02-10-2020, 02:54 PM
চতুর্বিংশ পর্ব (#06)
“ফিলিং এলোন মামওয়েজেল, মিস্টার বসাক কে ছাড়া খুব একা একা লাগছে, তাই না?”
কানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে ইন্দ্রনীল।
অনুপমা নিজেকে সামলে নিয়ে হেসে উত্তর দেয়, “একটু হ্যাঁ, একটু না।”
ইন্দ্রনীলের চোখ অনুপমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে বলে, “তোমাকে মন্দ লাগছে না। ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস।”
অনুপমা মৃদু হেসে বলে, “ধন্যবাদ!”
আশে পাশে তাকিয়ে দেখে অন্যদের।
কথা বলতে বলতে ইন্দ্রনীলের চোখ এসে থেমে যায় ওর গভীর স্তন বিভাজিকার কাছে। পরনের টপ সামনের দিকে বেশ গভীর ভাবে কাটা, যার ফলে স্তন জোড়া মনে হয় যেন উপচে বেড়িয়ে এসেছে। ইন্দ্রনীলের উত্তপ্ত দৃষ্টিতে শরীরের রোমকূপ জেগে ওঠে, কিঞ্চিত উত্যক্ত হয়ে ওঠে কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারে না। ঠিক সেই সময়ে মনীষা আর শান্তনু এসে পড়ে, অনুপমা বেঁচে যায় ওই উত্তপ্ত দৃষ্টি থেকে।
মনীষা, শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “খুব দেরি করিয়ে দিলাম নাকি?”
অনুপমা বলে, “না না, এমন কিছু দেরি হয়নি। রাত যত গভীর হবে, মদের নেশা রক্তে তত মাতন ধরাবে।”
ওর কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে। অনুপমা মনীষার দিকে তাকিয়ে দেখে। মনীষা, একসময়ে দিল্লীতে থেকেছে, ওখানের পার্টিতে গেছে, তাই ওর পোশাকে পার্টির ছোঁয়া। পরনে একটা ছোটো সাদা শার্ট, তাঁর ওপরে একটা ছোটো জ্যাকেট চড়ানো আর একটা হাঁটু পর্যন্ত চাপা স্কার্ট। পায়ে মসৃণ ন্যুড স্টকিংস পড়েছে। মনীষা বেশ সুন্দরী দেখতে। শ্রেয়া আর মনীষাকে দেখে মনে হল যেন ওরা সত্যি ডিস্কোতে এসেছে, ওদের পাশে অনুপমা নিজেকে দেখে একটু ভাবনায় পরে যায়। নিজেকে দেখে মনে হয় যেন, বিকেলে বাজারে কেনাকাটার জন্য বেড়িয়েছে।
অনুপমা ঠোঁটে হাসি টেনে বলে, “চল যাওয়া যাক ভেতরে।”
সপ্তাহের মাঝের দিন তাই বিশেষ ভিড় ছিল না। এদিক ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জোড়ায় জোড়ায় বসে সবাই। ড্যান্স ফ্লোর খালি, বাজনার আওয়াজ বেশ জোরে, সবাই নেশার তালে পা ঠুকছে আর এদিক ওদিকে চেয়ে দেখছে। সবাই যেন অপেক্ষায় আছে, ড্যান্স ফ্লোরে কেউ গেলে ওরা নেমে যাবে। পার্কের ম্যানেজার, মিস্টার সেনের চেনাশোনা তাই ওদের টেবিল পেতে বিশেষ কষ্ট হল না। একটা বড় কোনার টেবিলে ওরা ছয়জনে বসে পড়ল। হুইস্কির সাথে মুরগির ঠ্যাঙ বেশ আয়েশ করে খেতে খেতে এদিক ওদিকে দেখতে লাগলো। শ্রেয়া প্রায় রূপকের কোলের ওপরে বসে পড়েছে, মনীষা আর শান্তনু জড়াজড়ি করে বসে। টেবিলের একপ্রান্তে অনুপমা একা একা ভদকার গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে আর অন্যপাশে ইন্দ্রনীল হুইস্কির গ্লাস হাতে নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে বেড়াচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষণ পরে একদল মেয়ে ঢুকল, সবার পরনের পোশাক দেখে মনে হল, রাতের সঙ্গী খুঁজতে বেড়িয়েছে অথবা ওদের মতন বড়োলোক বাড়ির মেয়ে। সাথের ছেলের সংখ্যা দুই আর মেয়েদের সংখ্যা পাঁচ। ওই দলটা অনুপমাদের টেবিল থেকে বেশ কিছু দুরে বসে পড়ল। শ্রেয়া ভুরু নাচিয়ে অনুপমাকে ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয় যে, এসে গেছে ইন্দ্রনীলের রাতের ভোজ। অনুপমা ভদকার গ্লাসে চুমুক দিয়ে হেসে ফেলে।
শ্রেয়া হুইস্কি শেষ করে রূপকের গলা জড়িয়ে আব্দার করে, “চল না ড্যান্স ফ্লোরে।”
অনুপমা বুঝে গেছে যে শ্রেয়ার রক্তে মাতন লেগে গেছে। রূপক একবার অনুপমার দিকে একবার শান্তনুর দিকে তাকায়। মনীষা, শান্তনুকে টেনে টেবিল থেকে উঠিয়ে ড্যান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়। সেই দেখে, শ্রেয়া আর রূপক ড্যান্স ফ্লোরের দিকে পা বাড়ায়। শ্রেয়া অনুপমাকে হাত নাড়িয়ে নাচতে ডাকলে, অনুপমা মানা করে জানিয়ে দেয় যে ভদকা শেষ হলে যাবে। ওদের দেখাদেখি, বেশ কয়েক জোড়া ছেলে মেয়ে নাচের জায়গায় উঠে বাজনার তালেতালে নাচতে শুরু করে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই, আবহাওয়া গরম হয়ে ওঠে ওদের নাচের তালে।
মনীষার কোমর পেছন থেকে ধরে, শরীরের সাথে শরীর মিলিয়ে শান্তনু নেচে চলেছে আর শ্রেয়া রূপকের সামনে উদ্দাম তরঙ্গে নেচে চলেছে। আশেপাশের ছেলে মেয়েরা থেমে নেই। একদল মেয়েরা এসেছিল, তারা সবাই নাচের জায়গায় নেমে পড়েছে। অধিকাংশ টেবিল খালি হয়ে গেছে। কয়েকটা টেবিলে শুধু মাত্র ছেলেরা বসে, নাচ দেখতে দেখতে মদের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। বাজনার তালেতালে অনুপমার পা নাড়ানো শুরু হয়ে যায়। ওর চোখ নাচের জায়গায়, দেবায়ন থাকলে পাগলের মতন নাচতো।
এমন সময়ে ইন্দ্রনীল গ্লাস হাতে ওর পাশে এসে বসে জিজ্ঞেস করে, “এখানে পা নাচিয়ে কি লাভ? চল ওখানে।”
অনুপমা মিষ্টি হেসে বলে, “ভদকা শেষ করে নিয়ে তারপরে যাচ্ছি।”
ইন্দ্রনীল ওর দিকে একটু সরে এসে বলে, “তোমাকে আজকে সত্যি বেশ দেখাচ্ছে।”
অনুপমা চোখ বড় বড় করে বলে, “হ্যাঁ আর বলতে হবে না। বাকিদের থেকে অন্যরকম লাগছে সেটা বল।”
ইন্দ্রনীল হেসে বলে, “ভিন্ন হওয়া ভালো। সবাই পার্টি পোশাকে আর তুমি এই সাধারন অথচ সুন্দর পোশাকে। সত্যি তুমি ভিন্ন।”
অনুপমা বলে, “হুম…… একা পেয়ে ফ্লার্টিং করছ আমার সাথে?”
ইন্দ্রনীল, “ভারতীয় মেয়েদের সৌন্দর্য আলাদা, বিশেষ করে বাঙ্গালী মেয়েদের। ঘন কালো লম্বা চুল, বড় বড় কালো চোখ……”
অনুপমা হেসে হাত নাড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ অনেক হয়েছে রুপের বর্ণনা। তাই তো মনিকা দেলাকরিক্স কে পটিয়েছ তাই না?”
ইন্দ্রনীল হেসে ফেলে, “আমার গার্ল ফ্রেন্ডের নাম মনে আছে?”
অনুপমা বলে, “মনে কেন থাকবে না, অনেক কিছু মনে আছে।”
ইন্দ্রনীল ফিসফিস করে বলে, “তুমি কাছে ছিলে না তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়েছে। এমনিতে ফ্রাঙ্কফুর্টে বাঙ্গালী কম যাও বা পাই সবাই এঙ্গেজেড। কিন্তু তোমার মতন সুন্দরী সত্যি পাওয়া ভার। মিস্টার বসাক নেই তাই একটু চান্স নিচ্ছি যদি তোমার আপত্তি না থাকে। এমনিতে অফিসে তোমার কাছে আসা দায়।”
অনুপমার চোখে একটু নেশার রঙ লেগে যায়। বুকের ওপরে আলতো চাপড় মেরে বলে, “কে বলেছে সাথে নেই, এইখানে সবসময়ে থাকে আমার দেবু।”
চাপর মারার ফলে ওর স্তন জোড়া দুলে ওঠে আর ইন্দ্রনীলের দৃষ্টি সেই পীনোন্নত স্তন যুগলের দিকে চলে যায়। ফর্সা ত্বকের ওপর থেকে চোখ সরাতে পারে না। দুই স্তন যেন কাপড় ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসবে।
ইন্দ্রনীল স্তনের থেকে চোখ সরিয়ে অনুপমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলে, “তোমাকে দেখতে একদম পারমিতা আন্টির মতন।”
অনুপমা, “উম্মম্ম সবাই তাই বলে।”
ইন্দ্রনীল গলার স্বর নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, “আই মিন খুব সুন্দরী আর লাস্যময়ী।”
অনুপমা মিচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “কাকে মিন করতে চাইছ? আমাকে না……”
ইন্দ্রনীলের কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, “না না না, অন্য কিছু ভেব না। আমি তোমাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম।” হাত বাড়িয়ে প্রশ্ন করে, “আমার সাথে নাচতে যদি অসুবিধে না থাকে।”
অনুপমা বুঝতে পারে যে ইন্দ্রনীল একটু সংগ চাইছে। নাচের জায়গায় সঙ্গ দিতে কোন অসুবিধে নেই তাই ভদকা শেষ করে হাত বাড়িয়ে দেয় ইন্দ্রনীলের দিকে, “চল তাহলে, দেখি ইউরোপিয়ানরা বাঙালিদের সাথে কেমন নাচতে পারে।”
ইন্দ্রনীল হেসে বলে, “জেনে রাখো, এই সব নাচ এই সব পার্টি সব কিন্তু ইউরোপ থেকে এসেছে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “ওকে, দেখা যাক তাহলে কে কাকে নাচাতে পারে।”
ইন্দ্রনীলের সাথে নাচতে শুরু করে অনুপমা। কিছু পরে ইন্দ্রনীল ওর কোমরে দুপাশে দুই হাত রাখে, কিছু না বলে নাচে মেতে থাকে অনুপমা। ইন্দ্রনীলের গায়ের গন্ধের সাথে সুরা নাকে লেগে রক্তে মাতন শুরু করে দেয়, সেই সাথে নাচের উদ্দাম তালে চোখ ভারী হয়ে আসে। নাচের সাথে বেশ বুঝতে পারে যে ইন্দ্রনীলের ছাতি ওর স্তনের ওপরে এসে চেপে গেছে, মাঝে মাঝেই ইন্দ্রনীলের হাত ওর পিঠের ওপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেশায় বুঁদ কিন্তু সেই অজানা ছোঁয়ায় মেতে ওঠে অনুপমা। নাচের তাল ধীরে ধীরে উদ্দাম লয়ে চড়তে শুরু করে, আশেপাশের ছেলে মেয়েদের তাল সেই সাথে তুঙ্গে। এমন সময়ে পাছার ওপরে একটা হাতের চাপ অনুভব করে, ইন্দ্রনীলের হাত কখন কোমর ছাড়িয়ে ওর ভারী নরম পাছার ওপরে চলে আসে সেটা টের পায়নি। ইন্দ্রনীলের গভীর আলঙ্গনে কেঁপে ওঠে অনুপমা, পাছার ওপরে চাপ পড়তেই সোজা হয়ে যায়। এতটা ছাড় কি সত্যি দিতে চায়? মৃদু হেসে ইন্দ্রনীলের হাত পাছার ওপর থেকে সরিয়ে দেয়।
অনুপমা ইন্দ্রনীলের বুকের ওপরে হাত রেখে আলতো ঠেলে দিয়ে বলে, “কোমর থেকে হাত নিচের দিকে নিতে নেই ইন্দ্রনীল।”
ফর্সা চেহারা লাল হয়ে যায় ইন্দ্রনীলের আবার কোমরে হাত রেখে নেচে চলে। উদ্দাম নাচের ফলে বেশ ঘামিয়ে গেছে, শ্বাস ফুলে উঠেছে, সাথে দেবায়ন থাকলে এতক্ষণে সাপের মতন পেঁচিয়ে নাচতো, কিন্তু নেশা থাকা সত্ত্বেও ইন্দ্রনীলের সাথে সেই মনোভাব আনতে পারল না।
মিচকি হেসে ইন্দ্রনীল কে বলল, “হাঁফিয়ে উঠেছি, তুমি নাচতে চাইলে নাচতে পারো। আমি একটু বসব আর একটা ড্রিঙ্কস নেব।”
ইন্দ্রনীল ওকে কাছে টেনে কানে ফিসফিস করে বলল, “বাঙালি তাহলে ইউরোপিয়ানের কাছে হার মেনেছে।”
অনুপমা কপট হেসে হার মেনে যায়, “হ্যাঁ ইন্দ্রনীল, বাঙ্গালী হার মেনেছে ইউরোপিয়ানের কাছে।”
রূপক আর শ্রেয়া ওদের পাশেই নাচছিল, আশে পাশে বেশ কয়েকটা মেয়েও উদ্দাম তালে নেচে চলেছে। একটা মেয়ে ইন্দ্রনীলের দিকে তাকিয়ে মিচকি হাসি দিয়ে আহ্বান জানায় সাথে নাচার জন্য। অনুপমা ওদের দেখে, নাচের জায়গা ছেড়ে নিজেদের টেবিলে এসে বসে পরে। ইন্দ্রনীল এগিয়ে যায় সেই অচেনা মেয়েটার সাথে নাচতে। অনুপমা একটা ভদকা অর্ডার দিয়ে তাকিয়ে দেখে যে ইন্দ্রনীল আর সেই অচেনা মেয়েটা বেশ জড়াজড়ি করে নেচে চলেছে। রূপক ওর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে ইশারা করে, বেশ ভালো জমেছে। কিছু পরে রূপক নাচের জায়গা ছেড়ে চলে আসে আর শ্রেয়া তখন নেচে যায়। শ্রেয়া দুই চোখ বন্ধ করে, মাথা নাড়িয়ে, কোমর নাচিয়ে উদ্দাম তালে নেচে চলে।
রূপক হাফাতে হাফাতে অনুপমার পাশে ধুপ করে বসে বলে, “শ্বাস ফুলে গেল আমার কিন্তু আমার বউকে দ্যাখ।”
অনুপমা হেসে বলে, “নাচতে দে, অনেকদিন পরে এসেছি একটু মজা করবেই।”
রূপক একটা হুইস্কি নিয়ে বসে পরে, “রাতের কি খবর?”
অনুপমা বলে, “তোর কি খবর? কাকিমা এই অবস্থায় শ্রেয়াকে বাড়িতে ঢুকতে দেবে না। আমি ভাবছিলাম যে ইন্দ্রনীলকে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে তোরা সোজা আমার বাড়িতে রাত কাটাবি। কাল সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে আমি ওকে জার্মানির কথা বলব।”
রূপক আর অনুপমা ড্যান্স ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে দেখে যে ইন্দ্রনীল সেই অচেনা মেয়েটাকে ছেড়ে শ্রেয়ার সাথে নাচতে ব্যাস্ত। অনুপমা মিচকি হেসে রূপকের দিকে তাকায়। রূপক হেসে ফেলে ওদের নাচ দেখে। শ্রেয়া দুই হাতে ইন্দ্রনীলের গলা জড়িয়ে আর ইন্দ্রনীলের হাত শ্রেয়ার কোমরে, একবার পিঠের ওপরে ঘুরে বেড়ায়। শ্রেয়ার রক্তে নেশার আগুন, শীত কালেও ঘামিয়ে গেছে। অনুপমা বাঁকা চোখে লক্ষ্য করে যে, ইন্দ্রনীলের হাত শ্রেয়ার পাছার ওপরে বারেবারে ঘুরে বেড়িয়ে আলতো পিষে দিচ্ছে। শ্রেয়ার সেদিকে খেয়াল আছে কি নেই সেটা আর ওর মুখ দেখে বোঝা গেল না। অনুপমা রূপকের দিকে তাকিয়ে দেখে, রূপক মদ গিলতে ব্যাস্ত, শ্রেয়া নেশায় বুঁদ হয়ে কি করছে সেদিকে আর খেয়াল নেই ওর।
বেশ কিছুক্ষণ নাচার পরে মনীষা আর শান্তনু ওদের পাশে এসে বসে পরে। মনীষা জিজ্ঞেস করে, “কাল কি সবার ছুটি মারার ইচ্ছে আছে নাকি?”
কপট রাগ দেখিয়ে হেসে বলে, “সবার সি এল কেটে নেব।”
মনীষা ড্যান্স ফ্লোরে শ্রেয়াকে দেখিয়ে বলে, “রূপক ভাই, তোমার বৌ মনে হয় না আজকে নাচ থামাবে। এর পরে বেলচা করে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে ওকে।”
চারজনেই হাসিতে ফেটে পড়ে।
আরও বেশ কিছুক্ষণ নাচার পরে রূপক শ্রেয়াকে ডেকে নেয়। শ্রেয়া এক প্রকার টলতে শুরু করে, ওর খাওয়ার ইচ্ছে করে না, এক প্রকার রূপকের কাঁধের ওপরে ভর করে থাকে সারাটা সময়। রাতের খাবার সেরে, ইন্দ্রনীলকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। সারাটা রাস্তা শ্রেয়া একপ্রকার রূপকের কাঁধের ওপরে ঢলে পড়েছিল, অনেকদিন পরে ছাড়া পেয়েছিল তাই গলা পর্যন্ত নেশা করেছিল। বাড়ি পৌঁছানোর পড়ে, রূপক এক প্রকার কোলে করে শ্রেয়াকে নিয়ে গেস্ট রুমে ঢুকে পড়ে।
“ফিলিং এলোন মামওয়েজেল, মিস্টার বসাক কে ছাড়া খুব একা একা লাগছে, তাই না?”
কানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে ইন্দ্রনীল।
অনুপমা নিজেকে সামলে নিয়ে হেসে উত্তর দেয়, “একটু হ্যাঁ, একটু না।”
ইন্দ্রনীলের চোখ অনুপমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে বলে, “তোমাকে মন্দ লাগছে না। ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস।”
অনুপমা মৃদু হেসে বলে, “ধন্যবাদ!”
আশে পাশে তাকিয়ে দেখে অন্যদের।
কথা বলতে বলতে ইন্দ্রনীলের চোখ এসে থেমে যায় ওর গভীর স্তন বিভাজিকার কাছে। পরনের টপ সামনের দিকে বেশ গভীর ভাবে কাটা, যার ফলে স্তন জোড়া মনে হয় যেন উপচে বেড়িয়ে এসেছে। ইন্দ্রনীলের উত্তপ্ত দৃষ্টিতে শরীরের রোমকূপ জেগে ওঠে, কিঞ্চিত উত্যক্ত হয়ে ওঠে কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারে না। ঠিক সেই সময়ে মনীষা আর শান্তনু এসে পড়ে, অনুপমা বেঁচে যায় ওই উত্তপ্ত দৃষ্টি থেকে।
মনীষা, শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “খুব দেরি করিয়ে দিলাম নাকি?”
অনুপমা বলে, “না না, এমন কিছু দেরি হয়নি। রাত যত গভীর হবে, মদের নেশা রক্তে তত মাতন ধরাবে।”
ওর কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে। অনুপমা মনীষার দিকে তাকিয়ে দেখে। মনীষা, একসময়ে দিল্লীতে থেকেছে, ওখানের পার্টিতে গেছে, তাই ওর পোশাকে পার্টির ছোঁয়া। পরনে একটা ছোটো সাদা শার্ট, তাঁর ওপরে একটা ছোটো জ্যাকেট চড়ানো আর একটা হাঁটু পর্যন্ত চাপা স্কার্ট। পায়ে মসৃণ ন্যুড স্টকিংস পড়েছে। মনীষা বেশ সুন্দরী দেখতে। শ্রেয়া আর মনীষাকে দেখে মনে হল যেন ওরা সত্যি ডিস্কোতে এসেছে, ওদের পাশে অনুপমা নিজেকে দেখে একটু ভাবনায় পরে যায়। নিজেকে দেখে মনে হয় যেন, বিকেলে বাজারে কেনাকাটার জন্য বেড়িয়েছে।
অনুপমা ঠোঁটে হাসি টেনে বলে, “চল যাওয়া যাক ভেতরে।”
সপ্তাহের মাঝের দিন তাই বিশেষ ভিড় ছিল না। এদিক ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জোড়ায় জোড়ায় বসে সবাই। ড্যান্স ফ্লোর খালি, বাজনার আওয়াজ বেশ জোরে, সবাই নেশার তালে পা ঠুকছে আর এদিক ওদিকে চেয়ে দেখছে। সবাই যেন অপেক্ষায় আছে, ড্যান্স ফ্লোরে কেউ গেলে ওরা নেমে যাবে। পার্কের ম্যানেজার, মিস্টার সেনের চেনাশোনা তাই ওদের টেবিল পেতে বিশেষ কষ্ট হল না। একটা বড় কোনার টেবিলে ওরা ছয়জনে বসে পড়ল। হুইস্কির সাথে মুরগির ঠ্যাঙ বেশ আয়েশ করে খেতে খেতে এদিক ওদিকে দেখতে লাগলো। শ্রেয়া প্রায় রূপকের কোলের ওপরে বসে পড়েছে, মনীষা আর শান্তনু জড়াজড়ি করে বসে। টেবিলের একপ্রান্তে অনুপমা একা একা ভদকার গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে আর অন্যপাশে ইন্দ্রনীল হুইস্কির গ্লাস হাতে নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে বেড়াচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষণ পরে একদল মেয়ে ঢুকল, সবার পরনের পোশাক দেখে মনে হল, রাতের সঙ্গী খুঁজতে বেড়িয়েছে অথবা ওদের মতন বড়োলোক বাড়ির মেয়ে। সাথের ছেলের সংখ্যা দুই আর মেয়েদের সংখ্যা পাঁচ। ওই দলটা অনুপমাদের টেবিল থেকে বেশ কিছু দুরে বসে পড়ল। শ্রেয়া ভুরু নাচিয়ে অনুপমাকে ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয় যে, এসে গেছে ইন্দ্রনীলের রাতের ভোজ। অনুপমা ভদকার গ্লাসে চুমুক দিয়ে হেসে ফেলে।
শ্রেয়া হুইস্কি শেষ করে রূপকের গলা জড়িয়ে আব্দার করে, “চল না ড্যান্স ফ্লোরে।”
অনুপমা বুঝে গেছে যে শ্রেয়ার রক্তে মাতন লেগে গেছে। রূপক একবার অনুপমার দিকে একবার শান্তনুর দিকে তাকায়। মনীষা, শান্তনুকে টেনে টেবিল থেকে উঠিয়ে ড্যান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়। সেই দেখে, শ্রেয়া আর রূপক ড্যান্স ফ্লোরের দিকে পা বাড়ায়। শ্রেয়া অনুপমাকে হাত নাড়িয়ে নাচতে ডাকলে, অনুপমা মানা করে জানিয়ে দেয় যে ভদকা শেষ হলে যাবে। ওদের দেখাদেখি, বেশ কয়েক জোড়া ছেলে মেয়ে নাচের জায়গায় উঠে বাজনার তালেতালে নাচতে শুরু করে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই, আবহাওয়া গরম হয়ে ওঠে ওদের নাচের তালে।
মনীষার কোমর পেছন থেকে ধরে, শরীরের সাথে শরীর মিলিয়ে শান্তনু নেচে চলেছে আর শ্রেয়া রূপকের সামনে উদ্দাম তরঙ্গে নেচে চলেছে। আশেপাশের ছেলে মেয়েরা থেমে নেই। একদল মেয়েরা এসেছিল, তারা সবাই নাচের জায়গায় নেমে পড়েছে। অধিকাংশ টেবিল খালি হয়ে গেছে। কয়েকটা টেবিলে শুধু মাত্র ছেলেরা বসে, নাচ দেখতে দেখতে মদের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। বাজনার তালেতালে অনুপমার পা নাড়ানো শুরু হয়ে যায়। ওর চোখ নাচের জায়গায়, দেবায়ন থাকলে পাগলের মতন নাচতো।
এমন সময়ে ইন্দ্রনীল গ্লাস হাতে ওর পাশে এসে বসে জিজ্ঞেস করে, “এখানে পা নাচিয়ে কি লাভ? চল ওখানে।”
অনুপমা মিষ্টি হেসে বলে, “ভদকা শেষ করে নিয়ে তারপরে যাচ্ছি।”
ইন্দ্রনীল ওর দিকে একটু সরে এসে বলে, “তোমাকে আজকে সত্যি বেশ দেখাচ্ছে।”
অনুপমা চোখ বড় বড় করে বলে, “হ্যাঁ আর বলতে হবে না। বাকিদের থেকে অন্যরকম লাগছে সেটা বল।”
ইন্দ্রনীল হেসে বলে, “ভিন্ন হওয়া ভালো। সবাই পার্টি পোশাকে আর তুমি এই সাধারন অথচ সুন্দর পোশাকে। সত্যি তুমি ভিন্ন।”
অনুপমা বলে, “হুম…… একা পেয়ে ফ্লার্টিং করছ আমার সাথে?”
ইন্দ্রনীল, “ভারতীয় মেয়েদের সৌন্দর্য আলাদা, বিশেষ করে বাঙ্গালী মেয়েদের। ঘন কালো লম্বা চুল, বড় বড় কালো চোখ……”
অনুপমা হেসে হাত নাড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ অনেক হয়েছে রুপের বর্ণনা। তাই তো মনিকা দেলাকরিক্স কে পটিয়েছ তাই না?”
ইন্দ্রনীল হেসে ফেলে, “আমার গার্ল ফ্রেন্ডের নাম মনে আছে?”
অনুপমা বলে, “মনে কেন থাকবে না, অনেক কিছু মনে আছে।”
ইন্দ্রনীল ফিসফিস করে বলে, “তুমি কাছে ছিলে না তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়েছে। এমনিতে ফ্রাঙ্কফুর্টে বাঙ্গালী কম যাও বা পাই সবাই এঙ্গেজেড। কিন্তু তোমার মতন সুন্দরী সত্যি পাওয়া ভার। মিস্টার বসাক নেই তাই একটু চান্স নিচ্ছি যদি তোমার আপত্তি না থাকে। এমনিতে অফিসে তোমার কাছে আসা দায়।”
অনুপমার চোখে একটু নেশার রঙ লেগে যায়। বুকের ওপরে আলতো চাপড় মেরে বলে, “কে বলেছে সাথে নেই, এইখানে সবসময়ে থাকে আমার দেবু।”
চাপর মারার ফলে ওর স্তন জোড়া দুলে ওঠে আর ইন্দ্রনীলের দৃষ্টি সেই পীনোন্নত স্তন যুগলের দিকে চলে যায়। ফর্সা ত্বকের ওপর থেকে চোখ সরাতে পারে না। দুই স্তন যেন কাপড় ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসবে।
ইন্দ্রনীল স্তনের থেকে চোখ সরিয়ে অনুপমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলে, “তোমাকে দেখতে একদম পারমিতা আন্টির মতন।”
অনুপমা, “উম্মম্ম সবাই তাই বলে।”
ইন্দ্রনীল গলার স্বর নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, “আই মিন খুব সুন্দরী আর লাস্যময়ী।”
অনুপমা মিচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “কাকে মিন করতে চাইছ? আমাকে না……”
ইন্দ্রনীলের কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়, “না না না, অন্য কিছু ভেব না। আমি তোমাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম।” হাত বাড়িয়ে প্রশ্ন করে, “আমার সাথে নাচতে যদি অসুবিধে না থাকে।”
অনুপমা বুঝতে পারে যে ইন্দ্রনীল একটু সংগ চাইছে। নাচের জায়গায় সঙ্গ দিতে কোন অসুবিধে নেই তাই ভদকা শেষ করে হাত বাড়িয়ে দেয় ইন্দ্রনীলের দিকে, “চল তাহলে, দেখি ইউরোপিয়ানরা বাঙালিদের সাথে কেমন নাচতে পারে।”
ইন্দ্রনীল হেসে বলে, “জেনে রাখো, এই সব নাচ এই সব পার্টি সব কিন্তু ইউরোপ থেকে এসেছে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “ওকে, দেখা যাক তাহলে কে কাকে নাচাতে পারে।”
ইন্দ্রনীলের সাথে নাচতে শুরু করে অনুপমা। কিছু পরে ইন্দ্রনীল ওর কোমরে দুপাশে দুই হাত রাখে, কিছু না বলে নাচে মেতে থাকে অনুপমা। ইন্দ্রনীলের গায়ের গন্ধের সাথে সুরা নাকে লেগে রক্তে মাতন শুরু করে দেয়, সেই সাথে নাচের উদ্দাম তালে চোখ ভারী হয়ে আসে। নাচের সাথে বেশ বুঝতে পারে যে ইন্দ্রনীলের ছাতি ওর স্তনের ওপরে এসে চেপে গেছে, মাঝে মাঝেই ইন্দ্রনীলের হাত ওর পিঠের ওপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেশায় বুঁদ কিন্তু সেই অজানা ছোঁয়ায় মেতে ওঠে অনুপমা। নাচের তাল ধীরে ধীরে উদ্দাম লয়ে চড়তে শুরু করে, আশেপাশের ছেলে মেয়েদের তাল সেই সাথে তুঙ্গে। এমন সময়ে পাছার ওপরে একটা হাতের চাপ অনুভব করে, ইন্দ্রনীলের হাত কখন কোমর ছাড়িয়ে ওর ভারী নরম পাছার ওপরে চলে আসে সেটা টের পায়নি। ইন্দ্রনীলের গভীর আলঙ্গনে কেঁপে ওঠে অনুপমা, পাছার ওপরে চাপ পড়তেই সোজা হয়ে যায়। এতটা ছাড় কি সত্যি দিতে চায়? মৃদু হেসে ইন্দ্রনীলের হাত পাছার ওপর থেকে সরিয়ে দেয়।
অনুপমা ইন্দ্রনীলের বুকের ওপরে হাত রেখে আলতো ঠেলে দিয়ে বলে, “কোমর থেকে হাত নিচের দিকে নিতে নেই ইন্দ্রনীল।”
ফর্সা চেহারা লাল হয়ে যায় ইন্দ্রনীলের আবার কোমরে হাত রেখে নেচে চলে। উদ্দাম নাচের ফলে বেশ ঘামিয়ে গেছে, শ্বাস ফুলে উঠেছে, সাথে দেবায়ন থাকলে এতক্ষণে সাপের মতন পেঁচিয়ে নাচতো, কিন্তু নেশা থাকা সত্ত্বেও ইন্দ্রনীলের সাথে সেই মনোভাব আনতে পারল না।
মিচকি হেসে ইন্দ্রনীল কে বলল, “হাঁফিয়ে উঠেছি, তুমি নাচতে চাইলে নাচতে পারো। আমি একটু বসব আর একটা ড্রিঙ্কস নেব।”
ইন্দ্রনীল ওকে কাছে টেনে কানে ফিসফিস করে বলল, “বাঙালি তাহলে ইউরোপিয়ানের কাছে হার মেনেছে।”
অনুপমা কপট হেসে হার মেনে যায়, “হ্যাঁ ইন্দ্রনীল, বাঙ্গালী হার মেনেছে ইউরোপিয়ানের কাছে।”
রূপক আর শ্রেয়া ওদের পাশেই নাচছিল, আশে পাশে বেশ কয়েকটা মেয়েও উদ্দাম তালে নেচে চলেছে। একটা মেয়ে ইন্দ্রনীলের দিকে তাকিয়ে মিচকি হাসি দিয়ে আহ্বান জানায় সাথে নাচার জন্য। অনুপমা ওদের দেখে, নাচের জায়গা ছেড়ে নিজেদের টেবিলে এসে বসে পরে। ইন্দ্রনীল এগিয়ে যায় সেই অচেনা মেয়েটার সাথে নাচতে। অনুপমা একটা ভদকা অর্ডার দিয়ে তাকিয়ে দেখে যে ইন্দ্রনীল আর সেই অচেনা মেয়েটা বেশ জড়াজড়ি করে নেচে চলেছে। রূপক ওর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে ইশারা করে, বেশ ভালো জমেছে। কিছু পরে রূপক নাচের জায়গা ছেড়ে চলে আসে আর শ্রেয়া তখন নেচে যায়। শ্রেয়া দুই চোখ বন্ধ করে, মাথা নাড়িয়ে, কোমর নাচিয়ে উদ্দাম তালে নেচে চলে।
রূপক হাফাতে হাফাতে অনুপমার পাশে ধুপ করে বসে বলে, “শ্বাস ফুলে গেল আমার কিন্তু আমার বউকে দ্যাখ।”
অনুপমা হেসে বলে, “নাচতে দে, অনেকদিন পরে এসেছি একটু মজা করবেই।”
রূপক একটা হুইস্কি নিয়ে বসে পরে, “রাতের কি খবর?”
অনুপমা বলে, “তোর কি খবর? কাকিমা এই অবস্থায় শ্রেয়াকে বাড়িতে ঢুকতে দেবে না। আমি ভাবছিলাম যে ইন্দ্রনীলকে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে তোরা সোজা আমার বাড়িতে রাত কাটাবি। কাল সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে আমি ওকে জার্মানির কথা বলব।”
রূপক আর অনুপমা ড্যান্স ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে দেখে যে ইন্দ্রনীল সেই অচেনা মেয়েটাকে ছেড়ে শ্রেয়ার সাথে নাচতে ব্যাস্ত। অনুপমা মিচকি হেসে রূপকের দিকে তাকায়। রূপক হেসে ফেলে ওদের নাচ দেখে। শ্রেয়া দুই হাতে ইন্দ্রনীলের গলা জড়িয়ে আর ইন্দ্রনীলের হাত শ্রেয়ার কোমরে, একবার পিঠের ওপরে ঘুরে বেড়ায়। শ্রেয়ার রক্তে নেশার আগুন, শীত কালেও ঘামিয়ে গেছে। অনুপমা বাঁকা চোখে লক্ষ্য করে যে, ইন্দ্রনীলের হাত শ্রেয়ার পাছার ওপরে বারেবারে ঘুরে বেড়িয়ে আলতো পিষে দিচ্ছে। শ্রেয়ার সেদিকে খেয়াল আছে কি নেই সেটা আর ওর মুখ দেখে বোঝা গেল না। অনুপমা রূপকের দিকে তাকিয়ে দেখে, রূপক মদ গিলতে ব্যাস্ত, শ্রেয়া নেশায় বুঁদ হয়ে কি করছে সেদিকে আর খেয়াল নেই ওর।
বেশ কিছুক্ষণ নাচার পরে মনীষা আর শান্তনু ওদের পাশে এসে বসে পরে। মনীষা জিজ্ঞেস করে, “কাল কি সবার ছুটি মারার ইচ্ছে আছে নাকি?”
কপট রাগ দেখিয়ে হেসে বলে, “সবার সি এল কেটে নেব।”
মনীষা ড্যান্স ফ্লোরে শ্রেয়াকে দেখিয়ে বলে, “রূপক ভাই, তোমার বৌ মনে হয় না আজকে নাচ থামাবে। এর পরে বেলচা করে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে ওকে।”
চারজনেই হাসিতে ফেটে পড়ে।
আরও বেশ কিছুক্ষণ নাচার পরে রূপক শ্রেয়াকে ডেকে নেয়। শ্রেয়া এক প্রকার টলতে শুরু করে, ওর খাওয়ার ইচ্ছে করে না, এক প্রকার রূপকের কাঁধের ওপরে ভর করে থাকে সারাটা সময়। রাতের খাবার সেরে, ইন্দ্রনীলকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। সারাটা রাস্তা শ্রেয়া একপ্রকার রূপকের কাঁধের ওপরে ঢলে পড়েছিল, অনেকদিন পরে ছাড়া পেয়েছিল তাই গলা পর্যন্ত নেশা করেছিল। বাড়ি পৌঁছানোর পড়ে, রূপক এক প্রকার কোলে করে শ্রেয়াকে নিয়ে গেস্ট রুমে ঢুকে পড়ে।