Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
পঞ্চবিংশ পর্ব (#06)

ওরা কাছে আসতেই, অনুপমার দিকে হাত বাড়িয়ে মেয়েটা নিজের পরিচয় দেয়, “আমি মিস কস্তুরী রঙ্গনাথন, প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। গ্ল্যাড টু মিট ইউ মিসেস অনুপমা বসাক। কালকেই বসাক স্যার বলছিলেন যে মিসেস সাথে আসছেন।”
অনুপমা হতবাক হয়ে মেয়েটার সাথে হাত মিলিয়ে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে। দেবায়ন চোখ টিপে ওর মুখ বন্ধ করতে ইশারা করে। চেয়ারে বসে পরে অনুপমা আর দেবায়ন, ওদের সামনের চেয়ারে বসে কস্তূরী।
দেবায়ন, কস্তূরীকে প্রশ্ন করে, “এখানে না বসে রুমে গেলে ভালো হয় না? সেখানে ডিনারের সাথে সাথে বাকি আলোচনা করা যাবে।”
অনুপমা চোখের ইশারায় দেবায়নকে প্রশ্ন করে যে সুইটে কেন ডাকা হচ্ছে। দেবায়ন ওকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সুইটে ঢুকে, দেবায়ন খাবারের অর্ডার দেয় ডিনারে স্মোকড স্যালমন, লাজানিয়া আর রেড ওয়াইন। শুরুতে সাথে দামী স্কচ আর স্টারটারের জন্য ছোটো ছোটো চিংড়ি মাছ আর কাবাব।
বসার ঘরের একটা ছোটো কাউচে কস্তূরী আরাম করে বসে আর ওর সামনের লম্বা কাউচে দেবায়ন আর অনুপমা বসে। অনুপমার বুকের মাঝে হাজার প্রশ্ন ভিড় করে আসে, কেন এই মেয়েটা এখানে এসেছে, কি কাজের জন্য প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর নিযুক্ত, কি খবর নিয়ে এসেছে কস্তূরী আর সেই খবর নিয়ে দেবায়ন কি করতে চলেছে। ইতিমধ্যে রুম সার্ভিস এসে হুইস্কি আর কাবাব দিয়ে চলে যায়।
দেবায়ন একটা হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিয়ে, কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, “কাজ আশা করি শেষ হয়ে গেছে। কি খবর এনেছ?”
সামনের টেবিলের ওপরে ল্যাপটপ খুলে কস্তূরী উত্তর দেয়, “তুমি যা যা বলেছিলে সেই মতন সব খবর জোগাড় করে নিয়েছি আর তোমার কথা অনুযায়ী কাজ সেরে ফেলেছি।”
 
অনুপমা একবার কস্তূরীর দিকে তাকায় একবার দেবায়নের দিকে।
দেবায়ন, কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, “তাহলে দেখি কি খবর এনেছ?”
ল্যাপটপ খুলে কস্তূরী বলতে শুরু করে, “প্রথম উটির হোটেলের মালিক, এন.আর.পারিজাত। আময়িক ভদ্রলোক, খুঁজে পেতে স্বভাবে কোন ফাক ফোঁকর পাওয়া গেল না। স্ত্রী ছেলে মেয়েকে খুব ভালোবাসে। এক ছেলে ক্লাস টুয়েল্ভে পড়ে আর মেয়ে ক্লাস এইটে পড়ে। তাঁর স্ত্রী, গৃহবধূ। উটি ছাড়াও, মুন্নারে একটা হোটেল আছে, দুটো হোটেল বেশ ভালোই চলে, বেশ ভালো টাকা। ওইখানে কাজ হাসিল করতে তোমার পন্থা নিতে হয়।”
দেবায়ন বলে, “কাকে হাত করেছিলে? এইচ.আর ম্যানেজার না ফাইনেন্স ম্যানেজার?”
কস্তূরী হেসে দেয়, “তুমি বলেছিলে এইচ.আর. কে হাত করতে, সেটাই করেছি। আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। ইতিমধ্যে বেশ কিছু লোক হোটেলের কাজ ছেড়ে চলে গেছে, নতুন লোকের অভাবে রিক্রুটমেন্ট বন্ধ। আর সেই জন্য গত দুই মাসে হোটেলে খুব চাপ। খালি হোটেল, কিন্তু ফুল অকুপেন্সি দেখাতে হচ্ছে লোকের অভাবে। ওদিকে লোক নিযুক্ত হচ্ছে না এইচ.আর. এর কারনে। তুমি গেলে গত কোয়াটারের ব্যালেন্স সিট দেখতে চাইবে। আমি খবর নিয়ে দেখেছি, গত কোয়ার্টারে ওদের আয় হয়েছে চার কোটি, আর এই কোয়ার্টারে আরও কমে গেছে। তার আগের দুই কোয়ার্টারে ওদের বেশ আয় হয়েছিল। একবার দশ কোটি, আর পরের বার আট কোটি। এবারে একেবারে নেমে যাওয়াতে হাঁফিয়ে উঠেছে পারিজাত। শুধু একটু ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। যদি না পড়ে……”
দেবায়ন হেসে বলে, “না পড়লে এবারে নিস্তার নেই, আরও দুই কোয়াটার ওকে এই ভাবেই কাটাতে হবে।”
কস্তূরী হেসে বলে, “তোমার মাথা বড় প্যাঁচালো। যাই হোক যেটা ভালো বুঝবে সেটা করবে। আর হ্যাঁ, ওদের এইচ.আর. যে লোকটা, মিস্টার কার্তিকেয়ন, ওর সাথে তোমার মিট হবে পরশু দিন পুনেতে। সেই ভাবে ওকে বলা আছে।”
দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, ঠিক আছে। অনুপমা হতবাক হয়ে দেবায়নের ব্যাবসার প্যাঁচ বুঝতে চেষ্টা করে।
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “পুনের কি খবর? মিস্টার রজত পানিক্কর কেমন আছেন? ওর সম্বন্ধে কি জানতে পেরেছ?”
তার উত্তরে হেসে কস্তূরী বলে, “বহাল তবিয়েতে আছে বুড়ো। ও বুড়ো বেটা ঘাঘু মাল, এই বয়সেও মালের টনটন করে, কিন্তু মাল পড়ে না ঠিক জায়গায়।”
দেবায়ন হেসে ফেলে চোখ টিপে জিজ্ঞেস করে, “কেন তোমার সাথে কিছু করেছিল নাকি?”
কস্তূরীর গাল লাল হয়ে যায়, অনুপমা বুঝতে পারে শরীর কাজে লাগিয়ে কস্তূরী ওর কাজ হাসিল করেছে সেইখানে। লাজুক হেসে কস্তূরী উত্তর দেয়, “কিছুটা ঢলে পড়তে হয়েছে তবে তার সব টাকা আমি তোমার কাছ থেকে উসুল করে নেব।”
দেবায়ন হেসে দেয়, “সব পুষিয়ে দেব একবার এই তিনটে হোটেল হাতে আসুক।”
কস্তূরী হেসে মাথা নাড়িয়ে বলে, “পাঁচ লাখ টাকা এখন বাকি আছে, সেটা মনে আছে তো?”
দেবায়ন হেসে উত্তরে বলে, “হ্যাঁ বাবা হ্যাঁ, পাঁচ লাখ দেব তোমাকে। আর হানিমুনে তুমি স্কটল্যান্ড যেতে চেয়েছিলে তার বিজনেস ক্লাসের আসা যাওয়ার ভাড়া দেব।”
কস্তূরী দেবায়নের দিকে হাওয়ায় একটা চুম্বন ছুঁড়ে অনুপমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “কিছু মনে করো না যেন।”
অনুপমা কপট অভিমান দেখিয়ে হেসে কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি আবার আমার বরের সাথে ঢলে যাওনি তো?”
কস্তূরী হেসে জবাব দেয়, “না না মিসেস বসাক। আজ প্রথম মিস্টার বসাকের সাথে সামনা সামনি দেখা হচ্ছে। এতদিন ভিডিও চ্যাটিং করে গেছি আর ইমেইলে কথা বার্তা হয়েছে।”
দেবায়ন অভিমান ভরা চাহনি নিয়ে অনুপমার দিকে তাকায়। অনুপমা ওর হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কোলের মধ্যে।
কস্তূরী বলতে শুরু করে, “বুড়ো রজতের অনেক কেচ্ছা। বৌ থাকা কালিন একটা অন্য মেয়ের সাথে মেলামেশা ছিল। বৌ জানতে পারে ওদের ব্যাপার আর তারপরে আত্মহত্যা করে। এই নিয়ে কেস চলেছিল কিন্তু টাকা খাইয়ে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওর তিন ছেলের মধ্যে দুই জন বর্তমান। বড় জনের অনেকদিন আগেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনের কেউই হোটেল বিজনেসে আসবে না বলে ধরে নেওয়া যায়। কারন দুই ছেলেই ডাক্তার, একজন থাকে লন্ডনে আর একজন নিউজিল্যান্ডে। বুড়ো মরলে হোটেল পাবে ওর বড় বৌমা।”
কস্তূরী চোখ টিপে হেসে বলে, “কারন বর্তমানে বুড়োর এফেয়ার ওর বড় বৌমা, মেহেকের সাথে। মেহেক, চূড়ান্ত সেক্সি মহিলা, শরীরের আনাচে কানাচে যেন খিদে। বুড়োর পিঠের পেছনে মেহেক আবার একটা এফেয়ার করে বসে আছে এক ছোকরা ছেলের সাথে। বুড়ো শুধু ওর শরীর নিয়ে পড়ে থাকে, মেহেক ছেলেটাকে ভালোবাসে কিন্তু বুড়োর কবল থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করতে পারছে না। ছেলেটার নাম শুভম, পুনের একটা আই.টি. কোম্পানিতে চাকরি করে, দিন পাঁচেক হল ক্যালিফোর্নিয়া গেছে কিছু অফিসের কাজে।”
এই বলে ল্যাপটপে বেশ কিছু ছবি দেখায়। ছবি দেখিয়ে এক এক করে পরিচয় করিয়ে দেয়, রজতের সাথে, মেহেকের সাথে আর শুভমের সাথে। বেশ কিছু ছবিতে বুড়ো রজত আর বড় বৌমা মেহেক বেশ পাশাপাশি জড়াজড়ি করে বসে। সিসিলির কোন সমুদ্র সৈকতে রজতের সাথে মেহেকের কিছু অন্তরঙ্গ ছবিও আছে। কোন ছবিতে রজতের হাত মেহেকের পিঠের খালি অংশে, কখন কাঁধে, কখন রজত আর মেহেক পরস্পরকে চুমু খাচ্ছে। এর পরে কস্তূরী, মেহেক আর শুভম বেশ কিছু অন্তরঙ্গ ছবি দেখাতে শুরু করল। বেশ কয়েকটা ছবি গোয়ার সমুদ্র সৈকতে তোলা, সেখানে মেহেক সাগরের ঢেউয়ে ছোটো বিকিনি পরে দোল খাচ্ছে আর তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে শুভম। কস্তূরী এরপরে দেবায়নকে বিস্তারিত ভাবে সবার ঠিকানা, সবার ফোন নাম্বার, গাড়ির নাম্বার ইত্যাদি জানালো।
সব ছবি দেখার পরে দেবায়ন হেসে বলে, “ঠিক আছে পুনের ব্যাপার আমি সামলে নেব। এবারে ব্যাঙ্গালোরের কি খবর? মিস্টার দিলিপ কি করছে?”
ইতিমধ্যে রুম সার্ভিস এসে ওদের ডিনার দিয়ে যায়। স্মোকড স্যালমনের সাথে রেড ওয়াইন খেতে খেতে ওরা গল্প করে। অনুপমা জানতে পারল যে কস্তূরী, ব্যাঙ্গালোরের মেয়ে, সাইকোলজি নিয়ে পড়াশুনা করেছে। ইচ্ছে ছিল পুলিসে যাওয়ার কিন্তু গেল না, লোকের ওপরে নজর রাখার আর মেলামেশার বড় শখ তাই একটা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর কোম্পানিতে চাকরি নেয়। ওর কাজ ছিল রিসেপশনিস্টের, কিন্তু ওর বস, প্রদীপের নেক নজরে কিছুদিনের মধ্যে চলে আসে ছোটো ছোটো কাজ হাতে নেয়। এর পরে নিজে থেকেই আলাদা হয়ে একা কাজ করে। দেবায়নের এই কাজ ওর কর্ম জীবনের সব থেকে বড় কাজ আর সেইজন্য দেবায়নকে ধন্যবাদ জানায় ওর ওপরে বিশ্বাস করার জন্য। ওর অনেকদিনের প্রেমিক, রুদ্রনাথ নায়ার, তার সাথে বিয়ে করতে চায়। ডিনার শেষে কস্তূরী ব্যাঙ্গালোর হোটেলের মালিক দিলিপের ব্যাপারে বলতে শুরু করে।
দিলিপ বিয়ে-থা করেনি। শুধু টাকা চেনে, আর কিছু চেনে না। টাকা ছাড়া আরও দুটো জিনিসের প্রতি ওর টান। এক মদ, দ্বিতীয় মেয়ে। যেহেতু বিয়ে করেনি তাই অবাধে মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে, রোজ রাতে বিছানায় মেয়ে চাই। দিলিপের বিয়ে না করার কারন খুঁজতে গিয়ে জানা যায় যে কলেজে পড়াকালীন কণিকা নামের একটা মেয়েকে ভালবাসত। তাঁর সাথে বিয়ে না হওয়াতে শেষ পর্যন্ত আর বিয়ে করল না। সেই থেকে শুধু মদ, মেয়ে আর টাকা নিয়ে পরে থাকে। কস্তূরী আরো খোঁজ নিয়ে দেখেছে যে কণিকা বর্তমানে বিধবা। এইখানে দেবায়ন বেশ ফাঁপরে পরে যায়। ভাবতে বসে কি ভাবে মিস্টার দিলিপকে জব্দ করা যায়।
দেবায়ন প্রশ্ন করে, “এই কণিকার ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর নিয়েছ কি?”
কস্তূরী হেসে উত্তর দেয়, “নিশ্চয় মিস্টার বসাক। বর্তমানে কণিকা মুসৌরির কাছে একটা মিশনারি কলেজে চাকরি করে, একটা ছোটো ছেলে আছে তাঁর।”
দেবায়ন মাথা চুলকে প্রশ্ন করে, “তারমানে দিলিপ এই কণিকার বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে কিছুই জানে না।”
কস্তূরী মাথা নাড়ায়, “না জানে না। জানলে হয়ত মুসৌরি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতো।”
দেবায়ন ভীষণ চিন্তায় পড়ে যায়। দিলিপের কাছে টাকা আর নারী শরীরের প্রাচুর্য বর্তমান। ওকে এই সব দিয়ে ঠিক ভোলানো যাবে না। দেবায়ন, ভেবে কুল পায় না, এই ব্যাঙ্গালোরের ডিল কি করে সম্ভব হবে। চিড়িক করে জ্বলে ওঠে অনুপমার চোখ, কিন্তু কস্তূরীর সামনে চুপ করে থাকে, সময় হলে দেবায়নকে বুঝিয়ে দেবে।
ডিনার শেষে, দেবায়ন চেকবই বের করে একটা পাঁচ লাখ টাকার চেক কেটে কস্তূরীর হাতে ধরিয়ে দেয়। কস্তূরী, ল্যাপটপ গুটিয়ে, দেবায়নের হাতে একটা ছোটো মাইক্রো কার্ড দিয়ে জানিয়ে দেয় ছবি, তথ্য, কাগজ পত্রের স্ক্যান কপি, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, গাড়ির নাম্বার ইত্যাদি। যা যা দেবায়ন চেয়েছিল, সব আছে এই মাইক্রো কার্ডে।
কস্তুরী চলে যাওয়ার পরে অনুপমা পোশাক বদলের জন্য বাথরুমে ঢোকে। সারাদিনের ক্লান্তি আর সারা সন্ধ্যের উত্তেজনা ধুয়ে ফেলে শরীর থেকে। ওদিকে বিছানায় একটা বারমুডা পরে দেবায়ন তাঁর প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করে। পরনের কাপড় বদলে একটা পাতলা ফিনফিনে স্লিপ চড়িয়ে দেয় গায়ে। স্লিপের নিচে শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরা। স্লিপ ফিনফিনে হওয়ার জন্য ভেতরের ব্রা আর প্যান্টি পরিষ্কার দেখা যায়। অনুপমার গজ দাঁতের মোহিনী হাসি আর লাস্যময়ী রুপ থেকে দেবায়ন আর থাকতে পারে না। এক ঝটকায় অনুপমার নধর তুলতুলে দেহপল্লব কোলে তুলে আছড়ে দেয় বিছানার ওপরে। দেবায়নের বলিষ্ঠ শরীরের নিচে পিষে যায় অনুপমার নধর কমনীয় দেহপল্লব। চোখ বুজে দুই হাতে দয়িতের গলা জড়িয়ে নিজেকে উজাড় করে দেয়।
হঠাৎ মনের কোণে উদয় হয় অব্যাক্ত এক বেদনা, বন্ধ দ্বারের পেছনে অনেক কিছু লুকিয়ে রাখা কথা। না জানালে ওর বুক যে আজ রাতে ফেটে যাবে কিন্তু তাঁর আগে জানতে চায় যে সত্যি কি জার্মানি গিয়ে দেবায়ন আর শ্রেয়া কিছু করেছিল?
অনুপমার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার সময়ে দেবায়ন অনুভব করে যে ওর প্রেয়সী হটাত করে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। অনুপমার চোখের কোণ চকচক দেখে দেবায়ন প্রশ্ন করে, “এই পুচ্চিসোনা, তোর আজকে হয়েছে কি বলতে পারিস? বিকেল থেকে শুধু তোর চোখে জল দেখছি।”
অনুপমাকে বুকের ওপরে জড়িয়ে দেবায়ন চিত হয়ে শুয়ে পরে। অনুপমা ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি শোনে মন দিয়ে। তার কিছু পরে মিহি দ্বিধা ভরা কণ্ঠে প্রশ্ন করে, “আমি একটা কথা জিজ্ঞেস করব ঠিক ঠিক উত্তর দিবি?”
অনুপমার সুন্দর গোল মুখ আঁজলা করে ধরে উত্তর দেয়, “আমি তোর কাছে খোলা বই তাও কি জানতে চাস বল।”
দ্বিধা জড়ানো কণ্ঠে অনুপমা প্রশ্ন করে, “জার্মানি গিয়ে তুই আর শ্রেয়া কি কিছু করেছিস?”
দেবায়ন হেসে ফেলে অনুপমার প্রশ্ন শুনে, “না রে পাগলি মেয়ে। তোকে না জানিয়ে কি কারুর সাথে আজ পর্যন্ত শুয়েছি?”
অনুপমার মনে তাও যেন একটা প্রশ্ন থেকে যায়, “সত্যি বলছিস আমাকে না আমার মন রাখার জন্য মিথ্যে বলছিস?”
দেবায়ন ওর গালে কপালে সারা মুখে অজস্র চুমু খেয়ে বলে, “এই তোকে ছুঁয়ে বলছি। আসলে জার্মানি গিয়ে অনেক কিছু ঘটেছে যেটা ঠিক আমিও বুঝে উঠতে পারছি না তাই আর তোকে বলা হয়নি।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “মানে? কি হয়েছে আর কি বুঝতে পারিস নি?”
দেবায়ন জানায় যে ওরা ফ্রাঙ্কফুর্টে পৌঁছানর পরে দেবায়ন ব্যাস্ত হয়ে যায় মিস্টার হেরজোগের সাথে আর মিস্টার মেরকেলের সাথে ওদের কন্সট্রাক্সান কোম্পানির ব্যাপারে। সুপর্ণা ম্যাডাম আর দীপঙ্করদা, জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের আইটি ডিপার্টমেন্ট আর মারকেটিং ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ব্যাস্ত হয়ে যায়। প্রথম কয়েক দিন শ্রেয়া সবার সাথেই ছিল, ইন্দ্রনীলও সাথেই ছিল। দিন দুই যেতে না যেতেই শ্রেয়া আর ইন্দ্রনীলের ব্যাবহার ওর চোখে লাগে। ইন্দ্রনীলের সাথে এই অন্তরঙ্গ ব্যাবহারের ব্যাপারে বেশ কয়েকবার ওকে জিজ্ঞেস করেছে এই ব্যাপারে, কিন্তু শ্রেয়া প্রতিবার সঠিক জবাব এড়িয়ে উত্তরে জানিয়েছিল যেহেতু ইন্দ্রনীল ওদের এই ব্যাবসা আনতে সাহায্য করেছে তাই ওর সাথে ভালো ব্যাবহার করছে। শ্রেয়া খুব চালাক মেয়ে, আর ওর মাথার মধ্যে কোন এক অভিসন্ধি চলছে, কিন্তু কোনদিকে ওর পা চলছে সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারল না। একরাতে দেবায়ন ওকে খেলাতে চেয়েছিল, ডিনারের পরে নিজের রুমে নিয়ে হুইস্কি খেতে দিয়েছিল কিন্তু শ্রেয়া সেই টোপ গেলেনি। খুব সুন্দর ভাবে এড়িয়ে গেছে দেবায়নকে।
সব শুনে অনুপমার বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায়। প্রথমে নিজেকে ধিক্কার জানায় যে রূপকের কথায় ভেসে গিয়ে রূপকের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল, আর দ্বিতীয় ওই জলপাইগুড়ির কথা লুকিয়েছে।
অনুপমার চোখের বেদনা দেবায়ন ঠিক পড়ে ফেলে আর প্রশ্ন করে, “এই বারে ঠিক ঠিক বলত কি হয়েছে তোর?”
অনুপমা মাথা নিচু মুখ ঢেকে কাঁপা গলায় বলে, “আমি আর রূপক একদিন……”
হটাত করে দেবায়নের মাথা ঝনঝন করে ওঠে। অনুপমার মুখ নিজের দিকে তুলে দেখে যে ওর চোখ বন্ধ আর চোখের কোল থেকে একটা সরু জলের দাগ। দেবায়ন বুঝতে পারে যে কুণ্ঠাবোধে অনুপমার বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পাপ পুন্য, ভালোবাসা, প্রতারণা সব কিছু মানুষের মনের বিভিন্ন অভিব্যাক্তি। ওর অনুপমা ওকে ভাল না বাসলে বুক ঠুকে এই কথা বলতে পারত না। যদি লুকিয়ে রাখত তাহলে হয়ত দেবায়ন কোনদিন জানতেও পারত না ওদের মাঝে কি হয়ে গেছে।
অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকে দেবায়ন, তারপরে ওর গালে হাত দিয়ে বলে, “এতদিন চুপ করে ছিলিস কেন?”
অনুপমার গলা শুকিয়ে আসে, দুই চোখে শ্রাবনের বারিধারা, “জানিনা, বলতে সাহস পাচ্ছিলাম না। তোর সামনে করা এক জিনিস আর পেছনে করা অন্য জিনিস।”
দেবায়ন বলে, “সে তো আমিও অন্যের সাথে শুয়ে এসেছি, তাতে এত মাথা ব্যাথা কেন? লুকিয়ে রাখলেই পারতিস। তোকে দেখে অথবা রূপককে দেখে আমি এবারে সন্দেহ করতে পর্যন্ত পারিনি।”
অনুপমা ভাষা হারিয়ে চোখ বন্ধ করে ওর বুকে মাথা গুঁজে অঝোরে কাঁদে, “আমি আর পারছি না। রোজ মনে হত কেউ যেন আমাকে চড় মারছে। আমি তোকে খুব ভালোবাসি, বাকি তোর ওপরে……”
দেবায়ন ওর চোখের জল মুছে ওকে সান্তনা দিয়ে বলে, “শোন পুচ্চিসোনা, আমি তোকে ভালোবাসি আর তুই আমাকে ভালোবাসিস। আমাদের মাঝে সেটা বেঁচে থাকলেই সব থেকে বড়। জানি কিছু কথা বললে মনে হবে এক বিজ্ঞ ব্যাক্তির কথা, কিন্তু এই দেহ, এই রুপ কতদিন ধরে রাখা যায়? কেউ চিরকুমার নয়। যেখানে হৃদয়ের মিল থাকে সেখানে কোনদিন শারীরিক আনন্দ ফলপ্রসু হয় না। আজ আমরা এর সাথে ওর সাথে সেক্স করে, মদ খেয়ে, টাকা উড়িয়ে নেচে বেড়াচ্ছি। কিন্তু একসময়ে এই সব তেতো হয়ে যাবে। আসল প্রেম হচ্ছে একসাথে বুড়ো হওয়া, পরস্পরের সাদা চুলে রঙ মাখিয়ে দেওয়া, নকল দাঁত জলের গ্লাসে রাখা, চশমা খুঁজে দেওয়া, তখন তুই থাকবি আমার পাশে আর আমি তোর পাশে। গতকাল একটু বয়ে গিয়ে রূপকের সাথে কি করেছিস, অথবা আগামী কাল অন্য কারুর সাথে শুয়ে কাটাবি সেই নিয়ে আমার বিশেষ মাথা ব্যাথা নেই। যেদিন বুঝব যে সত্যি তুই আর……”
কথা শেষ করার আগেই দেবায়নের ঠোঁটের ওপরে হাত চেপে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলে অনুপমা, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে নিজেকে উজাড় করে দেয় দেবায়নের বাহুপাশে। সেই রাতে দুই নরনারী প্রেমের সুখের সাগরে অনন্ত কালের জন্য ভেসে যায়। প্রথম মিলনের চেয়েও সেই রাতের মিলন ওদের যেন আরও মধুর মনে হয়। অনুপমার মনে হয় যেন হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা আবার খুঁজে পেয়েছে।
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 03-10-2020, 01:10 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)