Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সিরিজা by Lekhak
#88
Big Grin 
যেভাবে রেশমির মত মেয়েকেও কথাচ্ছলে রাজী করিয়ে নিল, শহরের মেয়েরাও এত সহজে করতে পারবে না। সিরিজার বুদ্ধিমত্তার আচরণ যেন অকল্পনীয়। এ কি করে সম্ভব? তাহলে কি ওর অন্য কোন পরিচয় আছে? ও কি সত্যিই সিরিজা না অন্য কোন মেয়ে?


 - "বসে বসে কি ভাবছো?"

সিরিজা শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে এবার এ ঘরে এল। রজতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো কথাটা। রজত তখন একমনে সিগারেট খেতে খেতে ওকে নিয়েই ভাবছে।

এবার সিরিজার দিকে তাকালো রজত। অবাক চোখে বেশ কিছুক্ষণ একনাগাড়ে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। এখনও যেন বোধগম্য হচ্ছে না। কি করে অসাধ্য সাধন করলো সিরিজা? ওর যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না।

সিরিজা রজতের দিকে একটু খানি এগিয়ে এল। ওর চোখে সেই মন মাতানো দৃষ্টি। যে দৃষ্টি প্রথম দিন দেখেই স্ট্যাচু হয়ে গিয়েছিল রজত। কোথায় যেন একটা রহস্য। এখনও খোঁজার চেষ্টা করছে রজত। এই সিরিজা আসলে কে? জীবন তোলপাড় করে দেবার মত এক নারীর আবির্ভাব ওর জীবনে। এক কল্পনার নারী, স্বপ্নের নারী, যে সিরিজার মত মেয়েকে পাবার জন্য ছটফট করে মরবে অনেকেই, যেমনটি রজত করে আসছে ওকে দেখার পর থেকেই। এই সিরিজা কি তাহলে সিরিজা নয়? অন্য কেউ? তাহলে এর আসল পরিচয় কি?

সিরিজা তুমি আসলে কে বলো তো?

 - "কি বসে বসে ভাবছ তখন থেকে? 

 -- "তোমাকে নিয়েই তো ভাবছি। আর কাকে নিয়ে ভাববো?"

 - "কি ভাবছো?"

 -- "ভাবছি তুমি কে?"

 - "কে আবার? আমি সিরিজা। আবার কে?"

রজতের কথা শুনে হাসতে লাগলো সিরিজা।

 -- "না তুমি সিরিজা নও। তুমি অন্য কেউ।"

 - "কি ভুলভালো বকছ? এতক্ষণ বাইরে ঘুরে এসে তোমার মাথা খারাপ হলো নাকি? আমি তো সিরিজাই। অন্য কেউ হবো কেন?"

তবুও যেন বিশ্বাসটা গাঢ় হচ্ছে না রজতের। সিরিজা পাশে এসে বসে রজতের গালে একটা হাত রাখলো। রজতকে বললো, "তোমার হঠাৎ এমন কেন মনে হলো, যে আমি সিরিজা নই?"

ঠোঁটটা নিয়ে গেল রজতের ঠোঁটের খুব কাছে। সিরিজা কেন যেন রজতের চোখের দিকে তাকাতে পারছে না, কারন ওর দুই চোখের চাউনিতে অজানা সন্দেহের কালো মেঘের ছায়া পড়েছে। ঠোঁট খুব কাছে নিয়ে আসার পরেও রজত ঐ ঠোঁটে চুমু খাচ্ছে না। কি হয়েছে রজতের সিরিজা বুঝতে পারছে না।

 - "কি ব্যাপার বলো তো? কি হয়েছে আমাকে স্পষ্ট করে বলো না? আর ভালো লাগছে না আমাকে? আমি এসে তোমাকে ঝ্যামেলায় ফেলে দিলাম? দিবাকরদা, তোমার বউ, শ্বশুড়মশাই, সবাইকে তোমার শত্রু বানিয়ে দিয়েছি আমি। তাই তুমি অমন হয়ে গেছ? বলো না আমি কি চলে যাবো?"

হঠাৎ ই যেন সিরিজার গলায় করুন সুর। রজত বুঝতে পারছে না সিরিজাকে এবার ও কি বলবে? নিজের আত্মবিশ্বাসটাও যেন হারিয়ে গেছে। তবু যার জন্য সিরিজা এত করলো সেই সিরিজাকেই কোন জবাব দেবে না রজত? এ কখনও হয় নাকি? সিরিজার মত মেয়েকে পেয়েও রজত ওকে চলে যেতে দেবে তাই কখনও সম্ভব নাকি?

কিছু জবাব দেবার আগেই রজত এবার প্রাণপনে ঠোঁট দিয়ে আকড়ে ধরলো সিরিজার ঠোঁট। সিরিজার ঠোঁটদুটো প্রবলভাবে চুষতে চুষতে ও আত্মবিশ্বাসটা আবার ফিরে পাবার চেষ্টা করছিল। এবার যেন স্থির প্রতিজ্ঞ। নরম আর তুলতুলে সিরিজার ঠোঁট তখন রজতের দাপট ঠোঁটের কাছে সাড়া দিতে ব্যাস্ত।

সিরিজার ঠোঁটের ওপর অধিকার ফলাতে ফলাতে রজত বললো, "আবার বলো কথাটা....."

 - "কি?"

 -- "আমাকে ছেড়ে চলে যাবে।"

 - "যাবো না?"

 -- "তোমাকে আমি যেতে দেব সিরিজা? তুমি ভাবলে কি করে?"

প্রথমে একটু উদ্দাম, তারপর সিরিজার ঠোঁট দুটো নিয়ে সিপ করতে করতে চুমুকের মত চুমু খেতে লাগলো রজত। কখনও সিরিজার উপরের ঠোঁট কখনও সিরিজার নিচের ঠোঁট এইভাবে আলাদা আলাদা করে দখল নিচ্ছিল রজত। একসময় সিরিজাকে পুরোপুরি বুকে জড়িয়ে ধরে রজত বললো, "তুমি আমার জীবন থেকে চলে গেলে আমি মরে যাবো। আর তাহলে বাঁচবই না। তুমি ভাবলে কি করে যে আমি দুশ্চিন্তায় আছি? আমি তো....."

 - "আমি তো কি? বলো না?"

 -- "আমি আসলে একটা অন্য চিন্তায় মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম সিরিজা। সেইজন্যই....."

 - "কি চিন্তা?"

 -- "মাঝে মাঝে ভাবি, যখন আমার মাথা কোন কাজ করে না। তখন তোমারটা কাজ করতে শুরু করে। এটা কি করে সম্ভব হয়? তুমি এত বুদ্ধি কোথা থেকে আমদানী করো সিরিজা? আমিও হতবাক হয়ে যাই মাঝে মাঝে।"

একটু হেসে রজত আবার বললো, "ভগবান যেন সব কিছুই স্পেশাল দিয়েছে, তোমাকে। শরীরের সাথে বুদ্ধিটাও। আমি তাই....."

রজতের কথার উত্তরে অদ্ভুত একটা কথা শোনাল সিরিজা। বললো, "আমি তো নিজেকে ভাবি ঠিক তার উল্টোটা।"

 -- "মানে?"

 - "মানে আমি বোকা তাই।"

 -- "তুমি বোকা। এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?"

 - "বোকা না হলে তোমার বউকে অমন ভাবে চটিয়ে দিই? বোকার মতন কথাটা বলে গন্ডগোলটা পাকিয়ে দিলাম। তারপর থেকেই তো সন্দেহ করছে তোমাকে, আর তোমাকে জব্দ করার চাল খাটাচ্ছে দুজনে। দেখলে না একটু আগে এসেছিল তোমার শ্বশুর মশাই। আমিই তোমাকে ঝ্যামেলায় ফেলে দিলাম, আর তুমি বলছো আমি চালাক। মোটেই নয়।"

রজত যেন হঠাৎ ই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে শক্তিটাও ফিরে পেল আগের মতন। সিরিজার গাল দুটো দুহাতে ধরে আবার একটা চুমু খেয়ে ওকে বললো, "আচ্ছা ধরো আমার শ্বশুড় বুড়োটা আবার এখানে এল জ্বালাতন করতে। আর তখন ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে আমি তোমাকে ঠিক এইভাবেই চুমু খেতে থাকলাম। তাহলে কি রকম হবে?"

সিরিজার ঠোঁটে বারবার মধুপের চুমু খেতে খেতে চকাম চকাম আওয়াজ হচ্ছিল। তপ্ত লাভার আগাম বার্তা বহন করে আনছিল কিনা জানা নেই, তবে বারবার সিরিজার ঠোঁট দুটো ঠোঁটে নিয়ে খেলতে খেলতে রজত ভালোই মজা পাচ্ছিল।

 - "কি করছো বলো তো? হঠাৎ এমন চুমু খেতে শুরু করেছো যে থামছোই না।"

 -- "ভালো লাগছে তো। আর একটু খাই।"

 - "খালি দুষ্টুমি করো। এবার ছাড়ো আমাকে। রাত্রে কি খাবে? খাবার বানাতে হবে না?"

 -- "কিচ্ছু বানাতে হবে না। এখানে চুপটি করে বোসো।"

 - "বারে? সারাদিন ঘুরে আসলাম, এখন রাত্রে না খেয়ে থাকব নাকি?"

 -- "আমি বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসছি।"

 - "না না এই বৃষ্টিতে কোথায় যাবে? দোকান টোকান দেখোগে সব বন্ধ হয়ে গেছে বোধহয়। আমি বরঞ্চ রান্নাঘরে ঢুকে কিছু খাবার বানাই।"

 -- "কিচ্ছু বানাতে হবে না। বসো না একটু। কতক্ষণ বাদে তোমাকে চুমুটা খাচ্ছিলাম। এখন এভাবে উঠে গেলে হয়?"

সিরিজা তবু রজতের বাঁধন থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইছিল। ও যতবার উঠতে চাইছিল, রজত ততবার ওকে আঁকড়ে ধরছিল। এবার ঠোঁটের বদলে সিরিজার বুকে চুমু খেয়ে বসলো রজত। ওর চুলের মু্ঠিটা ধরে সিরিজা হেসে বললো, "ঐ যে আসছে।"

 -- "কে?"

 - "তোমার শ্বশুড়মশাই।"

 -- "কোথায়?"

 - "ঐ যে।" বলেই আবার হাসতে লাগলো সিরিজা।

রজত যেন সত্যি সত্যি শ্বশুড় এসেছে ঐ ভাব করে সিরিজার বুকে প্রবল গতিতে চুমুর বৃষ্টি শুরু করলো। বুকের মধ্যে মুখ রেখে বললো, "আমি তো চাই ঐ বুড়ো আসুক। আর আমি এইভাবেই তোমার বুকে আমার মুখটা....."

চুমুর ফাঁকে বলতে লাগলো, "ওকে দেখিয়ে দেব, আমার সিরিজাকে আমি কিভাবে আদর করি। সত্যি বলছি সিরিজা, ও এলে আমি এভাবেই আদর করবো তোমাকে, ঐ বুড়োর সামনে। ঠিক এইভাবে....."

বলেই সিরিজার বুকের উপত্যকায় প্রবল চুমুর বৃষ্টি করলো ঠোঁট দিয়ে। সিরিজার বুকের ব্লাউজ খুলে নিশ্চিন্তে ওর স্তনে মুখ দেবার অধিকারটা পেতে চাইছিল রজত।

একটু ঘস্টাঘস্টির পর সিরিজা রজতের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ছুটে চলে গেল রান্নাঘরের দিকে। রজতও সিরিজার পেছন পেছন ঢুকলো কিচেনে। সুগন্ধী বুকের ঘ্রাণ তখনও নাকে লেগে রয়েছে। রজত ওকে বললো, "তুমি রান্না করতে থাকো, আর আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে তোমার পিঠে, ঘাড়ে আর বুকে মাঝে মাঝে চুমু খাবো। শ্বশুড়মশাই আসার আগে আমার এখন ভালো করে প্র্যাকটিস দরকার।"

বলেই সিরিজার ঠোঁটে আবার চুমু খেল রজত। ওর ঠোঁটের রস আস্বাদন করতে লাগলো ঠোঁট দিয়ে।

দুজনের কারুরই কোন হুঁশ নেই। কে যেন সদর দরজাটায় কড়া নাড়ছে বারবার। প্রথমে দু তিনবার আস্তে আস্তে, তারপর বেশ জোরে জোরে। কলিংবেল টিপছে না। অথচ কড়া নাড়ছে। একি? এ রকম ভাবে তো কেউ আসে না? বৃষ্টি মাথায় করে আবার কে এল এত রাত্রে? তাও আবার কড়া নাড়ছে।

রজতকে সজাগ করে দিয়ে সিরিজা বললো, এই মনে হচ্ছে কেউ এসেছে। দরজায় কড়া নাড়ছে জোরে জোরে।

ঠক্ ঠক। এমন জোরে কড়া নাড়ছে, যে কান পুরো ঝালাপালা হয়ে যাবার জোগাড়।

 -- "নিশ্চয়ই ঐ বুড়োটা, এ ছাড়া আর কেউ নয়।"

সিরিজা কিছু বোঝার আগে রজত নিজেই বললো, "আমি নিশ্চিত, ঐ বুড়োই আবার এসেছে, আমাকে প্যাঁচে ফেলার জন্য। নইলে এখন আবার কে আসবে? কি জোরে জোরে কড়া নাড়ছে দেখ।"

সিরিজার হাতটা ধরে টানটে টানতে ওকে রান্নাঘর থেকে বের করে নিয়ে এল রজত। বললো, "এসো তুমি আমার সঙ্গে। দেখি ও এবার কি করে? ওকে কেমন শায়েস্তা করতে হয় দেখ। শুধু তুমি আমার সাথে এসো।"

রজত একেবারে ক্ষেপে উঠেছে। সিরিজাকে বললো, "অনেক হয়েছে, আর নয়। তখন দিবাকর ছিল বলে আমি মিছিমিছি তোমাকে ওর বউ সাজিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম, আমি কি করছি বাপ বেটিকে জানতে না দেওয়াই ভালো। এখন দেখছি লুকিয়ে চুরিয়ে আর লাভ নেই। যা কিছু খুল্লাম খুল্লা করতে হবে এবার। আচ্ছা করে টাইট দেব ওকে। তুমি শুধু আমার সাথে থাকবে। দরজাটা খুলি, তারপর ওর সামনেই তোমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাবো। দেখি বুড়ো কি করে তখন?"

সিরিজা তবু রজতকে বলার চেষ্টা করছিল, "না না, আমি বরং শোবার ঘরে চলে যাচ্ছি, তুমি ওনাকে সামাল দাও। আমার তোমার সাথে থাকাটা ঠিক হবে না।"

কিন্তু কে কার কথা শোনে? রজত তবু সিরিজাকে পাশে দাঁড় করিয়ে দরজা খুলতে লাগলো। শ্বশুড়ের সামনে সিরিজাকে নিয়ে বেহায়াপনা করার জন্য একেবারে পুরোপুরি তৈরী হয়ে নিয়েছে। দরজাটা যেই খুলতে যাবে, অমনি সিরিজা ওর হাতটা চেপে ধরলো শেষবারের মতন। রজতকে আস্তে আস্তে অনুরোধ করে বললো, "তুমি আর একবার ভেবে নাও। আমি বরঞ্চ শোবার ঘরে চলে যাচ্ছি। এক্ষুনি দরজাটা খুলো না।"

 -- "কিছু হবে না। তুমি দাঁড়াও, আমি দেখছি।"

দরজাটা পুরো খুলে ফেললো রজত। সামনে যাকে দেখলো, রীতিমতন অবাক হয়ে গেল ও। একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে দরজার সামনে। গায়ের রঙটা একটু ময়লা, কিন্তু চোখমুখ সুন্দর। সিরিজার মতই চটক আছে শরীরে। হঠাৎই সিরিজার মতই যেন মেয়েটার আবির্ভাব। সেই বৃষ্টিতে ভেজা শাড়ী। মাথার চুলও বেশ ভিজে গেছে। তফাতটা এই। সিরিজা এসেছিল সকালবেলা, আর মেয়েটা এসেছে রাত্রিবেলা।

রজত ওকে চেনে না। কিন্তু এর আগে একবার মেয়েটাকে কোথায় যেন দেখেছে। মনে করতে পারছে না।

 - "তুমিই এভাবে কড়া নাড়ছিলে?"

 -- "হ্যাঁ।"

 - "কে তুমি?"

 -- "সিরিজা আছে?"

 - "কে সিরিজা?"

সিরিজাও তখন মুখটা একটু বাড়িয়েছে পেছন থেকে। মেয়েটি বলে উঠলো, "ঐ তো সিরিজা আপনার পেছনে। ওফ কত কষ্ট করে ছুটে এলাম। পেয়ে গেছি ওকে।"

রজত কিছু বুঝতে পারছে না। সিরিজা পেছন থেকে বলে উঠলো, "ও দোলন? আয় আয় ভেতরে আয়।"

দোলন? হ্যাঁ এবার মনে পড়েছে। সেই মেয়েটা। সিরিজা প্রথম দিন যার কথা বলেছিল। দোলনই তো পাঠিয়েছে সিরিজাকে ওর কাছে। বস্তিতে থাকে স্বামীর সাথে। সিরিজা ওর বাসায় ছিল কিছুদিন। তারপর দোলনের বাসা থেকে রজতের ফ্ল্যাটে। কিন্তু এত রাত্রে ওর হঠাৎ আগমন ঘটল কেন? সিরিজার সাথে নিছক দেখা করবার জন্য এসেছে? নাকি অন্য কারনে?

রজত দরজার সামনে থেকে একটু সরে দাড়ালো। দোলন টুক করে ঢুকে পড়লো ঘরের মধ্যে। রজতের মনে পড়লো, এই মেয়েটাকেই যেন ও দেখেছে, ওরই এই বাড়ীর খুব কাছে। আজ সকালেই। গলিতে মেয়েটা ঘুরঘুর করছিল। কিন্তু এই যে দোলন, সেটা বুঝতে পারেনি।

খুব ভালো করে লক্ষ্য করলো রজত মেয়েটাকে। ঘরে ঢুকে কেমন যেন ঢোঁক গিলছে বারবার। কথা বলতে পারছে না। কেমন যেন একটা অস্বস্তি। ভয় ভয় ভাব। কিছুটা হাপাচ্ছে। কিছু বলতে চেষ্টা করেও ঠিক যেন বলতে পারছে না ভালো করে।

সিরিজা বললো, "একি রে, তুই অমন হাঁপাচ্ছিস কেন? কি হয়েছে। বস বস, এখানে বস।"

সোফায় বসে পড়েছে দোলন। কিন্তু তবু যেন বলতে পারছে না কি হয়েছে। কেমন যেন ও একটা টেনশনে।

রজত ভালো করে লক্ষ্য করছিল, মেয়েটার চোখে মুখে কেমন যেন আতঙ্কের ছাপ। রাত বিরেতে হঠাৎই একটা দুশ্চিন্তা নিয়ে ছুটে চলে এসেছে সিরিজার কাছে। সিরিজা ওকে জিজ্ঞাসা করছে, "কি হয়েছে বল", তবু ও বলছে না। একবার রজতের দিকে তাকাচ্ছে আর একবার সিরিজার দিকে।

রজতের দিকেই তাকিয়ে দোলন বললো, "আমাকে এক গ্লাস জল দেবেন?"

 - "হ্যাঁ নিশ্চয়ই।"

ফ্রীজ থেকে বোতল বার করে এক গ্লাস জল গড়িয়ে রজতই ওর হাতে দিল। সিরিজা তখন ওর পাশে বসে পড়েছে সোফাতে। দোলনের মাথায় হাত রেখে বললো, "কি হয়েছে দোলন, বল না? হঠাৎ তুই ছুটে এলি আমার কাছে? কি ব্যাপার?"

 -- "আমি তো সকালেও এসেছিলাম। কিছুক্ষণ ঘুরঘুর করে চলে গেলাম। দাদাবাবুকে আমিও দেখেছি। বাড়ীটা ঠিক চিনতে পারছিলাম না, মনে হলো পরে যদি আবার দরকার হয় তাহলে আবার ঘুরে আসবো। ভাবিনি এই রাত্রিরেই আমাকে আবার আসতে হবে।"

 - "কেন কি হয়েছেটা কি?"

সিরিজারও চোখে মুখে তখন একটা উৎকন্ঠা। রজত আর ও দুজনেই কিছু বুঝতে পারছে না। কারন দোলন পরিষ্কার করে এখনও কিছু বলছে না, কি হয়েছে ব্যাপারটা।

রজত এর মধ্যেই দোলনের শরীরের দিকে ভালো করে তাকাচ্ছিল, মনে মনে ভাবলো, গ্রামের মেয়েগুলো কি এরকমই হয় নাকি? সবকটাই যেন একরকম। যেমন সিরিজা তেমন দোলন। ঢেউ খেলানো শরীর দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। ভাগ্যিস সিরিজা ওর শরীর মন সব জুড়ে রয়েছে, নইলে সিরিজার জায়গায় দোলন চলে এলে অন্যরকম কীর্তিস্থাপন হয়ে যেতো!

নিজের স্বভাবটাকে এবার শুধরে নিয়ে ও নিজেকে তাড়াতড়ি সামলে নিল। দোলনকে ও বললো, "তুমি এত টেনশন করছো কেন? কি হয়েছে বলো না?"

দুজনকেই অবাক করে দিয়ে দোলন বললো, !চিন্তা কি আমি আর নিজের জন্য করছি বাবু? আমি তো চিন্তা করছি সিরিজা কে নিয়ে। সেইজন্যই তো ছুটে এলাম।!

রজত বেশ ঘাবড়ে গিয়ে দোলনের দিকে চোখ বড়বড় করে তাকালো। বললো, "কিসের চিন্তা? কেন সিরিজার কি হয়েছে?"

 -- "কেন, সিরিজা আপনাকে কিছু বলেনি?"

রজতের যেন বেশ হেঁয়ালি মনে হচ্ছে ব্যাপারটা। কেন সিরিজা আবার কি বলবে? মেয়েটা তো দেখি উল্টে ওকেই প্রশ্ন করছে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে রজত অবাক হয়ে বললো, "কেন ও কি বলবে?"

রজতের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে দোলন এবার তাকাল সিরিজার দিকে। প্রশ্নটা ওকেই করলো, "তুমি বলো নি কিছু দাদাবাবুকে?"

সিরিজা কিছু বলার আগেই দোলন বললো, "বলোনি তোমার একটা মরদ আছে? তোমার মাতাল স্বামী। যাকে ফেলে রেখে এসে তুমি চলে এসেছ এখানে।"

সিরিজা চটপট উত্তরে বললো, "তুই ও জঘন্য লোকটার কথা কেন বলছিস? ওকে তো কবে ছেড়ে এসেছি। আমার কি ওর সাথে ঘর করা সম্ভব?"

 -- "সম্ভব যখন নয়। তাহলে এবার বোঝো।"

 - "কি বুঝবো? বলবি তো?"

 -- তোমার ঐ মাতাল মরদ, চলে এসেছে এখানে, তোমাকে খুঁজতে। আমার কাছে দুবার এসেছে। খালি হূমকী দিচ্ছে, বলছে শালীকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস বল? যত বলছি আমি জানি না। ততোই বিরক্ত করছে আমায়। খালি ঝ্যামেলা পাকাচ্ছে এসে।"

 - "তুই বলেছিস? আমি কোথায় আছি?"

 -- "না বলিনি। কিন্তু ও বলেছে কাল সকালে ও আবার আসবে। আমি না বললে ঝ্যামেলা করবে আমার সাথে। শাসানি দিয়ে গেছে।"

এ আবার নতুন কি ঝ্যামেলা? রজত বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ছিল দোলনের কথা শুনে। সিরিজার স্বামী এখানে? ঐ মাতালটা? এতো অদ্ভুত এক সমস্যা তৈরী হলো। সিরিজার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন শ্বশুড় আর বউ এর থেকেও বড় সমস্যা এসে গেছে ওর সামনে। এখন ওর কাছে সব জলের মতন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে এই সিরিজা ওকে যা যা বলেছে নিজের সন্মন্ধে, তার এক বর্ণও মিথ্যে নয়। সব সত্যি কথা।

একটা করুন মুখ নিয়ে রজত তাকালো সিরিজার দিকে। যেন আজকের রাতটাই শেষ রজনী। কাল সকালে সিরিজার প্রস্থান ঘটছে রজতের জীবন থেকে। মুখখানা এমন কাচুমাচু করে ফেললো, নজরটা দোলনেরও এড়ালো না। ও দেখলো সিরিজার মাতাল স্বামীর কথা শুনে রজত কেমন ফ্যাকাসে মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে সিরিজার দিকে।

দোলন আড়চোখে দেখলো সিরিজাকে। সিরিজা রজতের দিকে তাকিয়ে আছে ঠিকই, কিন্তু ওর চোখ মুখ স্বাভাবিক। মাতাল স্বামীর আগমনের কথা শুনে এতটুকু বিচলিত হয়নি ও। রজতকে ওভাবে করুন মুখে তাকিয়ে থাকতে দেখে দোলনের কেমন যেন সন্দেহ হলো। মনে হলো সিরিজার সাথে বোধহয় কোন একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে এই দাদাবাবুর। নইলে এভাবে?

দুজনকেই প্রশ্ন করলো, "এখন আমি কি করবো তোমরা বলে দাও।"

 -- "তোমার তো স্বামী আছে। ওকে বলো ঐ বাজে লোকটাকে ভাগিয়ে দিতে। তাহলেই ও শায়েস্তা হবে।"

রজতই মুখ খুললো এবার।

 -- "সে নেই।"

 - "নেই মানে?"

সিরিজা রজত দুজনেই অবাক হয়ে দোলনের মুখের দিকে তাকালো।

 -- "নেই। সেও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। সিরিজা তো ওর স্বামীকে ছেড়ে এসেছে। আর আমার বর আমাকেই ছেড়ে চলে গেছে।"

 - "তোকে ছেড়ে চলে গেছে?"

সিরিজা চোখ বড় বড় করে দোলনের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।

 -- "হ্যাঁ চলে গেছে কাল। আমি তারপর থেকে তোমার বাচ্চাটাকে নিয়ে একা একা রয়েছি। আর ঐ মাতালটা বারে বারে এসে আমায় বিরক্ত করছে। এখন আমি একা মেয়েছেলে, কি করি বলো তো?"

রজতের মনে হলো সুখ বোধহয় চিরকাল কারুর ধাতে সয় না। ওর মনে হয় গ্রহের দশা লেগেছে। একটার পর একটা শঙ্কট আসছে, শেষ পর্যন্ত যে কি হবে কে জানে?

মোবাইলটা হাতে নিয়ে একবার মনে মনে ভাবলো দিবাকরকে একবার ফোন করলে হয়। যদি ও কোন সাহায্য করতে পারে। তারপর আবার ভাবলো, না না আবার দিবাকর? এরমধ্যে ওকে জড়ালে হাসি ঠাট্টার ব্যাপার হয়ে যাবে। দিবাকর সব জেনে যাবে। ওর দরকার নেই।

সিরিজা আর রজত দুজনেই কোন সুরাহা করতে পারছে না দেখে দোলন আরও বিচলিত হচ্ছিল। শেষ বারের মতন ওদের দুজনকে বললো, "কি করবো বলো তোমরা? ও কাল সকালেই আবার আমার ওখানে যাবে। তার আগেই আমাকে কিছু একটা ব্যাবস্থা করতে হবে। নইলে যেভাবে হুমকী দিয়ে গেছে, ছাড়বে না আমায়।"

যার কিনা চাল নেই চুলো নেই। সিরিজার অপদার্থ স্বামী। বউ এর জন্য হঠাৎ পীড়িত জেগে উঠলো? রজতের এবার রাগে গা জ্বলে যাচ্ছিলো। শুধু দোলনকে একটু সান্তনা দেবার জন্য বললো, "নাহ, তোমার জন্য খুব খারাপ লাগছে। তোমার স্বামী থাকলে খুব সহজেই মাতালটাকে তাড়িয়ে দিত। কিন্তু এখন?"

রজতকে অবাক করে সিরিজা বললো, "আচ্ছা, ও যদি বাচ্চাটাকে নিয়ে আমাদের এখানে চলে আসে?"

 -- "এখানে?"

 - "হ্যাঁ এখানে। তাহলে তো কোন ঝ্যামেলা হবে না। ও দোলনকে খুঁজেও পাবে না। না দেখতে পেয়ে ফিরে চলে যাবে। তাহলে তো আর সমস্যা নেই।"

রজত একটু কিন্তু কিন্তু করে বললো, "তা ঠিক। তবে সেটা কতদিন? ও তো আবারও ঘুরে আসতে পারে?"

 - "আমরা দুজনে মিলেই যদি একসাথে থাকি এখানে। তোমার সাথে। অসুবিধে আছে তোমার?"

রজত কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। একটু ঢোক গিলে নিয়ে তারপর বললো, "দুজনে একসাথে?"

 - "হ্যাঁ দুজনে একসাথে। আর সাথে আমার বাচ্চাটাও।"

মনে মনে বললো, "এ আবার কোন খেলা তুমি শুরু করলে ভগবান। এখন আমাকে তিনটেকে একসাথে সামলাতে হবে? আমি তো দেখছি নাজেহাল হয়ে যাবো।"

রজত আর সিরিজা দুজনেই তুমি তুমি করে কথা বলছিল, দোলন প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও ব্যাপারটা দেরীতে বুঝলো। রজতকে জিজ্ঞাসা করলো, "দাদাবাবু বৌদিমনি নেই? আপনার বৌ?"

 - "না নেই।"

 -- "সে কোথায়?"

 - "সেও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।"

 -- "তারমানে এই বাড়ীতে আপনি আর সিরিজা একা?"

একটু থতমত খেয়ে রজত বললো, হ্যাঁ তাই। সিরিজা মুখটাকে একটু ঘুরিয়ে মুচকী মুচকী হাসছিল। দোলন এমন ভাব করলো, যেন ওদের সম্পর্কটা ও কিছুই বুঝতে পারেনি। মনে মনে সিরিজাকে উদ্দেশ্য করে বললো, "আমার কাছে বাচ্চা ফেলে দিয়ে এখন বাবুর সাথে ফুর্তী মারাচ্ছো? ভালোই আছ তুমি। যা সেক্স তোমার। বাবু নিশ্চয়ই ভালোই মস্তি লুটছে। সুখেই আছ। তারওপর বৌদিমনি নেই। তোমাদের এখন পায় কে? আর আমার এমনই কপাল। স্বামীটাও শেষ পর্যন্ত আমাকে ছেড়ে চলে গেল। ঠিক আছে, কাল আমি আসছি, তারপর তোমাদের দুজনের মোহে আমি ভঙ্গ দিচ্ছি।"

সিরিজা ওকে বললো, "তুই তো একবারেই চলে আসতে পারতিস। আমার বাচ্চাকে কোথায় ফেলে এসেছিস?"

 -- "তোমার বাচ্চা ভালোই আছে। ওকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছি। আমার তো চিন্তা আছে নাকি?"

 - "ওকে নিয়ে তাহলে চলে আয়।"

 -- "না এখন নয়। আমি কাল সকালেই আসবো।"

 - "কাল সকালে?"

 -- "হ্যাঁ কাল সকালে।"

রজত কিছু বলার সুযোগ পেল না আর। যাবার আগে দোলন বললো, "আমি খুব সকালেই আসবো কিন্তু। একদম ভোরে ভোরে। এসেই দরজায় কড়া নাড়বো।"

ও চলে গেল। রাস্তায় বেরিয়ে দোলন নিজেকেই একটা কথা বললো, যেটা সিরিজা আর রজত দুজনের কারুর কানেই পৌঁছলো না। যেতে যেতে দোলন বললো, যা পারো আজকের রাতটুকু করে নাও। তারপর তো কাল খুব ভোরেই আমি আসছি।
[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 07:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kalobonduk - 03-10-2020, 07:11 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kolir kesto - 03-10-2020, 09:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by sohom00 - 04-10-2020, 10:02 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by nightangle - 04-10-2020, 12:47 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 06-10-2020, 08:36 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 07-10-2020, 07:47 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 07-10-2020, 03:53 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 08-10-2020, 07:13 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 15-10-2020, 12:38 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 16-10-2020, 02:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 25-10-2020, 02:58 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by pagolsona - 30-10-2020, 11:36 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by raja05 - 18-06-2021, 04:24 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Fokir_sadhU - 09-10-2022, 01:52 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:03 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Arpon Saha - 09-10-2022, 02:56 AM



Users browsing this thread: 21 Guest(s)