Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপ কাম ভালবাসা
চতুর্বিংশ পর্ব (#02)

পায়েল রোজ দিন জেগেই থাকে, অনুপমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করে। ছয় মাস পরে ওর কলেজের ফাইনাল পরীক্ষা। পায়েল আগের থেকে অনেক ভালো হয়ে গেছে। আজকাল একটু একটু করে সবার সাথে কথা বলার, সবার প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করে। অফিস ফেরত শ্রেয়া আর রূপক মাঝে মাঝেই দেখা করে যায়, ওরা এলে ওদের সাথে বেশ গল্প করে। কলেজ শেষে অনেক বন্ধু বান্ধবী এই বিশাল পৃথিবীতে হারিয়ে গেছে। শর্বরী, বরনিতা আরও অনেকের কোন খবর নেই। ঋতুপর্ণা আর তনিমার সাথে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়। সঙ্গীতা মাঝে মাঝে বাড়িতে আসে পায়েলের সাথে দেখা করার জন্য। মনিষ, মৃগাঙ্ক, আলোক, বিভুতি, রজত এরা সবাই হারিয়ে গেছে। ধিমান আর পরাশরের সাথে মাঝে মাঝে কথা হয় বা দেখা হয়। জারিনাকে অনেকদিন দেখেনি। সব মিলিয়ে সবাই নিজের নিজের কর্ম জীবনে ব্যাস্ত।
অঙ্কন পায়েলকে নিবিড় করে জড়িয়ে ধরে বসে, পায়েল অঙ্কনের কাঁধে মাথা রেখে ওদের কলেজের পুরানো ছবি দেখছে। পায়েলের ঠোঁটে হাসি আর ভাইয়ের সাথে মেলামেশা দেখে অনুপমার বেশ ভালো লাগে। চুপিচুপি ঘরে ঢুকে ল্যাপটপের ব্যাগ বিছানার ওপরে রাখে আর গলা খাঁকড়ানি দিয়ে অস্তিতের জানান দেয়। ওর পায়ের আওয়াজ শুনে একটু থতমত খেয়ে যায় অঙ্কন আর পায়েল। সঙ্গেসঙ্গে পরস্পরকে ছেড়ে দেয় আর অঙ্কন চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। দিদিকে দেখে একটু লাজুক মুখে হেসে ফেলে। অনুপমা, পায়েলের পাশে চেয়ার টেনে বসে।
অনুপমা, অঙ্কনকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে উঠে গেলি কেন? বেশ তো বসেছিলি। তোদের দেখে বেশ ভালো লাগছিলো।”
পায়েলের গাল লাল হয়ে যায় লজ্জায়, এর আগে এতো লজ্জা হয়তো পেতো না।
অঙ্কন মাথা নাড়িয়ে আমতা আমতা করে উত্তর দেয়, “না মানে তুমি এসে গেছ। এবারে আমি যাই।”
পায়েলের মাথার ওপরে ঝুঁকে মাথায় একটা ছোটো চুমু খেয়ে বেড়িয়ে যায় অঙ্কন।
অনুপমা, পায়েলকে দুষ্টু হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি রে এক সাথে থাকার ইচ্ছে করছে?”
লজ্জায় কান লাল হয়ে যায় পায়েলের, কথা ঘুরিয়ে অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “তোর অফিস কেমন গেল?”
অনুপমা বলে, “রোজ দিন এক কথা জিজ্ঞেস করিস। অন্য কিছু কথা বলতে ইচ্ছে করে না?”
পায়েল ম্লান চোখে অনুপমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আর কি জিজ্ঞেস করব বল?”
আগে দেখা হলে কত কথা থাকত দুইজনের মাঝে। সিনেমার কথা, হিরো হিরোইনের কথা, রেস্টুরেন্টে খাওয়ার কথা, ডিস্কো থেকে যাওয়ার কথা, কোন ছেলেকে দেখে ভালো লেগেছে সেই কথা, কেনাকাটা করতে গিয়ে কোন পোশাক ভালো লেগেছে সেই নিয়ে কথা। এখন পায়েল আর সেই সব নিয়ে কথা বলে না। অনুপমা অথবা পারমিতা যে পোশাক সকালে ওর জন্য বের করে দেয়, সেটা পরে কলেজে যায়। প্রসাধনি কি জিনিস সেটা ভুলে গেছে পায়েল। অনুপমার জন্য বাড়িতেই বিউটিশিয়ান আসে, বেশির ভাগ দিন কোন এক অছিলায় পায়েল কিছুতেই প্রসাধনি করতে বসে না। যদি ছুটির দিন হয় আর অঙ্কন বাড়িতে থাকে, তাহলে একমাত্র ওর কথা শুনে প্রসাধনি করতে বসে। পুজোতে একদিনের জন্য অঙ্কনের সাথে বেড়িয়েছিল। বাকি দিনগুলো বাড়িতেই বসে ছিল।
অনুপমা বলে, “তোর কলেজের কথা।”
পায়েল ম্লান হেসে বলে, “তুই পাশে থাকিস না, তাই ওই ভিড়ে বড় একা লাগে।”
কথাটা বড় বুকে বাজে অনুপমার। পায়েলের মাথা বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে বলে, “এই উইক এন্ডে আমি আর তুই কোথাও একটা ঘুরতে যাবো।”
পায়েল অনুপমার কোমর জড়িয়ে ওর গায়ের উত্তাপ সারা গায়ে মাখিয়ে নেয়। এই বান্ধবীর কাছে ওর প্রতিটি শ্বাস ঋণী। পায়েল মৃদু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “আমি একটু বাড়ি থেকে বের হতে চাই।”
অনুপমা অবাক হয়ে হেসে বলে, “হ্যাঁ, নিশ্চয় বের হবি, কে মানা করেছে তোকে? ভাইকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাস? মা’কে আমি বলে ম্যানেজ করে নেব।”
পায়েল লাজুক হেসে বলে, “সামনে ওর জয়েন্ট পরীক্ষা, ওর এখন বেড়ান ঠিক হবে না।”
অনুপমা পায়েলের থুতনি নাড়িয়ে বলে চোখ বড় বড় করে বলে, “বাপ রে, এখন থেকেই এতো চিন্তা! যাক ভালো লাগছে তোর মুখে হাসি দেখে।”
পায়েল করুন চোখে অনুপমার দিকে তাকিয়ে বলে, “তুই আমাকে নিয়ে যাবি?”
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কোথায় যেতে চাস বল, কালকেই আমরা দু’জনে যাবো।”
পায়েল বলে, “আমি একবার বাড়িতে যেতে চাই।”
অনুপমা পায়েলের চোখের দিকে তাকায়, “বাড়িতে মানে?”
পায়েল মৃদু মাথা নাড়ায়, “হ্যাঁ।”
অনুপমা বুঝতে পারে, গত এক বছরে পায়েল নিজের বাড়িতে পা রাখেনি। অনুপমা বলে, “ঠিক আছে কাল বিকেলে অফিস থেকে এসে আমি আর তুই যাবো।”
পায়েল বলে, “আরো একটা অনুরোধ আছে আমার। আমি চাকরি করতে চাই।”
অনুপমা বলে, “চাকরির কথা কেন আসছে? তোর যা চাই আমাকে বল আমি এনে দেব। তোকে কারুর কাছে চাকরি করতে হবে না।”
পায়েল বলে, “না মানে, একটু বাড়ি থেকে বের হতে চাই। অনেক দিন থেকে তোকে জ্বালিয়ে খেলাম আর নয়। এখন আমি ভালো হয়ে গেছি, অঙ্কন ঠিক আছে। আমাকে এবারে বাড়ি ফিরতে দে।”
অনুপমা প্রচন্ড বিস্মিত হয়ে যায় পায়েলের কথা শুনে, “তুই কি বলছিস? এই বাড়ি তোর নয়? এই বাড়িতে আমার যত অধিকার তোর আর অঙ্কনের সমান অধিকার। তাহলে কেন বাড়ি ছেড়ে যাবার কথা বলছিস তুই?”
পায়েল বলে, “না মানে এমনি। তুই যে স্বপ্নের কথা বলছিস সেটা অনেক দুরের। অঙ্কন আই.আই.টি কিম্বা জয়েন্ট পরীক্ষা দেবে। চার বছর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। তারপরে চাকরি করবে। আমাদের ভবিষ্যতের একটা সুস্থ সুরাহা হতে অনেক দেরি। এতদিন তোর বাড়িতে বসে থাকতে খারাপ লাগছে। মানে লোকে কিছু বলতে পারে।”
অনুপমা ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে হাতের মধ্যে হাত নিয়ে বলে, “লোকে আসেনি তোকে বাঁচাতে তাই লোকের কথা ছেড়ে দে। কে কি বলেছে সত্যি বল। মা কিম্বা বাবা তোকে কিছু বলেছে?”
পায়েল জোরে জোরে মাথা নাড়ায়, “না না না, কাকু কাকিমা আমাকে কিছু বলেনি। আমি কাকিমাকে বিকেলে এই কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু কাকিমা আমাকে যেতে দিতে নারাজ। আমি ভাবলাম তোকে বলে একটু বুঝিয়ে উঠতে পারবো।”
অনুপমা ম্লান হেসে বলে, “তোর মনে কি যে চলে ঠিক নেই। বাড়িতে থেকে থেকে তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাই এই সব উলটো পাল্টা ভাবছিস তুই। ওই বাড়িতে আমি তোকে যেতে দিতে পারি না। এটা আমার শেষ কথা।”
পায়েল হেসে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা তাহলে আমি একটা চাকরি করতে পারি কি?”
অনুপমা ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে, “চাকরি নয়, কাল তোকে অফিসে নিয়ে যাবো। তোর যে কাজ ভালো লাগবে সেটা করিস তুই। তবে কলেজ ছাড়া যাবে না তোর।”
পায়েল অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তুই বান্ধবী না হয়ে মা হলে ভালো হতিস।”
অনুপমা হেসে বলে, “ছাড়, এখন আমি ড্রেস চেঞ্জ করে আসি। কুত্তা শালাটা কে একবার ফোন করব রাতে। এই ঠান্ডায় কোথায় জমে পরে আছে দেখতে হবে।”
দুই বান্ধবী অনেকদিন পরে বেশ মন খুলে গল্প করে। দেবায়ন ফোনে জানায় যে বিন্সারের রিসোর্টে কনকনে ঠাণ্ডাতে এক প্রকার জমে গেছে। মিস্টার সেন আর হোটেলের মালিক, মিস্টার জোশি দুইজনে দেরাদুন গেছে কোন কাজে আর দেবায়ন থেকে গেছে বিন্সারে। একা হোটেলের রুমে কাঠ জ্বালিয়ে লেপের তলায় ঢুকে ল্যাপটপে সিনেমা দেখা ছাড়া কোন কাজ নেই। পায়েলের সাথে অনেকদিন পরে কথা বলে খুব ভালো লাগলো দেবায়নের। অনুপমা ওকে জানায় যে ইন্দ্রনীল এসেছে সেই সাথে জানায় যে পায়েল চাকরি করতে চায়। পায়েলের চাকরির করার কথায় বেশ খুশি হয় দেবায়ন। ওদিকে ইন্দ্রনীলের কথা শুনে দেবায়ন বলে যে দীপঙ্করদা যেমন করতে চায় সেই মতন যেন করতে দেওয়া হয়।
পরের দিন সকালে পায়েল আর ইন্দ্রনীলকে নিয়ে বেড়িয়ে পরে অফিসের দিকে। পারমিতা পায়েলকে দেখে বিস্মিত হয়ে যায়। শামুকের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে এক নতুন পায়েল। অনেকদিন পরে সকালে উঠে স্নান সেরে অনুপমার সাথে নিচে নেমে এসেছে। প্রতিদিনের সালোয়ার কামিজের বদলে অনুপমা ওকে জোর করে জিন্স, শার্ট আর একটা জ্যাকেট পড়িয়ে দিয়েছে। পারমিতা জিজ্ঞেস করাতে অনুপমা উত্তর দেয় যে পায়েল অফিসে যেতে চায়, নিজের মতন কাজ করতে চায়। পায়েলের কথা শুনে পারমিতা বেশ খুশি হয়। প্রায় এক বছর পরে মেয়েটার চেহারায় উজ্জ্বলতা ফিরে এসেছে। ইন্দ্রনীল পায়েলের পরিচয় জানে যে অনুপমার বান্ধবী হিসাবে। এর বেশি ওকে কিছু জানানো হয়নি।
সারাটা রাস্তা দুই বান্ধবী গল্পে মেতে ওঠে সেই পুরানো দিনের মতন। অফিসে ঢুকে ইন্দ্রনীলকে কনফারেন্স রুমে বসতে বলে পায়েলকে নিয়ে অফিসে ঢোকে। অফিস যেদিন খুলেছিল সেদিন একবার এসেছিল পায়েল, তারপরে কোনদিন আসেনি। অফিসের অনেক কিছু পালটে গেছে এই কয় মাসে, অনেক নতুন ছেলে মেয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে কাজের জন্য। শ্রেয়া আর রূপক পায়েলকে দেখে আনন্দে আত্মহারা। ওকে নিয়ে কি করবে ঠিক ভেবে উঠতে পারে না। শ্রেয়া, পায়েলের হাত ধরে নিজের কেবিনে নিয়ে যায়। কেবিনে ঢুকেই আবেগের বশে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। শ্রেয়া একবার পায়েলের চোখের জল মোছে আর পায়েল শ্রেয়ার। তিন বান্ধবিতে একসাথে বসে গল্পে মেতে ওঠে। পায়েলের ঠোঁটের হাসি দেখে দুইজনের বেশ ভালো লাগে।
অনুপমার মনে পরে যে ইন্দ্রনীলকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছে। ওর সাথে কাজের কথা সেরে নেওয়া ভালো। বাকিদের ফোন করে কনফারেন্স রুমে ডাকে। সুপর্ণা ম্যাডাম অথবা দীপঙ্করদা, যারা অনুপমার চেয়ে বয়সে এবং অভিজ্ঞতায় বড়, তাদের কোনদিন অনুপমা ফোন করে ডাকে না, নিজে তাদের রুমে গিয়ে কাজের কথা সারে। এই সন্মান জ্ঞানের জন্য ওকে অফিসের সবাই খুব সমীহ করে চলে। কনফারেন্স রুমে সবাইকে ডেকে ইন্দ্রনীলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
অনুপমা ইন্দ্রনীলের উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করে, “আমাদের এই ফার্মে সবাই পরিবারের মতন সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। শ্রেয়া আর রূপক আমার বন্ধু। সুপর্ণা ম্যাডাম আমার টিচার ছিলেন আর দীপঙ্করদা, বাবার খুব কাছের লোক। মনীষা আর শান্তনু আমার মামনির খুব কাছের মানুষ। তোমার কাছ থেকে ঠিক সেইরকম এক ব্যাবহার আশা করব ইন্দ্রনীল। তোমার রিপোর্টিং দীপঙ্কর’দা।”
ইন্দ্রনীল মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়, কিন্তু চেহারা দেখে মনে হল যেন এই ব্যাপারে সন্তুষ্ট নয়।
অনুপমার তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতায় সেই কিঞ্চিত দ্বিধা এড়ায় না। ইন্দ্রনীলকে সোজা সরল ভাষায় জানিয়ে দেয়, “তুমি মার্কেটিংয়ে রিক্রুট হয়েছ তাই তুমি দীপঙ্করদাকে রিপোর্ট করবে। অফিসের ব্যাপারে তোমার কোন অসুবিধে হলে মনীষা এইচ আরে আছে আর কাজের ক্ষেত্রে দীপঙ্করদা আছেন। বিজনেসের ব্যাপারে আর বাকি সব কথাবার্তা তোমাকে দীপঙ্করদা বুঝিয়ে দেবেন। টেকনিকাল কোন রকমের প্রবলেম এলে সুপর্ণা ম্যাডাম আছেন আর না হলে রূপক আছে।”
ইন্দ্রনীল হেসে জিজ্ঞেস করে, “তাহলে তোমার এখানে রোল কোথায়?”
অনুপমা দাঁত পিষে একটু হেসে বলে, “আমার রোল নিয়ে বিশেষ মাথা ব্যাথা করার দরকার নেই, অন্য কিছু প্রশ্ন থাকলে জিজ্ঞেস করতে পারো।”
ইন্দ্রনীল বলে, “আমি এখানে আসার আগে মিস্টার হেরজোগের সাথে দেখা করে এসেছি। তিনি এয়ার বার্লিন আর জার্মেনিয়া এয়ারলাইন্সের দুটো প্রজেক্টের কথা বলেছিলেন। ওই দুটো ডিলের জন্য একটা টিম তৈরি করতে টেকনিক্যাল আর মার্কেটিং মিলিয়ে। ওদের প্রোডাক্ট আগে থেকেই ওরা ভেবে রেখেছে, শুধু আমাদের গিয়ে সেই প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা করে ওদের কি প্রয়োজন সেটা বুঝে আসতে হবে।”
অনুপমা বলে, “বেশ ভালো কথা, জয়েন করার আগেই তুমি কাজ শুরু করে দিয়েছ দেখে বেশ ভালো লাগলো। তুমি দীপঙ্করদা’র সাথে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে নাও। দীপঙ্করদা যা ভালো বুঝবে তাই হবে। আর দেবায়ন ফিরে এলে ওর সাথে বাকি আলোচনা করা যাবে। আমি না হয় আজ রাতে দেবায়নকে ফোনে জানিয়ে দেব।”
ইন্দ্রনীল বলে, “না মানে আমি বলছিলাম যে ওখানে যেতে হলে আমার সাথে কাউকে যেতে হবে মানে ডিল সাইন করার জন্য ডাইরেক্টর লেভেলের কাউকে।”
অনুপমা বলে, “শ্রেয়া এই কোম্পানির একজন ডাইরেক্টর, সেইরকম কিছু হলে শ্রেয়া আর রূপক চলে যাবে তোমার সাথে। তুমি আগে তোমার এই প্রোজেক্ট নিয়ে দীপঙ্করদা’র সাথে বিস্তারিত আলোচনা কর তারপরে ভাবা যাবে বাকি বিষয়ে।”
কিছুক্ষণ থেমে ইন্দ্রনীলকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এখানে কতদিন আছো? তুমি আশা করি জানো যে তোমাকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের জন্য রাখা হয়েছে।”
ইন্দ্রনীল উত্তরে বলে, “হ্যাঁ।”
অনুপমা বলে, “বার্লিনে একটা অফিস নিতে হয় তাহলে।”
মনীষা উত্তরে বলে, “আমার একটা প্রপোজাল আছে?”
অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “কি?”
মনীষা বলে, “আজকাল ইন্টারনেটের যুগ। বার্লিনে একটা অফিস নিয়ে খরচা বাড়ানোর কোন যুক্তি নেই। ইন্দ্রনীল ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে পারে তাতে ওর সুবিধে আর আমাদের সুবিধে। ওর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আমরা যোগাযোগ রাখবো। একটা অফিস নেওয়ার চেয়ে এতে খরচ কম পড়বে।”
অনুপমা মনীষার দিকে তাকিয়ে ভাবে, কথাটা যুক্তিগত, উত্তরে বলে, “বেশ ভালো প্রস্তাব।” ইন্দ্রনীলকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কি মত?”
ইন্দ্রনীল বলল, “বেশ ভালো প্রস্তাব, বাড়ির খেয়ে অফিসের কাজ করা যাবে তাহলে।”
অনুপমা বলে, “ভালো তাহলে, তুমি দীপঙ্করদা’র সাথে আলোচনা করে নাও ইতিমধ্যে আমি দেবায়নের সাথে আলোচনা করে নেব। তুমি এই মাসটা এখানে থেকে যাও, জানুয়ারির শুরু দিকে দেবায়ন ফিরে আসবে, ওর সাথে দেখা হয়ে যাবে তাহলে।”
ইন্দ্রনীল বলে, “বিজনেসে প্রবল কম্পিটিশান, অত দিনে প্রোজেক্ট হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। আমি খবর নিয়ে দেখেছি যে একটা মালেশিয়ান কোম্পানি, একটা চাইনিজ আর একটা পাকিস্থানি কোম্পানি বিড করবে। সেই জন্য একটু তাড়াতাড়ি যদি ডিসিসান নেওয়া যায় তাহলে ভালো হয়।”
অনুপমা, দীপঙ্করদা আর সুপর্ণা ম্যাডামের উদ্দেশ্যে বলে, “আপনাদের কি মতামত?”
দীপঙ্করদা উত্তরে বললেন, “এইতোসবে কয়েক ঘন্টা হল, আগে সব দেখি তারপরে না হয় তোমাকে জানাবো।”
সুপর্ণা ম্যাডাম একই কথা বলেন।
ইন্দ্রনীল অনুপমার দিকে একবার তাকায়। ওর মনের অভিপ্রায় কিছুটা অনুধাবন করতে চেষ্টা করে অনুপমা। চাহনি দেখে বুঝতে পারে যে ইন্দ্রনীল একটু বেশি ছাড় চেয়েছিল এই বিষয়ে, কিন্তু অনুপমার মুখের হাবভাব দেখে পিছিয়ে গেল। দীপঙ্কর ইন্দ্রনীলকে নিয়ে বেড়িয়ে যায় করফারেন্স রুম থেকে। ইন্দ্রনীল বেড়িয়ে যাবার পরে অনুপমা, সুপর্ণা ম্যাডাম আর রূপককে বলে ইন্দ্রনীলকে একটু চোখে চোখে রাখতে। বাবার বন্ধুর ছেলে হিসাবে ইন্দ্রনীল হয়ত একটু বেশি ছাড় পেতে চাইবে কিন্তু ওর যে টুকু প্রাপ্য তাঁর চেয়ে বেশি ছাড় যেন না দেওয়া হয়। এমনিতে ইন্দ্রনীলকে অফিসে নেওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না অনুপমার, কিন্তু বাবার অনুরোধে নিতে হয়েছে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পাপ কাম ভালবাসা - by Mr Fantastic - 01-10-2020, 10:53 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)