Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
পাপ কাম ভালোবাসা [পর্ব ২৮] প্রতিশোধ না পরিণতি?


ট্রুথ এন্ড ডেয়ার ঘুরতে ঘুরতে, অনুপমার কাছে চলে আসে। রূপক ওকে জিজ্ঞেস করাতে অনুপমা একবার দেবায়নের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “ট্রুথ।”

সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীতা ওকে প্রশ্ন করে, “দেবায়ন অনেকের সাথে শুয়েছে, এইবারে বুকে হাত দিয়ে বল এই সব জানার পরে তোর কোনোদিন হিংসে হয়নি?”

অনুপমা বড় বেকায়দায় পড়ে যায়, দেবায়নের হাত বুকের কাছে টেনে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে একভাবে। সত্যি বলতে একবার খুব খারাপ লেগেছিল যখন জানতে পারে দেবায়ন ওর মায়ের সাথে সহবাস করেছে। ওর চোখের ভাষা দেবায়ন পড়ে ফেলে কানেকানে বলে, আসল সত্য বাঁচিয়ে অতি কৌশলে যেন উত্তর দেয়।

অনুপমা মিচকি হেসে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ একবার হয়েছিল, তবে আমি প্রান দিয়ে জানতাম যে পুচ্চু শত জনের সাথে শুয়ে আসার পরেও ওর বুকের মধ্যে শুধু মাত্র আমার জায়গা থাকবে, তাই পরে আর হিংসে হয়নি।”

রূপক, ধীমান একসাথে ওকে প্রশ্ন করে, কে কে। অনুপমা সুকৌশলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে বলে, “একবার প্রশ্নের উত্তর দেব ব্যাস হয়ে গেছে উত্তর এইবারে পুচ্চুর টার্ন।”

এমন সময়ে একটা অন্ধকার ফুঁড়ে একটা ছেলের আবির্ভাব হয়। ছেলেটাকে দেখে মনে হল ওদের মাল বাহকের মধ্যে কেউ। ছেলেটা দেবায়নের কাছে এসে অনুরোধ করে, “বাবু কিছু টাকা চাই।”

দেবায়ন একবার আপাদমস্তক ছেলেটাকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “তুই কে?”

ছেলেটা অবাক হয়ে উত্তর দেয়, “বাবু আমি রাজু পোর্টার। আপনাদের খাবারের ব্যাটারি নিয়ে একদম আগে ছিলাম।”

দেবায়ন মাথা দোলায়, “আচ্ছা, কিসের জন্য টাকা চাই?”

ছেলেটা মুখ কাঁচুমাচু করে উত্তর দেয়, “বাবু আমরা একটু মদ খাবো তাই টাকা চাই।”

এতক্ষণ অনুপমাকে কোলে জড়িয়ে ধরে আগুনের সামনে বসে ছিল দেবায়ন, তাও পকেট থেকে পার্স বের করে ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করে, “কত টাকা চাই তোদের?

ছেলেটা একটু হেসে আমতা আমতা করে বলে, “না মানে, ওইপাশে আমাদের দলের লোকেরা দাঁড়িয়ে আছে। ওইখানে গিয়ে দিলে বড় ভালো হয়।”

“আচ্ছা” দেবায়ন মুখ কাঁচুমাচু করে অনুপমাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। অনুপমা কিছুতেই ওকে ছাড়তে চায় না, উল্টে ছেলেটাকে বলে, “তোমরা টাকা নিয়ে চলে যাও আবার ওকে ওইখানে কেন যেতে হবে।”

ছেলেটা আমতা আমতা করে বলে, “না মানে একটু কথা ছিল তাই।”

দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে অনুপমাকে বলে, “আচ্ছা বাবা, দেখি না ওরা কি বলতে চাইছে।” বাকিদের দিকে তাকিয়ে বলে, “তোরা চালিয়ে যা, আমি একটু আসছি।”

ছেলেটার সাথে দেবায়ন গ্রামের অন্যপাশে, ঘন জঙ্গলের দিকে হাঁটা লাগায়। যেতে যেতে এপাশ ওপাশ দেখতে দেখতে ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করে ওর বাড়ি কোথায়, কবে থেকে এই পোর্টারের কাজ করছে ইত্যাদি। ছেলেটা উত্তর দেয়, কিছু ওর কানে ভেসে আসে কিছু শুনতে পায়না। দেবায়ন একটু তাড়াতাড়ি হাঁটছিল আর ছেলেটা ওর পেছনে পেছনে হাঁটছিল।

কথাবার্তা থামিয়ে দেবায়ন হাঁটতে হাঁটতে রাতের সৌন্দর্যে হারিয়ে যায়। একটা সিগারেট ধরিয়ে, চারপাশে তাকিয়ে দেখে। মাথার ওপরে ঘন কালচে নীল আকাশে কোটি কোটি তারার ঝিকিমিকি, আকাশ গঙ্গা পরিস্কার এই আকাশে দেখা যায়, যেটা শহরের আকাশে এক দুর্লভ দৃশ্য। উত্তরের সুউচ্চ হিমালয় থেকে ভেসে আসা কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া ওর শরীর কাঁপিয়ে দেয়। হাঁটতে হাঁটতে ওরা দুইজনে একটা খাদের কিনারায় চলে আসে। একপাশ থেকে ছোট ছোট ঝর্না বয়ে গভীর খাদের নীচে বয়ে চলা পাহাড়ি নদীর সাথে মিশে গেছে। সরু রাস্তার অন্যপাশে ঘন বন, রডেনড্রন, পাইন কেদার ইত্যাদি উঁচু উঁচু পাহাড়ি গাছপালায় ঘেরা, একটানা ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক কানে ভেসে আসে।

হাঁটতে হাঁটতে খাদের কিনারায় এসে দেখে কেউ দাঁড়িয়ে নেই। পেছন ঘুরে ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করতে যাবে, কি রে….. কিন্তু পেছনে কেউ নেই। হটাত ওর বুক ছ্যাঁত করে ওঠে। আসলে কে এই ছেলেটা, কি কুমতলবে ওকে এই নির্জনে ডেকে এনেছে? দূরে গ্রামের ছোট ছোট ঘর বাড়ি গুলোর আলো অনেক আগেই নিভে গেছে। আরো দূরে ওদের বন ফায়ারের আলো দেখা যাচ্ছে। আপন মনে হাঁটতে হাঁটতে অনেকদুরে চলে এসেছে সেটা বুঝতে বাকি থাকে না।

হটাত ওর পেছনে জঙ্গলের মধ্যে থেকে খসখসে পাতার ওপরে কারুর পা ফেলার আওয়াজে চমকে ওঠে। ঘুরে গাছের দিকে তাকানোর আগেই ওর মাথার পেছনে কেউ একজন একটা লাঠি দিয়ে সজোরে বাড়ি মারে। এমনিতে চারপাশ অন্ধকার, তারপরে এই ঠাণ্ডায় আচমকা মাথার পেছনে লাঠির বাড়ি খেয়ে চোখে অন্ধকার দেখে দেবায়ন।

মাথা ধরে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে এক পুরুষের মূর্তি, হাতে একটা লোহার রড। মাথার পেছনে হাত দিয়ে গরম রক্ত অনুভব করতে পারে। হাত মুঠি করে দাঁতে দাঁত পিষে আগন্তকের দিকে এগিয়ে যায়, ঠিক তখনি ওই আগন্তুক দ্বিতীয় বার ওর মাথার ওপরে রড দিয়ে বাড়ি মারে। চোখে সর্ষে ফুল দেখে দেবায়ন

ওই অন্ধকারে ঢাকা আগন্তুকের দিকে চেঁচিয়ে ওঠে, “মাদারচোদ, তুই কে?”

পরিস্কার ইংরেজিতে গম্ভির চাপা কণ্ঠে গর্জে ওঠে অন্ধকারে ঢাকা সেই আগন্তুক, “তোকে মারার জন্য অনেকদিন থেকেই ফন্দি করছিলাম। শেষ পর্যন্ত এইখানে তোকে একা পেয়ে গেলাম।”

দেবায়ন মাথায় হাত দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করে এটা কার কণ্ঠস্বর। বেশ চাপা গভীর কণ্ঠস্বর, শুনেই মনে হচ্ছে আসল আওয়াজ ঢাকার জন্য গলার স্বর ভারী করে কথা বলছে সেই আগন্তুক। ইংরেজিতে কথা বলছে, নিশ্চয় বুঝতে দিতে চায় না কোথাকার মানুষ, বাঙ্গালী হতে পারে অবাঙ্গালী হতে পারে। মুখের ওপরে মাফলার বাঁধা, অন্ধকারে মুখ দেখা যাচ্ছে না কিছুতেই, গায়ে লম্বা ওভারকোট, কত বয়স সেটাও জানা সম্ভব হচ্ছে না। কপাল বেয়ে সরু রক্তের রেখা দেখা দেয়। টাল সামলাতে না পেরে দেবায়ন সামনের আগন্তুকের দিকে ঢলে পড়ে।

সঙ্গে সঙ্গে ওই আততায়ী ওর কলার ধরে গলা টিপে ধরে চাপা ভারী কণ্ঠে বলে ওঠে, “সবাই ভাববে তুই পা ফসকে এই নদীতে পরে গেছিস। কেউ জানবে না তোর আততায়ী কে।” বলেই এক ধাক্কা মেরে খাদের মধ্যে ফেলে দেয়।

হঠাৎ করে শুন্যে ভাসমান মনে হয় নিজেকে। চোখের সামনে শুধু মাত্র অনন্ত অন্ধকার, তাও হাতড়ে হাতড়ে কিছু বুনো ঝোপ ঝাড় আঁকড়ে ধরে প্রানে বাঁচতে চেষ্টা করে দেবায়ন। ওপরে দিকে তাকিয়ে দেখে ওই আততায়ী খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ঠিক ওর ওপরে। এক হাত বাড়িয়ে আততায়ীর পা ধরে নিচের দিকে টানতে চেষ্টা করে কিন্তু ওই আততায়ী লোহার রড দিয়ে ওর হাতে বাড়ি মারে এবং সেই সাথে হাতের ওপরে পা দিয়ে পিষে দেয়।

ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠে দেবায়ন সেই সাথে গর্জে ওঠে, “তোকে হাতে পেলে দেখে নেব।”

অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে আততায়ী, “বাঁচলে তবে তো দেখবি। আমার সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছিস, মৃত্যুই তোর আসল পরিণতি। এটাই আমার প্রতিশোধ।”

বলেই ওর মাথায় রডের বাড়ি মারতে যায়, দেবায়ন মাথা সরিয়ে নিতেই রডের বাড়ি সোজা ওর কাঁধে এসে লাগে আর ওর কাঁধের একটা হাড় নড়ে যায়। ধরে থাকা ঝোপের ওপর থেকে ওর হাতের থাবা হালকা হয়ে যায়। লম্বা চওড়া দেহের ভার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিচের দিকে টানতে শুরু করে দেয়। শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখতে না পেরে ওর হাত আপনা হতেই সেই মাটি ছেড়ে দেয়। শুন্যে ভাসমান হয়ে দেবায়নের দেহ নিচের দিকে গড়িয়ে পড়তে শুরু করে দেয়।

নীচে নদীর জলে পড়ার আগে একবার ওর বুক ডাক ছাড়ে, “পুচ্চি ইইইইইইইইই……” হয়তো এই আওয়াজ কোনোদিন ওর পুচ্চির কানে যাবে না, হয়ত এই রাতের নিস্তব্ধতা খানখান করে চলে যেতেও পারে।

ঝপাং, করে দেবায়নের অর্ধ অচৈতন্য দেহ কনকনে বরফ গলা জলের মধ্যে গড়িয়ে পরে। ওর জ্যাকেট ভিজে যায়, ওর জামা ওর জিন্স ভিজে যায়। পিঠের পেছনে একটা পাথর এসে ধাক্কা খায়, মনে হল শির দাঁড়ার কয়েকটা হাড় নড়ে উঠল। প্রবল স্রোতস্বিনী পাহাড়ি নদী ওর দেহ ভাসিয়ে নিয়ে চলে এক অজানা পথের দিকে। জানে না কোথায় যাচ্ছে জানে না ওর পুচ্চি কোনোদিন ওর সন্ধান পাবে কি না।

ধীরে ধীরে দেবায়নের চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। চারপাশে শুধু ঘন কালো অন্ধকার আর মৃত্যুর হাতছানি ছাড়া আর কিছু নেই। কানে ভেসে আসে নদীর গর্জন তা ছাড়া আর কোন আওয়াজ দেবায়নের অচৈতন্য কর্ণ কুহরে প্রবেশ করে না। এই জীবনে অনেক পাপ করেছে, নিজের প্রেমিকা অনুপমার মায়ের সাথে যৌন সহবাসে লিপ্ত হয়েছে। এক সময়ে নিজের গর্ভ ধারিনি মা’কেও সেই চরম কামের বশে জড়িয়ে ধরেছিল। বড় পাপ, এযে বড় পাপ। কামের বশে অনেকের সাথে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে। ব্যাবসার ক্ষেত্রে অনন্যার দেহ এমন অনেক মডেলের দেহ ব্যাবহার করেছে। পুনের হোটেলের মালিক রজত পানিক্করের থেকে ওর হোটেল ছিনিয়ে নিয়েছে, এমন ভাবে বহু জায়গায় ব্যাবসার মারপ্যাচে কাজ হাসিল করেছে। যেখানে টাকা দিয়ে কাজ হয়েছে সেখানে টাকা দিয়েছে, যেখানে মেয়েদের শরীর দিয়ে কাজ হয়েছে সেখানে অনন্যা, তনুজার মতন মেয়েদের ব্যাবহার করেছে, যেখানে ওকে হুমকি দিতে হয়েছে সেখানে রীতিমতন হুমকি দিয়ে কাজ হাসিল করেছে। অনেকের অনেক গোপন খবর জেনে ফেলেছে এর মধ্যে, তাহলে কি তাদের মধ্যে কেউ ওকে খুন করল? কে হতে পারে এই আততায়ী? সোমেশ কাকু? ধৃতিমান, সূর্য, সত্যজিত অনিমেশ না ভাড়া করা কেউ? কে ভাড়া করতে পারে একে? উত্তর জানা নেই দেবায়নের কারন ওই আততায়ী ওকে মারার আগে উত্তর দিয়ে যায়নি। ওই আততায়ীর পরিচয় পাওয়া আর সম্ভব নয় কারন ওর দেহ এই প্রবল নদীর ধারায় এক অজানা পথে পাড়ি জমিয়ে দিয়েছে। ওই আততায়ী আসলে কে? কি কারনে ওর এই ভীষণ পরিণতি ঘটল? কে নিল প্রতিশোধ, না ওর দুষ্কর্মের পাপের পরিণতি?

কনকনে ঠাণ্ডা জলে ভাসতে ভাসতে দেবায়নের শরীর নিঃসাড় হয়ে যায়। একটুক্ষণ না অনেকক্ষণ, সময়ের ঠিক পায় না। একসময়ে দেবায়ন চোখ মেলে অবাক হয়ে যায়। চারপাশের অন্ধকার কেটে ওর চারপাশে জোরালো সাদা আলো আর মৃদু কুয়াশায় ঢাকা। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে, হালকা মোলায়েম মেঘের ভেলার ওপরে দেবায়ন বসে। চারপাশে তুলোর মতন হালকা মোলায়েম মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেদিকে তাকায় সেদিকে শুধু মাত্র জোরালো সাদা আলোয় ভর্তি। নির্মল শীতল মলয় বইছে চারপাশে, আলোয় কোন ঠাণ্ডা ভাব অথবা গরম ভাব নেই, মনে হল যেন চির বসন্তের এক স্থানে পৌঁছে গেছে। হাতের দিকে তাকাতেই চমকে ওঠে, ছোট ছোট দুটো হাত, আঙ্গুল গুলো ছোট ছোট। পঁচিশ বছরের একটা ছেলের এত ছোট আঙ্গুল কি করে হতে পারে? মুখে গালে হাত দিয়ে দেখে, না এই চেহারা ওর নয়। এই গাল বেশ ফুলো ফুলো, বুকের দিকে, নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে বুঝতে পারে দেবায়ন আর পঁচিশ বছরের যুবক নয়, ছোট এক শিশু দেবায়ন শুধু মাত্র একটা লাল প্যান্ট আর একটা সাদা গেঞ্জি পরে মেঘের ভেলায় বসে।

এমন সময়ে সামনের কুয়াশা কাটিয়ে এক সুঠাম পুরুষের আবির্ভাব হয়। সেই সুপুরুষ ব্যাক্তি কে দেখেই দেবায়ন চিনতে পারে, ওর বাবা, সায়ন্তন বসাক দাঁড়িয়ে। ওর বাবা ওর দিকে দুই হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসে সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। মিষ্টি হেসে দেবায়ন ছোট ছোট পায়ে বাবার দিকে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যায়।

ঠিক তখনি বহু দুর থেকে এক মিষ্টি নারী কণ্ঠের আর্তনাদ ওর কানে ভেসে আসে, “পুচ্চুউউউউউউ…… তুই কোথায়?”

শিশু দেবায়ন এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে। ওই নারী কণ্ঠ কাকে ডাক দেয়? এই পুচ্চুকে? পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে ওর মা দুই হাত বাড়িয়ে ছল ছল চোখে ওর দিকে কাতর ভাবে তাকিয়ে হাত নাড়ছে। দুই বড় বড় কাজল কালো চোখে আশ্রুর বন্যা বইয়ে ওর মা ওকে ডাক দেয়, “আয় বাবা, আমার কোলে ফিরে আয় সোনা। তুই ছাড়া আমার আর কেউ নেই রে…..”

সামনে ওর বাবা ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। দেবায়ন একবার মায়ের দিকে তাকায় একবার বাবার দিকে তাকায়। কার কাছে যাবে কিছুতেই ঠিক করে উঠতে পারে না। শেষ পর্যন্ত বাবার দিকে তাকিয়ে আধো আধো কণ্ঠে বলে, “তুমি চকোলেট এনেছ?”

ওর বাবা হাতের মুঠি মেলে একটা চকোলেট দেখিয়ে মাথা দুলিয়ে ওকে ডাক দেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে মায়ের দিকে তাকায় দেবায়ন। মায়ের ঠিক পেছনে এক অতীব সুন্দরী বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়ে। মাকে চিনতে অসুবিধে হয় না কিন্তু পেছনে দাঁড়ানো, রুপোলী সুতোর বোনা জালের পোশাক পরিহিত সেই সুন্দরী কন্যের পরিচয় জানে না দেবায়ন। ওই সুন্দরী মেয়েটার টানাটানা চোখ জোড়া ছলছল করে ওঠে ওকে দেখে।

ওর মা আবার ওকে ডাক দেয়, “বাবারে আমাকে ছেড়ে যাস না। তুই ছাড়া আমার আর কেউ নেই রে বাবা।”

পেছনে দাঁড়ানো মেয়েটার ঠোঁট জোড়া ফুলে ওঠে, গোলাপি গাল বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝড়ে পরে। দেবায়ন একবার বাবার হাতের দিকে দেখে, একটা ছোট চকোলেট হাতে ওর বাবা স্মিত হেসে ওর জন্য অপেক্ষা করছে।

দেবায়ন মিষ্টি হেসে মাকে বলে, “মা মা, বাবা আমার জন্য চকোলেট এনেছে। এই বারে আমি বাবার সাথে যাই।

ওর মা আর্তনাদ করে ওঠে, “না বাবা দয়া করে আমাকে একা ফেলে যাস নে…..”

দেবায়ন ধীরে ধীরে বাবার দিকে হাঁটতে শুরু করে দেয়। আবার কানে ভেসে আসে বহুদুর থেকে ভেসে আসা এক নারী কণ্ঠের আর্তনাদ, “পুচ্চুউউউউউউ তুই কোথায়?”

দেবায়ন জানে না কে এই পুচ্চু। দেবায়ন জানে না হঠাৎ করে এত ছোট কি করে হয়ে গেল। দেবায়ন জানে না, কি করে বাবার দেখা পেল। দেবায়ন জানে না কি করে এই সাদা মেঘের রাজ্যে এসে পৌঁছে গেল। অনেক প্রশ্নের উত্তর দেবায়নের অজানা রয়ে যায় তাও বাবার দিকে এগিয়ে যায়।
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 06-10-2020, 05:13 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)