02-10-2020, 02:49 PM
চতুর্বিংশ পর্ব (#05)
সেদিন দেবায়নের কেবিনে বসে ছিল অনুপমা। দেবায়নের ফিরতে এখন তিন সপ্তাহ দেরি। টেবিলে ওর আর মামনির একটা ফটো, মুসৌরি বেড়াতে গিয়ে তোলা। ইন্দ্রনীল এর মাঝে অনুপমার সাথে আলাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সফল হয়নি। বিজনেস ছাড়া অন্য কোন কথাবার্তা বলতে গেলেই সুকৌশলে এড়িয়ে যেত। মাঝে মাঝে ওর পোশাকের, ওর সৌন্দর্যের তারিফ করতো। শুরু দিকে মাঝে মাঝে চকোলেট উপহার দিয়েছিল কেবিনে এসে, অনুপমা মিচকি হেসে সেই গুলো নিয়েছিল এবং বলে দিয়েছিল যে চকোলেট ওর পছন্দের জিনিস নয়। ইন্দ্রনীল ওর পছন্দের কথা জিজ্ঞেস করাতে উত্তরে বলেছিল ওর পছন্দের মানুষ দেবায়ন ওর খেয়াল ঠিক মতন রাখে। তারপরে আর ইন্দ্রনীল ওর পাশে বিশেষ আসতে সাহস করেনি। ইদানিং অনুপমা লক্ষ্য করেছে যে ইন্দ্রনীল শ্রেয়ার পেছনে ঘুরঘুর করছে, কিন্তু অনুপমা শ্রেয়াকে সাবধান করে দেয় সেই ব্যাপারে। শ্রেয়া হাসি মুখে জানিয়ে দেয় যে চামড়া বাঁচিয়ে জলে নামতে জানে।
ল্যাপটপ খুলে কাজে মন দিল, গত কোয়ার্টারের ব্যালেন্স সিট খুলে বসে পড়ল। ওয়েবসাইটের কাজে প্রচুর প্রতিদ্বন্দ্বী, তাই ছোটো ছোটো সফটওয়ারের কাজ নিতে হয়েছে। ব্যাঙ্গের ছাতার মতন ঘরে ঘরে, গলির আনাচে কানাচে আইটি কোম্পানি শুরু হয়েছে। যে কেউ একটা ল্যাপটপ আর কয়েকটা কম্পিউটার নিয়ে বসে পড়ছে কাজে। রূপকের ওপরে কাজের ভার অনেক বেশি, ছোটো ছোটো ওয়েবসাইটের কাজ গুলো ওই দেখে। গত কোয়ার্টারে দুটো বড় প্রোজেক্ট এসেছে, সুপর্ণা ম্যাডামের ওপরে সেই দুটো প্রোজেক্টের দায়িত্ব।
ইতিমধ্যে দেবায়নের সাথে মিস্টার হেরজোগের বেশ কয়েক বার কথা হয়ে গেছে। মিস্টার হেরজোগকে কি খাইয়েছে দেবায়ন? ওর সামনে পেছন ঘুরে ঝুঁকে যায়নি ত? মনে মনে হেসে ফেলে অনুপমা। যদিও মিস্টার হেরজোগ, অনিমেশ আঙ্কেলের কাছের লোক, কিন্তু দেবায়নের কথা শুনে মনে হল, ওকে বেশ সমীহ করে মিস্টার হেরজোগ। কারন অনুপমার অজানা নয়, কন্সট্রাকশন বিজনেসের বেশ বড় লাভের অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেবায়ন, এবং সেই মতন কয়েক শো কোটি টাকা ওদের কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন।
এয়ার বারলিন আর জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের প্রোজেক্ট পেলে কোম্পানি এক বছরে দাঁড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। শ্রেয়া, প্রোজেক্ট প্লানিং আর ডিজাইনিংয়ে ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে এয়ার বার্লিনের আইটি’র ভেতরের এক লোকের সাথে কথাবার্তা করিয়ে দিয়েছে ইন্দ্রনীল। সেই কথা মতন ওদের প্রোডাক্ট তৈরির কাজ শ্রেয়া নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। অনেকদিন পরে নিজের মনের মতন কাজ পেয়ে শ্রেয়া বেশ খুশি। অন্যদিকে, জার্মানি বেড়াতে পারবে সেই খুশিতে উড়ে বেড়াচ্ছে।
“কি করছিস?”
কাঁচের দরজা খুলে রূপক কেবনে ঢুকল।
অনুপমা, ল্যাপটপ স্ক্রিন থেকে মাথা উঠিয়ে রূপকের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “এই কিছু না, লাস্ট কোয়ার্টারের ব্যালেন্স সিট দেখছিলাম।”
উৎসুক রূপক জিজ্ঞেস করে, “কি বলছে ব্যালেন্স সিট?”
অনুপমা মৃদু হেসে বলে, “শুরু দুটো কোয়ার্টারের চেয়ে গত কোয়ার্টারের আয় বেশি হয়েছে। বিশেষ করে তোর কাঁধে কাজের ভার বেড়ে গেছে।”
রূপক কলার উঁচু করে হেসে বলে, “তাহলে আমার মাইনে বাড়িয়ে দে।”
অনুপমা হেসে বলে, “কোম্পানি তোর, যা ইচ্ছে করে তেমন মাইনে নিয়ে নে। বল তো এখুনি মনীষাকে ডেকে লেটার বানিয়ে দেই?”
রূপক হাত নাড়িয়ে বলে, “তুই আর বদলাবি না!”
গলার স্বর নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে, ইন্দ্রনীল……”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “ইন্দ্রনীল, কি করেছে?”
রূপক বলে, “না না, তেমন কিছু করেনি। তবে কথাবার্তায় মনে হল জার্মানিতে বেশ ভালো চেনা জানা।”
অনুপমা হেসে উত্তর দেয়, “ওরে পাগল। এই যে এয়ার বার্লিনের আর জারমেনিয়ার কথা হচ্ছে না, দুটোই মিস্টার হেরজোগের জন্য এসেছে। মিস্টার হেরজোগ, অনিমেশ আঙ্কেলের জানাশুনা ব্যাক্তি আর দেবায়নকে ভালো ভাবে চেনে।”
কথাটা বলে মনে হল ফেঁসে গেছে। ওদের অন্য ব্যাবসার কথা সবার অজানা।
রূপক ঠিক বুঝতে পারল না যে দেবায়ন, মিস্টার হেরজোগকে কি ভাবে জানে। ভুরু নাচিয়ে অনুপমাকে প্রশ্ন করে কি ভাবে দেবায়ন, মিস্টার হেরজোগকে চেনে। অনুপমা কথা ঘুরিয়ে বলে, “না মানে বাবার একটা পার্টিতে দেবায়নের সাথে মিস্টার হেরজোগের দেখা হয়েছিল আর সেই থেকেই আলাপ। তা তুই কি কিছু বলতে এসেছিস?”
রূপক খানিক ক্ষণ মাথা চুলকে বলল, “মানে আমি জার্মানি যেতে পারব না রে।”
অনুপমার চোখে প্রশ্ন বোধক চিহ্ন ফুটে ওঠে। রূপক উত্তরে বলে, “শ্রেয়া নেচে বেড়াচ্ছে জার্মানি যাবে, কিন্তু এদিকে এই মাসে তিনটে কাজের ডেলিভারি আছে, দুটো প্রোজেক্টের ডিপ্লয়মেন্ট আছে। এই সব ছেড়ে সাত দিনের জন্য বাইরে গেলে আমার কাজ মাঠে মারা যাবে।”
অনুপমা, “তাহলে কে যাবে?”
রূপক, “তুই ম্যাডাম কে পাঠা। এমনিতে এই প্রোজেক্ট আমার হাতে আসবে না তাই ম্যাডামের যাওয়াটা বাঞ্ছনীয়।”
অনুপমা মুখ শুকনো করে বলে, “ম্যাডাম তো যাবেই, আমি ভেবেছিলাম তোরা দুইজনে একটু হানিমুন করে আসবি। শ্রেয়াকে জানিয়েছিস তুই যে যেতে পারবি না?”
রূপক মুখ কাঁচুমাচু করে বলে, “না কিছু বলিনি। তুই আমার রক্ষাকত্রী, মা জগদ্ধাত্রী। শ্রেয়া আমাকে ছিঁড়ে খাবে একটা উপায় বল।”
অনুপমা একটু ভেবে বলল, “আমাকে অনেক দিন ধরে বায়না করে রেখেছে যে জার্মানি যাবে।”
রূপক বলে, “হ্যাঁ জানি। সেই জন্য গরম কাপড় কেনাকাটা হয়ে গেছে, ব্যাগ প্রায় প্যাক করে ফেলেছে।”
অনুপমা হেসে ফেলে শ্রেয়ার অবস্থা শুনে। অনুপমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, “দ্যাখ ভাই, এতদিন শুধু গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিল। এই প্রথম বার, খুব খাটছে, প্রডাক্টের সব কাজ নিজের হাতে নিয়েছে। এই সময়ে যদি ওকে বলি যে তুই যাচ্ছিস না, তাহলে ওর মনের কি অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছিস?”
রূপক ম্লান হেসে বলে, “তুই বলে দে কি করবো?”
অনুপমা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে হেসে বলে, “আমি বিশেষ কিছু জানিনা, তবে দেবুর সাথে থেকে এইটুকু জেনেছি যে জীবনের ছোটো ছোটো খুশি গুলোই বেশি আনন্দ দেয়। প্রোজেক্ট কয়েক দিন দেরি হলে কি খুব অসুবিধে হয়ে যাবে?”
রূপক মোবাইলে কয়েকটা ই-মেল দেখিয়ে বলে, “দুটো প্রোজেক্টের ডেড লাইন গতকাল পার হয়ে গেছে। এই মাসের শেষের মধ্যে যদি ডেলিভারী না দিতে পারি তাহলে মার্কেটে নাম খারাপ হয়ে যাবে।”
কোম্পানি যতটা অনুপমার, ততটা রূপকের। রূপকের এই ভাব দেখে অনুপমার বেশ ভালো লাগে। অনুপমা ওকে বলে, “তুই এক কাজ কর। আজকে শ্রেয়া কে নিয়ে ডিস্কো যা, বেশ আনন্দ কর, তারপরে কাল সকালে আমি ওর সাথে কথা বলব।”
রূপক বলে, “কি বলবি?”
অনুপমা একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলে, “না, এর থেকে ভালো, চল আমরা সবাই মিলে ডিস্কো যাই। সারা রাত মজা করি, তারপরে শ্রেয়াকে একবার বলে দেখব যে যদি একা যায়।”
রূপক হাঁফ ছাড়ে, “একা গেলে কোন চিন্তা নেই। যতই হোক দীপঙ্করদা, সুপর্ণা ম্যাডাম থাকবে সাথে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “কেন ইন্দ্রনীলের ওপরে বিশ্বাস নেই বুঝি?”
রূপক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে, “এক ফোঁটা নেই। প্রথম দিন থেকেই তোর দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল। ওর কাছে কি আর আমার বৌ ছাড়ি? যাই হোক, তাহলে সন্ধ্যের পরে কোথায় যাওয়া হচ্ছে।”
অনুপমা ফোন করে শ্রেয়াকে, কিন্তু শ্রেয়া কেবিনে নেই। নিজের কেবিন থেকে বেড়িয়ে এদিক ওদিকে দেখার পরে দেখে যে শ্রেয়া, ইন্দ্রনীলের ডেস্কে, ওর সাথে কোন বিষয়ে বেশ হাত নাড়িয়ে মাথা নাড়িয়ে কথা বলছে। ওর হাত মাথা নাড়ানো দেখে হেসে ফেলে, অনুপমা। রূপককে ডেকে দেখিয়ে বলে যে ওর বৌ এবারে হাত ছাড়া হয়ে গেল। ওদের দেখে শ্রেয়া হাসে আর রূপক ওকে অনুপমার কেবিনে আসতে বলে।
কেবিনে ঢুকে শ্রেয়াকে অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি রে এত কি মাথা নাড়িয়ে গল্প করছিলিস?”
শ্রেয়া হেসে বলে, “ধুর বাবা, ওর সাথে কি আর কথা বলব। এই প্রোডাক্ট নিয়েই কথা বলছিলাম।”
অনুপমা ওকে জিজ্ঞেস করে, “পাবে যাবি?”
শ্রেয়া হাজার প্রশ্ন নিয়ে রূপকের দিকে তাকায়, রূপক অনুপমার দিকে দেখিয়ে বলে, “বুঝতেই পারছো, বর নেই অনেকদিন, তাই অনুর মন একটু খালি খালি লাগছে।”
শ্রেয়া অনুপমার গাল টিপে হেসে বলে, “ওগো বিরহিণী হরিণী। বেশ তো, আমাদের পুরাতন পার্ক হোটেলে যাওয়া যাক।”
অনুপমা, “ভাবছি শান্তনু আর মনীষাকে ডেকে নেব।”
শ্রেয়া, “হ্যাঁ হ্যাঁ ভালো হয়। সবাই কাজ করে করে একদম ম্যাদা মেরে গেছি। একটু গা হাত পা নাচালে বেশ ভালো লাগবে।”
রূপক মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করে, “একবার ইন্দ্রনীল কে বলে দেখলে কেমন হয়।”
দুই ললনা রক্ত চক্ষু করে রূপকের দিকে তাকায়। রূপক আমতা আমতা করে বলে, “না মানে ছেলেটা এত বড় একটা ডিল করিয়ে দিচ্ছে। আমাকে বলছিল যে অফিসের পরে বাড়িতে গিয়ে বেশ বোর হয়। একটু আনন্দ খুঁজতে চাইছিল।”
গলার স্বর নামিয়ে মিচকি হেসে বলে, “খবরের কাগজের কলম থেকে বেশ কয়েকটা এস্কর্ট এজেন্সিকে নাকি ফোন লাগিয়েছিল।”
অনুপমা আর শ্রেয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। শ্রেয়া জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি বললে ওকে?”
রূপক হেসে ফেলে, “আমি আর কি বলব। শালা হাতে পাইনি একটাও, খবরের কাগজে সবাই ভুয়ো মাল। একবার নাকি কে ওকে যাদবপুরের একটা জায়গায় ডেকেছিল, সেখানে গিয়ে মাল পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে কোন এক এজেন্টকে আর সেই এজেন্ট ফোন বন্ধ করে টাকা নিয়ে উধাউ।”
দুই ললনা হাসিতে ফেটে পরে। শ্রেয়া হাসতে হাসতে বলে, “বুঝতে পারছি, মাল টনটন করছে ভেতরে শুধু ঠিক মতন জায়গা চাই ঢালার। যাই হোক, পার্কে প্রচুর পাওয়া যাবে, মডেল অথবা এয়ারহস্টেস একটা জোগাড় হয়ে যেতে পারে ওর জন্যে। ওকে ছেড়ে দিয়ে দেখা যাবে কি মাছ তুলতে পারে ওর বঁড়শিতে।”
অনুপমা আর শ্রেয়া দুইজনে হেসে ফেলে ইন্দ্রনীলের অবস্থা ভেবে। মনীষা আর শান্তনুও ডিস্কো যেতে ইচ্ছুক, কোলকাতা আসার পরে রাতের কোলকাতা, বড়লোকের কোলকাতা ঘুরে দেখা হয়নি মনীষার। রূপক, ইন্দ্রনীলকে ডিস্কো যাওয়ার কথা বলে এবং সেই সাথে জানায় যে ওখানে গেলে ওর মনের মতন রমণীর খোঁজ পেতে পারে। ইন্দ্রনীল বেশ উৎসুক হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যে অনুপমা, মামনিকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে রাতে বাড়িতে খাবে না। দেবশ্রী প্রশ্ন করাতে উত্তরে বলে যে একটু বেড়াতে যেতে চায়।
বিকেলে অফিসের পরে শ্রেয়াকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে আসে। ওর আলমারিতে ডিস্কোর উপযুক্ত পোশাক আশাকে ভর্তি। পায়েল ওদের দেখে মৃদু হেসে বলে, যে ওর ডিস্কো-থেকে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। দুই বান্ধবী পোশাক বদলে রাতের দিকে পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
অনুপমার পরনে একটা হাঁটু পর্যন্ত চাপা সাদা জিন্স আর লাল রঙের ছোটো টপ। শ্রেয়া একটা গাড় নীল রঙের ছোটো হাত কাটা ইভিনিং পার্টি ড্রেস পরে। দুই পায়ে, কালো স্টকিংস, হাই হিল, ঠোঁটে লাল রঙ। শ্রেয়া যেন সেই রাতের অপ্সরা। জিজ্ঞেস করাতে বলে, যে রূপকের সাথে অনেকদিন সহবাস করা হয়নি। আজকে মাতাল হয়ে রূপককে টেনে নেবে নিজের বুকে। ওর কথা শুনে হেসে ফেলে অনুপমা। দেবায়ন থাকলে না হয় একটু বেশি সাজতো, যেহেতু শয়তানটা কাছে নেই সেহেতু জিন্স আর টপ পরেই বেড়িয়ে গেল।
রাত ন’টা নাগাদ, শ্রেয়া আর অনুপমা, পার্ক হোটেলে পৌঁছে যায়। রূপক, ইন্দ্রনীলকে সাথে নিয়ে কফি শপে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল। শ্রেয়াকে দেখে, আশেপাশের বেশ কয়েক জনের চোখ ঘুরে যায়। পরনের পোশাক, পাছার একটু নিচে এসে শেষ হয়ে গেছে, চলনের ফলে, দুই নরম পাছা দোলা খাচ্ছে আর পেছন থেকে এঁটে বসা পাছার ওপরে প্যান্টির দাগ স্পষ্ট হয়ে গেছে। শ্রেয়াকে দেখে রূপকের রক্ত চনমন করে ওঠে। শ্রেয়া ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে একটা গভীর চুম্বন এঁকে দেয়। সেই গভীর চুম্বন দেখে অনুপমার ধমনীর রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে, কিঞ্চিত উত্তেজনায় গাল লাল হয়ে যায়।
সেদিন দেবায়নের কেবিনে বসে ছিল অনুপমা। দেবায়নের ফিরতে এখন তিন সপ্তাহ দেরি। টেবিলে ওর আর মামনির একটা ফটো, মুসৌরি বেড়াতে গিয়ে তোলা। ইন্দ্রনীল এর মাঝে অনুপমার সাথে আলাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সফল হয়নি। বিজনেস ছাড়া অন্য কোন কথাবার্তা বলতে গেলেই সুকৌশলে এড়িয়ে যেত। মাঝে মাঝে ওর পোশাকের, ওর সৌন্দর্যের তারিফ করতো। শুরু দিকে মাঝে মাঝে চকোলেট উপহার দিয়েছিল কেবিনে এসে, অনুপমা মিচকি হেসে সেই গুলো নিয়েছিল এবং বলে দিয়েছিল যে চকোলেট ওর পছন্দের জিনিস নয়। ইন্দ্রনীল ওর পছন্দের কথা জিজ্ঞেস করাতে উত্তরে বলেছিল ওর পছন্দের মানুষ দেবায়ন ওর খেয়াল ঠিক মতন রাখে। তারপরে আর ইন্দ্রনীল ওর পাশে বিশেষ আসতে সাহস করেনি। ইদানিং অনুপমা লক্ষ্য করেছে যে ইন্দ্রনীল শ্রেয়ার পেছনে ঘুরঘুর করছে, কিন্তু অনুপমা শ্রেয়াকে সাবধান করে দেয় সেই ব্যাপারে। শ্রেয়া হাসি মুখে জানিয়ে দেয় যে চামড়া বাঁচিয়ে জলে নামতে জানে।
ল্যাপটপ খুলে কাজে মন দিল, গত কোয়ার্টারের ব্যালেন্স সিট খুলে বসে পড়ল। ওয়েবসাইটের কাজে প্রচুর প্রতিদ্বন্দ্বী, তাই ছোটো ছোটো সফটওয়ারের কাজ নিতে হয়েছে। ব্যাঙ্গের ছাতার মতন ঘরে ঘরে, গলির আনাচে কানাচে আইটি কোম্পানি শুরু হয়েছে। যে কেউ একটা ল্যাপটপ আর কয়েকটা কম্পিউটার নিয়ে বসে পড়ছে কাজে। রূপকের ওপরে কাজের ভার অনেক বেশি, ছোটো ছোটো ওয়েবসাইটের কাজ গুলো ওই দেখে। গত কোয়ার্টারে দুটো বড় প্রোজেক্ট এসেছে, সুপর্ণা ম্যাডামের ওপরে সেই দুটো প্রোজেক্টের দায়িত্ব।
ইতিমধ্যে দেবায়নের সাথে মিস্টার হেরজোগের বেশ কয়েক বার কথা হয়ে গেছে। মিস্টার হেরজোগকে কি খাইয়েছে দেবায়ন? ওর সামনে পেছন ঘুরে ঝুঁকে যায়নি ত? মনে মনে হেসে ফেলে অনুপমা। যদিও মিস্টার হেরজোগ, অনিমেশ আঙ্কেলের কাছের লোক, কিন্তু দেবায়নের কথা শুনে মনে হল, ওকে বেশ সমীহ করে মিস্টার হেরজোগ। কারন অনুপমার অজানা নয়, কন্সট্রাকশন বিজনেসের বেশ বড় লাভের অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেবায়ন, এবং সেই মতন কয়েক শো কোটি টাকা ওদের কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন।
এয়ার বারলিন আর জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের প্রোজেক্ট পেলে কোম্পানি এক বছরে দাঁড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। শ্রেয়া, প্রোজেক্ট প্লানিং আর ডিজাইনিংয়ে ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে এয়ার বার্লিনের আইটি’র ভেতরের এক লোকের সাথে কথাবার্তা করিয়ে দিয়েছে ইন্দ্রনীল। সেই কথা মতন ওদের প্রোডাক্ট তৈরির কাজ শ্রেয়া নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। অনেকদিন পরে নিজের মনের মতন কাজ পেয়ে শ্রেয়া বেশ খুশি। অন্যদিকে, জার্মানি বেড়াতে পারবে সেই খুশিতে উড়ে বেড়াচ্ছে।
“কি করছিস?”
কাঁচের দরজা খুলে রূপক কেবনে ঢুকল।
অনুপমা, ল্যাপটপ স্ক্রিন থেকে মাথা উঠিয়ে রূপকের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “এই কিছু না, লাস্ট কোয়ার্টারের ব্যালেন্স সিট দেখছিলাম।”
উৎসুক রূপক জিজ্ঞেস করে, “কি বলছে ব্যালেন্স সিট?”
অনুপমা মৃদু হেসে বলে, “শুরু দুটো কোয়ার্টারের চেয়ে গত কোয়ার্টারের আয় বেশি হয়েছে। বিশেষ করে তোর কাঁধে কাজের ভার বেড়ে গেছে।”
রূপক কলার উঁচু করে হেসে বলে, “তাহলে আমার মাইনে বাড়িয়ে দে।”
অনুপমা হেসে বলে, “কোম্পানি তোর, যা ইচ্ছে করে তেমন মাইনে নিয়ে নে। বল তো এখুনি মনীষাকে ডেকে লেটার বানিয়ে দেই?”
রূপক হাত নাড়িয়ে বলে, “তুই আর বদলাবি না!”
গলার স্বর নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে, ইন্দ্রনীল……”
অনুপমা ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “ইন্দ্রনীল, কি করেছে?”
রূপক বলে, “না না, তেমন কিছু করেনি। তবে কথাবার্তায় মনে হল জার্মানিতে বেশ ভালো চেনা জানা।”
অনুপমা হেসে উত্তর দেয়, “ওরে পাগল। এই যে এয়ার বার্লিনের আর জারমেনিয়ার কথা হচ্ছে না, দুটোই মিস্টার হেরজোগের জন্য এসেছে। মিস্টার হেরজোগ, অনিমেশ আঙ্কেলের জানাশুনা ব্যাক্তি আর দেবায়নকে ভালো ভাবে চেনে।”
কথাটা বলে মনে হল ফেঁসে গেছে। ওদের অন্য ব্যাবসার কথা সবার অজানা।
রূপক ঠিক বুঝতে পারল না যে দেবায়ন, মিস্টার হেরজোগকে কি ভাবে জানে। ভুরু নাচিয়ে অনুপমাকে প্রশ্ন করে কি ভাবে দেবায়ন, মিস্টার হেরজোগকে চেনে। অনুপমা কথা ঘুরিয়ে বলে, “না মানে বাবার একটা পার্টিতে দেবায়নের সাথে মিস্টার হেরজোগের দেখা হয়েছিল আর সেই থেকেই আলাপ। তা তুই কি কিছু বলতে এসেছিস?”
রূপক খানিক ক্ষণ মাথা চুলকে বলল, “মানে আমি জার্মানি যেতে পারব না রে।”
অনুপমার চোখে প্রশ্ন বোধক চিহ্ন ফুটে ওঠে। রূপক উত্তরে বলে, “শ্রেয়া নেচে বেড়াচ্ছে জার্মানি যাবে, কিন্তু এদিকে এই মাসে তিনটে কাজের ডেলিভারি আছে, দুটো প্রোজেক্টের ডিপ্লয়মেন্ট আছে। এই সব ছেড়ে সাত দিনের জন্য বাইরে গেলে আমার কাজ মাঠে মারা যাবে।”
অনুপমা, “তাহলে কে যাবে?”
রূপক, “তুই ম্যাডাম কে পাঠা। এমনিতে এই প্রোজেক্ট আমার হাতে আসবে না তাই ম্যাডামের যাওয়াটা বাঞ্ছনীয়।”
অনুপমা মুখ শুকনো করে বলে, “ম্যাডাম তো যাবেই, আমি ভেবেছিলাম তোরা দুইজনে একটু হানিমুন করে আসবি। শ্রেয়াকে জানিয়েছিস তুই যে যেতে পারবি না?”
রূপক মুখ কাঁচুমাচু করে বলে, “না কিছু বলিনি। তুই আমার রক্ষাকত্রী, মা জগদ্ধাত্রী। শ্রেয়া আমাকে ছিঁড়ে খাবে একটা উপায় বল।”
অনুপমা একটু ভেবে বলল, “আমাকে অনেক দিন ধরে বায়না করে রেখেছে যে জার্মানি যাবে।”
রূপক বলে, “হ্যাঁ জানি। সেই জন্য গরম কাপড় কেনাকাটা হয়ে গেছে, ব্যাগ প্রায় প্যাক করে ফেলেছে।”
অনুপমা হেসে ফেলে শ্রেয়ার অবস্থা শুনে। অনুপমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, “দ্যাখ ভাই, এতদিন শুধু গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিল। এই প্রথম বার, খুব খাটছে, প্রডাক্টের সব কাজ নিজের হাতে নিয়েছে। এই সময়ে যদি ওকে বলি যে তুই যাচ্ছিস না, তাহলে ওর মনের কি অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছিস?”
রূপক ম্লান হেসে বলে, “তুই বলে দে কি করবো?”
অনুপমা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে হেসে বলে, “আমি বিশেষ কিছু জানিনা, তবে দেবুর সাথে থেকে এইটুকু জেনেছি যে জীবনের ছোটো ছোটো খুশি গুলোই বেশি আনন্দ দেয়। প্রোজেক্ট কয়েক দিন দেরি হলে কি খুব অসুবিধে হয়ে যাবে?”
রূপক মোবাইলে কয়েকটা ই-মেল দেখিয়ে বলে, “দুটো প্রোজেক্টের ডেড লাইন গতকাল পার হয়ে গেছে। এই মাসের শেষের মধ্যে যদি ডেলিভারী না দিতে পারি তাহলে মার্কেটে নাম খারাপ হয়ে যাবে।”
কোম্পানি যতটা অনুপমার, ততটা রূপকের। রূপকের এই ভাব দেখে অনুপমার বেশ ভালো লাগে। অনুপমা ওকে বলে, “তুই এক কাজ কর। আজকে শ্রেয়া কে নিয়ে ডিস্কো যা, বেশ আনন্দ কর, তারপরে কাল সকালে আমি ওর সাথে কথা বলব।”
রূপক বলে, “কি বলবি?”
অনুপমা একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলে, “না, এর থেকে ভালো, চল আমরা সবাই মিলে ডিস্কো যাই। সারা রাত মজা করি, তারপরে শ্রেয়াকে একবার বলে দেখব যে যদি একা যায়।”
রূপক হাঁফ ছাড়ে, “একা গেলে কোন চিন্তা নেই। যতই হোক দীপঙ্করদা, সুপর্ণা ম্যাডাম থাকবে সাথে।”
অনুপমা মিচকি হেসে বলে, “কেন ইন্দ্রনীলের ওপরে বিশ্বাস নেই বুঝি?”
রূপক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে, “এক ফোঁটা নেই। প্রথম দিন থেকেই তোর দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল। ওর কাছে কি আর আমার বৌ ছাড়ি? যাই হোক, তাহলে সন্ধ্যের পরে কোথায় যাওয়া হচ্ছে।”
অনুপমা ফোন করে শ্রেয়াকে, কিন্তু শ্রেয়া কেবিনে নেই। নিজের কেবিন থেকে বেড়িয়ে এদিক ওদিকে দেখার পরে দেখে যে শ্রেয়া, ইন্দ্রনীলের ডেস্কে, ওর সাথে কোন বিষয়ে বেশ হাত নাড়িয়ে মাথা নাড়িয়ে কথা বলছে। ওর হাত মাথা নাড়ানো দেখে হেসে ফেলে, অনুপমা। রূপককে ডেকে দেখিয়ে বলে যে ওর বৌ এবারে হাত ছাড়া হয়ে গেল। ওদের দেখে শ্রেয়া হাসে আর রূপক ওকে অনুপমার কেবিনে আসতে বলে।
কেবিনে ঢুকে শ্রেয়াকে অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি রে এত কি মাথা নাড়িয়ে গল্প করছিলিস?”
শ্রেয়া হেসে বলে, “ধুর বাবা, ওর সাথে কি আর কথা বলব। এই প্রোডাক্ট নিয়েই কথা বলছিলাম।”
অনুপমা ওকে জিজ্ঞেস করে, “পাবে যাবি?”
শ্রেয়া হাজার প্রশ্ন নিয়ে রূপকের দিকে তাকায়, রূপক অনুপমার দিকে দেখিয়ে বলে, “বুঝতেই পারছো, বর নেই অনেকদিন, তাই অনুর মন একটু খালি খালি লাগছে।”
শ্রেয়া অনুপমার গাল টিপে হেসে বলে, “ওগো বিরহিণী হরিণী। বেশ তো, আমাদের পুরাতন পার্ক হোটেলে যাওয়া যাক।”
অনুপমা, “ভাবছি শান্তনু আর মনীষাকে ডেকে নেব।”
শ্রেয়া, “হ্যাঁ হ্যাঁ ভালো হয়। সবাই কাজ করে করে একদম ম্যাদা মেরে গেছি। একটু গা হাত পা নাচালে বেশ ভালো লাগবে।”
রূপক মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করে, “একবার ইন্দ্রনীল কে বলে দেখলে কেমন হয়।”
দুই ললনা রক্ত চক্ষু করে রূপকের দিকে তাকায়। রূপক আমতা আমতা করে বলে, “না মানে ছেলেটা এত বড় একটা ডিল করিয়ে দিচ্ছে। আমাকে বলছিল যে অফিসের পরে বাড়িতে গিয়ে বেশ বোর হয়। একটু আনন্দ খুঁজতে চাইছিল।”
গলার স্বর নামিয়ে মিচকি হেসে বলে, “খবরের কাগজের কলম থেকে বেশ কয়েকটা এস্কর্ট এজেন্সিকে নাকি ফোন লাগিয়েছিল।”
অনুপমা আর শ্রেয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। শ্রেয়া জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি বললে ওকে?”
রূপক হেসে ফেলে, “আমি আর কি বলব। শালা হাতে পাইনি একটাও, খবরের কাগজে সবাই ভুয়ো মাল। একবার নাকি কে ওকে যাদবপুরের একটা জায়গায় ডেকেছিল, সেখানে গিয়ে মাল পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে কোন এক এজেন্টকে আর সেই এজেন্ট ফোন বন্ধ করে টাকা নিয়ে উধাউ।”
দুই ললনা হাসিতে ফেটে পরে। শ্রেয়া হাসতে হাসতে বলে, “বুঝতে পারছি, মাল টনটন করছে ভেতরে শুধু ঠিক মতন জায়গা চাই ঢালার। যাই হোক, পার্কে প্রচুর পাওয়া যাবে, মডেল অথবা এয়ারহস্টেস একটা জোগাড় হয়ে যেতে পারে ওর জন্যে। ওকে ছেড়ে দিয়ে দেখা যাবে কি মাছ তুলতে পারে ওর বঁড়শিতে।”
অনুপমা আর শ্রেয়া দুইজনে হেসে ফেলে ইন্দ্রনীলের অবস্থা ভেবে। মনীষা আর শান্তনুও ডিস্কো যেতে ইচ্ছুক, কোলকাতা আসার পরে রাতের কোলকাতা, বড়লোকের কোলকাতা ঘুরে দেখা হয়নি মনীষার। রূপক, ইন্দ্রনীলকে ডিস্কো যাওয়ার কথা বলে এবং সেই সাথে জানায় যে ওখানে গেলে ওর মনের মতন রমণীর খোঁজ পেতে পারে। ইন্দ্রনীল বেশ উৎসুক হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যে অনুপমা, মামনিকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে রাতে বাড়িতে খাবে না। দেবশ্রী প্রশ্ন করাতে উত্তরে বলে যে একটু বেড়াতে যেতে চায়।
বিকেলে অফিসের পরে শ্রেয়াকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে আসে। ওর আলমারিতে ডিস্কোর উপযুক্ত পোশাক আশাকে ভর্তি। পায়েল ওদের দেখে মৃদু হেসে বলে, যে ওর ডিস্কো-থেকে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। দুই বান্ধবী পোশাক বদলে রাতের দিকে পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
অনুপমার পরনে একটা হাঁটু পর্যন্ত চাপা সাদা জিন্স আর লাল রঙের ছোটো টপ। শ্রেয়া একটা গাড় নীল রঙের ছোটো হাত কাটা ইভিনিং পার্টি ড্রেস পরে। দুই পায়ে, কালো স্টকিংস, হাই হিল, ঠোঁটে লাল রঙ। শ্রেয়া যেন সেই রাতের অপ্সরা। জিজ্ঞেস করাতে বলে, যে রূপকের সাথে অনেকদিন সহবাস করা হয়নি। আজকে মাতাল হয়ে রূপককে টেনে নেবে নিজের বুকে। ওর কথা শুনে হেসে ফেলে অনুপমা। দেবায়ন থাকলে না হয় একটু বেশি সাজতো, যেহেতু শয়তানটা কাছে নেই সেহেতু জিন্স আর টপ পরেই বেড়িয়ে গেল।
রাত ন’টা নাগাদ, শ্রেয়া আর অনুপমা, পার্ক হোটেলে পৌঁছে যায়। রূপক, ইন্দ্রনীলকে সাথে নিয়ে কফি শপে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল। শ্রেয়াকে দেখে, আশেপাশের বেশ কয়েক জনের চোখ ঘুরে যায়। পরনের পোশাক, পাছার একটু নিচে এসে শেষ হয়ে গেছে, চলনের ফলে, দুই নরম পাছা দোলা খাচ্ছে আর পেছন থেকে এঁটে বসা পাছার ওপরে প্যান্টির দাগ স্পষ্ট হয়ে গেছে। শ্রেয়াকে দেখে রূপকের রক্ত চনমন করে ওঠে। শ্রেয়া ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে একটা গভীর চুম্বন এঁকে দেয়। সেই গভীর চুম্বন দেখে অনুপমার ধমনীর রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে, কিঞ্চিত উত্তেজনায় গাল লাল হয়ে যায়।