Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সিরিজা by Lekhak
#72
                             ।। উনিশ ।।


রজতের কেনা নতুন শাড়ীটা সিরিজা যখন পড়ছিল রজত ওর সামনেই বসেছিল। মাথায় একটা ঘোমটা টেনে দিলেই নতুন বউ বউ দেখাবে। রজত বললো, "দাও না ঘোমটাটা। দেখি তোমাকে কেমন লাগে?"

উপভোগ্য যৌনসঙ্গমের পর নতুন বউ হিসেবে সিরিজাকে দেখতে ভীষন উসখুস করছিল মনটা। নীল রঙের লাইলন শাড়ী পড়ে সিরিজাকে পরীর মতন সুন্দর দেখাচ্ছে। রজতের দেওয়া উপহার সিরিজা বেশ সময় নিয়ে পড়ছিল। সিরিজা রজতকে বললো, "ইস, একদম বেছে বেছে পাতলা শাড়ীটাই কিনেছো? আমার আঁচলের তলা দিয়ে বুকের ওঠানামাটা তো দূরের লোকেদেরও চোখে পড়বে।"

 -- "এমন শাড়ীতেই তো তোমাকে মানায়।"

 - "আর কেউ যদি আমার দিকে খালি তাকায়?"

রজত হেসে বললো, "দূর, আমি তো তোমাকে ট্যাক্সিতে নিয়ে ঘুরবো। দূর থেকে তোমাকে দেখবে, এমন কার সাধ্যি?"

 - "কেন? আমি বুঝি পায়ে হেঁটে ঘুরবো না?"

 -- "এই ভর দুপুরবেলা পায়ে হেটে কোথায় ঘুরবে? শহর দেখতে হলে ট্যাক্সিটাই তো বেস্ট।"

 - "তোমার যদি একটা গাড়ী থাকতো, খুব ভালো হতো। তোমার পাশে বসে আমি গাড়ী করে ঘুরতাম।"

 -- "কিনবো, কিনবো। আগে আমার পুরোনো ঝেমেলাটা মিটতে দাও। তারপর দেখো তোমার জন্য আমি কি কি কিনি।"

শাড়ী পড়ে সেজেগুজে সিরিজা এবার রজতের দিকে পুরোপুরি মুখ ঘোরালো। বললো, "আর কি কিনবে আমার জন্য?"

 -- "এই পৃথিবীতে যা আছে, সব কিনে নেবো। আমার সিরিজার জন্য আমি সব কিনতেও রাজী।"

একটু কাছে এসে সিরিজা রজতের কাঁধের ওপর দুই হাত রাখলো। ওর দিকে তাকিয়ে বললো, "অত সোজা নয় বুঝলে? আমি গ্রামের মেয়ে তো, তাই আমার মন রাখার জন্য এসব বলছো।"

 -- "কেন? কিনতে পারি না নাকি? ছেলেরা ইচ্ছে করলে সব পারে। আমিও পারি। আমার সিরিজার জন্য আমি সব পারি।"

বলেই রজত একটা চুমু খেতে যাচ্ছিলো সিরিজার ঠোঁটে। ওকে বাধা দিয়ে সিরিজা বললো, "এই এখন আর নয়। এরপরে কিন্তু আমাদের আর বেরোনোই হবে না।"

একটা হালকা লিপস্টিক লাগিয়েছে সিরিজা ঠোঁটে। তাতেই মনে হচ্ছে আগুন জ্বলছে ওর ঠোঁটে। রজত চাইছিলো ওর আগুন ঠোঁটেই চুমুটা খেতে। লিপস্টিক খারাপ হয়ে যাবে বলে সিরিজা বললো, "এদিকে আমাকে সাজাবে বলছিলে, আর এখন আমার সাজ নষ্ট হয়ে গেলে বেরোতে পারবো? তখন তুমি একাই যেও।"

 -- "আচ্ছা আচ্ছা ভুল হয়ে গেছে।"

রজত তখন মাথা নীচু করে সিরিজার কাছে ক্ষমা চাওয়ার ভাব করছে। সিরিজা বললো, "সেই থেকে দুষ্টুমি করছো, আমাদের কতো দেরী হয়ে গেল বলো তো। কখনই বা খাবো, আর কখনই বা ঘুরবো?"

রজত বললো, "আমি একটা ট্যাক্সি ডেকে নিয়ে আসি। একদম বাড়ীর সামনে। তারপর তুমি আর আমি, ট্যাক্সিতে চড়ে....."

 - "না না, এই প্রথম তোমার সাথে ঘরের বাইরে বেরুচ্ছি। একটু তো হাঁটি। ট্যাক্সি তো মোড় থেকেও পেয়ে যাবে।"

রজত সিরিজার কথার আপত্তি করলো না। ওকে পাশে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাবে। কেউ যদি তাকায়। ওর বুকটা দূর থেকে দেখে দেখুক না। সিরিজা ওদেরকে না দেখলেই হলো।

রজত সিরিজার হাতটা ধরে বললো, "চলো তাহলে যাই।"

সিরিজা হেসে বললো, "এবার ঘোমটাটা দেবো?"

এই প্রথম রজতের সাথী হয়ে বাড়ীর বাইরে বেরোলো সিরিজা। দুর্লভ মূহূর্তগুলো ঘরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো এতদিন। সুখের সহবাসে সিরিজাকে নিয়ে যৌনমিলন করতে করতে চার দেওয়ালের মধ্যে থেকে রজত ওকে বাইরে নিয়ে বেরোতেই ভুলে গেছে। আজ সেই ইচ্ছাটাও পূরণ হলো।

সিরিজার হাতটা ধরে রজত বললো, "ধ্যাত, এখন ঘোমটা দিতে হবে না। ওটাতো তোমাকে বউ হিসেবে কেমন লাগে সেটা দেখার জন্যই বলেছিলাম।"

ঘর থেকে বেরিয়ে গলিটা দিয়ে রজতের পাশে পাশে হাঁটছিলো সিরিজা। রজত হেসে বললো, "রাস্তায় তোমাকে যদি একটা চুমু খেতে পারতাম, দারুন হতো।"

 - "এই তুমি কিন্তু খেয়ো না। তাহলে সবাই কি ভাববে?"

রজত জানে লিপষ্টিক ঘসা সিরিজার ঠোঁটে চুমু খেতে পুড়িয়ে দিলে ভালোই লাগবে। কিন্তু এই রাস্তার মধ্যে কি করে তা সম্ভব? ও বললো, "ট্যাক্সিতে উঠি। তারপর তোমার ঠোঁটে চুমু খাবো।"

সিরিজা বললো, "খাওয়াচ্ছি দাঁড়াও!"

 -- "বারে? ট্যাক্সির মধ্যে খেলে আর কি দোষ?"

রাস্তার ওপরে হঠাৎই দাঁড়িয়ে সিরিজা বললো, "তাহলে এক্ষুণি খাও।"

 -- "এই না। তা খাওয়া যায় নাকি? তোমার সাজগোজ নষ্ট হয়ে গেলে? কেউ যদি দেখে ফেলে?"

মুখে বলাটা যত সহজ, করাটা তত সহজ নয়। ঘরের জিনিষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে করলে পাড়ার লোকেরা টিটকিরি মারবে। পাড়ায় টিকতে দেবে না। রজত তবু বললো, "এখনও দুপুর গড়িয়ে বিকেলটা হয় নি। সন্ধে হলে চুমুটা অনায়াসে খেতে পারতাম।"

সিরিজা বললো, "আর চুমু খেতে হবে না। এবার চলো তো।"

গলিটা পেরিয়ে রাস্তার মোড়ে এসেও রজত দেখলো একটাও খালি ট্যাক্সি নেই। দুপুরবেলা লোকজন বিশেষ চলছে না রাস্তা দিয়ে। একটা ট্যাক্সি বিকট আওয়াজ করতে করতে ওদের সামনে দিয়ে চলে গেলো। কিন্তু ট্যাক্সিটা খালি নয়। রজত বললো, "ট্যাক্সি না পেলে এই দুপুরবেলা তোমাকে নিয়ে আর কত হাঁটাই বলো তো?"

হাত ঘড়িতে টাইমটা দেখে রজত বললো, "নাহ সত্যিই অনেক দেরী হয়ে গেলো। তোমাকে নিয়ে আর একটু আগে বেরোলেই ভালো হতো।"

খালি একটা ট্যাক্সি ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো। রজত ট্যাক্সিওয়ালাকে বললো, "ধর্মতলা যাবেন?"

 -- "হ্যাঁ যাবো, উঠুন।"

ড্রাইভারটা আড়চোখে সিরিজাকে একবার দেখলো। চোখের দৃষ্টিতে মুগ্ধতা। এমন চোখ ধাঁধানো নারী এই প্রথম উঠছে ওর ট্যাক্সিতে। সিরিজার মনে হলো, গাড়ীটা বোধহয় ওকে দেখেই দাঁড় করালো ড্রাইভারটা।

রজত সিরিজাকে পাশে নিয়ে শরীরে শরীর ঠেসে বসলো।

 - "চলুন তাড়াতাড়ি। আমাদের খুব দেরী হয়ে গেছে।"

 -- "ধর্মতলায় কোথায় যাবেন?"

 - "যাবো কোনো ভালো রেষ্টুরেন্টে। দুপুরের খাওয়াটা ওখানেই সারতে হবে।"

ধর্মতলা কোথায়? সিরিজা রজতকে বললো, "তুমি ধর্মতলায় যাবে?"

 -- "হ্যাঁ। ধর্মতলা হলো, এই শহরের হার্ট অব দ্য সিটি। আর একটু এগিয়ে চৌরঙ্গী তারপরে পার্কস্ট্রীট। কলকাতার সাহেবি পাড়া। তুমি তো দেখো নি। চলো আজ তোমায় সব দেখাবো।"

ড্রাইভারটা মুখ ঘুরিয়ে একবার তাকালো। যেন ওরও অবাক লাগছে। এই মহিলাটি বোধহয় অন্য জায়গা থেকে এসেছে।

রজত ভাবছে সিরিজাকে চুমুটা এবার খাবে কিনা। ওর কাঁধে পেছন দিক দিয়ে হাতটা রেখে বললো, "এই কাছে এসো না একটু।"

 - "আর কত কাছে আসবো বাবা, এই তো কাছেই রয়েছি।"

রজত সিরিজাকে চুমুটা খেতেই যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "এই, এখন না। লোকটা কি ভাববে?"

 -- "সবাই তার নিজের বউকে চুমু খায়। আমি খাচ্ছি তো কার কি?"

 - "তাহলেও বলছি না পরে। আচ্ছা আচ্ছা ফেরার সময়। রাত্রিবেলা।"

রজত তাও মুখটা বাড়িয়ে দিচ্ছিলো সিরিজার দিকে। হঠাৎ ছন্দোপতন হলো, ড্রাইভারটা একটা কথা জিজ্ঞেস করাতে।ও বললো, "আচ্ছা, আমি কি পার্কস্ট্রীট যাবো?"

চুমু খাওয়াতে ব্যাঘাত ঘটালেই বিরক্তি এসে যায়। রজত বললো, "আমি তো পার্কস্ট্রীট বলিনি। ধর্মতলাতেই চলুন।"

ধর্মতলায় অম্বর রেষ্টুরেন্টটা বেশ ভালো। একতলা, দোতলা, তিনতলা। তিনটে তলাতেই রেষ্টুরেন্ট। মনে আছে একবার রেশমিকে নিয়ে রজত এসেছিলো ডিনার করতে। সাথে দিবাকরও ছিলো। ফেরার সময় সে কি বৃষ্টি। রেশমি খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলো সেদিন। - "এমা, এতো বৃষ্টি! আমি বাড়ী যাবোও কি করে?"

 - "কেন? তোমাকে ট্যাক্সীতে পৌঁছে দিচ্ছি আমি।"

রজত তখন রেশমির জন্য পাগল।

গাড়ীতে প্রবল ইচ্ছা থাকলেও রেশমিকে চুমুটা খাওয়া হয় নি সেদিন। কারন পাশে দিবাকর ছিলো। বারবার মুখ ঘুরিয়ে ড্রাইভারটাও দেখছিলো ওদের তিনজনকে। আজ যেন এই ড্রাইভারটাও একই জিনিষ করছে। রজত বিরক্ত হয়ে বললো, "আপনাকে বারবার জিজ্ঞাসা করতে হবে না। সোজা ধর্মতলাতেই চলুন।"

সিরিজার দিকে মুখ ঘুরিয়ে রজত দেখলো, সিরিজা হাসছে। রজত চুমুটা খেতে পারেনি বলে ওর বোধহয় মজা লেগেছে।

ড্রাইভারটি তখনও চমকে ওঠেনি। সুন্দরী মহিলাটিকে নিয়ে লোকটা যেন কি শুরু করেছে। ও আর তাকালোই না পেছন ফিরে।

রজত বললো, "তোমার আগুন ঠোঁটে একটা চুমু খেতে দাও না সিরিজা?"

 - "দিতে পারি, কিন্তু আমার লিপস্টিক কিন্তু নষ্ট হয়ে যাবে।"

তাও তো বটে। রজত বললো, "তাহলে থাক। আমি বরং পরে। তবে গালে তো এখন একটা খেতে পারি।"

সিরিজার গালে চুমু খাওয়ার সময় গাড়ীটা একটা ঝাঁকুনি খেলো। রজত বললো, "আস্তে চালান।"

ড্রাইভারটা বললো, "কি করবো? বড় একটা গর্ত পড়ে গিয়েছিলো।"

অম্বর বার এন্ড রেষ্টুরেন্টে পৌঁছোতে সময় লাগলো পাক্কা চল্লিশ মিনিট। ঘড়িতে বিকেল চারটে বাজে। সিরিজা বললো, "এখানে খাবার পাবে এখন?"

রজত বললো, "এখানে সবসময়ই খাবার পাওয়া যায়। ভেতরে ঢুকি চলো। দেখবে কি দারুন রেষ্টুরেন্ট।"

একতলাটা পুরো ভর্তি। রজত বললো, "চলো তোমাকে নিয়ে আমি দোতলায় যাই।"

সিঁড়ির ওপরে কার্পেট পাতা। ওঠার সময় সিরিজা বললো, "কি দারুন। আমি কোনোদিন ভাবিনি। এতো দামী রেষ্টুরেন্টে এসে খাবো।"

দুটো লোক নামছিলো দোতলা থেকে। সিরিজার দিকে তাকিয়ে ওরা দেখছিলো। রজত বললো, "তুমি এমনই। সবাই খালি তোমার দিকে তাকায়। ভেতরে যখন ঢুকবো। তখনও দেখবে সবাই তোমার দিকে কেমন সবাই তাকাচ্ছে।"

দোতলায় বড় একটা হলঘর। রজত সিরিজাকে নিয়ে একটা টেবিলের মুখোমুখি বসলো। একতলার থেকে দোতলায় ভীড়টা কম। অল্প কিছু লোক বসে খাবার খাচ্ছে। দুটো ফ্যামিলি এসেছে। সাথে দুটো করে বাচ্চা।

এক ভদ্রলোক কিছুটা দূরে বসে ড্রিংক করছে একা একা। গ্লাসটা মুখে তুলে একবার সিরিজার দিকে তাকালো। সিরিজা বললো, "এখানে মদও পাওয়া যায়?"

 -- "হ্যাঁ এটা তো বার কাম রেষ্টুরেন্ট। ইচ্ছে করলে ড্রিংকও করা যায় আবার খাবারও খাওয়া যায়।"

খাবারের মেনু কার্ডটা হাতে নিয়ে রজত বললো, "কি খাবে বলো? অর্ডারটা দিই।"

 - "তুমি যা খাবে, আমিও তাই খাবো।"

 -- "চিকেন খাবে চিকেন? না ভাত আর মাছের ঝোল?"

ওয়েটার অর্ডার নিতে এসে সিরিজাকেই দেখছিলো, রজত তখন মেনুকার্ড এ চোখ বোলাচ্ছে। ওয়েটার এর নজর ঘুরিয়ে বললো, "এই যে এদিকে। দু জায়গায় রাইস, আর সাথে ডাল ফ্রাই দাও। পনীর মশালা আর চিকেন কারী। তাড়াতাড়ি। বড্ড খিদে লেগেছে।"

খাবারের অর্ডার নিয়ে ওয়েটার চলে গেলো। রজত বললো, "দেখেছো? সবাই তোমাকে কেমন দেখছে। এতোদিন তোমায় শুধু আমি দেখেছি, এখন বাকীরা দেখছে।"

সিরিজা বললো, "এখান থেকে খাবার খেয়ে কোথায় যাবে?"

রজত বললো, "যাবার জায়গা তো অনেক আছে। ধর্মতলা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পার্কস্ট্রীট। তারপরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। যদি বলো নিউমার্কেটেও নিয়ে যেতে পারি।"

 - "মার্কেট?"

 -- "হ্যাঁ অনেক জিনিষ কিনতে পাওয়া যায়। যাবে?"

 - "আমি আর কি কিনবো?"

 -- "তুমি যেটা কিনতে চাইবে। সেটাই কিনে দেবো।"

সিরিজা বললো, "না না, আজ কিছু কিনবো না। আজ শুধু ঘুরবো। এখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে তুমি যেখানে নিয়ে যাবে সেখানে। তুমি না বলেছো আজ আমাকে নিয়ে ঘুরবে?"

 -- "বলেছি তো। চলো কোথায় যাবে? তুমি যেখানে যেতে চাইবে, আমি সেখানেই নিয়ে যাবো।"

সিরিজা বললো, "আমি ধর্মতলা ঘুরবো।"

রজত বললো, "আসলে এই জায়গাটা শুধু লোকে গিজগিজ করছে। তোমাকে নিয়ে একটু ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো।"

 - "কেন?"

 -- "নিরিবিলিতে তোমাকে বসে আদর করতাম। তোমার বুকে মুখ রাখতাম, তোমার ঠোঁটে চুমু খেতাম। আর....."

 - "আর কি করতে?"

রজত মিটিমিটি হাসছিলো। সিরিজা ওকে ধমকে বললো, "তাহলে আমায় ধর্মতলায় নিয়ে এলে কেন? তোমার নিরিবিলি জায়গায় রেষ্টুরেন্ট ছিলো না?"

 -- "আচ্ছা বাবা আচ্ছা। আমি তো এমনি ইয়ার্কি মারছি তোমার সঙ্গে।"

 - "হ্যাঁ তোমার ইয়ার্কি মারা বার করছি!"

রজত তখনও হাসছিলো। হঠাৎ দিবাকরের কথা তুলে সিরিজাকে বললো, "দিবাকরটা কি বোকা। বললাম থাকতে, একসঙ্গে ঘুরতাম। তা না কি না চলে গেলো।"

সিরিজা মুখটা নিচু করলো, বললো, "আমিও তো বলেছিলাম থাকতে। শুনলো না দিবাকরদা। চলে গেলো।"

খাবারটা একটু পরে সার্ভ করলো ওয়েটার। রজত বললো, "চামচে ধরে খেতে না পারলে হাত দিয়েই খাও। এখানে কেউ দেখবে না। আমিও হাত দিয়েই খাচ্ছি।"

সিরিজা বললো, "দেখি না একটু চেষ্টা করে। পারি কিনা?"

রজত চামচেটা হাতে ধরে সিরিজাকে বললো, "প্রথম গ্রাসটা তাহলে আমি তোমার মুখে পুরে দিই।"

চামচেটা মুখে দিয়ে সিরিজাকে ডাল মাখানো ভাতটা খাইয়ে দিচ্ছে রজত। পাশ থেকে একা বসা ঐ লোকটা আপন মনে উঠলো, "ওহ্ লাভলী!"

সিরিজা মুখ ঘুরিয়ে তাকালো লোকটার দিকে। বললো, "লোকটা কি রকম করে উঠলো দেখলে?"

রজত বললো, "সঙ্গে করে যাকে নিয়ে এসেছি, সবাই দেখছে আর প্রেমে পড়ে যাচ্ছে। এরপরে আমি কোথায় যাই?"

সিরিজাও রজতের দেখাদেখি চামচে করে ওর প্লেট থেকে একটু ভাত তুললো। চামচেটা রজতের মুখের সামনে ধরলো, বললো, "দেখি এবার আমিও তোমাকে খাইয়ে দিই।"

রজত মুখ বাড়িয়ে চামচেটা মুখে পুরে নিল। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো, লোকটা তখনও ওদের দেখছে। বিশেষ করে সিরিজাকে। যেন মোহিত হয়ে গেছে। সিরিজার ম্যাজিক বলে কথা। আবার একটা কিছু বলে উঠলে সিরিজাও চমকে উঠবে।

রজত লোকটাকে অত পাত্তা না দিয়ে সিরিজার দিকেই তাকালো। খেতে খেতে দিবাকরের নামটা আবার উল্লেখ করলো। বললো, "তোমাকে যাবার আগে কিছু বলে গেছে দিবাকর? ওকে বলেছিলাম, তিনজনে মিলে ঘুরতে যাবো। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আসছি। ছুটিটাও তো মঞ্জুর হয়ে গেল। এখন বাবু যে কেটে পড়লো, আমাদের যাওয়াটা তাহলে কি হবে?"

 - "আসলে দিবাকরদা তোমার শ্বশুর আর বউ এর ভয়ে চলে গেছে। তুমি তো দিবাকরদাকে তখন ফোন করেই সব জানতে পারলে। আমিও ভয়ডর না রেখে তোমার বউকে সোজা সাপ্টা বলে দিয়েছি। দিবাকরদা চেয়েছিল আমি চুপচাপ থাকি। উনিই ব্যাপারটা সামলে নেবেন। মাঝখানে আমি তোমার বউ আর শ্বশুরের মাঝখানে এসে পড়াতে উনি একটু ভয় খেয়ে গেছেন। তুমি ব্যাপারটা কিভাবে নেবে? তাই অপেক্ষা করলো না, চলে গেল।"

রজত হেসে বললো, "ওকে একবার মোবাইলে ধরার চেষ্টা করবো নাকি? দেখি ব্যাটা কি করছে?"

সিরিজা রজতের হাতে হাত রেখে ওকে বাধা দিয়ে বললো, "না এখন থাক। আমরা এখন ঘুরবো, ফিরবো। একবারতো কথা বলেছো, তুমি বরং ঘরে ফিরে দিবাকরদার সাথে কথা বোলো।"

রজত সেলফোনটা টেবিলের ওপরই রাখলো। সিরিজার দিকে তাকিয়ে বললো, "আচ্ছা সিরিজা, তোমার কি মনে হয় না, কাল রাতে দিবাকর যেন একটু অন্যরকম হয়ে গেছিলো।"

 - "কি রকম?"

 -- "এই হঠাৎই রাত বিরেতে আমাদের ঘরে চলে এল। তারপর মাথা ঘুরে পড়ে গেল। তোমার কি ওগুলো সত্যি মনে হয়?"

সিরিজা খেতে খেতে রজতের মুখের দিকে ভালো করে তাকালো। বললো, "তোমার কি মনে হয়?"

 -- "আমার তো মনে হয় সত্যিই। তবুও কেমন যেন খটকা লাগে মাঝেমধ্যে।"

সিরিজা ঘুরিয়ে রজতকে বললো, "তুমি তোমার বন্ধুকে বিশ্বাস করো?"

 -- "বিশ্বাস তো করি।"

 - "তাহলে আবার খটকা কিসের?"

রজত বললো, "তাও কেমন জানি....."

 - "আসলে দিবাকরদার কোনো দোষ নেই। সবই ওর কপালের দোষ। ভালোবাসার জন্য কাউকে পেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।"

 -- "সব ঠিক হয়ে যাবে?"

 - "হ্যাঁ। ঐজন্যই তো তোমাকে বললাম, রেশমির কথা। দিবাকরদার এখন ঐ মেয়েটাকে খুব দরকার।"

রজত মনে মনে বললো, "আমিই বা রেশমিকে এখন কোথায় পাই? সিরিজা যে দেখি থেকে থেকেই এখন রেশমির কথা বলছে। দিবাকরকে সাথে নিয়ে যদি রেশমিকে খুঁজতে পারতাম খুব ভালো হতো।"

খাবার খেয়ে অম্বর রেষ্টুরেন্ট থেকে ওরা বেরোলো দুজনে একসাথে। রজত বললো, "সত্যিই তুমি নিউমার্কেট যাবে না তো?"

সিরিজা বললো, "না।"

 -- "কিছু কিনবে না তো?"

 - "না কিনবো না। আমি এখন শুধু ঘুরবো।"
[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 07:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kalobonduk - 03-10-2020, 07:11 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kolir kesto - 03-10-2020, 09:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by sohom00 - 04-10-2020, 10:02 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by nightangle - 04-10-2020, 12:47 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 06-10-2020, 08:36 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 07-10-2020, 07:47 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 07-10-2020, 03:53 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 08-10-2020, 07:13 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 13-10-2020, 12:18 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 16-10-2020, 02:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 25-10-2020, 02:58 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by pagolsona - 30-10-2020, 11:36 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by raja05 - 18-06-2021, 04:24 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Fokir_sadhU - 09-10-2022, 01:52 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:03 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Arpon Saha - 09-10-2022, 02:56 AM



Users browsing this thread: 29 Guest(s)