগুলো. শ্রীপর্ণা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো.
চলবে........
বন্ধুরা... কেমন লাগলো আজকের আপডেট?
জানাতে ভুলবেন না এবং ভালো লাগলে লাইক রেপস দিতে পারেন.