02-10-2020, 10:04 PM
পঞ্চবিংশ পর্ব (#01)
এক মে মাস ঘুরে অন্য মে মাস চলে আসে। গত মে মাসে ওদের পরীক্ষা চলছিল আর এই মে মাসে, অনুপমা আবার একা বসে নিজের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে। এবারে জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের ডিল করতে শ্রেয়ার সাথে দেবায়ন গেছে। মিস্টার হেরজোগের সাথে দেখা হয়ে যাবে আর বেশ কিছু ব্যাবসা সংক্রান্ত কথাবার্তা বলে আসবে। আজকাল বেশ ব্যাস্ত দেবায়ন, মাথার ওপরে শুধু মাত্র আইটি কোম্পানি নয়, সেই সাথে দুটো কন্সট্রাক্সান কোম্পানি আর ছয় খানা হোটেল দেখাশোনা করতে হয়। অনুপমা শুধু ছায়ার মতন ওর পেছনে লেগে থাকে, ওর ধমনীর রক্ত, ওর প্রাণ শক্তি। অফিসে থাকলে, মাঝে মাঝেই কেবিনে ঢুকে জিজ্ঞেস করা, “ফল খেয়েছিস?” “জুস টা একটু খেয়ে নে বাবা, প্লিস সোনা মণি।” “সিগারেট এত না খেলেই নয় কি? ধুর দে তোর প্যাকেট আমি এবারে তোর সাথেই সিগারেট খাবো।” “চল আর কাজ করতে হবে না, মামনি ডিনারের জন্য অপেক্ষা করছে।”
যতটা সময় কাছে পায়, এক পলকের জন্য চোখের আড়াল করে না, কাজের চাপে ওর চোখ মুখ, ওর চেহারা দেখে মাঝে মাঝে বড় কষ্ট হয়। চব্বিশ বছর বয়সে, বাবার সাথে থেকে ওই ফিজিক্স পড়া ছেলেটা কত বড় হয়ে গেছে। মোবাইলে ওর ফটোর দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে, আজ তিনদিন হল ফ্রাঙ্কফুর্ট গেছে, এবারে ফোনে বেশি লম্বা কথা বলা যায়নি, শুধু মাত্র, “কেমন আছিস? সাবধানে থাকিস। ঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়া করিস।” এই সব ছাড়া আর কিছু কথা বলা গেল না।
গ্রীষ্মের খাঁ খাঁ দুপুরে, জানালার বাইরে তাকায়। কালো কাঁচের এপার থেকে বাইরের গরম যদিও বোঝা যায় না তবে, বেশ কিছু কাকের আনাগোনা আর দুরে নিচে মানুষের মাথার ছাতা জানিয়ে দেয় যে বাইরে খুব গরম। বুকের ভেতরটা খালি হয়ে যায়। মাঝে মাঝেই ঘুরতে বেড়িয়ে যায়, যদিও কাজেই যায় তাও কেন যায় বলে মনে হয়। অনুপমা কি চেয়েছিল এই জীবন? শুধু চেয়েছিল একটা ভালো বর যে দশটা পাঁচটা অফিস করে ওর কোলে ফিরে আসবে। নিজের একটা ছোটো বাড়ি হবে, দেয়ালে ওদের প্রেমের নাম লেখা থাকবে। পন্ডিতিয়ার বাড়িতে গত তেইশ বছরে ভালোবাসা খুঁজে পায়নি, দেবায়ন আসার পরেই ওই বাড়িতে ভালোবাসা বলে যে একটা মনের ভাব আছে সেটা সবাই যেন জানতে পারে। এতক্ষণ একটা ঘোরের মধ্যে ছিল, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠতেই ঘোর কেটে গেল। অচেনা মোবাইল নাম্বার, কে আবার এখন ফোন করেছে? ধুর ব্যাঙ।
“হ্যালো, আমি কি মিস অনুপমা সেনের সাথে কথা বলছি?”
ওপাশে এক সুরেলা নারীর কণ্ঠ স্বর।
সেই কণ্ঠ স্বর চিনতে পারল না অনুপমা তাই প্রশ্ন করে, “হ্যাঁ, কিন্তু আপনি কে? আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।”
খিল খিল করে হেসে ওঠে ওপাশের কণ্ঠ স্বর, “আমি অনন্যা, মানে অনন্যা বাসু। মনে আছে কি আমাকে?”
চিড়িক করে মাথার বাতি জ্বলে ওঠে, অনন্যা বাসু মানে ছোটো পর্দার নায়িকা অনন্যা বাসু। অনেকদিন দেখা সাক্ষাত নেই, শেষ দেখা হয়েছিল বাবার জি.এম হওয়ার পার্টিতে। ছোটবেলায় মায়ের সাথে ওর ফ্লাটে গেছে কিন্তু বিশেষ মেলামেশা কোনদিন ছিল না।
অনুপমা হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার, অনেকদিন পরে, মনে পড়েছে?”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে উত্তর দেয়, “না রে, তোর বরের ফোন ট্রাই করছিলাম, পেলাম না তারপরে পারমিতা ম্যাডাম কে ফোন করলাম, ম্যাডাম আমাকে তোর নাম্বার দিল।”
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “বাপরে আমার নাম্বার খুঁজতে তাহলে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে।”
অনন্যা বলে, “কেমন আছিস তুই? সেই কলেজ ফাইনাল দেওয়া সময়ে একবার ম্যাডাম তোকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসেছিলেন, তারপরে তুই কোনদিন আমার বাড়িতে এলি না।”
অনুপমা হেসে বলে, “তুমি খুব ব্যাস্ত নায়িকা অনন্যাদি, তোমার কাছে আমাদের মতন চিনেপুটিদের জন্য কি আর সময় থাকে?”
অনন্যা একটু ব্যাথা ভরা স্বরে বলে, “সেই কবেকার কথা, এখন ধরে রেখেছিস?”
অনুপমা তির্যক হেসে বলে, “না না, অনন্যাদি ছাড়ো সে সব কথা।”
অনন্যা বলে, “কি করছিস আজকাল? তোর বর, মিস্টার বসাক, বিশাল বিজনেস ম্যান তাই না?”
অনুপমা মিচকি হেসে উত্তর দেয়, “বড় কি না জানি না, তবে খুব ব্যাস্ত থাকে এই যা।”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে দেয়, “সব ছেলে গুলোই এই রকম হয়। একবার কাজ হাতে পেলে, শুধু টাকা আর টাকা, বউয়ের কথা আর মনে থাকে না ওদের। তুই শুনলাম অফিসে? কিসের অফিস তোর?”
অনুপমা বলে, “এই ছোটো খাট একটা সফটওয়্যার কোম্পানি খুলেছি।”
অনন্যা বলে, “বাপরে নিজের কোম্পানি। তুইতোবিজনেসে ঢুকে গেলি একেবারে। এই তোদের অফিসটা কোথায় রে?”
অনুপমা বলে, “রাসেল স্ট্রীটে, কেন?”
অনন্যা বলে, “তোদের সাথে অনেকদিন দেখা হয়নি তাই ভাবছিলাম একবার দেখা করব।”
অনুপমা অবাক হয়ে যায় দেখা করার কথা শুনে, “কি ব্যাপার অনন্যাদি, হটাত দেখা করতে চাও?”
মনে পড়ে যায় দেবায়নের কথা, গোয়াতে গিয়ে দেবায়ন অনন্যাকে বলেছিল যে ওর রেস্টুরেন্ট খুলতে টাকা দিয়ে সাহায্য করবে। সেই টাকা চাই নাকি অনন্যার? সোজাসুজি প্রশ্ন করে অনুপমা, “তুমি কি দেবায়নের বিষয়ে কথা বলতে চাও? পরিস্কার করে বলতে পারো দ্বিধা বোধ করোনা।”
অনন্যা এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ঠিক আশা করেনি, তাই আমতা আমতা করে বলে, “না মানে। এমনি তোদের সাথে দেখা করতে চাইছিলাম। যাই হোক তুই এখন ব্যাস্ত তাহলে ফোন রাখি। মিস্টার বসাক ফিরলে বলিস যে আমি ফোন করেছিলাম।”
হেসে ফেলে অনুপমা, “বলে ফেল না, কি হয়েছে। আমি আর দেবায়ন আলাদা নয়। ও কোথায় কি কি করেছে সব আমার জানা, আমার দেবায়ন আমার কাছ থেকে আজ পর্যন্ত কিছু লুকায় নি।”
অনন্যার গলা বসে আসে, “তাই মাঝে মাঝে ভয়। আমার ছোঁয়াতে তোদের এই অটুট বন্ধনে যদি কিছু হয়ে যায়। ছাড় তুই খুব ব্যাস্ত নিশ্চয় এখন? মিস্টার বসাক কবে ফিরছে?”
অনুপমা বলে, “দেবায়নের ফিরতে দিন চারেক দেরি আছে। তুমি স্টুডিও থেকে বাড়িতে কখন ফিরবে? তাহলে না হয় একবার দেখা করতাম।”
অনন্যা হেসে বলে বলে, “এইকয় দিন আউটডোর শুটিং করে শরীর খুব ম্যাজ ম্যাজ করছে তাই আজকে আর স্টুডিও যাইনি। বাড়িতে আসতে চাস নাকি?”
অনেকদিন দেখা হয়নি অনন্যার সাথে, এই প্রচন্ড গরমে মনের ভেতর খাঁ খাঁ করছে, একটু বের হলে বড় ভালো হয়। অনুপমা একটু ভেবে বলে, “ঠিক আছে আমি একটু পরে আসছি তোমার বাড়িতে।”
ব্যাগ গুছিয়ে, ড্রাইভারকে বলে সোজা অনন্যার বাড়িতে পৌঁছে যায়। একটা বহুতল ফ্লাট বাড়ির একটা বড় ফ্লাটে একা থাকে। অনেকদিন আগে এসেছে কিন্তু বাড়ি চিনতে ভুল হয় না অনুপমার। কলিং বেল বাজাতেই, অনন্যা নিজেই এসে দরজা খুলে দেয়। বসার ঘরে এসি চলছে, জানালায় পর্দা নামানো, বেশ একটা সুন্দর গন্ধে ঘর মমমম করছে। অনন্যা মনে হয় একটু আগেই স্নান করেছে, এলো চুলে গায়ে একটা ছোটো সিল্কের ড্রেসিং গাউন জড়িয়ে মিষ্টি হেসে অনুপমাকে ঘরের মধ্যে ডাকে। ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখে, দেয়াল জুড়ে অনেক ছবি টাঙ্গানো, সব কটাই অনন্যার। টিভিতে যে সব এড দেখে, সেখানে অনেক মেকআপের কারসাজি থাকে, ছবির কারসাজি থাকে। অনন্যাকে দেখে মনে হল, একটু গোলগাল হয়ে গেছে আর কাজের চাপে চোখের কোলে কালি পরে গেছে। ওর শরীর থেকে মাদকতাময় এক মিষ্টি সুবাস নাকে এসে লাগে।
অনন্যা ওর হাত ধরে সোফায় বসিয়ে বলে, “বাপরে তাহলে মহারানীর এতদিন পরে আমার বাড়িতে আসার সময় হল।”
অনুপমা হেসে বলে, “তুমি মহারানী তাইতো তোমার দেখা পাওয়া ভার।”
অনন্যা বলে, “না রে আমি আর কি হতে পারলাম। কি খাবি? বিয়ার নিবি না ব্রিজার?”
হেসে ফেলে অনুপমা, “না না, আমি কিছু খাবো না। তুমি বসো তো, কাজের লোক নেই নাকি?”
অনন্যা দুটো পেপসি ফ্রিজ থেকে বের করে একটা অনুপমার হাতে ধরিয়ে ওর পাশে এসে বসে। পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, “নারে কাল অনেক রাতে উটি থেকে ফিরেছি তাই আর আজকে কাজের লোক আসেনি। তোকে দেখে পাক্কা কর্পোরেট বিজনেস উম্যান লাগছে। তুই কেমন আছিস বল। মিস্টার বসাক কোথায়?”
অনুপমা হেসে শার্টের ওপরে দুটো বোতাম খুলে ফেলে, এসি চালান অবস্থায়ও যেন একটু গরম লাগছে ওর। অনন্যার প্রশ্নের উত্তরে বলে, “দেবায়ন জার্মানি গেছে।”
এমন সময়ে অনন্যার ফোনে একটা ফোন আসে। অনন্যা ফোন নিয়ে ওকে বসতে বলে ভেতরে চলে যায় কথা বলতে। অনুপমা পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে। বসার ঘর বেশ সাজানো গুছানো এক নায়িকার বাড়ি যেমন সাজানো উচিত ঠিক সেই রকম আড়ম্বর আছে। ঘরে একটা সুরেলা বাদ্য যন্ত্রের সঙ্গীত বেজে চলেছে, মনে হয় পন্ডিত শিব কুমার শর্মার সন্তুর। কেমন যেন স্বপ্ন পুরীর মতন মনে হয় বসার ঘর। বেশ আয়েশ করে বসে সোফার ওপরে।
অনন্যা কিছু পরে ড্রেসিং গাউন ছেড়ে একটা জিন্সের হাফপ্যান্ট আর একটা ঢিলে টপ পরে নিজের বেডরুম থেকে বেড়িয়ে আসে। বড় গলার টপ এতই ঢিলে যে বাঁ কাঁধের নিচে নেমে এসেছে। বুকের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে নিচে ব্রা পড়েনি আর তাই নরম স্তন যুগল দুলে উঠছে অনন্যার হাঁটার ফলে। টপের পাতলা কাপড় ফুঁড়ে ওর স্তনের বোঁটা ফুটে উঠেছে।
অনুপমার পাশে বসে বলে, “তুই কিছু খাবি? পিতজা অর্ডার করব নাকি?”
অনুপমা হেসে বলে, “না না। তুমি বস আমার কাছে।”
এটা সেটা, কাজের কথা, অকাজের কথা, পারমিতার কথা এই সব কথায় সময় কেটে যায়। তারপরে অনন্যা লাজুক হেসে বলে, “জানিস একটা ছোঁড়া আমার প্রেমে পড়েছে, এই তার ফোন এসেছিল।”
অনুপমা চোখ বড়বড় করে প্রশ্ন করে, “কে সে? ফ্লিম লাইনের লোক না কোন বিজনেস ম্যান।”
অনন্যা তির্যক হেসে বলে, “বিজনেস ম্যানেরা সব বড় কুচুটে হয়, বিয়ের পরে ট্রফি ওয়াইফ হিসাবে রাখে। পারলে ক্লায়েন্টের বিছানায় দিতেও দ্বিধা বোধ করবে না। আমার এই বন্ধুটি একজন ফ্যাশান ফটোগ্রাফার। আমার বেশ কয়েকটা মডেলিঙের এসাইনমেন্ট করেছে আর সেই থেকে আলাপ। ছেলেটা মনে হয় বেশ ভালো।”
অনন্যা ওর মোবাইলে একটা ছেলের ছবি দেখিয়ে বলে, “সত্যজিত দত্ত, আমার চেয়ে দুই বছরের ছোটো।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “তাহলে আর দেরি কিসের, বিয়েটা সেরে ফেল আর কি। কত হল আসল বয়স, আঠাশ হবে তাই না?”
অনন্যা ওর থুতনি নাড়িয়ে বলে, “তুই দেখি আমার বয়স মনে রেখেছিস?”
সত্যজিতের ছবির দিকে তাকিয়ে বলে, “না রে, আগে একটু বাজিয়ে দেখি কেমন ছেলে। সবাই তো আর মিস্টার বসাকের মতন হয় না রে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “হুম সবকিছু বুঝলাম। তা হঠাৎ কি ভেবে মনে পড়ল? সত্যি কথা বলো তো?”
অনন্যা মিচকি হেসে বলে, “আঠাশ হয়ে গেছে, একটু মুটিয়ে গেছি, তাই না?”
অনুপমা বলে, “কি যে বল না তুমি? এখন দারুন সুন্দরী তুমি।”
অনন্যা চোখ বড়বড় করে অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমার তো সব ক্যামেরা, মেকআপের কারসাজি, আসল সুন্দরী তো তুই।” এই বলেই জড়িয়ে ধরে গালে একটা চুমু খেয়ে নেয়।
অনুপমা গালে গাল ঠেকিয়ে হেসে বলে শরীর চেপে ধরে আদর করে বলে, “হুম্মম…… কি হয়েছে তোমার? কাজের পরে কি খুব গরম লাগছে? মনে হচ্ছে অনেকদিন সত্যজিৎ কাছে আসে নি।”
অনন্যা ওর গাল টিপে আদর করে বলে, “ধ্যাত, তুই না যাঃতা, তার চেয়ে বল যে তুই গরম হয়ে আছিস। মিস্টার বসাক খুব আদর করছে তোকে সেটা তোর শরীর দেখেই বুঝতে পারছি।”
অনুপমা পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, “আমাকে আদর করার আর সময় পায় কোথায়? সবসময়ে বাইরে থাকে যে।”
অনন্যা চোখ গোল গোল করে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ জানা আছে। তোর বুক জোড়া যেমন ভাবে ফুলেছে তাতে বেশ বোঝা যাচ্ছে যে মিস্টার বসাকের হাত পড়েছে।”
লজ্জায় লাল হয়ে যায় অনুপমার গাল। অনন্যার গালে আলতো টোকা মেরে বলে, “তুমি না ভারী দুষ্টু মেয়ে অনন্যাদি।”
অনন্যাও কম যায় না, “সত্যি বল, খুব ভালোবাসে না তোকে?”
অনুপমা ওর হাত দুটি নিজের হাতের মুঠিতে নিয়ে বলে, “ছাড়ো অনন্যাদি। দেবায়ন তোমাকে কিছু দেবে বলেছিল, তাই না। কি করতে চাও ওই টাকা দিয়ে?”
হঠাৎ অনুপমার মুখে এই কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় অনন্যা। কি বলবে ভেবে পায় না, সত্যি কি মানুষ এত খোলা মনের হয়? ওকে কবে দেবায়নকে বলেছিল সেই কথা আর এই মেয়েটা জানে আর মনে রেখেছে?
অনন্যা অনুপমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি ভাবছিলাম বর্তমানে আমার ক্যারিয়ার এখন একদম তুঙ্গে। তাই এই তুঙ্গে থাকতে থাকতে সব কিছু গুছিয়ে নেওয়া ভালো, পরে হয়তো হাতে সময় থাকবে না। মিস্টার বসাক অনেকদিন আগে একটা আইডিয়া দিয়েছিল ছিল রেস্টুরেন্ট শুরু করার, আমারও বেশ লেগেছিল সেই আইডিয়াটা। কিন্তু সত্যজিতের ইচ্ছে একটা মেয়েদের পত্রিকা শুরু করার। এই ছোটো ছোটো প্রবন্ধ, গল্প, ফ্যাশানের ছবি। ওর এই পাবলিকেশানেও বেশ জানাশুনা আছে।”
অনুপমা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করে, “পত্রিকা শুরু করার জন্য কত টাকা চাই তোমার?”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে বলে, “এই বিষয়ে সত্যজিতের সাথে বিশেষ কথা হয় নি। কিন্তু তুই এত মাথা ঘামাচ্ছিস কেন?”
অনুপমা অনন্যার হাতে চাপ দিয়ে মনোবল জুগিয়ে বলে, “তুমি চিন্তা করোনা অনন্যাদি, আমরা আছি। দেবায়ন ফিরে আসুক ওর সাথে কথা বলব। তুমি একটা এস্টিমেট বলে দিও সেই মতন ব্যাবস্থা করে দেব চিন্তা নেই।”
অনন্যা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে অনুপমাকে, “তুই না খুব ভালো মেয়ে।” বলেই গালে একটা ভিজে চুম্বন এঁকে দেয়।
নারীর চুম্বনে অনভ্যস্ত নয়, পায়েলের সাথে বহুবার সমকামী খেলায় রত হয়েছে তাও কেমন যেন অস্বস্তি লাগে অনুপমার, “যাঃ অনন্যাদি ছাড়ো।”
অনন্যা ওর গালে হাত বুলিয়ে চিবুক নাড়িয়ে বলে, “তুই বড্ড সুন্দরী, সেই কবে ছোটো বেলায় তোকে দেখেছিলাম আর আজকের এই অনুপমা অনেক বেশি মিষ্টি রসালো আর সুন্দরী হয়ে উঠেছে। তোকে না……” অনুপমার মুখ আঁজলা করে ধরে কপালে একটা চুমু খায় অনন্যা।
অনুপমার হাত পা হঠাৎ এই নারী চুম্বনের ছোঁয়ায় যেন অবশ হয়ে আসে। ধীরে ধীরে অনন্যার ঠোঁট নামতে থাকে, ছোটো ছোটো বেশ কয়েকটা চুমু খায় ওর কপালে, ভুরুর ওপরে, শেষ পর্যন্ত ঠোঁটের কাছে এসে থেমে যায় অনন্যার ঠোঁট। অনুপমার হাত আপনা হতেই অনন্যার কোমর জড়িয়ে ধরে। অনন্যার চিকচিক করা দুই চোখের তারার ওর চোখের মণি নিবদ্ধ হয়ে যায়। অনন্যার আধাখোলা ঠোঁটের মাঝের উষ্ণ শ্বাস ওর ঠোঁট, থুতনির ওপরে বয়ে চলে। কেমন যেন একটা নেশার ঘোর লাগে অনুপমার, পানীয়ের সাথে কি কিছু মেশানো ছিল, না অনন্যার ঠোঁটের মাদকতায় নেশা লেগেছে ওর রক্তে। অনন্যার মাথার পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে চুলের মুঠি ধরে, ওর লাল নরম ঠোঁট অনন্যার ফ্যাকাসে গোলাপি ঠোঁটের ওপরে বসিয়ে দেয়। দুই নারীর ঠোঁট মিলেমিশে যায়, আচ্ছাদনের ওপর দিয়েই দুই নারীর উন্নত স্তন জোড়া পরস্পরের সাথে পিষে সমতল হয়ে যায়।
অনুপমাকে ঠেলে সোফার ওপরে শুইয়ে দিয়ে ওপরে উঠে যায় অনন্যা। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে চুমু খেতে খেতে ওর স্তনের ওপরে হাত নিয়ে যায়। জামার ওপর দিয়েই একটা স্তন আলতো করে মুঠির মধ্যে নিয়ে আদর করে দেয়। অনুপমা দুই হাতে অনন্যার কোমর জড়িয়ে ধরে, রক্তে কামনার আগুন জেগে ওঠে, জানুর মাঝে শিরশিরানি শুরু হয়ে যায়। নারীর চুম্বনে এত মাদকতা, অনেকদিন পরে সেই নারীর কোমল অধরের স্বাদ পেল। নিচের ঠোঁট দাঁত দিয়ে টেনে কামড়ে চিবিয়ে দিতে শুরু করে দিল। অনন্যার প্যান্টের ওপর দিয়েই ওর নরম তুলতুলে পাছার মাংস টিপে পিষে দিতে শুরু করে। পাছার ওপরে অনুপমার নরম আঙ্গুলের খামচি অনুভব করতেই অনন্যা, মিহি শীৎকার করে ওঠে, “উম্মম্ম আহহহহহ……” করে। অনন্যা, অনুপমার জামার ওপর দিয়েই ওর নরম তুলতুলে স্তন জোড়া খামচে ধরে চটকাতে শুরু করে।
অনুপমার শরীরে লাগে তীব্র কামনার আগুন। অনন্যার জানু মাঝে থাই গুঁজে দিয়ে চেপে ধরে অনন্যার যোনি দেশ। সাথে সাথে অনন্যা ওর মায়ের মাঝে হাত ঢুকিয়ে জিন্সের ওপর দিয়েই চেপে ধরে যোনি বেদি। একে অপরের যোনির ওপরে মৃদু আক্রমণ চালায়। কুলকুল করে যোনি রস বইতে শুরু করে অনুপমার যোনির ভেতর থেকে। অনন্যার হাতের চাপের ফলে কেঁপে ওঠে অনুপমার সারা শরীর। বেশ কিছু ক্ষণ দুই মত্ত নারী একে অপরের শরীর নিয়ে জামা কাপড়ের ওপর দিয়েই খেলে যায়। দুইজনে কিছুক্ষণ শরীর নিয়ে কামরা কামড়ি চটকা চটকি করে খেলে উঠে বসে। অনন্যার চেহারায় ফুটে ওঠে এক কামুক হাসি আর অনুপমার চেহারা ভেসে যায় কামনার লালিমা।
অনুপমা মিচকি হেসে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি না খুব দুষ্টু, অনন্যাদি।” বলে নিজের ঠোঁট মুছে নেয়। তীব্র চুম্বনের ফলে গালের লালিমা বেড়ে গেছে, চুল খানিকটা অবিন্যস্ত হয়ে গেছে।
অনন্যা একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, “সত্যি বলতে কি জানিস অনু। তোর এই সেক্সি দেহ দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না।” বলেই টুক করে একটা চুমু খেল অনুপমাকে।
অনুপমা গ্লাসের শেষ পানীয় টুকু গলায় ঢেলে বলল, “এবারে আমি আসি।”
অনন্যা ওর দুই হাত ধরে অনুনয় করে বলে, “এই কিছু মনে করিস না প্লিস। আমি না একটু এই রকম।”
অনুপমা ওর গালে হাত চোখ টিপে বলে, “না না কিছু না, বেশ একটু এঞ্জয় করলাম। তোমার না একদিন দেবায়নের সাথে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার কথা আছে? সেদিন আমি আসব তোমাদের সাথে ব্রেকফাস্ট খেতে।”
অনন্যা পারলে মুখ লুকিয়ে ফেলে, “মিস্টার বসাক সেইসব কথা তোকে বলেছে?”
অনুপমা দুষ্টুমি ভরা একটা হাসি দিয়ে বলে, “দেবায়ন আমার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কিছু লুকায় নি। সত্যি বলো তো কয়বার দেবায়নের সাথে সঙ্গম করেছ তুমি?”
ওই কথা শুনে অনন্যার গাল কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, “যা শয়তান মেয়ে। তোকে ভীষণ আদর করে সেটাই অনেক। তোরা ভালো থাকলেই ভালো। মিস্টার বসাক এলে আসিস একদিন। আমি সত্যজিতকে বলে রাখবো তাহলে ওর সাথে দেখা হয়ে যাবে তোদের।”
অনুপমা দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে বলে, “কোন কুমতলব নয়তো? তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে আমি করতে নারাজ কিন্তু।”
অনন্যা প্রচন্ড ভাবে মাথা নাড়ায়, “ওরে বাবা, না রে না একদম না। এই মাঝে মাঝে ক্লায়েন্টদের সাথে যাই, ওকে না জানিয়ে করতে হয় এইসব। তোদের কথা সত্যজিত কিছুই জানে না আর তোদেরকে ওর সামনে ওই ভাবে নিচু হতে দিতে পারি নাকি?”
অনুপমা ওকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি কথাটা বললে না কিন্তু অনন্যাদি। দেবায়নের সাথে কয়বার সঙ্গম করেছিলে? কেমন লাগলো আমার দেবু কে?”
অনন্যা মিচকি হেসে চোখ টিপে বলে, “দুই বার করেছি তোর মিস্টারের সাথে। একবার র্যাডিসন ফোর্টে আর একবার গোয়াতে। খুউউউউউব ভালো রে তোর মিস্টার। মন ভরিয়ে দিয়েছিল।”
অনুপমা ওর গালে আলতো টোকা মেরে বলে, “হ্যাঁ সোনা দিদি, বুঝতেই পারছি যে আমার ছোঁড়াটাকে এবারে বেঁধে রাখতে হবে।”
অনন্যা ওর গালে গাল ঠেকিয়ে বলে, “তোদের দেখে একটা গান গাইতে ইচ্ছে করছে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কি গান?”
অনন্যা গেয়ে ওঠে, “ও চাঁদ, সামলে রেখো জোছনাকে। কারো নজর লাগতে পারে। মেঘেদের উড়ো চিঠি উড়েও তো আসতে পারে ও চাঁদ……. সামলে রাখো জোছনাকে।”
অনুপমা, “বুঝছি মনের মধ্যে অনেক প্রেম জেগেছে তোমার। সত্যজিৎকে ডেকে নাও আর ভালো করে আদর খাও। সোনাদিদি তাহলে আজকে আসছি। তুমি সত্যজিতের সাথে কথাবার্তা বলে ঠিক করে নাও।”
অনন্যা বলে, “হ্যাঁ সে সব দেখেই তোদের ফোন করব। মাঝে মাঝে ফোন করিস, ভালো লাগে।” চোখ টিপে বলে, “ব্রেক ফাস্টের কথা ভুলিস না। তোর মিস্টারকে সেই কবে বলেছিলাম, সে যে গেল আর দেখা দিল না।”
অনুপমা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে বিদায় জানায়। গাড়িতে উঠে আবার অফিসের দিকে রওনা দিচ্ছিল কিন্তু এমন সময়ে মামনির ফোন পেয়ে অবাক হয়ে যায়।
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে মামনি? হটাত এমন সময়ে ফোন করলে।”
দেবশ্রী হেসে ওকে জিজ্ঞেস করে, “রাতে কি খাবি, কাঁকড়া কিনে নিয়ে যাবো?”
অনুপমা বাচ্চা মেয়ের মতন খিলখিল করে হেসে ওঠে, “তুমি না সত্যি পারো বটে।”
দেবশ্রী বলে, “না রে, চোখের সামনে একটা অস্ট্রেলিয়ান কাঁকড়া দেখে তোর কথা মনে পরে গেল। তুই কাঁকড়া খেতে ভালবাসিস তাই।”
অনুপমা বলে, “আচ্ছা বাবা আচ্ছা।”
দেবশ্রী বলে, “তুই একটু তাড়াতাড়ি আসিস কিছু জরুরি কথা আছে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কি ব্যাপার মামনি?”
দেবশ্রীর কণ্ঠস্বর কিঞ্চিত গম্ভীর হয়ে যায়, “তুই আগে বাড়িতে আয়, তারপরে বলব।”
এক মে মাস ঘুরে অন্য মে মাস চলে আসে। গত মে মাসে ওদের পরীক্ষা চলছিল আর এই মে মাসে, অনুপমা আবার একা বসে নিজের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে। এবারে জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের ডিল করতে শ্রেয়ার সাথে দেবায়ন গেছে। মিস্টার হেরজোগের সাথে দেখা হয়ে যাবে আর বেশ কিছু ব্যাবসা সংক্রান্ত কথাবার্তা বলে আসবে। আজকাল বেশ ব্যাস্ত দেবায়ন, মাথার ওপরে শুধু মাত্র আইটি কোম্পানি নয়, সেই সাথে দুটো কন্সট্রাক্সান কোম্পানি আর ছয় খানা হোটেল দেখাশোনা করতে হয়। অনুপমা শুধু ছায়ার মতন ওর পেছনে লেগে থাকে, ওর ধমনীর রক্ত, ওর প্রাণ শক্তি। অফিসে থাকলে, মাঝে মাঝেই কেবিনে ঢুকে জিজ্ঞেস করা, “ফল খেয়েছিস?” “জুস টা একটু খেয়ে নে বাবা, প্লিস সোনা মণি।” “সিগারেট এত না খেলেই নয় কি? ধুর দে তোর প্যাকেট আমি এবারে তোর সাথেই সিগারেট খাবো।” “চল আর কাজ করতে হবে না, মামনি ডিনারের জন্য অপেক্ষা করছে।”
যতটা সময় কাছে পায়, এক পলকের জন্য চোখের আড়াল করে না, কাজের চাপে ওর চোখ মুখ, ওর চেহারা দেখে মাঝে মাঝে বড় কষ্ট হয়। চব্বিশ বছর বয়সে, বাবার সাথে থেকে ওই ফিজিক্স পড়া ছেলেটা কত বড় হয়ে গেছে। মোবাইলে ওর ফটোর দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে, আজ তিনদিন হল ফ্রাঙ্কফুর্ট গেছে, এবারে ফোনে বেশি লম্বা কথা বলা যায়নি, শুধু মাত্র, “কেমন আছিস? সাবধানে থাকিস। ঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়া করিস।” এই সব ছাড়া আর কিছু কথা বলা গেল না।
গ্রীষ্মের খাঁ খাঁ দুপুরে, জানালার বাইরে তাকায়। কালো কাঁচের এপার থেকে বাইরের গরম যদিও বোঝা যায় না তবে, বেশ কিছু কাকের আনাগোনা আর দুরে নিচে মানুষের মাথার ছাতা জানিয়ে দেয় যে বাইরে খুব গরম। বুকের ভেতরটা খালি হয়ে যায়। মাঝে মাঝেই ঘুরতে বেড়িয়ে যায়, যদিও কাজেই যায় তাও কেন যায় বলে মনে হয়। অনুপমা কি চেয়েছিল এই জীবন? শুধু চেয়েছিল একটা ভালো বর যে দশটা পাঁচটা অফিস করে ওর কোলে ফিরে আসবে। নিজের একটা ছোটো বাড়ি হবে, দেয়ালে ওদের প্রেমের নাম লেখা থাকবে। পন্ডিতিয়ার বাড়িতে গত তেইশ বছরে ভালোবাসা খুঁজে পায়নি, দেবায়ন আসার পরেই ওই বাড়িতে ভালোবাসা বলে যে একটা মনের ভাব আছে সেটা সবাই যেন জানতে পারে। এতক্ষণ একটা ঘোরের মধ্যে ছিল, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠতেই ঘোর কেটে গেল। অচেনা মোবাইল নাম্বার, কে আবার এখন ফোন করেছে? ধুর ব্যাঙ।
“হ্যালো, আমি কি মিস অনুপমা সেনের সাথে কথা বলছি?”
ওপাশে এক সুরেলা নারীর কণ্ঠ স্বর।
সেই কণ্ঠ স্বর চিনতে পারল না অনুপমা তাই প্রশ্ন করে, “হ্যাঁ, কিন্তু আপনি কে? আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।”
খিল খিল করে হেসে ওঠে ওপাশের কণ্ঠ স্বর, “আমি অনন্যা, মানে অনন্যা বাসু। মনে আছে কি আমাকে?”
চিড়িক করে মাথার বাতি জ্বলে ওঠে, অনন্যা বাসু মানে ছোটো পর্দার নায়িকা অনন্যা বাসু। অনেকদিন দেখা সাক্ষাত নেই, শেষ দেখা হয়েছিল বাবার জি.এম হওয়ার পার্টিতে। ছোটবেলায় মায়ের সাথে ওর ফ্লাটে গেছে কিন্তু বিশেষ মেলামেশা কোনদিন ছিল না।
অনুপমা হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার, অনেকদিন পরে, মনে পড়েছে?”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে উত্তর দেয়, “না রে, তোর বরের ফোন ট্রাই করছিলাম, পেলাম না তারপরে পারমিতা ম্যাডাম কে ফোন করলাম, ম্যাডাম আমাকে তোর নাম্বার দিল।”
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “বাপরে আমার নাম্বার খুঁজতে তাহলে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে।”
অনন্যা বলে, “কেমন আছিস তুই? সেই কলেজ ফাইনাল দেওয়া সময়ে একবার ম্যাডাম তোকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসেছিলেন, তারপরে তুই কোনদিন আমার বাড়িতে এলি না।”
অনুপমা হেসে বলে, “তুমি খুব ব্যাস্ত নায়িকা অনন্যাদি, তোমার কাছে আমাদের মতন চিনেপুটিদের জন্য কি আর সময় থাকে?”
অনন্যা একটু ব্যাথা ভরা স্বরে বলে, “সেই কবেকার কথা, এখন ধরে রেখেছিস?”
অনুপমা তির্যক হেসে বলে, “না না, অনন্যাদি ছাড়ো সে সব কথা।”
অনন্যা বলে, “কি করছিস আজকাল? তোর বর, মিস্টার বসাক, বিশাল বিজনেস ম্যান তাই না?”
অনুপমা মিচকি হেসে উত্তর দেয়, “বড় কি না জানি না, তবে খুব ব্যাস্ত থাকে এই যা।”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে দেয়, “সব ছেলে গুলোই এই রকম হয়। একবার কাজ হাতে পেলে, শুধু টাকা আর টাকা, বউয়ের কথা আর মনে থাকে না ওদের। তুই শুনলাম অফিসে? কিসের অফিস তোর?”
অনুপমা বলে, “এই ছোটো খাট একটা সফটওয়্যার কোম্পানি খুলেছি।”
অনন্যা বলে, “বাপরে নিজের কোম্পানি। তুইতোবিজনেসে ঢুকে গেলি একেবারে। এই তোদের অফিসটা কোথায় রে?”
অনুপমা বলে, “রাসেল স্ট্রীটে, কেন?”
অনন্যা বলে, “তোদের সাথে অনেকদিন দেখা হয়নি তাই ভাবছিলাম একবার দেখা করব।”
অনুপমা অবাক হয়ে যায় দেখা করার কথা শুনে, “কি ব্যাপার অনন্যাদি, হটাত দেখা করতে চাও?”
মনে পড়ে যায় দেবায়নের কথা, গোয়াতে গিয়ে দেবায়ন অনন্যাকে বলেছিল যে ওর রেস্টুরেন্ট খুলতে টাকা দিয়ে সাহায্য করবে। সেই টাকা চাই নাকি অনন্যার? সোজাসুজি প্রশ্ন করে অনুপমা, “তুমি কি দেবায়নের বিষয়ে কথা বলতে চাও? পরিস্কার করে বলতে পারো দ্বিধা বোধ করোনা।”
অনন্যা এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ঠিক আশা করেনি, তাই আমতা আমতা করে বলে, “না মানে। এমনি তোদের সাথে দেখা করতে চাইছিলাম। যাই হোক তুই এখন ব্যাস্ত তাহলে ফোন রাখি। মিস্টার বসাক ফিরলে বলিস যে আমি ফোন করেছিলাম।”
হেসে ফেলে অনুপমা, “বলে ফেল না, কি হয়েছে। আমি আর দেবায়ন আলাদা নয়। ও কোথায় কি কি করেছে সব আমার জানা, আমার দেবায়ন আমার কাছ থেকে আজ পর্যন্ত কিছু লুকায় নি।”
অনন্যার গলা বসে আসে, “তাই মাঝে মাঝে ভয়। আমার ছোঁয়াতে তোদের এই অটুট বন্ধনে যদি কিছু হয়ে যায়। ছাড় তুই খুব ব্যাস্ত নিশ্চয় এখন? মিস্টার বসাক কবে ফিরছে?”
অনুপমা বলে, “দেবায়নের ফিরতে দিন চারেক দেরি আছে। তুমি স্টুডিও থেকে বাড়িতে কখন ফিরবে? তাহলে না হয় একবার দেখা করতাম।”
অনন্যা হেসে বলে বলে, “এইকয় দিন আউটডোর শুটিং করে শরীর খুব ম্যাজ ম্যাজ করছে তাই আজকে আর স্টুডিও যাইনি। বাড়িতে আসতে চাস নাকি?”
অনেকদিন দেখা হয়নি অনন্যার সাথে, এই প্রচন্ড গরমে মনের ভেতর খাঁ খাঁ করছে, একটু বের হলে বড় ভালো হয়। অনুপমা একটু ভেবে বলে, “ঠিক আছে আমি একটু পরে আসছি তোমার বাড়িতে।”
ব্যাগ গুছিয়ে, ড্রাইভারকে বলে সোজা অনন্যার বাড়িতে পৌঁছে যায়। একটা বহুতল ফ্লাট বাড়ির একটা বড় ফ্লাটে একা থাকে। অনেকদিন আগে এসেছে কিন্তু বাড়ি চিনতে ভুল হয় না অনুপমার। কলিং বেল বাজাতেই, অনন্যা নিজেই এসে দরজা খুলে দেয়। বসার ঘরে এসি চলছে, জানালায় পর্দা নামানো, বেশ একটা সুন্দর গন্ধে ঘর মমমম করছে। অনন্যা মনে হয় একটু আগেই স্নান করেছে, এলো চুলে গায়ে একটা ছোটো সিল্কের ড্রেসিং গাউন জড়িয়ে মিষ্টি হেসে অনুপমাকে ঘরের মধ্যে ডাকে। ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখে, দেয়াল জুড়ে অনেক ছবি টাঙ্গানো, সব কটাই অনন্যার। টিভিতে যে সব এড দেখে, সেখানে অনেক মেকআপের কারসাজি থাকে, ছবির কারসাজি থাকে। অনন্যাকে দেখে মনে হল, একটু গোলগাল হয়ে গেছে আর কাজের চাপে চোখের কোলে কালি পরে গেছে। ওর শরীর থেকে মাদকতাময় এক মিষ্টি সুবাস নাকে এসে লাগে।
অনন্যা ওর হাত ধরে সোফায় বসিয়ে বলে, “বাপরে তাহলে মহারানীর এতদিন পরে আমার বাড়িতে আসার সময় হল।”
অনুপমা হেসে বলে, “তুমি মহারানী তাইতো তোমার দেখা পাওয়া ভার।”
অনন্যা বলে, “না রে আমি আর কি হতে পারলাম। কি খাবি? বিয়ার নিবি না ব্রিজার?”
হেসে ফেলে অনুপমা, “না না, আমি কিছু খাবো না। তুমি বসো তো, কাজের লোক নেই নাকি?”
অনন্যা দুটো পেপসি ফ্রিজ থেকে বের করে একটা অনুপমার হাতে ধরিয়ে ওর পাশে এসে বসে। পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, “নারে কাল অনেক রাতে উটি থেকে ফিরেছি তাই আর আজকে কাজের লোক আসেনি। তোকে দেখে পাক্কা কর্পোরেট বিজনেস উম্যান লাগছে। তুই কেমন আছিস বল। মিস্টার বসাক কোথায়?”
অনুপমা হেসে শার্টের ওপরে দুটো বোতাম খুলে ফেলে, এসি চালান অবস্থায়ও যেন একটু গরম লাগছে ওর। অনন্যার প্রশ্নের উত্তরে বলে, “দেবায়ন জার্মানি গেছে।”
এমন সময়ে অনন্যার ফোনে একটা ফোন আসে। অনন্যা ফোন নিয়ে ওকে বসতে বলে ভেতরে চলে যায় কথা বলতে। অনুপমা পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে। বসার ঘর বেশ সাজানো গুছানো এক নায়িকার বাড়ি যেমন সাজানো উচিত ঠিক সেই রকম আড়ম্বর আছে। ঘরে একটা সুরেলা বাদ্য যন্ত্রের সঙ্গীত বেজে চলেছে, মনে হয় পন্ডিত শিব কুমার শর্মার সন্তুর। কেমন যেন স্বপ্ন পুরীর মতন মনে হয় বসার ঘর। বেশ আয়েশ করে বসে সোফার ওপরে।
অনন্যা কিছু পরে ড্রেসিং গাউন ছেড়ে একটা জিন্সের হাফপ্যান্ট আর একটা ঢিলে টপ পরে নিজের বেডরুম থেকে বেড়িয়ে আসে। বড় গলার টপ এতই ঢিলে যে বাঁ কাঁধের নিচে নেমে এসেছে। বুকের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে নিচে ব্রা পড়েনি আর তাই নরম স্তন যুগল দুলে উঠছে অনন্যার হাঁটার ফলে। টপের পাতলা কাপড় ফুঁড়ে ওর স্তনের বোঁটা ফুটে উঠেছে।
অনুপমার পাশে বসে বলে, “তুই কিছু খাবি? পিতজা অর্ডার করব নাকি?”
অনুপমা হেসে বলে, “না না। তুমি বস আমার কাছে।”
এটা সেটা, কাজের কথা, অকাজের কথা, পারমিতার কথা এই সব কথায় সময় কেটে যায়। তারপরে অনন্যা লাজুক হেসে বলে, “জানিস একটা ছোঁড়া আমার প্রেমে পড়েছে, এই তার ফোন এসেছিল।”
অনুপমা চোখ বড়বড় করে প্রশ্ন করে, “কে সে? ফ্লিম লাইনের লোক না কোন বিজনেস ম্যান।”
অনন্যা তির্যক হেসে বলে, “বিজনেস ম্যানেরা সব বড় কুচুটে হয়, বিয়ের পরে ট্রফি ওয়াইফ হিসাবে রাখে। পারলে ক্লায়েন্টের বিছানায় দিতেও দ্বিধা বোধ করবে না। আমার এই বন্ধুটি একজন ফ্যাশান ফটোগ্রাফার। আমার বেশ কয়েকটা মডেলিঙের এসাইনমেন্ট করেছে আর সেই থেকে আলাপ। ছেলেটা মনে হয় বেশ ভালো।”
অনন্যা ওর মোবাইলে একটা ছেলের ছবি দেখিয়ে বলে, “সত্যজিত দত্ত, আমার চেয়ে দুই বছরের ছোটো।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “তাহলে আর দেরি কিসের, বিয়েটা সেরে ফেল আর কি। কত হল আসল বয়স, আঠাশ হবে তাই না?”
অনন্যা ওর থুতনি নাড়িয়ে বলে, “তুই দেখি আমার বয়স মনে রেখেছিস?”
সত্যজিতের ছবির দিকে তাকিয়ে বলে, “না রে, আগে একটু বাজিয়ে দেখি কেমন ছেলে। সবাই তো আর মিস্টার বসাকের মতন হয় না রে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “হুম সবকিছু বুঝলাম। তা হঠাৎ কি ভেবে মনে পড়ল? সত্যি কথা বলো তো?”
অনন্যা মিচকি হেসে বলে, “আঠাশ হয়ে গেছে, একটু মুটিয়ে গেছি, তাই না?”
অনুপমা বলে, “কি যে বল না তুমি? এখন দারুন সুন্দরী তুমি।”
অনন্যা চোখ বড়বড় করে অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমার তো সব ক্যামেরা, মেকআপের কারসাজি, আসল সুন্দরী তো তুই।” এই বলেই জড়িয়ে ধরে গালে একটা চুমু খেয়ে নেয়।
অনুপমা গালে গাল ঠেকিয়ে হেসে বলে শরীর চেপে ধরে আদর করে বলে, “হুম্মম…… কি হয়েছে তোমার? কাজের পরে কি খুব গরম লাগছে? মনে হচ্ছে অনেকদিন সত্যজিৎ কাছে আসে নি।”
অনন্যা ওর গাল টিপে আদর করে বলে, “ধ্যাত, তুই না যাঃতা, তার চেয়ে বল যে তুই গরম হয়ে আছিস। মিস্টার বসাক খুব আদর করছে তোকে সেটা তোর শরীর দেখেই বুঝতে পারছি।”
অনুপমা পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, “আমাকে আদর করার আর সময় পায় কোথায়? সবসময়ে বাইরে থাকে যে।”
অনন্যা চোখ গোল গোল করে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ জানা আছে। তোর বুক জোড়া যেমন ভাবে ফুলেছে তাতে বেশ বোঝা যাচ্ছে যে মিস্টার বসাকের হাত পড়েছে।”
লজ্জায় লাল হয়ে যায় অনুপমার গাল। অনন্যার গালে আলতো টোকা মেরে বলে, “তুমি না ভারী দুষ্টু মেয়ে অনন্যাদি।”
অনন্যাও কম যায় না, “সত্যি বল, খুব ভালোবাসে না তোকে?”
অনুপমা ওর হাত দুটি নিজের হাতের মুঠিতে নিয়ে বলে, “ছাড়ো অনন্যাদি। দেবায়ন তোমাকে কিছু দেবে বলেছিল, তাই না। কি করতে চাও ওই টাকা দিয়ে?”
হঠাৎ অনুপমার মুখে এই কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় অনন্যা। কি বলবে ভেবে পায় না, সত্যি কি মানুষ এত খোলা মনের হয়? ওকে কবে দেবায়নকে বলেছিল সেই কথা আর এই মেয়েটা জানে আর মনে রেখেছে?
অনন্যা অনুপমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি ভাবছিলাম বর্তমানে আমার ক্যারিয়ার এখন একদম তুঙ্গে। তাই এই তুঙ্গে থাকতে থাকতে সব কিছু গুছিয়ে নেওয়া ভালো, পরে হয়তো হাতে সময় থাকবে না। মিস্টার বসাক অনেকদিন আগে একটা আইডিয়া দিয়েছিল ছিল রেস্টুরেন্ট শুরু করার, আমারও বেশ লেগেছিল সেই আইডিয়াটা। কিন্তু সত্যজিতের ইচ্ছে একটা মেয়েদের পত্রিকা শুরু করার। এই ছোটো ছোটো প্রবন্ধ, গল্প, ফ্যাশানের ছবি। ওর এই পাবলিকেশানেও বেশ জানাশুনা আছে।”
অনুপমা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করে, “পত্রিকা শুরু করার জন্য কত টাকা চাই তোমার?”
অনন্যা খিলখিল করে হেসে বলে, “এই বিষয়ে সত্যজিতের সাথে বিশেষ কথা হয় নি। কিন্তু তুই এত মাথা ঘামাচ্ছিস কেন?”
অনুপমা অনন্যার হাতে চাপ দিয়ে মনোবল জুগিয়ে বলে, “তুমি চিন্তা করোনা অনন্যাদি, আমরা আছি। দেবায়ন ফিরে আসুক ওর সাথে কথা বলব। তুমি একটা এস্টিমেট বলে দিও সেই মতন ব্যাবস্থা করে দেব চিন্তা নেই।”
অনন্যা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে অনুপমাকে, “তুই না খুব ভালো মেয়ে।” বলেই গালে একটা ভিজে চুম্বন এঁকে দেয়।
নারীর চুম্বনে অনভ্যস্ত নয়, পায়েলের সাথে বহুবার সমকামী খেলায় রত হয়েছে তাও কেমন যেন অস্বস্তি লাগে অনুপমার, “যাঃ অনন্যাদি ছাড়ো।”
অনন্যা ওর গালে হাত বুলিয়ে চিবুক নাড়িয়ে বলে, “তুই বড্ড সুন্দরী, সেই কবে ছোটো বেলায় তোকে দেখেছিলাম আর আজকের এই অনুপমা অনেক বেশি মিষ্টি রসালো আর সুন্দরী হয়ে উঠেছে। তোকে না……” অনুপমার মুখ আঁজলা করে ধরে কপালে একটা চুমু খায় অনন্যা।
অনুপমার হাত পা হঠাৎ এই নারী চুম্বনের ছোঁয়ায় যেন অবশ হয়ে আসে। ধীরে ধীরে অনন্যার ঠোঁট নামতে থাকে, ছোটো ছোটো বেশ কয়েকটা চুমু খায় ওর কপালে, ভুরুর ওপরে, শেষ পর্যন্ত ঠোঁটের কাছে এসে থেমে যায় অনন্যার ঠোঁট। অনুপমার হাত আপনা হতেই অনন্যার কোমর জড়িয়ে ধরে। অনন্যার চিকচিক করা দুই চোখের তারার ওর চোখের মণি নিবদ্ধ হয়ে যায়। অনন্যার আধাখোলা ঠোঁটের মাঝের উষ্ণ শ্বাস ওর ঠোঁট, থুতনির ওপরে বয়ে চলে। কেমন যেন একটা নেশার ঘোর লাগে অনুপমার, পানীয়ের সাথে কি কিছু মেশানো ছিল, না অনন্যার ঠোঁটের মাদকতায় নেশা লেগেছে ওর রক্তে। অনন্যার মাথার পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে চুলের মুঠি ধরে, ওর লাল নরম ঠোঁট অনন্যার ফ্যাকাসে গোলাপি ঠোঁটের ওপরে বসিয়ে দেয়। দুই নারীর ঠোঁট মিলেমিশে যায়, আচ্ছাদনের ওপর দিয়েই দুই নারীর উন্নত স্তন জোড়া পরস্পরের সাথে পিষে সমতল হয়ে যায়।
অনুপমাকে ঠেলে সোফার ওপরে শুইয়ে দিয়ে ওপরে উঠে যায় অনন্যা। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে চুমু খেতে খেতে ওর স্তনের ওপরে হাত নিয়ে যায়। জামার ওপর দিয়েই একটা স্তন আলতো করে মুঠির মধ্যে নিয়ে আদর করে দেয়। অনুপমা দুই হাতে অনন্যার কোমর জড়িয়ে ধরে, রক্তে কামনার আগুন জেগে ওঠে, জানুর মাঝে শিরশিরানি শুরু হয়ে যায়। নারীর চুম্বনে এত মাদকতা, অনেকদিন পরে সেই নারীর কোমল অধরের স্বাদ পেল। নিচের ঠোঁট দাঁত দিয়ে টেনে কামড়ে চিবিয়ে দিতে শুরু করে দিল। অনন্যার প্যান্টের ওপর দিয়েই ওর নরম তুলতুলে পাছার মাংস টিপে পিষে দিতে শুরু করে। পাছার ওপরে অনুপমার নরম আঙ্গুলের খামচি অনুভব করতেই অনন্যা, মিহি শীৎকার করে ওঠে, “উম্মম্ম আহহহহহ……” করে। অনন্যা, অনুপমার জামার ওপর দিয়েই ওর নরম তুলতুলে স্তন জোড়া খামচে ধরে চটকাতে শুরু করে।
অনুপমার শরীরে লাগে তীব্র কামনার আগুন। অনন্যার জানু মাঝে থাই গুঁজে দিয়ে চেপে ধরে অনন্যার যোনি দেশ। সাথে সাথে অনন্যা ওর মায়ের মাঝে হাত ঢুকিয়ে জিন্সের ওপর দিয়েই চেপে ধরে যোনি বেদি। একে অপরের যোনির ওপরে মৃদু আক্রমণ চালায়। কুলকুল করে যোনি রস বইতে শুরু করে অনুপমার যোনির ভেতর থেকে। অনন্যার হাতের চাপের ফলে কেঁপে ওঠে অনুপমার সারা শরীর। বেশ কিছু ক্ষণ দুই মত্ত নারী একে অপরের শরীর নিয়ে জামা কাপড়ের ওপর দিয়েই খেলে যায়। দুইজনে কিছুক্ষণ শরীর নিয়ে কামরা কামড়ি চটকা চটকি করে খেলে উঠে বসে। অনন্যার চেহারায় ফুটে ওঠে এক কামুক হাসি আর অনুপমার চেহারা ভেসে যায় কামনার লালিমা।
অনুপমা মিচকি হেসে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি না খুব দুষ্টু, অনন্যাদি।” বলে নিজের ঠোঁট মুছে নেয়। তীব্র চুম্বনের ফলে গালের লালিমা বেড়ে গেছে, চুল খানিকটা অবিন্যস্ত হয়ে গেছে।
অনন্যা একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, “সত্যি বলতে কি জানিস অনু। তোর এই সেক্সি দেহ দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না।” বলেই টুক করে একটা চুমু খেল অনুপমাকে।
অনুপমা গ্লাসের শেষ পানীয় টুকু গলায় ঢেলে বলল, “এবারে আমি আসি।”
অনন্যা ওর দুই হাত ধরে অনুনয় করে বলে, “এই কিছু মনে করিস না প্লিস। আমি না একটু এই রকম।”
অনুপমা ওর গালে হাত চোখ টিপে বলে, “না না কিছু না, বেশ একটু এঞ্জয় করলাম। তোমার না একদিন দেবায়নের সাথে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার কথা আছে? সেদিন আমি আসব তোমাদের সাথে ব্রেকফাস্ট খেতে।”
অনন্যা পারলে মুখ লুকিয়ে ফেলে, “মিস্টার বসাক সেইসব কথা তোকে বলেছে?”
অনুপমা দুষ্টুমি ভরা একটা হাসি দিয়ে বলে, “দেবায়ন আমার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কিছু লুকায় নি। সত্যি বলো তো কয়বার দেবায়নের সাথে সঙ্গম করেছ তুমি?”
ওই কথা শুনে অনন্যার গাল কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, “যা শয়তান মেয়ে। তোকে ভীষণ আদর করে সেটাই অনেক। তোরা ভালো থাকলেই ভালো। মিস্টার বসাক এলে আসিস একদিন। আমি সত্যজিতকে বলে রাখবো তাহলে ওর সাথে দেখা হয়ে যাবে তোদের।”
অনুপমা দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে বলে, “কোন কুমতলব নয়তো? তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে আমি করতে নারাজ কিন্তু।”
অনন্যা প্রচন্ড ভাবে মাথা নাড়ায়, “ওরে বাবা, না রে না একদম না। এই মাঝে মাঝে ক্লায়েন্টদের সাথে যাই, ওকে না জানিয়ে করতে হয় এইসব। তোদের কথা সত্যজিত কিছুই জানে না আর তোদেরকে ওর সামনে ওই ভাবে নিচু হতে দিতে পারি নাকি?”
অনুপমা ওকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি কথাটা বললে না কিন্তু অনন্যাদি। দেবায়নের সাথে কয়বার সঙ্গম করেছিলে? কেমন লাগলো আমার দেবু কে?”
অনন্যা মিচকি হেসে চোখ টিপে বলে, “দুই বার করেছি তোর মিস্টারের সাথে। একবার র্যাডিসন ফোর্টে আর একবার গোয়াতে। খুউউউউউব ভালো রে তোর মিস্টার। মন ভরিয়ে দিয়েছিল।”
অনুপমা ওর গালে আলতো টোকা মেরে বলে, “হ্যাঁ সোনা দিদি, বুঝতেই পারছি যে আমার ছোঁড়াটাকে এবারে বেঁধে রাখতে হবে।”
অনন্যা ওর গালে গাল ঠেকিয়ে বলে, “তোদের দেখে একটা গান গাইতে ইচ্ছে করছে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কি গান?”
অনন্যা গেয়ে ওঠে, “ও চাঁদ, সামলে রেখো জোছনাকে। কারো নজর লাগতে পারে। মেঘেদের উড়ো চিঠি উড়েও তো আসতে পারে ও চাঁদ……. সামলে রাখো জোছনাকে।”
অনুপমা, “বুঝছি মনের মধ্যে অনেক প্রেম জেগেছে তোমার। সত্যজিৎকে ডেকে নাও আর ভালো করে আদর খাও। সোনাদিদি তাহলে আজকে আসছি। তুমি সত্যজিতের সাথে কথাবার্তা বলে ঠিক করে নাও।”
অনন্যা বলে, “হ্যাঁ সে সব দেখেই তোদের ফোন করব। মাঝে মাঝে ফোন করিস, ভালো লাগে।” চোখ টিপে বলে, “ব্রেক ফাস্টের কথা ভুলিস না। তোর মিস্টারকে সেই কবে বলেছিলাম, সে যে গেল আর দেখা দিল না।”
অনুপমা মিচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে বিদায় জানায়। গাড়িতে উঠে আবার অফিসের দিকে রওনা দিচ্ছিল কিন্তু এমন সময়ে মামনির ফোন পেয়ে অবাক হয়ে যায়।
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে মামনি? হটাত এমন সময়ে ফোন করলে।”
দেবশ্রী হেসে ওকে জিজ্ঞেস করে, “রাতে কি খাবি, কাঁকড়া কিনে নিয়ে যাবো?”
অনুপমা বাচ্চা মেয়ের মতন খিলখিল করে হেসে ওঠে, “তুমি না সত্যি পারো বটে।”
দেবশ্রী বলে, “না রে, চোখের সামনে একটা অস্ট্রেলিয়ান কাঁকড়া দেখে তোর কথা মনে পরে গেল। তুই কাঁকড়া খেতে ভালবাসিস তাই।”
অনুপমা বলে, “আচ্ছা বাবা আচ্ছা।”
দেবশ্রী বলে, “তুই একটু তাড়াতাড়ি আসিস কিছু জরুরি কথা আছে।”
অনুপমা প্রশ্ন করে, “কি ব্যাপার মামনি?”
দেবশ্রীর কণ্ঠস্বর কিঞ্চিত গম্ভীর হয়ে যায়, “তুই আগে বাড়িতে আয়, তারপরে বলব।”