Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
পর্ব ২৭ (#০৩)

কয়েকদিন পরে সূর্যের দেওয়া ঠিকানায় অনুপমা একা গিয়ে ওদের সাথে দেখা করে। জলপাইগুড়ির থেকে সর্বস্বান্ত হয়ে কোলকাতায় ফিরে মনিদিপা আর সূর্য একটা ছোট ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেছে। কথায় কথায় অনুপমা জানতে পারে, সূর্য ওর দেওয়া টাকা একটা চিটফান্ডে ঢুকিয়েছিল, ওর সাথে আরো অনেকে টাকা দিয়েছিল সবাই টাকা হারিয়ে এক রকম পথে বসে গেছে। অনুপমা ওদের বলে যদি এতই ওদের টাকার দরকার ছিল তাহলে ওকে বলতে পারত, কিন্তু ভুয়ো চিটফান্ডে টাকা কেন দিতে গেল। নিরুত্তর সূর্য আর মনিদিপা। অনুপমা ভেবে পায় না কি ভাবে কোথা থেকে টাকা যোগাড় করবে।
ওর কাছে দশ হাজার টাকা ছিল সেইগুলো মনিদিপার হাতে তুলে দিয়ে বলে, “এই টাকা এখন রাখো, পরে দেখছি কি করতে পারি।”
মনিদিপা ওর হাত ধরে কাতর কণ্ঠে বলে, “সত্যি বলছি আমরা এইখানে কোন বদমতলবে আসিনি। ভেবেছিলাম গতবার তোমার কাছে হাত পেতেছি এইবারে যদি বৌদি ক্ষমা করে দিয়ে থাকে তাহলে হয়ত বৌদি আমাদের সাহায্য করবে।”
অনুপমা কঠিন কণ্ঠে উত্তর দেয়, “মামনির কাছে যাওয়াটা তোমাদের বড় ভুল হয়ে গেছে। দেবায়নের বাড়ি যাওয়া তোমাদের মোটেও উচিত হয়নি। তোমাদের কোলকাতায় থাকা মোটেও চলবে না, জলপাইগুড়ি ফিরে যাও। কারন একবার যদি দেবায়ন এই সব জানতে পারে তাহলে কিন্তু তোমাদের নিস্তার নেই। এই শেষ বারের মতন আমি টাকা দেব আর নয় এর পরে কিন্তু তোমাকে কথা দিতে হবে যে আর মামনির ধারে কাছে আসবে না। যদি আস তাহলে আমি নিজে দেবায়নকে সব বলে দেব আর তোমাদের ওই…..”
মনিদিপা আঁতকে ওঠে, “জলপাইগুড়ি ফিরে যাওয়ার মতন অবস্থা নেই আমাদের। ওইখানে ফিরে গেলে সূর্যকে কেউ ছেড়ে দেবে না। ওকে ধরে মেরে ফেলবে। না না এই শেষ বারের মতন আর আমরা তোমাদের ধারে কাছে আসব না।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কি করেছে সূর্য? কারা ওকে মেরে ফেলবে?”
মনিদিপা মাথা নিচু করে বলে, “সূর্যের সাথে সাথে অনেকের টাকা ওই চিটফান্ডে লেগেছে। সূর্য দোকানের সাথে সাথে ওই চিটফান্ডের এজেন্ট ছিল। যাদের টাকা গেছে তারা হন্যে হয়ে সূর্যকে খুঁজছে। সবার ধারনা সূর্য এই সব জানত। সেই জন্য আমরা একরাতের মধ্যে জলপাইগুড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছি।”
বড় ভাবনায় পড়ে যায় অনুপমা। এমন সময়ে মনিদিপার ছোট ছেলেটা শিশু কণ্ঠে কিছু একটা আওয়াজ করে ওঠে। মনিদিপার ছোট ছেলেকে দেখে অনুপমার মন গলে যায়, ওকে কোলে নিয়ে মনিদিপাকে জিজ্ঞেস করে, “কি নাম রেখেছ?”
মনিদিপা স্মিত হেসে উত্তর দেয়, “শুভায়ন বোস।”
মিচকি হাসে অনুপমা, বাচ্চাটাকে বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে বলে, “দেখিস তোর দাদার মতন হস নে যেন।”
ওর কথা শুনে অনুপমার সাথে সাথে মনিদিপাও হেসে ফেলে। তারপরে ওর হাত ধরে কাতর প্রার্থনা জানিয়ে বলে, “প্লিস কিছু একটা কর। আমি কথা দিচ্ছি এরপরে এমন ভুল আর হবে না।”
কিছুদিন পরে অনুপমা, নিবেদিতার কাছ থেকে কোন এক অছিলায় টাকা চেয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকার মতন সূর্যকে দেয়। অনুপমার টাকা চাওয়াটা নিবেদিতার মনে একটু খটকা লাগে, কোটিপতির মেয়ে, নিজের এত বড় কোম্পানি, দেবায়ন ঘুরে ঘুরে এত টাকা কামায় তাও কেন অনুপমা ওর কাছে হাত পাতল?
জিজ্ঞেস করাতে শেষ পর্যন্ত নিবেদিতাকে গল্প বানিয়ে বলে অনুপমা, “কিছু না গো, আমার এক বন্ধু খুব বিপদে পড়েছে। ওই বন্ধুর ব্যাপারে দেবায়ন কিছুই জানে না তাই তোমার কাছ থেকে চাইলাম। আসলে কি জানো, বাড়িতে কারুর কাছে হাত পাতলে সবাই দেবায়নকে বলে দেবে।”
নিবেদিতা ইয়ার্কি মেরে ওকে জিজ্ঞেস করে, “হঠাৎ এমন কোন বন্ধু তোমার যে শেষ পর্যন্ত দেবায়নকে লুকিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে?”
ওর অর্থ অনুপমা কি দেবায়ন ছাড়া অন্য কারুর সাথে প্রেম করে?
অনুপমা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে বলে, “তুমি যা ভাবছ সেই রকম কিছুই নয়। তবে প্লিস দেবায়নকে এই সব যেন বল না তাহলে খুব বিপদে পড়ে যাবো।”
নিবেদিতা ওর হাত ধরে অভয় দিয়ে বলে, “আমার যা কিছু তা সব তোমার আর কথা দিলাম দেবায়ন এর সম্বন্ধে কিছুই জানবে না।”
এনুয়াল মিটের দিন কাছে চলে আসে। অনুপমার সব বন্ধুদের আমন্ত্রন জানানো হয়। দেবায়ন আর সোমেশবাবু, শান্তনু আর একজন এডমিনের লোক নিয়ে সকালেই রেডিসন ফোরটে পৌঁছে গেছে। এনুয়াল মিটের জন্য অনুপমা একটা দামী ডি.এন.কে.ওয়াই কালো রঙের ব্যাকলেস ইভিং গাউন পরে। পারমিতা যথারীতি শাড়ি পরে সেই সাথে পায়েলকেও শাড়ি পড়তে হয়। ওরা অঙ্কনকে নিয়ে বিকেলের মধ্যেই রায়চকের দিকে রওনা দেয়। যাবার আগে অনুপমা বারেবারে মাকে সাবধান করে দিয়ে বলে যেন মিটে বেশি মদ না খায়, মনের মধ্যে বহু পুরানো ভয়টা আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। পারমিতা একপ্রকার মদ খাওয়ায় ছেড়ে দিয়েছে, শুধু বাড়িতে সোমেশের সাথে মাঝে মাঝে সাঝে একটু আধটু প্রেম করার সময় খায়। মাথা নাড়িয়ে বাধ্য মেয়ের মতন জানিয়ে দেয় যে মদ খাবে না একদম।
অনুপমা জানিয়ে দেয়, মামনিকে সঙ্গে নিয়ে ও ঠিক সময়ে রেডিসন ফোর্টে পৌঁছে যাবে। গাড়ি নিয়ে লেকটাউন পৌঁছে দেখে দেবশ্রী তখন তৈরি হয়নি।
মামনিকে এক ধ্যাতানি দিয়ে বলে, “কি হল যাবে না, তাড়াতাড়ি তৈরি হও।”
দেবশ্রী মিষ্টি হেসে উত্তর দেয়, “তোদের অফিসের অ্যানুয়াল পার্টিতে আমি গিয়ে কি করব বল? ওইখানে সব অফিসের লোকজন থাকবে। আমি বুড়ি মানুষ, বড় বেমানান লাগবে। প্লিস সোনা কিছু মনে করিস না।”
ছোটবেলা থেকে মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। ভাই আর বোন একে ওপরের পরিপূরক হয়েই বড় হয়েছে। মা’কে পেয়েছে দেবায়নের সাথে প্রেম করার পরে। তবে পারমিতা যে ছেলে মেয়েদের ভালবাসত না সেটা কখনই নয়। মায়ের ভালোবাসা অনেকটা মামনি ওকে দিয়েছে।
অনুপমা নাছোড়বান্দা, দেবশ্রীকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তুমি বুড়ি কে বলেছে, মামনি? অ্যানুয়াল মিট হয়েছে ত কি হয়েছে। তোমার জন্য এই অ্যানুয়াল মিট, তোমার আশীর্বাদ ছাড়া কি আর আমরা এতটা পথ পাড় করে আসতে পারতাম? কখনই না।” আদুরে কণ্ঠে বলে, “মামনি তুমি না গেলে কিন্তু আমিও যাবো না। প্লিস মামনি তোমাকে যেতেই হবে।”
শেষ পর্যন্ত মেয়েটার জোরাজুরিতে দেবশ্রী তৈরি হয়ে নেয়। পথে যেতে যেতে সঙ্গীতা আর প্রবালকে সঙ্গে নিয়ে নেয়। শ্রেয়া আর রূপক, বাকিদের নিয়ে পৌঁছে যাবে। অনেকদিন পরে সঙ্গীতার সাথে দেখা হওয়াতে বেশ গল্পে মেতে ওঠে। প্রায় ঘন্টা খানেক বাদে, সন্ধ্যে নাগাদ ওদের গাড়ি রায়চকে পৌঁছে যায়।
এর মাঝে নিবেদিতা বারেবারে ফোন করে জানতে চায়, উদ্যক্তার দেরি হলে কি করে হবে। সত্যি কথা, অনুপমা আর নিবেদিতা এই মিটের উদ্যক্তা আর নিজের দেরি হয়ে গেল। ফোনে ক্ষমা চেয়ে নেয় নিবেদিতার কাছে। সেদিনের পরে দেবায়নকে আর ওদের বন্ধুত্তের মাঝে মধ্যস্ততা করতে হয়নি, আপনা থেকেই কেমন যেন নিজের মতন করে মিশে গেছে অনুপমা আর নিবেদিতা।
নিবেদিতাকে বেশ কয়েকবার নিজের বাড়িতে ডেকেছিল অনুপমা কিন্তু কাজের আছিলায় অতি সুকৌশলে আমন্ত্রন এড়িয়ে গেছে। ওদের দেখা সাক্ষাৎ সবসময়ে বাড়ির বাইরেই হয়েছে, এক নয় অফিসে না হয় কোন রেস্টুরেন্টে অথবা নিবেদিতার বাড়িতে।
গাড়ি থেকে নামতেই নিবেদিতার মুখোমুখি। মেয়েরা সব রূপের ডালি সাজিয়ে এসেছে এই মিটে। নিবেদিতার পরনে একটা গাড় নীল রঙের পাতলা শাড়ি, হাতকাটা ব্লাউজ যার পিঠের দিক অনেকটা উন্মুক্ত। অতীব সুন্দরী লাস্যময়ী নিবেদিতাকে দেখে একটু হাসে অনুপমা।
ওকে দেখেই কপট ঝাঁঝিয়ে ওঠে নিবেদিতা, “দেখো মেয়ের কান্ড, এত দেরি করলে হয়? সবাই প্রায় এসে গেছে আর আসল লোকের দেখা নেই। এইদিকে আবার আকাশের অবস্থা খারাপ। মিটিং লনে হবে না ব্যাঙ্কোয়েট করা হবে?”
অনুপমাদের নামতে দেখে দেবায়ন এগিয়ে আসে ওদের দিকে। মাকে দেখতে পেয়ে বেশ খুশি। দেবশ্রী ছেলেকে হেসে বলে, “তুই তো আর দেখিস না আমাকে, তাই এই মেয়েটার সাহায্য নিতে হয়।”
দেবায়ন মাথা চুলকিয়ে উত্তর দেয়, “আমি আর ও আলাদা কোথায় হলাম মা?”
অনুপমা একটু লজ্জা লাগে সেই কথা শুনে তাই বলে, “তুই চুপ কর তো, আলাদা অনেক আলাদা। এই যেমন তুই মামনিকে দেখিস না আমি দেখি। তুই কোলকাতা থাকিস না আমি থাকি।”
নিবেদিতার সাথে মামনির পরিচয় করিয়ে বলে, “মিস নিবেদিতা চৌধুরী, বাবার কন্সট্রাকশান কোম্পানির…..” নিবেদিতা করজোড় করে দেবশ্রীর সাথে কুশল বিনিময় করে।
কথাটা টেনে বাকিটা দেবায়ন পরিচয় দেয়, “নিবেদিতা ম্যাডাম আমাদের ভালো বান্ধবীন বলতে পারো এই পরিবারের একজন।”
নিবেদিতার চেহারা হঠাৎ করে ফ্যাকাসে হয়ে যায়, দেবায়ন স্মিত হেসে মাথা নাড়ায় নিবেদিতাকে দেখে। অনুপমা বিষয়টা লক্ষ্য করে। সত্যিই পরিবারের মতন নিবেদিতা, কারন অনেক দিন ধরেই বাবার সাথে নিবেদিতার ব্যাবসায়িক সম্পর্ক, যদিও বাড়িতে যাতায়াত নেই।
অনুপমাও হেসে বলে, “হ্যাঁ মামনি, নিবেদিতা ম্যাডাম আমাদের খুব ভালো বান্ধবী।”
দেবশ্রীকে দেখে মনীষা এগিয়ে এসে কুশল বিনিময় করে। অনেকদিন পরে শান্তনু আর মনীষার সাথে দেবশ্রীর দেখা হয়। ওদের দেখে পারমিতা এগিয়ে আসে, কিন্তু পাশে নিবেদিতাকে দেখে একটু দুরেই দাঁড়িয়ে পরে। দেবশ্রীর সাথে চোখাচুখি হওয়াতে দেবশ্রী ওর কাছে চলে যায়। মেয়েরা যারাই শাড়ি পরে এসেছে তাদের শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ছটা বিচ্ছুরিত হচ্ছে। একমাত্র দেবশ্রী ছাড়া বাকিদের শাড়ি যেন সুন্দরী লাস্যময়ীদের দেহ অনাবৃত করে দেখাতে প্রস্তুত। পারমিতার পরনে একটা কালো ফিনফিনে শাড়ি, গভীর বক্ষবিদলনের বেশ কিছুটা উন্মুক্ত। আঁচলে যদিও ঊর্ধ্বাঙ্গ ঢাকা তবে পাতলা আঁচলের নীচে কিছুই যেন আর ঢেকে নেই। সেই এক অবস্থা নিবেদিতার। পিঠের দিকটা অনেক কাটা, মনে হয় অন্তর্বাস পরেনি এমন মনে হচ্ছে দেখে।
পারমিতাকে দেখে দেবশ্রী হেসে বলে, “মেয়ে যত বড় হচ্ছে তত যেন তোমার বয়স কমছে।”
পারমিতা দেবশ্রীর হাত চেপে হেসে বলে, “কি যে বলেন না দিদি। আসুন বাকি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।” বলে দেবশ্রীকে নিয়ে অন্যদিকে হাঁটা দেয়।
নিবেদিতা দেবায়নকে একপাশে টেনে জিজ্ঞেস করে, “তুমি অনন্যাকে ফোন করেছিলে?”
অনন্যা আসবে সেটা অনুপমা জানত না তাই অবাক হয়ে ওদের প্রশ্ন করে, “অনন্যাদি আসছে নাকি? কই গেস্ট লিস্টে নাম নেই তো।”
নিবেদিতা মিচকি হেসে ওকে উত্তর দেয়, “না না আছে, ফাইনাল গেস্ট লিস্টে ওর নাম আছে।”
দেবায়ন মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দেয় অনন্যাকে ফোন করে এমনকি ওকে কার্ড পাঠিয়ে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। ওর হয়তো শুটিং সেরে আসতে একটু দেরি হবে কিন্তু যখন কথা দিয়েছে তখন নিশ্চয় আসবে। সেই সাথে চোখের ইশারায় নিবেদিতার সাথে দেবায়নের কিছু কথা হয়ে যায় যেটা অনুপমার বোধগম্য হয়না।
নিবেদিতা চলে যাওয়ার পরে অনুপমা ওর বাজু আঁকড়ে ধরে জিজ্ঞেস করে, “আমাকে কেমন লাগছে বললি না তো?”
দেবায়ন ওর কাঁধের ওপরে হাত রেখে কাছে টেনে বলে, “তুই পোশাকেও সুন্দরী আর বিনা পোশাকেও সুন্দরী।” বলেই ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে নেয়।
সর্ব সমক্ষে এইভাবে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতেই অনুপমা একটু লজ্জা পেয়ে যায়। ওইদিকে ওদের বন্ধু বান্ধবীরা সবাই এসে গেছে। শ্রেয়া, পায়েল, ঋতুপর্ণা, সঙ্গীতা সেই সাথে তাদের সাথীরাও। কিন্তু বেশিক্ষণ ওদের সাথে গল্প করতে পারে না অনুপমা আর দেবায়ন। ওদের ডাক সব দিকে, এক এক করে সবার সাথে ঘুরে ফিরে একটু কথা বলতে হয়।
একদিকে নাচের জায়গা, সেটা এখন খালি। একদিকে লম্বা টেবিলে বুফে খাবারের ব্যাবস্থা, একদিকে মদের বার আর স্টার্টারের ব্যাবস্থা।
এমন সময়ে ওর বাবা ওদের কাছে এসে দেবায়নকে ডেকে বলে, “কি হল দেবায়ন, এইবারে মিটের বক্তৃতাটা দাও। এটা কোম্পানির আমাদের প্রথম মিট, সুতরাং তোমার হাত দিয়েই শুরু হোক।”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে মৃদু হেসে বলে, “না কাকু আমার হাত দিয়ে নয়, এটা অনুপমার হাত দিয়ে শুরু করা হোক।”
অনুপমার সাথে সাথে সোমেশ বাবু অবাক হয়ে যায়। অনুপমা মুখ চেপে আঁতকে উঠে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ আমাকে বলির পাঁঠা পেয়েছিস তাই না? প্লিস সোনা আমি যাবো না।”
দেবায়ন ওর হাত দুটো ধরে অভয় প্রদান করে বলে, “মনে রাখিস একটা কথা, তুই কারুর চেয়ে কোন অংশে কম নস। তুই এগিয়ে যা আমি তোর পেছনে আছি। আর মনে রাখিস, এই যে চারপাশে যা দেখছিস সেই সবের পেছনে দুই মহিলার অসামান্য অবদান আছে।” অনুপমা চোখের ইঙ্গিতে প্রশ্ন করে, “কে?”
উত্তরে দেবায়ন ওর কানে কানে বলে, “মিমি আর নিবেদিতা।” অবাক চোখে অনুপমা ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
দেবায়ন ধীরে ধীরে ওর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মঞ্চের দিকে যেতে বলে। ধীর পায়ে মঞ্চের দিকে হাঁটতে হাঁটতে অনুপমা একবার জনারন্যের দিকে তাকিয়ে দেখে। প্রায় দুশোর মতন লোক ওর দিকে উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে। কোলকাতার বেশ কয়েক নামী ব্যাক্তি এসেছেন, দুটো কন্সট্রাকশান কোম্পানির কর্মচারীরা এসেছে, ওদের সফটওয়্যার কোম্পানির সবাই এসেছে, বাইরে থেকে হোটেলের মালিক আর হোটেলের ম্যানেজারেরা এসেছে, বিদেশ থেকে লোকজন এসেছে। এত লোকের সামনে দাঁড়িয়ে হটাত করে অনুপমার বড় একা মনে হয়। কিন্তু ওর পেছনে দাঁড়িয়ে, ঋজু দেহের লম্বা চওড়া ছেলেটা, যার বাহুপাশে চোখ বুজলে ঘুম পায়, যার বুকে মাথা রাখলে নিরাপত্তার আভাস পাওয়া যায়, তার ছোঁয়ায় এক জাদু আছে। ওকে দেখে স্মিত হেসে মাথা দোলায় দেবায়ন। ওর ওই হাসি দেখে অনুপমা বুকে বল পায়। কিন্তু দেবায়ন ওর কানে কানে কি বলতে চাইল? মঞ্চে উঠতেই একজন ওর দিকে মাইক এগিয়ে দেয়। না এতটা কোনোদিন আশা করেনি অনুপমা। হ্যাঁ, দেবায়নের সাথে দেখা হওয়ার আগে ভেবেছিল ওর জীবন খুব সাধারন হবে, পড়াশুনা শেষে একটা বড় লোকের বাড়িতে বিয়ে হবে, হয়ত চাকরি করবে কি করবে না সেটা জানা নেই, অনিশ্চয়তা ওর জীবনের একটা বড় অঙ্গ হতে পারত। মাইক হাতে নিয়ে একবার মায়ের দিকে দেখে, একবার নিবেদিতার দিকে দেখে একবার ওর মিষ্টি মামনির দিকে দেখে। সবাই হাঁ করে ওর দিকে চেয়ে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 05-10-2020, 03:26 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)