Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery সিরিজা by Lekhak
#45
।। তেরো ।।


দিবাকরের সত্যি সারারাত ধরে চোখে ঘুম এল না। ভীষন একটা পোড়া কপালের মতন অবসাদ নিয়ে সোফায় বসে রইলো ঘন্টার পর ঘন্টা। চোখ দুটো যেন পাথর হয়ে রয়েছে। সিগারেটের প্যাকেটটা আস্তে আস্তে হালকা হতে হতে একসময় খালি হয়ে গেল। দিবাকর পর পর এতগুলো সিগারেট খেয়ে ফেললো, যা জীবনে কোনদিন খায়নি। খেতে খেতে দু তিনবার বিষম খেল, পরমূহূর্তে নিজেকেও সামলে নিল। কিন্তু ওর সিগারেট খাওয়া বন্ধ হোল না। এক একটা সিগারেট শুধু সিরিজাকে নিয়ে নানারকম চিন্তা করার রসদ জুগিয়ে যেতে লাগলো সারা রাত ধরে। বারবার ঘুরে ফিরে একটা কথাই মাথায় আসতে লাগলো, আজ ও যা দেখেছে, সেটাই ওকে অন্যরকম করে দিয়েছে। স্বভাব আর চিন্তাধারার পরিবর্তন। নইলে দিবাকর তো এরকম ছিল না। ওতো রজতের কথাই ভাবত সারা সময়। যে রজতের জন্য একদিন স্যাক্রিফাইস করেছিল, সেই বা হঠাৎ সিরিজাকে দেখে ফুঁসে উঠলো কেন? শুধুই কি শরীর না সেই সাথে অন্য কিছু?

মাস তিনেক আগে রজত দিবাকরের সাথে যেটা করেছিল, সেটাতো দিবাকর ভুলতে পারেনি এখনও। রজত কি কাজটা ঠিক করেছিল তখন? কে ওকে অধিকার দিয়েছিল? দিবাকর যদি হৃষ্টপুষ্ট মেয়েটার শরীরটা রজতের হাতে তুলে না দিত, রজত তো ছুঁতেও পারত না মেয়েটাকে। ওতো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেও টলাতে পারেনি মেয়েটাকে। অনেকবার ওকে বিছানায় শোওয়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হয় নি। রজতের মতিগতি আগে থেকেই বুঝে গেছিল সে। টাইট দেবার জন্য দিবাকরের সাথেই মেলামেশা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে শুরু করে সে। তখন রজত বিয়ে করেনি। মেয়েটা দিবাকরের কাছেই আসতো। মাল হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে বলে রজত নিরুপায় হয়ে দিবাকরের পায়ে পড়তে শুরু করে। দিবাকরের যাও বা মেয়েটাকে মনে ধরেছিল, তাও রজতের জন্য চূলোয় গেল। তখন যদি সেটা অন্যায় না হয়ে থাকে, তাহলে এখন দিবাকরের সিরিজাকে পাওয়ার ইচ্ছাটাও অন্যায় নয়। ও কি সবাইকে একাই ভোগ করবে বলে পৃথিবীতে এসেছে নাকি? রসবতী নারী দেখলে ইচ্ছা তো আর কারুরও জাগতে পারে। যে এতদিন নিজের কথা চিন্তা না করে রজতের কথাই বারবার চিন্তা করে এসেছে তার এমন মনোভাবের পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক। নিশ্চয়ই এর পেছনে কোন কারন আছে। নইলে রজতকে ও প্রতিদ্বন্দী হিসেবে ভাববেই বা কেন? বেশ তো মেয়েটাকে নিয়ে ফুর্তী করছে, সেখানে হঠাৎ দিবাকর ভাগ বসাতে যাবে কেন?

সেদিন দিবাকরের ইচ্ছাতেও ভাগ বসিয়েছিল রজত। দিবাকর প্রথমে রাজী হয় নি। বলেছিল, "তোমাকে ও ঠিক পছন্দ করছে না। ছাড়ো না আমি তোমাকে অন্য মেয়ে জুটিয়ে দেব। তুমি ওর সন্মন্ধে যা ভাবছ, ও ঠিক তা নয়। ও একটু অন্য ধরনের মেয়ে। তোমার গায়ে পড়াটা ওর সহ্য হচ্ছে না।"

রজত দিবাকরকে ঠেস মেরে বলেছিল, "তাহলে ও তোমার কাছে আসছে কেন? তুমি কি ওকে ঘরনী করবে নাকি?"

দিবাকর প্রথমে গুরুত্ব দেয় নি রজতের কথাটা। এক কথায় রাগই হয়েছিল ওর ওপর। যে করতে না চায় তার সাথে জোর করে করবে না কি? তাহলে তো পু্লিস কেস হবে।

দিবাকরকে তারপরে কায়দা করে পটিয়ে পাটিয়ে মেয়েটিকে হাসিল করে রজত। দিবাকরই ওর ভয়টা কাটিয়ে দেয়। বলে, "রজত তোমাকে ভালোবাসে, তুমি ওর সন্মন্ধে যা ভাবছ, সেরকম খারাপ ও নয়।"

রজতের জন্য ওকে এমন মিথ্যে কথাটা বলতে হোল। মেয়েটাকে ওরও ভালো লেগেছিল, কিন্তু রজত একপ্রকার ওকে বোকা বানিয়ে ওর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল। এখন ও কোথায় আছে কে জানে? নিশ্চয়ই রজতের মতন দিবাকরের প্রতিও ঘেন্না হচ্ছে মেয়েটার। ও এই উদারতাটা না দেখালে রজত তো পারতই না সারা রাত ধরে ওকে চুদতে। কেন যে সেদিন ওকে এই সুযোগটা করে দিল নইলে সেই মেয়েটি তাহলে ওরই হতো।

নামটা মনে পড়লো দিবাকরের। হ্যাঁ রেশমি। কোথায় আছে এখন রেশমি? ইস, ওর এই অবসাদ মূহূর্তে রেশমি কে যদি একটু কাছে পেত। কি ভালোটাই না হোত।

বড্ড আফসোস হচ্ছে দিবাকরের। পুরোন স্মৃতিটাকে তাজা করে শোধ তোলার পরিকল্পনাটাকে ভালোমতই করে নিল দিবাকর। এবার ওর চোখে ঘুম নেমে এল।

তখন বাজে ঠিক সকাল সাতটা। এত তাড়াতাড়ি রজতের ঘুম ভাঙবে না। দিবাকরের তো নয়ই। সোফার উপর দুহাত পা ছড়িয়ে অঘোরে ঘুমোচ্ছে দিবাকর। সিরিজা রজত কারুর কথাই তখন ওর মনের মধ্যে নেই। অবসাদ আর দূর্দান্ত অভিনয়, সেই সাথে সিরিজা আর রজতের গা গরম করা দৃশ্য দেখার আনন্দ মিলিয়ে কালকের রাত্রিটা কোনরকমে কেটেছে। এখন একটু ঘুমিয়ে সবকিছু ভুলে যেতে চায় ও। নতুন করে কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে না। দিবাকরকে দেখেই মনে হচ্ছিল, সারারাত জাগার পর ঘুম সহজে ভাঙবে না। অনেক বেলা অবধি শুয়ে থাকলে তবেই শরীর ঝরঝরে হবে। নতুন সকালে সিরিজাকে দেখে তারপর যা কিছু উদ্যোগ নেওয়া যাবে। রজতকে আর একা উপভোগ করতে কিছুতেই দেবে না ও। এবার ও সিরিজার নদীতে নিজেও গা ভাসাবে।

দিবাকর বুঝতে পারলো না কখন শোবার ঘরের দরজাটা আস্তে আস্তে খুলতে আরম্ভ করেছে। দরজা খুলে আর কেউ নয়, ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে সিরিজা। কারন একটু আগেই ওর রাতের ঘুম ভেঙেছে। সকালবেলা বাথরুমে যেতে হবে। দিবাকর যেখানে শুয়ে আছে, সেখান থেকে বাথরুমের দূরত্বটা খুব বেশী নয়। সিরিজাকে যেতে হবে দিবাকরের সামনে দিয়েই। শাড়ীটা কোনরকমে গায়ে জড়িয়ে সিরিজা দেখছিল দরজা ফাঁক করে দিবাকর ঘু্মোচ্ছে কিনা।

একটু আগেই ঘুম থেকে উঠে ব্লাউজ, শায়া পড়ে তারপর কোনরকমে শাড়ী অগোছালা ভাবে পড়েছে। রজত ওর বুক মুখে নিয়ে এমন ভাবে শুয়েছিল যে ওকে ছাড়াতে ছাড়াতেই বেশ খানিকটা সময় চলে গেছে। রাত্রে ওর শরীরের উপর যৌন অভিসার করতে করতে বেশ পর্যাপ্ত পরিমানে সিরিজার বুকের দুধ খেয়েছে রজত। সিরিজা সকালে উঠে দেখছিল ওর স্তনের বোঁটা দুটোয় বেশ ব্যাথা ব্যাথা। রজতের সমুদ্র সমান চাহিদা মেটাতে গিয়ে ও রজতকে বাঁধা দেয় নি। বুকের দুধ খেতে খেতে রজত বেশ কয়েকবার বোঁটাটা দাঁত দিয়ে কামড়েছে। সেইজন্যই এই ব্যাথা ব্যাথা। সঙ্গমের সাথে সাথে এটাই তো বাড়তি লাভ। সিরিজার বুক ভর্তি দুধ। রজতের কাছে যেন এক বিরল সম্পদ। পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে জীবনপাত্রের শেষ তলানি পর্যন্ত আস্বাদন করা, নারী বলতে এখন এটারই মানে বোঝে রজত।

সিরিজা দেখলো দিবাকর ঘুমোচ্ছে। ও যেন নিশ্চিন্ত হলো। যাই হোক কাল রাতের ঘটনাটা একটু তো ওকে অবাক করেছেই। লোকটা ঘরে ঢুকে অমন আছাড় খেল। কিছুই কি দেখেনি? পুরো খোলা শরীরটা যদি দেখে ফেলে তাহলে তো সব গেল। সিরিজাকে এবার থেকে দিবাকরের চোখের দিকে তাকাতে একটু লজ্জা পেতে হবে। চেষ্টা করবে দিবাকরের থেকে কতখানি দূরে সরে থাকা যায়। দরকার হলে রজতকেও বলে দেবে। লোকটাকে শুধু শুধু এ বাড়ীতে টেনে আনার কোন দরকার নেই। নিজেরা এই বেশ ভালো আছি। আবার সুখে থাকতে ভুতে কিলোয় কেন? কি দরকার সঙ্গম আনন্দটাকে অন্যের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার? আনন্দটা তো নিজেদের জন্য সেখানে বাইরের লোককে ঘরে ডেকে এনে অযথা অস্বস্তি বাড়ানোর কোন দরকার আছে কি? সিরিজা যেন মনে মনে বিরক্তই হচ্ছিল কাল দিবাকর আসার পর থেকে। তারপর যখন ঐ ঘটনাটা ঘটল, ও যেন আরো তিতিবিরক্ত হয়ে গেছে। দিবাকর যতক্ষণ না এ ফ্ল্যাট থেকে না যায় ওরও ভালো লাগছে না।

দরজাটা খোলার পরে শাড়ীতে পা লেগে সিরিজা হঠাৎ হড়কে যাচ্ছিলো। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিল। দেখলো দিবাকর সেই আগের মতনই ঘুমে অচৈতন্য। ও আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে এবার বাথরুমে ঢুকল। দিবাকরকে বুঝতে দিল না। বাথরুমের দরজাটা আস্তে করে খুলে ও ভেতরে ঢুকে গেল। শাড়ীটা খুলে শায়াটা তুলে ও কমোডে বসে শরীরের বর্জ্য তরল ত্যাগ করতে শুরু করলো। মূত্রটাকে পুরোপুরি বের করে ও মগে জল নিয়ে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করলো। শায়াটা নামিয়ে এবার শাড়ীটাকে আবার আগের মতন গায়ে জড়াতে শুরু করলো সিরিজা।

বাথরুম থেকে বেরিয়ে আবার ওকে শোবার ঘরের দিকে যেতে হবে ঐ দিবাকরের সামনে দিয়েই। কিন্তু দরজাটা খুলে এবার আর ও দিবাকরকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলো না। যা দেখলো তাতে রীতিমতন চমকে উঠলো। সোফার উপর সোজা হয়ে উঠে বসে আছে দিবাকর। দৃষ্টিটা সোজা বাথরুমের দরজার দিকেই। সিরিজার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখছে লোকটা। এর মধ্যে কখন উঠে বসেছে? সাংঘাতিক ব্যাপার তো। সিরিজা রীতিমতন ভয় পেয়ে গেল।

ভাবল ওর দিকে না তাকিয়ে সোজা শোবার ঘরের দিকে চলে যাবে। কারন দিবাকরের মতলব দেখে তো সুবিধের মনে হচ্ছে না। বেশ তো অঘোরে ঘুমোচ্ছিল। হঠাৎ সোফার উপর উঠে বসল। ব্যাপারটা কি? সিরিজা মাথা নীচু করে দিবাকরের সামনে দিয়েই চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বাধা পড়লো যখন দেখলো দিবাকরই উঠে দাড়িয়ে ওর পথ আগলে ফেলেছে। সিরিজাকে একচুলও নড়তে দিচ্ছে না। ঠিক সেই মূহূর্তে দিবাকরের চোখের দিকে তাকিয়ে সিরিজা শুধু আতঙ্কিত হোল না, হঠাৎ গলা ছেড়ে রজতকে ডাকবে কিনা সেটাই চিন্তা করতে লাগলো।

 - "কি ব্যাপার? আপনি আমাকে যেতে দিচ্ছেন না কেন? এভাবে দাঁড়িয়ে পড়লেন? পথ ছাড়ুন, আমি যাবো।"

 -- "আমি কিছু কথা বলতে চাই।"

 - "এখন কি কথা? আমি ওকে ডাকবো?"

 -- "আমি তোমাকেই বলতে চাই। রজতের সামনে সেটা বলা যাবে না।"

 - "কেন?"

 -- "সেটা তুমি শুনলে সব বুঝতে পারবে।"

 - "আপনি তো ঘুমোচ্ছিলেন। হঠাৎ জেগে উঠে কি এমন কথা বলতে চাইছেন?"

 -- "দরকারী কথা না হলে এভাবে তোমার পথ আগলাতাম না। সারারাত তো এমনিই ঘুমোতে পারিনি। আর আমার ঘুমোবার ইচ্ছাও নেই। রজত ওঠার আগে তোমাকে কিছু কথা বলে আমি চলে যাবো। আমার এখানে আর বিন্দুমাত্র থাকার ইচ্ছা নেই। সুযোগটা পরে আর হয়তো আর পেতাম না। তাই এভাবে দুম করে আমাকে উঠে পড়তে হোল।"

 - "কাল রাতে তো আপনার শরীর খুব খারাপ হয়ে পড়েছিল। রাত্রে ঘুমোননি। সারা রাত জেগে বসছিলেন? এর মানে? ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।"

 -- "আমি যতক্ষণ না বুঝিয়ে বলছি। এর মানে পরিষ্কার হবে না। একটু মনোযোগ দিয়ে শুনলে সব জলের মতন পরিষ্কার হয়ে যাবে।"

 - "আমি কিছু শুনতে চাই না। পথ ছাড়ুন।"

সিরিজা যেন দিবাকরকে একটুও বিশ্বাস করতে চাইছিল না। রাগ তো হচ্ছিলই। শুধু শেষবারের মতন দিবাকরকে সাবধান করে বললো, "আপনি যদি এভাবে পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকেন আমি কিন্তু ওকে ডাকতে বাধ্য হব। সরবেন কি না বলুন?"

দিবাকর পথ ছাড়লো না দেখে ও এবার অদ্ভুত একটা কান্ড করে ফেললো। বুকের উপর থেকে শাড়ীর আঁচলটা ফেলে দিয়ে কাটা খাঁজটা বেশ খানিকটা উন্মুক্ত করে ফেললো। দিবাকরের চোখের সামনে তখন সিরিজার তখন দুটি ঝলসানো বুক। হার্টবিট সাংঘাতিক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। নিজেকে সংযত রাখতে পারছে না। আবার এটাও ভাবছে, সিরিজা ওকে ভুল বুঝেছে।

 - "আমাকে আদর করতে চান? নিন করুন। আমি বুক খুলে দিয়েছি। আপনি কি উদ্দেশ্যে আমার পথ চেয়ে বসেছিলেন। সে তো আমি বুঝতেই পারছি।"

অমন মন ভোলানো বুক দুটো চোখের সামনে দেখার পরও দিবাকর যেন শামুকের খোলসের মতন নিজেকে গুটিয়ে নিল। যৌনতার মোহে এভাবে অপরাধী হতে চায় না। মুখটাকে নীচু করে ফেললো লজ্জ্বায়। সিরিজাকে যেটা বলতে চাইছোলি সেটা বলাতো হোলই না, উপরন্তু ওর মনে হতে লাগলো কালকের ঘটনা থেকেই সিরিজার মনে সন্দেহ বিস্তার করতে শুরু করেছে। এখন ও রজতের সন্মন্ধে যাই ওকে বলুক ও একবর্ণও বিশ্বাস করবে না। উল্টো যেটা হবে সিরিজার বদ্ধমূল ধারনা হবে দিবাকরই ওর শরীরের লোভে পড়ে গেছে। রজতকে ছোট করে নিজে এনট্রি মারতে চাইছে সিরিজার জীবনে।

 - "কি হলো? আমার দিকে তাকাতে পারছেন না? নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে? কি যেন বলতে চাইছিলেন? এবার বলুন, আমি শুনছি।"

সিরিজার থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে দিবাকর এবার মুখটাকে একদম পেছন দিকে ঘুরিয়ে ফেললো। শরীরের ভেতরে যে ক্ষেপে ওঠা পশুটা কাল রাত্রি থেকে লম্ফঝম্প করছিল, সেটাকে শেকল দিয়ে বেঁধে ফেললো দিবাকর। সিরিজাকে অবাক করে এবার ও বললো, "তুমি এবার তোমার বুকের কাপড়টা তোল। আমি তোমাকে সব বলছি।"

একটু থেমে আবার বলতে লাগলো দিবাকর, "তুমি যেটা আমার সন্মন্ধে ভাবছ আমি তা নই। সামান্য একটা ভুলের বশে আমি রজতের কাছে ছোট হতে চাই না। ও তোমার আছে। তোমারই থাকবে। আমি শুধু তোমাদের বন্ধু হয়েই থাকব চিরকাল। আমি যেটা বলতে চাইছিলাম, সেটা খুবই দরকারী কথা ছিল। তুমি যদি শুনতে না চাও আমিও আর জোর করবো না তোমার কাছে। তুমি দরকার হলে আবার ভেতরের ঘরে চলে যাও। আমি একটু পরে বাড়ী চলে যাবো।"

সিরিজা কথার জবাব না দিয়ে ভেতরের ঘরে চলেই যাচ্ছিলো। এবার ওদের দুজনকে অবাক করে সদোর দরজার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। না সিরিজা না দিবাকর। কেউ যেন ওদের নিজেদের জায়গা ছেড়ে নড়তে পারছে না। কলিংবেলের আওয়াজ শুনে সিরিজাও থমকে গেছে। ভেতরের ঘর থেকে এবার রজতের গলার স্বর ভেসে এলো, "কে?"

এবার ওর ঘুমও ভেঙে গেছে।

বাইরে থেকে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক ভারী গলায় জবাব দিলেন, "আমি তোমার স্ত্রী রীতার বাবা। তোমার শ্বশুর মশাই। দরজাটা খোলো। তোমার সঙ্গে দরকার আছে।"

সাত সকালে এ আবার কি উপদ্রব। চিঠি অনুযায়ী লোকটার তো এত তাড়াতাড়ি আসার কথা নয়। রজতের বউ যে চিঠি লিখেছিল সেটা তো কালকেই এসেছে। রাত পেরোতেই এখানে এসে শ্বশুর মশাই হানা দিয়েছে। এখন কি করা যায়?

দিবাকর হতভম্বের মতন দাড়িয়েছিল। সিরিজাও থ মেরে গেছে। রজত আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে ঘরে ঢুকে বললো, "কে সাতসকালে এসে ঝামেলা করছে? তোমরা দুজনে দাড়িয়ে আছ। কি ব্যাপারটা বলো তো?"

বলে একবার সিরিজার মুখের দিকে তাকালো। একবার দিবাকরের দিকে।

নিজেকে ম্যানেজ করে দিবাকর বললো, "আমিও ঘুমিয়েছিলাম। কলিংবেলের আওয়াজ শুনে ঘুমটা ভেঙে গেল। এখন কি করবো তাই ভাবছি।"

 -- "কেন বাইরে এসেছে কে?"

 - "তোমার শ্বশুর মশাই। তাই তো বললেন বাইরে থেকে ভদ্রলোক।"

 -- "অ্যাঁ?"

 - "হ্যাঁ।"

দিবাকর মনে মনে বললো, "নিষিদ্ধ অভিসারের গুপ্তকথা এবার ফাঁস হলো বলে!

 -- "মরেচে। দাঁড়াও দাঁড়াও এক্ষুনি দরজাটা খুলো না। আগে কিছু একটা ব্যাবস্থা করি। কি করা যায় এখন?"

 - "ঐ জন্যই তো দরজাটা খুলি নি। আমিও ভাবছিলাম, কি করা যায়।"

রজত বেশ টেন্সড হয়ে একবার দরজার দিকে এগিয়ে এল। কিছু ভাবল। পরমূহূর্তে আবার পিছন দিকে চলে গেল। এইভাবে একবার দুবার করলো। দিবাকর মনে মনে বললো, "কালকে খুব তড়পাচ্ছিল রজত। আর এখন সব সাহস উবে গেছে!"

কলিংবেলটা আবার বেজে উঠলো।

দিবাকর গলার স্বরটাকে খুব আস্তে করে রজতকে বললো, "কিছু একটা বলো। দরজাটা খুলতে হবে তো।"

 -- "বলে দাও - আমি বাড়ী নেই।"

 - "তারপর যদি ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমাকেও তো চেনে না। যদি বলে আপনি কে?"

 -- "তাও তো সমস্যা। বুড়োটা আর আসার সময় পেল না। সকালবেলা যত ঝামেলা। এক কাজ কর। আমি সিরিজাকে নিয়ে ভেতরের ঘরে চলে যাচ্ছি। তুমি বল, আমার শরীর খারাপ। পরে ঘুরে আসতে। আমি ততক্ষণে একটা ব্যাবস্থা করে নিচ্ছি।"

 - "যদি ভেতরে ঢুকে দেখে। আমি তো বাধা দিতে পারবো না।"

 -- "দূর ছাই। কিছু একটা করো না। ম্যানেজ করে বুড়োটাকে তাড়াও না। আমার মাথায় কিছু আর এখন আসছে না।"

দিবাকর রজতের কথা মতন সেটাই করতে যাচ্ছিলো। রজত শেষ মূহূর্তে ওকে বাধা দিয়ে বললো, "না না। দাঁড়াও। ও বুড়ো খুব চালু। তোমার কথা বিশ্বাস করবে না। আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে।"

 - "কি?"

 -- "তুমি সিরিজাকে নিয়ে আমার শোবার ঘরে চলে যাও।"

দিবাকর অবাক হয়ে বললো, "মানে তুমি কি বলছো?"

 -- "যা বলছি। ওটাই করো না। বিছানায় তোমরা দুজন পাশাপাশি শুয়ে পড়। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলব। তোমরা স্বামী স্ত্রী। কাল রাতে এখানে বেড়াতে এসেছ। দরজা আমিই খুলছি।"

 - "কি বলছো তুমি? তোমার মাথার ঠিক আছে?"

কথাটা শুনে সিরিজাও যে খুশী হয়নি, সেটা ওর মুখের হাবেভাবে ফুটে উঠছিল। ভীষন একটা বিরক্তি ভাব এলো মুখে। রজত বুঝতে পারলো সিরিজা মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। ওকে আস্বস্ত করার জন্য ওর কাছে গিয়ে ওর মাথার চুলে হাত রাখলো রজত। বললো-আরে এটাতো অভিনয়। সত্যি নাকি? বুড়োটাকে আমি তাড়াতাড়িই ভাগিয়ে দেব। ততক্ষণ তোমরা শুধু শুয়ে থাকবে।

সিরিজাকে মানানোর জন্য একপ্রকার দিবাকরের সামনেই কামআবেগটা রজত ছড়িয়ে দিল সিরিজার ঠোঁটে। ওর ঠোঁটে প্রবল ভাবে চুমু খেতে খেতে রজত বললো, "চিন্তা কোরো না সিরিজা। আমি ব্যাপারটা সামলে নিচ্ছি।"

দিবাকর আর সিরিজাকে ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজাটা আস্তে করে ভেজিয়ে দিল রজত। ও আসতে আসতে সদর দরজাটার দিকে এগিয়ে গেল। মুখে বললো, "দাঁড়ান খুলছি।"

শোবার ঘরে তখন দিবাকর আর সিরিজা। দুজনের কেউই অপরের মুখের দিকে তাকাতে পারছে না। বিছানার উপর পাশাপাশি শুলো দুজনে। সিরিজা চোখটা বুজে ফেললো। দিবাকর মাথাটা সোজা করে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে দুজনেই ভাবছিল। একটু আগে কি হচ্ছিল আর এখন কি হচ্ছে। এবার যদি রজতের শ্বশুড়ের সামনে দুজনকেই স্বামী-স্ত্রীর অভিনয়ের পরীক্ষা দিতে হয়? পারবে তো? 

দিবাকর ভাবল কালকে তো ও একবার ধরা পড়ে গেছে। আজ যদি আবার ধরা পড়ে? ভালোই তো হবে।

সিরিজাকে নিয়ে রজত সব থেকে ফ্যাসাদে পড়বে। আর ওর এনট্রি মারার জায়গাটা সব থেকে বেশী পরিষ্কার হবে। ব্যাটা নারীভোগী রজত! এবার দেখ কেমন লাগে!
[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply


Messages In This Thread
সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 07:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kalobonduk - 03-10-2020, 07:11 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Kolir kesto - 03-10-2020, 09:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by sohom00 - 04-10-2020, 10:02 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by nightangle - 04-10-2020, 12:47 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 06-10-2020, 08:36 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 07-10-2020, 07:47 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 07-10-2020, 03:53 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by chndnds - 08-10-2020, 07:13 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Mr Fantastic - 10-10-2020, 04:18 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 16-10-2020, 02:28 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by price rajib - 25-10-2020, 02:58 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by pagolsona - 30-10-2020, 11:36 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by raja05 - 18-06-2021, 04:24 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:04 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Fokir_sadhU - 09-10-2022, 01:52 AM
RE: সিরিজা by Lekhak - by 212121 - 21-08-2021, 11:03 PM
RE: সিরিজা by Lekhak - by Arpon Saha - 09-10-2022, 02:56 AM



Users browsing this thread: 22 Guest(s)