Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
ষষ্টবিংশ পর্ব (#০৫)

অনুপমা সারা রাস্তা গাড়িতে এক প্রকার গজগজ করতে করতে বাড়ি ফেরে। সোমেশ একবার শুধু জিজ্ঞেস করে মেয়েকে কি হয়েছে হসপিটালে। আগে মেয়ে একদম কথাবার্তা ঠিক ভাবে বলতো না, ইদানিং একটু আধটু বলে, তাও বেশির ভাগ ওই কোম্পানি সংক্রান্ত। সোমেশ পারমিতা কোনোদিন ছেলে মেয়ের কাছের লোক ছিল না।
অনুপমা উত্তর দেয়, “তোমার কথা অনেক আগেই শোনা উচিত ছিল আমার, জানো।”
সোমেশ মেয়েকে জিজ্ঞেস করেন, “তোর কি মনে হয়, কি কারন হতে পারে? দেবায়ন কি কিছু ধরতে পেরেছে?”
অনুপমা মাথা নাড়ায়, “না গো, আমরা কিছুই ঠিক ভাবে বুঝে উঠতে পারছি না। তবে বাবা, তোমাকে বলে দিচ্ছি, অনিমেশ আঙ্কেলের ছেলে যদি এর মধ্যে হয় তাহলে কিন্তু কাউকেই আমি ছেড়ে দেব না।”
সোমেশের কপালে চিন্তার রেখা দেখা দেয়, “এর মধ্যে ইন্দ্রনীল আবার কি করল?”
অনুপমা বলে, “ইদানিং শ্রেয়া আর ইন্দ্রনীল বেশ গভীর ভাবে মেলামেশা করছে। দুইজনে একসাথে জার্মানি গেছে। এই যে ইন্দ্রনীল এসেছে, অফিসে কাজের চেয়ে বেশি ইন্দ্রনীলের সাথে ঘোরাফেরা করে শ্রেয়া।”
সোমেশ চিন্তামগ্ন হয়ে শুধু মাত্র একটা হুম করে শব্দ করেন। বাড়ি প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে, সেই সাথে বৃষ্টিটাও একটু ধরে গেছে। ড্রাইভার ওদের নামিয়ে দিয়ে গ্যারেজে গাড়ি রাখতে চলে যায়। বাড়িতে ঢোকার আগে সোমেশ মেয়েকে বলে, “তোর সাথে একটু কথা আছে। তুই ড্রেস চেঞ্জ করে নীচে আসিস।”
অনুপমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকায়। সচারাচর ব্যাবসা কোম্পানি সংক্রান্ত যা কথাবার্তা আলোচনা হয় সব দেবায়নের সাথেই করে। কোনোদিন ওর সাথে ব্যাবসা অথবা কোম্পানি সংক্রান্ত কোন আলোচনা করে না। করলেও ওর মাথায় কিছুই ঢোকে না। যতক্ষণ না দেবায়ন শুদ্ধ বাংলা ভাষায় ওকে বুঝিয়ে দেয় ততক্ষণ সবকিছু কেমন যেন আরবি, ফার্সি ভাষার মতন মনে হয়। অনুপমা মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দেয় আসবে।
বাড়িতে ঢুকতেই পায়েলের সামনাসামনি। এতক্ষণ উৎকণ্ঠায় জেগে ছিল বাকিরা। শ্রেয়ার সাথে যে রাগারাগি হয়েছে সেটা খুলে আর বলে না শুধু জানিয়ে দেয় যে বাইকের এক্সিডেন্ট এমন কিছু গুরুতর নয়, শুধু মাত্র ডান পায়ের হাড়ে একটু চিড় ধরেছে, ক্রেপ ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছে ডাক্তার, আগামী কাল সকালের মধ্যে ছুটি পেয়ে যাবে। নিজের ঘরে ঢুকে জামা কাপড় ছেড়ে আগে দেবায়নকে ফোন করে। কি করছে ছেলেটা, যা মাথা গরম রাতেই না কিছু করে বসে। তবে মামনি নিশ্চয় এতক্ষণে ওকে বকে ঝকে শান্ত করিয়ে দিয়েছে। ফোন বারেবারে রিং হয়ে গেল, একটু চিন্তায় পড়ে যায় অনুপমা। সঙ্গে সঙ্গে মামনিকে ফোন করে। দেবশ্রী জানিয়ে দেয় এখন পর্যন্ত বাড়িতে ফেরেনি, এইসবে নিবেদিতার বাড়িতে পৌঁছেছে, ওর বাড়িতে গাড়ি রেখে বাড়ি পৌঁছালে ফোন করতে বলবে।
রাত জেগে বসে থাকে অনুপমা, বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ ধপাস করে শুধু। এত দেরি লাগে নাকি সল্টলেক থেকে লেকটাউন আসতে? না নিশ্চয় বাইক নিয়ে কোথাও আবার বেড়িয়ে পড়েছে।
একটু পরেই দেবায়নের ফোন পেয়ে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “কোথায় মরতে গেছিলিস তুই? ফোন করতে পারিস না।”
প্রেয়সীকে শান্ত করিয়ে বলে, “বাইরে বৃষ্টি পড়ছে সেটা খেয়াল আছে? বাইক নিয়ে কি করে ভিজতে ভিজতে বের হওয়া যায় বলতো?”
অনুপমা জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখে, এক নাগারে ইলশেগুরি ঝড়ে পড়ছে। সেদিকে খেয়াল ছিল না এতক্ষণ, এসির আওয়াজে বৃষ্টির ছাঁটের শব্দ কানে যায়নি। ঘরে পায়েল থাকলে না হয় তাও কিছু একটা বলতে পারতো, কিন্তু সে তো এতক্ষণে ভাইয়ের কোলে মাথা রেখে কোথায় চলে গেছে কে জানে।
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি করা যায় বলতো? এদের সাথে নিয়ে চলা খুব মুশকিল।” হঠাৎ খেয়াল হয় দরজার বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে।
সোমেশ গলা খাঁকড়ে জানিয়ে দেয় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। ইসসস, অনুপমা সঙ্গে সঙ্গে স্লিপের ওপরে ড্রেসিং গাউন চাপিয়ে নেয়। বাবা কিছু বলবে বলছিলেন কিন্তু সেই কথা বেমালুম খেয়ে ফেলেছে। দেবায়নকে পরে ফোন করবে বলে উঠে চলে যায়। বাবাকে বলে, “একটু দাঁড়াও আমি আসছি।”
সোমেশ উত্তরে বলেন, “ঠিক আছে, তুই ঠিকঠাক হয়ে নীচে আয়, আমি অপেক্ষা করছি।”
দৌড়ে বাবার পেছন পেছন নীচে নেমে যায় অনুপমা। হঠাৎ মধ্যরাত্রে কি আলোচনা করবে বাবা? চাপা উত্তেজনায় মন চঞ্চল হয়ে ওঠে।
সোফায় বসে বাবাকে জিজ্ঞেস করে, “কি বলবে বলছিলে?”
সোমেশ একটা ফাইল থেকে একটা কাগজ বের করে ওর হাতে দিয়ে বলে, “একটা কথা তোদের জানানো হয়নি। মানে ইচ্ছে করেই তখন জানাইনি। আসলে তোদের ওই কোম্পানিতে অনিমেশের দশ কোটি টাকা লগ্নি করা আছে।”
অনুপমা আকাশ থেকে পড়ে, “তুমি বলেছিলে সব টাকা নাকি তোমার?”
সোমেশ মাথা দোলায়, “হ্যাঁ সব টাকা আমার। তবে অনিমেশ অনেক ধরেছিল তাই ওর দশ কোটি টাকা তোর কোম্পানিতে লগ্নি করিয়েছি এই যা।”
অনুপমা ঝাঁঝিয়ে ওঠে বাবার ওপরে, “আজ এক বছর হতে চলল, এতদিন কেন বলনি এই কথা?”
সোমেশ ওকে শান্ত করে বলেন, “দ্যাখ, ইন্দ্রনীল যদি শ্রেয়ার সাথে মিলিত থাকে তাহলে তোদের কোম্পানির পক্ষে একটা আশঙ্কাজনক খবর এটা। আমি এত বুঝতে পারিনি আগে। আমার যতদূর মনে হয়, তুই যে ইন্দ্রনীলকে বোর্ড মেম্বার না বানিয়ে পায়েলকে বানিয়েছিস তার প্রতিশোধ স্বরূপ ওরা তোদের কাবু করতে চেষ্টা করবে।”
অনুপমা ভাবনায় পরে যায়, “কি করতে বলছ তাহলে? একটু পরামর্শ দাও।”
সোমেশ একটু চিন্তিত হয়ে বলেন, “শোন, যদি শ্রেয়া রেজিগনেশান দেয় আর তোর কাছ থেকে শেয়ারের টাকা চায় তাহলে ওকে সোজা কোর্টে নিয়ে যাবি। টাকা ওর হাতে একদম দিবি না। দ্বিতীয়, যদি ইন্দ্রনীল এই দশ কোটি টাকার বিষয়ে কিছু বলে তাহলে ওকে সোজা বলে দিবি ওর বাবার যেন আমার সাথে দেখা করে। তুই বলে দিবি ওই দশ কোটি টাকার সম্বন্ধে তুই কিছু জানিস না। অনিমেশ আমাকে টাকা দিয়েছল ওর বাবা যেন এই সব আলোচনা আমার সাথে করে, তোর সাথে নয়।”
অনুপমা বেশ চিন্তায় পড়ে যায়। শ্রেয়া হুমকি দিয়েছে রেজিগনেশান দিয়ে দেবে। শ্রেয়া ছেড়ে দিলে রূপক নিশ্চয় ছেড়ে দেবে। ওদের সাথে যদি ইন্দ্রনীল মিলিত থাকে তাহলে সেও ছেড়ে দেবে। ওদের কোম্পানি অথৈ জলে ভেসে যাবে তাহলে। চিন্তিত অনুপমা বাবাকে জিজ্ঞেস করে, “ইন্দ্রনীল, শ্রেয়া আর রুপক একসাথে যদি কোম্পানি ছেড়ে দেয় তাহলে কোম্পানি ভেসে যাবে। বাইরের প্রোজেক্ট গুলোর প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে যাবে। সেটাই খুব চিন্তার।”
সোমেশ বলেন, “কাল একবার দীপঙ্করকে আমার অফিসে পাঠিয়ে দিস। দেখা যাক কি করা যেতে পারে। এইদুই দিন দেখ ওরা কি করছে। আর আগামী পরশু তো তোদের বোর্ড মিটিং তাই না?”
অনুপমা মাথা দোলায়, “হ্যাঁ।”
সোমেশ বলেন, “ঠিক আছে। বেশি চিন্তা করিস না। আমি না হয় নিজেই একবার জার্মানি যাবো আর মিস্টার মেরকেল আর হেরজোগের সাথে আলোচনা করে আসব।”
রাতে আর দেবায়নকে ফোন করা হল না।
পায়েলকে এইসব ঝামেলার থেকে দূরে সরিয়ে রাখাই বাঞ্ছনীয়, তাই বিশেষ কিছুই ওকে বলেনি। পরের দিন রূপক হসপিটাল থেকে ছুটি পেয়ে যায়, তাই শ্রেয়া সারাদিন ওর বাড়িতেই কাটিয়ে দেয় অফিসে আসেনি। তবে ইন্দ্রনীল অফিসে এসেছিল। তারপরের দিন বোর্ড মিটিং। মিটিংয়ের প্রস্তুতিতে সেদিন কেটে গেল দুই জনার। একবার দিপঙ্কদার সাথে দেবায়ন আর অনুপমা আলোচনা সেরে নিল, যদি ইন্দ্রনীল অফিস ছেড়ে দেয় তাহলে কি করা যেতে পারে। জার্মানি আর ইউরোপের জন্য অতি শীঘ্র একটা ছেলে খুঁজতে হবে। বাবার নির্দেশ মতন দুপুরের পরে দীপঙ্করকে বাবার সাথে আলোচনা করতে বলে। বাইরের প্রোজেক্ট গুলো সুপর্ণা ম্যাডামের তদারকিতে কাজ হচ্ছিল তাই তাতে বিশেষ অসুবিধে হওয়ার কথা নেই। তবে এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী এয়ারলাইন্স কোম্পানি গুলো চাইলে মাঝপথে প্রোজেক্ট বন্ধ করে দিতে পারে বলে মনীষা ওদের জানিয়ে দেয়, সেই নিয়ে বেশ চিন্তিত দেবায়ন আর অনুপমা।
অনুপমা পায়েলকে সিঙ্গে নিয়ে সকালেই অফিসে পৌঁছে গিয়েছিল। বৃষ্টি মাথায় করে, দেবায়ন সময় মতন অফিসে পৌঁছে যায়। যদিও ওদের বোর্ড মিটিং দ্বিতীয় অর্ধে, ইন্দ্রনীল এসে গেছে আর নিজের ডেস্কে বসে কাজে মগ্ন। শ্রেয়া আর রূপক তখন আসেনি। একবার মনীষাকে জিজ্ঞেস করে, ওদের খবর নিতে। মনীষা ফোন করাতে শ্রেয়া জানিয়ে দেয়, দ্বিতীয় অর্ধে বোর্ড মিটিংয়ের আগেই ও আর রূপক অফিসে পৌঁছে যাবে। কার মনে কি চলছে কিছুই ঠিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এত সকালে ইন্দ্রনীলকে নিজের ডেস্কে বসে থাকতে দেখে ধন্ধে পড়ে যায় অনুপমা।
দেবায়নকে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার বলতো?”
দেবায়ন হেসে বলে, “হবে হয়ত নিজের রেজিগনেশান লেটার টাইপ করছে।”
সেদিন পায়েল শাড়ি পরে এসেছিল, দেবায়ন ওকে নিয়েই মেতে ওঠে। “কি রে মাল একদম ফুলটুসি হয়ে সেজে এসেছিস। গতকাল রাতে ভাই বেশ লাগিয়েছে তাই না?” পায়েল লজ্জায় লাল হয়ে যায়, আর দেবায়ন ততই চেপে ধরে ওকে, “হ্যাঁ রে, সত্যি করে বলতো কে বেশি ভালো লাগিয়েছে? আমি না ভাই?”
অনুপমা ওর ওপরে রেগে গিয়ে বলে, “তুই ওকে ছেড়ে একটু আমার কথা শুনবি।”
ওর কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে বলে, “না শুনবো না দেখব। একটু নাচ?”
অনুপমা এক চাঁটি মারে ওর ঊরুসন্ধির ওপরে, “ধ্যাত, একটু পরে বোর্ড মিটিং। মাথা কাজ করছে না আর ছেলে বাঁড়া নিয়ে পরে আছে।”
পায়েল ওদের দেখে লজ্জায় লাল হয়ে বলে, “এই আমি আসছি রে। সময় হলে আমাকে ডেকে নিস।”
দেবায়ন ওর হাত ধরে কাছে টেনে বলে, “ইসসস লজ্জায় মরে যাই। যাচ্ছিস কোথায় রে?”
দেবায়নের একপাশে প্রেয়সী অনুপমা, অন্যপাশে পায়েল। ওদের কাঁধে হাত দিয়ে গলা নামিয়ে বলে, “বোর্ড মিটিং করা হবে না বোর্ড সেক্স করা যায় বলতো।” বলেই পায়েলের নধর গোলগাল নরম পাছার ওপরে আলতো চাঁটি মারে। সুগোল মাংসল পাছা জোড়া দুলে ওঠে আর দেবায়ন ওর নরম পাছা আলতো করে চেপে ধরে।
পায়েল ওর হাত নিজের পাছার ওপরে থেকে সরিয়ে দিয়ে বলে, “তুই তোর বৌকে নিয়ে পড়ে থাক, আমি চললাম।”
অনুপমাও রেগে যায় একটু, “অফিসের মধ্যে করিস কি বলতো?”
দেবায়ন হেসে বলে, “কেন অফিসে বুঝি সেক্স করা মানা?”
অনুপমা ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “হ্যাঁ মানা। অন্তত অন্যদের সাথে মানা।”
দেবায়ন ওকে পেছন থেকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে দিয়ে বলে, “তোর সাথে মানা নেই যখন তাহলে চল কনফারেন্স হলে। টেবিল টা বেশ বড়, ওর ওপরে তোকে শুইয়ে দিয়ে চালু করি।”
অনুপমা অভিমানী কণ্ঠে বলে, “ছাড় ছাড়।” পায়েলকে বলে, “তুই বের হ কেবিন থেকে। এই পাগলা ষাঁড় ক্ষেপে গেছে। এই দুঃশাসন যদি তোর বস্ত্র হরনে নামে তাহলে কোন কেষ্ট তোকে বাঁচাতে পারবে না কিন্তু।”
পায়েল ওদের দেখে মিচকি হেসে কেবিন থেকে বেড়িয়ে যায়। দেবায়ন ওর ঘাড়ের ওপরে মাথা গুঁজে মরালী গর্দানে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দেয়। সকাল সকাল প্রেমিকের উত্তপ্ত ঠোঁটের ছোঁয়ায় অনুপমার বুকের রক্তে হিল্ললের দেখা দেয়। সারা অঙ্গ শিরশির করে ওঠে ভালোবাসার জ্বালায়। দেবায়নের হাত দুইখানি নিজের শরীরের চারপাশে শক্ত করে বেঁধে চোখ বুজে চুপচাপ ওর পুরু উষ্ণ ভিজে ঠোঁটের পরশ সারা গালে, গর্দানে কানের লতিতে মাখিয়ে নেয়। মনের মধ্যে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে কামোত্তেজনা চরমে উঠে যায় দুইজনার। বেশ কিছুক্ষণ প্রেমিকের হাতের নিবিড় আলিঙ্গন পাশে বদ্ধ হয়ে থাকে। এমন সময়ে কেবিনের ফোন বেজে ওঠে। দেবায়ন ফোন তুলতেই, মনীষা জানিয়ে দেয় যে শ্রেয়া আর রূপক এসে গেছে।
অনুপমা মিহি কণ্ঠে দেবায়নকে বলে, “এইবারে ছাড়। দেখ গিয়ে রুপকের কি অবস্থা।”
দেবায়ন শেষ বারের মতন দুইহাতে ওকে পিষে ধরে বলে, “ইসসস এই বৃষ্টি ভেজা দিনে তোকে ছাড়তে একটুও ইচ্ছে করছে না।”
আদুরে কণ্ঠে অনুপমা ওকে বলে, “তোর শরীরের উষ্ণতা কাটিয়ে আমারো যেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু কি করা যাবে বল। শিরে সংক্রান্তি, ওরা দুইজনে এসে গেছে। হয়ত এতক্ষণে ইন্দ্রনীলের সাথে একসাথে বসে জল্পনা শুরু করে দিয়েছে।”
দেবায়নের বাহুপাশ থেকে নিজেকে মুক্ত করে কেবন থেকে দুইজনে বেড়িয়ে আসে। ইন্দ্রনীল নিজের ডেস্কে তখন পর্যন্ত বসে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে রূপক ওদের দিকে হাসিহাসি মুখ করে এগিয়ে আসে। দেবায়ন আর অনুপমা পরস্পরের দিকে চাওয়াচায়ি করে।
দেবায়ন হেসে রূপককে বলে, “কি বাল ছাল ছেলে তুই। ঠিক ভাবে বাইক চালাতে জানিস না নাকি রে?”
রূপক মৃদু হেসে জবাব দেয়, “আরে এত বৃষ্টি হচ্ছিল যে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। তার ওপরে কি ভাবে শালা ওই স্করপিওটা পেছন থেকে ধাক্কা মারল। বাল।”
অনুপমা ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে, “শ্রেয়ার কি খবর।”
রূপক গলা নামিয়ে উত্তর দেয়, “একটু পরেই মিটিং, ওইখানে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।”
অনুপমা ওকে প্রশ্ন করে, “একটা সত্যি কথা বল। তুই কি রেজিগনেশান দিচ্ছিস?”
রূপক কিছু না বলে একটু হেসে দেয়। ওদের সন্দেহ হয়, কিন্তু রূপক কোন উত্তর দেয় না।
লাঞ্চের পরে কনফারেন্স রুমে বসে মিটিং শুরু হয়। লম্বা বিশাল টেবিলের একপাশে দেবায়ন বসে, ওর বাম পাশে অনুপমা আর ডান পাশে পায়েল। ঠিক দেবায়নের উলটো দিকে শ্রেয়া বসে, যেন একটা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েই বসেছে। হিমশীতল কঠিন চেহারা দেখে মনের ভাব আঁচ করা কঠিন। ওর একপাশে রূপক অন্য পাশে ইন্দ্রনীল। শ্রেয়া এক মনে নিজের ট্যাবলেটে কিছু একটা লিখে চলেছে। মাঝে মাঝে দেবায়নের দিকে আড় চোখে দেখে নেয়। দীপঙ্করদা, মনীষা আর সুপর্ণা ম্যাডাম এসে গেছেন। শুরু হয়, ওদের সারা বছরের কাজকর্ম নিয়ে। দেবায়ন বলতে শুরু করে, শ্রেয়া চুপচাপ শুনে যায়। মনীষা তারপরে ব্যালেন্স সিট নিয়ে আলোচনা শুরু করে, তারপরে দীপঙ্করদা ওদের আগামী বছরের মার্কেটিং স্ট্রাটেজি নিয়ে কথাবার্তা বলে। অর্ধেক আলোচনা অনুপমার মাথার ওপর দিয়ে বেড়িয়ে যায়। তীক্ষ্ণ চোখে শুধু মাত্র শ্রেয়াকে জরিপ করে যায়। শ্রেয়া কম যায় না, ওর চোখে চোখ রেখে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ করে অনুপমার ফোনে একটা এস এম এস আসে। এস এম এস পড়ে অনুপমার চক্ষু চড়ক গাছ। শ্রেয়া পাঠিয়েছে। ছোট্ট এস এম এস, শুধু লেখা, “আই এম সরি।” শ্রেয়ার দিকে তাকাতেই শ্রেয়া, আলতো করে চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ইশারা করে। ওর মাথা ঘুরে যায়, কি চলছে আসল শ্রেয়ার মনে ভেতরে। সেদিনের হসপিটালে দেখা শ্রেয়ার চোখ আর এই মুহূর্তে শ্রেয়ার চোখ একদম আলাদা।
সব শেষে দেবায়ন শ্রেয়ার উদ্দেশ্যে বলে, “তোর কিছু বলার নেই?”
শ্রেয়া, গলা নামিয়ে ইন্দ্রনীলের সাথে কিছু কথাবার্তা বলে। অনুপমা দেবায়নকে, শ্রেয়ার পাঠানো এস এম এস দেখায়। দেবায়ন অবাক হয়ে রূপক আর শ্রেয়ার দিকে তাকায়। ওদের চোখে আবার আগের সেই দৃঢ়তা, কুটিল রেখা। কি চলছে সেটার আভাস পাওয়া যায় না।
শ্রেয়া গলা খাঁকড়ে বলতে শুরু করে, “সব ডাইরেক্টর যখন এইখানে আছে তখন আমার কয়েকটা বিষয়ে কিছু বলার আছে। সবাই ওয়ার্কিং বোর্ড মেম্বার, কিছু না কিছু করে এই কোম্পানিতে দিয়েছি। পায়েল কি দিয়েছে?”
ওই কথা শুনে দেবায়নের কান লাল হয়ে যায়। অনুপমার চোখে রক্ত উঠে যায়। দৃঢ় কণ্ঠে উত্তর দেয়, “আমার পাশে থাকে সেটাই তোর পক্ষে জানা যথেষ্ট। এর থেকে বেশি কৈফিয়ত তোকে দেব না আমি।”
শ্রেয়া স্মিত হেসে বলে, “বেশ তো, তাহলে গত বোর্ড মিটিঙে ইন্দ্রনীলকে কেন মেম্বার বানানো হয়নি? একটা কারন দে?”
অনুপমা একবার দেবায়নের দিকে তাকিয়ে ওকে উত্তর দেয়, “ওকেও বানানোর কথা চিন্তা করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এই কথা এইখানে উঠছে কেন?”
শ্রেয়া স্মিত হেসে বলে, “দ্যাখ, তোর কোম্পানি বলে তুই যা ইচ্ছে তাই করতে পারিস না। আমার এই কোম্পানিতে বারো পারসেন্টের শেয়ার আছে সুতরাং আমিও কথা বলতে পারি।”
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 04-10-2020, 03:52 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)