Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
পঞ্চবিংশ পর্ব (#07)

সকালে উঠে ব্রেকফাস্ট টেবিলে অনুপমা, দেবায়নকে দুষ্টু হেসে প্রশ্ন করে, “আমি না আসলে তুই কি কস্তূরীর সাথে রাত কাটাতিস?”
দেবায়ন মিচকি হেসে বলে, “যা সেক্সি মাল, ওকে দেখে যে কারুর মাল বসে বসে পড়ে যাবে।”
অনুপমা ওর গালে একটা আলতো চাটি মেরে কপট অভিমান দেখিয়ে বলে, “বৌ পাশে বসে তাও অন্য মেয়ের কথা চিন্তা করে।”
দেবায়ন টেবিলের তলা থেকে ওর তলপেটের কাছে হাত নিয়ে আলত টিপে বলে, “সোনা, ওর কথা তুই এনেছিস আমি আনিনি। তার মানে ওর সাথে তোর করার ইচ্ছে ছিল।”
অনুপমা আবার একটা চাটি মেরে বলে, “ধুর শয়তান। হাত সরা ওইখান থেকে।”
দেবায়নের হাত বেশ নিচে নামতে গিয়েও থেমে যায়।
অনুপমা ওকে জিজ্ঞেস করে, “তুই এই সব তথ্য নিয়ে কি ভাবে প্যাঁচ লাগাবি?”
দেবায়ন অনুপমার থুতনি নাড়িয়ে বলে, “আমি আগেই বলেছি, অনেক সময়ে চিরাচরিত পন্থা, মেয়েদের শরীর কাজে দেয় না। এই তিন জায়গা ঠিক সেই রকম জায়গা তাই কাকুর একটু অসুবিধে হয়েছিল। প্রথম হচ্ছে উটি, আমরা উটি যাবো পারিজাতকে ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলব যে আমার হাতে হোটেল তুলে দিলে আবার স্বমহিমায় ফিরে আসবে না হলে এই যে গত কোয়ার্টারে চার কোটি আয় হয়েছে, সেটা কমে লাখে চলে আসবে। যদি না মানে তাহলে কিছুই করব না, ওর হোটেলের কর্মীদের একটু খেপিয়ে দেব। আগামী তিন চার মাসের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে। কেননা আমাদের হাতে ওই হোটেলের পঁচিশ শতাংশ। আয় কমে গেলেই, বোর্ড মিটিংয়ে ওকে যা তা বলে অপমান করব। যদিও আসলে সেটা আমি করতে চাইনা, ওকে শুধু ভয় দেখাতে চাই। এই ভয়ে যদি কাজ হাসিল হয় তাহলে ব্যাস, হোটেলের পঞ্চান্ন শতাংশ আমাদের হাতে।”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “এটা কি ঠিক উপায় হল, পুচ্চু?”
দেবায়ন বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলে, “কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে, একজন অনেক আলবাল বকে অনেকের হত্যা করিয়েছিল, সেই কথা পড়ে সবাই তাকে বাহবা দেয়। এইখানে কোনটা ভুল কাজ করছি আমি?”
অনুপমা বলে, “না মানে……”
দেবায়ন বলে, “ব্যাবসায় সব ঠিক আর আমি ওকে ব্লাকমেল করছি না পুচ্চি। রীতিমতন টাকা দিয়ে কিনতে চাই ওর হোটেল। এর পরে ওকে টাকাও দেব না।”
অনুপমা বলে, “আর এই পুনের হোটেল? হোটেলের আয় ভালো, মিস্টার রজত কেন তোকে ওর শেয়ার বিক্রি করে দেবে? এই রজত আর মেহেক, দুইজনেই বেশ পাক্কা খেলোয়াড়। এখানে ওদের প্যাঁচে খেলাতে বেশ মুশকিল হবে মনে হয়।”
দেবায়ন মাথা চুলকে বলে, “ওইখানে একটু ভাবতে হবে ঠিক কাকে আগে প্যাঁচে ফেলা যায়। দুইজনের অবৈধ সম্পর্ক সুতরাং যে কোন কাউকে জালে ফেলতে পারলে অন্য জন জালে জড়িয়ে যাবে। এখন কথা হচ্ছে আগে মেহেক না আগে রজত। একজন কে বাগে পেলেই দ্বিতীয় জন হাতের মুঠোর মধ্যে চলে আসবে।”
অনুপমা হেসে বলে, “আমার কি মনে হয় জানিস, প্রথমে আমাদের মেহেকের সাথে কথা বলা উচিত।”
দেবায়ন ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে, “মেহেকের সাথে? আমি ভাবছিলাম রজতের সাথে সরাসরি কথা বলে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া। মেহেকের সাথে কি কথা বলা যায়?”
অনুপমা হেসে বুক ঠুকে বলে, “না, মেহেকের সাথে কথা বললে বেশি কাজে দেবে। ওর সাথে আমাকে কথা বলতে দে।”
দেবায়ন চাপা গর্জে ওঠে, “না, আমি তোর মাথা ছুঁয়ে মিমির কাছে প্রতিজ্ঞা করছিলাম যে আমার কোন কাজে তোকে নামাব না। শুধু তোর জেদের জন্য তোকে নিয়ে আসা, দয়া করে এই সবে একদম মাথা গলাস না, প্লিস পুচ্চি।”
ওর কথা শুনে অনুপমা ওকে জড়িয়ে ধরে বলে, “একদিন আমি তোর অর্ধাঙ্গিনী হব। তখন তোর পাপ পুণ্যের বোঝা সবকিছু আমাকে মেপে নিয়ে ভাগ করতে হবে। মা’কে কিছু না জানালেই হল আর আমি মেহেকের সাথে কথা বলতে চাই ব্যাস, তাহলেই কাজ হয়ে যাবে। তুই নিজেই বলেছিস যে মায়ের পথে আমাকে হাটাবি না, আমি সেই পথে হাটছিনা শুধু মাথা খেলাতে চাই।”
দেবায়ন বড় শ্বাস নিয়ে বলে, “ঠিক আছে আলাপ দিয়ে শুরু করিস আমি শেষ করব।”
অনুপমা বলে, “ওকে, সেটাই করব। কিন্তু মেহেক কে কি ভাবে প্যাঁচে ফেলা যায় বলতো?”
দেবায়ন মিচকি হেসে বলে, “মিস্টার রজত রাঘব বোয়াল কিন্তু ওর হাতের চাবিকাঠি মেহেকের হাতে। মেহেক একদিকে রজতকে খেলাচ্ছে কারন ওইখানে টাকা পয়সা আছে, অন্যদিকে শুভমকে মনে হয় ভালোবাসে। মেহেককে এটা জানাতে হবে যে এই শুভমের ব্যাপারে রজতকে জানিয়ে দিলে ওর কি অবস্থা হতে পারে। এর মধ্যে অন্ধকারে একটা ঢিল ছোঁড়া যেতে পারে।”
অনুপমা মন দিয়ে ওর কথা শোনে। দেবায়ন বলে, “রজতের বড় ছেলে, রাজেশের মৃত্যুর পেছনে কে দায়ী। যদি একটু খুঁচিয়ে দেখা যায় তাহলে দেখবি আসল কথা বেড়িয়ে যাবে। আমার যতদূর মনে হয়, রজতের সাথে ওর বড় বৌমার অবৈধ সম্পর্ক রাজেশ মারা যাওয়ার আগে থেকেই ছিল। হতে পারে যে রজত আর মেহেক মিলে রাজেশকে মেরে ফেলেছে।”
অনুপমা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ওর মুখের দিকে, এত শত ভেবে দেখেনি অনুপমা। দেবায়ন হেসে ওর মুখ বন্ধ করে বলে, “দাঁড়া পুচ্চি ডারলিং, একবার সামনা সামনি পেলে মেহেকের কত চর্বি আছে সেটা বোঝা যাবে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “মেহেক যা সেক্সি মহিলা, তুই খুব সহজে কিন্তু ওকে বিছানায় ফেলতে পারতিস আর সব উগড়ে দিত।”
দেবায়ন, অনুপমার থুঁতনি নাড়িয়ে আদর করে বলে, “না ডার্লিং না, মেহেক সেক্সি বটে কিন্তু মাথায় জটিল বুদ্ধি ধরে। ওর সাথে যৌন সঙ্গম করলেও ওর পেট থেকে অত সহজে কথা বের হবে না। ওকে সাপের প্যাঁচে না ফেললে ওই মাল কথা বলবে না। ওকে হাত করা সহজ কাজ কেননা আমাদের কাছে ওদের বিরুদ্ধে প্রচুর তথ্য আছে আর অনেক ফাক ফোঁকর আমাদের জানা যেখানে কোপ মারলেই ওরা নড়ে উঠবে।”
একটু থেমে চিন্তা গ্রস্থ হয়ে বলে, “মুশকিল হচ্ছ দিলিপ বাবু কে নিয়ে। সেইখানে কোন কিছুই খাটতে দেখছি না। ওইখানে শরীর দিয়ে অথবা টাকা দিয়ে কাজ হবে না। দিলিপের কাছে মেয়ের শরীর কোন কাজে আসবে না আর টাকার ব্যাপারে বেশ আঁটসাঁট।”
অনুপমা হেসে বলে, “পুচ্চুসোনা, দিলিপের ব্যাপার হৃদয়ের ব্যাপার, প্রেমের ব্যাপার। খুব সন্তর্পণে যদি দিলিপের নাড়ি ধরতে পারি তাহলে আমাদের কাছে চিরকাল ঋণী হয়ে থাকবে দিলিপ।”
দেবায়ন বলে, “মানে?”
অনুপমা বলে, “খুব সরল ব্যাপার কিন্তু কঠিন রাস্তা, দুই বিরহ কাতর প্রেমিক প্রেমিকাকে মিলিয়ে দাও। দেখবি তোর পায়ের ধুলো মাথায় করে রাখবে।”
দেবায়ন প্রশ্ন করে, “মানে কি বলতে চাইছিস? আমরা কণিকার সাথে দেখা করব আর ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ব্যাঙ্গালোর নিয়ে আসবো?”
অনুপমা হেসে ওর গাল টিপে বলে, “এইতো সোনা ভাবতে শিখেছে। কিন্তু আমরা উলটো টা করব। মানে দিলিপ বাবুর সাথে আগে দেখা করব তারপরে ওকে নিয়ে যাবো মুসৌরি।”
দেবায়ন, “তাহলে কাকে দিয়ে শুরু?”
অনুপমা বলে, “পুনে দিয়ে শুরু। ভুরি ভোজের আগে যেমন শুক্তো পাতে দেওয়া হয় তেমনি, শুরুতে লড়াই, তারপরে বুদ্ধির খেলা, শেষে ভালোবাসা। আগে আমরা পুনের কাজ হাসিল করব। প্রথমে মেহেকের সাথে দেখা করব তারপরে মিস্টার রজত। একবার আমাদের প্যাঁচে পরে গেলে ওইখান থেকে কাজ হাসিল করতে বেশি দেরি হবে না। তারপরে উটি মিস্টার পারিজাত, সেখানে তুই যে ভাবে চলতে চাস সেই ভাবে খেলে যাস। তারপরে আমরা যাবো ব্যাঙ্গালোর, মিস্টার দিলিপের সাথে দেখা করতে হবে বন্ধু হিসাবে বিজনেস ম্যান হিসাবে একদম নয়। দিলিপের সাথে আমি কথা বলব। পুরানো প্রেমের কথা শুনে আশা করি দিলিপ বাবু গলে যাবে আর ওকে নিয়ে আমরা যাবো মুসৌরি, সেখানে কণিকার সাথে মিলন। এইসবের মাঝে ঘুনাক্ষরেও যেন বিজনেসের কথা না ওঠে। কণিকার সাথে দেখা হওয়ার পরেই হোটেলের কথা উঠাবি তার আগে নয়।”
খাওয়া শেষ করে দেবায়ন অনুপমার গালে একটা চুমু খেয়ে বলে, “তাহলে আজ বিকেলেই বেড়িয়ে পরা যাক পুনের উদ্দেশ্যে।”
খাওয়া শেষ করে দুইজনে রুমে ফিরে যায়। রুমে ঢুকে দেবায়ন অনুপমা বলে, মেহেককে ফোন করতে সেই অনুযায়ী অনুপমা মেহেককে ফোন করে। অনুপমার গলার আওয়াজ শুনে মেহেক প্রথমে ওকে চিনতে পারে না। অনুপমা নিজের পরিচয় দেয় আর তারপরে মেহেক ওকে চিনতে পারে। মেহেক জিজ্ঞেস করে ফোনে কি কথা জানাতে চায়। অনুপমা জানায় যে রাতে ওর সাথে দেখা করতে চায় এবং ব্যাবসা সংক্রান্ত আর আনুসাঙ্গিক কিছু বিষয়ে কথা বলতে চায়। মেহেক নিজের বাড়ির ঠিকানা দিয়ে বলে যে বিকেলে বাড়িতে ওদের জন্য অপেক্ষা করে থাকবে।
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে কেমন মনে হল মেহেকের সাথে কথা বলে। জবাবে অনুপমা জানায় যে মেহেক বেশ চতুর মহিলা, অনুপমার ফোন পেয়েই বুঝে গেছে যে হোটেলের ব্যাপারে কথা বলতে চায়।
বিকেলের ফ্লাইট ধরে দুইজনে পুনে চলে আসে। যে হোটেল কেনার ছিল, সেইখানে না উঠে একটা বড় হোটেলে রুম বুক করে। সন্ধ্যের পরে দুইজনে মেহেকের ফ্লাটে পৌঁছে যায়। উচ্চবিত্ত সমাজের মেয়ে অনুপমা, ভালো ভাবে জানে কি ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হয় এই সব কাজের জন্য। হাঁটু পর্যন্ত চাপা ফর্মাল গাড় নীল রঙের স্কার্ট, গায়ে সাদা ডোরা কাটা জামা, গলায় একটা স্কার্ফ আর তার ওপরে একটা সামার কোট। দুই পায়ে ন্যুড স্টকিংস, হাতে ট্যাবলেট আর ডান হাতের কব্জিতে সোনার ঘড়ি। দেখে মনে হয় কঠোর এক ব্যাবসাদার নারী কাজ হাসিল করতে বেড়িয়েছে। ওর কথা মতন দেবায়ন গাঢ় বাদামি রঙের সুট পরে।
গাড়ি করে যেতে যেতে অনুপমা আরও একবার ট্যাবলেট খুলে মেহেক আর রজতের সব তথ্য দেখে নেয়। বহুতল ফ্লাট কমপ্লেক্সের দশ তলায় বেশ বড় ফ্লাট নিয়ে মেহেক থাকে তার ছোটো ছেলেকে নিয়ে। কলিং বেল বাজাতেই বাড়ির চাকর এসে দরজা খুলে দেয় আর ওদের বসার ঘরে বসতে বলে। বেশ বড়সড় ফ্লাট, সুন্দর ভাবে সাজানো গোছানো। অফুরন্ত টাকার ছড়াছড়ি সেটা দেয়ালের পেন্টিং আর শো কেসে রাখা পুতুল দেখেই বোঝা যায়। এই চেয়ে বেশি প্রাচুর্যে অনুপমা বড় হয়েছে, তাই ওর চোখে এই সব খুব সামান্য বলে মনে হয়।
কিছু পরে মেহেক বসার ঘরে ঢুকে অনুপমাকে আপাদমস্তক দেখে থমকে যায়। মেহেক ভাবতে পারেনি যে অনুপমা এত রুচিশীল মেয়ে। ওর পোশাক আর চেহারার অভিব্যাক্তি দেখে হন্তদন্ত হয়ে চাকরকে বলে ড্রিঙ্কস আনতে।
মেহেক ওদের বসতে বলে, “দাঁড়িয়ে কেন বস তোমরা। আমার সত্যি ভাগ্য যে মিস্টার বসাক এসেছে আমার বাড়িতে। এমনিতে প্রতিবার হোটেল দেখেই ফিরে যায়। আজকেই কি কোলকাতা থেকে এখানে আসা হয়েছে।”
অনুপমা মেহেক কে দেখে মিচকি হেসে বলে, “এত তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। কিছু বিশেষ কথা আছে তাই আসা।”
দেবায়ন মেহেকের সাথে হাত মিলিয়ে সোফায় বসে। অনুপমা মেহেককে জরিপ করে নেয় আপাদমস্তক। কস্তূরী ঠিকই বলেছিল, সুন্দরী আর লাস্যময়ী মহিলা মেহেক। শরীরের গঠন গোলগাল নধর আর চূড়ান্ত কামনার মাখামাখি। গায়ের রঙ অনুপমার চেয়ে একটু কম, কিন্তু ফর্সা বলাই চলে। হাঁটু পর্যন্ত একটা চাপা ইভিনিং ড্রেস পরা, তাতে শরীরের প্রতি অঙ্গ আর আকার ভালো করে বোঝা যাচ্ছে। স্তন বিভাজিকার অনেকটাই পোশাকের উপর থেকে বেড়িয়ে এসেছে। স্তন জোড়ার আকার বেশ সুন্দর গোলগাল। বিশেষ পাতলা না হলেও বেশ সুন্দর নরম কোমর আর বিশেষ দ্রষ্টব্য ওর দুই পাছা। নধর গোলগাল নরম পাছা একটু বেশি বড় আর পেছনের দিকে ফুলে রয়েছে। তার নিচে গোলগাল মসৃণ থাই, আলো যেন পিছলে পড়ছে ওই থাই জোড়ার মসৃণ ত্বকের ওপরে। ওর টানাটানা চোখ আর চাহনি দেখেই দেবায়ন বুঝতে পারে যে এই শরীরে অনেক খিদে, টাকার খিদে আর সেই সাথে যৌনতার খিদে দুটোই আছে। এখন এই অসামান্য সর্পিণী কি ভাবে দমন করবে অনুপমা সেটাই দেখার।
মেহেক সামনের ছোটো কাউচে বসে পানীয়ের গ্লাস ওদেরকে দিয়ে অনুপমাকে প্রশ্ন করে, “গত বার তোমার বাবা একা এসেছিলেন, তার আগে অবশ্য মিস্টার বসাক আর মিস্টার সেন এক বার ঘুরে গেছেন। এবারে তোমরা এলে কি ব্যাপার?”
অনুপমা হেসে বলে, “না এমনি, এবারে আমার মিস্টার একাই আসত, কিন্তু ওকে একা ছাড়তে ঠিক মন করলো না।”
মেহেক অবাক চোখে প্রশ্ন করে, “তোমরা কবে বিয়ে করলে?”
দেবায়ন হেসে ফেলে, “সমাজের চোখে বিয়ে অনুষ্ঠান হয়নি ঠিকই, কিন্তু মন বাঁধা। তাই না নিয়ে এসে পারলাম না।”
মেহেক মিচকি হেসে বলে, “হ্যাঁ সত্যি বলেছ। তা কি বিষয়ে কথা বলতে চাও আমার সাথে?”
অনুপমা কিছু একটা বলতে উদ্যত হচ্ছিলো, কিন্তু দেবায়ন ওকে থামিয়ে দিয়ে নিজেই বলতে শুরু করল, “এবারে ভাবলাম যে হোটেলের ভবিষ্যতের মালকিনের সাথে আগে দেখা করে যাই তাই তোমার কাছে আসা।”
মেহেক এক মন মোহিনী হাসি দিয়ে বলে, “আমি ওই হোটেলের বিষয়ে কিছুই জানি না। হোটেলের সব কিছু আমার শ্বশুর মশাই দেখেন।”
দেবায়ন পালটা হেসে জবাব দেয়, “আমি জানি তুমি হোটেলের বিষয়ে মাথা ঘামাও না। তুমি যে বিষয়ে মাথা ঘামাও সেই বিষয়ে কথা বলতে এসেছি আমরা।”
কথা শুনে মেহেকের ভুরু কুঁচকে যায়, গ্লাস নামিয়ে প্রশ্ন করে, “তোমার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না।”
দেবায়ন ওর চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে, “তাহলে একটু খুলেই কথা বলা যাক তোমার সাথে। মিস্টার সেন, মানে আমার শ্বশুর মশাই এই হোটেল কিনতে চায়। এবারে বল কি করলে ওই হোটেল সুস্থ্যভাবে আমাদের হাতে আসবে।”
মেহেক হেসে জবাব দেয়, “আগেই বলেছি হোটেলের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কেন আমার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলছ ঠিক বুঝতে পারছি না। তুমি ভালো ভাবে জানো আমি শ্বশুরের এই সব বিষয়ে একদম মাথা গলাই না।”
দেবায়ন, মেহেকের চোখের ওপর থেকে চোখ না সরিয়ে দৃঢ় শীতল কণ্ঠে বলে, “তুমি হবু মালিক হতে চলেছ। এটা ঠিক কথা না ভুল?”
মেহেক কপট হেসে জবাব দেয়, “শ্বশুর মশাই যা করবেন সেটা তাঁর ব্যাপার। আমি ছাড়া আরও দুই ছেলে আছে তাঁর।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “তোমার স্বামী, কতদিন হল গত হয়েছেন?”
মেহেকের গলার স্বর কঠিন হয়ে যায়, “হঠাৎ এই প্রশ্নের কি মানে?”
অনুপমা বলে, “তুমি চাকরি বাকরি কিছু করো না তাও এই বাড়ি কি ভাবে মেইনটেইন করছ?”
মেহেক একটু রেগে যায় অনুপমার প্রশ্ন শুনে, “সেটা তোমার জেনে দরকার?”
অনুপমা তির্যক হেসে বলে, “আমার দরকার শুধু এই জন্যে যে কি ভাবে ওই হোটেলের মালিকানা স্বতঃ আমি কিনতে পারবো।”
দেবায়ন মেহককে প্রশ্ন করে, “তুমি কি শুভম নামে কাউকে চেন?”
মেহেকের চেহারা হঠাৎ করে ফ্যাকাসে হয়ে যায়, কিন্তু বুদ্ধিদিপ্তা নারী চট করে নিজেকে সামলে নিয়ে জবাব দেয়, “কে শুভম? ওই নামে আমি কাউকে চিনি না। আর কেনই বা এই সব কথা আমাকে বলছ তুমি? আসলে কি চাই তোমাদের?”
অনুপমা হিম শীতল কণ্ঠে বলে, “হোটেলের মালিকানা চাই আর সেটার চাবি কাঠি তোমার হাতে। আমি তোমাকে ঠকিয়ে হোটেল চাইছি না, রীতিমতন টাকা দিয়ে কিনতে চাই হোটেল।”
এক সাথে দুই দিক থেকে প্রশ্নের বাণে জর্জরিত হয়ে মেহেক হাফিয়ে ওঠে। চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, চেহারা লাল হয়ে যায়, “আমি বুঝতে পারছি না তুমি কি বলতে চাইছ।”
অনুপমা কিছু বলতে যায় কিন্তু দেবায়ন ওকে থামিয়ে হিম শীতল কণ্ঠে মেহেককে বলে, “দেখো মেহেক, আমরা তোমার ব্যাপারে আর মিস্টার রজতের ব্যাপারে আর শুভমের ব্যাপারে সব জানি।”
এবারে মোক্ষম অস্ত্র ছাড়ে অনুপমা, “আমি জানি তোমার সাথে মিস্টার রজতের অবৈধ সম্পর্ক আছে। নৈতিকতার কথায় যাবো না, কিন্তু তুমি সম্পর্কে মিস্টার রজতের বৌমা।”
মেহেক গর্জে ওঠে, “কি উল্টো পালটা বলছো! বেড়িয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে না হলে আমি এখুনি পুলিস ডাকব কিন্তু।”
অনুপমা ট্যাবলেট খুলে ওর সামনে মিস্টার রজত আর মেহেকের সিসিলিতে তোলা বেশ কয়েকটা অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে বলে, “এর পরেও কি পুলিস ডাকতে চাও তুমি?”
ওই ছবি দেখে আতঙ্কে শিউরে ওঠে মেহেকের শরীর। চেহারা থেকে কেউ ওর সব রক্ত শুষে নিয়েছে। ঠোঁট কাঁপতে শুরু করে দেয়, কপালে ঘামের বিন্দু, গলা শুকিয়ে আসে মেহেকের। রক্ত চক্ষু থেকে চাহনি বদলে ভয়ার্ত রুপ নেয়। কম্পিত কণ্ঠে অনুপমা আর দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “কি করে পেয়েছো এই ছবি?”
অনুপমা শীতল কণ্ঠে প্রশ্ন করে, “এটা সত্যি না মিথ্যে?”
নির্বাক মেহেক, কথা বলার শক্তি হারিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকে।
দেবায়ন সোফা ছেড়ে উঠে মেহেকের কাউচের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। ওর কাঁধের কাছে হাত রেখে ঝুঁকে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, “আরো ছবি আছে আমাদের কাছে মেহেক। তোমার আর শুভমের গোয়ার অন্তরঙ্গ ছবি আছে। দেখতে চাও কি? একবার ভেবে দেখো মেহেক। তোমার আর মিস্টার রজতের ছবি পুলিসের হাতে চলে গেল আর তোমার স্বামীর মৃত্যুর বিষয়ে কেউ আবার ওদের কানে কিছু ফুসফুস করে বলে দিল। অথবা ওই ছবি গুলো নিউজিল্যান্ড আর লন্ডনে তোমার দুই দেওরকে পাঠিয়ে দিলাম। কি হবে তারপরে মেহেক? মিস্টার রজত কি করবে?”
শ্মশানের নিস্তব্ধতা নেমে আসে বসার ঘরে। শুধু মাত্র এসির শব্দ শোনা যায়। লাস্যময়ী মেহেকের চোখের কোল বেয়ে জল গড়িয়ে পরে। মাথা নিচু করে বারেবারে সেই জল মুছে নেয় কিন্তু অনুপমার দিকে তাকাতে সাহস পায় না। দেবায়নের ঠোঁটে ভেসে ওঠে এক ক্রুর হাসি, এবারে মাছ জালে ফেঁসে গেছে।
মেহেকের ফ্যাকাসে চেহারা আর চোখের জল অনুপমাকে একটু নাড়িয়ে দেয়, ওকে সান্তনা দিয়ে বলে, “শোনো মেহেক কেঁদো না। আমি তোমার ক্ষতি করতে এখানে আসিনি।”
দেবায়ন মেহেকের দুই কাঁধে আলতো হাতের চাপ দিয়ে আসস্ত কণ্ঠে বলে, “মেহেক আমরা শুধু এই টুকু চাই যে তুমি মিস্টার রজতকে রাজি করাও। আমাদের চূড়ান্ত অফার চল্লিশ শতাংশের জন্য ত্রিশ কোটি টাকা দিতে রাজি। এর পরেও তোমার কাছে কিন্তু হোটেলের ত্রিশ শতাংশ মালিকানা থেকে যাবে। আমি বিনা পয়সায় তোমাকে ঠকিয়ে তোমার হোটেল হাতিয়ে নিচ্ছি না। ভেবে নাও এটা তোমার বদনামের দাম আমাদের চুপ থাকার দাম।”
ডুকরে কেঁদে ওঠে মেহেক, “আমি কি ইচ্ছে করে ওর সাথে জড়িয়েছি?”
অনুপমা দেবায়নকে ইঙ্গিতে ফোনের রেকর্ডার চালু করতে বলে। মেহেক তার দুঃখের কাহিনী ওদের সামনে মেলে ধরে, “আমার শ্বশুর আমাকে টেনে নামিয়েছে এই বিপথে। আমার স্বামী আমাকে ঠিক ভাবে ভালবাসতে পারতো না, আর সেই সুযোগ নেয় আমার শ্বশুর। আমি কচি মেয়ে ছিলাম, যৌন খিদেতে জর্জরিত আমার পা পিছলে যায়, আর আমার শ্বশুর আমাকে সেই দেহের সুখ দেয়। তারপরে নিয়মিত আমাকে ওর বিছানা গরম করতে হয়। ওই রজত আমার শরীর একা ভোগ করার জন্য রাজেশকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ, শরীরের খিদে মেটানোর জন্য আমি বিপথে গেছি আর বলতে পারো আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য একপ্রকার আমি দায়ী। কিছুদিন পরে বুঝলাম যে বুড়োর জ্বালা শুধু চোখের জ্বালা, আমার শরীর নিয়ে আরও কিছু করতে চায়। রাজেশ মারা যাবার পরে আমার শারীরিক চাহিদা বলে কিছু ছিল, রজত সেটা নিজের বিজনেসের কাজে লাগাল। আমি অবাধে অনেকের সাথে যৌন সঙ্গম করলাম, আর রজত হোটেল বিজনেস বাড়িয়ে নিল, সেই সাথে একটা গাড়ির শোরুম খুলে ফেলল। আর দিনে দিনে আমাকে টাকা দিয়ে সাজিয়ে দিল। আমাকে ভালোবাসার আর কেউ রইল না। কি না করেছি ওকে উত্তেজিত করার জন্য?! উলঙ্গ হয়ে ওর সামনে নেচেছি, বারান্দায় ব্রা প্যান্টি পরে দিনের বেলা দাঁড়িয়েছি, ওর সাথে পার্টিতে গেলে আমাকে ছোটো ড্রেস পরে যেতে হতো, আর নিচে প্যান্টি পড়তে দিত না, কখন কোন রেস্টুরেন্টে বসে আমার যোনির ওপরে হাত দিয়ে আমাকে উত্তেজিত করেছে কিন্তু বিছানায় এলেই পাঁচ মিনিটে শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আমি ভালোবেসে ফেললাম একজন কে। চার বছর আগে একটা পার্টিতে গিয়ে শুভমের সাথে দেখা। খুব শান্ত শিষ্ট ভালো ছেলে। সেই রাতে আমি মদে চূড় হয়ে গেছিলাম, আমার শরীর হাতানর জন্য আশেপাশের মানুষ যেন উপচে পড়েছিল। শুভম আর তাঁর একজন বন্ধু আমাকে সেখান থেকে উঠিয়ে আমার ফ্লাটে পৌঁছে দিয়েছিল। তারপরে আমি শুভমের প্রেমে পরে যাই। হ্যাঁ হ্যাঁ আমি শুভমকে ভীষণ ভালোবাসি। কিন্তু এইসব রজত জানে না, জানলেই শুভমকে সরিয়ে দেবে অথবা আমার ছেলের ক্ষতি করবে। আমি এক প্রকার রজতের কেনা বাঁদী হয়ে আছি।”
কথা গুলো শুনতে শুনতে দেবায়নের মনে হলো যেন দ্বিতীয় পারমিতাকে চোখের সামনে দেখছে। অনুপমার হৃদয় শেষ পর্যন্ত নরম হয়ে যায় মেহেকের কথা শুনে।
ছলছল চোখে অনুপমা আর দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “তোমরা আমার সাথে কি করতে চাও? আমাকে পুলিসে দিতে চাও না আমাকে রজতের সামনে উলঙ্গ করতে চাও?”
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 03:38 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)