14-10-2020, 04:49 PM
দিবাকর আনন্দে কথা বলতে পারছে না। অবাক হয়ে গেছে ও।
-- "এই তো সিরিজা আমার পাশে আছে। কথা বলো।"
সিরিজার হাতে ফোনটা দিয়ে রজত একদৃষ্টে চেয়ে আছে ওর দিকে। দিবাকরের সাথে কথা বলছে সিরিজা। যেন খুশিতে ডগমগ হয়ে ফুটছে রজত। ওদিকে দিবাকরকে ফোনে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে সিরিজা, "সবই ঠিকঠাক হয়ে যাবে। চিন্তার কিছু নেই। দেখবেন, আপনার রেশমি ঠিক আপনার কাছেই ফিরে আসবে। রেশমিকে রাজী করাবই আমি। এটা আমি কথা দিলাম আপনাকে।"
ফোনটা সিরিজার হাত থেকে ফেরত নিয়ে রজত দিবাকরকে বললো, "কি এবার খুশি তো? সিরিজা আর আমার জন্য বাড়ীতে এবার একটা পার্টি দিও। আর রেশমি যদি রাজী হয়ে যায়, তাহলে আমাদের বাইরে বেড়াতে যাবার ব্যাপারটা চারজনে একসাথেই হবে কি বলো? মজা হবে প্রচুর।"
কথা বলতে বলতেই হঠাৎই বৃষ্টি নেমেছে রাস্তায়। জানালার কাঁচ দিয়ে জলের ছিটে লাগছে সিরিজার শাড়ীতে। রজত বললো, "আমি তোমাকে পরে ফোন করছি দিবাকর। খুব জোরে বৃষ্টি নেমেছে এখন। আমরা দুজনে ট্যাক্সিতেই আছি।"
কলকাতার রাস্তায় ভর সন্ধেবেলা বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে সিরিজাকে নিয়ে একসাথে ভিজলে যেন কত ভালো হতো। ট্যাক্সির কাঁচটা ইচ্ছে করে তুলছিল না রজত। হঠাৎই বৃষ্টির ছাঁট এসে ভিজিয়ে দিয়েছে সিরিজার বুক।
রজত মজা পাচ্ছে। সিরিজা বললো, "দাও না তুলে কাঁচটা। দেখ কেমন ভিজিয়ে দিল আমাকে।"
রজত বললো, "থাক না একটু। তুমিও ভেজো, আর সেই সাথে আমিও।"
ট্যাক্সিওয়ালা বললো, "স্যার কোথায় যাবে বলুন? বৃষ্টি তো খুব জোরে পড়ছে, ধর্মতলায় তো আবার চলে এলুম। এবার?"
রজতের কারুর কথাই কানে যাচ্ছে না। হঠাৎই ট্যাক্সির মধ্যে সিরিজার ঠোঁট দুটোকে আঁকড়ে ধরেছে ঠোঁট দিয়ে। বৃষ্টির ছাঁট তোয়াক্কা না করে সিরিজার সাথে অনেকক্ষণ পরে রোমান্স, এই প্রথমবার ট্যাক্সিতে। রজতের জোরালো চুমুটা সিরিজার ঠোঁটের ওপর পুরো আছড়ে পড়ছিল। আচমকা সিরিজাও বুঝতে পারেনি। নিজেকে নিয়ে নড়াচাড়াও করতে পারছে না, বৃষ্টির ছাঁটকে উপেক্ষা করে রজত আরও গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরেছে ওর ঠোঁট। ট্যাক্সিওয়ালাও যেন দেখেও দেখছে না। রজতেরও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ওদিকে। গাড়ীর মধ্যে সিরিজার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট আবদ্ধ করে থাকাটা রজতের কাছে কোনো ব্যাপার নয়, শুধু আদর করার জন্য সিরিজার অনুমতিটা পেলেই হলো।
সিরিজা ওকে আটকানোর প্রবল চেষ্টা করছিল, কিন্তু রজতের মন প্রাণ তখন ছেয়ে ফেলেছে সিরিজার এই অসাধারণ কৃতিত্ব। যেভাবে রেশমিকে রাজী করিয়ে নিয়েছে ও, সেটা একপ্রকার কেরামতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
চুমুটা ওকে ভালোমতন খেয়ে রজত বললো, "থ্যাঙ্ক ইউ। আজ থেকে আমি তোমার কেনা গোলাম হয়ে গেলাম। সত্যি মানতে হবে তোমার মধ্যে কিছু আছে। নইলে, আমি তো ভেবেছিলাম, গেল বোধহয় সব মাটি হয়ে।"
বৃষ্টিটা তুমুল জোরে পড়ছে। বৃষ্টির ছাঁট এসে সিরিজার পিঠ ভালোমতই ভিজিয়ে দিচ্ছে। রজত ওকে তখনও জড়িয়ে রেখেছে, শরীরের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে সিরিজা জানালার দিকে যেতেও পারছে না। কারন তখনও জল আসছে তেড়ে।
ট্যাক্সিওয়ালা এবার বললো, "আপনারা জানালার কাঁচটা তুলে দিন, নয়তো পুরো ভিজে যাবেন।"
রজত সিরিজাকে বললো, "সরি সরি। এই তো আমি এবার কাঁচ তুলে দিচ্ছি, তুমি রিল্যাক্স করে বসো।"
সিরিজা ওকে বললো, "পকেট থেকে তোমার রুমালটা বের করো দেখি। আমার পিঠটা মুছে দাও রুমাল দিয়ে, একদম ভিজে গেছে।"
রজত পকেট থেকে রুমালটা বের করার সময় সিরিজা হাসছিল।
রজত বললো, "কি হলো, হাসছো কেন?"
সিরিজা তবু হাসছিল, এবার বললো, "তোমার ঠোঁটের নিচে আমার লিপস্টিক লেগে গেছে। দাও ওটা আমি মুছে দিই।"
-- "থাক না, ভালোই তো।"
- "ধ্যাত, খালি চ্যাংড়ামো মারে শুধু।"
ট্যাক্সি বৃষ্টির মধ্যেই ধর্মতলা চলে এসেছ অনেকক্ষণ। ট্যাক্সিওয়ালা আবার কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই সিরিজা বললো, "কোথায় যাবে এখন?"
-- "এই বৃষ্টিতে তোমাকে নিয়ে আর কোথায় ঘুরবো? চলো বাড়ীই ফিরে যাই। বেশ তো ভালোই কাটছিল সময়টা। হঠাৎই প্রকৃতি দেবতার কি যে হলো? বৃষ্টিটা এসে সব ঝামেলা পাকিয়ে দিল, নইলে তোমাকে নিয়ে তো আরও কিছুক্ষণ ঘোরা যেত।"
রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে সিরিজা বললো, "দিবাকরদার ওখানে একবার গেলে হতো না?"
-- "দিবাকর?"
- "হ্যাঁ, চলো না যাই।"
-- "কিন্তু সিরিজা, বৃষ্টি যেভাবে পড়ছে, মনে হচ্ছে আরও অনেকক্ষণ চলবে। তারপর যদি ওখানেই আটকা পড়ে যাই? আর ফিরতে না পারি?"
- "ভালোই তো, রাত্রে ওখানেই থেকে যাবো।"
রজত কি যেন ভাবছিল। সিরিজা আবার বললো, "তুমিই তো আমাকে ওখানে পাঠানোর প্ল্যান করেছিলে, দিবাকরদার সাথে রাত্রে থাকার জন্য, এখন তো তুমি থাকবে সাথে, অসুবিধা কি?"
-- "না অসুবিধা কিছু নয়। আসলে....."
কি যেন বলতে থেমে গেল রজত। সিরিজা বললো, "আসলে কি?"
রজত যেন বলতে গিয়েও বলতে পারলো না সিরিজাকে। ওর ইচ্ছায় সাড়া দিতে ইচ্ছে করছে না, মন সায় দিচ্ছে না। তবু যেন বলতে পারছে না সিরিজাকে। কাল থেকে রেশমিকে নিয়ে যা টানাপোড়েন চলছে, এবারে যেন একটু হাঁপিয়ে পড়েছে রজত। দিবাকরের উপস্থিতি যেন ওর অবাধ যৌন স্বাধীনতাকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে।
রজতের গালে একটা হাত রেখে সিরিজা বললো, "কি ভাবছ?"
-- "কই কিছু না তো?"
- "তুমি না বললেও আমি সব বুঝতে পারি।"
-- "কি?"
- "অনেক জোরাজুরি করছি না তোমাকে?"
-- "কই না তো?"
- "রেশমিকে নিয়ে আমি একটু বেশিই মাথাব্যাথা করে ফেলেছি। তোমার আর ভালো লাগছে না?"
-- "না না, তা কেন হবে। রেশমির সমস্যা তো তুমিই সমাধান করে ফেলেছে। আমি শুধু দিবাকরের ঐ করুন মুখটা আর দেখতে চাই না। ওর ওখানে গেলেই তো আবার সেই রেশমিকে নিয়ে আলোচনা। তার থেকে বরং রেশমি ফিরে আসুক। দিবাকরের একাকীত্ব ঘুচুক, তাহলে আমরা সবাই স্বস্তি পাবো।"
সিরিজার মন রাখার জন্য রজত তবু বললো, "তুমি যখন যেতে চাইছো, চলো। তুমি বললে আমি কখনও না করবো না।"
ট্যাক্সিওয়ালাকে গাড়ীটা অন্যদিকে ঘোরাতে বলতে যাচ্ছিলো রজত। সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "না থাক, বাড়ীই ফিরে চলো।"
-- "তুমি রাগ করলে আমার ওপর?"
- "ওমা, রাগ কেন করবো?"
-- "আমি তো যেতে চাইছি, চলো না। আমি বরং দিবাকরকে আর একটা ফোন করে দিচ্ছি। ও শুনে খুশিই হবে।"
ফোনটা দিবাকরকে আবার করতে যাচ্ছিলো রজত। সিরিজা ওর হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বললো, "বলছি না যাবার দরকার নেই। বাড়ীই ফিরে চলো। তাছাড়া বৃষ্টিটা প্রচন্ড জোরে পড়ছে। আমরা ওখানে গেলে সত্যিই ফিরতে পারবো না আজকে।"
ট্যাক্সিওয়ালা বুঝতে পারছে না গাড়ী কোনদিকে নিয়ে যাবে। গাড়ীটা আবার দাঁড় করিয়ে দিয়েছে রাস্তার একপাশে। মুখ ঘুরিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে ওদের দুজনের দিকে। সিরিজা রজতকে বললো, "ওনাকে বলে দাও, বাড়ী কিভাবে যেতে হবে। উনি জানতে চাইছেন।"
রজত গাড়ীটা ঘোরাতে বললো, "নর্থ এর দিকে। চলুন উল্টোডাঙা হয়ে দমদম ক্যান্টনমেন্ট। ওখানেই আমার বাড়ী।"
গাড়ীতে বাকী রাস্তাটুকু যেতে যেতে, সিরিজা তখন রজতের বুকে মুখ রেখে চোখটা একটু আধবোজা করে ফেলেছে। ট্যাক্সি তখন ভি আই পি রোড ধরে সাঁ সাঁ করে ছুটছে। সিরিজার কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে রজত বললো, "একটা কথা বলবো সিরিজা?"
- "কি?"
-- "আমার যেটা মন বলছে, যদি মিথ্যা না হয়, তাহলে তুমি অন্তত আমাকে সত্যি কথাটা বলবে কি? আমি কিন্তু কিছু লুকোয় নি তোমার কাছে?"
রজতের বুকেই মাথা রেখে সিরিজা বললো, "কি জানতে চাইছো বলো?"
-- "আমি যখন ঘরে ছিলাম না, দিবাকর কি কোনো দূর্বলতা দেখিয়েছিল তোমার প্রতি?"
-- "এই তো সিরিজা আমার পাশে আছে। কথা বলো।"
সিরিজার হাতে ফোনটা দিয়ে রজত একদৃষ্টে চেয়ে আছে ওর দিকে। দিবাকরের সাথে কথা বলছে সিরিজা। যেন খুশিতে ডগমগ হয়ে ফুটছে রজত। ওদিকে দিবাকরকে ফোনে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে সিরিজা, "সবই ঠিকঠাক হয়ে যাবে। চিন্তার কিছু নেই। দেখবেন, আপনার রেশমি ঠিক আপনার কাছেই ফিরে আসবে। রেশমিকে রাজী করাবই আমি। এটা আমি কথা দিলাম আপনাকে।"
ফোনটা সিরিজার হাত থেকে ফেরত নিয়ে রজত দিবাকরকে বললো, "কি এবার খুশি তো? সিরিজা আর আমার জন্য বাড়ীতে এবার একটা পার্টি দিও। আর রেশমি যদি রাজী হয়ে যায়, তাহলে আমাদের বাইরে বেড়াতে যাবার ব্যাপারটা চারজনে একসাথেই হবে কি বলো? মজা হবে প্রচুর।"
কথা বলতে বলতেই হঠাৎই বৃষ্টি নেমেছে রাস্তায়। জানালার কাঁচ দিয়ে জলের ছিটে লাগছে সিরিজার শাড়ীতে। রজত বললো, "আমি তোমাকে পরে ফোন করছি দিবাকর। খুব জোরে বৃষ্টি নেমেছে এখন। আমরা দুজনে ট্যাক্সিতেই আছি।"
কলকাতার রাস্তায় ভর সন্ধেবেলা বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে সিরিজাকে নিয়ে একসাথে ভিজলে যেন কত ভালো হতো। ট্যাক্সির কাঁচটা ইচ্ছে করে তুলছিল না রজত। হঠাৎই বৃষ্টির ছাঁট এসে ভিজিয়ে দিয়েছে সিরিজার বুক।
রজত মজা পাচ্ছে। সিরিজা বললো, "দাও না তুলে কাঁচটা। দেখ কেমন ভিজিয়ে দিল আমাকে।"
রজত বললো, "থাক না একটু। তুমিও ভেজো, আর সেই সাথে আমিও।"
ট্যাক্সিওয়ালা বললো, "স্যার কোথায় যাবে বলুন? বৃষ্টি তো খুব জোরে পড়ছে, ধর্মতলায় তো আবার চলে এলুম। এবার?"
রজতের কারুর কথাই কানে যাচ্ছে না। হঠাৎই ট্যাক্সির মধ্যে সিরিজার ঠোঁট দুটোকে আঁকড়ে ধরেছে ঠোঁট দিয়ে। বৃষ্টির ছাঁট তোয়াক্কা না করে সিরিজার সাথে অনেকক্ষণ পরে রোমান্স, এই প্রথমবার ট্যাক্সিতে। রজতের জোরালো চুমুটা সিরিজার ঠোঁটের ওপর পুরো আছড়ে পড়ছিল। আচমকা সিরিজাও বুঝতে পারেনি। নিজেকে নিয়ে নড়াচাড়াও করতে পারছে না, বৃষ্টির ছাঁটকে উপেক্ষা করে রজত আরও গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরেছে ওর ঠোঁট। ট্যাক্সিওয়ালাও যেন দেখেও দেখছে না। রজতেরও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ওদিকে। গাড়ীর মধ্যে সিরিজার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট আবদ্ধ করে থাকাটা রজতের কাছে কোনো ব্যাপার নয়, শুধু আদর করার জন্য সিরিজার অনুমতিটা পেলেই হলো।
সিরিজা ওকে আটকানোর প্রবল চেষ্টা করছিল, কিন্তু রজতের মন প্রাণ তখন ছেয়ে ফেলেছে সিরিজার এই অসাধারণ কৃতিত্ব। যেভাবে রেশমিকে রাজী করিয়ে নিয়েছে ও, সেটা একপ্রকার কেরামতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
চুমুটা ওকে ভালোমতন খেয়ে রজত বললো, "থ্যাঙ্ক ইউ। আজ থেকে আমি তোমার কেনা গোলাম হয়ে গেলাম। সত্যি মানতে হবে তোমার মধ্যে কিছু আছে। নইলে, আমি তো ভেবেছিলাম, গেল বোধহয় সব মাটি হয়ে।"
বৃষ্টিটা তুমুল জোরে পড়ছে। বৃষ্টির ছাঁট এসে সিরিজার পিঠ ভালোমতই ভিজিয়ে দিচ্ছে। রজত ওকে তখনও জড়িয়ে রেখেছে, শরীরের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে সিরিজা জানালার দিকে যেতেও পারছে না। কারন তখনও জল আসছে তেড়ে।
ট্যাক্সিওয়ালা এবার বললো, "আপনারা জানালার কাঁচটা তুলে দিন, নয়তো পুরো ভিজে যাবেন।"
রজত সিরিজাকে বললো, "সরি সরি। এই তো আমি এবার কাঁচ তুলে দিচ্ছি, তুমি রিল্যাক্স করে বসো।"
সিরিজা ওকে বললো, "পকেট থেকে তোমার রুমালটা বের করো দেখি। আমার পিঠটা মুছে দাও রুমাল দিয়ে, একদম ভিজে গেছে।"
রজত পকেট থেকে রুমালটা বের করার সময় সিরিজা হাসছিল।
রজত বললো, "কি হলো, হাসছো কেন?"
সিরিজা তবু হাসছিল, এবার বললো, "তোমার ঠোঁটের নিচে আমার লিপস্টিক লেগে গেছে। দাও ওটা আমি মুছে দিই।"
-- "থাক না, ভালোই তো।"
- "ধ্যাত, খালি চ্যাংড়ামো মারে শুধু।"
ট্যাক্সি বৃষ্টির মধ্যেই ধর্মতলা চলে এসেছ অনেকক্ষণ। ট্যাক্সিওয়ালা আবার কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই সিরিজা বললো, "কোথায় যাবে এখন?"
-- "এই বৃষ্টিতে তোমাকে নিয়ে আর কোথায় ঘুরবো? চলো বাড়ীই ফিরে যাই। বেশ তো ভালোই কাটছিল সময়টা। হঠাৎই প্রকৃতি দেবতার কি যে হলো? বৃষ্টিটা এসে সব ঝামেলা পাকিয়ে দিল, নইলে তোমাকে নিয়ে তো আরও কিছুক্ষণ ঘোরা যেত।"
রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে সিরিজা বললো, "দিবাকরদার ওখানে একবার গেলে হতো না?"
-- "দিবাকর?"
- "হ্যাঁ, চলো না যাই।"
-- "কিন্তু সিরিজা, বৃষ্টি যেভাবে পড়ছে, মনে হচ্ছে আরও অনেকক্ষণ চলবে। তারপর যদি ওখানেই আটকা পড়ে যাই? আর ফিরতে না পারি?"
- "ভালোই তো, রাত্রে ওখানেই থেকে যাবো।"
রজত কি যেন ভাবছিল। সিরিজা আবার বললো, "তুমিই তো আমাকে ওখানে পাঠানোর প্ল্যান করেছিলে, দিবাকরদার সাথে রাত্রে থাকার জন্য, এখন তো তুমি থাকবে সাথে, অসুবিধা কি?"
-- "না অসুবিধা কিছু নয়। আসলে....."
কি যেন বলতে থেমে গেল রজত। সিরিজা বললো, "আসলে কি?"
রজত যেন বলতে গিয়েও বলতে পারলো না সিরিজাকে। ওর ইচ্ছায় সাড়া দিতে ইচ্ছে করছে না, মন সায় দিচ্ছে না। তবু যেন বলতে পারছে না সিরিজাকে। কাল থেকে রেশমিকে নিয়ে যা টানাপোড়েন চলছে, এবারে যেন একটু হাঁপিয়ে পড়েছে রজত। দিবাকরের উপস্থিতি যেন ওর অবাধ যৌন স্বাধীনতাকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে।
রজতের গালে একটা হাত রেখে সিরিজা বললো, "কি ভাবছ?"
-- "কই কিছু না তো?"
- "তুমি না বললেও আমি সব বুঝতে পারি।"
-- "কি?"
- "অনেক জোরাজুরি করছি না তোমাকে?"
-- "কই না তো?"
- "রেশমিকে নিয়ে আমি একটু বেশিই মাথাব্যাথা করে ফেলেছি। তোমার আর ভালো লাগছে না?"
-- "না না, তা কেন হবে। রেশমির সমস্যা তো তুমিই সমাধান করে ফেলেছে। আমি শুধু দিবাকরের ঐ করুন মুখটা আর দেখতে চাই না। ওর ওখানে গেলেই তো আবার সেই রেশমিকে নিয়ে আলোচনা। তার থেকে বরং রেশমি ফিরে আসুক। দিবাকরের একাকীত্ব ঘুচুক, তাহলে আমরা সবাই স্বস্তি পাবো।"
সিরিজার মন রাখার জন্য রজত তবু বললো, "তুমি যখন যেতে চাইছো, চলো। তুমি বললে আমি কখনও না করবো না।"
ট্যাক্সিওয়ালাকে গাড়ীটা অন্যদিকে ঘোরাতে বলতে যাচ্ছিলো রজত। সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "না থাক, বাড়ীই ফিরে চলো।"
-- "তুমি রাগ করলে আমার ওপর?"
- "ওমা, রাগ কেন করবো?"
-- "আমি তো যেতে চাইছি, চলো না। আমি বরং দিবাকরকে আর একটা ফোন করে দিচ্ছি। ও শুনে খুশিই হবে।"
ফোনটা দিবাকরকে আবার করতে যাচ্ছিলো রজত। সিরিজা ওর হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বললো, "বলছি না যাবার দরকার নেই। বাড়ীই ফিরে চলো। তাছাড়া বৃষ্টিটা প্রচন্ড জোরে পড়ছে। আমরা ওখানে গেলে সত্যিই ফিরতে পারবো না আজকে।"
ট্যাক্সিওয়ালা বুঝতে পারছে না গাড়ী কোনদিকে নিয়ে যাবে। গাড়ীটা আবার দাঁড় করিয়ে দিয়েছে রাস্তার একপাশে। মুখ ঘুরিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে ওদের দুজনের দিকে। সিরিজা রজতকে বললো, "ওনাকে বলে দাও, বাড়ী কিভাবে যেতে হবে। উনি জানতে চাইছেন।"
রজত গাড়ীটা ঘোরাতে বললো, "নর্থ এর দিকে। চলুন উল্টোডাঙা হয়ে দমদম ক্যান্টনমেন্ট। ওখানেই আমার বাড়ী।"
গাড়ীতে বাকী রাস্তাটুকু যেতে যেতে, সিরিজা তখন রজতের বুকে মুখ রেখে চোখটা একটু আধবোজা করে ফেলেছে। ট্যাক্সি তখন ভি আই পি রোড ধরে সাঁ সাঁ করে ছুটছে। সিরিজার কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে রজত বললো, "একটা কথা বলবো সিরিজা?"
- "কি?"
-- "আমার যেটা মন বলছে, যদি মিথ্যা না হয়, তাহলে তুমি অন্তত আমাকে সত্যি কথাটা বলবে কি? আমি কিন্তু কিছু লুকোয় নি তোমার কাছে?"
রজতের বুকেই মাথা রেখে সিরিজা বললো, "কি জানতে চাইছো বলো?"
-- "আমি যখন ঘরে ছিলাম না, দিবাকর কি কোনো দূর্বলতা দেখিয়েছিল তোমার প্রতি?"
তৃতীয় অধ্যায় সমাপ্ত