08-10-2020, 11:22 PM
পর্ব ২৯ (#০৮)
বেশ কয়েকদিন পরে রূপক ব্যাঙ্গালোর চলে আসে। ততদিনে দেবায়ন বেশ সুস্থ হয়ে ওঠে কিন্তু তাও শয্যাশায়ী। দেবায়ন অনুপমাকে একদিন জিজ্ঞেস করে, “আমাকে কে ঠেলে দিয়েছিল রে, জানিস?”
অনুপমা মাথা দোলায়, “হ্যাঁ, আততায়ী এতদিনে ধরা পড়েছে। অগ্নিহোত্রীর বাবা সমীর বাবু।”
রূপক উত্তরে জানায়, আততায়ী শেষ পর্যন্ত ওদের জালে ধরা দেয়। রূপক ইমেল করে উত্তরে জানিয়েছিল যে কোন এক কারনে ওদের ট্রেকিং সুখকর হয়নি, কিন্তু ওই জায়গার সম্বন্ধে আগন্তুক ওদের খবর দিয়েছিল বলে রূপক ওর সাথে দেখা করে ধন্যবাদ জানাতে চায়। সমীর বাবু ভাবতে পারেনি যে রূপক ওকে চিনে ফেলবে তাই রূপকের ইমেলের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন যে দেখা করবেন। সেই সাথে তিনি জানান যে তিনি বাঙালী নয়, উত্তর ভারতের লোক তাই মুসৌরির কাছে ধনোল্টি নামক এক জায়গায় দেখা করার কথা ব্যাক্ত করেন। রূপক, পরাশর, নিরঞ্জন বাবু, ঘন সিয়ালির ইনস্পেকটর রোহন সবাই তক্কেতক্কে ছিল। ওদের পরিকল্পনা মাফিক আগে থেকে নিরঞ্জন বাবু আর রোহন ধনোল্টি পৌঁছে যায় আর জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। রূপক একাই ধনোল্টি যায় সমীর বাবুর সাথে দেখা করতে। সমীর বাবু, গোঁফ দাড়ি লাগিয়ে, নিজের পরিচয় লুকিয়ে পাঞ্জাবী সেজে ওর সাথে দেখা করতে আসে। সেইখানে রূপককে দেখে সমীর বাবু ছুরি বের করে রূপক কে আক্রমন করতে যায় আর সেই সময়ে রোহন আর নিরঞ্জন বাবু ওকে ধরে ফেলে। ধরা পড়ে যাওয়াতে সমীর বাবু মুষড়ে পরে। ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া আর হল না। নিরঞ্জন বাবু বলেন, সমীর বাবুর ছেলে নিজের দোষে নিজের পাপে প্রান হারিয়েছে। অগ্নিহোত্রী পাপী, অগ্নিহোত্রী দোষী, দেবায়ন আর রূপক নয়।
ধরা পড়ার পরে সমীর বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে সমীর বাবু জানান, ছেলের মৃত্যুর পর থেকেই সমীর বাবু ফাঁক খুঁজছিলেন কি করে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। তিনি কাউকে না জানিয়ে একাই এক বিশাল ষড়যন্ত্র রচনা করেন। নির্জন স্থান খোঁজার জন্য এক বছর ধরে বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়ে কাটিয়ে দেন। তারপরে কম্পিউটার, ইন্টারনেট শেখেন যাতে রূপক অথবা দেবায়নের সাথে নিজের পরিচয় লুকিয়ে ইমেল করতে পারে। এই ট্রেকিং বিষয়ের বেশ কয়েকটা ইমেল দেবায়ন কে প্রথমে পাঠিয়েছিলেন সমীর বাবু, কিন্তু দেবায়ন তার কোন উত্তর দেয়নি দেখে পরে রূপকের কাছে পাঠায়। রূপক তার জালে ফেঁসে যায় আর উত্তরে জানায় ট্রেকিঙ্গে যেতে রাজি। ইমেলের মাধ্যমে রূপকের সাথে প্রথমে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলে সমীর বাবুর, শেষ পর্যন্ত একটা ট্রেকিংয়ের সাইটের খবর দেয় সমীর বাবু। আগে থেকে সমীর বাবু সেই অয়েব সাইটে লগিন করে একটা ভুয়ো নামের একাউন্ট বানিয়ে রেখেছিলেন। রূপকের সাথে সেই ভুয়ো নামের একাউন্ট থেকে চ্যাটিং করেন আর এই ভাবে জানতে পারেন যে রূপক ঠিক কোথায় ট্রেকিংয়ে যাবে। সমীর বাবু ওদের ওপরে নজর রেখেছিল, আর আগে থেকেই একা একাই ঘুট্টু পৌঁছে গিয়েছিল। গা ঢাকা দেওয়ার জন্য তিনি জঙ্গলের মধ্যে তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
নিউ তেহেরিতে, কুমার নামের পাহাড়ি ছেলেটার সাথে আলাপ হয়। তিনি কুমারকে সঙ্গে নিয়ে বলেছিলেন যে খাটলিং যেতে চায়। কুমারকে আসল উদ্দেশ্য জানায়নি সমীর বাবু, দেবায়ন আর রূপকের ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন যে এদের একজনকে ডেকে আনতে আর ডেকে আনার পরে যেন পালিয়ে যায়। কুমার ওদের তাঁবুর কাছে গিয়ে দেবায়নকে ডাকে। সমীর বাবু ভেবেছিলেন, যেহেতু রূপক আর দেবায়ন ভালো বন্ধু সুতরাং দুইজনে একসাথেই আসবে। সমীর বাবু চেয়েছিলেন দুইজনকে একসাথে সেদিন রাতে খুন করবেন কিন্তু দেবায়ন একাই কুমারের সাথে আসে। তাই ওকেই প্রথমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। খুন করার আগে সব কিছু খুলে বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার আগেই দেবায়ন ওই খাদের মধ্যে হারিয়ে যায়। তারপরে সমীর বাবু, জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসেন। কোলকাতা ফিরে খবরের কাগজে দেবায়নের নিখোঁজ হওয়ার খবর পড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যান।
এরপরে তক্কে থাকেন কি ভাবে রূপকের ওপরে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত একদিন রূপককে চিঠি পাঠিয়ে জানায় যে তিনি দেবায়নের আততায়ীর খবর জানেন। রূপক সেই ফাঁদে পা দেবে সেটা নিশ্চিত ছিলেন। সমীর বাবু চেয়েছিলেন রাস্তার মধ্যেই রূপকের গাড়ির এক্সিডেন্ট ঘটাতে। সাধারনত লাভা যেতে সবাই কালিম্পং হয়েই যায় আর ভোরের দিকে রাস্তায় কুয়াশা থাকে। কিন্তু রূপক কালিম্পং হয়ে লাভা যায়নি দেখে মুষড়ে পড়েন। তিনি কোলকাতা ফিরে এসে আবার সুযোগের অপেক্ষা করেন। তারপরে রূপক ইমেল করে জানায় সে দেখা করতে চায়। ইমেল পড়ে সমীর বাবুর প্রত্যয় হয় যে রূপক এখন আসল আততায়ীকে চিনতে পারেনি। তাই তিনি নিজের পরিচয় একজন পাঞ্জাবী হিসাবে দিয়ে নির্জন ধনোল্টিতে দেখা করার কথা জানায়। তিনি ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি যে ওরা আগে থেকেই ওর পরিচয় জেনে ফেলেছে। কুমারকে হত্যা করার দায়ে আর দেবায়নকে খুন করার দায়ে রোহন সমীর বাবুকে গ্রেফতার। এই কেস উত্তরাখন্ডে ঘটেছে তাই উত্তরাখণ্ডের আদালতে এই মামলা চলবে।
পঞ্চাশ লাখ টাকার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে, রূপক কিছুতেই জানাতে নারাজ কোথা থেকে ওই টাকা যোগাড় করেছে। অনুপমার দৃঢ় প্রত্যয়, এক কথায় পঞ্চাশ লাখ টাকা দিয়ে দেবে এমন মানুষ শুধু মাত্র দুইজন আছে, এক ওর বাবা, কিন্তু বাবা দিলে ওর মা ওকে জানিয়ে দিত, আর দ্বিতীয় নিবেদিতা। কিন্তু অনুপমা যেটা বুঝে উঠতে পারে না, রূপক কেন নিবেদিতার কাছে গেল।
অনুপমা শেষ পর্যন্ত রূপককে বলে, “আমি জানি কে তোকে টাকা দিয়েছে।” রূপক জিজ্ঞেস করাতে অনুপমা উত্তর দেয়, “নিবেদিতা তোকে টাকা দিয়েছে, তাই না। কিন্তু নিবেদিতাকে তুই কোথায় পেলি?”
শেষ পর্যন্ত শ্রেয়া ওর হয়ে উত্তর দেয়, “আমাদের আর কিছু মাথায় আসছিল না, কোথায় যাবো কি করব কিছুই ভেবে উঠতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত নিবেদিতার কথা মনে পরে গেল। তুই অ্যানুয়াল মিটে সবার সামনে জানালি যে নিবেদিতা তোর ভালো বন্ধু। তাই ওর কাছে গিয়ে সব কিছু খুলে বলাতে সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চাশ লাখ টাকা দিয়ে দিলেন আর সেই সাথে আমরা যারা যারা টাকা দিয়েছিলাম তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হল।”
সব কিছু বলার পড়ে শায়িত দেবায়নকে দেখে রূপক ওকে বলে, “শালা তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়া, বিয়ে করতে হবে না?”
দেবায়নের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে অনুপমা স্মিত হেসে বলে, “আর ওকে চোখের আড়াল করছি না।”
************ সমাপ্ত ************
বেশ কয়েকদিন পরে রূপক ব্যাঙ্গালোর চলে আসে। ততদিনে দেবায়ন বেশ সুস্থ হয়ে ওঠে কিন্তু তাও শয্যাশায়ী। দেবায়ন অনুপমাকে একদিন জিজ্ঞেস করে, “আমাকে কে ঠেলে দিয়েছিল রে, জানিস?”
অনুপমা মাথা দোলায়, “হ্যাঁ, আততায়ী এতদিনে ধরা পড়েছে। অগ্নিহোত্রীর বাবা সমীর বাবু।”
রূপক উত্তরে জানায়, আততায়ী শেষ পর্যন্ত ওদের জালে ধরা দেয়। রূপক ইমেল করে উত্তরে জানিয়েছিল যে কোন এক কারনে ওদের ট্রেকিং সুখকর হয়নি, কিন্তু ওই জায়গার সম্বন্ধে আগন্তুক ওদের খবর দিয়েছিল বলে রূপক ওর সাথে দেখা করে ধন্যবাদ জানাতে চায়। সমীর বাবু ভাবতে পারেনি যে রূপক ওকে চিনে ফেলবে তাই রূপকের ইমেলের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন যে দেখা করবেন। সেই সাথে তিনি জানান যে তিনি বাঙালী নয়, উত্তর ভারতের লোক তাই মুসৌরির কাছে ধনোল্টি নামক এক জায়গায় দেখা করার কথা ব্যাক্ত করেন। রূপক, পরাশর, নিরঞ্জন বাবু, ঘন সিয়ালির ইনস্পেকটর রোহন সবাই তক্কেতক্কে ছিল। ওদের পরিকল্পনা মাফিক আগে থেকে নিরঞ্জন বাবু আর রোহন ধনোল্টি পৌঁছে যায় আর জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। রূপক একাই ধনোল্টি যায় সমীর বাবুর সাথে দেখা করতে। সমীর বাবু, গোঁফ দাড়ি লাগিয়ে, নিজের পরিচয় লুকিয়ে পাঞ্জাবী সেজে ওর সাথে দেখা করতে আসে। সেইখানে রূপককে দেখে সমীর বাবু ছুরি বের করে রূপক কে আক্রমন করতে যায় আর সেই সময়ে রোহন আর নিরঞ্জন বাবু ওকে ধরে ফেলে। ধরা পড়ে যাওয়াতে সমীর বাবু মুষড়ে পরে। ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া আর হল না। নিরঞ্জন বাবু বলেন, সমীর বাবুর ছেলে নিজের দোষে নিজের পাপে প্রান হারিয়েছে। অগ্নিহোত্রী পাপী, অগ্নিহোত্রী দোষী, দেবায়ন আর রূপক নয়।
ধরা পড়ার পরে সমীর বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে সমীর বাবু জানান, ছেলের মৃত্যুর পর থেকেই সমীর বাবু ফাঁক খুঁজছিলেন কি করে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। তিনি কাউকে না জানিয়ে একাই এক বিশাল ষড়যন্ত্র রচনা করেন। নির্জন স্থান খোঁজার জন্য এক বছর ধরে বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়ে কাটিয়ে দেন। তারপরে কম্পিউটার, ইন্টারনেট শেখেন যাতে রূপক অথবা দেবায়নের সাথে নিজের পরিচয় লুকিয়ে ইমেল করতে পারে। এই ট্রেকিং বিষয়ের বেশ কয়েকটা ইমেল দেবায়ন কে প্রথমে পাঠিয়েছিলেন সমীর বাবু, কিন্তু দেবায়ন তার কোন উত্তর দেয়নি দেখে পরে রূপকের কাছে পাঠায়। রূপক তার জালে ফেঁসে যায় আর উত্তরে জানায় ট্রেকিঙ্গে যেতে রাজি। ইমেলের মাধ্যমে রূপকের সাথে প্রথমে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলে সমীর বাবুর, শেষ পর্যন্ত একটা ট্রেকিংয়ের সাইটের খবর দেয় সমীর বাবু। আগে থেকে সমীর বাবু সেই অয়েব সাইটে লগিন করে একটা ভুয়ো নামের একাউন্ট বানিয়ে রেখেছিলেন। রূপকের সাথে সেই ভুয়ো নামের একাউন্ট থেকে চ্যাটিং করেন আর এই ভাবে জানতে পারেন যে রূপক ঠিক কোথায় ট্রেকিংয়ে যাবে। সমীর বাবু ওদের ওপরে নজর রেখেছিল, আর আগে থেকেই একা একাই ঘুট্টু পৌঁছে গিয়েছিল। গা ঢাকা দেওয়ার জন্য তিনি জঙ্গলের মধ্যে তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
নিউ তেহেরিতে, কুমার নামের পাহাড়ি ছেলেটার সাথে আলাপ হয়। তিনি কুমারকে সঙ্গে নিয়ে বলেছিলেন যে খাটলিং যেতে চায়। কুমারকে আসল উদ্দেশ্য জানায়নি সমীর বাবু, দেবায়ন আর রূপকের ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন যে এদের একজনকে ডেকে আনতে আর ডেকে আনার পরে যেন পালিয়ে যায়। কুমার ওদের তাঁবুর কাছে গিয়ে দেবায়নকে ডাকে। সমীর বাবু ভেবেছিলেন, যেহেতু রূপক আর দেবায়ন ভালো বন্ধু সুতরাং দুইজনে একসাথেই আসবে। সমীর বাবু চেয়েছিলেন দুইজনকে একসাথে সেদিন রাতে খুন করবেন কিন্তু দেবায়ন একাই কুমারের সাথে আসে। তাই ওকেই প্রথমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। খুন করার আগে সব কিছু খুলে বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার আগেই দেবায়ন ওই খাদের মধ্যে হারিয়ে যায়। তারপরে সমীর বাবু, জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসেন। কোলকাতা ফিরে খবরের কাগজে দেবায়নের নিখোঁজ হওয়ার খবর পড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যান।
এরপরে তক্কে থাকেন কি ভাবে রূপকের ওপরে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত একদিন রূপককে চিঠি পাঠিয়ে জানায় যে তিনি দেবায়নের আততায়ীর খবর জানেন। রূপক সেই ফাঁদে পা দেবে সেটা নিশ্চিত ছিলেন। সমীর বাবু চেয়েছিলেন রাস্তার মধ্যেই রূপকের গাড়ির এক্সিডেন্ট ঘটাতে। সাধারনত লাভা যেতে সবাই কালিম্পং হয়েই যায় আর ভোরের দিকে রাস্তায় কুয়াশা থাকে। কিন্তু রূপক কালিম্পং হয়ে লাভা যায়নি দেখে মুষড়ে পড়েন। তিনি কোলকাতা ফিরে এসে আবার সুযোগের অপেক্ষা করেন। তারপরে রূপক ইমেল করে জানায় সে দেখা করতে চায়। ইমেল পড়ে সমীর বাবুর প্রত্যয় হয় যে রূপক এখন আসল আততায়ীকে চিনতে পারেনি। তাই তিনি নিজের পরিচয় একজন পাঞ্জাবী হিসাবে দিয়ে নির্জন ধনোল্টিতে দেখা করার কথা জানায়। তিনি ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি যে ওরা আগে থেকেই ওর পরিচয় জেনে ফেলেছে। কুমারকে হত্যা করার দায়ে আর দেবায়নকে খুন করার দায়ে রোহন সমীর বাবুকে গ্রেফতার। এই কেস উত্তরাখন্ডে ঘটেছে তাই উত্তরাখণ্ডের আদালতে এই মামলা চলবে।
পঞ্চাশ লাখ টাকার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে, রূপক কিছুতেই জানাতে নারাজ কোথা থেকে ওই টাকা যোগাড় করেছে। অনুপমার দৃঢ় প্রত্যয়, এক কথায় পঞ্চাশ লাখ টাকা দিয়ে দেবে এমন মানুষ শুধু মাত্র দুইজন আছে, এক ওর বাবা, কিন্তু বাবা দিলে ওর মা ওকে জানিয়ে দিত, আর দ্বিতীয় নিবেদিতা। কিন্তু অনুপমা যেটা বুঝে উঠতে পারে না, রূপক কেন নিবেদিতার কাছে গেল।
অনুপমা শেষ পর্যন্ত রূপককে বলে, “আমি জানি কে তোকে টাকা দিয়েছে।” রূপক জিজ্ঞেস করাতে অনুপমা উত্তর দেয়, “নিবেদিতা তোকে টাকা দিয়েছে, তাই না। কিন্তু নিবেদিতাকে তুই কোথায় পেলি?”
শেষ পর্যন্ত শ্রেয়া ওর হয়ে উত্তর দেয়, “আমাদের আর কিছু মাথায় আসছিল না, কোথায় যাবো কি করব কিছুই ভেবে উঠতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত নিবেদিতার কথা মনে পরে গেল। তুই অ্যানুয়াল মিটে সবার সামনে জানালি যে নিবেদিতা তোর ভালো বন্ধু। তাই ওর কাছে গিয়ে সব কিছু খুলে বলাতে সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চাশ লাখ টাকা দিয়ে দিলেন আর সেই সাথে আমরা যারা যারা টাকা দিয়েছিলাম তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হল।”
সব কিছু বলার পড়ে শায়িত দেবায়নকে দেখে রূপক ওকে বলে, “শালা তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়া, বিয়ে করতে হবে না?”
দেবায়নের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে অনুপমা স্মিত হেসে বলে, “আর ওকে চোখের আড়াল করছি না।”
************ সমাপ্ত ************